Howrah: পড়ুয়ার সংখ্যা শূন্য, শিক্ষক দশ জন! হাওড়ার স্কুলে আজব কাণ্ড, কী করছে প্রশাসন?

আছে শিক্ষক, নেই পড়ুয়া, হাওড়ার শিবপুরে রমরমিয়ে চলছে স্কুল!
Howrah_(4)
Howrah_(4)

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: স্কুলে মাত্র দশ জন শিক্ষিকা। দুজন অশিক্ষক কর্মচারী। প্রত্যেকেই নিয়ম করে প্রতি মাসে মোটা টাকা বেতন পাচ্ছেন। এই স্কুল চালু রাখতে রাজ্য সরকারকে গুণতে হচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। অথচ পড়ুয়ার সংখ্যা শূন্য। এমনই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে হাওড়ার (Howrah) শিবপুরের যমুনাবালা বালিকা বিদ্যালয়ে। তাই শিক্ষিকারা কার্যত আসি যাই মাইনে পাই পরিস্থিতিতে কাজ করে চলেছেন। এভাবে টাকা জলে দেওয়ার অর্থ খুঁজে পাচ্ছেন না এলাকাবাসী।

পড়ুয়াহীন স্কুলে এসে কী করেন শিক্ষকরা? (Howrah)

স্কুলটি রাজ্যের প্রশাসনিক হেড কোয়ার্টার নবান্ন থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে। স্কুলে প্রাথমিকের পাশাপাশি মাধ্যমিক বিভাগও চালু আছে। একটা সময় এই স্কুলে দুটি বিভাগে বেশ ভালই ছাত্রী ছিল। কিন্তু, গত কয়েক বছরে ছাত্রীর সংখ্যা কমতে থাকে। কোভিড পরিস্থিতির পর স্কুল খুললে পড়ুয়ার সংখ্যা তলানিতে ঠেকে যায়। এই মুহূর্তে প্রাথমিক বাংলা মাধ্যম বিভাগে শুধু ১৬ জুন পড়ুয়া আছে। প্রধান শিক্ষক ও সহ শিক্ষক মিলিয়ে তিনজন। বাকি সব বিভাগে পড়ুয়া শূন্য। জানা গিয়েছে, প্রাথমিকের ইংরেজি বিভাগে পড়ুয়ার সংখ্যা শূন্য। এই বিভাগে দুজন শিক্ষিকা রয়েছেন। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা মাধ্যমিক বিভাগে। সেখানে দশ জন শিক্ষিকা এবং দুজন অশিক্ষক কর্মচারী রয়েছে। ছাত্রী সংখ্যা সেখানেও শূন্য। ফলে, শিক্ষিকারা প্রতিদিন স্কুলে এলেও কার্যত কোনও ক্লাস না করেই বেতন পাচ্ছেন। তারা স্কুলে এসে বেশিরভাগ সময়ই কেউ মোবাইলে ব্যস্ত অথবা কেউ  গল্পের বই পড়ে সময় কাটাচ্ছেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা কী বললেন?

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, একটা সময় এই স্কুলের দুটি বিভাগে ভালো সংখ্যক পড়ুয়া ছিল। কিন্তু, কয়েক বছর পড়ুয়ার সংখ্যা অস্বাভাবিক হারে কমতে থাকে। কোভিডের  পর পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। তারা জানাচ্ছেন প্রাথমিকের হাতে গোনা পড়ুয়া থাকলেও মাধ্যমিক বিভাগে পড়ুয়ার সংখ্যা শূন্য। স্কুল বিল্ডিং এর অবস্থা জরাজীর্ণ। স্কুল প্রাঙ্গনে ঝোঁপঝাড়ে ভর্তি। চারদিকে আবর্জনার স্তুপ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। ক্লাসরুমগুলি স্যাতস্যাতে ও অন্ধকার। হাওড়ার (Howrah) কোণা এক্সপ্রেসওয়ের ধারে ওই স্কুলটি হওয়ায় সেখানে বাচ্চাদের পাঠাতে তারা ভয় পান। তার ওপরে স্কুল ভবনটির এতটাই জরাজীর্ণ অবস্থা যেকোনো মুহূর্তে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই দ্রুত মেরামতি দরকার। স্থানীয় বাসিন্দারা চাইছেন সরকার ব্যবস্থা নিক যাতে স্কুল যেন তার পুরানো অবস্থায় ফিরে আসে।

স্কুলের এক শিক্ষিকা কী বললেন?

এদিকে প্রাথমিকের এক শিক্ষক বলেন, আশেপাশে বেশ কয়েকটি স্কুল হয়ে যাওয়ায় এবং সামনে কোণা এক্সপ্রেসওয়ের কারণে অনেক অভিভাবকরা স্কুলে বাচ্চাকে পাঠাচ্ছেন না। এছাড়াও স্কুল বাড়ির অবস্থা ভালো নয়। মাধ্যমিক বিভাগের টিচার ইনচার্জ এ ব্যাপারে কিছু বলতে অস্বীকার করেন।

স্কুল কর্তৃপক্ষের কী বক্তব্য?

হাওড়া (Howrah) জেলা মাধ্যমিক বিভাগের ডিআই অজয় কুমার পাল জানিয়েছেন, ওই স্কুলটি সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। পড়ুয়া না থাকায় শিক্ষিকাদের অন্য স্কুলে সরিয়ে দেওয়া হবে।  ডিস্ট্রিক্ট প্রাইমারি স্কুল কাউন্সিলের চেয়ারম্যান কৃষ্ণ ঘোষ বলেন, হাওড়া শহর এলাকায় বেশ কিছু প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা কমে যাওয়ায় শিক্ষক শিক্ষিকাদের অন্য স্কুলে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তবে, স্কুলগুলোকে পুরোপুরি বন্ধ করা হচ্ছে না। ফের যদি পড়ুয়ারা স্কুলে ভর্তি হয় তবে স্কুলগুলোতে শিক্ষক দেওয়া হবে।

 

দেশের খবরদশের খবরসব খবরসবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles