মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: রেশন দুর্নীতির অভিযোগে বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক গ্রেফতার হতেই উত্তরের বনকর্তাদের একাংশের চোখেমুখে দুশ্চিন্তার মেঘ জমতে শুরু করেছে। বনমন্ত্রী গ্রেফতার হওয়ার পরপরই শিলিগুড়িতে (Siliguri) বেঙ্গল সাফারি বেশ কিছু প্রকল্পের কাজ আচমকা বন্ধ রাখায় খাদ্য দফতরের পর বন দফতরেও জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের দুর্নীতি নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। রবিবার হঠাৎ করে সাফারি কর্তৃপক্ষ কর্মীদের এই কাজ বন্ধ রাখার কথা জানায়। সোমবার কোনও শ্রমিক বা ঠিকাদারের লোক কাজে আসেনি। লায়ন এনক্লোজার সহ কিছু কাজ বন্ধ রাখার এই কথা জানাজানি হতেই দুর্নীতি নিয়ে নানা ধরনের গুঞ্জন শুরু হয়েছে।
স্থানীয় ঠিকাদাররা কী বলছেন? (Siliguri)
স্থানীয় ঠিকাদারদের বক্তব্য, শিলিগুড়ির (Siliguri) বেঙ্গল সাফারি এনক্লোজার থেকে বাউন্ডারি, রাস্তা সবই তাদের হাতে তৈরি। কিন্তু, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বনমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে তাঁরা আর কোনও কাজ পাচ্ছেন না। নানা অজুহাত ও যুক্তি দেখিয়ে বড় বড় সব কাজ কলকাতার ঠিকাদার সংস্থাকেই দেওয়া হচ্ছে। তবে, বন দফতরের অন্যান্য ছোটখাট কাজে যুক্ত থাকায় বিল পাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে, এই আশঙ্কায় কেউ প্রকাশ্যে মুখ খুলছেন না। এক ঠিকাদার নরেশ শৈব বলেন, 'বেঙ্গল সাফারি স্থানীয় ঠিকাদারদের হাতে তৈরি হলেও বিগত কয়েক বছর ধরে বড় কোনও কাজ আমরা পাচ্ছি না। ই টেন্ডারের নামে নানা কারচুপি করে কলকাতার ঠিকাদার সংস্থা সেই কাজ পাচ্ছে।' অভিযোগ, এভাবে স্থানীয় ঠিকাদারদের ব্রাত্য করার ক্ষেত্রে কাটমানির বিষয় রয়েছে। বনমন্ত্রী কাটমানির জন্য তাঁর পছন্দের ঠিকাদার সংস্থাকে সব বড় বড় কাজের বরাত দিয়েছেন।
বেঙ্গল সাফারির কর্মীদের কী বক্তব্য?
সাফারির কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, সাফারি ও উত্তরবঙ্গের বন দফতরের কাজ তদারকি করার জন্য বনমন্ত্রী ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তি শিলিগুড়িতে (Siliguri) বাড়ি ভাড়া করে থাকতেন। প্রায়শই তিনি বেঙ্গল সাফারিতে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ দেখতে আসতেন। বন দফতরের সঙ্গে যুক্ত না হলেও সেই ব্যক্তি সাফারিতে এলে এখানকার আধিকারিকরা তাঁকে খুশি করতে ব্যস্ত হয়ে পড়তেন। ডিরেক্টরের ঘরে তার অবাধ যাতায়াত ছিল। বনমন্ত্রী গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে এরকম আরও অনেক ঘটনা ও অভিযোগ সামনে আসতে শুরু করেছে। আর এটাই এখানকার বন কর্তাদের একাংশের দুশ্চিন্তা বাড়াচ্ছে। কেননা, খাদ্য দফতর ছেড়ে বন দফতরে এসেও নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়েছিলেন বনমন্ত্রী। রেশন দুর্নীতির তদন্তে ইডির আতশ কাঁচের নীচে বন দফতর যুক্ত হলে তাদের না হয়রান হতে হয়।
কী বলছে সাফারি কর্তৃপক্ষ?
যদিও বেঙ্গল সাফারির ডিরেক্টর কমল সরকার লায়ন এনক্লোজার সহ কিছু প্রকল্পের কাজ বন্ধ করে দেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, পুজোর সময় শ্রমিকরা ছুটিতে থাকায় কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। শ্রমিকরা এলে আবার কাজ হবে। বনমন্ত্রী গ্রেফতার হলেও টেন্ডার হয়ে যাওয়া প্রকল্পের কোনও কাজ বন্ধ হবে না। সরকারি নিয়মেই তা চলবে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours