Dakshin Dinajpur: থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত সন্তানের রক্তের জন্য সবার হাতে-পায়ে ধরছেন দিশাহারা বাবা!

ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্তের হাহাকার! দিশাহারা রোগীর পরিজনরা
Dakshin_Dinajpur_(4)
Dakshin_Dinajpur_(4)

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: উৎসবের মরশুমে তীব্র রক্তসংকট দেখা দিয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুরের (Dakshin Dinajpur) বালুরঘাট ব্লাড ব্যাংকে। এই মুহূর্তে জেলার সদর বালুরঘাট ও গঙ্গারামপুর ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্তের ভাঁড়ার প্রায় শূন্য। আগের তুলনায় রক্তদান শিবির না হওয়া এবং দিন দিন রক্তের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এই সংকট। পরিস্থিতি মোকাবিলায় রক্তদান করতে ব্লাড সেন্টারে যোগাযোগ করার আর্জি জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সহ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা।

বালুরঘাট ব্লাড ব্যাঙ্কে প্রতিদিন গড়়ে ৪০-৫০ ইউনিট রক্তের চাহিদা রয়েছে

দক্ষিণ দিনাজপুর (Dakshin Dinajpur) জেলায় দুটি ব্লাড সেন্টার রয়েছে। যার মধ্যে বালুরঘাট ব্লাড সেন্টারে রক্তের চাহিদা সব সময় বেশি থাকে। বর্তমানে বালুরঘাট ব্লাড সেন্টারে প্রতিদিন গড়ে ৪০ থেকে ৫০ ইউনিট রক্তের প্রয়োজন হয়। যার মধ্যে ২০-২৫ ইউনিট থ্যালাসিমিয়া রোগীদের রক্ত দেওয়া হয়। এছাড়াও দুর্ঘটনাগ্রস্ত ও মুমূর্ষু রোগীদের বাকি রক্ত দেওয়া হয়। মাসে ১২০০-১৫০০ ইউনিট রক্তের চাহিদা থাকে বালুরঘাটে। এদিকে চাহিদা থাকলেও বর্তমানে ব্লাড ব্যাঙ্কে জোগান নেই বললেই চলে। বেশির ভাগ গ্রুপের নেগেটিভ ও পজেটিভ রক্তের কোনও ইউনিট নেই বললেই চলে। কারও রক্তের প্রয়োজন হলে দূরদূরান্ত থেকে নিয়ে যেতে হচ্ছে ডোনার। ডোনার না নিয়ে গেলে মিলছে না রক্ত। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যদের বক্তব্য, পুজো পার হওয়ার পর রক্তদান শিবির জেলায় শুরু হয়েছে। তবে রক্তদান শিবির হলেও আগে যে সংখ্যক মানুষ রক্তদান শিবিরে রক্তদান করতেন, তা এখন অনেক কম। যার ফলে রক্তদান শিবির হলেও সেখানে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হচ্ছে না।

রোগীর পরিবারের লোকজনের কী বক্তব্য?

দক্ষিণ দিনাজপুরের (Dakshin Dinajpur) বালুরঘাটের চকভৃগুর ব্লাড সেন্টারে রক্ত নিতে এসেছিলেন এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, “আমার ছোট্ট ছেলে থ্যালাসিমিয়ায় আক্রান্ত। আজ রক্ত দেওয়ার তারিখ। বালুরঘাট হাসপাতালে ভর্তি করার পরও মিলছে না রক্ত। সকলের হাতে-পায়ে ধরছি কেউ যাতে রক্তদান করে। কিন্তু রক্ত পাইনি। এদিকে সেম গ্রুপের ডোনার ছাড়া রক্ত পাওয়া যাবে না বলে জানানো হয়েছে। কী করব কিছুই বুঝতে পারছি না।' যশাহারের রমাজিৎ পালেরও একই অভিজ্ঞতা। তিনি বলেন, আমার বোন থ্যালাসিমিয়া আক্রান্ত। বালুরঘাট হাসপাতালে এসেও রক্ত পাইনি। অবশেষে আমার এক বন্ধুকে এনে বোনের জন্য রক্ত পেলাম। আগে থ্যালাসিমিয়া আক্রান্তদের সঙ্গে সঙ্গে রক্ত দেওয়া হত। কিন্তু এখন রক্ত ডোনার না আনলে পাওয়া যাচ্ছে না।' এক কথায় বালুরঘাটে এখন রক্তের জন্য কার্যত হাহাকার। মানিকোরের বাসিন্দা শংকরী উড়াও এসেছিলেন দিদির জন্য রক্ত নিতে। তাঁর দিদি রক্তাল্পতায় ভগছে। রক্তের প্রয়োজন। ব্লাড সেন্টারে এসেও তিনি রক্ত পাননি। পরে ডোনার দিয়ে রক্ত পান।

দক্ষিণ দিনাজপুর ভলান্টারি ব্লাড ডোনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কী বললেন?

রক্তের হাহাকারের কথা স্বীকার করে দক্ষিণ দিনাজপুর (Dakshin Dinajpur) ভলান্টারি ব্লাড ডোনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক দুলাল বর্মন বলেন, ‘পুজোর সময় থেকেই সংকট প্রকট হয়েছে জেলায়। রক্তদান শিবির না হওয়ায় এই পরিস্থিতি। আমরা সবরকমভাবে চেষ্টা করছি রক্তসংকট দূর করার। পাশাপাশি যারা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রয়েছে তাদের কাছে আবেদন করছি যাতে বেশি করে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়।'

বালুরঘাট ব্লাড সেন্টারের চিকিৎসক কী বললেন?

যদিও বালুরঘাট ব্লাড সেন্টারের চিকিৎসক দেবব্রত দে'র দাবি, 'এখন প্রায় সারা বছরই রক্তসংকট থাকে। কিছু কিছু সময়ে রক্তসংকট বেড়ে যায়। তবে পুজোর পর রক্তদান শিবির শুরু হয়েছে। আশা করছি শিবির আগামীদিনে আরও বাড়বে। এছাড়াও সকলে যাতে রক্তদানে এগিয়ে আসেন। তার আবেদন করছি।'

 

দেশের খবরদশের খবরসব খবরসবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles