Category: পরম্পরা

Get updated History and Heritage and Culture and Religion related news from the Madhyom news portal madhyom.com, West Bengal leading news portal Madhyom.com

  • Durga Puja 2022: জানেন মহাষ্টমীর দিন “সন্ধিক্ষণের পুজো” কেন হয় ? 

    Durga Puja 2022: জানেন মহাষ্টমীর দিন “সন্ধিক্ষণের পুজো” কেন হয় ? 

    শুভ্র চট্টোপাধ্য়ায়: মহাষ্টমীর (Mahastami) দিনে ঐ বিশেষ পুজোর কথা সবাই জানি। যে পুজোর কোনো নির্দিষ্ট সময় থাকেনা, কখনো ভোরে, কখনো বা মাঝরাতে , কোনো কোনো বছর বিকেলে সম্পন্ন হয়। বিশেষ ঐ পুজো সমাপ্ত হয়েছে বোঝা যায় যখন একজন পুরোহিত দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় ব্যাপক জোরে “জয় মা” ধ্বনি তোলেন। সাথে সাথেই শুরু হয় মাতার আরতি অনুষ্ঠান। পুজো মন্ডপের বাচ্চারা তখন পটকা ফাটাতে থাকে। প্রচলিত ভাষায় এই বিশেষ পুজোকে বলে ক্ষণের পুজো । বর্ণ বিপর্যয় হতে হতে এখন হয়ে দাঁড়িয়েছে “ক্ষ্যানের” পুজো। ঐ পুজোর হলো আসল নাম হলো “সন্ধিপূজা” (Sandhi Puja)।  অষ্টমীর শেষ ২৪ মিনিট থেকে নবমী শুরুর প্রথম ২৪ মিনিট ধরে চলে ঐ পুজো। এই সময়টাই সন্ধিক্ষণ।  কিন্তু সন্ধিপূজা করতে হয় কেন? এর তাৎপর্য বা মাহাত্ম্য কি রয়েছে ? এর উত্তর আছে আমাদের পৌরাণিক আখ্যান গুলিতে ।
    সন্ধিপূজা আসলে দৈত্য দলনী দেবী দুর্গার আর এক ভীষণ দর্শনা রূপের পূজা । সেই দেবীর নাম ‘চামুণ্ডা’ । অষ্টমী ও নবমীর সন্ধিক্ষণে দেবী চামুণ্ডা চণ্ড ও মুণ্ড নামে দুই অসুরকে বধ করেছিলেন বলে মনে করা হয়। পৌরাণিক আখ্যান অনুযায়ী –  শুম্ভ নিশুম্ভ নামক দুই অসুর রাজা, চণ্ড ও মুন্ড নামের দুই দৈত্য কে পাঠিয়েছিল দেবীর সাথে যুদ্ধ করতে । চন্ড ও মুণ্ড বহু সেনা , অশ্ব , রথ , হাতি নিয়ে যুদ্ধে এলো‌ তারা হিমালয়ের চূড়ায় হাস্যরত দেবী অম্বিকা কে দেখতে পেল । দেবী চন্ডিকা তাদের দেখে ভীষণ ক্রুদ্ধা হলেন । ক্রোধে তাঁর মুখ মণ্ডল কৃষ্ণবর্ণা হল ।তখন দেবীর কপাল থেকে এক ভীষণ দর্শনা দেবী প্রকট হলেন । ভয়ঙ্করী , কোটর গতা , আরক্ত চক্ষু বিশিষ্টা। সেই ভয়ংকরা দেবী ভীষণ হুঙ্কার দিয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে প্রবেশ করলেন । কত গুলি অসুরকে দেবী তার চরণ ভারে পিষে বধ করলেন । কোন কোন অসুর দেবীর খড়গের আঘাতে মারা গেল । যুদ্ধক্ষেত্রে এই ভাবে দেবী অসুর দের ধ্বংস করে ফেললেন । এরপর দেবী তার খড়গ তুলে ‘হং’ শব্দ করে চন্ডের দিকে ধেয়ে গেল । দেবী চন্ডের চুলের মুঠি ধরে খড়গ দ্বারা এক কোপে চণ্ডের শিরোচ্ছেদ করে ফেললেন । চন্ড অসুর বধ হল। চন্ড নিহত হয়েছে দেখে ক্রোধে মুন্ড দেবীর দিকে ধেয়ে গেলো । দেবী তার রক্তাক্ত খড়গ দিয়ে আর এক কোপে মুন্ড এর শিরোচ্ছেদ করলেন । এভাবে মুণ্ড বধ হল। চন্ড মুন্ড বধ হতে দেখেই  দেবতারা আনন্দে দেবীর জয়ধ্বনি দিতে থাকলেন‌। চন্ড ও মুন্ড কে বধ করেছিলেন বলেই দেবী “চামুণ্ডা” নামে প্রসিদ্ধ হন। অষ্টমী ও নবমী তিথির এই সন্ধিক্ষণে দেবী চামুণ্ডার-ই আরাধনা করা হয়। এই বিশেষ মুহুর্তে দেবী চন্ড ও মুন্ড কে বধ করেছিলেন বলে জানা যায় ।
    এই পুজোতে ১০৮ টি পদ্ম অর্পণ করা হয় মায়ের চরণে। এটা নিয়েও দুটি পৌরাণিক কাহিনী রয়েছে। 
    ত্রেতা যুগে লঙ্কার রাজা রাবণকে বধ করার জন্য সন্ধিপূজার শেষে শ্রীরামচন্দ্র দেবীর পায়ে ১০৮টি পদ্ম উৎসর্গ করতে চেয়েছিলেন । তাই ভক্ত হনুমানকে পাঠিয়েছিলেন দেবীদহে । কিন্তু দেবীদহ থেকে ১০৭ টি পদ্ম নিয়ে ফিরেছিলেন পবনপুত্র । কারণ দেবীদহে আর পদ্ম ছিল না । সুতরাং মায়ের পায়ে দেওয়ার জন্য একটি পদ্ম কম পড়েছিল । সন্ধিক্ষণ সমাপ্ত হওয়ার  উপক্রম হলে শ্রীরামচন্দ্র ধনুর্বাণ দিয়ে নিজের নীল পদ্মের ন্যায় চোখ দুটির মধ্যে একটি তুলে মায়ের পায়ে অর্পণ করতে চেয়েছিলেন ১০৮ তম পদ্ম হিসেবে । চোখ উপড়ে ফেলার মুহূর্তে অবতীর্ণ হয়েছিলেন দেবী দুর্গা । মায়ের বরে বলীয়ান শ্রীরামচন্দ্র এই অষ্টমী ও নবমীর সন্ধিক্ষণেই রাবণ বধ করেছিলেন বলে ভক্তদের ধারণা । অন্য একটি পৌরাণিক কাহিনী অনুযায়ী, অসুর নিধনকালে দেবী দুর্গার সারা অঙ্গ জুড়ে সৃষ্টি হয়েছিল ১০৮টি ক্ষত । ক্ষতগুলির যন্ত্রণা কমানোর জন্য ভগবান শিব মা দুর্গাকে দেবীদহে স্নান করার পরামর্শ দিয়েছিলেন । দেবীদহে স্নান করার পর মায়ের শরীরের সেই ১০৭টি ক্ষত থেকে সৃষ্টি হয়েছিল ১০৭টি পদ্ম । কিন্তু একটি ক্ষত তখনও অবশিষ্ট ছিল । দেবী দুর্গা ১০৮ তম ক্ষতের জ্বালায় খুব কষ্ট পাচ্ছিলেন। এটা দেখে মহাদেবের চোখ থেকে নির্গত হয়েছিল এক ফোঁটা অশ্রু । অশ্রুকণাটি গিয়ে পড়েছিল মায়ের ১০৮ তম ক্ষতে । এতে মা দুর্গার শরীরের অবশিষ্ট ক্ষতটিও সেরে উঠেছিল । দেবীদহে থেকে গিয়েছিল ১০৭ টি পদ্ম।
    সন্ধিপুজা তে মহাফল লাভ হয় বলেই ভক্তদের ধারণা। মাতাকে প্রসন্ন করতে এই পুজোতে লাল জবা ফুল এবং নৈবেদ্য তে লাল যে কোন ফল অর্পণ করা হয়।

  • Durga Puja: ‘নমঃ মহিষগ্নি মহামায়ে’, পুষ্পাঞ্জলির এই মন্ত্র দিয়েই শুরু হয় অষ্টমীর সকাল

    Durga Puja: ‘নমঃ মহিষগ্নি মহামায়ে’, পুষ্পাঞ্জলির এই মন্ত্র দিয়েই শুরু হয় অষ্টমীর সকাল

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ‘নমঃ মহিষগ্নি মহামায়ে, চামুন্ডে মুন্ডমালিনী’ এই মন্ত্র উচ্চারণের মাধ্যমেই শুরু হয় অষ্টমীর সকাল। দুর্গাপুজোর (Durga Puja) চারদিনের মধ্যে অন্যতম হল অষ্টমী (Ashtami)। এদিনের ভোরটা যেন একেবারে অন্যরকম। খুব ভোরে উঠে, স্নান করে পরিষ্কার বা নতুন জামাকাপড় পরে, নির্দিষ্ট সময় মণ্ডপে উপস্থিত হন আপামর বাঙালি। পুজোর তিনদিন পুষ্পাঞ্জলি দেওয়া গেলেও মহাষ্টমীর পুষ্পাঞ্জলি একেবারে অন্যরকম। অষ্টমী পুজোর শেষে শুরু হয় অঞ্জলি। বহু বাঙালি এই শুভক্ষণটার জন্য সারাবছর অপেক্ষা করে থাকেন। অষ্টমীর মাহাত্ম্যের কথা বিচার করে সবাই অষ্টমী তিথিতেই অঞ্জলি দিতে চান। সনাতন ধর্ম বলে, অষ্টমীতে অঞ্জলি দিলে সব কাজে সিদ্ধি লাভ হয়। সব বাধাবিঘ্ন দূর হয়। সন্তান ও অর্থ লাভ হয়। দুঃখ, শোক, রোগ দূর হয়। দারিদ্র নাশ ও শত্রু-ক্ষয় হয়। ভক্তরা গ্রহ-শান্তি লাভ করেন। অন্তরের পাশবিক কামনা বাসনা দূর হয়। অষ্টমীর অঞ্জলি দেওয়ার সময়ই মায়ের কাছে সেই কামনাই করেন সকলে।

    নমঃ আয়ুর্দ্দেহি যশো দেহি ভাগ্যং ভগবতি দেহি মে।
    পুত্রান্ দেহি ধনং দেহি সর্ব্বান্ কামাশ্চ দেহি মে।।
    হর পাপাং হর ক্লেশং হর শোকং হরাসুখম।
    হর রোগং হর ক্ষোভং হর মারীং হরপ্রিয়ে।

    অষ্টমী তিথিতেই দেবী দুর্গা মহিষাসুরকে বধ করেছিলেন। অষ্টমী ও নবমীর সন্ধিক্ষণে দেবীর কাছে পরাস্ত হন অসুররাজ।  পুরাণ মতে, এদিন দেবীকে রণসাজে সাজান দেবতারা। নিজেদের অস্ত্র দেবীর হাতে তুলে দেন তাঁরা। প্রতিটি অস্ত্রকে এদিন দেবজ্ঞানে পুজো করা হয়। তাই একে বীরাষ্টমীও বলে। অষ্টমীর দিন দেবীকে অনেক জায়গায় মহা গৌরী রূপে পুজো করা হয়। অনেক জায়গায় অষ্টমাতৃকা ব্ৰহ্মাণী, মাহেশ্বরী, কৌমারী, বৈষ্ণবী, বরাহী, নরসিংহী, ইন্দ্রানী ও চামুণ্ডার পুজো করা হয়ে থাকে।

    জেনে নিন এবারের মহাঅষ্টমীর সময় ও তিথি:

    তারিখ – সোমবার ৩ অক্টোবর ২০২২ , বাংলা ১৬ ই আশ্বিন।
    সময় – বেলা ৩ টে ৫৯ মিনিট ১৮ সেকেন্ড পর্যন্ত অষ্টমী থাকবে।
    সন্ধিপূজা বেলা ৩ টে ৩৫ মিনিট ১৮ সেকেন্ড থেকে বিকেল ৪ টে ২৩ মিনিট ১৮ সেকেন্ড পর্যন্ত।

  • Navratri 2022: জানুন মাতা কুষ্মান্ডার কাহিনী, আজ মহাচতুর্থীর দিন আরাধিতা হন দেবী

    Navratri 2022: জানুন মাতা কুষ্মান্ডার কাহিনী, আজ মহাচতুর্থীর দিন আরাধিতা হন দেবী

    শুভ্র চট্টোপাধ্যায়: পুরাণে কথিত আছে, হাসির দ্বারা তিনি এ জগৎ বা বিশ্বসংসার সৃষ্টি করেছিলেন, প্রকৃতপক্ষে তাঁকেই জগজ্জননী মানেন ভক্তরা। তিনিই সূর্যের তেজ স্বরূপা। তিনিই আসুরিক শক্তির বিনাশক। নবরাত্রির চতুর্থীতে ভক্তদের দ্বারা আরাধিত হন দেবী কুষ্মান্ডা।  

    পুরাণ অনুযায়ী, এ বিশ্ব যখন তৈরি হয়নি, প্রাণের স্পন্দন যখন কোথাও ছিল না, চারিদিকে যখন ঘন অন্ধকার ছাড়া আর কিছুই ছিল না তখন এক মহাজাগতিক দৈব আলোকরশ্মি ক্রমশ নারী মূর্তির আকার ধারণ করতে থাকে। দৈব ক্ষমতার অধিকারী, জগতের সৃষ্টিকত্রী এই নারী মাতা কুষ্মান্ডা নামে পরিচিত। মহাবিশ্বে প্রাণের উৎস, শক্তির উৎস, চন্দ্র, সূর্য, গ্রহ, নক্ষত্র, ছায়াপথের সৃষ্টিকর্ত্রী তিনি‌। তিনি সূর্যের কেন্দ্রে অবস্থান করেন। দিন ও রাত্রি তাঁর জন্যই হয়। জীবনের সমস্ত কর্মকাণ্ডের গতি তাঁর দ্বারাই নিয়ন্ত্রিত হয় বলে মনে করেন ভক্তরা।

    সৌরমন্ডলকে পরিচালিত করেন দেবী কুষ্মান্ডা। তাঁর মুখমন্ডল সূর্যের মতোই দীপ্তিমান। তেজোদীপ্ত। পণ্ডিতমহলের মতে— ‘কু’ শব্দের অর্থ কুৎসিত এবং ‘উষ্মা’ শব্দের অর্থ ‘তাপ’; ‘কুষ্মা’ শব্দের অর্থ তাই দুঃখ–দেবী জগতের সমস্ত দুঃখ এবং কষ্ট হরণ করে নিজের উদরে ধারণ করেন বলে তাঁর নাম ‘কুষ্মাণ্ডা’ মনে করা হয়। দেবাদিদেব মহাদেব যেমন সমুদ্র মন্থনের সময় সমস্ত বিষ নিজের শরীরে ধারণ করে দেবতাদের রক্ষা করেছিলেন একই ভাবে মাতা কুষ্মান্ডা এ জগতের সকল অশুভ প্রভাব, দুঃখ, কষ্ট, রোগ, যন্ত্রণা, পীড়াকে হরণ করে তাঁর ভক্তদের রক্ষা করেন। 

    আরও পড়ুন: আজ নবরাত্রির তৃতীয় দিনে পূজিতা হন মাতা চন্দ্রঘন্টা, জানুন তাঁর পৌরাণিক কাহিনী

    ভক্তরা মনে করেন, যখন এ বিশ্বে অসুরদের অত্যাচার বেড়ে গিয়েছিল তখন আবির্ভূত হয়েছিলেন দেবী কুষ্মান্ডা। দেবী সিংহ সওয়ার। তিনি অষ্টভূজা। আটটি হাত সাজানো রয়েছে অস্ত্র তথা অন্যান্য সামগ্রী দ্বারা। চারটি হাতে রয়েছে – চক্র, গদা, তির ও ধনুক। অন্য চারটি হাতে রয়েছে জপমালা, পদ্ম, কলস এবং কমণ্ডলু। দেবীর হাতে অস্ত্র ছাড়াও দুটো পাত্র উল্লেখ করা হয়েছে। একটিতে থাকে অমৃত ও অপরটিতে থাকে রক্ত। অর্থাৎ দেবী কুষ্মান্ডার একহাতে সৃষ্টি ও অপর হাতে ধ্বংস। দেবীর বাহন সিংহকে ধর্মের প্রতীক বলে মনে করা হয়। ধর্মের স্থাপন এবং ধর্মকে বহন করে মাতা কুষ্মান্ডার সিংহ। 

    মাতা কুষ্মান্ডার সামনে কুমড়ো বলির প্রথা চালু আছে। দেবী কুষ্মান্ডার ভক্তরা মায়ের উদ্দেশ্যে শ্রিংগার সামগ্রী নিবেদন বা অর্পণ করে থাকেন। যেমন – সিঁদুর, কাজল, চুড়ি, বিন্দি, পায়ের আংটি, চিরুনি, আয়না, পায়ের পাতা, সুগন্ধি, কানের দুল, নাকের পিন, গলার মালা, লাল চুনরি ইত্যাদি। ভক্তদের বিশ্বাস মাতা কুষ্মান্ডাকে মালপোয়া, দই থেকে তৈরি যে কোনও পদ এবং হালুয়া নৈবেদ্য তে ভক্তি পূর্বক অর্পণ করলে মাতা প্রসন্ন হন। তিনি তাঁর ভক্তদের জীবনকে সুখী, শান্তি, সমৃদ্ধি, যশ, আয়ু দ্বারা পরিপূর্ণ করে তোলেন। ভক্তদের ব্রহ্ম জ্ঞানও তিনিই দান করেন।

    আরও পড়ুন: নবরাত্রি কেন পালন করা হয়? এর তাৎপর্য জানেন?

    “সুরসম্পূর্ণকলশম্ রুধিরালুপ্তমেব চ দধানা হস্তপদ্মভ্যাম কুষ্মাণ্ড শুভদস্তুমে”- এই বৈদিক মন্ত্রের দ্বারাই আরাধনা করা হয় মাতা কুষ্মান্ডাকে ।

    উত্তরপ্রদেশের কাশীতে মাতা কুষ্মান্ডার মন্দির খুব বিখ্যাত। ভক্তদের বিশ্বাস এই মন্দিরে অষ্টভূজা মাতা কুষ্মান্ডা স্বয়ং অবস্থান করেন এবং জগতের কল্যাণে রোগ, ভয়, দুঃখ হরণ করে ভক্তদের সুখ, আয়ু, যশ প্রদান করেন। কাশীর এই অঞ্চলে মাতা কুষ্মান্ডা মা দুর্গা নামেই অধিক পরিচিত। লোককথা অনুযায়ী, তিনি কাশীর দক্ষিণ দিককে রক্ষা করে চলেছেন। কাশীর অসি নদীর সঙ্গম স্থলে রয়েছে মাতা কুষ্মান্ডার অধিষ্ঠান। দেবী কুষ্মান্ডার এই মন্দির বেশ বড়ো এবং বহুচূড়া বিশিষ্ট‌। মূল মন্দিরের গর্ভগৃহে মাতা কুষ্মান্ডা অবস্থান করেন। নবরাত্রির চতুর্থীর দিনে ভক্তদের ব্যাপক ভিড় দেখা যায় এখানে।

  • Durga Puja 2022: দশমীর দিন মা দুর্গাকে কেন বিসর্জন দেওয়া হয় জানেন?

    Durga Puja 2022: দশমীর দিন মা দুর্গাকে কেন বিসর্জন দেওয়া হয় জানেন?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: হিন্দু ধর্ম বিশ্বাস অনুসারে মানুষের দেহ আকাশ, বায়ু, অগ্নি, জল ও মাটি এই পাঁচ উপাদান দিয়ে তৈরি। একই ভাবে পাঁচ উপাদান দিয়েই তৈরি হন প্রতিমাও। মাটির মূর্তিতে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করার পর তাকে প্রতিমা বলে। পুজো শেষে বিদায় বেলায় আমার সেই মূর্তি আবার প্রাণহীন হয়ে পড়ে। আর সেই মূর্তিকে আবার পঞ্চতত্ত্বে বিলীন করতেই, বিসর্জনের রেওয়াজ রয়েছে। প্রতিমা পুজোর শেষ ধাপ হল বিসর্জন (Durga Visarjan)। পুজো শেষে প্রতিমাকে জলে বিসর্জন দিয়ে আবার প্রকৃতিতে পুনরায় ফিরিয়ে দেওয়া হয়। সনাতন ধর্মে শুরু থেকেই গঙ্গা জলে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়ার রীতি প্রচলিত আছে। হিন্দু শাস্ত্রবিদদের মতে, আমাদের হৃদয়ে যে নিরাকার ঈশ্বর রয়েছেন, উপাসনার জন্য মাটির প্রতিমা তৈরি করে তাকে সাকার রূপ দেওয়া হয়। পুজোর শেষে পুনরায় সেই সাকার রূপকে বিসর্জন দিয়ে নিরাকার ঈশ্বরকে হৃদয়ে ফিরিয়ে আনা হয়। সেই কারণেই দুর্গা পূজার সময় যখন প্রতিমা বিসর্জন দিয়ে পরের বছর আবার আসার আমন্ত্রণ জানানো হয়।          

    ‘দশমী’ কথাটির মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে বিদায় বেলার যন্ত্রণার। আরও এক বছরের অপেক্ষা। দুর্গা পুজোর আনন্দে তাল কাটে এই দশমীতেই। বাঙালিদের কাছে মা দুর্গা ঘরের মেয়ে। আর ঘরের মেয়ে ঘরে ফিরলে যেমন আনন্দ উপচে পড়ে, ঠিক সেভাবেই ফেরার সময় মন খারাপের সুর বাজে সানাইয়ে। বিজয়া দশমী সেই ভেজা চোখে বাঙালি বিদায় জানায় তার ঘরের মেয়ে উমাকে। ওই দিনই শশুর বাড়ির উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন উমা। এই দিন বনেদি বাড়ির পুজোর পাশাপাশি বারোয়ারি পুজোতেও বাড়ির মহিলারা একে একে বরণ করেন প্রতিমাকে। তার পর চলে মহিলাদের সিঁদুর খেলা। কিছু বনেদী বাড়িতে প্রথা মেনে দেওয়া হয় কনকাঞ্জলি। এর পর প্রতিমা নিয়ে যাওয়া হয় গঙ্গার ঘাটে সেখানে নৌকোতে চেপে বিসর্জন দেওয়া হয়। করোনা কালে ঠাকুর দেখানোর রীতিতে কাঁটছাট করা হয়েছে।           

    দশমীকে ‘বিজয়া’ বলার পিছনে পৌরাণিক কাহিনী রয়েছে। পুরাণের মহিষাসুর বধ কাহিনীতে বলা হয়েছে, মহিষাসুরের সঙ্গে ৯ দিন ৯ রাত্রি যুদ্ধ করার পর দশম দিনে তাঁর বিরুদ্ধে বিজয় লাভ করেছিলেন দেবী দুর্গা। তাই তাকে ‘বিজয়া’ বলা হয়। এছাড়াও শ্রীশ্রীচণ্ডী কাহিনী অনুসারে, দেবীর আবির্ভাব হয় আশ্বিন মাসের কৃষ্ণা চতুর্দশীতে। পরে শুক্লা দশমীতে মহিষাসুর বধ করেছিলেন তিনি। তাই বিজয়াকে দশমী বলা হয়। 

    উত্তর ও মধ্য ভারতে এই দিনে দশেরা উদযাপিত হয়। তবে তার তাৎপর্য সম্পূর্ণ আলাদা। ‘দশেরা’ শব্দটির উৎপত্তি সংস্কৃত শব্দ ‘দশহর’ থেকে। যার অর্থ দশানন রাবণের মৃত্যু। বাল্মীকি রামায়নে বলা হয়েছে, আশ্বিন মাসের ৩০ তম দিনে অযোধ্যা প্রত্যাবর্তন করেন রাম, সীতা, ও লক্ষণ। রাবণ বধ ও রামচন্দ্রের এই প্রত্যাবর্তন উপলক্ষ্যেই যথাক্রমে দশেরা ও দীপাবলি পালন করা হয়ে থাকে। 

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ। 

  • Durga Puja 2022: দুর্গাপুজোর নবমীতে হয় দক্ষিণান্ত, কেন জানেন?

    Durga Puja 2022: দুর্গাপুজোর নবমীতে হয় দক্ষিণান্ত, কেন জানেন?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মহানবমী (Mahanabami)। মন খারাপের দিন। কারণ এই দিনটি চলে গেলেই মা দুর্গা ফিরে যাবেন কৈলাসে (Kailash)। তাই তো সেই কবেই কবি বলেছিলেন, যেও না নবমী (Nabami) নিশি…। তবে প্রকৃতির নিয়ম মেনেই আসে নবমী তিথি। মহাপুজোর মহানবমী। দিনটির গুরুত্ব কম নয়।

    মহানবমীর আগে হয় সন্ধিপুজো। অষ্টমীর শেষ ২৪ মিনিট ও নবমীর প্রথম ২৪ মিনিট মিলিয়ে মোট ৪৮ মিনিট। এই সময়টা কেবলই মহামায়ার এক রূপ দেবী চামুণ্ডার পুজো হয়। অষ্টমীতে যেহেতু অসুর, সিংহ, বিভিন্ন দেবদেবীর বাহন এবং অস্ত্রশস্ত্রের প্রাণ প্রতিষ্ঠা হয়, সেহেতু নবমীর দিন তাঁদের প্রত্যেকের পুজো করতে হয়। এদিনই যেহেতু মহাপুজো সমাপনের দিন, সেহেতু এই দিনেই সম্পন্ন করতে হয় হোম। শাস্ত্র মতে, হোমের আগুন হল দেবদেবীর জিহ্বা স্বরূপ। তাই হোমাগ্নি প্রজ্জ্বলিত করে দিতে হয় আহুতি। এই আহুতি দেওয়া হয় প্রতিটি দেবদেবীর বীজমন্ত্র সহযোগে। যেহেতু দুর্গাই প্রধান দেবী, তাই এদিন তাঁর উদ্দেশ্যে দিতে হয় একশো আটটি বেলপাতার আহুতি। বাকি দেবদেবীদের উদ্দেশে ৮টি করে বেলপাতা। যজ্ঞ শেষে দেওয়া হয় পূর্ণাহুতি। এতে দেওয়া হয় একটি গোটা নারকেল, সোনার টুকরো এবং ফুলের মালা। যেসব পরিবারে সপ্তমীতে হোম শুরু হয়, তাঁরা হোমাগ্নি জ্বালিয়ে রাখেন নবমী পর্যন্ত। এই নবমীতে তাঁরাও দেন পূর্ণাহুতি। তার পরে হয় দক্ষিণান্ত। দেবীকে দিতে হয় কৈলাসে ফেরার পাথেয়।

    নবমীতে আরও একটি প্রথা পালিত হয় কোনও কোনও পরিবারে। সেটি হল শত্রু বলি। মানকচুর পাতায় চালের পিটুলি দিয়ে তৈরি করা হয় শত্রু। তার গায়ে মাখানো হয় রক্তচন্দন। পরে হাঁড়িকাঠে নিয়ে গিয়ে বলি করা হয় ওই কৃত্রিম শত্রু। অনেক পরিবারে আবার সন্দেশের শত্রু বানিয়ে বলি দেওয়া হয়। যাঁদের পরিবারে পশু বলি দেওয়ার চল রয়েছে, তাঁরা বলি দেন এদিন। অনেক পরিবারে আবার শত্রু নয়, কেবল কুমড়ো, আখ, কলা বলি দেওয়া হয়। নবমীতে দক্ষিণান্ত হয়ে গেলেই পুজো শেষ বলা যায়। কারণ দশমীতে দেবীর পুজো হয় নমো নমো করে। তাই সপ্তমী, অষ্টমী এবং নবমীর আগে মহা শব্দটি যোগ করা হলেও, দশমীতে তা হয় না।  

    দেশের খবরদশের খবরসব খবরসবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।  

  • Durga Puja 2022: দশমীর দিন মা দুর্গাকে কেন বিসর্জন দেওয়া হয় জানেন?

    Durga Puja 2022: দশমীর দিন মা দুর্গাকে কেন বিসর্জন দেওয়া হয় জানেন?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: হিন্দু ধর্ম বিশ্বাস অনুসারে মানুষের দেহ আকাশ, বায়ু, অগ্নি, জল ও মাটি এই পাঁচ উপাদান দিয়ে তৈরি। একই ভাবে পাঁচ উপাদান দিয়েই তৈরি হন প্রতিমাও। মাটির মূর্তিতে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করার পর তাকে প্রতিমা বলে। পুজো শেষে বিদায় বেলায় আমার সেই মূর্তি আবার প্রাণহীন হয়ে পড়ে। আর সেই মূর্তিকে আবার পঞ্চতত্ত্বে বিলীন করতেই, বিসর্জনের রেওয়াজ রয়েছে। প্রতিমা পুজোর শেষ ধাপ হল বিসর্জন (Durga Visarjan)। পুজো শেষে প্রতিমাকে জলে বিসর্জন দিয়ে আবার প্রকৃতিতে পুনরায় ফিরিয়ে দেওয়া হয়। সনাতন ধর্মে শুরু থেকেই গঙ্গা জলে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়ার রীতি প্রচলিত আছে। হিন্দু শাস্ত্রবিদদের মতে, আমাদের হৃদয়ে যে নিরাকার ঈশ্বর রয়েছেন, উপাসনার জন্য মাটির প্রতিমা তৈরি করে তাকে সাকার রূপ দেওয়া হয়। পুজোর শেষে পুনরায় সেই সাকার রূপকে বিসর্জন দিয়ে নিরাকার ঈশ্বরকে হৃদয়ে ফিরিয়ে আনা হয়। সেই কারণেই দুর্গা পূজার সময় যখন প্রতিমা বিসর্জন দিয়ে পরের বছর আবার আসার আমন্ত্রণ জানানো হয়।          

    ‘দশমী’ কথাটির মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে বিদায় বেলার যন্ত্রণার। আরও এক বছরের অপেক্ষা। দুর্গা পুজোর আনন্দে তাল কাটে এই দশমীতেই। বাঙালিদের কাছে মা দুর্গা ঘরের মেয়ে। আর ঘরের মেয়ে ঘরে ফিরলে যেমন আনন্দ উপচে পড়ে, ঠিক সেভাবেই ফেরার সময় মন খারাপের সুর বাজে সানাইয়ে। বিজয়া দশমী সেই ভেজা চোখে বাঙালি বিদায় জানায় তার ঘরের মেয়ে উমাকে। ওই দিনই শশুর বাড়ির উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন উমা। এই দিন বনেদি বাড়ির পুজোর পাশাপাশি বারোয়ারি পুজোতেও বাড়ির মহিলারা একে একে বরণ করেন প্রতিমাকে। তার পর চলে মহিলাদের সিঁদুর খেলা। কিছু বনেদী বাড়িতে প্রথা মেনে দেওয়া হয় কনকাঞ্জলি। এর পর প্রতিমা নিয়ে যাওয়া হয় গঙ্গার ঘাটে সেখানে নৌকোতে চেপে বিসর্জন দেওয়া হয়। করোনা কালে ঠাকুর দেখানোর রীতিতে কাঁটছাট করা হয়েছে।           

    দশমীকে ‘বিজয়া’ বলার পিছনে পৌরাণিক কাহিনী রয়েছে। পুরাণের মহিষাসুর বধ কাহিনীতে বলা হয়েছে, মহিষাসুরের সঙ্গে ৯ দিন ৯ রাত্রি যুদ্ধ করার পর দশম দিনে তাঁর বিরুদ্ধে বিজয় লাভ করেছিলেন দেবী দুর্গা। তাই তাকে ‘বিজয়া’ বলা হয়। এছাড়াও শ্রীশ্রীচণ্ডী কাহিনী অনুসারে, দেবীর আবির্ভাব হয় আশ্বিন মাসের কৃষ্ণা চতুর্দশীতে। পরে শুক্লা দশমীতে মহিষাসুর বধ করেছিলেন তিনি। তাই বিজয়াকে দশমী বলা হয়। 

    উত্তর ও মধ্য ভারতে এই দিনে দশেরা উদযাপিত হয়। তবে তার তাৎপর্য সম্পূর্ণ আলাদা। ‘দশেরা’ শব্দটির উৎপত্তি সংস্কৃত শব্দ ‘দশহর’ থেকে। যার অর্থ দশানন রাবণের মৃত্যু। বাল্মীকি রামায়নে বলা হয়েছে, আশ্বিন মাসের ৩০ তম দিনে অযোধ্যা প্রত্যাবর্তন করেন রাম, সীতা, ও লক্ষণ। রাবণ বধ ও রামচন্দ্রের এই প্রত্যাবর্তন উপলক্ষ্যেই যথাক্রমে দশেরা ও দীপাবলি পালন করা হয়ে থাকে। 

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ। 

  • Durga Puja 2022: দুর্গাপুজোর নবমীতে হয় দক্ষিণান্ত, কেন জানেন?

    Durga Puja 2022: দুর্গাপুজোর নবমীতে হয় দক্ষিণান্ত, কেন জানেন?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মহানবমী (Mahanabami)। মন খারাপের দিন। কারণ এই দিনটি চলে গেলেই মা দুর্গা ফিরে যাবেন কৈলাসে (Kailash)। তাই তো সেই কবেই কবি বলেছিলেন, যেও না নবমী (Nabami) নিশি…। তবে প্রকৃতির নিয়ম মেনেই আসে নবমী তিথি। মহাপুজোর মহানবমী। দিনটির গুরুত্ব কম নয়।

    মহানবমীর আগে হয় সন্ধিপুজো। অষ্টমীর শেষ ২৪ মিনিট ও নবমীর প্রথম ২৪ মিনিট মিলিয়ে মোট ৪৮ মিনিট। এই সময়টা কেবলই মহামায়ার এক রূপ দেবী চামুণ্ডার পুজো হয়। অষ্টমীতে যেহেতু অসুর, সিংহ, বিভিন্ন দেবদেবীর বাহন এবং অস্ত্রশস্ত্রের প্রাণ প্রতিষ্ঠা হয়, সেহেতু নবমীর দিন তাঁদের প্রত্যেকের পুজো করতে হয়। এদিনই যেহেতু মহাপুজো সমাপনের দিন, সেহেতু এই দিনেই সম্পন্ন করতে হয় হোম। শাস্ত্র মতে, হোমের আগুন হল দেবদেবীর জিহ্বা স্বরূপ। তাই হোমাগ্নি প্রজ্জ্বলিত করে দিতে হয় আহুতি। এই আহুতি দেওয়া হয় প্রতিটি দেবদেবীর বীজমন্ত্র সহযোগে। যেহেতু দুর্গাই প্রধান দেবী, তাই এদিন তাঁর উদ্দেশ্যে দিতে হয় একশো আটটি বেলপাতার আহুতি। বাকি দেবদেবীদের উদ্দেশে ৮টি করে বেলপাতা। যজ্ঞ শেষে দেওয়া হয় পূর্ণাহুতি। এতে দেওয়া হয় একটি গোটা নারকেল, সোনার টুকরো এবং ফুলের মালা। যেসব পরিবারে সপ্তমীতে হোম শুরু হয়, তাঁরা হোমাগ্নি জ্বালিয়ে রাখেন নবমী পর্যন্ত। এই নবমীতে তাঁরাও দেন পূর্ণাহুতি। তার পরে হয় দক্ষিণান্ত। দেবীকে দিতে হয় কৈলাসে ফেরার পাথেয়।

    নবমীতে আরও একটি প্রথা পালিত হয় কোনও কোনও পরিবারে। সেটি হল শত্রু বলি। মানকচুর পাতায় চালের পিটুলি দিয়ে তৈরি করা হয় শত্রু। তার গায়ে মাখানো হয় রক্তচন্দন। পরে হাঁড়িকাঠে নিয়ে গিয়ে বলি করা হয় ওই কৃত্রিম শত্রু। অনেক পরিবারে আবার সন্দেশের শত্রু বানিয়ে বলি দেওয়া হয়। যাঁদের পরিবারে পশু বলি দেওয়ার চল রয়েছে, তাঁরা বলি দেন এদিন। অনেক পরিবারে আবার শত্রু নয়, কেবল কুমড়ো, আখ, কলা বলি দেওয়া হয়। নবমীতে দক্ষিণান্ত হয়ে গেলেই পুজো শেষ বলা যায়। কারণ দশমীতে দেবীর পুজো হয় নমো নমো করে। তাই সপ্তমী, অষ্টমী এবং নবমীর আগে মহা শব্দটি যোগ করা হলেও, দশমীতে তা হয় না।  

    দেশের খবরদশের খবরসব খবরসবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।  

  • Durga Puja: সন্ধি পুজো করলে সুখ-সমৃদ্ধিতে ভরে যাবে আপনার জীবন! আর কী কী ফল পাবেন?

    Durga Puja: সন্ধি পুজো করলে সুখ-সমৃদ্ধিতে ভরে যাবে আপনার জীবন! আর কী কী ফল পাবেন?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বাঙালির সবচেয়ে বড় উত্‍সব হল দুর্গা পূজা (Durga Puja 2022)। পুজোর পাঁচটি দিনের জন্য সারাবছর মানুষ অপেক্ষায় বসে থাকেন। ষষ্ঠী থেকে দশমী, শারদীয়া দুর্গোত্‍সবের এই পাঁচটি দিনে মেতে ওঠেন ধনী দরিদ্র নির্বিশেষে আপামর বাঙালি। আর এই দুর্গাপুজো- কে ঘিরেই রয়েছে একাধিক রীতি-নিয়ম। কোন রীতির কী কারণ তার ফলে কী হয়, এমন অনেক কিছুই জানেন না অনেকেই। যেমন- সন্ধি পুজোর কথা সবাই জানেন, তবে জানেন কী এই পুজো করলে কী কী ফল পাওয়া যায়? তবে আজ সন্ধি পূজা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

    সন্ধি পুজো (Sandhi Puja) হল অষ্টমী (Ashtami) ও নবমী (Nabami) তিথির মিলনের সময়। অষ্টমী তিথির শেষ ২৪ মিনিট ও নবমী তিথির শুরুর ২৪ মিনিট, মোট ৪৮ মিনিটের মধ্যে শেষ করতে হয় এই সন্ধি পুজো। পুরাণ মতে, মহিষাসুরের সঙ্গে ভয়ঙ্কর যুদ্ধে ব্যস্ত থাকাকালীন অসুরের দুই বন্ধু চন্ড ও মুন্ড পিছন থেকে দেবীকে আক্রমণ করেন। ফলে তিনি রেগে গিয়ে দেবী ত্রিনয়নী চামুন্ডা রূপ ধারন করেন। এই চামুন্ডা রূপেই মা দুর্গা চন্ড ও মুন্ডের মাথা কেটে নেন। দেবীর এই চামুন্ডা রূপেরই আরাধনা করা হয় সন্ধি পুজোর মাধ্যমে। এই  ঘটনাটিকে স্মরণ করার জন্যই প্রতি বছর অষ্টমী ও নবমীর সন্ধিক্ষণে এই সন্ধি পুজো করা হয়।

    তবে সন্ধি পূজার সময়ে দুটি জিনিস নিবেদন করতে হয়, নয়তো এই পুজো অসম্পূর্ণ থেকে যায়। সেটি হল ১০৮ টি পদ্মফুল ও ১০৮ টি প্রদীপ। ফলে মা দুর্গার সন্ধি পুজোয় ১০৮টি পদ্মফুল এবং ১০৮টি প্রদীপ উৎসর্গ করা এই পুজোর প্রধান নিয়ম। আর এই সন্ধি পুজো যদি নিষ্ঠাভরে, ভালোভাবে করা যায়, তা হলে জীবনে নানা ভালো ফল পাওয়া যায়। সেগুলি হল-

    • সন্ধি পুজোর পরই মাকে প্রণাম করে যদি কোনও কাজ শুরু করা হয়, তা হলে সেই কাজে আপনি কখনও অসফল হবেন না।  
    • এই পুজোর সময় যদি এক মনে দুর্গা মন্ত্র জপ করা হয়, তা হলে মা খুব খশি হন এর ফলে মনের জোর বৃদ্ধি পায় এবং মানসিক অবসাদও কমে যায়।
    • সন্ধি পুজোর সময় একমনে মায়ের আরাধনা করলে শুধুমাত্র মা নন, তাঁর সন্তানরাও খুশি হন।
    • ১০৮টি পদ্ম ফুল দিয়ে মায়ের পুজো করলে সংসারে ঝগড়া বিবাদ কমে যায়। জীবন সুখ-শান্তিতে ভরে যায়।
    • সন্ধি পুজো করলে গ্রহ দোষ কেটে যায় এবং খারাপ স্বপ্ন দেখার আশঙ্কাও কমে যায়।
    • মনে করা হয়, এই পুজোর মাধ্যমে মনের ছোট থেকে বড়, সকল ইচ্ছা পূরণ হয়।
    • সন্ধি পুজোর সন্ধিক্ষণ মুহূর্তে মায়ের নাম নিতে থাকলে রোগ ব্যাধি আপনার ধারের কাছেও আসতে পারবে না।
  • Durga Puja: নবপত্রিকা স্নান থেকে কুমারী পুজো, জানুন এই রীতিগুলোর মাহাত্ম্য

    Durga Puja: নবপত্রিকা স্নান থেকে কুমারী পুজো, জানুন এই রীতিগুলোর মাহাত্ম্য

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দুর্গাপূজার বিশেষ উল্লেখযোগ্য দুটি রীতি হল নবপত্রিকা স্নান ও কুমারী পুজো। দুটো রীতিরই আলাদা আলাদা গুরুত্ব রয়েছে। অনেকের আবার এই দুই রীতির কী কী মাহাত্ম্য রয়েছে, তা স্পষ্টও নয়। যেমন দুর্গাপূজার সময়ে মন্ডপে ঠাকুর দেখতে গিয়ে গণেশের পাশে কলাবউ-কে দেখতে পেয়ে অনেকেই মনে করেন যে, কলাবউ গণেশের স্ত্রী, কিন্তু আসলে তা সত্যি নয়। ফলে এমনই ভুল ধারণা রয়েছে অনেকেরই, তাই আজ এই রীতিরগুলোর পেছনের কী কী কারণ রয়েছে এবং কী এর মাহাত্ম্য, তা নিয়ে আলোচনা করা হল।

    মহাসপ্তমীর ‘নবপত্রিকা স্নান’

    নবপত্রিকার আক্ষরিক অর্থ হল নয়টি পাতা। কিন্তু এখানে নয়টি উদ্ভিদ দিয়ে নবপত্রিকা গঠন করা হয়। এই নয়টি উদ্ভিদ মা দুর্গার নয়টি শক্তির প্রতীক। এই নয়টি উদ্ভিদ হল কদলী বা রম্ভা (কলাগাছ), কচু, হরিদ্রা (হলুদ), জয়ন্তী, বিল্ব(বেল), দাড়িম্ব(ডালিম), অশোক, মান ও ধান। এরপর একজোড়া বেল-সহ শ্বেত অপরাজিতা লতা দিয়ে বেঁধে লালপাড় সাদা শাড়ি জড়িয়ে ঘোমটা দেওয়া বধূর আকার দেওয়া হয়। তারপর তাতে সিঁদুর দিয়ে সপরিবার প্রতিমার ডান দিকে দাঁড় করিয়ে পুজো করা হয়। প্রচলিত ভাষায় নবপত্রিকার নাম কলাবউ। তারপর তাতে সিঁদূর দিয়ে দুর্গা ও গণেশের দেবীর ডানপাশে রাখা হয়। আর এই কলাবউ গণেশের স্ত্রী নয়।

    এটি দুর্গা অর্থাৎ গণেশের জননী। গণেশের স্ত্রীদের নাম রিদ্ধি ও সিদ্ধি। এই ৯টি গাছের পাতা শক্তির ৯টি রূপকে তুলে ধরে- ব্রহ্মাণী (কলা), কালিকা (কচু), দুর্গা (হলুদ), কার্ত্তিকী (জয়ন্তী), শিব (কদবেল), রক্তদন্তিকা (বেদানা), শোকরহিতা (অশোক), চামুণ্ডা (ঘটকচু), লক্ষ্মী (ধান)। মহাসপ্তমীর দিন সকালে পুরোহিত নিজের কাঁধে করে কাছের কোনও নদী বা জলাশয়ে নবপত্রিকা নিয়ে যান। তাঁর পিছন পিছন ঢাকীরা ঢাক বাজাতে বাজাতে এবং মহিলারা শঙ্খ ও উলুধ্বনি করতে করতে যান। এরপর নবপত্রিকাকে স্নান করানোর পর নতুন শাড়ি পরানো হয়। তারপর পূজা মণ্ডপে নিয়ে এসে নবপত্রিকাকে দেবীর ডান দিকে একটি কাষ্ঠসিংহাসনে স্থাপন করা হয়। এরপর এই চারদিন দেবদেবীদের সঙ্গে এটিও পুজো করা হয়। তবে অনেকে মনে করেন, নবপত্রিকার পূজার মাধ্যমে শস্যদেবীর পূজা করা হয়। এই শস্যবধূকেই দেবীর প্রতীক রূপে গ্রহণ করে প্রথমে পূজা করতে হয়। কারণ মনে করা হয়, শারদীয়া পূজার মূলে রয়েছে শস্য-দেবীর পূজা।

    মহাঅষ্টমীর ‘কুমারী পুজো’

    অষ্টমীর দিন সাধারণত কুমারী পুজো করা হয়। এদিন বাচ্চা মেয়েদের দুর্গার মর্যাদা দিয়ে, দুর্গারূপে তাদের পুজো করা হয়। আগেকার দিনের মুনি-ঋষিরা প্রকৃতিকে নারীর সমান মনে করতেন। তাই কুমারী পুজোর মাধ্যমে প্রকৃতিকে পূজা করতেন তাঁরা। তাঁরা মনে করতেন মানুষের মধ্যেই রয়েছে ঈশ্বর। বিশেষ করে যাদের মন সৎ, যারা নিষ্পাপ তাদের মধ্যেই ভগবানের প্রকট সবথেকে বেশি। আর এই গুণ কেবলমাত্র কুমারীদের মধ্যে থাকতে পারে, এই ভেবেই অষ্টমী তিথিতে তাদের দেবীরূপে পুজো করা হয়।

    শাস্ত্র অনুসারে সাধারণত ১ বছর থেকে ১৬ বছরের ঋতুস্রাব না হওয়া বালিকাদের কুমারী রূপে পূজা করা হয়। তাদের নতুন বস্ত্র, ফুলের মালা, মুকুট, পায়ে আলতা, কপালে সিঁদুরের টিপ ও তিলক পরিয়ে সাজিয়ে তাদের পুজো করা হয়।

    শাস্ত্র মতে, কোলাসুর-কে বধ করার মধ্যে দিয়ে শুরু হয় কুমারী পুজোর। গল্পে আছে, কোলাসুর যখন স্বর্গ ও মর্ত্য অধিকার করেন, তখন কোলাসুর-এর থেকে মুক্তি পেতে দেবতাগণ মহাকালীর শরণাপন্ন হন। দেবতাগণের ডাকে সাড়া দিয়ে দেবী কুমারীরূপে কোলাসুর-কে বধ করেন। এর থেকেই মর্ত্যে কুমারী পুজোর প্রচলন শুরু হয়।

  • Durga Puja: আজ নবরাত্রির তৃতীয় দিনে পূজিতা হন মাতা চন্দ্রঘন্টা, জানুন তাঁর পৌরাণিক কাহিনী

    Durga Puja: আজ নবরাত্রির তৃতীয় দিনে পূজিতা হন মাতা চন্দ্রঘন্টা, জানুন তাঁর পৌরাণিক কাহিনী

    শুভ্র চট্টোপাধ্যায়: মহিষাসুর এর দখলে তখন সম্পূর্ণ স্বর্গ রাজ্য। দেবতা, মুনি, ঋষি কেউই রম্ভা পুত্রের ভয়ঙ্কর বীভৎস অত্যাচারে টিকতে পারছেন না। দেবতারা পরাস্ত এবং বিতাড়িত। ব্রহ্মার বরদানে মহিষাসুর কে প্রতিহত করার কেউ নেই। মহিষাসুর জানতো ব্রহ্মার আশীর্বাদে কোনো পুরুষ তাঁকে হত্যা করতে পারবে না। বিতাড়িত দেবতা , মুনি, ঋষিরা শরণাপন্ন হলেন ব্রহ্মা , বিষ্ণু, মহেশ্বর এর কাছে । মহিষাসুরের অত্যাচারের কাহিনী শোনার পর ক্রোধান্বিত হলেন ত্রিদেব অর্থাৎ ব্রহ্মা বিষ্ণু মহেশ্বর। ক্রোধাগ্নির প্রচন্ড তেজ সম্মিলিত হয়ে মহর্ষি কাত্যায়ন ঋষির আশ্রমে সৃষ্টি হলো এক নারীর। তিনি মা দুর্গা।

    নবরাত্রির ন’দিনে মা দুর্গা নয়টি রূপ ধারণ করে অসুরদের সাথে প্রচন্ড যুদ্ধ করেছিলেন। নবরাত্রির তৃতীয় দিনে পূজিতা হন মাতা চন্দ্রঘন্টা। পৌরাণিক সাহিত্যের ভাষায়-
    পিণ্ডজপ্রবরারূঢা চন্দকোপাস্ত্রকৈর্য়ুতা ।
    প্রসাদং তনুতে মহ্য়ং চন্দ্রঘণ্টেতি বিশ্রুতা ।।

    প্রবল তেজ সম্পন্ন এই দেবী মাতা চন্দ্রঘন্টা , ঘন্টা বাজিয়ে অসুরদের সতর্ক করেন। এখনকার ভাষায় ওয়ার্নিঙ বলা যেতে পারে । তাই দেবীর নাম চন্দ্রঘন্টা। কালিকাপুরাণে দেবীর এমন নামকরণের উল্লেখ পাওয়া যায়। কাত্যায়ন মুনির আশ্রমে , ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বরের তেজ থেকে সৃষ্ট নারী মূর্তিকে যখন সমস্ত দেবতা একে একে অস্ত্র দ্বারা সজ্জিত করছিলেন তখন দেবতাদের রাজা ইন্দ্র “দদৌ তস্যৈ সহস্রাক্ষোঘণ্টাম ঐরাবতং গজাৎ” তাঁর বাহন ঐরাবৎ হাতির গলার ঘণ্টা থেকে একটি ঘণ্টা নিয়ে দেবীর একটি হাতে দিলেন।

    আরও পড়ুন: নবরাত্রি কেন পালন করা হয়? এর তাৎপর্য জানেন?

    যুদ্ধে ঘন্টা ধ্বনি, শঙ্খ ধ্বনির রীতি ছিল। কুরুক্ষেত্রের ময়দানেও ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে পাঞ্চজন্য নামক শঙ্খ এবং অর্জুনকে দেবদত্ত নামক শঙ্খের প্রবল ধ্বনির দ্বারা বিপক্ষ শিবিরে ত্রাস সৃষ্টি করতে দেখা  গেছে। যা গীতার প্রথম অধ্যায়ে উল্লেখিত রয়েছে।

    পুরাণে উল্লেখ রয়েছে – অসুরদের সাথে প্রবল যুদ্ধ চলাকালীন মাতা চন্দ্রঘন্টার এই তীব্র ঘণ্টানাদ বিকট শব্দ সৃষ্টি করেছিল “হিরস্তি দৈত্য তেজাংসি স্বনেনাপূর্য্য যা জগৎ”। সেই ঘণ্টার শব্দেই দৈত্যদের প্রাণ ভয়ে খাঁচাছাড়া অবস্থা হয়েছিল। অসুরদের অশুভ শক্তি কে হরণ করার জন্যই মাতা চন্দ্রঘন্টা ঘন্টা বাজিয়েছিলেন। পৌরাণিক কাহিনী তে এও দেখা যাচ্ছে যে, যুদ্ধ শেষে মাতার এই ঘন্টার শরণাপন্ন হচ্ছেন দেবতা, মুনি, ঋষিরা। তাঁরা বলছেন – “সা ঘণ্টা পাতু নো দেবি পাপেভ্যো নঃ সুতাম্ইব ”। যার অর্থ বিশ্লেষণ করলে দাঁড়ায়- ” হে মা, তোমার এই প্রবল ঘন্টা ধ্বনি যেভাবে অসুরদের শক্তি ক্ষয় করে, তাদের দুর্বল করেছিল, ঠিক সেভাবেই এই ঘন্টা যেন আমাদের ভিতরে থাকা সমস্ত পাপবোধ কে হরণ করে নেয়”। ভক্তদের বিশ্বাস রয়েছে কল্যাণকারী মাতা তাঁদের জীবন থেকে সমস্ত পাপবোধ, ভয়, শত্রুতা, বাধা বিঘ্ন হরণ করে নেন।

    আরও পড়ুন: মহালয়া শুভ না অশুভ? জানুন এই বিশেষ অমাবস্যা তিথির তাৎপর্য

    পৌরাণিক কাহিনী তে আরও উল্লেখ রয়েছে –
    দেবী চন্দ্রঘন্টা আসলে হিমালয় কন্যা ও শিবের স্ত্রী মাতা পার্বতী। শিব পার্বতীর বিবাহ পন্ড করতে তারকাসুর দৈত্য, দানবদের মিলিত এক বাহিনী নিয়ে আক্রমণ করে। এই অবস্থায় বিবাহকে নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে দেবী পার্বতী, মাতা চন্দ্রঘন্টার রূপ ধারণ করেন। তিনি ছিলেন বাঘের পিঠে সওয়ার । চন্দ্রের মতো বিশালাকার ঘন্টা তিনি বাজাতে থাকেন। ঘন্টার  তীব্র আওয়াজে ভীতগ্রস্ত হয়ে দানবরা রণেভঙ্গ দেয়। একটি পৌরাণিক মত অনুযায়ী – দেবী পার্বতী এক্ষেত্রে কোনো উগ্র ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেননি।কারণ জন্মের পর যখন দশম মহাবিদ্যা ও বিশ্বরূপ দেবী পার্বতী তাঁর পিতা এবং মাতাকে দর্শন করিয়েছিলেন তখন দেবী পার্বতীকে  তাঁর মাতা মেনকা প্রতিশ্রুতি বদ্ধ বা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ করিয়ে নিয়েছিলেন যে যখন দেবী পার্বতী নিজ পিতৃগৃহে অবস্থান করবে তখন কোনো অবস্থাতেই তিনি উগ্র রূপ ধারণ করবেন না এবং তৃতীয় চক্ষুকে লুকিয়ে রাখবেন। অর্থাৎ মাতা পার্বতী পিতৃগৃহে থাকলে শান্ত হিমালয় কন্যা হিসাবেই থাকবেন।

    অন্য একটি পৌরাণিক মত অনুযায়ী , শিব পার্বতীর বিবাহ কালে , শিব চন্ড এবং উগ্র মূর্তি ধারণ করলে , পার্বতীর মাতা মেনকা মূর্ছা যান। তখন পাল্টা হিসেবে দেবী পার্বতী মাতা চন্দ্রঘন্টার রূপ ধারণ করলে শিব শান্ত হন।

    আরও পড়ুন: মেয়েরাও কি করতে পারে তর্পণ? কী বলছে শাস্ত্র?

    শিবপুরাণ অনুযায়ী – চন্দ্রের শোভায় মুগ্ধ হয়ে শিব “চন্দ্র” কে নিজ মাথায় স্থাপন করেন। তাই তিনি চন্দ্রশেখর। শিবের এইরকম সাজ দেখে মাতা পার্বতী চন্দ্রঘন্টা রূপ ধারণ করেন। তাই মাতা চন্দ্রঘন্টা লাবণ্যময়ী। তাঁর হাত বিভিন্ন অস্ত্র দ্বারা সাজানো রয়েছে‌। যেমন – ত্রিশূল, গদা, তলোয়ার,তীর, ধনুক। এছাড়াও তাঁর হাতে রয়েছে পদ্মফুল ও মন্ডল। মাতা চন্দ্রঘন্টার একটি হাত সর্বদাই বরদা মুদ্রায় থাকে । যে মুদ্রায় তিনি তাঁর ভক্তদের সর্বদাই আশীর্বাদ করেন, তাঁদের নৈরাশ্য দূরীভূত করেন বলেই ভক্তদের বিশ্বাস রয়েছে। কল্যাণ প্রদান কারী মাতা চন্দ্রঘন্টার বাহন বাঘ অথবা সিংহ। তিনি ত্রিনয়নী এবং কপালে ঘন্টার আকৃতির অর্ধচন্দ্রের অবস্থান। মাতা চন্দ্রঘন্টা আসুরিক শক্তিকে ধ্বংস করতে বা বিনাশ করতে সদা প্রস্তুত। তাঁর ভক্তদের বিশ্বাস মাতা চন্দ্রঘন্টা জীবনের সকল বাধাবিঘ্ন দূর করে চলার পথকে সুগম করে তোলেন। এই দেবীর পছন্দের রঙ কমলা বলেই মনে করেন ভক্তরা ‌, তাই এই নির্দিষ্ট রঙের পোশাক পরিধান করে মাতা চন্দ্রঘন্টার আরাধনা করলে সুফল বা শুভফল মেলে বলে ভক্তদের ধারণা। মাতার উদ্দেশ্যে তাঁর ভক্তরা সাধারণত দুগ্ধ জাত ভোগ নিবেদন করেন মায়ের নৈবেদ্য তে, এটা সাধারণত মিষ্টি, ক্ষীর বা রাবড়ি হয়। ভক্তদের বিশ্বাস এতে মাতা চন্দ্রঘন্টা প্রসন্ন হন।

     

LinkedIn
Share