Author: user

  • Durga Puja 2024: ষষ্ঠী থেকে দশমী, কোন কোন নিয়ম মেনে হয় মায়ের আরাধনা? জেনে নিন বিশদে

    Durga Puja 2024: ষষ্ঠী থেকে দশমী, কোন কোন নিয়ম মেনে হয় মায়ের আরাধনা? জেনে নিন বিশদে

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: হিন্দু বাঙালির (Hindu Bengali worship) সবথেকে বড় উৎসব হল দুর্গাপুজো (Durga Puja 2022)। সম্প্রতি কয়েক বছর আগে বাঙালির এই মহোৎসব পেয়েছে ইউনেস্কোর হেরিটেজ তকমাও। এই উৎসব শুধুই আর ধর্মীয় উৎসবে সীমাবদ্ধ নেই। এই উৎসব আজ হয়ে উঠেছে সর্বধর্ম সমন্বয়ের উৎসব। যদিও মহালয়া থেকেই পুজোর প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়। দেবীপক্ষের সূচনা থেকেই শুরু হয় পুজো। পুজোর এই কয়েক দিন, মানুষ তাঁর জীবনের সমস্ত দুঃখ-কষ্ট ভুলে উৎসবে মেতে ওঠেন। মহাষষ্ঠী থেকে মহাদশমী, দুর্গাপুজোর এই পাঁচ দিনে বহু নিয়ম মেনে মা দুর্গার আরাধনা করা হয়। জেনে নিন দুর্গা পুজোয় কবে কোন কোন নিয়ম পালন করা হয়।

    মহাষষ্ঠীতে দেবীর বোধন

    মহাষষ্ঠীর দিনই শুরু হয়ে যায় দেবীর আরাধনা। দেবীপক্ষের শুক্লা ষষ্ঠী তিথিতে মা দুর্গার বোধন করা হয়। এই রীতির সঙ্গে জড়িত আছে এক পৌরাণিক কাহিনি। বোধনের অর্থ জাগ্রত করা। জাগ্রত করা হয় দেবীকে। মা দুর্গার মৃন্ময়ী মূর্তিতে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হয়। কথিত আছে, শরৎকালে দুর্গাপুজোর সূচনা করেছিলেন শ্রীরামচন্দ্র। লঙ্কার রাজা রাবণকে পরাজিত করার জন্য দেবীর আশীর্বাদ কামনায়, তিনিই এই সময় দুর্গার অকাল বোধন করেন। বোধনের মাধ্যমেই দুর্গাকে আবাহন করা হয়। আর তাতে রামচন্দ্রকে সাহায্য করেছিলেন স্বয়ং ব্রহ্মা।

    মহাসপ্তমীতে নবপত্রিকা বা কলা বউ স্নান

    সপ্তমীতে কলা বউ স্নানের রীতি প্রচলিত আছে। একেই বলা হয় নবপত্রিকা। নবপত্রিকার অর্থ হল নটি পাতা। কিন্তু এই ক্ষেত্রে নটি গাছ দিয়ে নবপত্রিকা গঠন করা হয়। এই নটি গাছ মা দুর্গার নয় শক্তির প্রতীক। গাছগুলি হল-কলাগাছ, কচু, হলুদ, জয়ন্তী, বেল, ডালিম, অশোক, মান ও ধান। সপ্তমীর সকালে নবপত্রিকাকে স্নানের জন্য নদী বা পুকুরে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর লাল পাড় সাদা শাড়িতে মুড়িয়ে ঘোমটা দিয়ে বধূর আকারে সেটিকে গণেশের পাশে স্থাপন করা হয়। অনেকেই বলে থাকেন, নবপত্রিকার পুজো প্রকৃতপক্ষে শস্যদেবীর পুজো। ফসলের উর্বরতার সঙ্গে একটা প্রত্যক্ষ যোগ থাকে এই পুজোতে।

    মহাষ্টমীর অঞ্জলি

    মহাসপ্তমী, মহাঅষ্টমী, মহানবমী-এই তিনদিনই পুষ্পাঞ্জলি দেওয়া যায়। কিন্তু অষ্টমীর অঞ্জলিকে একটু বেশিই গুরুত্ব দেন বাঙালিরা। হাত ভরে ফুল নিয়ে পুরোহিতের বলা মন্ত্র উচ্চারণের পর, হাতে ধরে থাকা ফুল-পাতা দেবীর চরণে অর্পণ করা হয়। অঞ্জলি দেওয়ার মাধ্যমে মায়ের প্রতি নিজেদের বিশ্বাস, শ্রদ্ধা প্রকাশ করেন ভক্তরা। সকলেই মায়ের আশীর্বাদ চান। অশুভ শক্তির বিনাশ চেয়ে শুভ শক্তির প্রকাশ চান।

    কুমারী পুজো 

    অষ্টমী বা নবমী তিথিতে বহু জায়গায় কুমারী পুজোর রীতি পালিত হয়। শাস্ত্রমতে, এক থেকে ষোল বছর বয়স পর্যন্ত, যেসব মেয়েরা ঋতুচক্রে পা দেয়নি তাদের দেবী রূপে পুজা করা হয়।

    সন্ধি পুজো

    মহাঅষ্টমীর সমাপ্তি ও মহানবমীর সূচনার সন্ধিক্ষণে করা হয় সন্ধিপুজো। মনে করা হয়, মহাঅষ্টমী ও মহানবমীর সন্ধিক্ষণে দেবী চামুণ্ডা চণ্ড ও মুণ্ড নামে দুই অসুরকে বধ করেছিলেন। তাই এই সময় দেবীকে চামুণ্ডা রূপে পুজো করা হয়। সন্ধিপুজোর সমস্ত মন্ত্রই চামুণ্ডা দেবীর মন্ত্র। সন্ধিপুজোয় দেবীকে ১০৮ পদ্ম এবং ১০৮ দীপ জ্বালিয়ে পুজো করা হয়।

    বিজয়া দশমীতে সিঁদূর খেলা

    বিজয়া দশমীতেই সকলকে কাঁদিয়ে মা দুর্গা শ্বশুরবাড়ি পাড়ি দেন। বিজয়ার দিনে সিঁদুর খেলা দুর্গাপুজোর এক বিশেষ অনুষ্ঠান। পতিগৃহে রওনা দেওয়ার আগে উমাকে বরণ করার রীতি প্রচলিত রয়েছে। তাই, দশমীর দিন ঘরের মেয়েকে সিঁদূরে রাঙিয়ে, মিষ্টি মুখ করিয়ে, পান, ধান, দূর্বা দিয়ে বরণ করা হয়। দেবীর বরণের পরই গৃহবধূরা (Hindu Bengali worship) মেতে ওঠেন সিঁদূর খেলায়।

    দেবীর বিসর্জন

    প্রতিমা পুজার অন্তিম পর্যায় বিসর্জন। জলের মাধ্যমেই মাটির প্রতিমা প্রকৃতিতে লীন হয়। নৌকায় করে মাঝ নদীতে নিয়ে গিয়ে দুর্গা প্রতিমা বিসর্জন করা হয়। আর শুরু হয় মায়ের অপেক্ষা। পরের বছর মায়ের আগমনের এক বছরের অপেক্ষা। শুরু হয় দিন গোনা। 

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • UNHRC: সিএএ-র পক্ষে জোরালো সওয়াল মুসলিম মহিলার, কী বললেন জানেন?

    UNHRC: সিএএ-র পক্ষে জোরালো সওয়াল মুসলিম মহিলার, কী বললেন জানেন?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভোটব্যাঙ্কে ধস নামার ভয়ে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন, সংক্ষেপে সিএএ-র (CAA) বিরোধিতা করেছিল এ দেশের বেশ কিছু রাজনৈতিক দল। এদের মধ্যে সব চেয়ে বেশি সুর চড়িয়েছিল কংগ্রেস এবং তৃণমূল কংগ্রেস। কার্যত তাদের মুখেই ঝামা ঘষে দিলেন রাজস্থানের জয়পুরের এক মুসলিম মহিলা ফাইজা রিফাত। জেনেভায় রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের (UNHRC) ৫৭তম অধিবেশনে বক্তৃতা দেন তিনি। সেখানেই জোরালো সওয়াল করেন সিএএ-র পক্ষে।

    সিএএ (UNHRC)

    প্রসঙ্গত, সিএএ-র মাধ্যমে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে আফগানিস্তান, বাংলাদেশ বা পাকিস্তান থেকে ভারতে আসা হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান-সহ ছটি অমুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষকে নাগরিকত্ব প্রদান করা হয়। রিফাত বলেন, “যারা ঐতিহাসিকভাবে তাদের নিজ দেশে নিপীড়নের সম্মুখীন হয়েছে, তাদের আশ্রয় ও আইনি মর্যাদা প্রদান করে সিএএ।” বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর যে নৃশংস অত্যাচার হচ্ছে, সে প্রসঙ্গ তুলে ধরে রিফাত বলেন, “সিএএ-র বাস্তবায়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বাংলাদেশে হিন্দু সংখ্যালঘুরা চলমান নিপীড়ন ও নির্বাচনী হিংসার মুখোমুখি হচ্ছে। এই ব্যক্তিদের নিরাপদ পরিবেশে অভিবাসনের জন্য সিএএ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিকল্প প্রদান করে এবং তাঁদের মর্যাদার সঙ্গে বাঁচতে দেয়।”

    আরও পড়ুন: “পুজো কমিটিগুলোকে কম করে ১০ লাখ টাকা দিন”, রাজ্যকে কটাক্ষ আদালতের

    কী বলছেন রিফাত

    তিনি বলেন, “সিএএ নিপীড়ন থেকে পালিয়ে আসা প্রকৃত উদ্বাস্তু ও অবৈধ অভিবাসীদের মধ্যে পার্থক্য করতে সাহায্য করে। যার ফলে অবৈধ অভিবাসন রোধ করার সময় বৈধ আশ্রয়ের দাবিদারদের নাগরিকত্ব দেওয়া হয়।” রিফাতের যুক্তি (UNHRC), এই পার্থক্যের প্রয়োজন রয়েছে। কারণ এতে মাদক পাচারে যারা যুক্ত কিংবা অন্য কোনও অবৈধ কাজের সঙ্গে যুক্ত, তাদের চিহ্নিত করতে সাহায্য করে। বিশেষত, সীমান্ত এলাকায়। রিফাত বলেন, “সিএএ (CAA) দুর্বল সংখ্যালঘুদের জন্য একটা সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা। এই আইন তাদের শোষণ থেকে রক্ষা করে। ভারতীয় সীমানায় তাদের সুরক্ষাও নিশ্চিত করে (UNHRC)।”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Saranda Forest: এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ ও সেরা শাল অরণ্য সারান্ডা, মধ্যমণি কিরিবুরু আর মেঘাতাবুরু

    Saranda Forest: এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ ও সেরা শাল অরণ্য সারান্ডা, মধ্যমণি কিরিবুরু আর মেঘাতাবুরু

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সারান্ডা। এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ ও সেরা শাল অরণ্য (Saranda Forest)। পশ্চিমবঙ্গের প্রতিবেশী রাজ্য ঝাড়খণ্ডের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র এই সারান্ডা ফরেস্ট, যার মধ্যমণি হল কিরিবুরু আর মেঘাতাবুরু। এখান থেকে সামান্য দূরত্বে অবস্থিত শতাধিক বছরের প্রাচীন ‘মুর্গা মহাদেব’ মন্দির। স্থানীয় মানুষজন এই মন্দিরকে অত্যন্ত পবিত্র ও জাগ্রত বলে বিশ্বাস করেন। ভক্তদের বিশ্বাস, এখানে মানত করে পুজো দিলে সকল মনোস্কামনা পূরণ হয়।

    উৎসবের আবহে সেজে ওঠে এই মন্দির (Saranda Forest)

    ঝাড়খণ্ডের পশ্চিম সিংভূম জেলা ও ওড়িশার প্রায় সীমান্ত অঞ্চল নোয়ামুন্ডি। এই শহরের কেন্দ্রস্থল থেকে প্রায় তিন ৪-৫ কিমি দূরে টিসকো টাউনশিপের কাছে মুর্গা পাহাড়ে অবস্থিত মন্দিরটির শিল্পশৈলী অনেকটাই ওড়িশার মন্দিরগুলির শিল্পশৈলীর মতো। মন্দিরের প্রবেশের যে তোড়ণদ্বার রয়েছে, তার শীর্ষদেশে রয়েছে নীলকন্ঠ মহাদেবের নীল রঙের মুখাবয়ব। মূল মন্দিরটির প্রবেশদ্বারের দুই পাশে দুটি সিংহ মূর্তি। মন্দির চত্বরে রয়েছে একটি ষাঁড়ের মূর্তি, যাকে অনেকে নন্দী বলেন। অনেকটাই লাল এবং গেরুয়া রঙের মন্দিরটির অভ্যন্তরে পূজিত হচ্ছেন স্বয়ং ভগবান মহাদেব। প্রতিদিন এখানে অসংখ্য ভক্ত সমাগম হয় মহাদেবের কাছে পুজো দিয়ে মনোস্কামনা পূর্ণ করার অভিপ্রায় নিয়ে। শিবরাত্রি এবং দুর্গাপুজোর সময় এখানে প্রবল আড়ম্বরে এবং পবিত্রতার সঙ্গে পুজোপাঠের আয়োজন করা হয়। হাজার হাজার ভক্তের সমাগম হয় তখন। রীতিমতো উৎসবের আবহে সেজে ওঠে এই মন্দির।

    প্রকৃতিপ্রেমিক পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত প্রিয় 

    মন্দিরের কাছেই রয়েছে একটি সুন্দর ছোট্ট ঝর্ণা। অনেকেই এই ঝর্ণাধারায় স্নান করে তারপর পুজো দেন এই মন্দিরে। সবুজের গালিচায় মোড়া পাহাড়ের মাঝে অবস্থিত এই মন্দিরের আশেপাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও অসাধারণ। এই মন্দিরের কাছাকাছি থাকার জায়গা তেমন নেই । সাধারণত পর্যটকরা এই মন্দির ঘুরে নেন খুব কাছের সারান্ডা অরণের কিরিবুরু মেঘাতাবুরু থেকেই। এবার আসা যাক কিরিবুরু মেঘাতাবুরু (Kiriburu and Meghahatuburu) থেকে। প্রকৃতপক্ষে কিরিবুরু আর মেঘাতাবুরু দুটি আলাদা আলাদা পাহাড় চূড়া। একটি পাহাড় থেকে অন্যটিতে পায়ে হেঁটেই ঘুরে আসা যায়। সারান্ডার গভীর অরণ্যের অভ্যন্তরে অবস্থিত এই কিরিবুরুকে (Saranda Forest) বলা হয় ৭০০ পাহাড়ের দেশ। এখান থেকে নাকি আশেপাশের অঞ্চলের ৭০০টি পাহাড়ের চূড়া দেখা যায়। তাই এই নাম। সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৭০০ ফুটের মতো উচ্চতায় অবস্থিত এই বনাঞ্চল এক সময় ছিল সিংভূমের রাজাদের শিকার করার স্থান। বর্তমানে এই অঞ্চল প্রকৃতিপ্রেমিক পর্যটকদের কাছে এক অত্যন্ত প্রিয় পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।

    প্রাণভরে উপভোগ করা যায় অরণ্যের শিহরণ (Saranda Forest)

    শাল, মহুয়া, পলাশ, শিমুলের এই অরণ্যে দেখা মেলে বুনো শুকর, বন্য কুকুর, যাদের স্থানীয় ভাষায় বলে ঢোল, হাতি এবং জানা-অজানা হরেক রঙের, হরেক কিসিমের পাখির। এখানে এলে এক যাত্রায় দেখে নেওয়া পুন্ডিল ফলস, সান-সেট পয়েন্ট প্রভৃতি। আর প্রাণভরে উপভোগ করা যায় অরণ্যের শিহরণ। সঙ্গে এই মুর্গা মহাদেব মন্দির দর্শনের পুণ্য তো রইলই। তবে মনে রাখা দরকার, এখানে ঘোরাঘুরির জন্য সর্বদা সঙ্গে গাড়ি রাখা প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে সুবিধার এবং অপেক্ষাকৃত কম খরচ হয় প্যাকেজ ট্যুরে ঘুরে নিলে। সেক্ষেত্রে জঙ্গলে সাফারি, এবং অন্যান্য ঝক্কির হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়।

    কীভাবে যাবেন?

    কিরিবুরু থেকে মুর্গা মহাদেব (Saranda Forest) যাওয়ার পথ হবে এই রকম। কিরিবুরু-বড়া জামদা-নোয়ামুন্ডি। আর কিরিবুরু যাওয়ার জন্য প্রথমে আসতে হবে বড়া জামদা। কলকাতা থেকে আসছে হাওড়া-বরবিল জন শতাব্দী এক্সপ্রেস। বড়া জামদা থেকে গাড়ি বা ট্রেকারে সামান্য পথ কিরিবুরু। থাকার জন্য এখানে কিরিবুরুতে আছে সেইল (SAIL )-এর গেস্ট হাউজ। বুকিং-এর জন্য প্রয়োজনে যোগাযোগ করতে পারেন ০৯৮৩৬৪৬৮১৭৮ নম্বরে। আর গাড়ি বা প্যাকেজের প্রয়োজনে যোগাযোগ করতে পারেন ০৮৯৮১৬১২১০০ নম্বরে।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 142: “শ্রীরাধার ভাবে গান গাইতে গাইতে ঠাকুর সমাধিস্থ…চক্ষের দুই কোণ দিয়া আনন্দাশ্রু”

    Ramakrishna 142: “শ্রীরাধার ভাবে গান গাইতে গাইতে ঠাকুর সমাধিস্থ…চক্ষের দুই কোণ দিয়া আনন্দাশ্রু”

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে শ্রীযুক্ত রাখাল, প্রাণকৃষ্ণ, কেদার প্রভৃতি ভক্তসঙ্গে

    চতুর্থ পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ১লা জানুয়ারি

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের শ্রীরাধার ভাব

    ঠাকুর দক্ষিণ-পূর্ব বারান্দায় আসিয়া বসিয়াছেন। প্রাণকৃষ্ণাদি ভক্তগণও সঙ্গে সঙ্গে আসিয়াছেন। হাজরা মহাশয় বারান্দায় বসিয়া আছেন। ঠাকুর হাসিতে হাসিতে প্রাণকৃষ্ণকে বলিতেছেন—হাজরা একটি কম নয়। যদি এখানে বড় দরগা হয়, তবে হাজরা ছোট দরগা। (সকলের হাস্য)

    বারান্দার দরজায় নবকুমার আসিয়া দাঁড়াইয়াছেন। ভক্তদের দেখিয়াই চলিয়া গেলেন। ঠাকুর বলিতেছেন, অহংকারের মূর্তি।

    বেলা সাড়ে নয়টা হইয়াছে। প্রাণকৃষ্ণ প্রণাম করিয়া বিদায় গ্রহণ করিলেন—কলিকাতার বাটীতে ফিরিয়া যাইবেন।

    একজন বৈরাগী গোপীযন্ত্রে ঠাকুরের ঘরে গান করিতেছেন:

       নিত্যানন্দের জাহাজ এসেছে।
       তোরা পারে যাবি তো ধর এসে ॥
    ছয় মানোয়ারি গোরা, তারা দেয় সদা পারা,
       বুক পিঠে তার ঢাল খাঁড়া ঘেরা।
    তারা সদর দুয়ার আলগা করে রত্নমাণিক বিলাচ্ছে।

    গান—এই বেলা নে ঘর ছেয়ে।
       এবারে বর্ষা ভারি, হও হুঁশিয়ারি, লাগো আদা জল খেয়ে।
            যখন আসবে শ্রবণা, দেখতে দেবে না।
            বাঁশ বাখারি পচে যাবে, ঘর ছাওয়া হবে না।
    যেমন আসবে ঝটকা, উড়বে মটকা, মটকা জাবে ফাঁক হয়ে।
            (তুমিও যাবে হাঁ হয়ে)।

    গান—কার ভাবে নদে এসে, কাঙাল বেশে, হরি হয়ে বলছি হরি।
      কার ভাবে ধরেছ ভাব, এমন স্বভাব, তাও তো কিছু বুঝতে নারি।

    ঠাকুর গান শুনিতেছেন, এমন সময় শ্রীযুক্ত কেদার চাটুজ্যে আসিয়া প্রণাম করিলেন। তিনি আফিসের বেশ পরিয়া আসিয়াছেন, চাপকান, ঘড়ি, ঘড়ির চেন। কিন্তু ঈশ্বরের কথা হইলেই তিনি চক্ষের জলে ভাসিয়া যান। অতি প্রেমিক লোক। অন্তরে গোপীর ভাব।

    কেদারকে দেখিয়া ঠাকুরের একেবারে শ্রীবৃন্দাবনলীলা উদ্দীপন হইয়া গেল। প্রেমে মাতোয়ারা হইয়া দণ্ডায়মান হইলেন ও কেদারকে সম্বোধন করিয়া গান গাহিতেছেন:

        সখি, সে বন কতদূর।
    (যথা আমার শ্যামসুন্দর) (আর চলিতে যে নারি)

    শ্রীরাধার ভাবে গান গাইতে গাইতে ঠাকুর সমাধিস্থ। চিত্রার্পিতের ন্যায় দণ্ডায়মান। কেবল চক্ষের দুই কোণ দিয়া আনন্দাশ্রু পড়িতেছে।

    কেদার ভূমিষ্ঠ। ঠাকুরের চরণ স্পর্শ করিয়া স্তব করিতেছেন:

    হৃদয়কমলমধ্যে নির্বিশেষং নিরীহম্‌।
    হরিহরবিধিবেদ্যং যোগিভির্ধ্যানগম্যম্‌ ॥
    জননমরণভীতিভ্রংশি সচ্চিৎ স্বরূপম্‌।
    সকল ভুবনবীজং ব্রহ্মচৈতন্যমীড়ে ॥

    কিয়ৎক্ষণ পরে ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ প্রকৃতিস্থ হইতেছেন। কেদার নিজ বাটী হালিসহর হইতে কলিকাতায় কর্মস্থলে যাইবেন। পথে দক্ষিণেশ্বর কালী-মন্দিরে ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণকে দর্শন করিয়া যাইতেছেন। একটু বিশ্রাম করিয়া কেদার বিদায় গ্রহণ করিলেন।

    এইরূপে ভক্তসঙ্গে কথা কহিতে কহিতে বেলা প্রায় দু-প্রহর হইল। শ্রীযুক্ত রামলাল ঠাকুরের জন্য থালা করিয়া মা-কালীর প্রসাদ আনিয়া দিলেন। ঘরের মধ্যে ঠাকুর দক্ষিণাস্য হইয়া আসনে বসিলেন ও প্রসাদ পাইলেন। আহার বালকের ন্যায়—একটু একটু সব মুখে দিলেন।

    আহারান্তে ঠাকুর ছোট খাটটিতে একটু বিশ্রাম করিতেছেন। কিয়ৎক্ষণ পরে মারোয়াড়ী ভক্তেরা আসিয়া উপস্থিত হইলেন।

    আরও পড়ুনঃ “গঙ্গার যত নিকটে যাবে ততই শীতল বোধ হবে, স্নান করলে আরও শান্তি”

    আরও পড়ুনঃ “একটা ঢোঁড়ায় ব্যাঙটাকে ধরেছে, ছাড়তেও পাচ্ছে না—গিলতেও পাচ্ছে না…”

    আরও পড়ুনঃ “বিবেক, বৈরাগ্যরূপ হলুদ মাখলে তারা আর তোমাকে ছোঁবে না”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Durga Puja 2024: নবরাত্রিতে দেবী দুর্গাকে নয়টি রূপে পুজো করা হয়, জানুন দেবীর রূপ-মহিমা

    Durga Puja 2024: নবরাত্রিতে দেবী দুর্গাকে নয়টি রূপে পুজো করা হয়, জানুন দেবীর রূপ-মহিমা

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: রামায়ণে আছে ভগবান শ্রী রামচন্দ্র রাবণকে বধ করার জন্য দেবী দুর্গার (Durga Puja 2024) অকালবোধন করেছিলেন। এই নিয়ম মেনে আশ্বিন মাসে শারদীয়া দুর্গাপুজো করে থাকে গোটা বাঙালি সমাজ। কিন্তু দুর্গাপুজোর আসল সময় হল বসন্ত ঋতুতেই, যা দেবী বাসন্তীর পুজো হিসেবে পরিচিত। বাংলায় দুই পুজোই হয়ে থাকে, কিন্তু শরৎকালের পুজো হল প্রধান এবং বড় পুজো। নবরাত্রির সঙ্গে দেবী দশভূজার একটি বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। তিথি-নক্ষত্র মিলিয়ে একই রীতিনীতির মধ্যেই পুজো করা হয়ে থাকে। বসন্ত ঋতুতে চৈত্র মাসে যে নবরাত্রি (Navratri) পালন করা হয়, তাতে দেবী দুর্গাকে (Goddess Durga) নয়টি অবতারে পুজো করা হয়। শরৎকালের পুজোও হয় একই ভাবে।

    কবে পালিত হয় (Durga Puja 2024)?

    চৈত্র নবরাত্রি (Navratri) পালিত হয় চৈত্র মাসের শুক্ল পক্ষের প্রতিপদ তিথিতে। এই সময় মা দুর্গা  (Goddess Durga) নয় রকম অবতারে পূজিতা হন। এই পুজো পশ্চিমবঙ্গে যেমন বাসন্তী পুজো নামে পরিচিত, ঠিক তেমনি মহারাষ্ট্রের কোঙ্কণে চৈত্র নবরাত্রিকে গুড়ি পদওয়াও বলা হয়। আবার দক্ষিণ ভারতে নবরাত্রি উগাদি নামেও পরিচিত। নবরাত্রি (Durga Puja 2024) পালনের সঙ্গে বসন্তকালীন চৈতালি ফসল কাটার একটা আত্মিক সম্পর্ক রয়েছে। এতে ভক্তের মনের বাসনা পূর্ণ হয় বলে যেমন বিশ্বাস করা হয়, সেই সঙ্গে ভক্তদের মনেও বিশেষ আস্থা থাকে।  

    দেবীর নয় অবতার

    দেবী বাসন্তীর ন’টি অবতার হল, দেবী শৈলপুত্রী, দেবী ব্রহ্মচারিণী, দেবী চন্দ্রঘণ্টা, দেবী কুস্মাণ্ডা, দেবী স্কন্ধমাতা, দেবী কাত্যায়নী, দেবী কালরাত্রি, দেবী মহাগৌরী, দেবী সিদ্ধিদাত্রী। তিথি মেনে টানা নয় দিন ধরে পুজো করে মায়ের কাছে বর চেয়ে অশুভ শক্তির পরাজয় এবং শুভ শক্তির জাগরণের জন্য কামনা করা হয়। সংসারের শ্রীবৃদ্ধি, অর্থধন লাভ, সন্তানদের সাফল্য, পারবারিক সুখ সমৃদ্ধি এবং নারী শক্তির জাগরণের আশায় ভক্তরা এই নবরূপে দেবী বাসন্তী মায়ের পুজো করা হয়ে থাকে। বলা হয়ে থাকে, দেবী দুর্গা (Durga Puja 2024) মা নৌকাতে করে পরিবারের সঙ্গে মর্ত্যে বাপের বাড়িতে আসেন। নবরাত্রির পর আবার কৈলাসে পাড়ি দেন মা দুর্গা।

    দেবী শৈলপুত্রী

    দেবী শৈলপুত্রী হলেন হিমালয়ের কন্যা। তাঁর স্বামী হলেন ভগবান শিব। তাঁর দুই সন্তান কার্তিক এবং গণেশ। দক্ষরাজের কন্যা হলেন সতী। সতীর অপর নাম শৈলপুত্রী। এই দেবীর (Durga Puja 2024) পুজো করা হয় নবরাত্রির (Chaitra Navratri 2023) প্রথম দিনে।

    দেবী ব্রহ্মচারিণী

    দেবী ব্রহ্মচারিণী হলেন মা দুর্গার (Goddess Durga) দ্বিতীয় অবতার। তাঁর পুজো করা হয় নবরাত্রির দ্বিতীয় দিনে। দেবী দুর্গার তপস্যার প্রতীক হলেন দেবী ব্রহ্মচারিণী। তিনি ভগবান ব্রহ্মার মার্গের পথে সাধনা করে সিদ্ধিলাভ করে ছিলেন। এই দেবীর সাধানায় পরিবারে মঙ্গলকামনা এবং বিদ্যা-বুদ্ধির প্রাপ্তি হয়।

    দেবী চন্দ্রঘণ্টা

    দেবী চন্দ্রঘণ্টা হলেন দেবী দুর্গার (Goddess Durga) তৃতীয় রূপ। বাঘের উপর উপবিষ্ট থাকেন স্বয়ং দেবী। অসুর বিনাশিনী দেবী। তাঁর দশ হাতে পদ্ম, গদা, ত্রিশূল, তলোয়ার, তীরধনুক ইত্যাদি দশ অস্ত্রে সুসজ্জিত থাকে। দেবীর মস্তকে অর্ধচন্দ্র অবস্থান করে। তাই দেবীকে চন্দ্রঘণ্টা নামে ডাকা হয়। এই দেবী অভয়ার প্রতীক।

    দেবী কুস্মাণ্ডা

    দেবী কুস্মাণ্ডা হলেন চতুর্থ অবতার। এই দেবী (Durga Puja 2024) স্বয়ং ব্রহ্মাণ্ডকে সৃষ্টি করেছেন। তাঁর অনাহত চক্রে মানুষকে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী করেন। এই দেবীর আরাধনায় পারিবার সুস্থ এবং রোগমুক্ত থাকে।

    দেবী স্কন্দমাতা

    দেবী স্কন্ধ হলেন পঞ্চম অবতার। তিনি ভক্তের কাছে মুক্তি এবং শক্তির প্রতীক। তিনি এই রূপে সিংহবাহনা। ত্রিনয়নী এবং চারটি মস্তকে সজ্জিত। স্কন্দের জননী হওয়ায় তাঁকে স্কন্দমাতা বলা হয়। এই দেবীর পুজোতে অশুভ শক্তির বিনাশ হয়।

    দেবী কাত্যায়নী

    দেবী কাত্যায়নী হলেন মহিষাসুরমর্দিনী (Durga Puja 2024)। তিনি হলেন মায়ের ষষ্ঠ অবতার। সকল অশুভ শক্তিকে পরাজয় করে অসুরদের বিনাশ করে থাকেন। বৈদিক যুগে কাত্যায়ন নামে এক ঋষি ছিলেন। সেই সূত্রেই এই নামকরণ হয়েছে কাত্যায়নী।

    দেবী কালরাত্রি

    দেবী কালরাত্রি হলেন দুর্গার (Goddess Durga) সপ্তম অবতার। সব রকম রাক্ষস এবং ভূতেদের বিনাশ করে থাকেন এই দেবী। অসুর বিনাশিনী উগ্ররূপিণী রূপ অশুভ শক্তিকে স্বমূলে উৎখাত করেন।

    দেবী মহাগৌরী

    মহাগৌরী হলেন দেবীর অষ্টম অবতার। তিনি হলেন ভক্তের সমৃদ্ধি এবং সুখ প্রদানের দেবী। অর্থ সমৃদ্ধি এবং কল্যাণময় বার্তা আসে।

    দেবী সিদ্ধিদাত্রী

    সিদ্ধিদাত্রী (Durga Puja 2024) দেবী হলেন মহাসিদ্ধি প্রদানের দেবী। নবরাত্রিতে (Navratri) দেবী দুর্গার নবম অবতার এবং ভগবান শিবের পত্নী। তাঁকে সিদ্ধিদাত্রীকে বলা হয় শিবের অর্ধাঙ্গিনী হিসেবে।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Durga Puja 2024: দেবী দুর্গা ও তাঁর সন্তানদের সঙ্গে থাকা বাহনগুলির পৌরাণিক তাৎপর্য কি জানেন?

    Durga Puja 2024: দেবী দুর্গা ও তাঁর সন্তানদের সঙ্গে থাকা বাহনগুলির পৌরাণিক তাৎপর্য কি জানেন?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: শরৎকালে প্রতি বছর মা দুর্গা (Durga Puja 2024) কৈলাস থেকে মর্তে বাপের বাড়িতে আসেন সন্তানদের সঙ্গে নিয়ে। মা দুর্গা এবং তাঁর সন্তানদের সঙ্গে আসেন বাহনগুলিও। ইঁদুর আসে গণেশের সঙ্গে, হাঁস আসে মা সরস্বতীর সঙ্গে, পেঁচা আসে মা লক্ষ্মীর সঙ্গে, ময়ূর আসে কার্তিকের সঙ্গে এবং স্বয়ং মা দুর্গা আসেন সিংহের পিঠে চড়ে। বাহনগুলির পৌরাণিক কাহিনিতে যাওয়ার আগে বলা দরকার, ভারতীয় উপমহাদেশে প্রকৃতি পুজোর রীতি বৈদিক যুগ থেকেই ছিল। মাটি, অগ্নি, বায়ু, নদী, গাছ সবকিছুই পুজো করা হত ওই যুগে। একটি মন্ত্রে আছে-

    গঙ্গেচযমুনেচৈব
    গোদাবরীসরস্বতী।
    নর্মদে সিন্ধু কাবেরী জলস্মিনসন্নিদ্ধিম কুরু।।

    অর্থাৎ ভারতীয় সভ্যতায় গাছপালা, নদনদীর সঙ্গে সঙ্গে জীবজন্তুও মানুষের দৈনন্দিন কাজে উপকারী বলেই গণ্য হয়। এই ধারণা থেকেই বাহন হিসেবে হয়তো তারাও পূজিত হয়। এবার আসা যাক পৌরাণিক কাহিনিগুলিতে।

    মা দুর্গার বাহন সিংহ (Durga Puja 2024)

    পুরাণ অনুযায়ী (Mythological Significance)-দেবী পার্বতী (Durga Puja 2024) হাজার বছর ধরে তপস্যা করেছিলেন শিবকে তাঁর স্বামী হিসেবে পাওয়ার জন্য। তপস্যার কারণে দেবী অন্ধকারে মিশে যান। বিয়ের পর পার্বতীকে মহাদেব কালী বলে সম্বোধন করলে দেবী তৎক্ষণাৎ কৈলাস ত্যাগ করে ফের তপস্যায় মগ্ন হয়ে যান। তপস্যা রত দেবীকে শিকার করার ইচ্ছায় এক ক্ষুধার্ত সিংহ তাঁর দিকে আসতে শুরু করে। কিন্তু দেবীকে দেখে সেখানেই চুপ করে বসে যায় সে। সেই সময় বসে বসে সিংহ চিন্তা করতে থাকে, দেবী তপস্যা থেকে যখন উঠবেন, তখন তিনি খাবার হিসেবে গ্রহণ করবেন। এর মধ্যে বহু বছর কেটে যায়, কিন্তু সিংহ তার নিজের জায়গা থেকে নড়ে না। এদিকে দেবী পার্বতীর তপস্যা সম্পন্ন হওয়ার পর মহাদেব আবির্ভূত হলে পার্বতীকে গৌরবর্ণ বলে বর্ণনা করেন। যে সিংহটি দেবীকে শিকার করতে এসেছিল, তাকেই বাহন হিসেবে গ্রহণ করেন দেবী। কারণ দেবীর জন্য অনেক বছর অপেক্ষা করেছিল সিংহ। এরপর পার্বতীর বাহনকে সিংহ বলে মনে করা হয়। আবার কালিকাপুরাণ অনুযায়ী, শ্রীহরি দেবীকে বহন করছেন। এই হরি শব্দের এক অর্থ সিংহ। আবার শ্রীশ্রীচণ্ডীতে উল্লেখ আছে গিরিরাজ হিমালয় দেবীকে সিংহ দান করেন। শিবপুরাণ বলে, ব্রহ্মা দুর্গাকে বাহনরূপে সিংহ দান করেছেন। সিংহ হলো শৌর্য, পরাক্রম, শক্তির প্রতীক। অসুরদের বিনাশকারী বাহন সিংহ।

    গণেশের বাহন ইঁদুর

    স্বর্গে দেবলোকের সভায় গান গেয়ে সকলের মনোরঞ্জন করতেন ক্রঞ্চ নামে এক গন্ধর্ব। একদিন বামদেব নামে এক ঋষি এসে উপস্থিত হন সেই সভায়। তিনি গান করতে থাকেন। সেই গান শুনে নিজের হাসি চাপতে পারেননি গন্ধর্ব ক্রঞ্চ। সেই হাসি দেখে ফেলেন বামদেব। সঙ্গে সঙ্গে ক্রোধান্বিত হয়ে পড়ে তিনি ক্রঞ্চকে অভিশাপ দেন। অভিশাপের ফলে ক্রঞ্চ ইঁদুর হয়ে যান। ঋষি অভিশাপ দেন, কোনও দিন আর গান গাইতে পারবেন না ক্রঞ্চ। ক্রঞ্চ নিজের ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চান। কিন্তু তাতে বিশেষ ফল হয়নি। তিনি ইঁদুর হয়ে যান এবং মর্ত্যে নেমে আসেন। তবে মুনি বলেছিলেন কোনও দিন যদি গণেশ তাঁকে বাহন করেন তা হলে মুক্তি মিলবে। মর্তলোকে তিনি যেখানে নেমেছিলেন, কাছেই ছিল পরাশর মুনির কুটির। ইঁদুর ক্রঞ্চ সেখানেই নিজের খাদ্যের সন্ধানে যেতে শুরু করেন। এদিকে ইঁদুরের উৎপাতে অতিষ্ট হয়ে ওঠেন কুটিরবাসীরা। অপর দিকে একদিন গণেশ সেই মুনির কুটিরে পৌঁছন। সেখানে জানতে পারেন ইঁদুরের কুকীর্তির কথা। তখন তাকে ধরতে উদ্যত হন গণেশ। অবশেষে ধরেও ফেলেন। কিন্তু ক্রঞ্চ নিজের পরিচয় দিয়ে সব কথা বলেন গণেশকে। বলেন, বামদেব বলেছিলেন যে স্বয়ং দুর্গা (Durga Puja 2024) পুত্র গণপতি যদি তাকে তাঁর বাহন করেন, তবেই ঘুচবে তাঁর দুঃখ। এ কথা শুনে ইঁদুরকেই তিনি নিজের বাহন হিসেবে স্বীকৃতি দেন।

    মা লক্ষ্মীর বাহন পেঁচা

    পৌরাণিক (Mythological Significance) গল্প অনুযায়ী, যখন দেব-দেবীরা প্রাণীজগতের সৃষ্টি করেছিলেন তখন তাঁরা পৃথিবী ভ্রমণে আসেন। সেই সময় পশু ও পাখিরা  দেবতাদের ধন্যবাদ জানায়। পশু ও পাখিরা বলতে থাকে, আপনারা যেহেতু আমাদের তৈরি করেছেন তাই আপনাদের বাহন হয়ে আমরা পৃথিবীতে থাকব। সেই সময় দেবতারা নিজেদের বাহন পছন্দ করে নেন। যখন দুর্গা কন্যা (Durga Puja 2024) লক্ষ্মীর নিজের বাহন বেছে নেওয়ার সময় আসে, তখন তিনি বলেন আমি যেহেতু রাতে পৃথিবীতে আসি তাই রাতে যে প্রাণী দেখতে পায় সেই হবে আমার বাহন। এরপর পেঁচা হয়ে ওঠে দেবী লক্ষ্মীর বাহন।

    কার্তিকের বাহন ময়ূর

    তারকাসুরকে বধ করেছিলেন দেবসেনাপতি কার্তিক। পৌরাণিক কাহিনী মতে, মৃত্যুর আগে তারকাসুর কার্তিকের বাহন হিসেবে থাকতে চেয়েছিল। ময়ূরের ছদ্মবেশে কার্তিককে আক্রমণও করেছিল যুদ্ধ ক্ষেত্রে তারকাসুর। কথিত আছে ওই ময়ূরটিই হল দুর্গা (Durga Puja 2024) পুত্র কার্তিকের বাহন।

    সরস্বতীর বাহন হাঁস

    হাঁস নাকি জল, স্থল, অন্তরীক্ষে থাকতে পারে। জ্ঞান ও বিদ্যার দেবীকেও এই তিনটি জায়গায় থাকতে হয় জ্ঞান ও বিদ্যাদানের জন্য। তাই বাহন হিসেবে হাঁসকেই বেছে নিয়েছেন দেবী দুর্গার (Durga Puja 2024) কন্যা সরস্বতী। একই ভাবে হংস শব্দের ‘হং’ এবং ‘স’ এই দুটি শব্দের মধ্যে জাগতিক শক্তি এবং শাক্তির আধারের মহাজ্ঞান গ্রন্থিত হয়ে রয়েছে। তাই হংস বিদ্যাদেবীর বাহন হয়ে মহাপ্রজ্ঞার প্রতীক।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Durga Puja 2024: দশমীর দিনেই অপরাজিতা পুজো করতেন রাজারা! কেন জানেন?

    Durga Puja 2024: দশমীর দিনেই অপরাজিতা পুজো করতেন রাজারা! কেন জানেন?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সাধারণত নবরাত্রির পরেই এই অপরাজিতা পুজোর অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। অবশ্য উদ্দেশ্য বিজয়সংকল্পের পুজো। প্রাচীনকাল থেকেই হিন্দু রাজারা যুদ্ধে জয়ী হতে দেবী শক্তির আরাধনা করতেন। দুর্গাপুজোর (Durga Puja 2024) দশমীর দিনেই এই অপরাজিতা পুজো অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। সকাল সকাল স্নান সেরে এক্কেবারে পুজোতে বসে পড়তে হয়। বাড়ির পুজোর ক্ষেত্রে একটু আবেগ বেশি থাকে। এরপর চলে সিঁদুর খেলা, মন্ত্রপাঠ, ঘট বিসর্জনের রীতি। কিন্তু এসব চলার মধ্যেই অপরাজিতা গাছের পুজো হয়। পুজো শেষে অপরাজিতা (Aparajita Puja) লতা হাতে জড়িয়ে নেওয়া হয়।  

    কৌটিল্য কী বলেছেন(Durga Puja 2024)?

    অপরাজিতা (Aparajita Puja) গাছের পুজো কেন হয়? কেনই বা অপরাজিতা লতা আমরা বাঁধি নিজেদের হাতে। কার্যত দেবী দুর্গার (Durga Puja 2024) দশমীর পুজোতে বিজয়লাভের সংকল্প বা প্রতিজ্ঞা নিয়ে হয় অপরাজিতা পুজো। কথিত রয়েছে, আগেকার দিনে নবরাত্রির পরই রাজারা যুদ্ধযাত্রা করতেন। দিনটা হত বিজয়া দশমীর দিনেই। যুদ্ধের জন্য এই সময়টাকেই বেছে নিতেন রাজারা। তার অবশ্য একটা কারণ ছিল। আচার্য চাণক্য বা কৌটিল্য তাঁর ‘অর্থশাস্ত্র’-এ লিখেছেন, এই সময় হল যুদ্ধযাত্রার শ্রেষ্ঠ সময়। পণ্ডিত রঘুনন্দন তাঁর ‘তিথিতত্ত্ব’ গ্রন্থেও একই কথা বলেছেন। ওখানে বলা হয়, রাজা যদি দশমী তিথির পর যুদ্ধযাত্রার  সূচনা করেন, তাহলে পরাজয় সম্ভব নয়। তাই যুদ্ধে অপরাজেয় থাকতে এদিনেই যাত্রা করতেন রাজারা। বিজয়কে আলিঙ্গনের প্রত্যাশা নিয়েই করা হত অপরাজিতা পুজো। একই সঙ্গে চলত রাজাদের বিজয়কে বরণের রীতিনীতি। এই ধারা আজও প্রতীকী রূপে প্রবহমান।

    ফুল, বেলপাতা দিয়ে পুজো করা হয়

    সাদা অপরাজিতা গাছকে বিজয়া দশমীর পুণ্য তিথিতে পুজো করা হয়। গাছটিকে দেবীরূপে কল্পনা হয়, ঠিক যেমনটা মহা সপ্তমীতে (Durga Puja 2024) নবপত্রিকাকে স্নান করানোর সময় উপাচার করা হয়। নবপত্রিকা যেমন নব দুর্গার প্রতীক, মা দুর্গার বৃক্ষরূপ ভেবে পুজো করা হয়, একই ভাবে অপরাজিতা গাছকে দেবীর বিজয়ের প্রতীকরূপে পুজো করা হয়। অশুভ শক্তির উপর শুভ শক্তির জয়ের প্রতীক, আসুরিক সমস্ত শক্তির বিনাশের প্রতীক। ফুল, বেলপাতা দিয়ে পুজো হয় অপরাজিতা গাছের। অনেকে আবার ঘটস্থাপন করেও পুজো করে থাকেন। পুজোর ফললাভের জন্য হাতে অপরাজিতা লতা বাঁধার রীতির কথা তো আগেই বলা হয়েছে।

    রামের মতো বিজয় সঙ্কল্প

    পুজোর (Durga Puja 2024) সময় দেবীর উদ্দেশে প্রার্থনা জানানো হয়, ‘‘হে অপরাজিতা দেবী, তুমি সর্বদা আমার বিজয় যাত্রাকে অক্ষুণ্ন রাখ। শত্রুপক্ষকে  বিনাশ করার মতো পর্যাপ্ত ক্ষমতা আমাকে প্রদান করো। অশুভ সমস্ত শক্তি যেন পরাভূত হয় আমার কাছে। আমাকে তুমি অপ্রতিরোধ্য করে তোল। আমার সমস্ত আত্মীয়, পরিবার, পরিজন , মিত্রদের  মঙ্গল করো। শত্রুপক্ষকে ধ্বংস করে বিজয় লাভের জন্য আমি তোমাকে দক্ষিণ হাতে ধারণ করছি। তুমি শত্রু নাশ করে নানা সমৃদ্ধির সাথে আমাকে বিজয় দান কর। আমার জীবন যেন সুখ, স্বাচ্ছন্দ্য, সমৃদ্ধিতে পরিপূর্ণ হয়। রামচন্দ্র যেমন অত্যাচারী রাবণের উপর বিজয় লাভ করেছিলেন, আমিও যেন সেইরূপ জয় লাভ করতে পারি”।

    দশমীতে অস্ত্রপূজন হয়

    রামায়ণে দশমীর (Durga Puja 2024) তিথিতেই রাবণ বধ হয়েছিলেন। আবার এই তিথিতেই মহিষাসুর বধ হন। একই ভাবে মহাভারতে এই তিথিতেই পান্ডবরা অজ্ঞাত বাস শেষে শমী বৃক্ষের কোটর থেকে তাঁদের লুকিয়ে রেখে যাওয়া অস্ত্র বের করেন। দশমীতে অস্ত্রপূজন করা হয়। আবার এই তিথিতেই কুবের অযোধ্যায় স্বর্ণবৃষ্টি করেছিলেন বলেই পৌরাণিক মত রয়েছে। বিজয়, সমৃদ্ধির জন্য মাতৃ আরাধনা করেই যুদ্ধ যাত্রার রীতি ছিল প্রাচীন ভারতীয় হিন্দু রাজাদের মধ্যে।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Heart Disease: ২০ থেকে ২৫ বছর বয়সি ছেলেমেয়েদের মধ্যেও বাড়ছে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা!

    Heart Disease: ২০ থেকে ২৫ বছর বয়সি ছেলেমেয়েদের মধ্যেও বাড়ছে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা!

    তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল

    বিশ্ব জুড়ে বাড়ছে হৃদরোগের ঝুঁকি! বাদ নেই ভারত। ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রতি বছর সময়ের আগেই ভারতীয়দের মৃত্যুর অন্যতম বড় কারণ হৃদরোগ। বিশেষত ভারতীয় পুরুষদের মধ্যে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ছে। হার্ট অ্যাটাকে (Heart Disease) আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যাও বাড়ছে। তরুণ প্রজন্মের হৃদরোগ বেড়ে যাওয়া যথেষ্ট উদ্বেগজনক বলেই মনে করছে চিকিৎসক মহল। তাই এ বছর ওয়ার্ল্ড হার্ট ডে উপলক্ষে চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, সতর্কতাই পারবে হৃদরোগের বড়‌ ঝুঁকি রুখতে। তাঁরা জানাচ্ছেন, সময় মতো হৃদযন্ত্রের খেয়াল রাখতে পারলে, হার্ট অ্যাটাকের মতো রোগের মোকাবিলা সহজ হয়। কিন্তু অধিকাংশ সময়েই অসচেতনতার জেরে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ছে।

    তরুণ প্রজন্মকে নিয়ে কেন বাড়তি উদ্বেগ? (Heart Disease)

    সম্প্রতি এক সর্বভারতীয় সমীক্ষার রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, ভারতে ৫৫ বছর বয়সের আগেই ৫০ শতাংশ ভারতীয় হৃদরোগে আক্রান্ত হন। বিশেষত করোনা পরবর্তীকালে এই সমস্যা কয়েকগুণ বেড়েছে। তিরিশ থেকে চল্লিশ বছর বয়সি ভারতীয়দের মধ্যে হৃদরোগের ঝুঁকি কয়েকগুণ বেড়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ভারতীয় পুরুষদের মধ্যে এই রোগের প্রকোপ বেড়েছে। এই পরিসংখ্যান যথেষ্ট উদ্বেগজনক বলেই মনে করছে চিকিৎসকদের একাংশ। তারা জানাচ্ছে, ২০ থেকে ২৫ বছর বয়সি ছেলেমেয়েদের মধ্যে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা বাড়ছে। দেড় দশক আগেও‌ এই ধরনের শারীরিক সমস্যা ৫০ বছর বয়স পার করেই দেখা দিত। তার সঙ্গে কম বয়সিদের মধ্যে ডায়াবেটিস এবং কোলেস্টেরলের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। সব মিলিয়ে তরুণ প্রজন্মের স্বাস্থ্য সমস্যা দেশের জন্য যথেষ্ট উদ্বেগজনক বলেই মত বিশেষজ্ঞ মহলের।

    কী পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা?

    ওয়ার্ল্ড হার্ট ডে উপলক্ষে দেশ জুড়ে নানান কর্মসূচি নিয়েছেন চিকিৎসকেরা। মানুষকে হৃদরোগ (Heart Disease) সম্পর্কে ওয়াকিবহাল করতে নানান কর্মশালার আয়োজন করেছেন তাঁরা। জীবন যাপন স্বাস্থ্যকর থাকলে হার্ট অ্যাটাক মোকাবিলা সহজ, এই সব কর্মশালায় সে সম্পর্কেও সাধারণ মানুষকে সজাগ করা হচ্ছে। তবে, বংশানুক্রমিক হৃদরোগের ইতিহাস থাকলে, নিজের উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরল, ডায়াবেটিসের মতো সমস্যা থাকলে বাড়তি সতর্কতা জরুরি। নিয়মিত শারীরিক পরীক্ষাও জরুরি। যাতে হৃদযন্ত্রের কোনও সমস্যা হলে প্রথম পর্বেই রোগ চিহ্নিত হয়। তাহলে বড় বিপদ আটকানো সহজ হবে।

    তরুণ প্রজন্মকে কোন ‘তিন মন্ত্রে’ হৃদযন্ত্রের যত্ন শেখাচ্ছে বিশেষজ্ঞ মহল? 

    চিকিৎসকদের একাংশের পরামর্শ, খাদ্যাভ্যাস, শারীরিক কসরত এবং ঘুম-এই তিনটি দিকে তরুণ প্রজন্ম নজর দিলেই হৃদরোগের (Heart Disease) ঝুঁকি কয়েকগুণ কমবে। তাঁরা জানাচ্ছেন, বছর কুড়ির চৌকাঠে পৌঁছনোর আগেই স্বাস্থ্যকর জীবন যাপনকে অভ্যাস করতে হবে। তাঁদের পরামর্শ, প্রথম থেকে ঘুমের জন্য পর্যাপ্ত সময় নির্ধারণ করতেই হবে। দিনে অন্তত আট ঘণ্টা ঘুমানো জরুরি। স্কুল জীবনে রাতে দ্রুত ঘুমিয়ে পড়া এবং ভোরে ওঠার অভ্যাস থাকলেও পরবর্তীতে অনেকেই সেই অভ্যাস ধরে রাখতে পারেন না। ফলে গভীর রাত পর্যন্ত জেগে থাকা এবং অনেক দেরিতে ঘুম থেকে ওঠা, প্রাতঃরাশ না করার মতো একাধিক অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস তৈরি হয়ে যায়। কিন্তু নিয়মিত ভোরে ঘুম থেকে ওঠা, সকালে অন্তত আধ ঘণ্টা হাঁটা কিংবা অন্য কোনও শারীরিক কসরত করার অভ্যাস শরীরকে সুস্থ রাখার অন্যতম হাতিয়ার (High blood pressure)। তাঁরা জানাচ্ছেন, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা, ডায়াবেটিস আটকানোর সহজ পথ শরীরে পর্যাপ্ত বিশ্রাম এবং যোগাভ্যাস। এর পাশপাশি খাবারেও নজরদারি জরুরি। বিশেষত তেলজাতীয় খাবার যে কোনও রকম ভাজা কিংবা অতিরিক্ত রাসায়নিক দিয়ে তাজা রাখা মাংস খাওয়া একেবারেই চলবে না। প্রাণীজ প্রোটিনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সব্জি এবং ফল নিয়মিত খেতে হবে। খাওয়ার পরিমাণেও সতর্কতা জরুরি। রক্তের শর্করা, দেহের ওজন এবং কোলেস্টেরল-এই তিনের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেই তরুণ প্রজন্ম হৃদরোগকে সহজেই মোকাবিলা করবে বলেই মনে করছে চিকিৎসকদের একাংশ। তারা জানাচ্ছে, স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন সুস্থ জীবনের একমাত্র পথ!

     

    DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Durga Puja 2024: জমিদারি নেই, পারিবারিক দুর্গাপুজো নিষ্ঠার সঙ্গে বজায় রেখেছেন গ্রামের মানুষই!

    Durga Puja 2024: জমিদারি নেই, পারিবারিক দুর্গাপুজো নিষ্ঠার সঙ্গে বজায় রেখেছেন গ্রামের মানুষই!

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তপন ব্লকের ঐতিহ্যবাহী মনোহলি জমিদার বাড়ি। কাটোয়ার সিন্নি গ্রাম থেকে এসে তারাচাঁদ বন্দ্যোপাধ্যায় মনোহলি জমিদারবাড়ির পত্তন করেছিলেন। তিনি শুধু জমিদারি পত্তন করেননি, ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দে জমিদারবাড়িতে দুর্গাপুজোর (Durga Puja 2024) প্রচলন করেছিলেন। যা অবিভক্ত দিনাজপুর জেলার বনেদি বাড়ির পূজোগুলির মধ্যে অন্যতম। তিনি পুজোর জন্য দালান‌ মন্দির‌ও নির্মাণ করেছিলেন।

    ভগ্নপ্রায় মন্দিরে আর পুজো হয় না (Durga Puja 2024)

    শোনা যায়, রাজমহলের পাথর-চুন-সুরকি দিয়ে মন্দিরটি তৈরি করা হয়েছিল। বিল্ডিং-এর ছাদ লোহার পাটাতনের ওপর ঢালাই দেওয়া। জমিদারি নেই, কিন্তু পুজো এখন‌ও চলেছে। বংশের অধিকাংশ শরিক কর্মসূত্রে গ্রাম ছেড়ে বাইরে থাকেন। বর্তমানে পুজোর জৌলুস কমলেও রীতি-নিষ্ঠার এতটুকু‌ও ঘাটতি হয়নি। সময় পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে পারিবারিক পুজো ২০১২ সাল থেকে বারোয়ারি পুজোয় রূপ নিয়েছে। জমিদার বাড়ির (Dakshin Dinajpur) পুরনো ভগ্নপ্রায় মন্দিরে আর পুজো হয় না। জমিদারের জমিতে এখন তৈরি হয়েছে স্থায়ী দুর্গামন্দির। পুজোর ৫ দিন মহা সমারোহে মহাভোজ হয়, সেই সঙ্গে মন্দির চত্বরে বসে মেলা‌ও। দেবীর প্রতিমা হয় সাবেকি। এখন তান্ত্রিক মতে দেবীর পুজো হলেও দীর্ঘদিন থেকে বলি প্রথা উঠে গিয়েছে। পুজোর দিনগুলিতে দেবী দুর্গাকে পঞ্চব্যঞ্জনে অন্নভোগ দেওয়া হয়।

    উৎসাহ ও উন্মাদনা একই রকম

    পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, জমিদার তারাচাঁদ বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Dakshin Dinajpur) ছেলে রমেশচন্দ্র বন্দোপাধ্যায় ও যোগেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম দুর্গাপুজোর উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কালের নিয়মে বর্তমানে এই জমিদারবাড়ি ও ঠাকুর দালানের ভগ্নপ্রায় অবস্থা। তবে বর্তমানে বংশের সমস্ত শরিক পুজোয় সেভাবে অংশগ্রহণ করে না। গ্রামবাসীরা এখন এই জমিদার বাড়ির পুজোকে সর্বজনীন পুজো কমিটি তৈরি করে চিরাচরিত রীতি ও প্রথা অনুযায়ী উদযাপন (Durga Puja 2024) করেন। সকলের মঙ্গলার্থে গ্রামবাসীরা এখন‌ও দুর্গাপুজো করে আসছেন। পুজোর দিন জমিদার বাড়ির সকল শরিকদের আমন্ত্রণ করা হয়। গ্রামের সকলে চাঁদা তুলে এই পুজো করেন। জনশ্রুতি, জমিদার আমলে তপন এলাকার আশপাশের বিভিন্ন গ্রাম থেকে হাজার হাজার মানুষ এই পুজো দেখতে আসতেন। তাঁরা পুজোতে অংশগ্রহণ করতেন। সেই সময়ে জমিদার বাড়ি থেকে গ্রামের মানুষজনদের মেলা দেখতে টাকা দেওয়া হত। বর্তমানে পরিচর্যার অভাবে এই জমিদার বাড়ি ভগ্নপ্রায়। তবুও এই জমিদার বাড়ির দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে মানুষজনের উৎসাহ ও উন্মাদনায় একটুও ভাটা পড়েনি।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Durga Puja 2024: মা দুর্গার দশ হাতের দশটি অস্ত্রই নানা বার্তাবাহক! জেনে নিন তাদের তাৎপর্য

    Durga Puja 2024: মা দুর্গার দশ হাতের দশটি অস্ত্রই নানা বার্তাবাহক! জেনে নিন তাদের তাৎপর্য

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দেবী দুর্গার কোনও নির্দিষ্ট রূপ নেই। শক্তিরূপিণী মহামায়াকে কোনও এক রূপের আধারে ধরা যায় না বলেই মায়ের অনেক রূপ। তিনি মা দুর্গতিনাশিনী রূপে পূজিতা (Durga Puja 2024) হন। দেবী দুর্গার (Goddess Durga) আরও এক নাম দশভূজা। তাঁর দশ হাতে বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র বিদ্যমান থকে। নানা অস্ত্রে সজ্জিতা দেবী অশুভশক্তিকে সংহার করতে মর্তধামে আসেন। মানব-জাতির ওপর নেমে আসা অন্ধকার দূর করতে, অশুভশক্তির বিনাশ করতে অস্ত্র হাতে তুলে নেন। তিনি আবার সকল সৃষ্টি-স্থিতি-লয়কে একত্রে ধারণ করেন। দশভূজা দেবীর দশ অস্ত্রের মাহাত্ম্যকথা কেমন জানেন? আসুন একবার মায়ের দশ অস্ত্রের উৎস এবং শক্তির প্রকার জেনে নিই।

    দেবীকে রণসাজে সাজালেন কারা?

    ত্রিশূল: দেবাদিদেব মহাদেব মা দুর্গাকে (Durga Puja 2024) ত্রিশূল দান করেছিলেন। ত্রিশূলের তিনটি ফলা আসলে ‘ত্রিগুণ’-এর প্রতীক। প্রত্যেক জীবের মধ্যেই বর্তমান থাকে সত্ত্ব, রজঃ এবং তমঃ—এই ত্রিগুণ। সত্ত্ব হল ধর্ম জ্ঞান, রজঃ মানে অহঙ্কার এবং তমঃ মানে অন্ধকার। তিন গুণের ধারক-বাহক দেবী দুর্গা।

    সুদর্শন চক্র: ভগবান শ্রীবিষ্ণু দেবী দুর্গার সুদর্শন চক্রটি দিয়েছিলেন। এই চক্রের নির্দেশে বিশ্ব নিয়ন্ত্রিত হয়। দেবীর ব্রহ্মাণ্ড শক্তি আবর্তিত হয় সৃষ্টিকে কেন্দ্র করে। অধর্মের মাত্রা অধিক পরিমাণে বৃদ্ধি পেলে মা চক্র দিয়ে সমূলে বিনাশ করেন।

    পদ্ম: দেবীকে পদ্ম দিয়েছিলেন স্বয়ং সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মাদেব। পদ্ম হল ব্রহ্মের প্রতীক বা জ্ঞানের প্রতীক। অর্ধস্ফুট পদ্ম মানব চেতনে আধ্যাত্মিক জ্ঞানের জাগরণকে নির্দেশ করে। পরিপূর্ণ জ্ঞণা বা প্রজ্ঞার আধার হল এই পদ্ম। পুজোতে তাই ১০৮টা পদ্ম নিবেদন করা হয়।

    তির এবং ধনুক: পবনদেব-সূর্যদেব মা দুর্গাকে দিয়েছিলেন তির ও ধনুক। তির ও ধনুক হল প্রাণশক্তির প্রতীক। ধনুক যেখানে সম্ভাব্য ক্ষমতাকে নির্দেশ করে, তির নির্দেশ করে ওই ক্ষমতার গতিময়তাকে। একই সঙ্গে তির ও ধনুক দ্বারা বোঝানো হয় যে মা দুর্গা ব্রহ্মাণ্ডের সকল শক্তির উৎস। শক্তিকে কেন্দ্রীভূত করতে সাহায্য করে এই অস্ত্র।

    অসি: গণেশদেব মা দুর্গাকে দিয়েছিলেন অসি। এই অস্ত্র জ্ঞান এবং ধীশক্তির প্রতীক। জ্ঞানের তীক্ষ্ণতা এবং দীপ্তি নির্দেশ করে বুদ্ধিকে পথ দেখায় অসি। অপশক্তিকে দমন করতে মহামায়ার শক্তি অপরিহার্য।

    বজ্র: দেবরাজ ইন্দ্রদেব মা দুর্গাকে দেন বজ্র অস্ত্রটি। বজ্র হল আত্মশক্তির প্রতীক। সামান্য মেঘের ঘর্ষণ থেকে যেভাবে অমিত বজ্রশক্তি উৎপন্ন হয়, তেমনই আত্মশক্তি তৈরি হয় কর্ম থেকেই। এই শক্তি দিয়ে অসুর দমন করা যায়।  

    বর্শা:  এই অস্ত্র পবিত্রতা এবং ভুল-ঠিকের প্রতীক। অগ্নিদেব বর্শা প্রদান করেছিলেন মা দুর্গাকে। যুদ্ধ করতে গেলে ধর্ম এবং অধর্মের মধ্যে পার্থক্য নির্ণয় করতে হয়। এই বর্শা হল সত্য-মিথ্যার নির্ণায়ক মাপকাঠি।

    সর্প: মা দুর্গাকে (Durga Puja 2024), মহাদেব অস্ত্র হিসেবে সাপ প্রদান করেছিলেন। এই সর্প হল চেতনা ও শক্তির প্রতীক। দেবীর হাতে সাপ হল—চেতনার নিম্নস্তর থেকেও সাধনাকে উচ্চতরে পৌঁছানোর প্রতীকী আধার।

    কুঠার: বিশ্বকর্মা কুঠার প্রদান করেছিলেন দেবীকে। অশুভের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রতীক হল কুঠার। একই সঙ্গে যে কোনও পরিস্থিতিতে ভীত না হওয়ার প্রতীকও হল কুঠার। ভয়কে জয় করতে অভয়রূপ শক্তির (Goddess Durga) আধার হল কুঠার।

    শঙ্খ: জলদেবতা বরুণদেব মহামায়াকে (Durga Puja 2024) দিয়েছিলেন শঙ্খ। যার ধ্বনি মঙ্গলময় এবং সংকেতবহ। শঙ্খের আওয়াজে স্বর্গ, মর্ত্য ও নরক জুড়ে থাকা সব অশুভ শক্তি ভীত ও দুর্বল হয়ে পড়ে। যুদ্ধের প্রধান প্রারম্ভিক অস্ত্র হিসেবও ব্যবহার হয় শঙ্খ।

    তলোয়ার: তলোয়ার হল বুদ্ধির প্রতীক। যুদ্ধের ক্ষেত্রে বুদ্ধির তীক্ষ্ণতা অনেক বেশি প্রয়োজন থাকে। দেবী দুর্গাকে এই অস্ত্র দান করেন গণেশ। এই অস্ত্র দিয়ে বিনাশ বা অশুভ শক্তিকে ধ্বংস করা হয়। অসুরদের বিনাশ করে জগত জননী কল্যাণ সাধন করে থাকেন এই অস্ত্রের মাধ্যমে।

    গদা: যমরাজ নিজে দেবী দুর্গাকে গদা দান করছেন। এই গদা হল অস্ত্রের প্রতি আনুগত্য এবং রক্ষার প্রতীক। এই গদা হল কালদণ্ডের প্রতীক।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

LinkedIn
Share