মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: এবার উল্টো হাওয়া বইতে শুরু করল কাঁথি পুরসভার টেন্ডার দুর্নীতি মামলায়। কাঁথি থানার আইসি অমলেন্দু বিশ্বাসকে তলব করল সিবিআই। তাঁকে নিজাম প্যালেসে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। তবে ঠিক কী কারণে তাঁকে তলব করা হয়েছে, তা অবশ্য স্পষ্ট নয়। ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, কাঁথি পুরসভার ঠিকাদার রামচন্দ্র পান্ডার বয়ানের ভিত্তিতেই অমলেন্দু বিশ্বাসকে ডেকে পাঠিয়েছে সিবিআই।
মিথ্যা অভিযোগ
রামচন্দ্রবাবু রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। বিজেপি নেতাকে ফাঁসানোর জন্য পুলিশ রাম পান্ডাকে গ্রেফতার করে জোর জবরদস্তি মিথ্যে বয়ান লিপিবদ্ধ করতে চেয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। শেষ পর্যন্ত কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে জামিন পান ওই ঠিকাদার। পরে তিনি সাংবাদিকদের সামনে একের পর এক বিস্ফোরক অভিযোগ করেন পুলিশের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, ‘শুভেন্দু অধিকারীর নাম বলার জন্য আমার উপর প্রবল চাপি তৈরি করা হয়। কলকাতা থেকে অফিসাররা এসে টেবিলের উপর রিভলবার রেখে জেরা করেন। বলা হয়, আমি যদি শুভেন্দুবাবুর নাম না বলি তাহলে তিন বছর জেলে ভরে রেখে দেবে।’ এখানেই থামেননি কাঁথির ঠিকাদার রামচন্দ্র পাণ্ডা। তিনি বলেছেন, ‘জেলের ভিতরে আমাকে জল দেওয়া হয়নি। ভয় দেখানো হয়েছিল আমার স্ত্রীকে গ্রেফতার করার। ওরা আগে থেকে একটা বয়ান লিখে এনেছিল। সেখানে জোর করে সই করাতে চাইছিল আমাকে। কিন্তু আমি কোনওভাবেই রাজি হইনি।’ এই মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয়। তাই মনে করা হচ্ছে, রাম পান্ডার অভিযোগের ভিত্তিতেই কাঁথি থানার আইসিকে তলব করেছে সিবিআই।
আরও পড়ুন: আরও একমাস জেল হেফাজতে মানিক, আদালতে আত্মসমর্পণ স্ত্রী-পুত্রের
কে এই অমলেন্দু
এর আগে, ২০২০ সালে মালদার ইংরেজবাজার থানার আইসি থাকাকালীন ঘুষ নিয়ে বাংলাদেশিকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগে ক্লোজ করা হয়েছিল এই অমলেন্দু বিশ্বাসকে। ঘটনায় প্রকাশ, মালদা শহরের নেতাজি সুভাস রোড সংলগ্ন একটি ট্রাস্ট বোর্ডের মালিকানায় এক বাংলাদেশির নাম জড়িয়ে পড়ে। সেই ব্যক্তির কাছ থেকে ভারতীয় নাগরিকত্বের পরিচয়পত্রও উদ্ধার হয়। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, একই সঙ্গে ভারত ও বাংলাদেশের ভোটার কার্ড ও অন্যান্য নথি উদ্ধার হয় ওই বাংলাদেশির কাছ থেকে। এমনকী ট্রাস্টের মালিকানাও না কি ছিল ওই ব্যক্তির নামেই। অভিযোগ, ট্রাস্টের অধীনস্থ জমি বিক্রি করে ভারতীয় টাকা সে বাংলাদেশেও নিয়ে গিয়েছিল। ওই ঘটনায় ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ। কিছুদিন পুলিশি হেফাজতে থাকার পরেই জামিনে ছাড়া পেয়ে যায় ওই ব্যক্তি। ঘটনায় পুলিশি গাফিলতির অভিযোগ ওঠে। তদন্তে জানা যায়, ওই বাংলাদেশির কাছ থেকে মোটা টাকা (সূত্রের খবর ১ কোটি ৩০ লক্ষ) ঘুষ নিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। ঘটনায় নাম জড়ায় থানার আইসি অমলেন্দু বিশ্বাসেরও। যার জেরে কর্তব্যে গাফিলতির কারণে অমলেন্দুকে সেই সময় ক্লোজ করা হয়েছিল।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।
+ There are no comments
Add yours