Category: পরম্পরা

Get updated History and Heritage and Culture and Religion related news from the Madhyom news portal madhyom.com, West Bengal leading news portal Madhyom.com

  • Ashok Shashthi 2025: আজ অশোক ষষ্ঠী, এই দিন খাওয়া যায় না পোড়া জিনিস, জেনে নিন বিধি নিয়ম

    Ashok Shashthi 2025: আজ অশোক ষষ্ঠী, এই দিন খাওয়া যায় না পোড়া জিনিস, জেনে নিন বিধি নিয়ম

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ‘আমার সন্তান যেন, থাকে দুধে-ভাতে’ এই প্রার্থনা নিয়েই বাংলার ঘরে ঘরে মায়েরা অশোক ষষ্ঠীর (Ashok Shashthi 2025) ব্রত পালন করেন। চৈত্র নবরাত্রির এই ষষ্ঠী তিথিতে সন্তানের মঙ্গল কামনায় পুজো দেওয়া হয় মা ষষ্ঠীর কাছে। চৈত্রমাসের শুক্লাপক্ষের ষষ্ঠী তিথিতে এই ব্রত পালিত হয়। আজ, বৃহস্পতিবার পালিত হচ্ছে অশোক ষষ্ঠী। এবছর অশোক ষষ্ঠীর তিথি শুরু হবে ২ এপ্রিল রাত ১১ টা ৫০ মিনিটে। আর ৩ এপ্রিল রাত ৯ টা ৪১ মিনিটে এই তিথি শেষ হবে।

    ব্রত পালন

    এই ব্রতর দিন প্রথমে বাড়ির মহিলারা সকাল থেকে উপবাস থেকে ষষ্ঠীর (Ashok Shashthi 2025) থানে পুজো দেয়, তারপর অশোক ফুলের বীজ, মাসকলাই এবং দই আর কাঁঠালি কলা দিয়ে উপোস ভাঙে। এই পুজোর উপকরণের মধ্যে ছটি মাসকলাই, দই, কাঁঠালি কলা এবং অশোক ফুলের কুঁড়ি এক সঙ্গে মেখে খেতে হয় তবে এই পুজোর প্রসাদ কিন্তু দাঁতে ছোয়ানো যায় না। বাড়ির মহিলা সদস্যরা মূলত এই পুজোর প্রসাদ গিলে খান।অশোক ষষ্ঠীর দিন কিন্তু মায়েরা নিরামিষ খান। কারণ এই দিন আমিষ খাবার পিঁয়াজ রসুন গ্রহণ করা যায় না। অন্নের বদলে এই দিন আটা-ময়দা দিয়ে তৈরি খাবার এবং সেই সঙ্গে সাবু খাওয়া যায়। পোড়া খাবারও অশোক ষষ্ঠীর দিন খাওয়া যায় না। অশোক ষষ্ঠীকে অনেকে অরণ্য ষষ্ঠীও বলে থাকেন।

    অশোক ষষ্ঠী ঘিরে প্রচলিত কাহিনী

    অশোক ষষ্ঠীর (Ashok Shashthi 2025) পুজোর সঙ্গে এক মুনিকন্যার কাহিনী জড়িত। যে কন্যাকে অশোক গাছের নিচে কুড়িয়ে পান ওই মুনি। ওই মুনির বাস ছিল অশোক বনে। কন্যার নাম হয় অশোকা। এককালে কন্যা বড় হলে, তাঁর বিয়ে হয় রাজপুত্রের সঙ্গে। স্বামীগৃহে যান মুনিকন্যা। মুনি, অশোকাকে শ্বশুরবাড়ি পাঠানোর সময় সঙ্গে কিছু অশোক ফুল এবং অশোক গাছের বীজ বেঁধে দেন। সেই সঙ্গে বলে দেন যে চৈত্র মাসের শুক্ল ষষ্ঠীর দিন ওই শুকনো অশোক ফুলগুলি জল দিয়ে যেন তিনি খান। আর ওই দিন অশোকাকে অন্ন না খাওয়ার আদেশ দেন এরপর কেটে যায় বহুকাল। অশোকার সাত পুত্র এবং এক কন্যা সন্তান হয়, বিয়েও হয় তাঁদের। এক চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষে সন্ধ্যেবেলায় অশোকা অন্ন মুখে দেব না বলে জানান।আদেশ মত বউমারা অশোকার জন্য মুগকলাই রাঁধতে থাকে, কিন্তু তার মধ্যে কোনওভাবে একটা ধান ছিল, যেটা খাবারের মধ্যেই থেকে যায়। সেই খাবার অশোকা খেতেই পরিবারে অশোকার সন্তান, স্বামী সহ অনেকে মারা যান। তিনি ছুটে যান ওই মুনির কাছে। মুনিই তখন বলেন, ওই খাবারে কোনও ধান থাকার জেরেই এমন ক্ষতি হয়েছে। তিনি সঙ্গে সঙ্গে ঘটি থেকে মন্ত্রপূত জল দিয়ে দেন অশোকাকে, বলেন যে এই মন্ত্রপপূত জল মৃতদের গায়ে ছিটিয়ে দিলে সকলে বেঁচে উঠবেন। অশোকা বাবার কথামতো তাই করেন। সকলে প্রাণ ফিরে পায়। চৈত্র মাসে ষষ্ঠীর দিন মা ষষ্ঠীর পুজো দিয়ে মুগকলাই আর দই সহযোগে অশোক ফুল খেতে বলেন মুনি। সেই থেকেই এই ব্রত কথা উঠে আসে।

    কেন অশোক কুঁড়িই প্রসাদ

    এই তিথিতে অশোকফুল এবং বীজ খাওয়ার নিয়ম আছে। আয়ুর্বেদে অশোকগাছের ভেষজ গুরুত্ব প্রচুর। মরশুমি অসুখ, স্ত্রীরোগ থেকে প্রতিষেধক তৈরি করে অশোকফুল, বীজ এবং গাছের ছাল। সেই গুণকেই সমাদর করা হয় ব্রতপালনের মাধ্যমে। এই প্রসাদ খাওয়ার বিশেষ নিয়মও রয়েছে। বলা হয়, পূজার পর দই ,কাঁঠালি কলার মধ্যে ফুলের কুঁড়িগুলি রেখে দাঁতে না লাগিয়ে গিলে খাওয়া হয়। এরপর মুগকলাই খেয়ে উপবাস ভঙ্গ করতে হয়। বাড়িতেও অশোক গাছ থাকা অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়। এতে বাস্তুদোষ কেটে যায় বলেই বিশ্বাস।

  • Ramakrishna 314: “পুকুরের পাড়ে বসে থাকলে কি মাছ পাওয়া যায়? চারা ফেলো, ক্রমে গভীর জল থেকে মাছ আসবে”

    Ramakrishna 314: “পুকুরের পাড়ে বসে থাকলে কি মাছ পাওয়া যায়? চারা ফেলো, ক্রমে গভীর জল থেকে মাছ আসবে”

    দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে ভক্তসঙ্গে শ্রীরামকৃষ্ণ  

    তৃতীয় পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৪, ২৬শে অক্টোবর
    ভক্তসঙ্গে—নানাপ্রসঙ্গে—ভাব মহাভাবের গূঢ়তত্ত্ব

    “শুধু ‘তিনি আছেন’ বলে বসে থাকলে কি হবে? হালদার-পুকুরে বড় মাছ আছে। পুকুরের পাড়ে শুধু বসে থাকলে কি মাছ পাওয়া যায়? চার করো, চারা ফেলো, ক্রমে গভীর জল থেকে মাছ আসবে আর জল নড়বে। তখন আনন্দ হবে (Kathamrita)। হয়তো মাছটার খানিকটা একবার দেখা গেল—মাছটা ধপাঙ্‌ করে উঠল। যখন দেখা গেল, তখন আরও আনন্দ।

    “দুধকে দই পেতে মন্থন করলে তবে তো মাখন পাবে।

    (মহিমার প্রতি)—“এ তো ভাল বালাই হল! ঈশ্বরকে (Ramakrishna) দেখিয়ে দাও, আর উনি চুপ করে বসে থাকবেন। মাখন তুলে মুখের কাছে ধরো। (সকলের হাস্য) ভাল বালাই—মাছ ধরে হাতে দাও।

    “একজন রাজাকে দেখতে চায়। রাজা আছেন সাত দেউড়ির পরে। প্রথম দেউড়ি পার না হতে হতে বলে, ‘রাজা কই?’ যেমন আছে, এক-একটা দেউড়ি তো পার হতে হবে!”

    ঈশ্বরলাভের উপায়—ব্যাকুলতা 

    মহিমাচরণ—কি কর্মের দ্বারা তাঁকে পাওয়া যেতে পারে?

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—এই কর্মের দ্বারা তাঁকে পাওয়া যাবে, আর এ-কর্মের দ্বারা পাওয়া যাবে না, তা নয়। তাঁর কৃপার উপর নির্ভর। তবে ব্যাকুল হয়ে কিছু কর্ম করে যেতে হয়। ব্যাকুলতা থাকলে তাঁর কৃপা হয় (Kathamrita)।

    “একটা সুযোগ হওয়া চাই। সাধুসঙ্গ, বিবেক, সদ্‌গুরুলাভ, হয়তো একজন বড়ভাই সংসারে ভার নিলে; হয়তো স্ত্রীটি বিদ্যাশক্তি, বড় ধার্মিক; কি বিবাহ আদপেই হল না, সংসারে বদ্ধ হতে হল না;—এই সব যোগাযোগ হলে হয়ে যায়।

    “একজনের বাড়িতে ভারী অসুখ—যায় যায়। কেউ বললে, স্বাতী নক্ষত্রে বৃষ্টি পড়বে, সেই বৃষ্টির জল মড়ার-মাথার খুলিতে থাকবে, আর একটা সাপ ব্যাঙকে তেড়ে যাবে, ব্যাঙকে ছোবল মারবার সময় ব্যাঙটা যেই লাফ দিয়ে পালাবে, অমনি সেই সাপের বিষ মড়ার মাথার খুলিতে পড়ে যাবে; সেই বিষের ঔষধ তৈয়ার করে যদি খাওয়াতে পার, তবে বাঁচে। তখন যার বাড়িতে অসুখ, সেই লোক দিন-ক্ষণ-নক্ষত্র দেখে বাড়ি থেকে বেরুল, আর ব্যাকুল হয়ে ওই সব খুঁজতে লাগল। মনে মনে ঈশ্বরকে ডাকছে (Kathamrita), ‘ঠাকুর! তুমি যদি জোটপাট করে দাও, তবেই হয়!’ এইরূপে যেতে যেতে সত্য সত্যই দেখতে পেলে, একটা মড়ার মাথার খুলি পড়ে রয়েছে। দেখতে দেখতে একপশলা বৃষ্টিও হল। তখন সে ব্যক্তি বলছে, ‘হে গুরুদেব! মরার মাথার খুলিও পেলুম, স্বাতীনক্ষত্রে বৃষ্টিও হল, সেই বৃষ্টির জলও ওই খুলিতে পড়েছে; এখন কৃপা করে আর কয়টির যোগাযোগ করে দাও ঠাকুর।’ ব্যাকুল হয়ে ভাবছে। এমন সময় দেখে একটা বিষধর সাপ আসছে। তখন লোকটির ভারী আহ্লাদ; সে এন ব্যাকুল হল যে বুক দুরদুর করতে লাগল; আর সে বলতে লাগল, ‘হে গুরুদেব (Ramakrishna)! এবার সাপও এসেছে; অনেকগুলির যোগাযোগও হল। কৃপা করে এখন আর যেগুলি বাকী আছে, সেগুলি করিয়ে দাও!’ বলতে বলতে ব্যাঙও এল, সাপটা ব্যাঙ তাড়া করে যেতেও লাগল; মড়ার মাথার খুলির কাছে এসে যেই ছোবল দিতে যাবে, ব্যাঙটা লাফিয়ে ওদিকে গিয়ে পড়ল আর বিষ অমনি খুলির ভিতর পড়ে গেল। তখন লোকটি আনন্দে হাততালি দিয়ে নাচতে লাগল।

    “তাই বলছি ব্যাকুলতা থাকলে সব হয়ে যায়।”

  • Lakshmi Puja: চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষের বৃহস্পতিবার মা লক্ষ্মীর আরাধনা করুন, সৌভাগ্য থাকবে সারা বছর

    Lakshmi Puja: চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষের বৃহস্পতিবার মা লক্ষ্মীর আরাধনা করুন, সৌভাগ্য থাকবে সারা বছর

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ১৪৩১ শেষের পথে। কথায় রয়েছে, বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। প্রতি মাসেই বাঙালি হিন্দুদের কিছু না কিছু উৎসব লেগেই থাকে। আর ধনলক্ষ্মীর পুজো তো হয় প্রতিদিনই। সপ্তাহে প্রতি বৃহস্পতিবারই হল লক্ষ্মীবার। দেবী লক্ষ্মীর প্রতিদিন বাড়িতে পুজো করা হয়। তবে বিশেষ আশীর্বাদ লাভের জন্য ভাদ্র, কার্তিক, পৌষ ও চৈত্র মাস দেবী লক্ষ্মীর আরাধনা (Lakshmi Puja) করা হয়। এই সময়ে দেবী লক্ষ্মীর আরাধনা করলে ধন, সৌভাগ্য, সমৃদ্ধি, সৌন্দর্য ও শক্তি বৃদ্ধি পায়।

    চৈত্র মাসে লক্ষ্মীপুজোর প্রচলিত কাহিনী

    চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষের বৃহস্পতিবার চৈত্র মাসের লক্ষ্মীপুজো ব্রত পালন করা হয়। বলা হয় এই ব্রত করলে সংসারে মা লক্ষ্মী বিরাজ করেন। পুরাণ বর্ণিত কাহিনী অনুযায়ী, একদিন নারায়ণের ইচ্ছ হলে তিনি -মা লক্ষ্মীকে সঙ্গে নিয়ে তাঁর পুষ্পরথ করে মর্ত্যে ঘুরতে এলেন। মর্ত্যে এসে বামুন আর বামনির বেশ ধরে তাঁরা ঘুরতে লাগলেন। নারায়ণ-লক্ষ্মীকে উত্তর দিকে যেতে না করলেন। লক্ষ্মী নারায়ণের বারণ না শুনে উত্তর দিকে গিয়ে দেখলেন তিল ফুলের বাগান। লক্ষ্মী ওই তিল ফুল তুলে খোঁপায় দিলেন, গলায় পরলেন। এমন সময় সেই বাগানের মালী এসে লক্ষ্মীকে ফুল তোলার শাস্তি হিসেবে আটকে রাখলেন। নারায়ণ এসে প্রশ্ন করলে ওই মালী বললেন তাঁর বাগানে ফুল তোলার শাস্তি হিসেবে লক্ষ্মীকে তাঁর বাড়িতে ১২ বছর রাঁধুনির কাজ করতে হবে। নারায়ণ লক্ষ্মীকে রেখে চলে গেলেন। লক্ষ্মীকে বামুন বাড়িতে নিয়ে গেল। বামুনের বাড়িতে চাল-ডাল বাড়ন্ত। কিন্তু লক্ষ্মী আসাতে তাঁর ঘর ভরে গেল। দেখতে দেখত বারো বছর কেটে গেল। লক্ষ্মীর কৃপায় বামুনের ঘর ভরে উঠেছিল। এবার নারায়ণ লক্ষ্মীকে নিয়ে যেতে এলেন, বামনি লক্ষ্মীকে ছাড়তে চাইলেন না। কেঁদে কেঁদে তাঁর পায়ে পড়লেন। লক্ষ্মী বামনীকে বললেন তাঁরা যেন ভাদ্র, কার্তিক, পৌষ ও চৈত্র মাসে লক্ষ্মীপুজো করেন তাহলেই সংসারে আর অভাব থাকবে না। এভাবেই চৈত্র মাসে লক্ষ্মী পুজর প্রচলন হল।

    কেন লক্ষ্মী আরাধনা

    হিন্দু ধর্মে সম্পদের দেবী হলেন লক্ষ্মী (Goddess Lakshmi)। তিনি ধনসম্পদ, আধ্যাত্মিক সম্পদ, সৌভাগ্য ও সৌন্দর্যের দেবী। তিনি বিষ্ণুর পত্নী। তার অপর নাম মহালক্ষ্মী, ইনি স্বত্ত্ব গুনময়ী। লক্ষ্মীর পূজা (Lakshmi Puja) অধিকাংশ হিন্দুর গৃহেই অনুষ্ঠিত হয়। দীপাবলি ও কোজাগরী পূর্ণিমার দিন তার বিশেষ পূজা হয়। এছাড়া বৃহস্পতিবারকে লক্ষ্মীবারই বলা হয়ে থাকে। লক্ষ্মী পুজো নিয়ে রীতিমতো বিভিন্ন রীতি পালন করে ধনদেবীর আরাধনা করা হয়। একটু পুরনো ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যাবে লক্ষ্মীপুজোর দিন সন্ধেবেলাতেই মায়ের আরাধনা করা হত। আসল নিয়ম এটাই। তবে সময় বদলেছে। বহু মানুষ বর্তমানে সুবিধার জন্য সকালের দিকে বা বিকেল নাগাদ পুজো সেরে নেন। তবে এখনও লক্ষ্মীপুজোর দিন সন্ধেবেলায় বাঙালির ঘরে, তুলসীতলায় জ্বলে ওঠে সন্ধ্যাপ্রদীপ।

    চলতি বছর চৈত্র মাসে লক্ষ্মী পুজো

    দুর্গাপুজোর ঠিক পরেই আশ্বিন মাসের শেষে পূর্ণিমা তিথিতে লক্ষ্মী দেবীর আরাধনা করা হয় শহর জুড়ে। ধন, সম্পদ, বৈভবের আশায় মায়ের কাছে প্রার্থনা করেন আপামোর সাধারণ জনতা। তবে শুধু মাত্র আশ্বিনেই নয়, বছরের অন্যান্য সময়েও পূজিতা হন দেবী লক্ষ্মী — ভাদ্র, পৌষ, চৈত্র। কোথাও মা লক্ষ্মীকে মূর্তি হিসেবে, কোথাও বা সরায় আঁকা পটে পুজো করা হয়। চলতি বছর বৃহস্পতিবার, ৩ মার্চ লক্ষ্মী পুজো হবে। ওই দিন এই বছর আবার চৈত্রমাসের শুক্লাপক্ষের ষষ্ঠী তিথিতে এই অশোক ষষ্ঠী ব্রতও পালন করা হবে। অশোক ষষ্ঠীর তিথি বুধবার, ২ এপ্রিল রাত থেকে এই শুরু হলেও, বৃহস্পতিবার এই অশোক ষষ্ঠী পালিত হবে। ২০২৫ সালে অশোক ষষ্ঠীর তিথি শুরু হবে ২ এপ্রিল রাত ১১ টা ৫০ মিনিটে। আর ৩ এপ্রিল রাত ৯ টা ৪১ মিনিটে এই তিথি শেষ হবে।

    লক্ষ্মী পুজোর দিন কী করবেন

    এই দিনে স্নানের পর পরিস্কার কাপড় পরিধান করুন এবং দেবী লক্ষ্মীর পুজো করুন। পুজোর সময় মাকে শস্য, হলুদ ও গুড় নিবেদন করুন। এই দিনে বাড়িতে শ্রী যন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়। তাই এই যন্ত্র স্থাপনের পর শ্রীসুক্ত ও পদ্ম ফুলের মন্ত্র দিয়ে যজ্ঞ করুন। যজ্ঞের পর মাকে সাজসজ্জার সামগ্রী নিবেদন করুন। এর পরে, দেবী লক্ষ্মীকে লাল ফুল এবং ভগবান বিষ্ণুকে হলুদ রঙের কাপড় অর্পণ করুন। এছাড়াও এই দিনে দেবী লক্ষ্মীকে ক্ষীর নিবেদন করা উচিত। শাস্ত্র মতে লক্ষ্মী পঞ্চমীর দিনে দান করতে হবে। এছাড়াও এই দিনে গরুকে খাওয়ান, কারণ এই দিনে গরুকে খাওয়ালে দেবী লক্ষ্মীর আশীর্বাদ পাওয়া যায়।

  • Ramakrishna 313: “সমুদ্র দূর হতে হো-হো শব্দ করছে, কাছে গেলে কত জাহাজ যাচ্ছে, পাখি উড়ছে, ঢেউ হচ্ছে—দেখতে পাবে”

    Ramakrishna 313: “সমুদ্র দূর হতে হো-হো শব্দ করছে, কাছে গেলে কত জাহাজ যাচ্ছে, পাখি উড়ছে, ঢেউ হচ্ছে—দেখতে পাবে”

    তৃতীয় পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৪, ২৬শে অক্টোবর
    ভক্তসঙ্গে—নানাপ্রসঙ্গে—ভাব মহাভাবের গূঢ়তত্ত্ব

    “মাখন যদি চাও, তবে দুধকে দই পাততে হয়। তারপর নির্জনে রাখতে হয়। তারপর দই বসলে পরিশ্রম করে মন্থন করতে হয়। তবে মাখন তোলা হয় (Kathamrita)।”

    মহিমাচরণ (Ramakrishna)—আজ্ঞা হাঁ, কর্ম চাই বইকি! অনেক খাটতে হয়, তবে লাভ হয়। পড়তেই কত হয়! অনন্ত শাস্ত্র।

    আগে বিদ্যা (জ্ঞানবিচার)—না আগে ঈশ্বরলাভ? 

    শ্রীরামকৃষ্ণ (মহিমার প্রতি)—শাস্ত্র কত পড়বে? শুধু বিচার করলে কি হবে? আগে তাঁকে লাভ করবার চেষ্টা কর, গুরুবাক্যে বিশ্বাস করে কিছু কর্ম কর। গুরু না থাকেন, তাঁকে ব্যাকুল হয়ে প্রার্থনা কর, তিনি কেমন—তিনিই জানিয়ে দিবেন।

    “বই পড়ে কি জানবে? যতক্ষণ না হাটে পৌঁছানি যায় ততক্ষণ দূর হতে কেবল হো-হো শব্দ। হাটে পৌঁছিলে আর-একরকম। তখন স্পষ্ট দেখতে পাবে, শুনতে পাবে। ‘আলু নাও’ ‘পয়সা দাও’ স্পষ্ট শুনতে পাবে।

    “সমুদ্র দূর হতে হো-হো শব্দ করছে। কাছে গেলে কত জাহাজ যাচ্ছে, পাখি উড়ছে, ঢেউ হচ্ছে—দেখতে (Kathamrita) পাবে।

    “বই পড়ে ঠিক অনুভব হয় না। অনেক তফাত। তাঁকে দর্শনের পর বই, শাস্ত্র, সায়েন্স সব খড়কুটো বোধ হয়।

    “বড়বাবুর সঙ্গে আলাপ দরকার। তাঁর ক’খানা বাড়ি, ক’টা বাগান, কত কোম্পানির কাগজ, এ আগে জানবার জন্য অত ব্যস্ত কেন? চাকরদের কাছে গেলে তারা দাঁড়াতেই দেয় না, — কোম্পানির কাগজের খবর কি দিবে! কিন্তু জো-সো করে বড়বাবুর সঙ্গে একবার আলাপ কর, তা ধাক্কা খেয়েই হোক, আর বেড়া ডিঙ্গিয়েই হোক,—তখন কত বাড়ি, কত বাগান, কত কোম্পানির কাগজ, তিনিই বলে দিবেন। বাবুর সঙ্গে আলাপ (Kathamrita) হলে আবার চাকর, দ্বারবান সব সেলাম করবে।” (সকলের হাস্য)

    ভক্ত—এখন বড়বাবুর সঙ্গে আলাপ কিসে হয়? (সকলের হাস্য)

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—তাই কর্ম চাই। ঈশ্বর আছেন বলে বসে থাকলে হবে না।

    “জো-সো করে তাঁর কাছে যেতে হবে। নির্জনে তাঁকে ডাকো, প্রার্থনা কর; ‘দেখা দাও’ বলে ব্যাকুল হয়ে কাঁদো। কামিনী-কাঞ্চনের জন্য পাগল হয়ে বেড়াতে পার; তবে তাঁর জন্য একটু পাগল হও। লোকে বলুক যে ঈশ্বরের (Ramakrishna) জন্য অমুক পাগল হয়ে গেছে। দিন কতক না হয়ে সব ত্যাগ করে তাঁকে একলা ডাকো।

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

  • Ramakrishna 312: “বলিতে বলিতে ভাবপূর্ণ হইয়া উঠিলেন, করুণামাখা সস্নেহ দৃষ্টি, ভাবোন্মোত্ত হইয়া গান ধরিলেন”

    Ramakrishna 312: “বলিতে বলিতে ভাবপূর্ণ হইয়া উঠিলেন, করুণামাখা সস্নেহ দৃষ্টি, ভাবোন্মোত্ত হইয়া গান ধরিলেন”

    দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে ভক্তসঙ্গে শ্রীরামকৃষ্ণ     

    দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৫, ১লা মার্চ
    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ও তাঁহার নরেন্দ্রকে সন্ন্যাসের উপদেশ

    ভক্তেরা একদৃষ্টে দেখিতেছেন। ঠাকুর (Ramakrishna) নিচেই মাদুরের উপর বসিয়া আছেন। কাছে মাস্টার, সম্মুখে নরেন্দ্র, চতুর্দিকে ভক্তগণ।

    ঠাকুর একটু চুপ করিয়া নরেন্দ্রকে সস্নেহে দেখিতেছেন।

    কিয়ৎক্ষণ পরে নরেন্দ্রকে বলিলেন, বাবা, কামিনী-কাঞ্চনত্যাগ না হলে হবে না। বলিতে বলিতে ভাবপূর্ণ হইয়া উঠিলেন। সেই করুণামাখা সস্নেহ দৃষ্টি, তাহার সঙ্গে ভাবোন্মোত্ত হইয়া গান ধরিলেন (Kathamrita):

    কথা বলতে ডরাই, না বললেও ডরাই।
    মনে সন্দ হয় পাছে তোমাধনে হারাই হারাই ॥
    আমরা জানি যে মন-তোর, দিলাম তোকে সেই মন্তোর,
    এখন মন তোর; আমরা যে মন্ত্রে বিপদেতে তরি তরাই ॥

    শ্রীরামকৃষ্ণের (Ramakrishna) যেন ভয়, বুঝি নরেন্দ্র আর কাহারও হইল, আমার বুঝি হল না! নরেন্দ্র অশ্রুপূর্ণলোচনে চাহিয়া আছেন।

    বাহিরের একটি ভক্ত ঠাকুরকে দর্শন করিতে আসিয়াছিলেন। তিনিও কাছে বসিয়া সমস্ত দেখিতেছিলেন ও শুনিতেছিলেন।

    ভক্ত—মহাশয়, কামিনী-কাঞ্চন যদি ত্যাগ করতে হবে, তবে গৃহস্থ কি করবে?

    শ্রীরামকৃষ্ণ—তা তুমি কর না! আমাদের অমনি একটা কথা হয়ে গেল (Kathamrita)।

    গৃহস্থ ভক্তের প্রতি অভয়দান ও উত্তেজনা 

    মহিমাচরণ চুপ করিয়া বসিয়া আছেন, মুখে কথাটি নাই।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (মহিমার প্রতি)—এগিয়ে পড়! আরও আগে যাও, চন্দনকাঠ পাবে, আরও আগে যাও, রূপার খনি পাবে; আরও এগিয়ে যাও সোনার খনি পাবে, আরও এগিয়ে যাও হীরে মাণিক পাবে। এগিয়ে পড়!

    মহিমা—আজ্ঞে, টেনে রাখে যে—এগুতে দেয় না!

    শ্রীরামকৃষ্ণ (সহাস্যে)—কেন, লাগাম কাট, তাঁর নাম গুণে কাট। ৺কালী নামেতে কালপাশ কাটে।

    নরেন্দ্র পিতৃবিয়োগের পর সংসারে বড় কষ্ট পাইতেছেন। তাঁহার উপর অনেক তাল যাইতেছে। ঠাকুর মাঝে মাঝে নরেন্দ্রকে দেখিতেছেন। ঠাকুর বলিতেছেন, তুই কি চিকিৎসক হয়েছিস?

    ‘শতমারী ভবেদ্বৈদ্যঃ। সহস্রমারী চিকিৎসকঃ।’ (সকলের হাস্য)

    ঠাকুর (Ramakrishna) কি বলিতেছেন (Kathamrita), নরেন্দ্রের এই বয়সে অনেক দেখাশুনা হইল—সুখ-দুঃখের সঙ্গে অনেক পরিচয় হইল।

    নরেন্দ্র ঈষৎ হাসিয়া চুপ করিয়া রহিলেন।

     

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

  • Ramakrishna 311: “বাজ পড়লে ঘরের মোটা জিনিস তত নড়ে না, কিন্তু সার্সী ঘটঘট করে, সত্ত্বগুণের অবস্থায় হইচই হয় না”

    Ramakrishna 311: “বাজ পড়লে ঘরের মোটা জিনিস তত নড়ে না, কিন্তু সার্সী ঘটঘট করে, সত্ত্বগুণের অবস্থায় হইচই হয় না”

    দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে ভক্তসঙ্গে শ্রীরামকৃষ্ণ     

    দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৫, ১লা মার্চ
    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ও তাঁহার নরেন্দ্রকে সন্ন্যাসের উপদেশ

    “একটি ফকির বনে কুটির করে থাকত। তখন আকবর শা দিল্লীর বাদশা। ফকিরটির কাছে অনেকে আসত। অতিথিসৎকার করতে তার বড় ইচ্ছা হয়। একদিন ভাবলে যে, টাকা-কড়ি না হলে কেমন করে অতিথিসৎকার হয়? তবে যাই একবার অকবর শার কাছে। সাধু-ফকিরের অবারিত দ্বার। আকবর শা তখন নমাজ পড়ছিলেন, ফকির নমাজ ঘরে গিয়ে বসল। দেখলে আকবর শা নমাজের শেষে বলছে (Kathamrita), ‘হে আল্লা, ধন দাও দৌলত দাও’, আরও কত কি। এই সময়ে ফকিরটি উঠে নমাজের ঘর থেকে চলে যাবার উদ্যোগ করতে লাগল। আকবর শা ইশারা করে বসতে বললেন। নমাজ শেষ হলে বাদশা জিজ্ঞাসা কল্লেন — আপনি এসে বসলেন আবার চলে যাচ্ছেন? ফকির বললে,— সে আর মহারাজের শুনে কাজ নাই, আমি চল্লুম। বাদশা অনেক জিদ করাতে ফকির বললে—আমার ওখানে অনেকে আসে। তাই কিছু টাকা প্রার্থনা করতে এসেছিলাম। আকবর বললে (Ramakrishna)—তবে চলে যাচ্ছিলেন কেন? ফকির বললে, যখন দেখলুম, তুমিও ধন-দৌলতের ভিখারী—তখন মনে করলুম যে, ভিখারীর কাছে চেয়ে আর কি হবে? চাইতে হয় তো আল্লার কাছে চাইব।”

    পূর্বকথা—হৃদয় মুখুজ্জের হাঁকডাক—ঠাকুরের সত্ত্বগুণের অবস্থা 

    নরেন্দ্র—গিরিশ ঘোষ এখন কেবল এই সব চিন্তাই করে।

    শ্রীরামকৃষ্ণ—সে খুব ভাল। তবে অত গালাগাল মুখখারাপ করে কেন? সে অবস্থা আমার নয়। বাজ পড়লে ঘরের মোটা জিনিস তত নড়ে না, কিন্তু সার্সী ঘটঘট করে। আমার সে অবস্থা নয়। সত্ত্বগুণের অবস্থায় হইচই হয় না। হৃদে তাই চলে গেল;—মা রাখলেন না। শেষাশেষি বড় বাড়িয়েছিল। আমায় গালাগালি দিত। হাঁকডাক (Kathamrita) করত।

    নরেন্দ্র কি অবতার বলেন? নরেন্দ্র ত্যাগীর থাক—নরেন্দ্রের পিতৃবিয়োগ 

    “গিরিশ ঘোষ যা বলে তোর সঙ্গে কি মিললো (Ramakrishna)?”

    নরেন্দ্র—আমি কিছু বলি নাই, তিনিই বলেন, তাঁর অবতার বলে বিশ্বাস। আমি আর কিছু বললাম না।

    শ্রীরামকৃষ্ণ—কিন্তু খুব বিশ্বাস! দেখেছিস (Kathamrita)?

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

  • Chaitra Navratri 2025: স্বয়ং ব্রহ্মা তৈরি করেছিলেন পুষ্করের এই নবদুর্গা মন্দির, নবরাত্রিতে ভক্তের ঢল

    Chaitra Navratri 2025: স্বয়ং ব্রহ্মা তৈরি করেছিলেন পুষ্করের এই নবদুর্গা মন্দির, নবরাত্রিতে ভক্তের ঢল

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আজ, রবিবার। শুরু হয়ে গিয়েছে চৈত্র নবরাত্রি (Chaitra Navratri 2025)। এদিন থেকেই লাখ লাখ ভক্ত জড়ো হতে শুরু করেছেন আজমেঢ়ের প্রাচীন নবদুর্গা মন্দিরে (Nav Durga Temple)। প্রতিবারের মতো এবারও মধ্যপ্রদেশের এই মন্দিরে উড়ছে ১০৮ ফুট উঁচু একটি পতাকা। হিন্দুদের বিশ্বাস, এই মন্দিরটি তৈরি হয়েছিল মহাবিশ্ব সৃষ্টির সময়ই। ত্রিমূর্তির প্রধান দেবতা সৃষ্টিকর্তা ভগবান ব্রহ্মা পুষ্করের নাগ পাহাড়ের প্রান্তে নবদুর্গাকে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, যাতে নবদুর্গা মা সৃষ্টি যজ্ঞে বাধা সৃষ্টিকারী নেতিবাচক শক্তিগুলিকে ধ্বংস করতে পারেন।

    মন্দিরের বিশেষত্ব (Nav Durga Temple)

    স্থানীয়দের বিশ্বাস, নবদুর্গা মা পুষ্করকে রক্ষা করেন। এই মন্দিরের বিশেষত্ব হল, ভক্তরা এখানে এক সঙ্গে দেবীর নটি রূপের দর্শন লাভ করতে পারেন। এটি দেবী দুর্গার এমন একটি মন্দির, যেখানে দেবীর নটি রূপের মূ্র্তিই তৈরি মাটি দিয়ে। ভক্তদের কাছে নবদুর্গা মা নৌসর মাতা নামেও পরিচিত। বছরভর ভক্ত সমাগম হলেও, বছরে দুটি নবরাত্রিতে ব্যাপক ভিড় হয়। গোটা দেশে চৈত্র নবরাত্রি উপলক্ষে নবদুর্গার পুজো হয়। আজমেঢ়ের এই মন্দিরেও ঘটা করে পুজো হবে দেবী দুর্গার নটি রূপের। পদ্ম পুরাণেও উল্লেখ রয়েছে পুষ্করের নাগ পাহাড়ের চূড়োয় অবস্থিত নবদুর্গা মায়ের এই মন্দিরের।

    মন্দির তৈরি করেছিলেন স্বয়ং ব্রহ্মা

    শোনা যায়, ব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টির সময় জগৎপিতা ব্রহ্মা পুষ্করে যজ্ঞ করেছিলেন (Chaitra Navratri 2025)। যজ্ঞ পণ্ড করতে উপদ্রব শুরু করেছিল নেতিবাচক বিভিন্ন শক্তি। তখন ব্রহ্মা আদি শক্তির আরাধনা করে অপশক্তির হাত থেকে তাঁকে রক্ষা করতে অনুরোধ করেন (Nav Durga Temple)। তখনই দেবী পুষ্করে নটি রূপে আবির্ভূত হন। সৃষ্টি যজ্ঞ শেষে স্বয়ং ব্রহ্মা এখানে নবদুর্গা মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। নৌসর মাতা মন্দিরের পীঠাধীশ্বর রামকৃষ্ণ দেব বলেন, “মায়ের এই মন্দির ব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টির আগে থেকেই বিদ্যমান। মায়ের এমন রূপ পৃথিবীর অন্য কোথাও দেখা যায় না।” তিনি বলেন, “এখানে একই দেহে দেবীর নটি ভিন্ন মুখমণ্ডল রয়েছে। নৌসর মায়ের এই অতি প্রাচীন মন্দির ভক্তদের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।”

    কী বলছেন পীঠাধীশ্বর

    রামকৃষ্ণ বলেন, “শতাব্দীর পর শতাব্দী কেটে গেলেও, দেবী মূর্তির উজ্জ্বলতা এখনও অক্ষত রয়েছে। এটি একটি রহস্য। দ্বাপর যুগে, বনবাসের সময় পাণ্ডবরা পুষ্করের নাগ পাহাড়ে দীর্ঘকাল বসবাস করেছিলেন। পাণ্ডবরা এখানে শিব ও শক্তির পূজা করতেন। বনবাসের সময় পাণ্ডবরা এই মন্দিরে নবদুর্গার (Nav Durga Temple) পুজো করেছিলেন। এই মন্দিরের নবদুর্গার ভক্ত ছিলেন চৌহান রাজবংশের রাজারা। শোনা যায়, মহম্মদ ঘোরিকে যুদ্ধে পরাজিত করার আগে পৃথ্বীরাজ চৌহানও পুজো করেছিলেন এই নবদুর্গার। পীঠাধীশ্বর (Chaitra Navratri 2025) বলেন, “আওরঙ্গজেবের সেনাবাহিনী নবদুর্গা মায়ের মন্দিরের ক্ষতি করার চেষ্টা করেছিল। তারা মন্দিরের একটি অংশের চারটি দেওয়াল ভেঙে দিয়েছিল। কিন্তু তারাও মন্দিরে থাকা মায়ের মূর্তির কোনও ক্ষতি করতে পারেনি। মারাঠারা আজমেঢ়ের দখল নিলে নবদুর্গা মন্দিরের সংস্কার সাধন করেছিলেন।” তিনি জানান, পরে মন্দির সংস্কার করেন পীঠাধীশ্বর সন্ত বুধকরণ মহারাজ। সেও প্রায় ১৩২ বছর আগে।

    দেবীর ন’টি রূপ

    প্রসঙ্গত, বছরে চারবার নবরাত্রি উৎসব আসে। এর মধ্যে দুটি গুপ্ত। প্রকট বাকি দুটি – একটি চৈত্র নবরাত্রি, অন্যটি আশ্বিন নবরাত্রি। এই দুই নবরাত্রিতেই আরাধনা করা হয় দেবী দুর্গার। ন’টি দিনে দেবীর নয় রূপের পুজো করা হয়। দেবীর এই ন’টি রূপ হল শৈলপুত্রী, ব্রহ্মচারিণী, চন্দ্রঘণ্টা, কুষ্মাণ্ডা, স্কন্দমাতা, কাত্যায়নী, কালরাত্রি, মহাগৌরী এবং সিদ্ধিদাত্রী। আশ্বিনের শুক্লা প্রতিপদ থেকে শুক্লা নবমী পর্যন্ত ন’দিন ধরে পালন করা হয় নবরাত্রি ব্রত (Chaitra Navratri 2025)। এই ন’দিনে দেবীর দুর্গার ন’টি রূপের আরাধনা করা হয়। চৈত্রের শুক্লা প্রতিপদ থেকে শুরু হয় চৈত্র নবরাত্রি ব্রত।

    কোন দিনে কী রূপে পুজো পান দেবী

    প্রতিপদে দেবী দুর্গা রূপ নেন হিমালয়ের কন্য শৈলপুত্রীর। দ্বিতীয়ায় সেই একই শক্তি ধারণ করেন ব্রহ্মচারিণীর রূপ। তৃতীয়ায় তিনি চন্দ্রঘণ্টার রূপ ধারণ করেন। দেবীর এই রূপ সাহস ও সৌন্দর্যের প্রতীক। চতুর্থীতে দেবী রূপ নেন কুষ্মাণ্ডার। পুরাণ অনুযায়ী, এই রূপেই দেবী সৃষ্টি করেন বিশ্ব চরাচর। পঞ্চমীতে দেবী পুজিত হন স্কন্দমাতা রূপে। ষড়ানন কার্তিকের জননী হিসেবে পুজিতা হন তিনি। কার্তিকের আর এক নাম স্কন্দ। তাই দেবী স্কন্দমাতা (Nav Durga Temple)। ষষ্ঠীতে দেবী পুজিত হন কাত্যায়নী রূপে। এই রূপে রয়েছে দেবীর চার হাত ও ত্রিনয়ন। এখানে দেবীর বাহন সিংহ। সপ্তম দিনে দেবী পুজিত হন কালরাত্রি রূপে। এদিন তিনি ভক্তদের সাহস ও উৎসাহ দান করেন। অষ্টমীতে দেবী হন মহাগৌরী। আর নবমীতে তিনিই হন সিদ্ধিদাত্রী। দেবীর এই রূপে অষ্টসিদ্ধি ঘিরে রাখেন তাঁকে (Chaitra Navratri 2025)।

    প্রসঙ্গত, চৈত্র নবরাত্রির অষ্টমীতে পুজো হয় দেবী অন্নপূর্ণার। আর এই নবরাত্রির নবমী তিথি পরিচিত রামনবমী হিসেবে (Nav Durga Temple)।

  • Ramakrishna 310: “সকলেই নারায়ণ। সব যোনিই মাতৃযোনি, তখন বেশ্যা ও সতীলক্ষ্মীতে কোন প্রভেদ দেখি না”

    Ramakrishna 310: “সকলেই নারায়ণ। সব যোনিই মাতৃযোনি, তখন বেশ্যা ও সতীলক্ষ্মীতে কোন প্রভেদ দেখি না”

    দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে ভক্তসঙ্গে শ্রীরামকৃষ্ণ     

    দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৫, ১লা মার্চ
    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ও তাঁহার নরেন্দ্রকে সন্ন্যাসের উপদেশ

    “একটি বাটিতে যদি রসুন গোলা যায়, রসুনের গন্ধ কি যায়? বাবুই গাছে কি আম হয়? হতে পারে সিদ্ধাই তেমন থাকলে, বাবুই গাছেও আম হয়। সে সিদ্ধাই কি সকলের হয় (Ramakrishna)?

    “সংসারী লোকের অবসর কই? একজন একটি ভাগবতের পণ্ডিত চেয়েছিল। তার বন্ধু বললে, একটি উত্তম ভাগবতের পণ্ডিত আছে, কিন্তু তার একটু গোল আছে। তার নিজের অনেক চাষবাস দেখতে হয়। চারখানা লাঙল, আটটা হেলে গরু। সর্বদা তদারক করতে হয়; অবসর নাই। যার পণ্ডিতের দরকার সে বললে, আমার এমন ভাগবতের পণ্ডিতের দরকার নাই, যার অবসর নাই। লাঙল-হেলেগরু-ওয়ালা ভাগবত পণ্ডিত আমি খুঁজছি না। আমি এমন ভাগবত পণ্ডিত চাই যে আমাকে ভাগবত শুনাতে পারে (Kathamrita)।

    “এক রাজা রোজ ভাগবত শুনত। পণ্ডিত পড়া শেষ হলে রাজাকে বলত, রাজা বুঝেছ? রাজাও রোজ বলে—আগে তুমি বোঝ! পণ্ডিত বাড়ি গিয়ে রোজ ভাবে—রাজা এমন কথা বলে কেন যে তুমি আগে বোঝ। লোকটা সাধন-ভজন করত—ক্রমে চৈতন্য হল। তখন দেখলে যে হরিপাদপদ্ম্মই সার, আর সব মিথ্যা। সংসারে বিরক্ত হয়ে বেরিয়ে এল। কেবল একজনকে পাঠালে রাজাকে বলতে যে—রাজা (Ramakrishna), এইবার বুঝেছি।

    “তবে কি এদের ঘৃণা করি? না, ব্রহ্মজ্ঞান তখন আনি। তিনি সব হয়েছেন,—সকলেই নারায়ণ। সব যোনিই মাতৃযোনি, তখন বেশ্যা ও সতীলক্ষ্মীতে কোন প্রভেদ দেখি না।”

    সব কলাইয়ের ডালের খদ্দের—রূপ ও ঐশ্বর্যের বশ

    “কি বলব সব দেখছি কলাইয়ের ডালের খদ্দের। কামিনী-কাঞ্চন ছাড়তে চায় না। লোকে মেয়েমানুষের রূপে ভুলে যায়, টাকা ঐশ্বর্য দেখলে ভুলে যায়, কিন্তু ঈশ্বরের রূপদর্শন করলে ব্রহ্মপদ তুচ্ছ হয়।

    “রাবণকে একজন বলেছিল (Kathamrita), তুমি সব রূপ ধরে সীতার কাছে যাও, রামরূপ ধর না কেন? রাবণ বললে, রামরূপ হৃদয়ে একবার দেখলে রম্ভা তিলোত্তমা এদের চিতার ভস্ম বলে বোধ হয়। ব্রহ্মপদ তুচ্ছ হয়, পরস্ত্রীর কথা তো দূরে থাক।

    “সব কলাইয়ের ডালের খদ্দের। শুদ্ধ আধার না হলে ঈশ্বরে শুদ্ধাভক্তি হয় না–একলক্ষ্য হয় না, নানাদিকে মন থাকে।”

    নেপালী মেয়ে, ঈশ্বরের দাসী—সংসারীর দাসত্ব 

    (মনোমোহনের প্রতি)—“তুমি রাগই কর আর যাই কর—রাখালকে বললাম ঈশ্বরের জন্য গঙ্গায় ঝাঁপ দিয়ে মরেছিস এ-কথা বরং শুনব; তবু কারুর দাসত্ব করিস, এ-কথা যেন না শুনি।

    “নেপালের একটি মেয়ে এসেছিল। বেশ এসরাজ বাজিয়ে গান করলে। হরিনাম গান। কেউ জিজ্ঞাসা করলে—‘তোমার বিবাহ হয়েছে?’ তা বললে (Kathamrita), ‘আবার কার দাসী হব? এক ভগবানের দাসী আমি।’

    “কামিনী-কাঞ্চনের (Ramakrishna) ভিতের থেকে কি করে হবে? অনাসক্ত হওয়া বড় কঠিন। একদিকে মেগের দাস, একদিকে টাকার দাস, আর-একদিকে মনিবের দাস, তাদের চাকরি করতে হয়।

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

  • Ramakrishna 309: “কামিনী-কাঞ্চন স্পর্শ করে নাই; অনেকদিন ধরে কামিনী-কাঞ্চন ঘাঁটলে রসুনের গন্ধ হয়”

    Ramakrishna 309: “কামিনী-কাঞ্চন স্পর্শ করে নাই; অনেকদিন ধরে কামিনী-কাঞ্চন ঘাঁটলে রসুনের গন্ধ হয়”

     দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে ভক্তসঙ্গে শ্রীরামকৃষ্ণ     

    দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৫, ১লা মার্চ
    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ও তাঁহার নরেন্দ্রকে সন্ন্যাসের উপদেশ

    নরেন্দ্র আসিয়া প্রণাম করিয়া বসিলেন। শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) নরেন্দ্রের সঙ্গে কথা কহিতেছেন। কথা কহিতে কহিতে মেঝেতে আসিয়া বসিলেন। মেঝেতে মাদুর পাতা। এতক্ষণে ঘর লোকে পরিপূর্ণ হইয়াছে। ভক্তেরাও আছেন, বাহিরের লোকও আসিয়াছেন (Kathamrita)।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (নরেন্দ্রের প্রতি)—ভাল আছিস? তুই নাকি গিরিশ ঘোষের ওখানে প্রায়ই যাস?

    নরেন্দ্র—আজ্ঞে হাঁ, মাঝে মাঝে যাই।

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের নিকট গিরিশ কয়মাস হইল নূতন আসা যাওয়া করিতেছেন। ঠাকুর বলেন, গিরিশের বিশ্বাস আঁকড়ে পাওয়া যায় না। যেমন বিশ্বাস, তেমনি অনুরাগ। বাড়িতে ঠাকুরের চিন্তায় সর্বদা মাতোয়ারা হয়ে থাকেন। নরেন্দ্র প্রায় যান, হরিপদ, দেবেন্দ্র ও অনেক ভক্ত তাঁর বাড়িতে প্রায় যান; গিরিশ তাঁহাদের সঙ্গে কেবল ঠাকুরের কথাই কন। গিরিশ সংসারে থাকেন, কিন্তু ঠাকুর দেখিতেছেন নরেন্দ্র সংসারে থাকিবেন না—কামিনী-কাঞ্চন ত্যাগ করিবেন। ঠাকুর নরেন্দ্রের সহিত কথা কহিতেছেন—

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)— তুই গিরিশ ঘোষের ওখানে বেশি যাস?

    সন্ন্যাসের অধিকারী—কৌমারবৈরাগ্য—গিরিশ কোন্‌ থাকের—রাবণ ও অসুরদের প্রকৃতিতে যোগ ও ভোগ 

    “কিন্তু রসুনের বাটি যত ধোও না কেন, গন্ধ একটু থাকবেই। ছোকরারা শুদ্ধ আধার! কামিনী-কাঞ্চন স্পর্শ করে নাই; অনেকদিন ধরে কামিনী-কাঞ্চন ঘাঁটলে রসুনের গন্ধ হয় (Ramakrishna)।

    “যেমন কাকে ঠোকরান আম। ঠাকুরদের দেওয়া যায় না, নিজেরও সন্দেহ। নূতন হাঁড়ি আর দইপাতা হাঁড়ি। দইপাতা হাঁড়িতে দুধ রাখতে ভয় হয়। প্রায় দুধ নষ্ট হয়ে যায়।

    “ওরা থাক আলাদা। যোগও আছে, ভোগও আছে। যেমন রাবণের ভাব—নাগকন্যা দেবকন্যাও নেবে, রামকেও লাভ করবে (Kathamrita)।

    “অসুররা নানা ভোগও কচ্ছে, আবার নারায়ণকেও লাভ কচ্ছে।”

    নরেন্দ্র—গিরিশ ঘোষ আগেকার সঙ্গ ছেড়েছে।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—বড় বেলায় দামড়া হয়েছে, আমি বর্ধমানে দেখেছিলাম। একটা দামড়া, গাই গরুর কাছে যেতে দেখে আমি জিজ্ঞেস কল্লুম, এ কি হল? এ তো দামড়া! তখন গাড়োয়ান বললে, মশাই এ বেশি বয়সে দামড়া হয়েছিল। তাই আগেকার সংস্কার যায় নাই।

    “এক জায়গায় সন্ন্যাসীরা বসে আছে—একটি স্ত্রীলোক সেইখান দিয়ে চলে যাচ্ছে (Kathamrita)। সকলেই ঈশ্বরচিন্তা করছে, একজন আড়চোখে চেয়ে দেখলে। সে তিনটি ছেলে হবার পর সন্ন্যাসী হয়েছিল।

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

  • Ramakrishna 308: “জ্ঞান আর অজ্ঞান কাকে বলে?—যতক্ষণ ঈশ্বর দূরে ততক্ষণ অজ্ঞান; যতক্ষণ হেথা বোধ, ততক্ষণ জ্ঞান”

    Ramakrishna 308: “জ্ঞান আর অজ্ঞান কাকে বলে?—যতক্ষণ ঈশ্বর দূরে ততক্ষণ অজ্ঞান; যতক্ষণ হেথা বোধ, ততক্ষণ জ্ঞান”

    দক্ষিণেশ্বরে নবমীপূজা দিবসে ভক্তসঙ্গে শ্রীরামকৃষ্ণ

    প্রথম পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৪, ২৯শে সেপ্টেম্বর

    দক্ষিণেশ্বরে শ্রীরামকৃষ্ণ নরেন্দ্র, ভবনাথ প্রভৃতি সঙ্গে

    জীবকোটি সংশয়াত্মা (Sceptic)—ঈশ্বরকোটির স্বতঃসিদ্ধ বিশ্বাস 

    শ্রীরামকৃষ্ণ (ভবনাথের প্রতি)—কি জানিস, যারা জীবকোটি, তাদের বিশ্বাস সহজে হয় না। ঈশ্বরকোটির (Ramakrishna) বিশ্বাস স্বতঃসিদ্ধ। প্রহ্লাদ ‘ক’ লিখতে একেবারে কান্না—কৃষ্ণকে মনে পড়েছে! জীবের স্বভাব—সংশয়াত্মক বুদ্ধি! তারা বলে, হাঁ, বটে, কিন্তু—।

    “হাজরা কোনরকমে বিশ্বাস করবে না যে, ব্রহ্ম ও শক্তি, শক্তি আর শক্তিমান অভেদ। যখন নিষ্ক্রিয় তাঁকে ব্রহ্ম বলে কই; যখন সৃষ্টি, স্থিতি, প্রলয় করেন, তখন শক্তি বলি। কিন্তু একই বস্তু; অভেদ। অগ্নি বললে, দাহিকাশক্তি অমনি বুঝায়; দাহিকাশক্তি বললে, অগ্নিকে মনে পড়ে। একটাকে ছেড়ে আর একটাকে চিন্তা করবার জো নাই।

    “তখন প্রার্থনা করলুম, মা, হাজরা এখানকার মত উলটে দেবার চেষ্টা কচ্চে। হয় ওকে বুঝিয়ে দে, নয় এখান থেকে সরিয়ে দে। তার পরদিন, সে আবার এসে বললে, হাঁ মানি। তখন বলে যে, বিভু সব জায়গায় আছেন।”

    ভবনাথ (সহাস্যে)—হাজরার এই কথাতে আপনার এত কষ্ট বোধ হয়েছিল (Kathamrita)?

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—আমার অবস্থা বদলে গেছে। এখন লোকের সঙ্গে হাঁকডাক করতে পারি না। হাজরার সঙ্গে তর্ক-ঝগড়া করব, এরকম অবস্থা আমার এখন নয়। যদু মল্লিকের বাগানে হৃদে বললে, মামা, আমাকে রাখবার কি তোমার ইচ্ছা নাই? আমি বললুম, না, সে অবস্থা এখন আমার নাই, এখন তোর সঙ্গে হাঁকডাক করবার জো নাই।

    পূর্বকথা—কামারপুকুরে শ্রীরামকৃষ্ণ—জগৎ চৈতন্যময়—বালকের বিশ্বাস 

    “জ্ঞান আর অজ্ঞান কাকে বলে?—যতক্ষণ ঈশ্বর দূরে এই বোধ ততক্ষণ অজ্ঞান; যতক্ষণ হেথা হেথা বোধ, ততক্ষণ জ্ঞান।

    “যখন ঠিক জ্ঞান হয়, তখন সব জিনিস চৈতন্যময় বোধ হয়। আমি শিবুর সঙ্গে আলাপ করতুম। শিবু তখন খুব ছেলেমানুষ—চার-পাঁচ বছরের হবে। ও-দেশে তখন আছি। মেঘ ডাকছে, বিদ্যুৎ হচ্ছে। শিবু বলছে, খুড়ো ওই চকমকি ঝাড়ছে! (সকলের হাস্য) একদিন দেখি, সে একলা ফড়িং ধরতে যাচ্ছে। কাছে গাছে পাতা নড়ছিল। তখন পাতাকে বলছে, চুপ, চুপ, আমি ফড়িং ধরব। বালক সব চৈতন্যময় দেখছে! সরল বিশ্বাস, বালকের বিশ্বাস না হলে ভগবানকে পাওয়া যায় না। উঃ আমার কি অবস্থা ছিল! একদিন ঘাস বনেতে কি কামড়েছে। তা ভয় হল, যদি সাপে কামড়ে থাকে! তখন কি করি! শুনেছিলাম, আবার যদি কামড়ায়, তাহলে বিষ তুলে লয়। অমনি সেইখানে বসে গর্ত খুঁজতে লাগলুম, যাতে আবার কামড়ায়। ওইরকম কচ্চি, একজন বললে, কি কচ্ছেন? সব শুনে সে বললে, ঠিক ওইখানে কামড়ানো চাই যেখানটিতে আগে কামড়েছে। তখন উঠে আসি। বোধ হয় বিছে-টিছে কামড়েছিল।

    “আর-একদিন রামলালের কাছে শুনেছিলুম, শরতে হিম ভাল। কি একটা শ্লোক আছে, রামলাল বলেছিল। আমি কলকাতা থাকে গাড়ি করে আসবার সময় গলা বাড়িয়ে এলুম, যাতে সব হিমটুকু লাগে। তারপর অসুখ (Kathamrita)!” (সকলের হাস্য)

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ও ঔষধ 

    এইবার ঠাকুর ঘরের ভিতর আসিয়া বসিলেন। তাঁর পা দুটি একটু ফুলো ফুলো হয়েছিল। ভক্তদের হাত দিয়ে দেখতে বলেন, আঙুল দিলে ডোব হয় কি না। একটু একটু ডোব হতে লাগল; কিন্তু সকলেই বলতে লাগলেন, ও কিছুই নয়।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (ভবনাথকে)—তুই সিঁথির মহিন্দরকে ডেকে দিস। সে বললে (Kathamrita) তবে আমার মনটা ভাল হবে।

    ভবনাথ (সহাস্যে)—আপনার ঔষধে খুব বিশ্বাস। আমাদের অত নাই।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—ঔষধ তাঁরই। তিনিই একরূপে চিকিৎসক। গঙ্গাপ্রসাদ বললেন, আপনি রাত্রে জল খাবেন না। আমি ওই কথা বেদবাক্য ধরে রেখেছি। আমি জানি, সাক্ষাৎ ধন্বন্তরি।

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

LinkedIn
Share