মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আজ মোহিনী একাদশী (Mohini Ekadashi 2023)। বৈশাখ মাসের শুক্ল পক্ষের একাদশী তিথিটিকে বলা হয় মোহিনী একাদশী (Mohini Ekadashi 2023)। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে দিনটি অত্যন্ত শুভ। এই বিশেষ একাদশী তিথির আলাদা মাহাত্ম্যও রয়েছে। পরিবারের মঙ্গলকামনায় এইদিনে নানা রকমের শুভকাজের অনুষ্ঠান করা হয়। পুরাণ অনুসারে, মোহিনী একাদশীতে (Mohini Ekadashi 2023) মোহিনী রূপ অর্থাত্ নারী রূপে আবির্ভূত হয়েছিলেন ভগবান শ্রীবিষ্ণু। পণ্ডিতরা বলছেন, বিষ্ণুর অসংখ্য রূপের মধ্যে এই মোহিনী রূপই একমাত্র নারী রূপ। এই তিথিতে শ্রীবিষ্ণুর নারী-রূপের আরাধনা করা হয়। মনে করা হয়, মোহিনী একাদশীতে বিষ্ণু ও লক্ষ্মীর পুজো করলে অর্থ লাভ হয়।
মোহিনী একাদশী তিথি ও শুভক্ষণ
২০২৩ সালে, মে মাসের প্রথম দিনেই পড়েছে মোহিনী একাদশী। একাদশী তিথি শুরু হয়েছে ৩০ এপ্রিল রাত ৮টা ২৮ মিনিটে এবং পয়লা মে রাত ১০টা ০৯ মিনিটে শেষ হবে। উদয় তিথি অনুসারে একাদশী উদযাপিত হবে পয়লা তারিখ।
একাদশী তিথির দিন দু'টি শুভ যোগ তৈরি হচ্ছে - রবি যোগ সকাল ৫টা ৪১ থেকে সন্ধ্যা ৫টা ৫১ মিনিট পর্যন্ত থাকবে। আর, ব্রহ্ম মুহূর্ত থেকে বেলা ১১টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত থাকবে ধ্রুব যোগ।
পুজো বিধি
একাদশীর দিন (Mohini Ekadashi 2023) ব্রহ্ম মুহূর্তে ঘুম থেকে উঠে স্নান সেরে নিন। এর পরে কলশ স্থাপন করুন। শ্রী বিষ্ণুর মূর্তি স্নান করিয়ে সুন্দর করে সাজিয়ে দিন। নতুন জামাকাপড় পরান। ফুল, ফল, অক্ষত, মালা, চন্দন, হলুদ বস্ত্র, হলুদ মিষ্টি নিবেদন করুন। ধূপ ও প্রদীপ জ্বালান। সঠিক বিধি মেনে পূজার্চনা করুন। পুজোর সময় বিষ্ণু মন্ত্র জপ করুন। পুজো শেষে আরতি করুন।
পৌরাণিক আখ্যান...
পুরাণ অনুসারে, সমুদ্র মন্থনে অমৃতের ভাণ্ড উঠেছিল এবং তা নিয়ে দেবতা ও অসুরদের মধ্যে কাড়াকাড়ি শুরু হয়। অসুররা দেবতাদের কাছ থেকে অমৃত ভাণ্ড ছিনিয়ে নিতে সক্ষম হয়। এতে দেবতারা ভয় পেয়ে যান। এমতাবস্থায় দেবতারা নারায়ণের শরণাপন্ন হন, তখন বিষ্ণু এক অপরূপ সুন্দরী নারীর রূপ ধারণ করেন। বিষ্ণুর সেই মনোমোহিনী রূপে অসুররা মোহিত হয়ে পড়ে। সেই সুযোগে রূপে দ্বারা অসুরদের ভুলিয়ে তাদের থেকে অমৃত নেন বিষ্ণু। মোহিনী অবতার সত্ত্বেও বিষ্ণুকে চিনতে পেরে যান দুই অসুর, রাহু ও কেতু। অমৃত পান করার অভিলাসে, তারা দেবতার ছদ্মবেশে দেবতাদের মধ্যে ঢুকে পড়ে। তাদের চিনে ফেলে সূর্য ও চন্দ্র এবং বিষ্ণুকে তা জানান। বিষ্ণু সুদর্শন চক্র দিয়ে রাহু ও কেতুর মাথা শরীর থেকে কেটে আলাদা করে দেন। কিন্তু ততক্ষণে অমৃত রাহু ও কেতুর গলা পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছিল। অমৃতের দৌলতে তাদের মাথা থেকে গলা অবধি অমর হয়ে যায়। সূর্য ও চন্দ্রর প্রতি রাগে রাহু, কেতু সুযোগ পেলেই সূর্য ও চন্দ্রকে গিলে ফেলে। কিন্তু রাহু, কেতুর ধড় না থাকায়, সূর্য ও চন্দ্র বেরিয়ে আসেন। এই পৌরাণিক কাহিনীর উপর ভিত্তি করেই, পুরাণে সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণের কারণ ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours