মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: 'যে প্রহারের দাগ নিয়ে চলে গেলাম/এর শোধ কেউ নেবে / আমার মৃত্যুর জন্য কৌশিক দায়ী।' মাত্র তিন লাইনের সুইসাইড নোট। ২০ জুন রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয় লিভ ইন পার্টনার প্রজ্ঞাদীপা হালদারের। তাঁর মৃতদেহর পাশ থেকে তিন লাইনের লেখা এই সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়। আর সেই নোটের সূত্র ধরেই অবশেষে গ্রেফতার করা হল বারাকপুর (Barrackpore) সেনা হাসপাতালের চিকিৎসক লেফটেন্যান্ট কর্নেল কৌশিক সর্বাধিকারীকে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ জন্য ডাকা হয়েছিল। তিনি হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যাওয়ার পথে শুক্রবার সকালে একটি পুকুরপাড় থেকে বারাকপুর থানার পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। কৌশিকবাবু বারাকপুর বেস হাসপাতালের অফিসার ইনচার্জ।
ঠিক কী ঘটেছিল?
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রজ্ঞাদীপা হালদারের ২০১৩ সালে প্রথম বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু, সেই বিয়ে বেশিদিন স্থায়ী হয়নি, ডিভোর্স হয়ে যায়। এরপর বারাকপুরে (Barrackpore) সেনা হাসপাতালে কর্মরত কৌশিক সর্বাধিকারীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক গড়়ে ওঠে। কৌশিকবাবুও বিবাহিত। তাঁর স্ত্রী ও দুই সন্তান রয়েছে। তারপরও প্রজ্ঞাদীপার সঙ্গে তাঁর বিবাহ বর্হিভূত সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তাঁরা বারাকপুরে লিভ ইনে থাকতেন। প্রজ্ঞার পরিবারের লোকজন তা জানতেনও। প্রজ্ঞা নিজেও পেশায় একজন চিকিৎসক ছিলেন। বারাসত- ১ নম্বর ব্লকের ছোট জাগুলিয়া স্বাস্থ্য কেন্দ্রে তিনি কর্মরত ছিলেন। কৌশিকবাবুর সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হওয়ার পর ২০২০ সাল থেকে বারাকপুরেই থাকতেন তিনি। প্রজ্ঞাদীপার দুর্ঘটনার পর পরই তাঁর মায়ের কাছে ফোন আসে, মেয়ে সেনা হাসপাতালে রয়েছে। শরীরে এবং মাথায় তাঁর একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রজ্ঞাদীপা যেখানে থাকতেন, সেখানে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে তাঁকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখা যায়। দেহ ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়।
কী বললেন প্রজ্ঞাদেবীর পরিবারের লোকজন?
প্রজ্ঞাদেবীর মা ঝর্ণাদেবী পুলিশকে জানিয়েছেন, আমার মেয়ে আত্মহত্যা করতে পারে না। ও খুব ভাল মনের মেয়ে। ওর শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মূলত তিনি মেয়ের লিভ ইন পার্টনারকে দায়ী করেন। গোটা ঘটনাটি বারাকপুর (Barrackpore) থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে বারাকপুর কমিশনারেটের তদন্তকারী পুলিশ কৌশিক সর্বাধিকারীকে গ্রেফতার করেছে। শুক্রবার তাঁকে ১০ দিনের পুলিশ হেফাজত চেয়ে বারাকপুর আদালতে তোলা হয়। বিচারক ৬ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours