মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মোদি সরকারের আমলে দেশে মাওবাদী (Maoism) সমস্যার অনেকটাই সমাধান হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্রে যে পরিসংখ্যান দেওয়া হয়েছে তাতে বলা হচ্ছে যে গত ১০ বছরে মাওবাদী হিংসা ৫৫ শতাংশ কমেছে এবং মাওবাদীদের (Maoism) হাতে সাধারণ মানুষের হত্যা ৬৩ শতাংশ কমেছে। পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে ২০১৩ সালে ১০টি রাজ্যের ৭৬টি জেলার ৩৩০ টি থানাতে মাওবাদীদের প্রভাব ছিল এবং ২০২১ সালে দেখা যাচ্ছে যে মাওবাদীদের (Maoism) প্রভাব রয়েছে ৮টি রাজ্যের ৪৬টি জেলায় এবং ১৯১টি থানাতে।
তিন দশকের মাওবাদী (Maoism) ঘাঁটিগুলি আজ ধ্বংসের মুখে
ছত্তিশগড় এবং ঝাড়খণ্ডের সীমান্ত এলাকা মাওবাদীদের (Maoism) শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ছিল বিগত তিন দশক ধরে। এই অঞ্চলকে বুধা পাহাদ বলা হয়। কেন্দ্রীয় সরকার ইতিমধ্যে মাওবাদীদের (Maoism) বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স পলিসি প্রয়োগ করেছে এখানে এবং তাতেই মিলেছে এই সাফল্য বলে মনে করা হচ্ছে। বিহার এবং ছত্তিশগড়ের সীমান্তবর্তী জঙ্গল এলাকাগুলিতে মাওবাদীরা মাটির নিচে মাইল পুঁতে রাখত যার ফলে সেনাবাহিনীর সেখানে প্রবেশ করা দুঃসাধ্য হয়ে পড়ছিল, ঠিক এই পদ্ধতিই তারা দণ্ডকারণ্যে প্রয়োগ করছে এখনও। তবে কেন্দ্রীয় সরকারের কড়া পদক্ষেপের কারণে দণ্ডকারণ্য ধীরে ধীরে মাওবাদীদের প্রভাব মুক্ত হচ্ছে।
২০০৪ সাল থেকে নতুন ভাবে পথচলা শুরু করেছিল মাওবাদীরা (Maoism)
২০০৪ সাল পিপলস ওয়ার গ্রুপ এবং মাওয়িস্ট কমিউনিস্ট সেন্টার অফ ইন্ডিয়া (এমসিসিআই) এই দুটো সংগঠন এক হয়ে যায়। তৈরি হয় নতুন সংগঠন কমিউনিস্ট পার্টি অফ ইন্ডিয়া (মাওয়িস্ট)। এই সময়ে তারা ভারতের খনিজ সম্পদে পরিপূর্ণ এলাকাগুলিতে একটি রেড করিডর তৈরি করার কথা চিন্তাভাবনা করে। রিপোর্ট অনুযায়ী তৎকালীন ৬৪০ টি জেলার মধ্যে এক তৃতীয়াংশ জেলাই মাওবাদীদের (Maoism) প্রভাবে চলে যায়।
বেশিরভাগ মাওবাদী (Maoism) নেতা গ্রেফতার হয়েছে গত ১০ বছরে
গত ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে ঝাড়খন্ড পুলিশ গ্রেপ্তার করে কিশান দা ওরফে প্রশান্ত বোস নামের মাওবাদী (Maoism) নেতাকে যার মাথার দাম ছিল ১ কোটি টাকা। ইতিমধ্যে মাওবাদীদের (Maoism) অনেক নেতাকে দেশের সেনাবাহিনী এবং পুলিশ ফোর্স গত এক দশকে গ্রেফতার করেছে অথবা এনকাউন্টারে তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। মাওবাদীদের কেন্দ্রীয় কমিটিতে বর্তমানে ২৪ জন রয়েছেন। জানা যাচ্ছে এরমধ্যে ১৫ জনেরই বয়স ৬০ পেরিয়েছে। সারাদেশে ইতিমধ্যে মাওবাদীদের ১০,০০০ ক্যাডারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে পরিসংখ্যান বলছে। জানা যাচ্ছে এই মুহূর্তে মাওবাদীরা (Maoism) নিজেদের ক্যাডার নিয়োগ করতে পারছে না কারণ তাদেরকে চারিদিক থেকে অবরুদ্ধ করতে পেরেছে কেন্দ্রীয় সরকার। অস্ত্রশস্ত্র জোগাড় করা মাওবাদীদের কাছে একটি চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। জানা যাচ্ছে কিছু পরিমাণে যুদ্ধ সরঞ্জাম এবং অস্ত্রপাতি তারা আনছে পাঞ্জাব থেকে। খালিস্তানি সমর্থকরা তাদের এই কাজে সাহায্য করছে বলে সূত্রের খবর। অস্ত্র আসছে মূলত ড্রোন এবং পাকিস্তানের আইএসআইয়ের মাধ্যমে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন ২০১৪ থেকে মাওবাদী (Maoism) সমস্যা ধীরে ধীরে সমাধান হতে থাকে তার কারণ মোদি সরকারে উন্নয়ন। বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা মাওবাদী প্রভাবযুক্ত অঞ্চলগুলিতে ব্যাপকভাবে পৌঁছাতে পেরেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই কারনে ওই অঞ্চলগুলির তরুণ সমাজ মাওবাদের পথকে বেছে নেয়নি।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।
+ There are no comments
Add yours