মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনে (UNGA) যোগ দিতে নিউইয়র্কে গিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর (EAM S Jaishankar)। রবিবার অধিবেশনে বক্তৃতা দেওয়ার পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন বিদেশমন্ত্রী। সেখানে তিনি বলেন, "আজ বিশ্ব যখন বিভিন্ন মেরুতে বিভক্ত, তখন ভারত সেতুর কাজ করছে। অনগ্রসর দেশগুলির কণ্ঠস্বর হয়ে উঠেছে ভারত।"
এ বারের আমেরিকা সফরে রাষ্ট্রসংঘের মঞ্চে ও পার্শ্ব-বৈঠকে একশোরও বেশি দেশের বিদেশমন্ত্রীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী। দ্বিপাক্ষিক এবং বহুপাক্ষিক বৈঠকও করেছেন বেশ কয়েকটি। নিউ ইয়র্কের পরে এ বার বিদেশমন্ত্রী যাবেন ওয়াশিংটনে। এই সফরে রুশ বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গেও ইউক্রেন ইস্যুতে বৈঠক করেন জয়শঙ্কর। এরপরেই রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, "আমাদের প্রায়ই বলা হয়, কোন পক্ষে অবস্থান করছি। আমরা প্রতিবার সহজ, সরল ও সৎ উত্তর দিয়ে এসেছি। ভারত শান্তির পক্ষে অবস্থান করছে। আমরা তাদের পক্ষে রয়েছি, যারা রাষ্ট্রসংঘের নীতিগুলোকে মেনে চলছে ও সম্মান করছে। অর্থনীতিতে এই ইউক্রেন ও রাশিয়ার যুদ্ধের মারাত্মক প্রভাব পড়ছে।"
আরও পড়ুন: ‘‘জেগে আছেন?’’, হঠাৎ মধ্যরাতে ফোন মোদির! তারপর... স্মৃতি রোমন্থন জয়শঙ্করের
সন্ত্রাসবাদ প্রসঙ্গে জয়শঙ্কর বলেন, "২৬/১১ হামলার অন্যতম অভিযুক্ত লস্কর জঙ্গি সাজিদ মিরকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী হিসেবে ঘোষণা করতে চেয়ে ভারত ও আমেরিকার প্রস্তাব গত সপ্তাহেই রাষ্ট্রসংঘে আটকে দিয়েছিল চিন। চলতি বছরেই জইশ প্রধান মাসুদ আজহারের ভাই আব্দুল রউফ আজহার এবং পাক জঙ্গি আব্দুল রহমান মাক্কির নাম রাষ্ট্রসংঘের কালো তালিকায় তোলা আটকে যায় চিনের আপত্তিতেই। আশা করব, যুক্তির জয় হবে ও কেউ ইচ্ছেমতো বা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে বাধা হয়ে দাঁড়াবে না। রাষ্ট্রসংঘে সকলেই একমত হবেন। সন্ত্রাস একটি সার্বিক বিপদ। সন্ত্রাসবাদ কোনও সমস্যার সমাধান হতে পারে না। রক্ত কখনও কোনও সমস্যার উত্তর হতে পারে না।যাঁরা সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করেন, তাঁরা আদতে নিজেদের বিপদ নিজেরাই ডেকে আনেন। কারণ যাই হোক না কেন, সন্ত্রাসবাদকে কখনও সমর্থন করা যায় না।"
আরও পড়ুন: 'যুদ্ধ থামান', রাষ্ট্রসংঘে রাশিয়াকে আর্জি জয়শঙ্করের
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিদেশমন্ত্রী বলেন, "রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ অধিবেশন নিঃসন্দেহে বিভিন্ন মেরুতে বিভক্ত বিশ্বের বর্তমান চেহারাটা তুলে ধরছে। ভারতের গুরুত্ব এখন আরও বেশি। আমরা একটি সেতু, একটি কণ্ঠস্বর, একটি দৃষ্টিভঙ্গি অথবা একটি চ্যানেল।" বিদেশমন্ত্রী আরও বলেন, "বর্তমানে সাধারণ কূটনীতি কাজে আসছে না, তখন ভারতের অন্যান্য দেশের সঙ্গে সম্পর্ক, যোগাযোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বিশ্ব অর্থনীতিতে খাবার, জ্বালানি ও সারের মূল্যবৃদ্ধি এবং ঋণের পরিস্থিতি যখন বহু দেশের পক্ষে উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে, তখন ভারত অপেক্ষাকৃত অনগ্রসর দেশগুলির কণ্ঠস্বর হয়ে উঠেছে। বিদেশেও কাজ করে দেখানোটা নরেন্দ্র মোদির বিশেষ গুণ। আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে ভারতের এই গুরুত্ব বৃদ্ধির বড় কারণ মোদির নেতৃত্ব। গত বছর গ্লাসগোর জলবায়ু সম্মেলনে মোদির ভূমিকার কথা অনেকেই স্বীকার করেছেন। ডিসেম্বরে জি-২০ গোষ্ঠীর সভাপতিত্ব পেলে ভারত সব সদস্যের মধ্যে যোগাযোগ বজায় রেখে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে এগোবে।"
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।
+ There are no comments
Add yours