মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আজ গণেশ চতুর্থী (Ganesh Chaturthi 2022)। প্রতি বছর ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষের চতুর্থী তিথিতে দেশজুড়ে সাড়ম্বরে গণেশ চতুর্থী (Ganesh Chaturthi) উদযাপিত হয়। আজ সারা দেশে পালন করা হচ্ছে গণেশ চতুর্থী। এই দিনটি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনেকেই সিদ্ধিদাতা গণপতির পুজো করে কষ্ট লাঘবের চেষ্টা করেন। গণপতির কৃপায় বহু কষ্টই লাঘব হতে পারে বলে মনে করা হয়। চতুর্দশী তিথিতে বিসর্জনের মাধ্যমে শেষ হবে এই উৎসব। আবির্ভাব দিবস থেকে বিসর্জন— মোট ১০ দিন গণেশ ভক্তরা পুজো, উপোস, প্রার্থনা, সঙ্গীত এবং নৃত্যের মধ্যে দিয়ে দিন নির্বাহ করেন। এই উৎসব অত্যন্ত পবিত্র।
গণেশ চতুর্থীর শুভ সময়
চতুর্থী তিথি শুরু: ৩০ অগাস্ট বিকাল ৩:৩৩ মিনিটে
চতুর্থীর তারিখ শেষ হবে: ৩১ অগাস্ট বিকাল ৩:২২ মিনিটে
গণেশ পুজোর মুহূর্ত: ৩১ অগাস্ট ১১.০৪ মিনিট থেকে ১৩.৩৭ মিনিট (সময়কাল: ২ ঘন্টা ৩৩ মিনিট)
গণেশ চতুর্থীর ব্রত পালন: ৩১ অগাস্ট
আরও পড়ুন: পুজোয় মঙ্গল ঘট কেন স্থাপন করা হয়, জানেন?
গণেশ উৎসবের তাৎপর্য
স্কন্দপূরাণ অনুযায়ী, শ্রী গণেশ জন্মগ্রহণ করেছিলেন ভাদ্রপদ মাসের শুক্লপক্ষের চতুর্থী তিথিতে। সমস্ত দেব-দেবীর মধ্যে গণেশ হলেন প্রথম পূজিত দেবতা। ভগবান শিব গণেশকে এই বর দিয়েছিলেন। যে কোনো শুভ কাজে এবং আচার-অনুষ্ঠানে প্রথমেই ভগবান গণেশের পূজা করা হয়। গণেশের পুজো করলে সমস্ত বাধা দূর হয়। এটা বিশ্বাস করা হয় যে ভাদ্রপদ মাসের শুক্লপক্ষের চতুর্থী থেকে এই মাসের চতুর্দর্শী তিথি পর্যন্ত ভগবান গণেশ পৃথিবীতে ১০ দিন অবস্থান করেন। গণেশ চতুর্থীতে প্যান্ডেল এবং বাড়িতে গণেশ স্থাপন করা হয়। কথিত আছে যে এই দিনগুলিতে যে ব্যক্তি বাড়িতে বসে ভক্তি ভরে গণেশের পূজা করেন, তার জীবন থেকে মানসিক চাপ দূর হয়। সুখ ও সমৃদ্ধি আসে।
গণেশ চতুর্থী পুজো-বিধি
গণেশ চতুর্থীর দিন সকালে স্নান সেরে বাড়ির মন্দিরে প্রদীপ জ্বালান। এরপর পুজো ও ব্রতর সঙ্কল্প নিন। এই দিনে শুভ সময়ে গণেশের মূর্তি প্রতিষ্ঠা করা হয়। ভক্তদের তাদের ইচ্ছানুযায়ী গণপতির মূর্তি স্থাপন করা উচিত। এরপর গঙ্গাজল দিয়ে প্রতিমাকে অভিষেক করুন। এবার গণেশকে ফুল ও দূর্বা ঘাস অর্পণ করুন। দূর্বা ভগবান গণেশের খুব প্রিয়। এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে দূর্বা নিবেদন করলে ভগবান গণেশ প্রসন্ন হন এবং ভক্তদের সমস্ত কষ্ট দূর করেন। ভগবান গণেশের পূজোর সময়, তাঁকে সিঁদুর লাগান এবং তাঁর প্রিয় ভোগ মোদক বা লাড্ডু নিবেদন করুন। পুজো শেষে আরতি করে তাঁকে প্রণাম করুন এবং তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। শেষে প্রসাদ বিতরণ করুন।
আরও পড়ুন: প্রদীপের মুখ কোনদিকে থাকা উচিত? নিয়মগুলি না জানলে হতে পারে অমঙ্গল!
কিন্তু গণপতির পুজোরও বহু নিয়ম আছে। পুজো করার জন্য সেই নিয়মগুলি ঠিক করে পালন করতে হয়। সেই নিয়মগুল পালন না করলে গণপতির কৃপা পাওয়া থেকে এত কিছুর পরেও বঞ্চিত থেকে যেতে পারেন কেউ কেউ। শাস্ত্র অনুসারে, দূর্বা ছাড়া গণপতির পুজো অসম্পূর্ণ বলে মনে করা হয়। এছাড়াও, কথিত আছে যে সিদ্ধিদাতাকে দূর্বা নিবেদন করলে তিনি দ্রুত প্রসন্ন হন এবং ভক্তদের সমস্ত কষ্ট দূর করেন।
ভগবান গণেশকে দূর্বা ঘাস নিবেদন করা অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়। দূর্বা ভগবান গণেশের প্রিয়। দূর্বা সবসময় জোড়ায় জোড়ায় নিবেদন করা হয়। এমন অবস্থায় দুটি দূর্বাকে যুক্ত করে একটি গিঁট তৈরি করা হয়। এমন অবস্থায় ২২টি দূর্বা যোগ করে ১১ জোড়া তৈরি করুন। যদি তা সম্ভব না হয়, তবে সিদ্ধিদাতাকে ৩ বা ৫ গাঁট দূর্বাও নিবেদন করা যেতে পারে।
গণেশের পুজোয় কখনই তুলসী পাতা ব্যবহার করা উচিত নয়। পুজোর সময় শুধুমাত্র সাদা বা হলুদ কাপড় পরুন। কালো রঙের কাপড় পরিধান করা থেকে বিরত থাকুন। এদিন চাঁদ দেখা উচিত নয়। বিশ্বাস, চাঁদ দেখলে কলঙ্কের শিকার হতে হয়।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।
+ There are no comments
Add yours