Migratory Bird: রায়গঞ্জের কুলিক পক্ষীনিবাসে ভিড় শুরু হল পরিযায়ী পাখিদের

North Dinajpur: কুলিক পক্ষীনিবাসে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে পরিযায়ী পাখিরা
Migratory_Bird
Migratory_Bird

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বর্ষা দেরিতে আসায় পাখির আগমনও এবার দেরিতে শুরু হয়েছে উত্তর দিনাজপুরের কুলিকে। মূলত মে-জুন মাসে পাখি চলে আসে রায়গঞ্জের কুলিক পক্ষীনিবাসে। কিন্তু, এবছর বৃষ্টি দেরিতে শুরু হওয়ায় পাখিদের আগমনে বিলম্ব হয়েছে বলেই মনে করছে বন দফতর থেকে শুরু করে পরিবেশ ও পাখি প্রেমী মানুষজন। তবে, পাখির আগমন দেরিতে হওয়ায় এবারে পাখির সংখ্যা কম হওয়ার আশঙ্কা  পরিবেশ ও পাখি প্রেমীদের। যদিও এই পাখিদের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ খাওয়ার সহ অন্যান্য ব্যবস্থা বন দফতর থেকে করা হয়েছে। তবে পাখির পরিমাণ কম না বেশি তা বোঝা যাবে গণনার পরই।

কোন ধরনের পরিযায়ী পাখি এই পক্ষীনিবাসে আসে

উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ শহরের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র কুলিক পক্ষীনিবাস। প্রতিবছর হাজার হাজার কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করে পরিযায়ী পাখিরা বাসা বাঁধে কুলিক বনাঞ্চলের গাছগুলিতে। উল্লেখ্য, রায়গঞ্জ শহর থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে ৩৪ নং জাতীয় সড়কের ধারে অবস্থিত সোহারই, ভট্টদিঘি ও আব্দুলঘাটা - এই তিনটি মৌজার প্রায় ১৩০ হেক্টর জায়গা জুড়ে  গড়ে উঠেছে কুলিক পক্ষীনিবাসটি। উত্তর-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে জুন মাসের শেষের থেকে মূলত  ইগ্রেট, কর্মোর‍্যান্ট, নাইট হেরন ও ওপেন বিল স্টর্ক  প্রজাতির পাখিরা এই পক্ষীনিবাসে আসে। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের পর্যটকেরা আসেন পাখিদের দেখতে। কুলিক পক্ষীনিবাস পরিযায়ী পাখিদের আগমনের নিরিখে বর্তমানে এশিয়া মহাদেশের মধ্যে উল্লেখযোগ্য স্থানে রয়েছে। এছাড়াও লিমকা বুক অফ রেকর্ডসেও প্রথমে জায়গা করে নিয়েছে এই পক্ষীনিবাস। শুধু মাত্র রায়গঞ্জ কিংবা এ জেলা নয় পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সারা বছরই মানুষজন এই পক্ষীনিবাসে ঘুরতে আসেন। প্রকৃতির কোলে সবুজের আবহে বসে পাখিদের গতিবিধি অনুভব করতে ভালোবাসেন সকলেই। তবে পাখি আসার সময়সীমার মধ্যে ভিড় অনেকটাই বেশী হয়। সাধারণত বছরের মে-জুন মাসে পরিযায়ী পাখিরা আসতে শুরু করে। ডিসেম্বর পর্যন্ত এখানে থেকেই প্রসব, শাবকদের লালন পালন এবং তাদের উড়তে শেখানো সহ যাবতীয় কর্মকাণ্ড সম্পন্ন করে জানুয়ারির দিকে আবার ফিরে যায়। তবে এবছর অন্যান্যবারের তুলনায় একটু দেরিতে পাখির আগমন শুরু হয়েছে কুলিক পক্ষীনিবাসে।

পরিযায়ী পাখি নিয়ে পরিবেশ প্রেমীদের কী বক্তব্য?

পাখি আসা শুরু হতেই পক্ষী নিবাসে আনাগোনা শুরু হয়েছে প্রকৃতিপ্রেমী মানুষজনদের। মূলত ওপেন বিল স্টর্ক, নাইট হেরন, ইগ্রেট ও কর্মরেন্ট এই ৪ প্রজাতির পাখি আসে এখানে। এছাড়াও পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য  রয়েছে দেশি ও বিদেশি মাছের পৃথক ২টি অ্যকুরিয়াম। বিদেশি মাছের মধ্যে রয়েছে উন্নত প্রজাতির রেড টেল ক্যাট ফিস, প্যারোট ফিস, অ্যাঞ্জেল ফিস প্রভৃতি। এছাড়াও পক্ষীনিবাসকে আরও আকর্ষণীয় করতে সেখানে রয়েছে অ্যাভিয়ারি বা মাইক্রো বনাঞ্চল যেখানে প্রজনন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করছে ফিন্স, ককটেল, জাভা সহ নানান প্রজাতির পাখি। সেই সঙ্গে রয়েছে নীলগাই ও টার্টল পণ্ড। পরিবেশ ও পাখিপ্রেমী গৌতম তান্তিয়া বলেন, অন্যান্য বারের চেয়ে এ বছর প্রায় এক মাস দেরিতে পাখি আসা শুরু হয়েছে। মূলত বৃষ্টি দেরিতে শুরু হওয়ার কারণেই পাখিদের আসার সময়টা পিছিয়েছে। যদিও বন দফতরের পক্ষ থেকে সমস্ত রকম ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে এবছর পাখিদের সংখ্যা কম হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।

বন বিভাগের আধিকারিকের কী বক্তব্য?

বনবিভাগের তরফে জানানো হয়েছে, গত বছরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী এই পক্ষীনিবাসে প্রায় ৯৯ হাজার ৩৯৩ পাখি এসেছিল। বিভাগীয় বনাধিকারিক দাওয়া এস. শেরপা জানিয়েছেন, এবছর বৃষ্টি দেরিতে শুরু হওয়ায় পাখি আসতে একটু দেরি হয়েছে। তবে পাখিদের যেন কোনওরকম অসুবিধা না হয় তারজন্য সব রকম ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আগস্ট মাসে পাখি গণনার কাজ শুরু হবে। তারপরই বোঝা যাবে এবছর কত পাখি এসেছে।

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles