মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: হিন্দুধর্মে ও জ্যোতিষশাস্ত্রে শ্রাবণ মাসের গুরুত্ব অপরিসীম। এই মাস শিবের অত্যন্ত প্রিয় মাস। এই মাসে ভগবান শিবের পুজো করলে জীবনে সাফল্য পাওয়া যায়। রীতি অনুযায়ী শ্রাবণ মাসের সোমবার শিবকে উৎসর্গ করা হয় এবং মঙ্গলবার উৎসর্গ করা হয় দেবী পার্বতীকে। এই মঙ্গলবার গুলোতে পালন করা হয় মঙ্গলা গৌরী ব্রত (Mangala Gouri 2024)।
কেন পালিত হয় মঙ্গলা গৌরী ব্রত? (Mangala Gouri 2024)
প্রথা অনুযায়ী, এই দিনে বিবাহিত মহিলারা অবিচ্ছিন্ন সৌভাগ্য, স্বামীর দীর্ঘায়ু এবং সুখী দাম্পত্য জীবনের জন্য উপবাস করে, অন্যদিকে অবিবাহিত মেয়েরা একটি ভালো জীবনসঙ্গী পাওয়ার জন্য পালন করে এই উপবাস। কথিত আছে, এই উপবাস পালন করলে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক মধুর হয়ে ওঠে।
আরও পড়ুন: অল্পতেই সন্তুষ্ট হন মহাদেব, শ্রাবণ মাসের প্রথম সোমবার কীভাবে পালন করবেন?
কবে পালন হবে এই ব্রত?
এ বছর মঙ্গলা গৌরী ব্রত (Mangala Gouri 2024) শুরু হবে ২৩ জুলাই থেকে। এদিন প্রথম মঙ্গলা গৌরী উপবাস পালিত হবে। এরপর দ্বিতীয় মঙ্গলা গৌরী ব্রত পালিত হবে ৩০ জুলাই, তৃতীয় ব্রত ৬ আগস্ট এবং চতুর্থ তথা শেষ মঙ্গলা গৌরী ব্রত পালন করা হবে ১৩ অগাস্ট।
পুজোর নিয়মাবলী
মঙ্গলা গৌরী ব্রত (Mangala Gouri 2024) উপলক্ষে মঙ্গলবার ব্রহ্মমুহূর্তে ঘুম থেকে উঠে স্নান করে শিব-পার্বতীর পুজো করে শুরু করা হয় উপবাস। এরপর লাল কাপড়ের উপর মাতা পার্বতীর দেবী মঙ্গলা গৌরী রূপের মূর্তি স্থাপন করা হয়। মা গৌরীর পুজোর জন্য নিবেদন করা হয় ফুলের মালা, ফল, পান, লাড্ডু, লবঙ্গ, সুপারি, এলাচ, বিয়ের উপকরণ সহ ১৬টি চুড়ি ও মিষ্টি।
মঙ্গলা গৌরী ব্রতের পৌরাণিক কাহিনী (Mangala Gouri 2024)
প্রাচীনকালে, ধর্মপাল নামে এক বণিক ছিলেন, যার অর্থের অভাব ছিল না। তিনি নিজে সকল গুণে ধন্য ছিলেন। শেঠ ধরমপাল একজন মেধাবী কন্যাকে বিয়ে করেন। তবে বিয়ের পর বেশ কয়েক বছর পরও তাঁদের কোনও সন্তান হয়নি। এতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন ব্যবসায়ী। এরপর একদিন শেঠ ধর্মপালের স্ত্রী তাঁকে সন্তানের বিষয়ে একজন মহান পণ্ডিতের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। স্ত্রীর পরামর্শে ব্যবসায়ী শহরের সবচেয়ে বিখ্যাত পণ্ডিতের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন। সেই সময় সেই পণ্ডিত ব্যবসায়ী দম্পতিকে শিব ও মা পার্বতীর পুজো করার পরামর্শ দেন। পরে ব্যবসায়ীর স্ত্রী রীতি অনুযায়ী ভগবান শিব ও মা পার্বতীর পুজো করেন। ধর্মপালের স্ত্রীর ভক্তিতে খুশি হয়ে একদিন দেবী পার্বতী আবির্ভূত হয়ে বললেন- আমি তোমার ভক্তিতে প্রসন্ন, তুমি যাহা চাও তাই চাও। তোমার ইচ্ছা অবশ্যই পূরণ হবে। সে সময় ধর্মপালের স্ত্রী সন্তান চেয়েছিলেন। দেবী পার্বতী তাকে পুত্র লাভের আশীর্বাদ করেছিলেন। এক বছর পর ধর্মপালের স্ত্রী একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। কিন্তু সেই শিশু ক্ষণজন্মা ছিল। পুত্রের নামকরণ হলে ধর্মপাল জ্যোতিষীকে তাঁর পুত্রের ক্ষণজন্মা হওয়ার কথা বলেন। তখন জ্যোতিষী ধর্মপালকে পরামর্শ দেন যে মঙ্গলা গৌরী উপবাস (Mangala Gouri Brata) পালনকারী একটি মেয়ের সঙ্গে তার ছেলের বিয়ে দিতে। জ্যোতিষীর পরামর্শ অনুযায়ী শেঠ ধর্মপাল তাঁর ছেলেকে মঙ্গলা গৌরী উপবাস পালনকারী একটি মেয়ের সঙ্গে বিয়ে দেন। সেই মেয়ের পুণ্যের কারণে ধর্মপালের ছেলে মৃত্যুর কবল থেকে মুক্তি পান। এই ভাবে ছড়িয়ে পড়ে এই ব্রত।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours