Category: পরম্পরা

Get updated History and Heritage and Culture and Religion related news from the Madhyom news portal madhyom.com, West Bengal leading news portal Madhyom.com

  • Tarpan: মেয়েরাও কি করতে পারে তর্পণ? কী বলছে শাস্ত্র?

    Tarpan: মেয়েরাও কি করতে পারে তর্পণ? কী বলছে শাস্ত্র?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আগামীকাল অর্থাৎ রবিবার মহালয়া। আগামীকালই পিতৃপক্ষের (Pitru Paksha 2022) অবসান হয়ে সূচনা হবে দেবীপক্ষের। দক্ষিণ ও পশ্চিম ভারতে ভাদ্রপূর্ণিমা থেকে পিতৃ পক্ষের সূচনা, যা মহালয়া অমাবস্যা বা মহালয়ার দিনে শেষ হয়। অন্য দিকে উত্তর ভারত ও নেপালে ভাদ্রের পরিবর্তে আশ্বিন মাসের কৃষ্ণপক্ষকে পিতৃপক্ষ বলা হয়। মহালয়ার দিন পূর্বপুরুষদের তর্পণ (Tarpan) ও শ্রাদ্ধকর্ম করে তাঁদের বিদায় জানানো হয়। ধর্মীয় ধ্যান-ধারণা অনুযায়ী, পিতৃপক্ষে শ্রাদ্ধ, তর্পণ ইত্যাদি মৃত্যু সংক্রান্ত আচার-অনুষ্ঠান পালন করা হয়, তাই এই পক্ষে শুভ কাজে করা যায় না।   

    আরও পড়ুন: আজ সূচনা হচ্ছে পিতৃপক্ষের, কীভাবে করবেন তর্পণ, জেনে নিন

    এ সময় পূর্বপুরুষদের আত্মার শান্তি কামনা করে শ্রাদ্ধকর্ম করেন বাড়ির পুরুষরা। তবে শাস্ত্রে মহিলাদেরও মৃত পরিজনদের শ্রাদ্ধ করার অধিকার দেওয়া হয়েছে। কোনও মৃত ব্যক্তির পুত্র না-থাকলে, ভাইয়ের তাঁর স্ত্রীর শ্রাদ্ধ করার অধিকার রয়েছে। হিন্দুধর্ম অনুযায়ী, মৃত পূর্বপুরুষের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত যে কোনও ব্যক্তি তর্পণ করতে পারেন। সাধারণত পুরুষরা পিণ্ডদান করে থাকেন। তবে মহিলারাও পিণ্ডদানের সমান অধিকারী। রামায়ণ অনুযায়ী, দশরথের মৃত্যুর পর রামের অনুপস্থিতিতে সীতা তাঁর পিণ্ডদান করেছিলেন।  

    কোনও ব্যক্তির ছেলে না থাকলে মৃত ব্যক্তির মেয়ে বাবার শ্রাদ্ধের কাজ করতে পারেন। মহাভারতে স্ত্রী পর্বে কৌরব রমণীদের তর্পণ করার কথার উল্লেখ আছে। আবার অবিবাহিত ব্যক্তির ক্ষেত্রে মৃত ব্যক্তির মা এবং বোনও শ্রাদ্ধ করতে পারেন। আবার ছেলে শ্রাদ্ধ কর্ম করতে না-পারলে পুত্রবধূ তা করতে পারেন। আবার পৌত্র ও প্রপৌত্রও পূর্বপুরুষদের শ্রাদ্ধ কর্ম করার অধিকারী। পৌত্র বা প্রপৌত্র না-থাকলে, ভাই, ভাইয়ের সন্তানরাও শ্রাদ্ধ করার অধিকারী। আবার দৌহিত্রও পূর্বপুরুষদের উদ্ধার করতে পারে। আবার ভাগ্নেও শ্রাদ্ধকর্ম করার অধিকারী।   

    হিন্দু ধর্মে, মৃত ব্যক্তির আত্মাকে মুক্তি দিতে পিণ্ডদান করার রেওয়াজ রয়েছে। মনে করা হয়, এর ফলে আত্মা নরক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পায়। পিণ্ডদান করলে জন্ম ও মৃত্যুর চক্র থেকে আত্মা মুক্তি লাভ করে বলে মনে করা হয়। 

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।   

  • Durga Puja: মহাসপ্তমীর নির্ঘণ্ট, তাৎপর্য সহ জানুন এদিনের কিছু রীতির কথা

    Durga Puja: মহাসপ্তমীর নির্ঘণ্ট, তাৎপর্য সহ জানুন এদিনের কিছু রীতির কথা

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আজ দুর্গা পুজোর মহাসপ্তমী (Mahasaptami)। ষষ্ঠীতে দেবীর মুখ উন্মোচন ও বোধন প্রক্রিয়া শেষ করে এরপর আসে সপ্তমীর পুজো। এই দিনে দেবী দুর্গার সবচেয়ে ভয়ানক রূপ, কালরাত্রি রূপের পুজো করা হয়। অশুভ শক্তির বিনাশ ঘটিয়ে শুভ শক্তির প্রতিষ্ঠা করেন দেবী কালরাত্রি। শাস্ত্র মতে, মহাসপ্তমীতে মহাপুজো হয়। এই তিথির দুটি নিয়ম হল নবপত্রিকা স্নান ও মহাস্নান। খুব সকালে একটি কলা গাছ গঙ্গার জলে স্নান করিয়ে, এটিকে নববধূর মতো নতুন শাড়ি পরানো হয়। যাকে আমরা কলাবউ বলে থাকি। এই আচারের পেছনে রয়েছে বিশেষ মাহাত্ম্য।

    ২০২২-এর মহাসপ্তমীর দিনক্ষণ ও নির্ঘণ্ট

    সপ্তমীর পুজো শুরু সকাল ৯টা ২৯ মিনিটে ও সময়সীমা রাত ৬ টা ২৩ মিনিট পর্যন্ত। এদিন সূর্যোদয় ৫ টা ৩২ মিনিটে, অস্ত যাবে ৫ টা ২২ মিনিটে। পূর্বাহ্ণ মধ্যে দ্ব্যাত্মক-চরলগ্নে ও চরণবাংশে দেবীর নবপত্রিকা প্রবেশ, স্থাপন ও সপ্তম্যাদিকল্পারম্ভ ও সপ্তমীবিহিত পূজা প্রশস্তা। 

    সপ্তমীর পুজোর তাৎপর্য

    শরৎকালে অনুষ্ঠিত হয় এই পুজো। এই সময় স্বর্গের দেবতাগণ ঘুমিয়ে থাকেন। তাই দেবীকে ঘুম থেকে তোলার জন্য আহ্বান করতে হয়। দেবী এই সময় কুমারী (Kumari) রূপে বেল গাছের পাতায় অবস্থান করেন। তাই ষষ্ঠীর দিন বেল গাছের তলায় দেবীর বোধন (Bodhan) ও অধিবাস (Adhibas) সম্পন্ন হয়। এরপর বেল গাছের একটি ডালকে চিহ্নিত করে রাখা হয় এদিন। আর আজ অর্থাৎ সপ্তমীর দিন ওই চিহ্নিত ডাল কেটে মণ্ডপে পুজোর স্থানে নিয়ে আসতে হয়। মহাসপ্তমীর দিন সকালে নিকটস্থ নদী বা কোনো জলাশয়ে এটি নিয়ে যাওয়া হয়। এদিন কলা গাছের সঙ্গে বেলগাছের ডাল সহ আরও ৭টি গাছের ডাল নিয়ে একেবারে মূল থেকে বেঁধে দেওয়া হয়। এরপর পুরোহিত নিজেই কাঁধে করে নবপত্রিকা (Nobopatrika) নিয়ে যান। তাঁর পিছন পিছন ঢাকীরা ঢাক বাজাতে বাজাতে এবং মহিলারা শঙ্খ ও উলুধ্বনি করতে করতে যান। শাস্ত্রবিধি অনুযায়ী, এরপর নবপত্রিকা বা কলা বউ স্নান করানোর পর একে নতুন শাড়ি পরানো হয়। তারপর পূজামণ্ডপে নিয়ে এসে নবপত্রিকাকে দেবীর ডান দিকে একটি কাষ্ঠসিংহাসনে স্থাপন করা হয়। গণেশের পাশে এটিকে রাখার কারণে অনেকে মনে করেন যে, কলাবউ (Kola Bou) আসলে গণেশের বউ। কিন্তু আদতে এটি নবপত্রিকা বা গণেশের জননী। সপ্তমীর আর একটি বিশেষ অনুষ্ঠান হল মহাস্নান। নবপত্রিকা স্নানের পর মহাস্নান অনুষ্ঠিত হয়। নিয়ম অনুযায়ী নবপত্রিকা প্রবেশের পর দর্পণে দুর্গার মহাস্নান সম্পন্ন হয়।

  • Durga Puja : দেবী বরণের পর সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠেন হিন্দু মহিলারা! জানেন এর তাৎপর্য?

    Durga Puja : দেবী বরণের পর সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠেন হিন্দু মহিলারা! জানেন এর তাৎপর্য?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দশমী মানেই বিদায়। দশমী মানেই বিজয়া । দশমী মানেই মন খারাপের বেলা। এবার মাকে বিদায় দিতে হবে। সিঁদুরে রাঙা মায়ের মুখখানি যে বড়ই প্রিয় আম বাঙালির। মিষ্টিমুখ করিয়ে ঘরের মেয়ে উমাকে এবার কৈলাসে পাঠাতে হবে।

    দশমী’ কথাটির মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে বাঙালির আবেগ ও মনখারাপ মিশ্রিত একটি অনুভূতি। দশমী এলেই বাঙালির মনে আসে মায়ের ফিরে যাওয়ার আশঙ্কা। অপেক্ষায় থাকতে হবে আরও একটা বছর। সাধারনত দুর্গাপুজোর শেষদিনই হল দশমী। এই দিনেই মা দুর্গার প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। তবে এই দিনটিকে বিজয়া দশমী বলার সঠিক অর্থ আজও জানেন না অনেকেই। পুরাণ মতে, ৯ দিন ৯ রাত্রি মহিষাসুরের সঙ্গে যুদ্ধ হয় দশভূজা দুর্গার। দশমীর দিনে মহিষাসুর বধ করেন দুর্গা। অধর্মের ওপর ধর্ম ও অসত্যের ওপর সত্যের জয়ের দিন এটি। সেই জয়কে চিহ্নিত করতেই দশমীর আগে বিজয়া শব্দটি ব্যবহৃত হয়। দশমীর দিনে এই জয়লাভ বলে দিনটিকে বিজয়া দশমী বলা হয়।

    বিজয়া দশমীর একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হল সিঁদুর খেলা। হিন্দু বিবাহ রীতিতে সিঁদুরদান একট লৌকিক আচার। স্বামীর মঙ্গলকামনায় সিঁদূর পরেন বিবাহিত মহিলারা। দুর্গা বিবাহিত হওয়ায় তাঁকে সিঁদুর লাগিয়ে, মিষ্টি মুখ করিয়ে বিদায় জানানো হয়। 

    ভবিষ্য পুরাণ অনুযায়ী সিঁদুর ব্রহ্মের প্রতীক। বিবাহিত মহিলারা সিঁথিতে সিঁদুর পরে পরম ব্রহ্মের সামনে স্বামী ও নিজের মঙ্গল এবং দীর্ঘায়ু কামনা করেন। ব্রহ্ম সমস্ত দুঃখ কষ্ট দূর করে সুখ দান করেন। তাই দশমীর দিন সিঁদূর দান ও সিঁদূর খেলাকে সৌভাগ্যের প্রতীক মনে করা হয়। এ ছাড়াও শ্রীমদ্ভগবতে কাত্যায়নী ব্রত উপলক্ষে গোপীনিদের সিঁদুর খেলার বিবরণ পাওয়া যায়। তবে এটি কৃষ্ণের মঙ্গল কামনার জন্য করা হত। 

    বাংলায় সিঁদুর খেলার ঐতিহ্য ৪০০ বছরের পুরনো। নিছক খেলার ছলেই এই প্রথার চল হয়। মায়ের বিসর্জনের দিন সকলের মনই ভারাক্রান্ত থাকে। তাই ওই দিন একটু আনন্দ উল্লাসের জন্যই সিঁদুর খেলার প্রবর্তন হয়, বলে মনে করা হয়।

  • Durga Puja: কোন কোন জলে নবপত্রিকাকে স্নান করানো হয় জানেন?  

    Durga Puja: কোন কোন জলে নবপত্রিকাকে স্নান করানো হয় জানেন?  

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মহা সপ্তমী। ষষ্ঠ্যাদি কল্পে যাঁদের পুজো শুরু তাঁদের সপ্তমীতে হয় নবপত্রিকা (Nabapatrika) স্নান। তার ঠিক আগের দিন অর্থাৎ ষষ্ঠীর (Sasthi) রাতে হয় নবপত্রিকার অধিবাস। সপ্তমীর (Saptami) সকালে হয় নবপত্রিকার মহাস্নান। এদিন অষ্ট কলসের জলে স্নান করানো হয় দেবী দুর্গার (Goddess Durga) প্রতীক নবপত্রিকাকে।

    শাস্ত্রবিদদের একাংশের মতে, এক সময় যখন দেবী প্রতিমার রূপকল্পনা হয়নি, তখন মানুষ দুর্গাপুজো করতেন নবপত্রিকা বসিয়ে। পরে মূর্তি কল্পনা হওয়ার পর তৈরি হয় মূর্তির। তার পর থেকে মহামায়ার সঙ্গে পুজো পেয়ে আসছেন নবপত্রিকাও। এই নবপত্রিকা হল নবদুর্গার প্রতীক। কলা গাছের সঙ্গে আরও আটটি গাছ, লতাপাতা থাকে। এই নটি গাছ হল, কলা, দেবী রম্ভার প্রতীক, কচু, দেবী কালিকার প্রতীক, হলুদ, দেবী দুর্গার প্রতীক, জয়ন্তী, দেবী কার্তিকীর প্রতীক, বেল, শিবার প্রতীক, বেদানা, রক্তদন্তিকার প্রতীক, অশোক, শোকরহিতার প্রতীক, অপরাজিতা, চামুণ্ডার প্রতীক এবং ধান, লক্ষ্মীর প্রতীক। এই নটি গাছ এবং লতাপাতাকে কলাগাছের খোল দিয়ে এক সঙ্গে বাঁধা হয়। পরে জোড়া বেল দিয়ে তৈরি করা হয় দেবীর স্তন। তার পরে পরানো হয় শাড়ি-সিঁদুর।

    অষ্ট কলসে থাকে বিভিন্ন তীর্থের জল। সপ্ত সিন্ধুর জলে হয় দেবীর মহাস্নান। এই সপ্ত সিন্ধু হল গঙ্গা, যমুনা, গোদাবরী, সরস্বতী, নর্মদা, সিন্ধু এবং কাবেরীর জল। এছাড়াও প্রয়োজন হয় আত্রেয়ী, সরযূ, ভারতী, কৌশিকা, ভোগবতী, মন্দাকিনী, গণ্ডকী এবং শ্বেত গঙ্গা নদীর জল। দেবীকে গরম জল এবং সুগন্ধী জলে স্নান করানোর রীতিও রয়েছে। এই স্নান শাস্ত্র মতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই যে আটটি কলসে করে দেবীকে স্নান করানো হবে, তার প্রতিটি কলসের জল দেবীর গায়ে ঢালার সময় আলাদা আলাদা বাজানা বাজানোর রীতি রয়েছে। ধর্ম বিশ্বাসীদের একাংশের মতে, যেহেতু নবপত্রিকা মহামায়ারই একটি অংশ, তাই তাঁর স্নানের জল খুবই পবিত্র। অনেকে এই জল পান করেন দীর্ঘায়ু লাভের আশায়। নবপত্রিকা যেহেতু নানা দেবীর প্রতীক, তাই তাঁর এই স্নান জল অনেকে মাথায় ছড়ান। কারণ, লোকবিশ্বাস অনুযায়ী, দেবীর স্নানজল তাঁকে প্রাকৃতিক এবং দৈবিক নানা বিপদ আপদ থেকে রক্ষা করবে।

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।

     

  • Durga Puja 2022: সন্ধি পুজোর সঙ্গে বলির কী সম্পর্ক? জেনে নিন

    Durga Puja 2022: সন্ধি পুজোর সঙ্গে বলির কী সম্পর্ক? জেনে নিন

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: হিন্দু ধর্মে বহু পুজোতেই পশুবলি (Animal Sacrifice) দেওয়ার রেওয়াজ আছে। আবার অনেকে পশু হত্যাকে সমর্থন করেন না। তাই তাঁরা পরিবর্তে আখ, চালকুমড়ো বলি দেন পুজোয়। সন্ধি পুজোতেও বলি দেওয়ার রীতি প্রচলিত আছে। সন্ধি পুজোর (Sandhi Puja) সঙ্গে বলির কী সম্পর্ক? চলুন জেনে নেওয়া যাক।  

    প্রথমে জেনে নেওয়া যাক ‘বলি’ শব্দটির অর্থ। যজ্ঞে দেবতার উদ্দেশ্যে নিবেদিত সব কিছুকেই বলি বলা হয়। আগেকার দিনে যজ্ঞের আগুনে ঝলসে দেব-দেবীর উদ্দেশ্যে নিবেদন করে, পরে তা প্রসাদ হিসাবে গ্রহণ করতেন মুণি-ঋষিরা। পশু থেকে ফল, সব কিছুই হতে পারে বলির উপাদান। তবে সাধারণ মানুষ পশুবলিকেই একমাত্র বলি হিসেবে জানেন। দেব-দেবীর উদ্দেশ্যে এই উৎসর্গ আদতে প্রতীকী। সন্ধি পুজোতেও প্রতীকী হিসাবেই বলি দেওয়ার রীতি রয়েছে। এর সঙ্গে জড়িত আছে এক পৌরাণিক কাহিনী।   

    অষ্টমী এবং নবমী তিথির সন্ধিক্ষণে স্বর্ণ ভূষণে সজ্জিতা হন দেবী দুর্গা। স্বর্ণ বর্ণ ধারণ করেন। মহিষাসুর বধের প্রস্তুতি শুরু করেন তিনি। তবে মহিষাসুর দেবীর লক্ষ্য পূরণে বাধা দিতে তার দুই অনুচর চণ্ড এবং মুণ্ডকে  দেবীকে আক্রমণ করতে পাঠান। আকস্মিক পিছন থেকে তারা দেবীকে আক্রমণ করেন। সে সময় দেবী ক্রোধে রক্তবর্ণা হয়ে ওঠেন। ধারণ করেন চামুণ্ডা রূপ। খড়্গের কোপে চণ্ড ও মুণ্ডের মুণ্ডচ্ছেদ করেন দেবী। এর সঙ্গেই অশুভ শক্তির বিনাশ হয়। 

    সে কারণেই চণ্ড-মুণ্ডের প্রতীক হিসাবে মনের অশুভ চিন্তা, খারাপ প্রবৃত্তিকে দেবীর সামনে যজ্ঞের পবিত্র আগুনে ভস্ম করতেই বলি দেওয়া হয়। মহিষাসুরের প্রতীক হিসাবে বেশিরভাগ যজ্ঞে আগে মোষ বলি দেওয়ার রীতি ছিল। পরবর্তীতে তা অনেক ক্ষেত্রে পাঁঠাবলিতে রূপান্তরিত হয়। প্রাণী হত্যা অনেকেই পছন্দ করেন না। তাই চালকুমড়ো, আখ ইত্যাদি বলি দেওয়া হয় আজকাল। 

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।      

  • Mahalaya 2022: মহালয়ার তর্পণ, এদিন কার কার উদ্দেশে জল দান করা হয় জানেন?

    Mahalaya 2022: মহালয়ার তর্পণ, এদিন কার কার উদ্দেশে জল দান করা হয় জানেন?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মহালয়ার (Mahalaya) তপর্ণ (Tarpan)। পূর্বপুরুষের উদ্দেশে জলদান করার দিন। শাস্ত্রমতে, এদিন পিতৃপুরুষের উদ্দেশে জলদান করলে অক্ষয় স্বর্গলাভ হয়। শাস্ত্রের এই এই বিধান মেনে মহালয়ার দিন পূর্বপুরুষের উদ্দেশে জলদান করে তামাম ভারত (India)।

    আশ্বিন মাসের কৃষ্ণপক্ষে তর্পণ করাই বিধেয়। ভাদ্র পূর্ণিমার পরবর্তী প্রতিপদ থেকে অমাবস্যা তিথি পর্যন্ত এই ১৬ দিন পিতৃপক্ষ। পুরাণ (Puranas) অনুযায়ী, পিতৃপক্ষের সময় আমাদের প্রয়াত পূর্ব পুরুষরা মর্তে আসেন তাঁদের প্রিয়জনদের সঙ্গে দেখা করার জন্য। এই সময় তাঁরা উত্তর পুরুষের হাতে জল-পিণ্ড আশা করেন। এই পক্ষে তাঁদের উদ্দেশে জল ও পিণ্ড দান করলে, তাঁরা শক্তি লাভ করেন। এটাই তাঁদের চলার পথের পাথেয়। তবে সিংহভাগ বাঙালি তর্পণ করেন কেবল মহালয়ার দিন। এদিন নদ্যাদি জলাশয়ে গিয়ে পিতৃপুরুষের উদ্দেশে জলদান করেন তাঁরা। যাঁদের সামর্থ্য রয়েছে, তাঁরা এদিন পিতৃপুরুষের শ্রাদ্ধও করেন। শ্রাদ্ধ শেষে ব্রাহ্মণ ভোজন করাই রীতি। ব্রাহ্মণ ভোজন করালে দক্ষিণা দিতে হয়। তবে মহালয়ার দিন শ্রাদ্ধ শেষে ব্রাহ্মণ ভোজন করালে দক্ষিণা দিতে হয় না।

    আসলে তর্পণ হল স্মৃতি তর্পণ। বছরের একটি দিন শাস্ত্রজ্ঞরা উৎসর্গ করেছেন পিতৃপুরুষকে স্মরণ করার জন্য। আমরা নির্দিষ্ট দিনে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মৃত্যু বার্ষিকী পালন করি। এঁদের থেকে আমাদের পূর্বপুরুষ আমাদের কাছে কোনও অংশেই কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। তাই দৈনন্দিন কাজের চাপে ভুলে যাওয়া পিতৃপুরুষকে স্মরণ করতেই শ্রাদ্ধের আয়োজন। মহালয়ার দিন এই শ্রাদ্ধ করতে পারলে পরিবারের মঙ্গল হয় বলে লোকবিশ্বাস।

    মহালয়ার দিন আমরা যে পূর্ব পুরুষের উদ্দেশে জল এবং পিণ্ড দান করি, তা কেবল তাঁদের উদ্দেশেই নয়, গুরু এবং ঋষির উদ্দেশেও এদিন জলদান করা হয়। দৈনন্দিন চলার পথে যেসব ক্ষুদ্রাণুক্ষুদ্র কীট মরে, যাঁরা নিঃসন্তান, জল দেওয়ার কেউ নেই, মায় বাড়ির চাকর সবার উদ্দেশেই এদিন জলদান করা হয়। আগুনে পুড়ে মরে অনেক পতঙ্গ। তাদের আত্মার উদ্দেশেও জলদান করা হয় এদিন। শাস্ত্রবিদদের মতে, পিতৃপুরুষ সন্তুষ্ট হলে তাঁদের আশীর্বাদে জীবদ্দশায় মানুষ দীর্ঘায়ু, ধন সম্পত্তি, জ্ঞান, শান্তি এবং মৃত্যুর পর স্বর্গ লাভ করেন।

     

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।   

     

     

  • Durga Puja 2022: সন্ধিপুজোয় কার পুজো হয়, কেন হয় জানেন?

    Durga Puja 2022: সন্ধিপুজোয় কার পুজো হয়, কেন হয় জানেন?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আমরা জানি, অষ্টমীর (Asthami) শেষ ২৪ মিনিট এবং নবমীর (Nabami) প্রথম ২৪ মিনিট এই মোট ৪৮ মিনিটের মধ্যে শেষ করতে হয় সন্ধিপুজো (Sandhi Pujo)। প্রশ্ন হল, কেন হয় সন্ধিপুজো?

    দেবী দুর্গা (Goddess Durga) মহিষাসুরমর্দিনী। তিনি মহা শক্তিধর মহিষাসুরকে বধ করেছিলেন বলে তাঁর এই নাম। তবে তিনি যে কেবল মহিষাসুরকে বধ করেছিলেন তা নয়, চণ্ড ও মুণ্ড নামে দুই ভয়ঙ্কর অসুরকেও হত্যা করেছিলেন দেবী। তবে মায়ের সচরাচর যে রূপ আমরা দর্শন করি, সেই রূপে তিনি চণ্ড ও মুণ্ডকে বধ করেননি। চণ্ড ও মুণ্ডকে তিনি দশ হাতে নন, এই দুই দানবকে দেবী বধ করেছিলেন চার হাতে। তাই দেবীর এক নাম চামুণ্ডা। এই চামুণ্ডা হলেন আদ্যাশক্তি। তিনি সপ্ত মাতৃকার প্রধান। শশ্মানই তাঁর আবাসস্থল। খড়্গ দিয়ে চণ্ড ও মুণ্ডকে বধ করেছিলেন তিনি। হিন্দু শাস্ত্রবিদদের একাংশের মতে, চামুণ্ডা হলেন দেবী কালিকার এক রূপ।

    তবে কারও কারও মতে, শ্রীক্ষেত্র পুরীর নীলমাধব যেমন প্রথমে আদিবাসীদের দেবতা ছিলেন, পরে উচ্চ বর্ণের পুজো পেতে শুরু করেন, তেমনি চামুণ্ডাও ছিলেন আদিবাসীদের দেবতা। পরবর্তীকালে হিন্দু ধর্মের অঙ্গীভূত হন তিনি। দেবীকে আমিষ ভোগ দিতে হয়। কোথাও কোথাও চামুণ্ডার পুজোয় পশুবলিও হয়। জৈন ধর্মাবলম্বীরাও চামুণ্ডা পুজো করেন। তবে মদ ও মাংসের পরিবর্তে তাঁরা দেবীকে নিবেদন করেন নিরামিষ ভোগ।

    সে যাই হোক, দেবীকে আমিষ ভোগই নিবেদন করেন হিন্দুরা। যাঁদের পরিবারে পশু বলি দেওয়া হয় না, তাঁদের অনেকে চালের পিটুলকে কচুপাতায় মুড়ে পশুর আকার দিয়ে বলি করে। আখ, কলা, চালকুমড়াও বলি দেন কেউ কেউ। কোনও কোনও পরিবারে আবার সন্দেশের পশু তৈরি করে বলি দেওয়া হয়।

    এসব আলোচনা থেকে এটা স্পষ্ট, যে দেবীর পছন্দের তালিকায় রয়েছে আমিষ খাবার। তাই যাঁদের পরিবারে পশুবলি দেওয়ার চল নেই, তাঁরাও সন্ধিপুজোয় দেবীকে নিবেদন করেন আমিষ ভোগ। মা সারদার নির্দেশে বেলুড় মঠে পশু বলি হয় না। তবে কালীঘাটে পাঁঠা বলি দিয়ে সেই মাংস এনে সন্ধিপুজোয় দেবীকে উৎসর্গ করা হয় আমিষ ভোগ। বলির মাংস ছাড়াও বেলুড় মঠে দেবীকে অন্তত পাঁচ রকমের মাছ দিয়ে ভোগ দেওয়া হয় আজও।  

     

  • Durga Puja 2022: সন্ধি পুজোয় দেবী দুর্গার সামনে ১০৮ টি পদ্ম নিবেদনের তাৎপর্য জানেন?

    Durga Puja 2022: সন্ধি পুজোয় দেবী দুর্গার সামনে ১০৮ টি পদ্ম নিবেদনের তাৎপর্য জানেন?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সারা বছর বাঙালি অপেক্ষা করে থাকে বছরের এই সময়টার জন্যে। শরৎ কাল মানেই বাতাসে পুজোর (Durga Puja 2022) গন্ধ। মহামারীকাল কাটিয়ে আজ এবছর বাপের বাড়ি আসছেন উমা। এই দু বছর পুজোর আনন্দ মাটি হয়েছে। তাই এবার প্রস্তুতি জোর কদমে। ষষ্ঠী থেকে দশমী। এবার মিস হবে না কোনও অনুষ্ঠান। দুর্গা পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বহু রীতি-নীতি। এই নিয়মগুলির কারণ আদতে কী তা অনেকেই জানেন না। সন্ধি পুজোয় ১০৮টি (108 Lotus) পদ্ম ফুল নিবেদন করা হয়।       

    আশ্বিনের শুক্লাষ্টমীর বিশেষ মাহেন্দ্রক্ষণে দেবী দুর্গার সন্ধিপুজো হয়। বলা হয় অষ্টমী ও নবমী তিথির শুভ সন্ধিক্ষণই আসলে সন্ধিপুজো। এই বিশেষ তিথিকে শুভ বলে মানা হয়। এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে অনেকগুলো বিশেষ নিয়ম। তার মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম হল, দেবী দুর্গার পায়ে উৎসর্গ করা হয় ১০৮টি লাল পদ্ম। আর জ্বালানো হয় ১০৮টি প্রদীপ।     

    পুরাণ মতে, দেবী দুর্গা অষ্টমী ও নবমী তিথির মিলনক্ষণে, দেবী চামুণ্ডার রূপ ধারণ করেন। চন্ড ও মুন্ড নামক দুই ভয়ানক অসুরকে এই সন্ধিক্ষণে বধ করেছিলেন দেবী। কৃত্তিবাসের রামায়ণে উল্লেখ আছে, রাক্ষসরাজ রাবণকে বধ করার জন্য আশ্বিন মাসেই রামচন্দ্র অকাল বোধন করেন। সেখানেও সন্ধি পুজোর বিশেষ তিথিতে দেবীকে ১০৮ টি পদ্ম নিবেদন করা হয়। সেই সময় হনুমানকে দেবীদহ থেকে ১০৮ টি পদ্ম ফুল তুলে আনতে বলা হয়। কিন্তু সেখানে পাওয়া যায় ১০৭ টি পদ্ম। তখন রাম নিজে তাঁর পদ্ম সমান চোখ দান করতে চাইলে দেবী আবির্ভূত হয়ে বরদান করেন। দেবী প্রতিশ্রুতি দেন, রাবণের থেকে সুরক্ষা সরিয়ে নেবেন। ষষ্ঠীর দিন রামচন্দ্র এই পুজো শুরু করেন। অষ্টমী এবং নবমী তিথির মাঝে রামের অস্ত্র প্রবেশ করে এবং দশমীর দিন রাবণের বিনাশ হয়।        

    পুরাণ মতে, অষ্টমী তিথির শেষ ২৪ মিনিট ও নবমী তিথির প্রথম ২৪ মিনিট অর্থাৎ মোট ৪৮ মিনিট হল সন্ধিপুজোর সন্ধিক্ষণ। এই সময় ১০৮টি পদ্ম নিবেদন করলে কী কী ফল পাওয়া যায় জানেন? 

    • সন্ধি পুজোর সময় পদ্ম নিবেদন করে এক মনে যে কোনও দুর্গা মন্ত্র জপ করলে মনে জোর বাড়ে। 
    • এমন বিশ্বাস রয়েছে যে সন্ধি পুজোর পর মায়ের নাম নিয়ে যদি কোনও কাজ শুরু করা হয়, তাহলে দেবীর আশীর্বাদে সে কাজে সফলতা লাভের সম্ভাবনা যায় বেড়ে। 
    • সন্ধি পুজোর সময় ১০৮ টি পদ্ম ফুল সহকারে দেবীর অরাধনা করলে হারিয়ে যাওয়া সুখ-শান্তি ফিরে আসে। সেই সঙ্গে যে কোনও সমস্যা এবং কলহ মিটে যায়। 
    • এমন বিশ্বাস রয়েছে যে সন্ধি পুজোর সময় এক মনে মায়ের অরাধনা করলে শুধু দেবী দুর্গা নয়, তাঁর ছেলে-মেয়েরাও প্রসন্ন হন। 
    • ধনবান হতে চাইলে এই বিশেষ মুহুর্তে মায়ের নাম নিতে ভুলবেন না। 
    • শাস্ত্রে এমনটা বলা হয়েছে যে সন্ধি পুজোর সময় মায়ের যে কোনও রূপের অরাধনা করার পাশাপাশি যদি দেবীর সামনে পদ্ম ফুল নিবেদন করা যায়, তাহলে মা প্রসন্ন হয়ে আশীর্বাদ দেন। 
    • ১০৮ টি পদ্ম ফুল নিবেদন করে এই বিশেষ মুহুর্তে মায়ের আরাধনা করলে দেবীর আশীর্বাদে যে কোনও ধরনের গ্রহ দোষ কেটে যেতে যেমন সময় লাগে না, তেমনি খারাপ স্বপ্ন আসার আশঙ্কাও কমে। 

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।

  • Mahalaya 2022: মহালয়া শুভ না অশুভ? জানুন এই বিশেষ অমাবস্যা তিথির তাৎপর্য

    Mahalaya 2022: মহালয়া শুভ না অশুভ? জানুন এই বিশেষ অমাবস্যা তিথির তাৎপর্য

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মহালয়া (Mahalaya 2022) মানেই বাঙালির কাছে নস্ট্যালজিয়া। রেডিওতে বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের মহিষাসুরমর্দিনী দিয়ে শুরু হয় সকাল। মহালয়ার (Mahalaya) দিন পিতৃপক্ষের অবসান হয়ে, দেবীপক্ষের সূচনা হয়। এদিনই আক্ষরিক অর্থে দুর্গা পুজোর ঢাকে কাঠি পড়ে। কথিত আছে মহালয়ার দিন অসুর ও দেবতাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছিল। এই মহালয়া গুরুত্ব হিন্দু ধর্মে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে মহালয়া শুভ না অশুভ, এনিয়ে বিস্তর মতভেদ রয়েছে। একাংশের মতে, মহান কিংবা মহত্বের আলয় থেকেই এই শব্দের উৎপত্তি। সনাতন ধর্মে বলা হয়, এই দিনে পরলোক থেকে মর্ত্যে আত্মাদের যে সমাবেশ হয় তাকেই মহালয়া বলা হয়। আসুন জেনে নেওয়া যাক এর আসল ব্যাখ্যা।

    আরও পড়ুন: মেয়েরাও কি করতে পারে তর্পণ? কী বলছে শাস্ত্র?    

    পুরাণ মতে, ব্রহ্মার বরে মহিষাসুর অমর হয়ে উঠেছিলেন। শুধুমাত্র কোনও নারীশক্তির কাছে তার পরাজয় নিশ্চিত। অসুরদের অত্যাচারে যখন দেবতারা অতিষ্ঠ, তখন ত্রিশক্তি ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বর নারীশক্তির সৃষ্টি করেন। তিনিই মহামায়ারূপী দেবী দুর্গা। দেবতাদের দেওয়া অস্ত্র দিয়ে মহিষাসুরকে বধ করেন দুর্গা। এজন্যেই বিশ্বাস করা হয় যে, এই উৎসব খারাপ শক্তির বিনাশ করে শুভশক্তির বিজয়।  

    মহালয়ার দিন পিতৃ পুরুষদের উদ্দেশ্যে তর্পণ করার রীতি রয়েছে। এদিনই দেবীর দুর্গার চক্ষুদান হয়। মহালয়া শব্দটির অর্থ, মহান আলয় বা আশ্রম। এক্ষেত্রে দেবী দুর্গাই হলেন, সেই মহান আলয়। মহালয়ার শুভ, অশুভ দুই হওয়ার পেছেনেই ব্যাখ্যা রয়েছে।

    মহালয়া শুভ কেন?

    অনেকেই মনে করেন, এদিন থেকেই দেবীপক্ষের সূচনা, অশুভ শক্তির বিনাশ হয়, তাই মহালয়া শুভ। দুর্গাপুজোর সূচনা হয় এই দিন। এছাড়াও হিন্দু ধর্মের যে কোনও শুভ কাজেই পিতৃপুরুষদের স্মরণ করা হয়। এছাড়াও তর্পণের বৃহত্তর অর্থ মিলন। তাই এই দিন কোনওভাবেই অশুভ হতে পারে না।   

    মহালয়া অশুভ কেন? 

    আবার অনেকে মনে করেন, মহালয়ার দিন  পিতৃ পুরুষদের উদ্দেশ্যে জলদান করার রীতি রয়েছে। পিতৃপুরুষদের স্মরণ করার দিনকে অনেকেই শোক পালনের দিন হিসেবে পালন করে থাকেন। তাই মহালয়াকে তারা শুভ মানতে নারাজ। মহালয়া শুভ না অশুভ এই দ্বন্দ্ব চলতেই থাকবে। তব এই দিনটি দিয়েই শুরু হয় দুর্গা পুজো, বাঙালির মিলন উৎসব।

    দেখে নিন মহালয়ার সময়সূচী

    • মহালয়া ২০২২ অমাবস্যা তিথি 

              ২৪ সেপ্টেম্বর (৭ আশ্বিন), শনিবার, রাত ২/৫৫/৩৯ মিনিট অমাবস্যা তিথি শুরু হচ্ছে এবং ২৫ সেপ্টেম্বর (৮ আশ্বিন), রবিবার রাত ৩/২৪/১৭ মিনিট পর্যন্ত থাকছে।  

    • মহালয়া ২০২২ অমৃতযোগ 

              দিবা ঘ ৬। ২৩ গতে ৮।৪১ মধ্যে ও ১১।৪৫ গতে ২।৫০ মধ্যে এবং রাত্রি ঘ ৭।৩৮ গতে ৯।১৮ মধ্যে ও ১১।৫৭ গতে ১।২৭ মধ্যে ও ২।১৭ গতে ৫।৩০ মধ্যে। 

    • মহালয়া ২০২২ মাহেন্দ্রযোগ 

              দিবা ঘ ৩।৩৬ গতে ৪।২২মধ্যে।

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।   

  • Navratri 2022: নবরাত্রি কেন পালন করা হয়? এর তাৎপর্য জানেন?

    Navratri 2022: নবরাত্রি কেন পালন করা হয়? এর তাৎপর্য জানেন?

    শুভ্র চট্টোপাধ্যায়: আশ্বিন এবং চৈত্র মাসের শুক্লা প্রতিপদ তিথি থেকে পরের ন’দিন অবধি মা দুর্গার নয়টি অবতারের পুজো নবরাত্রি (Navratri) নামে পরিচিত। আরও সরল ভাষায় বলতে গেলে শরৎকালের নবরাত্রি  মহালয়ার (Mahalaya) পরদিন থেকে শুরু হয়। ন’দিন ধরে মা দুর্গার (Goddess Durga) ন’টি অবতারের পুজো দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তে ধুমধাম করে হয়। প্রসঙ্গত, শুধুমাত্র হিন্দু ধর্মাবলম্বী নয়, শিখ এবং জৈন সম্প্রদায়ের মধ্যেও নবরাত্রি পালনের রীতি দেখা যায়।

    আসুন এবার একনজরে দেখে নেওয়া যাক মা দুর্গার  (Maa Durga) এই ন’টি অবতার কী কী—

     ‘শ্রী বরাহপুরাণে’ হরিহর ব্রহ্মা ঋষির দ্বারা রচিত , দেবী কবচে লেখা রয়েছে – 
    প্রথমং শৈলপুত্রী চ
     দ্বিতীয়ম্ ব্রহ্মচারিণী ।
    তৃতীয়ং চন্দ্রঘণ্টেতি কুষ্মাণ্ডেতি চতুর্থকম্ ।।
    পঞ্চমং স্কন্দমাতেতি,
     ষষ্ঠম্ কাত্যায়নীতি চ।
    সপ্তমং কালরাত্রীতি মহাগৌরীতি চাষ্টমং।।
    নবমং সিদ্ধিদাত্রী চ
     নবদুর্গা প্রকীর্তিতাঃ ।।

    মাতা শৈলপুত্রী: নবরাত্রির প্রথম দিনে মাতা শৈলপুত্রীর পুজো করা হয়। দেবীর নামের অর্থ “পাহাড়ের কন্যা”। তাঁর ভক্তদের বিশ্বাস-মাতা শৈলপুত্রীর আশীর্বাদ স্বরূপ সুস্থ, রোগমুক্ত জীবন পাওয়া যায়। মাতার নৈবেদ্যতে খাঁটি ঘি অর্পণ করা হয়। এই দেবীর আরাধনায় মূলাধার চক্র শুদ্ধ হয়।

    মাতা ব্রহ্মচারিণী: নবরাত্রির দ্বিতীয় দিনে এই দেবীর পুজো হয়। ব্রহ্মচারিণী মাতাকে খুশি করতে ভক্তরা চিনি নিবেদন করে থাকেন। বিশ্বাস মতে, মাতা তাঁর ভক্তদের দীর্ঘায়ু প্রদান করেন। এই দেবীর উপাসনার দ্বারা সাধিস্তান চক্র শুদ্ধ হয় হয় বলে ভক্তরা মনে করে।

    আরও পড়ুন: মহালয়া শুভ না অশুভ? জানুন এই বিশেষ অমাবস্যা তিথির তাৎপর্য

    মাতা চন্দ্রঘন্টা: তৃতীয় দিনে মাতা চন্দ্রঘন্টার প্রতি ভক্তি নিবেদন করা হয়। এই দেবীর বাহন বাঘ। উগ্র মূর্তি এই দেবীকে ক্ষীর ভোগ অর্পণ করেন ভক্তরা। ভক্তদের বিশ্বাস, দেবী সমস্ত অশুভ শক্তির বিনাশ করেন এবং যাবতীয় বাধা বিঘ্ন দূর করেন।

    মাতা কুষ্মান্ডা: চতুর্থ দিনে মাতা কুষ্মান্ডার প্রতি ভক্তি নিবেদিত হয়‌। শাস্ত্র মতে, এই দেবী মহাবিশ্বের স্রষ্টা। তিনি তাঁর ভক্তদের জ্ঞানদানের দ্বারা বৌদ্ধিক বিকাশ ঘটান এবং কর্মক্ষেত্রে জটিলতা দূর করেন। দেবীকে মালপোয়া ভোগ অর্পণ করা হয়।

    মাতা স্কন্দমাতা: নবরাত্রির পঞ্চম দিনে মাতা স্কন্দমাতার আরাধনা করেন ভক্তরা। ভগবান কার্তিককে কোলে নিয়ে উপবিষ্ট এই দেবীর আশীর্বাদ পেতে ভক্তরা কলা নিবেদন করেন। দেবীর আশীর্বাদে ভক্তের জীবনে পরম সুখ ও শান্তি আসে বলে বিশ্বাস।

    মাতা কাত্যায়নী: ঋষি কাত্যায়নের কন্যা, শক্তির প্রতীক তথা যোদ্ধা দেবী কাত্যায়নী মাতার পুজো নবরাত্রির ষষ্ঠ দিনে সম্পন্ন হয়। ভক্তদের তিনি শক্তি, ধর্ম ও জাগতিক সুখ প্রদান করেন বলে বিশ্বাস। তাঁকে ভক্তদের মধু নিবেদনের রীতি চালু রয়েছে।

    মাতা কালরাত্রি: সপ্তমী পুজো হয় এই দেবীর। দেবী ত্রিশূলধারী। মাতা কালরাত্রির আশীর্বাদে জীবনের সমস্ত কুপ্রভাব বিনষ্ট হয় বলে ভক্তদের ধারণা। মাতাকে গুড় নিবেদন করা হয়।

    আরও পড়ুন: মেয়েরাও কি করতে পারে তর্পণ? কী বলছে শাস্ত্র?

    মাতা মহাগৌরী: উজ্জ্বল সৌন্দর্যের প্রতীক এই দেবী অষ্টমীতে ভক্তদের দ্বারা আরাধিত হন। মাতা মহাগৌরীর একহাতে ত্রিশূল ও অপর হাতে ডমরু থাকে। তাঁর নৈবেদ্যতে নারকেল রাখার রীতি রয়েছে। বিশ্বাস রয়েছে, মাতার আশীর্বাদ স্বরূপ ভক্তদের ভালো বিবাহ হয়।

    মাতা সিদ্ধিদাত্রী: নবরাত্রির শেষদিনে পুজো হয় এই দেবীর। তিনি ভক্তদের জীবনে সমস্ত অশুভ প্রভাব বিনষ্ট করেন এবং সাফল্য আনেন বলে ভক্তদের ধারণা। মাতা সিদ্ধিদাত্রীকে ভক্তরা তিল নিবেদন করে থাকেন।

    সংস্কৃত সাহিত্যের ব্যাকরণ আচার্য উপাধি প্রাপক তথা হিন্দু শাস্ত্র বিশেষজ্ঞ কাটোয়ার সৌমিক চট্টোপাধ্যায় প্রতিদিন নিয়মিত ভাবে নিজ গৃহে চণ্ডীপাঠ করেন। নবরাত্রি পালনের বিষয়ে তাঁর অভিমত – “দেবী মাহাত্ম্য পাঠের আগে দেবী কবচে পাঠ করা হয়। কবচ শব্দের অর্থ যা রক্ষা করে, এখানে দেবীর নয় অবতার, আট শক্তি সহ সর্ব রূপের বর্ণনা এবং অশুভ শক্তির প্রভাব থেকে ভক্তকে রক্ষা করার বিষয় রয়েছে।”

    সৌমিকবাবুর আরও সংযোজন-  পুরাণ মতে, মা দুর্গা নয়দিন যাবৎ অসুরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন এবং নবমীর রাতে মহিষাসুরকে বধ করেছিলেন। মা দুর্গার প্রতি ভক্তি নিবেদনের জন্য ভক্তরা নবরাত্রিতে মায়ের ন’টি রূপের পুজো করেন। অপর একটি মত হলো – নারদের প্রস্তাবে, রাবণ বধের উদ্দেশ্যে রামচন্দ্র ন’দিন উপবাস রেখে ব্রত পালন করেন এবং ব্রত শেষে রাবণকে বধ করেন। তাই সাফল্যের জন্য নবরাত্রির উপবাস রীতি প্রচলিত আছে।

    নবরাত্রি (Navratri 2022) দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন নামে পরিচিত রয়েছে। যেমন – নভরাত্রি, নঔরাত্রি, নবরাহত্রি, নবরাতম, নঔরাতম ইত্যাদি। আচার, অনুষ্ঠান, রীতি, প্রথা মেনে পালিত হওয়া নবরাত্রিতে ভক্তরা ন’দিন যাবৎ উপবাস রাখেন তার সঙ্গে ইন্দ্রিয় সংযমের বিধিও পালন করা হয়। এসময় তামসিক খাবার যথা মাছ, মাংস, ডিম ভক্তরা খান না। ক্ষৌরকর্ম করেন না, প্রত্যহ ভোরবেলায় উঠে স্নান করে দেবীকে ভক্তরা নৈবেদ্য নিবেদন করেন। সনাতন সংস্কৃতির ধারক, বাহক ও পালক হলো এই নবরাত্রি ব্রত।

LinkedIn
Share