মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: শাহজাহানের ডেরায় বোমা ও আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করল সিবিআই (CBI)। বিষ্ফোরক উদ্ধার করতে নামাতে হল রোবট। নামানো হলে এনএসজি কমান্ডো। সন্দেশখালির সরবেড়িয়ার একটি বাড়ির মেঝে ভেঙে উদ্ধার হল বিপুল পরিমাণ অস্ত্রভাণ্ডার। আনুমানিক ১০ থেকে ১৫টি দেশী ও কিছু বিদেশী আগ্নেয়াস্ত্র বাজেয়াপ্ত হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। খোঁজ মিলেছে বস্তা বোঝাই বিষ্ফোরকের। জানা গিয়েছে, ইডির উপর হামলার ঘটনার তদন্তে এসে তৃণমূল পরিচালিত সরবেড়িয়ার আগারহাটি পঞ্চায়েত সদস্য হাফিজুল খাঁয়ের আত্মীয় আবু তাহের মোল্লার বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় আগ্নেয়াস্ত্র। শাহজাহান ঘনিষ্ঠ হাফিজুল খাঁয়ের ভগ্নিপতি হন এই আবু তাহের মোল্লা।
বেআইনি অস্ত্রের হদিস সিবিআই-এর
আদালতের নির্দেশে সন্দেশখালির তদন্তভার সিবিআইকে দেওয়া হয়। তদন্তভার নেওয়ার পর বেশ কয়েক বার সন্দেশখালি এসেছেন কেন্দ্রীয় সংস্থার গোয়েন্দারা। শেষ শনিবারও সন্দেশখালিতে এসেছিল সিবিআইয়ের দু’টি দল। একটি দল গিয়েছিল থানায়। অন্য দল গিয়েছিল সুন্দরীখালির দিকে। এদিন মল্লিকপুরে আবু তাহের মোল্লার ভেড়ি ঘেরা বাড়িতে আসে তদন্তকারী দল। মূল সড়ক থেকে ভেড়ির আল বরাবর ইট পাতা রাস্তা হয়ে ওই বাড়িতে ঢোকে কেন্দ্রীয় বাহিনী ও তদন্তকারী দল। তদন্তকারী দল এদিন নিজেদের সঙ্গে আধুনিক যন্ত্রপাতি ও কিছু স্ক্যানার নিয়ে এসেছিল। ওই বাড়ির ৫০০ মিটার দুরের একটি বাড়িতেও তল্লাশি চালানো হয়। নির্দিষ্ট সূত্র মারফত খবর পেয়ে বাড়িতে ঢুকে মেঝে স্ক্যান করা হয়। মেঝের নীচে ধাতব ও সন্দেহজনক বস্তু লক্ষ করা যায়। এর পর মেঝে ভাঙার কাজ শুরু হয়। মেঝে ভেঙে বিপুল পরিমাণ বেআইনি অস্ত্রের হদিস পায় তদন্তকারীরা। কিন্তু সেই অস্ত্রের পরিমাণ কী তা জানান নি তদন্তকারীরা। অসমর্থিত সূত্রের খবর দেশী ও বিদেশী বেআইনি অস্ত্র ও এক বস্তা বোমা পাওয়া গেছে। এগুলি সক্রিয় নাকি নিষ্ক্রিয় তদন্তকারীরা দেখে নিতে চাইছেন।
রাজনৈতিক তরজায় বিজেপি-তৃণমূল
২০২৪’এর লোকসভার দ্বিতীয় দফা নির্বাচনের দিনে আগ্নেয়াস্ত্র ও বোমা উদ্ধার নিয়ে রীতিমত চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে সন্দেশখালিতে। এখনও পাঁচ দফা নির্বাচন বাকি। ১ জুন বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রে নির্বাচন। এরই মাঝে কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর বলেছেন, “ অস্ত্র মজুতের ঘটনায় স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের মদত রয়েছে। ভোটের জন্য মজুত করা হয়েছিল অস্ত্র।” পাল্টা তৃণমূল নেতা শান্তনু সেন বলেন, “যারা মানুষের রায়ে জিতে আসে তাঁদের অস্ত্রের দরকার হয় না। যারা মানুষের রায়ে প্রত্যাখাত হয়েছে, তাঁদের অস্ত্রের দরকার হয়।”
প্রচুর পরিমাণে বিষ্ফোরক মজুত অনুমান
জানা গিয়েছে অস্ত্র মজুতের ঘটনায় পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে সিবিআই। ১০০ মিটারের মধ্যে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি সাংবাদিকদের প্রবেশ নিষেধ ছিল এদিন। তবে দিন দুপুরের পরেই বদলে যায় পরিস্থিতি। হঠাৎ গাড়ি ভর্তি করে একদল এনএসজি কমান্ডো আসে এলাকায়। কী কারণে তাঁরা এসেছেন, সেই বিষয় নিয়ে সকলের মুখে কুলুপ। এর পরেই দেখা যায়, মঙ্গল গ্রহে কিংবা চন্দ্রযানে যেমন রোভার নামানো হয়েছিল সেরকম একটি রোবট এগিয়ে যায় ওই মেঝে ভাঙা ঘরের দিকে। এর পরেই সকলের কৌতুহল আরও বাড়তে থাকে। অসমর্থিত সূত্রের খবর, প্রচুর পরিমাণে বিষ্ফোরক মজুত রয়েছে সেখানে। কিন্তু পরিমাণ কতটা? শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তা জানানি কেউই।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours