মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: কালিয়াগঞ্জে দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রীর মৃত্যুকাণ্ডে রহস্য এখনও উদঘাটন হয়নি। শুক্রবারই রায়গঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার মহম্মদ সানা আখতার বলেছিলেন, ছাত্রীর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। ছাত্রীর দেহে কোনও আঘাতের চিহ্ন নেই। মৃতদেহের কাছে থেকে বিষের কৌট উদ্ধার হয়েছে। ইতিমধ্যে মৃতার পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত যুবক ও তার বাবাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এবারে ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় সিবিআই তদন্ত চাইলেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি তথা বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar)। এই ইস্যুতে আদালতে যাওয়ার পক্ষেই সওয়াল করলেন তিনি। তিনি বলেন, পুলিশ বলছে ছাত্রী বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছে। পুলিশ কীভাবে এটা বলতে পারে? গ্রামবাসীরা বলছে ওই ছাত্রীর সঙ্গে কুকর্ম করা হয়েছিল। তাঁরা দেখেছেন কী অবস্থায় পড়েছিল ছাত্রীর দেহ। মৃত ছাত্রীর পরিবার রাজি থাকলে সিবিআই তদন্তের জন্য হাইকোর্ট যাবে বিজেপি।
জেলা পুলিশ সুপারের অফিসে অবস্থান বিক্ষোভে কেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি (Sukanta Majumdar)?
শুক্রবার সকালে কালিয়াগঞ্জের সাহেবঘাটা সংলগ্ন গাঙ্গুয়া এলাকায় ছাত্রীর দেহ উদ্ধারের ঘটনায় রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় গোটা এলাকা। স্থানীয় বাসিন্দারাই পুকুরের ধার থেকে ছাত্রীর দেহ উদ্ধার করেন। স্থানীয়দের দাবি, ছাত্রীর শরীর বিবস্ত্র ছিল। এরপরই ছাত্রীকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ তোলে পরিবার। পুলিশকে লক্ষ্য করে এলাকার বাসিন্দারা ইট ছোঁড়ে বলে অভিযোগ। মৃতদেহ আটকে রেখে রাজ্য সড়ক অবরোধ করা হয়। রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে চলে বিক্ষোভ। পুলিশ টিয়ার গ্যাস ফাটিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। শনিবার সকাল থেকে এলাকা একেবারে থমথমে ছিল। এদিন কালিয়াগঞ্জের সাহেবঘাটা সংলগ্ন গাঙ্গুয়া এলাকায় মৃত কিশোরীর বাড়িতে যান বিজেপির প্রতিনিধি দল। প্রতিনিধি দলে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ সুকান্ত মজুমদারের (Sukanta Majumdar) সঙ্গে আরও দুই সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী, খগেন মুর্মু ছিলেন। পাশাপাশি বেশ কয়েকজন বিধায়কও ছিলেন। তাঁরা মৃত ছাত্রীর পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁদের পাশে থাকার তাঁরা আশ্বাস দেন। এরপর সেখান থেকে সরাসরি রায়গঞ্জের কর্ণজোড়ায় অবস্থিত পুলিশ সুপারের দফতরে এসে হাজির হয় বিজেপির প্রতিনিধি দল। কিন্তু, পুলিশের ভূমিকা নিয়ে এদিন তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar)। তিনি বলেন, এসপি অফিসে আসার খবর অনেক আগেই ফোন মারফৎ পুলিশ সুপারকে জানানো হলেও এদিন সেখানে কোনও পুলিশ কর্তার উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়নি। দফতের ঢোকার দরজা খোলা নিয়েও অভিযোগে সরব হন বিজেপি নেতৃত্ব। এরপর এসপি অফিসের ভিতরে অবস্থান ও ধর্ণায় বসে প়ড়েন রাজ্য সভাপতি সহ সাংসদ এবং বিধায়করা। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar) বলেন, এই ঘটনার তদন্তে তারা সন্তুষ্ট নন।
কালিয়াগঞ্জে আসছে জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের একটি টিম
পুলিশের বিরুদ্ধে ছাত্রীর মৃতদেহ টানতে টানতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। বিজেপি নেতা অমিত মালব্য ইতিমধ্যেই সেই ভিডিও টুইট করেছেন। অভিযোগ সামনে আসার পর অভিযোগ খতিয়ে দেখতে কালিয়াগঞ্জ যাচ্ছে জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের একটি টিম। চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃতা ছাত্রীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান প্রিয়াঙ্ক কানুনগো।
বিজেপি-র প্রতিনিধি দল বেরিয়ে যেতেই ফের উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কালিয়াগঞ্জ
বিজেপির প্রতিনিধি দল বেরিয়ে যেতেই শনিবার দুপুরে পুনরায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কালিয়াগঞ্জের সাহেবঘাটা মোড় এলাকা। আশেপাশের গ্রামবাসীরা জমায়েত হয়ে অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। স্থানীয় দোকানপাটগুলিতে ভাঙচুর চালানো হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটায়। বর্তমানে পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আছে। মোতায়েন রয়েছে বিরাট পুলিশ বাহিনী।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours