তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল
বছরভর নানা উৎসব আর উদযাপন চললেও, বছরের এই ক'দিন সবার থেকে আলাদা। আট থেকে আশি, সব বয়সের জন্যই দুর্গাপুজোর চারদিন বিশেষ দিন! আর বিশেষ উৎসব উদযাপনে খাওয়া-দাওয়াও বিশেষ হয় (Durga Puja Food)। কিন্তু এই লাগাতার জমিয়ে ভুরিভোজ স্বাস্থ্যের জন্য কতখানি বিপজ্জনক, সে নিয়ে দুশ্চিন্তা তো থাকেই। তাই চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, দুর্গাপুজোর বিশেষ খাবারেও থাকুক সুস্বাস্থ্যের ছোঁয়া, তবেই সুস্থ শরীরে উৎসব উদযাপন সম্ভব।
পুষ্টিবিদরা কোন ধরনের খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন? (Durga Puja Food)
পুষ্টিবিদদের একাংশ জানাচ্ছেন, দূর্গাপুজোর চারদিন কমবেশি সকলেই একটু অন্যরকম খাবার খেতে চান। কিন্তু স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখতে কয়েকটি বিষয়ে বিশেষ নজরদারি জরুরি। তাঁদের পরামর্শ, উৎসবের মরশুম হলেও সকালের জলখাবার বাদ দেওয়া যাবে না। অনেকেই রাত পর্যন্ত ঠাকুর দেখেন। বিশেষত তরুণ প্রজন্মের অধিকাংশ ছুটির মরশুমে অনেক বেলা পর্যন্ত ঘুমোন। ব্রেকফাস্ট বাদ পড়ে। একেবারেই দুপুরে জমিয়ে খাওয়া হয়। অনেক সময়েই দিনের প্রথম খাবার হয় কোনও রেস্তোরাঁর অতিরিক্ত তেলমশলা যুক্ত খাবার। আর এতেই বিপদ বাড়ে। হজমের গোলমাল কিংবা পেটের সমস্যার ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই পুজোর সময় পুষ্টিসমৃদ্ধ জলখাবার খাওয়া দরকার। দুধ, কর্নফ্লেক্স, ড্রাই ফ্রুটস কিংবা ডিম সেদ্ধ, ফল বা রুটি, সব্জির মতো খাবার জলখাবারের মেনুতে থাকলে পাকস্থলী সুস্থ থাকবে। হজমের সমস্যার ঝুঁকি কমবে।
চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, দুপুর-রাত একদিনে দুবেলা বাইরের খাবার খাওয়া একেবারেই উচিত নয়। উৎসবের মরশুমে অনেকেই রেস্তোরাঁয় খাওয়া পছন্দ করেন। কিন্তু দুবেলা বাইরের খাবারে নানান শারীরিক জটিলতা তৈরি করতে পারে।
খাবার বাছাইয়ের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যের (Durga Puja Food) খেয়াল রাখা জরুরি বলেই মনে করছেন পুষ্টিবিদদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, বাড়ির খাবারের মেনুতে থাকুক নানান রকমের স্যালাড, বেকড খাবার। পুজোর দিনে নানা রকমের ফল দিয়ে নতুন নতুন স্যালাড বানানো যেতে পারে। এতে স্বাদ বদল হয়। আবার পুষ্টিগুণ বজায় থাকে। আবার মাছ কিংবা চিকেনের নানান বেকড আইটেম রান্না করা যায়। যাতে খুব কম পরিমাণ তেল আর মশলার ব্যবহার হয়। অথচ অন্যরকম খাবারে মন ভরে। শরীর ভালো থাকে।
কোন ধরনের খাবার এড়িয়ে যাওয়া জরুরি? (Durga Puja Food)
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, পুজোর মরশুমে দেদার খাবার খাওয়ার সময়, স্থূলতা আর হৃদরোগের বিষয় ভুলে গেলে চলবে না। বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, বিরিয়ানি, মোগলাই, পিৎজা, বার্গার, হটডগ, কিংবা অতিরিক্ত ভাজা খাওয়ার জেরে অনেকের মাত্রাতিরিক্ত ওজন বেড়ে যায়। আর স্থূলতা নানা রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। তাই কী খাওয়া যাবে, সে বিষয়ে সচেতনতা জরুরি। পাশপাশি এই সময় অনেকেই লাগামহীন চর্বিযুক্ত খাবার খান। ফলে, কোলেস্টেরল আর রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই হৃদরোগে আক্রান্তের ঝুঁকিও বাড়ে। চিকিৎসকদের পরামর্শ, বিরিয়ানি, মোগলাই কিংবা পিৎজার মতো খাবার খাওয়ার সময় পরিমাণের দিকে বিশেষ নজরদারি জরুরি।
তবে, খাবারের পাশপাশি পানীয়ের বিষয়েও সচেতনতা দরকার। পুজোর সময়ে অনেকেই প্যাকেটজাত নরম ঠান্ডা পানীয় খান। অতিরিক্ত প্যাকেটজাত নরম ঠান্ডা পানীয় কিন্তু স্থূলতার কারণ বলেই জানাচ্ছেন চিকিৎসক মহল। তাছাড়া, আইসক্রিম আর নরম ঠান্ডা পানীয়ের জেরে আপার রেসপিরেটরি ট্র্যাক ইনফেকশনের ঝুঁকিও বাড়ে বলে জানাচ্ছেন বক্ষঃরোগ বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাই অতিরিক্ত ঘাম হলে কিংবা রোদের মধ্যে লাগাতার ঘুরলে আইসক্রিম, নরম ঠান্ডা পানীয় এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
পুজোর সময়ে আবার উদযাপনের অংশ হিসাবে অনেকেই মদ্যপান করেন। চিকিৎসকদের একাংশের পরামর্শ, মদ্যপান শরীরের একাধিক ক্ষতি করে। লিভার, কিডনি, হৃদযন্ত্রে নানান রোগের কারণ মদ্যপান। তাই প্রয়োজন সচেতনতার।
শরীর সুস্থ রাখতে সতর্ক ও সচেতনভাবে ভুরিভোজ (Durga Puja Food) হোক। তবেই দুর্গাপুজোর উদযাপন সুন্দর হবে, এমনই মত বিশেষজ্ঞ মহলের।
DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours