Category: পরম্পরা

Get updated History and Heritage and Culture and Religion related news from the Madhyom news portal madhyom.com, West Bengal leading news portal Madhyom.com

  • Durga Puja 2022: সন্ধি পুজোয় দেবী দুর্গার সামনে ১০৮ টি পদ্ম নিবেদনের তাৎপর্য জানেন?

    Durga Puja 2022: সন্ধি পুজোয় দেবী দুর্গার সামনে ১০৮ টি পদ্ম নিবেদনের তাৎপর্য জানেন?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সারা বছর বাঙালি অপেক্ষা করে থাকে বছরের এই সময়টার জন্যে। শরৎ কাল মানেই বাতাসে পুজোর (Durga Puja 2022) গন্ধ। মহামারীকাল কাটিয়ে আজ এবছর বাপের বাড়ি আসছেন উমা। এই দু বছর পুজোর আনন্দ মাটি হয়েছে। তাই এবার প্রস্তুতি জোর কদমে। ষষ্ঠী থেকে দশমী। এবার মিস হবে না কোনও অনুষ্ঠান। দুর্গা পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বহু রীতি-নীতি। এই নিয়মগুলির কারণ আদতে কী তা অনেকেই জানেন না। সন্ধি পুজোয় ১০৮টি (108 Lotus) পদ্ম ফুল নিবেদন করা হয়।       

    আশ্বিনের শুক্লাষ্টমীর বিশেষ মাহেন্দ্রক্ষণে দেবী দুর্গার সন্ধিপুজো হয়। বলা হয় অষ্টমী ও নবমী তিথির শুভ সন্ধিক্ষণই আসলে সন্ধিপুজো। এই বিশেষ তিথিকে শুভ বলে মানা হয়। এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে অনেকগুলো বিশেষ নিয়ম। তার মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম হল, দেবী দুর্গার পায়ে উৎসর্গ করা হয় ১০৮টি লাল পদ্ম। আর জ্বালানো হয় ১০৮টি প্রদীপ।     

    পুরাণ মতে, দেবী দুর্গা অষ্টমী ও নবমী তিথির মিলনক্ষণে, দেবী চামুণ্ডার রূপ ধারণ করেন। চন্ড ও মুন্ড নামক দুই ভয়ানক অসুরকে এই সন্ধিক্ষণে বধ করেছিলেন দেবী। কৃত্তিবাসের রামায়ণে উল্লেখ আছে, রাক্ষসরাজ রাবণকে বধ করার জন্য আশ্বিন মাসেই রামচন্দ্র অকাল বোধন করেন। সেখানেও সন্ধি পুজোর বিশেষ তিথিতে দেবীকে ১০৮ টি পদ্ম নিবেদন করা হয়। সেই সময় হনুমানকে দেবীদহ থেকে ১০৮ টি পদ্ম ফুল তুলে আনতে বলা হয়। কিন্তু সেখানে পাওয়া যায় ১০৭ টি পদ্ম। তখন রাম নিজে তাঁর পদ্ম সমান চোখ দান করতে চাইলে দেবী আবির্ভূত হয়ে বরদান করেন। দেবী প্রতিশ্রুতি দেন, রাবণের থেকে সুরক্ষা সরিয়ে নেবেন। ষষ্ঠীর দিন রামচন্দ্র এই পুজো শুরু করেন। অষ্টমী এবং নবমী তিথির মাঝে রামের অস্ত্র প্রবেশ করে এবং দশমীর দিন রাবণের বিনাশ হয়।        

    পুরাণ মতে, অষ্টমী তিথির শেষ ২৪ মিনিট ও নবমী তিথির প্রথম ২৪ মিনিট অর্থাৎ মোট ৪৮ মিনিট হল সন্ধিপুজোর সন্ধিক্ষণ। এই সময় ১০৮টি পদ্ম নিবেদন করলে কী কী ফল পাওয়া যায় জানেন? 

    • সন্ধি পুজোর সময় পদ্ম নিবেদন করে এক মনে যে কোনও দুর্গা মন্ত্র জপ করলে মনে জোর বাড়ে। 
    • এমন বিশ্বাস রয়েছে যে সন্ধি পুজোর পর মায়ের নাম নিয়ে যদি কোনও কাজ শুরু করা হয়, তাহলে দেবীর আশীর্বাদে সে কাজে সফলতা লাভের সম্ভাবনা যায় বেড়ে। 
    • সন্ধি পুজোর সময় ১০৮ টি পদ্ম ফুল সহকারে দেবীর অরাধনা করলে হারিয়ে যাওয়া সুখ-শান্তি ফিরে আসে। সেই সঙ্গে যে কোনও সমস্যা এবং কলহ মিটে যায়। 
    • এমন বিশ্বাস রয়েছে যে সন্ধি পুজোর সময় এক মনে মায়ের অরাধনা করলে শুধু দেবী দুর্গা নয়, তাঁর ছেলে-মেয়েরাও প্রসন্ন হন। 
    • ধনবান হতে চাইলে এই বিশেষ মুহুর্তে মায়ের নাম নিতে ভুলবেন না। 
    • শাস্ত্রে এমনটা বলা হয়েছে যে সন্ধি পুজোর সময় মায়ের যে কোনও রূপের অরাধনা করার পাশাপাশি যদি দেবীর সামনে পদ্ম ফুল নিবেদন করা যায়, তাহলে মা প্রসন্ন হয়ে আশীর্বাদ দেন। 
    • ১০৮ টি পদ্ম ফুল নিবেদন করে এই বিশেষ মুহুর্তে মায়ের আরাধনা করলে দেবীর আশীর্বাদে যে কোনও ধরনের গ্রহ দোষ কেটে যেতে যেমন সময় লাগে না, তেমনি খারাপ স্বপ্ন আসার আশঙ্কাও কমে। 

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।

  • Mahalaya 2022: মহালয়া শুভ না অশুভ? জানুন এই বিশেষ অমাবস্যা তিথির তাৎপর্য

    Mahalaya 2022: মহালয়া শুভ না অশুভ? জানুন এই বিশেষ অমাবস্যা তিথির তাৎপর্য

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মহালয়া (Mahalaya 2022) মানেই বাঙালির কাছে নস্ট্যালজিয়া। রেডিওতে বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের মহিষাসুরমর্দিনী দিয়ে শুরু হয় সকাল। মহালয়ার (Mahalaya) দিন পিতৃপক্ষের অবসান হয়ে, দেবীপক্ষের সূচনা হয়। এদিনই আক্ষরিক অর্থে দুর্গা পুজোর ঢাকে কাঠি পড়ে। কথিত আছে মহালয়ার দিন অসুর ও দেবতাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছিল। এই মহালয়া গুরুত্ব হিন্দু ধর্মে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে মহালয়া শুভ না অশুভ, এনিয়ে বিস্তর মতভেদ রয়েছে। একাংশের মতে, মহান কিংবা মহত্বের আলয় থেকেই এই শব্দের উৎপত্তি। সনাতন ধর্মে বলা হয়, এই দিনে পরলোক থেকে মর্ত্যে আত্মাদের যে সমাবেশ হয় তাকেই মহালয়া বলা হয়। আসুন জেনে নেওয়া যাক এর আসল ব্যাখ্যা।

    আরও পড়ুন: মেয়েরাও কি করতে পারে তর্পণ? কী বলছে শাস্ত্র?    

    পুরাণ মতে, ব্রহ্মার বরে মহিষাসুর অমর হয়ে উঠেছিলেন। শুধুমাত্র কোনও নারীশক্তির কাছে তার পরাজয় নিশ্চিত। অসুরদের অত্যাচারে যখন দেবতারা অতিষ্ঠ, তখন ত্রিশক্তি ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বর নারীশক্তির সৃষ্টি করেন। তিনিই মহামায়ারূপী দেবী দুর্গা। দেবতাদের দেওয়া অস্ত্র দিয়ে মহিষাসুরকে বধ করেন দুর্গা। এজন্যেই বিশ্বাস করা হয় যে, এই উৎসব খারাপ শক্তির বিনাশ করে শুভশক্তির বিজয়।  

    মহালয়ার দিন পিতৃ পুরুষদের উদ্দেশ্যে তর্পণ করার রীতি রয়েছে। এদিনই দেবীর দুর্গার চক্ষুদান হয়। মহালয়া শব্দটির অর্থ, মহান আলয় বা আশ্রম। এক্ষেত্রে দেবী দুর্গাই হলেন, সেই মহান আলয়। মহালয়ার শুভ, অশুভ দুই হওয়ার পেছেনেই ব্যাখ্যা রয়েছে।

    মহালয়া শুভ কেন?

    অনেকেই মনে করেন, এদিন থেকেই দেবীপক্ষের সূচনা, অশুভ শক্তির বিনাশ হয়, তাই মহালয়া শুভ। দুর্গাপুজোর সূচনা হয় এই দিন। এছাড়াও হিন্দু ধর্মের যে কোনও শুভ কাজেই পিতৃপুরুষদের স্মরণ করা হয়। এছাড়াও তর্পণের বৃহত্তর অর্থ মিলন। তাই এই দিন কোনওভাবেই অশুভ হতে পারে না।   

    মহালয়া অশুভ কেন? 

    আবার অনেকে মনে করেন, মহালয়ার দিন  পিতৃ পুরুষদের উদ্দেশ্যে জলদান করার রীতি রয়েছে। পিতৃপুরুষদের স্মরণ করার দিনকে অনেকেই শোক পালনের দিন হিসেবে পালন করে থাকেন। তাই মহালয়াকে তারা শুভ মানতে নারাজ। মহালয়া শুভ না অশুভ এই দ্বন্দ্ব চলতেই থাকবে। তব এই দিনটি দিয়েই শুরু হয় দুর্গা পুজো, বাঙালির মিলন উৎসব।

    দেখে নিন মহালয়ার সময়সূচী

    • মহালয়া ২০২২ অমাবস্যা তিথি 

              ২৪ সেপ্টেম্বর (৭ আশ্বিন), শনিবার, রাত ২/৫৫/৩৯ মিনিট অমাবস্যা তিথি শুরু হচ্ছে এবং ২৫ সেপ্টেম্বর (৮ আশ্বিন), রবিবার রাত ৩/২৪/১৭ মিনিট পর্যন্ত থাকছে।  

    • মহালয়া ২০২২ অমৃতযোগ 

              দিবা ঘ ৬। ২৩ গতে ৮।৪১ মধ্যে ও ১১।৪৫ গতে ২।৫০ মধ্যে এবং রাত্রি ঘ ৭।৩৮ গতে ৯।১৮ মধ্যে ও ১১।৫৭ গতে ১।২৭ মধ্যে ও ২।১৭ গতে ৫।৩০ মধ্যে। 

    • মহালয়া ২০২২ মাহেন্দ্রযোগ 

              দিবা ঘ ৩।৩৬ গতে ৪।২২মধ্যে।

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।   

  • Navratri 2022: নবরাত্রি কেন পালন করা হয়? এর তাৎপর্য জানেন?

    Navratri 2022: নবরাত্রি কেন পালন করা হয়? এর তাৎপর্য জানেন?

    শুভ্র চট্টোপাধ্যায়: আশ্বিন এবং চৈত্র মাসের শুক্লা প্রতিপদ তিথি থেকে পরের ন’দিন অবধি মা দুর্গার নয়টি অবতারের পুজো নবরাত্রি (Navratri) নামে পরিচিত। আরও সরল ভাষায় বলতে গেলে শরৎকালের নবরাত্রি  মহালয়ার (Mahalaya) পরদিন থেকে শুরু হয়। ন’দিন ধরে মা দুর্গার (Goddess Durga) ন’টি অবতারের পুজো দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তে ধুমধাম করে হয়। প্রসঙ্গত, শুধুমাত্র হিন্দু ধর্মাবলম্বী নয়, শিখ এবং জৈন সম্প্রদায়ের মধ্যেও নবরাত্রি পালনের রীতি দেখা যায়।

    আসুন এবার একনজরে দেখে নেওয়া যাক মা দুর্গার  (Maa Durga) এই ন’টি অবতার কী কী—

     ‘শ্রী বরাহপুরাণে’ হরিহর ব্রহ্মা ঋষির দ্বারা রচিত , দেবী কবচে লেখা রয়েছে – 
    প্রথমং শৈলপুত্রী চ
     দ্বিতীয়ম্ ব্রহ্মচারিণী ।
    তৃতীয়ং চন্দ্রঘণ্টেতি কুষ্মাণ্ডেতি চতুর্থকম্ ।।
    পঞ্চমং স্কন্দমাতেতি,
     ষষ্ঠম্ কাত্যায়নীতি চ।
    সপ্তমং কালরাত্রীতি মহাগৌরীতি চাষ্টমং।।
    নবমং সিদ্ধিদাত্রী চ
     নবদুর্গা প্রকীর্তিতাঃ ।।

    মাতা শৈলপুত্রী: নবরাত্রির প্রথম দিনে মাতা শৈলপুত্রীর পুজো করা হয়। দেবীর নামের অর্থ “পাহাড়ের কন্যা”। তাঁর ভক্তদের বিশ্বাস-মাতা শৈলপুত্রীর আশীর্বাদ স্বরূপ সুস্থ, রোগমুক্ত জীবন পাওয়া যায়। মাতার নৈবেদ্যতে খাঁটি ঘি অর্পণ করা হয়। এই দেবীর আরাধনায় মূলাধার চক্র শুদ্ধ হয়।

    মাতা ব্রহ্মচারিণী: নবরাত্রির দ্বিতীয় দিনে এই দেবীর পুজো হয়। ব্রহ্মচারিণী মাতাকে খুশি করতে ভক্তরা চিনি নিবেদন করে থাকেন। বিশ্বাস মতে, মাতা তাঁর ভক্তদের দীর্ঘায়ু প্রদান করেন। এই দেবীর উপাসনার দ্বারা সাধিস্তান চক্র শুদ্ধ হয় হয় বলে ভক্তরা মনে করে।

    আরও পড়ুন: মহালয়া শুভ না অশুভ? জানুন এই বিশেষ অমাবস্যা তিথির তাৎপর্য

    মাতা চন্দ্রঘন্টা: তৃতীয় দিনে মাতা চন্দ্রঘন্টার প্রতি ভক্তি নিবেদন করা হয়। এই দেবীর বাহন বাঘ। উগ্র মূর্তি এই দেবীকে ক্ষীর ভোগ অর্পণ করেন ভক্তরা। ভক্তদের বিশ্বাস, দেবী সমস্ত অশুভ শক্তির বিনাশ করেন এবং যাবতীয় বাধা বিঘ্ন দূর করেন।

    মাতা কুষ্মান্ডা: চতুর্থ দিনে মাতা কুষ্মান্ডার প্রতি ভক্তি নিবেদিত হয়‌। শাস্ত্র মতে, এই দেবী মহাবিশ্বের স্রষ্টা। তিনি তাঁর ভক্তদের জ্ঞানদানের দ্বারা বৌদ্ধিক বিকাশ ঘটান এবং কর্মক্ষেত্রে জটিলতা দূর করেন। দেবীকে মালপোয়া ভোগ অর্পণ করা হয়।

    মাতা স্কন্দমাতা: নবরাত্রির পঞ্চম দিনে মাতা স্কন্দমাতার আরাধনা করেন ভক্তরা। ভগবান কার্তিককে কোলে নিয়ে উপবিষ্ট এই দেবীর আশীর্বাদ পেতে ভক্তরা কলা নিবেদন করেন। দেবীর আশীর্বাদে ভক্তের জীবনে পরম সুখ ও শান্তি আসে বলে বিশ্বাস।

    মাতা কাত্যায়নী: ঋষি কাত্যায়নের কন্যা, শক্তির প্রতীক তথা যোদ্ধা দেবী কাত্যায়নী মাতার পুজো নবরাত্রির ষষ্ঠ দিনে সম্পন্ন হয়। ভক্তদের তিনি শক্তি, ধর্ম ও জাগতিক সুখ প্রদান করেন বলে বিশ্বাস। তাঁকে ভক্তদের মধু নিবেদনের রীতি চালু রয়েছে।

    মাতা কালরাত্রি: সপ্তমী পুজো হয় এই দেবীর। দেবী ত্রিশূলধারী। মাতা কালরাত্রির আশীর্বাদে জীবনের সমস্ত কুপ্রভাব বিনষ্ট হয় বলে ভক্তদের ধারণা। মাতাকে গুড় নিবেদন করা হয়।

    আরও পড়ুন: মেয়েরাও কি করতে পারে তর্পণ? কী বলছে শাস্ত্র?

    মাতা মহাগৌরী: উজ্জ্বল সৌন্দর্যের প্রতীক এই দেবী অষ্টমীতে ভক্তদের দ্বারা আরাধিত হন। মাতা মহাগৌরীর একহাতে ত্রিশূল ও অপর হাতে ডমরু থাকে। তাঁর নৈবেদ্যতে নারকেল রাখার রীতি রয়েছে। বিশ্বাস রয়েছে, মাতার আশীর্বাদ স্বরূপ ভক্তদের ভালো বিবাহ হয়।

    মাতা সিদ্ধিদাত্রী: নবরাত্রির শেষদিনে পুজো হয় এই দেবীর। তিনি ভক্তদের জীবনে সমস্ত অশুভ প্রভাব বিনষ্ট করেন এবং সাফল্য আনেন বলে ভক্তদের ধারণা। মাতা সিদ্ধিদাত্রীকে ভক্তরা তিল নিবেদন করে থাকেন।

    সংস্কৃত সাহিত্যের ব্যাকরণ আচার্য উপাধি প্রাপক তথা হিন্দু শাস্ত্র বিশেষজ্ঞ কাটোয়ার সৌমিক চট্টোপাধ্যায় প্রতিদিন নিয়মিত ভাবে নিজ গৃহে চণ্ডীপাঠ করেন। নবরাত্রি পালনের বিষয়ে তাঁর অভিমত – “দেবী মাহাত্ম্য পাঠের আগে দেবী কবচে পাঠ করা হয়। কবচ শব্দের অর্থ যা রক্ষা করে, এখানে দেবীর নয় অবতার, আট শক্তি সহ সর্ব রূপের বর্ণনা এবং অশুভ শক্তির প্রভাব থেকে ভক্তকে রক্ষা করার বিষয় রয়েছে।”

    সৌমিকবাবুর আরও সংযোজন-  পুরাণ মতে, মা দুর্গা নয়দিন যাবৎ অসুরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন এবং নবমীর রাতে মহিষাসুরকে বধ করেছিলেন। মা দুর্গার প্রতি ভক্তি নিবেদনের জন্য ভক্তরা নবরাত্রিতে মায়ের ন’টি রূপের পুজো করেন। অপর একটি মত হলো – নারদের প্রস্তাবে, রাবণ বধের উদ্দেশ্যে রামচন্দ্র ন’দিন উপবাস রেখে ব্রত পালন করেন এবং ব্রত শেষে রাবণকে বধ করেন। তাই সাফল্যের জন্য নবরাত্রির উপবাস রীতি প্রচলিত আছে।

    নবরাত্রি (Navratri 2022) দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন নামে পরিচিত রয়েছে। যেমন – নভরাত্রি, নঔরাত্রি, নবরাহত্রি, নবরাতম, নঔরাতম ইত্যাদি। আচার, অনুষ্ঠান, রীতি, প্রথা মেনে পালিত হওয়া নবরাত্রিতে ভক্তরা ন’দিন যাবৎ উপবাস রাখেন তার সঙ্গে ইন্দ্রিয় সংযমের বিধিও পালন করা হয়। এসময় তামসিক খাবার যথা মাছ, মাংস, ডিম ভক্তরা খান না। ক্ষৌরকর্ম করেন না, প্রত্যহ ভোরবেলায় উঠে স্নান করে দেবীকে ভক্তরা নৈবেদ্য নিবেদন করেন। সনাতন সংস্কৃতির ধারক, বাহক ও পালক হলো এই নবরাত্রি ব্রত।

  • Durga Puja: অষ্টমীর কুমারী পুজোয় কুমারীদের বয়স অনুযায়ী হয় পৃথক নাম, জানেন সেগুলো কী কী?

    Durga Puja: অষ্টমীর কুমারী পুজোয় কুমারীদের বয়স অনুযায়ী হয় পৃথক নাম, জানেন সেগুলো কী কী?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দুর্গাপুজোর একটি অঙ্গ হল কুমারী পুজো (Kumari Puja)। কোনও কুমারীকে দেবীজ্ঞানে পুজো করা হয় এদিন। হিন্দু ধর্ম বিশ্বাসীদের মতে, জীব সেবাই শিব (Shiva) সেবা। অর্থাৎ জীবের মধ্যে দিয়েই শিব বা দেবতাকে খোঁজা। শাস্ত্রজ্ঞদের একাংশের মতে, সেই কারণেই দুর্গাপুজোয় (Durga Puja) হয় কুমারী পুজো।

    কুমারী পুজো সর্বত্র হয় না। যাঁদের পারিবারিক রীতি রয়েছে, তাঁদের বাড়িতে হয়। আর ইদানিং হচ্ছে সর্বজনীন পুজোগুলিতেও। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কুমারী পুজো হয় অষ্টমীতে। সপ্তমীতে যেহেতু দেবী আসেন গৃহস্থের বাড়িতে, তাই এদিন কুমারী পুজো হয় না। কুমারী পুজো হয় অষ্টমীর দিন। সন্ধিপুজোর আগে। তবে কোনও কোনও পরিবার কুমারী পুজো হয় নবমীতেও। বৃহদ্ধর্মপুরাণ মতে, স্বয়ং মহামায়া কুমারী রূপে দেবতাদের সামনে আবির্ভূতা হয়ে বেলগাছে দেবীর বোধন করতে নির্দেশ দেন। সেই থেকে কুমারী পুজো হয়ে গিয়েছে দুর্গাপুজোর অঙ্গ।এক এক বয়সের কুমারীর নামও ভিন্ন ভিন্ন।

    এক বছরের কুমারীর নাম সন্ধ্যা। দু’বছরের কুমারী সরস্বতী নামে খ্যাতা। তিন বছরের কন্যাকে বলা হয় ত্রিধামূর্তি। চার বছরের কন্যা দেবী কালিকা নামে পরিচিতা। পাঁচ বছরের কন্যা সুভগা নামে খ্যাতা। ছ বছরের কুমারীকে বলা হয় উমা। কুমারীর বয়স সাত হলে তিনি মালিনী। বয়স আট হলে তিনি কুঞ্জিকা নামে পরিচিতা হবেন। ন বছরের কুমারীকে বলা হয় কালসন্দর্ভা। কুমারীর বয়স দশ হলে তিনি হবেন অপরাজিতা। কুমারীর বয়স এগারো হলে তিনি পরিচিত হবেন রুদ্রাণী রূপে। বারো বছরের কুমারী ভৈরবী হিসেবে পরিচিত। কুমারীর বয়স তেরো হলে তিনি হবেন মহালক্ষ্মী। চোদ্দ বছরের কুমারীকে বলা হয় পঠিনায়িকা। কুমারীর বয়স পনেরো হলে তিনি হবেন ক্ষেত্রজ্ঞা। আর ষোল কুমারী যদি ষোলো বছর বয়স্কা হন, তাহলে তিনি অম্বিকা নামে পরিচিত হবেন।

    এই আলোচনার নির্যাস হল, এক থেকে ষোলো বছর বয়সী কন্যাদেরই কেবল কুমারী রূপে পুজো করা হয়। তবে শাস্ত্রবিদদের একাংশের মতে, কুমারীর বয়স কম হলেই ভাল হয়। কারণ এঁদের মতে, কুমারী রজঃস্বলা না হলেই ভাল হয়। সেই কারণে আমরা যেসব কুমারীপুজো দেখি, সেখানে আট-ন বছরের নীচের কোনও কন্যাকেই কুমারী হিসেবে পুজো করা হয়।

     

  • Durga Puja 2022: ষষ্ঠী থেকে দশমী, কী কী রীতি পালিত হয় দুর্গা পুজোয়? রইল পুরো তালিকা

    Durga Puja 2022: ষষ্ঠী থেকে দশমী, কী কী রীতি পালিত হয় দুর্গা পুজোয়? রইল পুরো তালিকা

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পৃথিবীর সবথেকে বড় উৎসব বাঙালির দুর্গাপুজো (Durga Puja 2022)। এবছর বাঙালির এই মহোৎসব পেয়েছে ইউনেস্কোর হেরিটেজ তকমাও। এই উৎসব শুধুই আর ধর্মীয় উৎসবে সীমাবদ্ধ নেই। এই উৎসব আজ হয়ে উঠেছে সর্ব ধর্ম সমন্বয়ের উৎসব। পুজোর এই কয়েক দিন, মানুষ তার জীবনের সমস্ত দুঃখ কষ্ট ভুলে উৎসবে মেতে ওঠেন।  

    ষষ্ঠী থেকে দশমী, দুর্গাপুজোর এই পাঁচ দিনে বহু নিয়ম মেনে মা দুর্গার আরাধনা করা হয়। জেনে নিন দুর্গা পুজোয় কবে কোন নিয়ম পালন করা হয়?

    মহা ষষ্ঠীতে দেবীর বোধন 


    মহাষষ্ঠীর দিনই শুরু হয়ে যায় দেবীর আরাধনা। দেবীপক্ষের শুক্লা ষষ্ঠী তিথিতে মা দুর্গার বোধন করা হয়। এই রীতির সঙ্গে জড়িত আছে এক পৌরাণিক কাহিনী। বোধনের অর্থ জাগ্রত করা। জাগ্রত করা হয় দেবীকে। কথিত আছে, শরৎকালে দুর্গা পুজোর সূচনা করেছিলেন শ্রীরামচন্দ্র। লঙ্কার রাজা রাবণকে পরাজিত করার জন্য দেবীর আশীর্বাদের কামনায় তিনিই এই সময় দুর্গার অকাল বোধন করেন। বোধনের মাধ্যমেই দুর্গাকে আবাহন করা হয়। আর তাতে রামচন্দ্রকে সাহায্য করেছিলেন স্বয়ং ব্রহ্মা। 

    মহাসপ্তমীতে নবপত্রিকা বা কলা বউ স্নান


    সপ্তমীতে কলা বউ স্নানের রীতি প্রচলিত আছে। একেই বলা হয় নবপত্রিকা। নবপত্রিকার অর্থ হল নটি পাতা। কিন্তু এই ক্ষেত্রে নটি গাছ দিয়ে নবপত্রিকা গঠন করা হয়। এই নটি গাছ মা দুর্গার নয় শক্তির প্রতীক। গাছগুলি হল – কলাগাছ, কচু, হলুদ, জয়ন্তী, বেল, ডালিম, অশোক, মান ও ধান। সপ্তমীর সকালে নবপত্রিকাকে স্নানের জন্য নদী বা পুকুরে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর লাল পাড় সাদা শাড়িতে মুড়িয়ে ঘোমটা দিয়ে বধূর আকারে সেটিকে গণেশের পাশে স্থাপন করা হয়। অনেকেই বলে থাকেন, নবপত্রিকার পূজা প্রকৃতপক্ষে শস্যদেবীর পূজা। 

    মহাষ্টমীর অঞ্জলি


    সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী এই তিনদিনই পুষ্পাঞ্জলি দেওয়া যায়। কিন্তু অষ্টমীর অঞ্জলিকে একটু বেশিই গুরুত্ব দেন বাঙালিরা। হাত ভোরে ফুল নিয়ে পুরোহিতের বলা মন্ত্র উচ্চারণের পর, হাতে ধরে থাকা ফুল-পাতা দেবীর চরণে অর্পণ করা হয়। অঞ্জলি দেওয়ার মাধ্যমে মায়ের প্রতি নিজেদের বিশ্বাস, শ্রদ্ধা প্রকাশ করেন ভক্তরা এবং তাঁর আশীর্বাদ চান। 

    কুমারী পুজো 

    অষ্টমী বা নবমী তিথিতে বহু জায়গায় পুজোর রীতি পালিত হয়। শাস্ত্রমতে, এক থেকে ষোল বছর বয়স পর্যন্ত, যেসব মেয়েরা ঋতুচক্রে পা দেয়নি তাদের দেবী রূপে পুজা করা হয়। 

    সন্ধি পুজো 

    অষ্টমীর সমাপ্তি ও নবমীর সূচনার সন্ধিক্ষণে করা হয় সন্ধিপুজো। মনে করা হয়, অষ্টমী ও নবমীর সন্ধিক্ষণে দেবী চামুণ্ডা চণ্ড ও মুণ্ড নামে দুই অসুরকে বধ করেছিলেন। তাই এই সময় দেবীকে চামুণ্ডা রূপে পুজো করা হয়। সন্ধিপুজোর সমস্ত মন্ত্রই চামুণ্ডা দেবীর মন্ত্র। সন্ধিপুজোয় দেবীকে ১০৮ পদ্ম এবং ১০৮ দীপ দিয়ে পুজো করা হয়। 

    বিজয়া দশমীতে সিঁদূর খেলা 

    বিজয়া দশমীতেই সকলকে কাঁদিয়ে মা দুর্গা শ্বশুরবাড়ি পাড়ি দেন। বিজয়ার দিনে সিঁদুর খেলা দুর্গাপুজোর এক বিশেষ অনুষ্ঠান। পতিগৃহে রওনা দেওয়ার আগে উমাকে বরণ করার রীতি প্রচলিত রয়েছে। তাই, দশমীর দিন ঘরের মেয়েকে সিঁদূরে রাঙিয়ে, মিষ্টি মুখ করিয়ে, পান, ধান, দূর্বা দিয়ে বরণ করা হয়। দেবীর বরণের পরই সধবা মহিলারা মেতে ওঠেন সিঁদূর খেলায়। 

    দেবীর বিসর্জন 


    প্রতিমা পুজার অন্তিম পর্যায় বিসর্জন। জলের মাধ্যমেই মাটির প্রতিমা প্রকৃতিতে লীন হয়। নৌকায় করে মাঝ নদীতে নিয়ে গিয়ে দুর্গা প্রতিমা বিসর্জন করা হয়। আর শুরু হয় মায়ের অপেক্ষা। পরের বছর মায়ের আগমনের এক বছরের অপেক্ষা। শুরু হয় দিন গোনা। 

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।         

  • Durga Puja: ষষ্ঠীতে হয় দেবীর বোধন, কেন একে অকালবোধন বলা হয়, জানেন?

    Durga Puja: ষষ্ঠীতে হয় দেবীর বোধন, কেন একে অকালবোধন বলা হয়, জানেন?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আজ মহাষষ্ঠী (Maha Shasthi)। দেবীর বোধন (Bodhan)। পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে, মহাষষ্ঠীর দিন দেবী দুর্গা তাঁর চার সন্তান— সরস্বতী, লক্ষ্মী, গণেশ এবং কার্তিককে নিয়ে স্বর্গ থেকে মর্ত্যে অবতরণ করেন। ফলে আজ থেকে ঢাক ও কাঁসরের আওয়াজে চারিদিক যেন গমগম করে। মা দুর্গার আগমণে সবাই যোন আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে ওঠে। উৎসবপ্রেমী বাঙালীদের সবচেয়ে বড় পার্বণ হল দুর্গা পুজো। দুর্গা পুজো শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গে নয়, দেশের বহু রাজ্যে ধুমধাম করে উদযাপন করা হয়ে থাকে। এছাড়া বিদেশেও বাঙালিরা উৎসাহ ও আনন্দের সঙ্গে জাঁকজমকভাবে উৎযাপন করে থাকে পুজোর দিনগুলি।

    পুজোর পাঁচটি দিন- মহাষষ্ঠী, মহাসপ্তমী, মহাঅষ্টমী, মহানবমী, মহাদশমীর কিছু তাৎপর্য রয়েছে। যেমন আজ মহাষষ্ঠী, আর আজকের দিনেই দুর্গাপুজোর প্রথম অন্যতম যে নিয়মটি পালন করা হয়ে থাকে তা হল বোধন। এই ‘বোধন’ শব্দটির অর্থ হল জাগ্রত করা। মর্ত্যে দুর্গার আবাহনের জন্য বোধনের রীতি প্রচলিত রয়েছে। দেবী দুর্গার মুখের আবরণ উন্মোচন করা হয় এই দিনে। সাধারণত ষষ্ঠীর সন্ধ্যায় এই নিয়মটি পালন করা হয়ে থাকে এই নিয়মটি।

    বোধনের তাৎপর্য

    পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, দেবীপক্ষের ষষ্ঠী তিথিতে দুর্গার বোধন করে পুজো করেন শ্রীরামচন্দ্র। এদিন মা দুর্গা স্বর্গ থেকে মর্ত্যে পদার্পণ করেন ও দেবী দুর্গার মুখের আবরণ উন্মোচনই এই দিনের প্রধান কাজ। এই দিন কল্পারম্ভ-এর মাধ্যমে সূচনা হয় পুজোর। তারপর আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মাধ্যমে মা-কে বরণ করে নেওয়া হয়। অকাল বোধনের মাধ্যমেই উন্মোচন করা হয় মায়ের মুখ। মনে করা হয় বোধনের পর প্রতিমার মধ্যে প্রাণ প্রতিষ্ঠিত হয়। এই নিয়মের পরেই সকল দেব-দেবী এবং তার সঙ্গে মহিষাসুরের ও পুজো করা হয়। এরপরই মহা সমারোহে শুরু হয় দুর্গাপুজো।

    অকাল বোধনের কাহিনী

    বোধন কে আবার অকাল-বোধনও বলা হয়ে থাকে। হিন্দু শাস্ত্র মতে, সূর্যের উত্তরায়ন দেবতাদের সকাল। উত্তরায়নের ছয় মাস দেবতাদের দিন হিসেবে গণ্য করা হয়। সকালে সমস্ত দেব-দেবীর পুজো করা হয়। আবার দক্ষিণায়ন শুরু হলে ছয় মাসের জন্য নিদ্রায় যান সমস্ত দেব-দেবী। এই দক্ষিণায়ন দেবতাদের রাত। রাতে দেব-দেবীর পুজো করা হয় না। কিন্তু দক্ষিণায়নের ছয় মাসের মধ্যেই দুর্গাপুজো হয় বলে বোধনের মাধ্যমে আগে দেবী দুর্গাকে ঘুম থেকে তোলা হয়। আর পুরাণ মতে, এই কাজটি সর্বপ্রথম করেছিলেন দশরথ পুত্র রাজা রামচন্দ্র। লঙ্কায় রাবণের সঙ্গে যুদ্ধে যাওয়ার আগে এই তিথিতেই দুর্গার বোধন করেছিলেন রামচন্দ্র। তাই ষষ্ঠীর বোধনে বা  অকালে মা দুর্গাকে জাগিয়ে তোলা হয়েছিল বলেই এই বোধনকে অকাল-বোধনও বলা হয়ে থাকে।

  • Ranna Puja 2022: অরন্ধন কী? কেন পালন করা হয়? জানুন এই উৎসবের তাৎপর্য

    Ranna Puja 2022: অরন্ধন কী? কেন পালন করা হয়? জানুন এই উৎসবের তাৎপর্য

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: কথায় আছে, বাঙালিদের বারো মাসে তেরো পার্বণ। সারা বছর ধরেই বাঙালিদের কিছু না কিছু উৎসব লেগেই থাকে। এরই মধ্যে একটি পার্বণ হল অরন্ধন উৎসব বা রান্না পূজা। এই পুজোর প্রধান নিয়মই হল ভাদ্র মাসে রান্না করে আশ্বিনে খাওয়া। আবার এদিন মনসা পূজাও করা হয়। এই মনসা পূজারই একটি অংশ হল এই রান্না পূজা। সাধারণত বিশ্বকর্মা পুজোর আগের রাতে অমাবস্যা থাকে, আর এই অমাবস্যার রাতেই এই পুজো করা হয়। এইদিন সারা রাত ভরে রান্না ঘরে বিভিন্ন খাবার রান্না করা হয় ও পরের দিন বাসি খাবার খাওয়া হয়।

    সাধারণত এই অরন্ধন উৎসব বছরে দুবার পালন করা হয়। একবার অরন্ধন উৎসব হয় মাঘ মাসে, সরস্বতী পুজোর পরের দিন। ঐদিন থাকে শীতল ষষ্ঠী। ঐদিন শিলনোড়া পুজো করা হয়। এইদিন বাড়িতে গোটা সেদ্ধ খাওয়ার রীতিও রয়েছে। আর একবার হয় আজ, ভাদ্র মাসের সংক্রান্তিতে। আর এই ভাদ্র মাসের সংক্রান্তিতেই মা মনসার পুজো করা হয়।

    আরও পড়ুন: অনন্ত চতুর্দশী কবে জানেন? কেন পালন করা হয় এই বিশেষ দিন? কী এর মাহাত্ম্য?

    এদিন রান্নাঘরে উনুন জ্বালানোর নিয়ম নেই। তাই আগের দিন রাতেই রান্না করে পরের দিন খাওয়ার রীতি রয়েছে। এই দিন রান্নাঘরের সমস্ত জায়গা ভালো করে পরিষ্কার করে ফণীমনসার ডাল অথবা শালুক গাছের ডাল দিয়ে মনসার ঘট প্রতিষ্ঠা করা হয় এবং মা মনসার পুজো করা হয়। পুজোতে ভোগ হিসেবে দেওয়া হয় মরশুমি শাক, সবজি, মাছ ইত্যাদি। তবে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকমের ভোগ দেওয়া হয়, কোথাও আমিষ বা কোথাও আবার নিরামিষ। যার মধ্যে পান্তা উল্লেখযোগ্য। নিরামিষ ভোগের ক্ষেত্রে ইলিশ ও চিংড়ি মাছ অন্যতম ও নিরামিষের ক্ষেত্রে নানা রকমের ভাজা, ছোলা -নারকেল দিয়ে কচু শাক সহ একাধিক শাক ইত্যাদি।

    দেবীপক্ষের আগে রান্না পুজোই বাঙালিদের শেষ উৎসব। এরপর মহালয়ার পরেই শুভক্ষণে উৎসব শুরু হয়। যদিও এই অরন্ধন উৎসব বা রান্না পুজোর রীতিনীতি এখন আর বেশি দেখা যায় না। তবে শহরে কম হলেও, গ্রামে  এখনও এই উৎসব ব্যাপকভাবে উদযাপিত হয়।

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।

  • Durga Puja 2022: দুর্গাপুজোয় বোধনের অনুষ্ঠান হয় কেন জানেন?

    Durga Puja 2022: দুর্গাপুজোয় বোধনের অনুষ্ঠান হয় কেন জানেন?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আজ ষষ্ঠী (Durga Shasthi)। এই সময়টা দেবতাদের রাত্রি। তাই তাঁরা ঘুমোন। সেই কারণেই  এই সময়ে দেবীকে জাগ্রত করতে হয়। হিন্দু রীতি অনুযায়ী সেই উৎসবকে বলে বোধন। যেহেতু এই সময়টা স্বয়ং মহামায়ারও (Goddess Durga) বিশ্রামের সময়, তাই তাঁকে জাগিয়ে তোলা প্রয়োজন। সেই কারণে একে বলা হয় অকাল বোধন (Akal Bodhon)।

    রাবণের সঙ্গে যুদ্ধে জয়লাভের জন্য এই সময় দুর্গাপুজো করেছিলেন দশরথ পুত্র রামচন্দ্র স্বয়ং। তিনি পুজো করেছিলেন অকালে। তাই একে অকাল বোধন বলা হয়। রামচন্দ্রের আগে দুর্গাপুজো করার চল ছিল চৈত্র মাসে। যাকে আমরা বাসন্তী পুজো বলেই জানি। এজন্য বাসন্তী পুজোয় দেবীকে জাগিয়ে তোলার প্রয়োজন নেই। তাই ওই পুজোয় আমন্ত্রণ এবং অধিবাস থাকলেও বোধন থাকে না। কারণ তখন দেবতারা জেগেই থাকেন। রামচন্দ্র যে দুর্গার পুজো করেছিলেন, তিনি ছিলেন মহিষমর্দিনী। সিংহারূঢ়া দেবী দশভুজা ত্রিশূল দিয়ে বধ করছেন মহিষাসুরকে। পরবর্তীকালে সিংহবাহিনী দুর্গার সঙ্গে পুজো শুরু হল লক্ষ্মী-সরস্বতী-কার্তিক ও গণেশের। কারণ এই চার দেবদেবী হলেন চতুবর্গের প্রতীক। চতুবর্গ হল ধর্ম, অর্থ, কাম এবং মোক্ষ। প্রতিটি মানুষ এই চারটি বর্গই কামনা করেন। তবে এই চতুবর্গ কামনা করেন গৃহীরা, সন্ন্যাসীরা নন।

    আমরা জানি, মা লক্ষ্মী দেন অর্থ। সিদ্ধিদাতা গণেশ দেন ধর্ম। কার্তিক দেন কাম। তাই সন্তান কামনায় এদেশে কার্তিক পুজো এবং কার্তিক ব্রত পালন করেন গৃহী মানুষ। আর সরস্বতী বিদ্যার দেবী। তিনি দেন মোক্ষ। বিদ্যালাভ হলে জ্ঞান অর্জন হয়। জ্ঞান লাভ হলে বহুতে অভেদ দর্শন হয়। এই অভেদ জ্ঞান লাভ হলে ব্রহ্মজ্ঞান লাভ হয়। কারণ শঙ্করাচার্য স্বয়ং বলেছিলেন, ব্রহ্ম সত্য জগন্মিথ্যা, জীব ব্রহ্মৈব না পর। ব্রহ্মই এক মাত্র সত্য, এ জগৎ মিথ্যা। জীবই ব্রহ্ম স্বরূপ। এই জ্ঞান লাভের জন্য সরস্বতী পুজোর প্রয়োজন। সেই কারণেই এখন মহিষাসুরমর্দিনী দুর্গার সঙ্গে এঁদেরও পুজো হয়। তবে এঁদের পুজো হয় সপ্তমীর দিন। ষষ্ঠীতে কেবলই পুজো হয় জগন্মাতার। তিনি যে মহামায়া স্বরূপ।   

     

  • Durga Puja 2022: বারোয়ারি দুর্গাপুজোর প্রচলন কবে থেকে? প্রবর্তক কারা?

    Durga Puja 2022: বারোয়ারি দুর্গাপুজোর প্রচলন কবে থেকে? প্রবর্তক কারা?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পুরাণ ও শাস্ত্র সহ বিভিন্ন ধর্মীয় গ্রন্থ থেকে আমরা জানতে পারি ভাগবান শ্রীকৃষ্ণই প্রথম দুর্গাপুজো করেছিলেন। তার পরে দেবীর আরাধনা করেছিলেন স্বয়ং প্রজাপতি ব্রহ্মা। তারও পরে দুর্গাপুজো (Durgapujo) করেছিলেন মহাদেব (Mahadev)। পরে আরও অনেক দেবতাই বিপদ থেকে ত্রাণ পাওয়ার জন্য শরণ নিয়েছিলেন মহামায়ার (Mahamaya)। এ তো গেল দেবতাদের দেবী আরাধনার উপাখ্যান। ব্রহ্মার মানস পুত্র মনু মর্তে দুর্গাপুজোর প্রচলন করেছিলেন বলে কোনও কোনও শাস্ত্র রচয়িতার দাবি। সে যাই হোক না কেন এবার আমরা আলোচনা করব বারোয়ারি দুর্গাপুজোর (Baroyari Durgapujo) ইতিহাস নিয়ে।

    ‘বারোয়ারি’ শব্দটির উৎপত্তি ‘বারো’ এবং ‘ইয়ার’ এই দুই শব্দ থেকে। ‘ইয়ার’ শব্দের অর্থ বন্ধু। তাহলে বারোয়ারি বলতে বোঝায় বারো জন বন্ধু। হ্যাঁ, ঠিক তাই। বারোজন বন্ধুই প্রথম একজোট হয়ে দুর্গাপুজো করেছিলেন। তাই এক সঙ্গে যখন অনেকে পুজো করেন, তখন তাকে বলে বারোয়ারি পুজো। এখন অবশ্য ‘বারোয়ারি’ কথাটির বদলে ‘সর্বজনীন’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়। তার কারণ, এখন আর বারোজন মিলে কোনও পুজো করেন না, করেন অনেকে মিলে। কোথাও একটা গোটা পাড়া, কোথাও আবার পাড়ার বাইরেও বিভিন্ন জায়গা থেকে চাঁদা তোলা হয়। তাই বারোয়ারি পুজো এখন বদলে হয়েছে সর্বজনীন।

    এবার আসা যাক আসল কথায়। জানা যায়, ১৭৯০ সালে হুগলির গুপ্তিপাড়ায় বারোজন ব্রাহ্মণ বন্ধু প্রথম চাঁদা তুলে পুজো শুরু করেন। এই পুজোই বারোয়ারি পুজো নামে খ্যাত। মর্ত্যে যখন দুর্গাপুজো শুরু হয়, তখন তা মূলত হত ধনীদের বাড়িতেই। কারণ দুর্গাপুজোর খরচ বিস্তর। পুজোও চার পাঁচ দিনের। তাই ধনীরা পুজো করতেন। কিছু কিছু ব্রাহ্মণ বাড়িতেও পুজো হত। তবে তা নিতান্তই সাদামাটাভাবে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পুজো হত পট কিংবা যন্ত্রে। সেখানে ধনী গৃহস্থ বাড়িতে পুজো হত প্রতিমা বানিয়ে।

    এক সময় কলকাতায় হাতে গোণা কয়েকটি সর্বজনীন দুর্গাপুজো হত। কালক্রমে পুজোর সংখ্যা বেড়েছে। বেড়েছে আলোর রোশনাই-জৌলুসও। তবে কেবল দুর্গাপুজোই যে সর্বজনীনভাবে হয় তা নয়, বারাসত-ব্যারাকপুরের কালীপুজো, কৃষ্ণনগর, চন্দননগর, বাউড়িয়ার জগদ্ধাত্রীপুজো, উলুবেড়িয়া, কাটোয়া, চুঁচুড়া-বাঁশবেড়িয়া অঞ্চলে কার্তিক পুজো এবং নবদ্বীপের শাক্ত রাসও হয় সর্বজনীনভাবে।

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ। 

     

  • Durga Puja 2022: মহাষষ্ঠীতে পূজিত হন দেবী কাত্যায়নী, তিনি কে জানেন?

    Durga Puja 2022: মহাষষ্ঠীতে পূজিত হন দেবী কাত্যায়নী, তিনি কে জানেন?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আজ মহাষষ্ঠী (maha Sasthi)। ষষ্ঠী হল চান্দ্র মাসের ষষ্ঠ দিন। সারা বছরই দেবী ষষ্ঠীর আরাধনা করা যায়। তবে সন্তানের মঙ্গল কামনায় মায়েরা (Mothers) যে দুটি ষষ্ঠীর ব্রত মূলত করেন, তার একটি হল অশোক ষষ্ঠী, আর অন্যটি হল দুর্গা ষষ্ঠী। ষষ্ঠীর দিন দেবী দুর্গা পূজিত হন কাত্যায়নী (Katyani) রূপে।

    প্রশ্ন হল, কে এই কাত্যায়নী? দুর্গাপুজোর সময় ন দিন ধরে মহামায়ার নটি রূপের পুজো করা হয়। ষষ্ঠীর দিন পুজো হয় দেবী কাত্যায়নীর। তৈত্তিরীয় আরণ্যকে দেবী কাত্যায়নীর উল্লেখ পাওয়া যায়। ভীষণা এই দেবীর গাত্র বর্ণ দেবী চণ্ডীর মতোই লাল। মার্কণ্ডেয় পুরাণের অন্তর্গত দেবীমাহাত্ম্যে দেবী কাত্যায়নীর উল্লেখ রয়েছে। দেবী ভাগবত পুরাণেও মায়ের লীলা বর্ণিত হয়েছে। বৌদ্ধ, জৈন এবং তন্ত্রশাস্ত্রেও দেবী কাত্যায়নীর উল্লেখ রয়েছে। দেবীর কথা বলা হয়েছে কালিকা পুরাণেও। আর জি ভাণ্ডারকরের মতে, কাত্য জাতির দ্বারা দেবী পূজিতা হতেন বলে তাঁর নাম কাত্যায়নী। আবার একটি মতে, মহর্ষি কাত্যায়নের কন্যা তিনি। তাই তাঁর নাম কাত্যায়নী।

    দেবী কাত্যায়নীর নানা রূপ। কোথাও তিনি দ্বিভুজা, কোথাও আবার চতুর্ভুজাও। আট, দশ কিংবা অষ্টাদশ ভুজা দেবমূর্তিরও পুজো হয় আমাদের দেশে। যেহেতু দেবী কাত্যায়নী মহামায়ারই এক রূপ, তাই তিনি বিশ্বমাতা। সেই কারণেই এদিন ষষ্ঠীর ব্রত করেন মহিলারা। লোকবিশ্বাস, দুর্গা ষষ্ঠীর ব্রত করলে বিপদ আপদ থেকে মনুষ্য সন্তানকে রক্ষা করেন স্বয়ং মহামায়া।

    তবে ষষ্ঠীর দিন যে কাত্যায়নীর পুজো হয়, সেটা নবরাত্রি উৎসবের অঙ্গ বলেই বিবেচনা করেন কেউ কেউ। যাঁদের ষষ্ঠ্যাদিকল্পে দুর্গা পুজো হয়, তাঁরা এদিন দেবীকে দুর্গা রূপেই পুজো করেন। এদিন বিল্ববৃক্ষতলে হয় দেবী বরণের অনুষ্ঠান। বরণ করেন পুরোহিত স্বয়ং। কোথাও কোথাও এয়োস্ত্রীরাও বরণ করেন। তবে তা নিতান্তই লোকাচার, শাস্ত্রসম্মত কিছু নয়। আসলে পরের দিন সপ্তমীর দিন সকালে যে দেবীকে বরণ করে নেবেন গৃহস্থ, এদিন তারই প্রস্তুতি শুরু হয়। বিশ্বাস, এদিন দেবী এসে অপেক্ষা করেন গৃহপ্রবেশের।

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ। 

     
     
LinkedIn
Share