Bastille Day: বাস্তিল দিবসে প্রধান অতিথি নরেন্দ্র মোদি, কুচকাওয়াজে ভারতীয় সামরিক বাহিনী! কেন তাৎপর্যপূর্ণ?

PM Modi In France: ভারত ও ফ্রান্সের সামরিক সখ্যতা প্রথম বিশ্বযুদ্ধ থেকেই, জানুন ইতিহাস...
modi-paris
modi-paris

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দুদিনের সফরে ফ্রান্সে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Modi In France)। এই দু’দিনে তাঁর ঠাসা কর্মসূচি রয়েছে। তবে, তার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ও গুরুত্বপূর্ণ হল আগামিকাল প্যারিসে বাস্তিল দিবসের (Bastille Day) অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকা। যেখানে অংশগ্রহণ করতে চলেছে ভারতীয় সামরিক বাহিনীর তিন শাখা—স্থল, নৌ ও বায়ুসেনা। কূটনৈতিক মহলের মতে, এই আমন্ত্রণ যেমন একদিকে গুরুত্বপূর্ণ, একইভাবে সমান তাৎপর্যপূর্ণও বটে! কারণ, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের পরে, মোদিই হলেন দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রী যাকে এই সম্মান দেওয়া হয়েছে।

বাস্তিল দিবসের (Bastille Day) তাৎপর্য ও ইতিহাস

তার আগে জেনে নেওয়া যাক, বাস্তিল দিবস ঠিক কী? কী-ই বা এর ইতিহাস? বাস্তিল ডে বা বাস্তিল দিবস হল অনেকটা ফরাসি স্বাধীনতা দিবস। ফরাসিদের কাছে এটা ‘ফেত নাশিওনাল ফ্রঁসেজ’ বা ফরাসি জাতীয় উৎসব। ১৭৮৯ সালে ১৪ জুলাই পতন হয়েছিল বাস্তিল দূর্গের। ফরাসিদের কাছে এই দিনটির অন্য তাৎপর্য। কারণ, এই দিনটি ফরাসি বিপ্লব-এর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ দিন। ইতিহাসবিদদের মতে, এই দিন থেকেই নাকি সেদেশে সাম্রাজ্যবাদের পতন ঘোষণা হয়েছিল এবং ফরাসি বিপ্লবের সূচনা হয়েছিল। বর্তমানে, এদিন ফ্রান্সে সব কিছু ছুটি থাকে। বিশ্বব্যাপী ফরাসিরা এদিন উৎসবে মেতে ওঠেন। রাজধানী প্যারিসের (স্থানীয় ভাষায় পারি) রাজপথ শজেঁলিজে-তে বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ ও শোভাযাত্রা হয়। সামরিক প্যারেড হয়। অনেকটা আমাদের দেশের প্রজাতন্ত্র দিবসের মতো। ফরাসিরা এই দিনটিকে ‘ফেত দ্য লা ফেদেরাশিয়োঁ’ বা ফরাসি রাষ্ট্রীয় উৎসব (Bastille Day) হিসেবে পালন করে থাকেন। ফরাসিদের মতে, এটি ফরাসি একতা প্রকাশের উৎসব। 

আরও পড়ুন: ফ্রান্সের উদ্দেশে রওনা দিলেন নরেন্দ্র মোদি, দুদিনের সফরে কী কী কর্মসূচি রয়েছে?

ভারতীয় সামরিক বাহিনী ও বিশ্বযুদ্ধ

এবারের কুচকাওয়াজে অংশ নেবে পঞ্জাব রেজিমেন্ট। যা ভারতীয় সেনার প্রাচীন রেজিমেন্টগুলির অন্যতম। দু'টি বিশ্বযুদ্ধেই ব্রিটেনের হয়ে লড়াইতে অংশ নিতে হয়েছিল পরাধীন ভারতকে। ওই সময় ইউরোপ ও মধ্য প্রাচ্যের একাধিক রণাঙ্গণে অসীম সাহসিকতার পরিচয় দেয় এই রেজিমেন্ট। প্রবল পরাক্রমের জন্য রয়্যাল ক্রস ও ভিক্টোরিয়া ক্রস-এর মতো সম্মান পায় এই রেজিমেন্ট। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল প্রায় ১৩ লক্ষ ভারতীয় ফৌজ। সেই সময়, জার্মান বাহিনীর ফ্রান্সে ঢোকা আটকে দিয়েছিলেন শিখ সৈনিকরা। তাঁদের সঙ্গে এঁটে উঠতে না পেরে পিছু হটেছিল জার্মানরা। ১৯১৬ সালে যুদ্ধ জয়ের সাফল্য তুলে ধরতে প্যারিসের রাস্তায় প্যারেড করেছিল পঞ্জাব রেজিমেন্ট। সম্প্রতি, তারই একটি ছবি নেট-দুনিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, প্যারিসের রাস্তায় কুচকাওয়াজ করে যাওয়া শিখ জওয়ানের দিকে ফুল ছুড়ে দিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন এক ফরাসি তরুণী। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধেও ১৬টি ব্যাটেল অনার পেয়েছিল পঞ্জাব রেজিমেন্ট।

কুচকাওয়াজে অংশ নেবে ভারতীয় সামরিক বাহিনীর তিন শাখাই

এবারের বাস্তিল দিবস (Bastille Day) কুচকাওয়াজে ভারতীয় সেনার তিন শাখার তরফে অংশ নেবেন মোট ২৬৯ জন। এদের মধ্যে রয়েছে সেনার একটি ব্যান্ড দলও। প্যারেডে বায়ুসেনার টিমকে নেতৃত্ব দেবেন স্কোয়াড্রন লিডার সিন্ধু রেড্ডি। রাশিয়ার তৈরি মি-১৭ কপ্টারের ওড়াতে পারেন তিনি। চলতি বছরের প্রজাতন্ত্র দিবসে দিল্লির কর্তব্য পথে বায়ুসেনার ১৪৪ জনের টিমকে নেতৃত্ব দেন তিনি। অন্যদিকে, প্যারিসের মার্চ পাস্টে ভারতীয় স্থলসেনা দলের নেতৃত্ব থাকছে ক্যাপ্টেন অমন জগতপের কাঁধে। নৌবাহিনীর নেতৃত্ব করবেন কমান্ডার ব্রত বাঘেল। এছাড়া ফ্লাই পাস্টে অংশ নেবে ফরাসি সংস্থা দাসো নির্মিত ভারতীয় বায়ুসেনার তিনটি রাফাল ফাইটার জেট। গত কয়েক বছর ধরেই এই জেটগুলি ব্যবহার করা শুরু করেছে ভারতীয় বায়ুসেনা।

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles