মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে পাহাড় প্রমাণ দুর্নীতির অভিযোগ তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে। ২০১৯ সালের মধ্যবর্তী সময়ে বিক্ষুব্ধ জনতাকে তৃণমূল নেতাদের বাড়ি ঘেরাও করতেও দেখা যায় কাটমানি ইস্যুতে। আবাস যোজনায় (PMAY Scam) কাটমানির পরিমাণ জেলায় জেলায় অবশ্য আলাদা। কোথাও ৫০ হাজার তো কোথাও আবার ২৫ হাজার। অথচ কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে বঞ্চনার প্রতিবাদে দিল্লিতে একপ্রস্থ নাটক করতে দেখা গেল তৃণমূল নেতৃত্বেকে। কেন্দ্রীয় সরকারের রিপোর্ট বলছে, ২০২৩ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত ১১ লাখ ৩৭ হাজার বাড়ি বানানোর লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেওয়া হয় পশ্চিমবঙ্গের জন্য। এই খাতে বরাদ্দ অর্থের পরিমাণ ৮,২০০ কোটি টাকা। বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে উল্টো চিত্র।
কেন্দ্রীয় রিপোর্ট কী বলছে
শুধুমাত্র শাসকদলের কর্মী হওয়ার কারণে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার (PMAY Scam) ঘর পাইয়ে দেওয়া হয়েছে এমন অজস্র অভিযোগ জমা পড়তে থাকে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে। শুধু তাই নয়, ভুতুড়ে নামও উঠে এসেছে এই প্রকল্পের উপভোক্তা হিসেবে। তালিকাতে দেখানো হয়েছে যে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘরের যিনি উপভোক্তা, বাস্তবে দেখা যাচ্ছে তাঁর দোতলা বাড়ি। কেন্দ্রীয় সরকারের রিপোর্ট অনুযায়ী ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ সঠিক উপভোক্তাদের বঞ্চিত করা হয়েছে ঝাড়গ্রাম, পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর দিনাজপুর এবং মালদা জেলাতে। পূর্ব বর্ধমান, পুরুলিয়া, মুর্শিদাবাদে আসল দাবিদাররা ঘর পায়নি, এমন সংখ্যা ১০ শতাংশেরও বেশি। সবক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে উপভোক্তারা আসলে শাসক দলের অনুগ্রহপুষ্ট। দিন কয়েক আগেই প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার (PMAY Scam) তৈরি ঘর দোকানঘর হিসেবে ভাড়া দিয়ে বিপাকে পড়েন শাসক দলের এক নেতা।
খবরের শিরোনামে আবাস যোজনার দুর্নীতি
শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় রিপোর্টেই নয়, জনপ্রিয় সংবাদ মাধ্যমগুলির শিরোনামেও উঠে এসেছে তৃণমূলের এমন দুর্নীতির কথা। 'ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস'-এর ২৫ জানুয়ারি ২০২৩ এর প্রতিবেদনে ছাপা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় দুর্নীতি। কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক ইতিমধ্যে এনিয়ে চিঠিও লিখেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে। চিঠির বিষয় হল, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার (PMAY Scam) রূপায়ণে কেন্দ্রীয় টিম পশ্চিমবঙ্গে প্রচুর অনিয়ম খুঁজে পেয়েছে। এই চিঠি সংক্রান্ত খবর ছাপাও হয়েছে চলতি বছরের ৪ অগাস্ট 'হিন্দুস্তান টাইমস'-এর প্রতিবেদনে। অন্যদিকে ১৯ অগাস্ট ২০২৩-এ 'ইন্ডিয়া টুডে'-এর প্রতিবেদনে ছাপা হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার নারায়ণীতলা গ্রামের কথা। এই গ্রামে কীভাবে প্রকৃত উপভোক্তাদের বঞ্চিত রেখে শাসকদলের অনুগতদের ঘর পাইয়ে দেওয়া হয়েছে সেই কথাই উঠে এসেছে প্রতিবেদনে। তবে শুধু ১০০ দিনের কাজের টাকাতে বা প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা ঘরের দুর্নীতি নয়, এমন অসংখ্য কেন্দ্রীয় প্রকল্পের দুর্নীতির সামনে আসছে। যেমন পশ্চিমবঙ্গ সরকার প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি যোজনার সঙ্গে রাজ্যকে সংযুক্ত করতে ব্যর্থ হয়। যার ফল ভোগ করছেন প্রায় ৭০ লাখ কৃষক। ২০১৯ সালে যাঁদের জন্য ক্ষতিপূরণ বাবদ ৭ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours