মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আর ঠিক এক মাস পরে পুজো। মা, আসবেন আগমনীর সুরে। শহরের বাতাসে কিন্তু এখনও বিদায়ের বিষাদ সুর। আরজি কর (RG Kar Incident) হাসপাতালের নৃশংস ঘটনারও এক মাস হয়ে গিয়েছে। কিন্তু বিচার পায়নি ‘অভয়া’। বিচারের দাবিতে এখনও পথে নেমে আন্দোলন অব্যাহত। কেউ পুজো বয়কটের ডাক দিয়েছেন, আবার কারও কথায় পুজো পুজোর জায়গায়, তবে আন্দোলন চলবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য সোমবার সকলকে আসন্ন উৎসবে সামিল হওয়ার বার্তা দিয়েছেন। তাঁর এই মন্তব্যেই ভেঙে পড়েছেন নির্যাতিতার মা। তাঁর কথায়, ‘‘আমার দুর্গার বিসর্জন হয়ে গিয়েছে। আমার ঘরের প্রদীপ নিভে গিয়েছে।’’
কী বললেন নির্যাতিতার মা
আরজি করের (RG Kar Incident) নির্যাতিতার মা বলেন, ‘‘দেশের মানুষ আমার মেয়েকে নিজেদের মেয়ে বলে মেনেছে। এখন যদি তাঁরা উৎসবে ফিরতে চান তাহলে ফিরতে পারেন। আমার কিছুই বলার নেই। কিন্তু আমার বাড়িতে আর কোনওদিন দুর্গাপুজো হবে না। আগে হত, মেয়ে পুজোয় থাকত। আমার বাড়িতে আর কখনও পুজোর আলো জ্বলবে না। প্রদীপের আলো চিরকালের মতো নিভে গিয়েছে।’’ এই প্রসঙ্গে তাঁর স্পষ্ট কথা, যতদিন বিচার পাবেন না, ততদিন তিনি পথে থাকবেন। একই সঙ্গে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে আবার ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘পুলিশ প্রশাসন আন্দোলনকে থামাতে উঠে-পড়ে লেগেছে। এক মাসে ২৩ জন রোগীর মৃত্যুর কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু সাধারণত আরও অনেক রোগী অনেক সময়ই মারা যায়। এর সঙ্গে আন্দোলনের কোনও সম্পর্ক থাকার কথা নয়।’’
মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য
নবান্ন থেকে সাংবাদিক বৈঠক করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন, পুজোকে কেন্দ্র করে অনেক গরিবলোকের রুজি-রোজগার হয়। মনে রাখতে হবে অনেক বিদেশি অতিথিরা আসেন। সারা দেশ থেকে অনেক মানুষ আসেন। উৎসব কিন্তু সবার। তিনি বলেন, ‘‘এক মাস তো হয়ে গেল। আজ নয় তারিখ। এক মাস একদিন। ৩১ দিনের মাস গিয়েছে। আমি অনুরোধ করব, পুজোতে ফিরে আসুন, উৎসবে ফিরে আসুন।’’
আরও পড়ুন: হাসপাতালে ‘থ্রেট কালচার’ ছড়ানোর অভিযোগে সন্দীপ ঘনিষ্ঠ ৫১ জনকে নোটিস
‘আন্দোলনই এখন জনসাধারণের মহোৎসব’
মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্য কেউ ভালভাবে নেননি। ক্ষোভে ফেটে পড়েছে আম জনতা থেকে আন্দোলনকারীরা। রাত দখলের ডাক দিয়েছিলেন রিমঝিম সিং। মমতার সোমবারের বক্তব্য নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘জনসাধারণ এখন মহোৎসবেই রয়েছেন। কারণ, আন্দোলনকেই তাঁরা মহোৎসব বলে মনে করছেন। তাঁরাই তো ঠিক করবেন কোনটা উৎসব।’’ একই সঙ্গে রিমঝিমের দাবি, ‘‘এই আন্দোলন তো এই একটি ঘটনার জন্য নয়। ভবিষ্যতেও যাতে এমন না ঘটে, সেই দাবিতেই মানুষ পথে নেমেছেন। আন্দোলন থেকে যে সব দাবি উঠেছে, তা নিয়ে এখনও পর্যন্ত রাজ্য প্রসাশন কোনও পদক্ষেপ করেনি। তাই মানুষই ঠিক করবেন, কোন উৎসবকে বেছে নেবেন তাঁরা।’’
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours