Ramakrishna 497: “সচ্চিদানন্দ নিজে রসাস্বাদন করতে রাধিকার সৃষ্টি করেছেন, সচ্চিদানন্দকৃষ্ণের অঙ্গ থেকে রাধা”

https://www.madhyom.com/ramakrishna-kathamrita-by-mahendranath-gupta-496th-copy

শ্রীরামকৃষ্ণ কাপ্তেন, নরেন্দ্র প্রভৃতি ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বরে

দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ

১৮৮৫, ১৩ই জুন

শ্রীরামকৃষ্ণ ও শ্রীরাধিকাতত্ত্ব—জন্মমৃত্যুতত্ত্ব

পণ্ডিতজী বসিয়া আছেন, তিনি উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের লোক।

শ্রীরামকৃষ্ণ (সহাস্যে, মাস্টারের প্রতি) — খুব ভাগবতের পণ্ডিত।

মাস্টার ও ভক্তেরা পণ্ডিতজীকে একদৃষ্টে দেখিতেছেন (Kathamrita)।

শ্রীরামকৃষ্ণ Ramakrishna (পণ্ডিতের প্রতি)—আচ্ছা জী! যোগমায়া কি?

পণ্ডিতজী যোগমায়ার একরকম ব্যাখ্যা করিলেন।

শ্রীরামকৃষ্ণ—রাধিকাকে কেন যোগমায়া বলে না?

পণ্ডিতজী এই প্রশণের উত্তর একরকম দিলেন। তখন ঠাকুর নিজেই বলিতেছেন, রাধিকা বিশুদ্ধসত্ত্ব, প্রেমময়ী! যোগমায়ার ভিতরে তিনগুণই আছে—সত্ত্ব রজঃ তমঃ। শ্রীমতীর ভিতর বিশুদ্ধসত্ত্ব বই আর কিছুই নাই। (মাস্টারের প্রতি) নরেন্দ্র এখন শ্রীমতীকে খুব মানে, সে বলে, সচ্চিদানন্দকে যদি ভালবাসতে শিখতে হয় তো রাধিকার কাছে শেখা যায়।

“সচ্চিদানন্দ নিজে রসাস্বাদন করতে রাধিকার সৃষ্টি করেছেন। সচ্চিদানন্দকৃষ্ণের অঙ্গ থেকে রাধা বেরিয়েছেন। সচ্চিদানন্দকৃষ্ণই ‘আধার’ আর নিজেই শ্রীমতীরূপে ‘আধেয়’,—নিজের রস আস্বাদন করতে—অর্থাৎ সচ্চিদানন্দকে ভালবেসে আনন্দ সম্ভোগ করতে।

“তাই বৈষ্ণবদের গ্রন্থে আছে, রাধা জন্মগ্রহণ করে চোখ খুলেন নাই; অর্থাৎ এই ভাব যে—এ-চক্ষে আর কাকে দেখব? রাধিকাকে দেখতে যশোদা যখন কৃষ্ণকে কোলে করে গেলেন, তখন কৃষ্ণকে দেখবার জন্য রাধা চোখ খুললেন। কৃষ্ণ খেলার ছলে রাধার চক্ষে হাত দিছলেন। (আসামী বালকের প্রতি) একি দেখেছ, ছোট ছেলে চোখে হাত দেয়?”

সংসারী ব্যক্তি ও শুদ্ধাত্মা ছোকরার প্রভেদ

পণ্ডিতজী ঠাকুরের কাছে বিদায় লইতেছেন।

পণ্ডিত—আমি বাড়ি যাচ্ছি।

শ্রীরামকৃষ্ণ(Ramakrishna) সস্নেহে—কিছু হাতে হয়েছে।

পণ্ডিত—বাজার বড় মন্দা হ্যায়। রোজগার নেহি! —

পণ্ডিতজী কিয়ৎক্ষণ পরে ঠাকুরকে প্রণাম করিয়া বিদায় লইলেন।

শ্রীরামকৃষ্ণ (মাস্টারের প্রতি) দেখো,—বিষয়ী আর ছোকরাদের কত তফাত। এই পণ্ডিত রাতদিন টাকা টাকা করছে! কলকাতায় এসেছে, পেটের জন্য,—তা না হলে বাড়ির সেগুলির পেট চলে না। তাই এর দ্বারে ওর দ্বারে যেতে হয়! মন একাগ্র করে ঈশ্বরচিন্তা করবে কখন? কিন্তু ছোকরাদের ভিতর কামিনী-কাঞ্চন নাই। ইচ্ছা করলেই ঈশ্বরেতে মন দিতে পারে।

“ছোকরারা বিষয়ীর সঙ্গ ভালবাসবে (Kathamrita) না। রাখাল মাঝে মাঝে বলত, বিষয়ী লোক আসতে দেখলে ভয় হয়।

“আমার যখন প্রথম এই অবস্থা হল, তখন বিষয়ী লোক আসতে দেখলে ঘরের দরজা বন্ধ করতাম।”

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share