মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সাপের পর এবার মিড ডে মিলের (Mid Day Meal) খাবারে পাওয়া গেল আরশোলা! মঙ্গলবার পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনার এক অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের মিড ডে মিলের খিচুড়িতে পাওয়া গেল আরশোলা! এই মুহূর্তে যখন মিড ডে মিলের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে রাজ্যে এসেছে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল, ঠিক সেই সময় এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে চন্দ্রকোনা-২ ব্লকের কুঁয়াপুর পঞ্চায়েতের ধামকুড়িয়া অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে। ওই স্কুলের এক পড়ুয়ার বাবা সুমনবাবুর অভিযোগ, তাঁর ছেলের জন্য অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে কৌটোয় করে মিড ডে মিলের খিচুড়ি বাড়িতে নিয়ে যান। বাড়িতে গিয়ে কৌটো খুলতেই দেখ যায় খিচুড়ির মধ্যে আস্ত একটা আরশোলা (Mid Day Meal) পড়ে আছে! ওই অভিভাবক সঙ্গে সঙ্গে আরশোলা সমেত খিচুড়ি তিনি সঙ্গে সঙ্গে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে নিয়ে গিয়ে দেখান। সুমন রায়ের দাবি, তাঁর অভিযোগ পেয়ে ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের সহায়িকা ও রাঁধুনি অন্যান্য শিশুদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে মিড ডে মিলের খিচুড়ি খেতে নিষেধ করেন। এই ঘটনায় রীতিমত চাঞ্চল্য ছড়ায় ধামকুড়িয়া এলাকায়।
এদিকে পরিদর্শনে গিয়ে স্কুলগুলির রান্নাঘরের (Mid Day Meal) পরিস্থিতি দেখে হতাশ কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। প্রতিনিধি দলের আসার কথা শুনে কর্মীরা অ্যাপ্রন, গ্লাভস পরে থাকলেও রান্নাঘরের বেহাল দশা। কারও হাতে আবার উলের গ্লাভল দেখে খুলে ফেলতে বললেন, কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্য। আজ, কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের স্কুলে নজরদারির সময় এরকমই নানা ছবি উঠে এল। দক্ষিণ ২৪ পরগনার, রাজবল্লভপুর রঙ্গিলাবাঁধ রামলার মেমোরিয়াল হাইস্কুলে গিয়ে দেখা গেল চালের প্যাকেটে ঝুল রয়েছে।
এর আগে, উস্তির শেরপুর রামচন্ত্রপুর হাইসকুলে যান কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি (Mid Day Meal) দলের সদস্যরা। এখানেও, হাতে উলের গ্লাভস পরে, রান্না করতে দেখা যায় মিড ডে মিলের কর্মীদের। যদিও তাঁদের বক্তব্য, তাঁরা সারা বছর একরম ভাবেই কাজ করে। এই গ্লাভসই দেওয়া হয় তাঁদের। মিড ডে মিলের নোডাল টিচারের কথায়, ব্লক থেকে আমাদের এগুলোই দেওয়া হয়েছে, তাই আমরা এগুলোই দিই। যেন রাতারাতি ভোল বদলে গিয়েছে রাজ্যের স্কুলগুলির।
রাতারাতি ভোলবদল
এর আগে, সোমবার রাজারহাট এলাকার স্কুলে পরিদর্শন করতে গেলে কেন্দ্রীয় দল দেখতে পায়, যাঁরা রান্না করছেন, তাঁদের পরনে মাস্ক, টুপি, গ্লাভস, এমনকি অ্যাপ্রনও। স্কুলের রান্নাঘরও ঝাঁ-ঝকঝকে। কিন্তু মঙ্গলবারই সেই রান্নাঘরগুলির চেহারায় বিস্তর বদল এল। সেখানে পড়ুয়াদের জন্য খাবার তৈরির রান্নাঘরের মলিনতা চোখে পড়ল। অ্যাপ্রন, গ্লাভস, টুপি বা মাস্কের নামগন্ধ নেই কর্মীদের। সোমবার রান্নাঘর ও রন্ধনকর্মীদের অত্যুজ্জ্বল সাজসজ্জা যতটা আকস্মিক ও অস্বাভাবিক ঠেকেছিল, মহানগরীর অদূরের স্কুলে এ দিন যে-মলিনতা স্পষ্ট হল, তা-ও একই ভাবে অবাক করেছে।
আরও পড়ুন: আইসিইটি- র আনুষ্ঠানিক সূচনা করলেন জ্যক সুলিভান এবং অজিত ডোভাল
সোমবার আগাম জানান দিয়ে পরিদর্শনে গিয়েছিল কেন্দ্রীয় দল (Mid Day Meal) । মঙ্গলবার সাড়ে ১২টায় রাজারহাটেরই থাকদাঁড়ি অবৈতনিক প্রাথমিক স্কুলের রান্নাঘরে পৌঁছে দেখা গেল, রান্নায় ব্যস্ত দুই কর্মীর অ্যাপ্রন, টুপি, গ্লাভসের বালাই নেই। কেন নেই, প্রশ্ন করায় কর্মীরা জানালেন, সবই রাখা আছে। ভাত হয়ে গেলে, ডিমের ঝোল রান্নার আগে অ্যাপ্রন আর গ্লাভস পরে নেবেন। তাহলে কী কেন্দ্রকে বোকা বানাতে চাইছে রাজ্য সরকার? আর তাতেই রাতারাতি স্কুলগুলির রান্নাঘরের ভোল বদল? এখন সেই প্রশ্নই মুখে মুখে।
+ There are no comments
Add yours