Category: পরম্পরা

Get updated History and Heritage and Culture and Religion related news from the Madhyom news portal madhyom.com, West Bengal leading news portal Madhyom.com

  • Jhulan Purnima 2022: ঝুলন উৎসব পালন করছেন? দোলনা কোন দিক করে রাখতে হবে, জানেন তো?

    Jhulan Purnima 2022: ঝুলন উৎসব পালন করছেন? দোলনা কোন দিক করে রাখতে হবে, জানেন তো?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ঝুলন পূর্ণিমাকে শ্রাবণী পূর্ণিমাও বলা হয়। বৃন্দাবনে রাধা-কৃষ্ণকে কেন্দ্র করে দ্বাপরযুগে এই ঝুলন উৎসবের সূচনা হয়েছিল, তারপর থেকে যুগ যুগ ধরে এই পর্ব চলে আসছে। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কৃপা করে দ্বাপরযুগে এই পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়েছিলেন এবং তার বয়ঃবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বৃন্দাবন তথা নন্দালয়ে নানারকম লীলাসাধন করেছিলেন। বয়ঃসন্ধিতে কিশোর কৃষ্ণ ও রাধারানীর যে মধূর প্রেমের পরিপূর্ণ প্রকাশ বৃন্দাবনে স্থাপিত হয়েছিল তারই লীলা স্বরূপা এই ঝুলনযাত্রা।

    দোলনা কেন রাখতেই হবে পূর্ব-পশ্চিম দিকে?

    ঝুলনযাত্রায় রাধাকৃষ্ণের মূর্তি দোলনায় স্থাপন করে পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে ঝোলানো হয়। এখানে শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন প্রকৃতি আর রাধারানী হলেন তার পরম ভক্তস্বরূপিনী। সূর্য হলেন পৃথিবীর সমস্ত শক্তির উৎস, পূর্ব দিকে উদয় ও পশ্চিম দিকে অস্ত যায়। এই উদয়অস্ত-এর দিক স্বরূপ পূর্ব দিক থেকে পশ্চিম দিকে রাধাকৃষ্ণকে দোলানো হয়ে থাকে। রাধাকৃষ্ণের মূর্তিকে দোলনায় স্থাপন করে মূর্তিযুগলকে ঝোলানো থেকে শুরু করে পাঁচদিন তাদের নানারকম সাজে সাজানো, প্রেমভক্তি, নামগান— বৃন্দাবনে তাঁদের বিশুদ্ধ প্রেমপর্ব সমস্তকিছু ভক্তগনের সামনে ঝুলনযাত্রার মাধ্যমে পরিবেশন করা হয়। এককথায় রাধাকৃষ্ণের প্রেমলীলার পাঁচদিন ব্যাপী এই অনুষ্ঠান ঝুলন উৎসব নামে পরিচিত।

    আরও পড়ুন: রবিবার থেকে শুরু হচ্ছে ঝুলন উৎসব, জানুন ঝুলনযাত্রার মাহাত্ম্য ও তাৎপর্য

    ঝুলনযাত্রার তাৎপর্য

    ঝুলনযাত্রা শুরুর দিন সহজ কিছু উপায়ের মাধ্যমে মনের বাসনা পূর্ণ করুন। শ্রীকৃষ্ণের ভক্তদের জন্য ঝুলনযাত্রা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিন। ভূলোকে রাধাকৃষ্ণের লীলা উৎসবই হল ঝুলনযাত্রা। শ্রীকৃষ্ণ পুজোর মাধ্যমে মানুষ শান্তি পেতে পারেন এবং মনের ইচ্ছা পূরণ করতে পারেন। ঝুলনযাত্রার দিন সঠিক নিয়মে রাধাকৃষ্ণের পুজো করে এবং সহজ কিছু উপায়ের মাধ্যমে অত্যন্ত শুভ ফল লাভ করতে পারবেন।

    পুজোর নিয়ম

    রাধাকৃষ্ণের যুগল মূর্তি বা ছবি প্রতিষ্ঠা করুন। সঙ্গে অবশ্যই গণেশের মূর্তি বা ছবি রাখবেন। প্রথমে গণেশের পুজো করবেন, তার পর রাধাকৃষ্ণের পুজো করবেন। যথাসাধ্য মিষ্টান্ন নিবেদন করুন এবং হলুদ রঙের ফুল ও ফল অর্পণ করুন। একটা কথা বিশেষ করে মনে রাখতে হবে, এই পুজোর স্থানটি যেন খুব শান্ত হয়।

    • রাধাকৃষ্ণকে হলুদ বস্ত্র দিয়ে সাজান।

    • শ্রীকৃষ্ণের মন্দিরে ময়ূরের পালক ও মুকুট দান করুন।

    • পুজোর সময় ঘিয়ের প্রদীপ অবশ্যই জ্বালতে হবে।

    • পুজো শেষে গীতা পাঠ ও গায়ত্রীমন্ত্র জপতে হবে।

    • রাধাকৃষ্ণের চরণে তুলসীপাতা অর্পণ করতে হবে।

    • দরিদ্রদের দান করতে হবে।

    • বাড়িতে নারায়ণ সেবার ব্যবস্থা করতে হবে।

    • পুজো হলুদ বস্ত্র পরে করতে হবে।

    • পুজোর জায়গায় এক টুকরো চন্দন রাখুন। এতে বাড়িতে শুভ শক্তি প্রবেশ করে।

    • এই দিন জল দান করলে জীবনে সুখ সমৃদ্ধি লাভ হয়।

  • Raksha Bandhan 2022: এবছর রাখি পূর্ণিমা ঠিক কবে ও কখন? রাখি বাঁধার সময় মাথায় রাখবেন এই নিয়মগুলো

    Raksha Bandhan 2022: এবছর রাখি পূর্ণিমা ঠিক কবে ও কখন? রাখি বাঁধার সময় মাথায় রাখবেন এই নিয়মগুলো

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক:  প্রতি বছর শ্রাবণ মাসের পূর্ণিমায় পালিত হয় রাখি বন্ধন। হিন্দু ধর্মে ভাই-বোনের পবিত্র সম্পর্ক ও ভালবাসার প্রতীক হল রাখি বন্ধন উৎসব। যদিও শুধুমাত্র ভাই-বোন নয়, ভারতবর্ষে প্রতিটি মানুষের মধ্যে সমস্ত রকম ভেদাভেদ ভুলে একে অপরের হাতে রাখি পরিয়ে সূচনা হয় এক শক্তপোক্ত সম্পর্কের বুনিয়াদ। প্রতিবছর রাখি বন্ধনের সময় বহু মানুষ একে অপরের অপরের হাতে রাখি পরিয়ে দিয়ে ভ্রাতৃত্ববন্ধনে আবদ্ধ হন। অপরদিকে বোনেরা অপেক্ষা করেন তাদের ভাই কিংবা দাদাদের হাতে রাখি পরিয়ে দেবেন।

    রাখি নিয়ে প্রচলিত পৌরাণিক কাহিনী

    মহাভারত অনুসারে, শ্রীকৃষ্ণের নিজের বোন ছিলেন সুভদ্রা। কিন্তু তিনি দ্রৌপদীকেও নিজের বোনের মতো স্নেহ করতেন। একবার শ্রীকৃষ্ণের হাত কেটে যায় এবং সেখান থেকে রক্তপাত শুরু হয়। তখন সেখানে সুভদ্রা এবং দ্রৌপদী দুজনেই উপস্থিত ছিলেন। সুভদ্রা তখন সেই রক্ত বন্ধ করবার জন্য কাপড় খুঁজছিলেন। কিন্তু দ্রৌপদী একটুও দেরী না করে নিজের পরিহিত মূল্যবান রেশমী শাড়ি ছিঁড়ে শ্রীকৃষ্ণের সেই কেটে যাওয়া স্থানটি বেঁধে দেন তাড়াতাড়ি রক্তপাত বন্ধ করার জন্য। এবং শ্রীকৃষ্ণ তখন দ্রৌপদীকে বলেন, তার বেঁধে দেওয়া কাপড়ের প্রতিটি সুতোর প্রতিদান দেবেন তিনি। এরপর শ্রীকৃষ্ণ দ্রৌপদীকে রাজসভায় বস্ত্রহরণের চরম কলঙ্কের হাত থেকে রক্ষা করেন। এই রাখি বন্ধন উৎসবের ৫ দিন আগে ঝুলনযাত্রা এবং ৭ দিন পরে জন্মাষ্টমী পালিত হয়।

    আরও পড়ুন: পুজোয় মঙ্গল ঘট কেন স্থাপন করা হয়, জানেন?

    রাখিবন্ধনের ঐতিহাসিক ঘটনা

    বর্তমান যুগে রাখি বন্ধন উৎসবের সূচনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনে গোটা বাংলায় জ্বলছে আগুন। ব্রিটিশদের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদের জন্য হিন্দু-মুসলিমদের ঐক্য বা একতার প্রতীক হিসেবে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রাখিবন্ধন উৎসব পালন করেন। তিনি ঢাকা ও সিলেট থেকে মুসলিম ভাই-বোনদের কলকাতায় আহ্বান করেন এবং রাখি বন্ধন উৎসব পালন করেন। ভারতের ইতিহাসে চরম ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার সময় এই রাখি বন্ধন হিন্দু-মুসলিমদের মধ্যে একতা ও ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে যা আজও স্মরণীয় হয়ে আছে।

    রাখি বন্ধনের তাৎপর্য ও মাহাত্ম্য

    এই রাখি মূলত কোন সুতো বা কাগজের জিনিস নয়, এটি এক ধরনের রক্ষাকবচ যা ভাইদের সমস্ত রকমের বিপদের হাত থেকে রক্ষা করে। অপরদিকে এই দিন দাদারা প্রতিজ্ঞা করেন জীবনের সব কঠিন পরিস্থিতিতে বোনের পাশে দাঁড়ানোর। প্রত্যেক বোনের কাছে এই রাখি বন্ধন অত্যন্ত বিশেষ একটি দিন, যাকে ঘিরে বহু প্রচলিত নিয়ম রয়েছে। যেগুলি অনেকেই মনে-প্রাণে মেনে চলেন।

    আরও পড়ুন: প্রদীপের মুখ কোনদিকে থাকা উচিত? নিয়মগুলি না জানলে হতে পারে অমঙ্গল!

    এবছর রাখি পূর্ণিমা কবে ও কখন?

    হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুসারে, এবছর শ্রাবণী পূর্ণিমা তিথি ১১ অগাস্ট সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে শুরু হচ্ছে এবং ১২ অগাস্ট সকাল ৭টা ০৫ মিনিটে শেষ হবে। ফলত, আগামী ১১ অগাস্ট পালিত হবে রাখি বন্ধন উৎসব। বোনেরা ওইদিন ভাইয়ের হাতে রাখি বাঁধতে পারেন। তবে, ১১ তারিখ সকাল ১০.৩৮ থেকে রাত ৮.২৪ পর্যন্ত ভদ্রা তিথি থাকবে। শাস্ত্র অনুযায়ী, ভদ্রা তিথিতে কোনও শুভ কাজ করা যায় না। আবার সূর্যাস্তের পরও রাখি বাঁধার নিয়ম নেই। তাই ভদ্রা তিথি পড়ার আগেই রাখি বন্ধনের কাজ সম্পন্ন করতে হবে। নয়তো, ১২ তারিখ ভোরে পূর্ণিমা তিথি থাকাকালীন করতে হবে।

    রাখি বন্ধনে কী করবেন ও কী করবেন না—

    •রাখির উপহারের তালিকায় তোয়ালে কিংবা রুমাল রাখবেন না।

    •ভাইয়ের হাতে রাখি পরিয়ে দেওয়ার সময় কালো রঙের পোশাককে অনেকে এড়িয়ে যাওয়া শুভ বলে মনে করেন।

    •বোনকে উপহার দেওয়ার সময় ভাইদের খেয়াল রাখতে হবে সেই তালিকায় যেন কোনও ধারালো জিনিস না থাকে।

    •বহু জায়গা প্রচলিত রয়েছে, যতক্ষণ না ভাইদের হাতে রাখি পরানো হয় ততক্ষণ বোনেরা নুন জাতীয় কোনও খাবার খান না।

    •রাখির মঙ্গল থালায় জ্বলন্ত প্রদীপ, কুমকুম এবং চন্দন রেখে তারপরেই রাখি পরাবেন।

    •রাখি বন্ধন শেষে কোনওভাবেই ভাইদের কালো রঙের কোনও উপহার দেবেন না।

    •রাখি পরানোর সময় নোনতা খাবারের পরিবর্তে যতটা সম্ভব মিষ্টি জাতীয় খাবার দেবেন।

    •ভাইদের উদ্দেশ্যে আনা রাখি, হাতে বাঁধার আগে অবশ্যই কিছুক্ষণ বাড়ির ইষ্ট দেবতার চরণে রেখে দেবেন।

    •আসনে ভাইদের পূর্ব বা উত্তর দিকে মুখ করে বসাবেন। তারপর হাতে রাখি বেঁধে দেবেন। দক্ষিণ দিকে বসিয়ে রাখি বাঁধাকে অশুভ বলে মনে করা হয়।

  • Jhulan Purnima 2022: রবিবার থেকে শুরু হচ্ছে ঝুলন উৎসব, জানুন ঝুলনযাত্রার মাহাত্ম্য ও তাৎপর্য

    Jhulan Purnima 2022: রবিবার থেকে শুরু হচ্ছে ঝুলন উৎসব, জানুন ঝুলনযাত্রার মাহাত্ম্য ও তাৎপর্য

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: শ্রাবণ মাসে শুক্লা একাদশী থেকে পূর্ণিমা, এই পাঁচদিন ধরে অনুষ্ঠিত হয় বৈষ্ণব ধর্মের অন্যতম শ্রেষ্ঠ উৎসব ঝুলন উৎসব। রাখি পূর্ণিমার মাধ্যমে ঝুলন যাত্রার সমাপ্তি ঘটে। মথুরা-বৃন্দাবনের মতোই বাংলার ঝুলন উৎসবের ঐতিহ্য সুপ্রাচীন। এটি দোল পূর্ণিমার পর বৈষ্ণবদের আর একটি বড় উৎসব। 

    ঝুলনযাত্রার মাহাত্ম্য

    শাস্ত্রমতে, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তাঁর সমস্ত ভক্ত নির্বিশেষে সকলকে অনুগ্রহ করবার জন্য গোলকধাম থেকে ভূলোকে এসে লীলা করেন। ঝুলন শব্দটির সঙ্গে ‘দোলনা’ শব্দটি রয়েছে। তাই এই সময় ভক্তরা রাধাকৃষ্ণকে (Radha – Krishna) সুন্দর করে সাজিয়ে দোলনাতে বসিয়ে পুজো করেন।

    বৃন্দাবন, মথুরা আর নবদ্বীপের ইসকন মন্দিরে এই উৎসব মহাসমারোহে পালন করা হয়। এই পবিত্র তিথিতে বাড়িতে নানারকমের শুভ কাজ করা যায়। পুরাণ মতে, ঝুলনযাত্রার দিন শ্রীকৃষ্ণ এবং রাধার প্রেমের পূর্ণ প্রকাশ ঘটে । তাই এই দিন বাড়িতে বিশেষ কিছু কাজের মাধ্যমে শ্রীকৃষ্ণের পুজো করতে পারেন। তার ফলে আপনার মনের ইচ্ছেও পূর্ণ হবে।

    আরও পড়ুন: পুজোয় মঙ্গল ঘট কেন স্থাপন করা হয়, জানেন?

    ঝুলন পূর্ণিমাকে শ্রাবণী পূর্ণিমাও বলা হয়। ঝুলন যাত্রা সমাপন হয় রাখির দিন। তাই ঝুলন পূর্ণিমাকে রাখি পূর্ণিমাও বলা হয়ে থাকে। বৃন্দাবনে রাধা-কৃষ্ণর শৈশব-স্মৃতি, বিশেষতঃ সখা-সখীদের সঙ্গে দোলনায় দোলার প্রেমলীলাকে কেন্দ্র করে দ্বাপরযুগে এই ঝুলন উৎসবের সূচনা হয়েছিল। এর পর থেকে এখনও গৌড়ীয় বৈষ্ণবদের এটা প্রিয় অনুষ্ঠান। এক এক অঞ্চলে দোল বা দুর্গোৎসবের মতো ঝুলন উৎসবের আকর্ষণও কিছু মাত্র কম নয়। ঝুলনেও দেখা যায় নানা আচার অনুষ্ঠান ও সাবেক প্রথা।

    ঝুলনযাত্রার সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক তাৎপর্য

    শুধুমাত্র রাধাকৃষ্ণের যুগলবিগ্রহ দোলনায় স্থাপন করে হরেক আচার অনুষ্ঠান নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক তাৎপর্য। এই উৎসব হয় মূলত বনেদি বাড়ি এবং মঠ-মন্দিরে। তবে ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের পাশাপাশি ছোটদের ঝুলন সাজানোও এই উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ। 

    নানা ধরনের মাটির পুতুল, কাঠের দোলনা আর গাছপালা দিয়ে ঝুলন সাজানোর আকর্ষণ ছোটদের মধ্যেও রয়েছে। কোথাও কোথাও ঝুলন উপলক্ষে চলে নাম-সংকীর্তন। এই সময় প্রতি দিন ২৫-৩০ রকমের ফলের নৈবেদ্য, লুচি, সুজি নিবেদন করা হয়। বহু বাড়িতে ঝুলন পূর্ণিমার পবিত্র দিনে সত্যনারায়ণ পুজোও অনুষ্ঠিত হয়।

    শ্রীকৃষ্ণের দ্বাদশ যাত্রার কথা শাস্ত্রে উল্লেখ আছে, কিন্তু আমরা সবগুলো পালন করি না। কিছু কিছু বিশেষ উল্লেখযোগ্য অনুষ্ঠান নিয়মিতভাবেই অনুষ্ঠিত হতে দেখা যায়, যেমন- রথযাত্রা, রাসযাত্রা, দোলযাত্রা, স্নানযাত্রা, ঝুলনযাত্রা ইত্যাদি। শাস্ত্র বিশেষজ্ঞরা এসব যাত্রাগুলোকে বিশেষ তাৎপর্যমণ্ডিত ও তত্ত্বসমৃদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন। অনাদি কাল থেকেই শ্রীকৃষ্ণ বিগ্রহ রূপে মন্দিরে, দেবালয়ে, ভক্তের গৃহে স্থায়ীভাবে পূজিত হয়ে আসছেন।

    আরও পড়ুন: বাড়িতে তুলসী মঞ্চ সঠিক নিয়মে রেখেছেন তো? নয়তো হতে পারে অমঙ্গল!

    ২০২২ সালের ঝুলনযাত্রা কবে?

    আগামী ২১ শ্রাবণ ১৪২৯, ইংরেজি ০৭ অগাস্ট ২০২২, রবিবার সন্ধে ৭টা ৩৪ মিনিটে ঝুলনযাত্রা আরম্ভ হচ্ছে। আর ২৫ শ্রাবণ, ১১ অগাস্ট বৃহস্পতিবার সন্ধে ৬টা ১১ মিনিটে ঝুলনযাত্রার সমাপ্তি। সেই সঙ্গে শেষ হবে শ্রাবণী পূর্ণিমার উপবাস ও নিশিপালন।

     

  • Nag Panchami 2022: নাগ পঞ্চমী তিথি কবে, কখন? এই দিনের তাৎপর্য জানেন কি?

    Nag Panchami 2022: নাগ পঞ্চমী তিথি কবে, কখন? এই দিনের তাৎপর্য জানেন কি?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: হিন্দু ধর্মে শ্রাবণ মাসে পড়া উত্‍সবগুলির বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। হিন্দু পঞ্জিকা অনুসারে, শ্রাবণ মাসের শুক্ল পক্ষের পঞ্চমী তিথিতে নাগ পঞ্চমী পালিত হয়। ভগবান শঙ্করকে উত্সর্গীকৃত, শ্রাবণ মাসে এই উত্‍সবটি হিন্দু ধর্মে আড়ম্বর সহকারে পালিত হয়। এই পবিত্র দিনে আচার-অনুষ্ঠানের সাহায্যে সাপের দেবতার পুজো করা হয়। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে, সর্পদেরও দেবতা হিসাবে পুজো করা হয়। সাপও ভগবান শিবের খুব প্রিয়। এই পবিত্র দিনে সর্প দেবতার পুজো করে ভগবান শঙ্করও খুশি হন। জেনে নিন নাগ পঞ্চমীর তিথি, শুভ সময় ও পূজা পদ্ধতি—

    হিন্দু পঞ্জিকা অনুসারে, এবছর পঞ্চমী তিথি ২ অগাস্ট ভোর ৫:১৪ মিনিট থেকে শুরু হবে, যা চলবে ৩ অগাস্ট ভোর ৫:৪২ পর্যন্ত। নাগ পঞ্চমী পুজোর মুহূর্ত ০২ অগাস্ট সকাল ০৫:২৪ থেকে ০৮.২৪ পর্যন্ত হবে। মুহূর্তের সময়কাল হবে ০২ ঘন্টা ৪১ মিনিট।

    নাগ পঞ্চমীর তাৎপর্য

    এই দিনে নাগ দেবতার পুজো করলে কাল সর্পদোষ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। নাগ দেবতাকে বাড়ির রক্ষকও মনে করা হয়। এই দিনে নাগ দেবতার পুজো করলে ঘরে সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি আসে।

    আরও পড়ুন: ভরা শ্রাবণ মাস, শিবপুজোর নিয়ম জানেন তো?

    নাগ পঞ্চমী পুজো – পদ্ধতি

    সকালে ঘুম থেকে উঠে স্নান করে নিন। এর পর বাড়ির মন্দিরে প্রদীপ জ্বালান। এই পবিত্র দিনে শিবলিঙ্গে জল নিবেদন করুন। সাপের দেবতার পুজো করুন। সাপের দেবতাকে দুধ নিবেদন করুন। ভগবান শঙ্কর, মাতা পার্বতী এবং ভগবান গণেশকেও নৈবেদ্য নিবেদন করুন। সম্ভব হলে এই দিনেও উপোস রাখুন।

    নাগ পঞ্চমী পুজোর উপকরণ-

    সাপের দেবতার মূর্তি বা ছবি, দুধ, ফুল, পাঁচটি ফল, পাঁচটি বাদাম, রত্ন, সোনা, রৌপ্য, দই, খাঁটি দেশী ঘি, মধু, চাল, গঙ্গাজল, সুগন্ধি, পঞ্চ মিষ্টান্ন, রোলী, বিল্বপত্র, দাতুরা (ধুতুরা), গাঁজা, আমের মঞ্জরি, তুলসীর ডাল, কর্পূর, ধূপ, দীপ, তুলা, মলয়গিরি চন্দন এবং শিব-পার্বতীর ছবি।

    নাগ পঞ্চমীর দিনে কী করবেন

    এদিন সূর্যোদয়ের আগে উঠে স্নান করে পুজোর সংকল্প গ্রহণ করুন। পুজোর স্থানে নাগদেবতার ছবি লাগান বা মাটি নাগ দেবতা তৈরি করুন এবং চৌকির ওপর লাল কাপড় বিছিয়ে সেখানে স্থাপন করে দিন। হলুদ, রোলী, চাল, কাঁচা দুধ ও ফুল অর্পণ করে নাগ দেবতার পুজো করুন। এর পর কাঁচা দুধ, চিনি, ঘি মিশিয়ে তাঁকে অর্পণ করুন।

    নাগ পঞ্চমীর দিনে অনন্ত, বাসুকী, পদ্ম, মহাপদ্ম, কুলীর, কর্কট ও শঙ্খ নামক অষ্টনাগের ধ্যান করে পুজো করা উচিত। এবার নাগদেবতার আরতি করে সেখানে বসেই নাগ পঞ্চমীর ব্রতকথা পড়ুন। এর পর সুখ-শান্তির প্রার্থনা করুন।

    এদিন মহিলারা নাগ দেবতাকে নিজের ভাই জ্ঞানে পুজো করে পরিবারের রক্ষার প্রতিশ্রুতি প্রার্থনা করতে হয়। প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী নাগ পঞ্চমীর দিন নাগেদের দুধ অর্পণ করলে অক্ষয় পুণ্য লাভ করা যায়।

    নাগ দেবতার পুজো করলে বাড়িতে ধন আগমনের উৎস বৃদ্ধি পায়। শাস্ত্র মতে নাগ দেবতা গুপ্তধনের রক্ষা করেন। এঁদের পুজো করলে আর্থিক অনটন দূর হয় ও বংশবৃদ্ধির পথে বাধার অবসান ঘটে। তাই এ দিন ধন বৃদ্ধির জন্য নাগ দেবতার পুজোকরা উচিত। 

    গৃহ নির্মাণ, পিতৃদোষ ও বংশের উন্নতির জন্য নাগ পুজো করা উচিত।

    আরও পড়ুন: পুজোয় মঙ্গল ঘট কেন স্থাপন করা হয়, জানেন?

    এদিন কী করবেন না

    এদিন জমি খুড়তে নেই। মনে করা হয় সাপ বা নাগ জমির ভিতরে বাস করেন। ফলে জমি খুড়লে তাঁদের ক্ষতি হতে পারে।

    নাগ পঞ্চমীর দিন কৃষকদের জমিতে লাঙল চালাতে নেই।

    প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী সুচের মধ্যে সুতো পরানো, কাঁচি বা ছুরি দিয়ে সবজি কাটার কাজও করা উচিত নয়।

    নাগ ও সাপকে দুধ অর্পণ করুন, তবে পান করাবেন না। জীব হত্যা করবেন না এবং সাপের ক্ষতি করবেন না।

     

  • Kamika Ekadashi 2022: এবছর কবে কামিকা একাদশী? এদিনের মাহাত্ম্য জানেন কি?

    Kamika Ekadashi 2022: এবছর কবে কামিকা একাদশী? এদিনের মাহাত্ম্য জানেন কি?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: শ্রাবণ মাসের কৃষ্ণ একাদশী কামিকা একাদশী নামে পরিচিত। শ্রাবণ মাসের কৃষ্ণপক্ষের একাদশী তিথিতে এই একাদশী ব্রত পালিত হয়। চলতি বছর ২৪ জুলাই, বুধবার এই একাদশী ব্রত পালিত হবে। বিষ্ণুকে সমর্পিত এই একাদশী ব্রত। এদিন বিধি মেনে বিষ্ণুর পুজো করা হয়। মনে করা হয় বিষ্ণুর আশীর্বাদে ব্যক্তি সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত হয় এবং সমস্ত মনোস্কামনা পূর্ণ হয়।

    কামিকা একাদশীর শুভক্ষণ

    একাদশী তিথি শুরু- ২৩ জুলাই, শনিবার, দুপুর ১টা ৩৯ মিনিটে।

    একাদশী তিথি সমাপ্ত- ২৪ জুলাই, রবিবার, দুপুর ২টে ৫৭ মিনিটে।

    একাদশী তিথি পরনার সময়- ২৪ জুলাই সকাল ৫টা ৩৮ মিনিট থেকে সকাল ৮টা ২১ মিনিটের মধ্যে।

    আরও পড়ুন: পুজোয় মঙ্গল ঘট কেন স্থাপন করা হয়, জানেন?

    কামিকা একাদশীর মাহাত্ম্য

    হিন্দুশাস্ত্র মতে বলা হয়ে থাকে, মহাভারতে শ্রীকৃষ্ণ ধর্মরাজ যুধিষ্ঠিরকে এই কামিকা একাদশী তিথির মাহাত্ম্য ব্যাখ্যা করে শুনিয়েছিলেন। শ্রীকৃষ্ণ বলেছিলেন, এইদিনে ভক্তরা যদি শুদ্ধ মনে ভগবান বিষ্ণুর আরাধনা করেন তবে ভক্তের জীবনের সমস্ত পাপ থেকে মুক্তি পাবে এবং দুঃখভোগ থেকে ভক্তের নিস্কৃতি লাভ হবে।

    এই একাদশী করলে সমস্ত মনস্কামনা পূর্ণ হয়। ব্যক্তির পাপমুক্তি ঘটে। কৃষ্ণ ধর্মরাজ যুধিষ্ঠিরকে এই একাদশীর মাহাত্ম্য ব্যাখ্যা করেছিলেন। কামিকা একাদশীর দিনে পুজো শেষ হলে বিষ্ণুর আরতি করতে ভুলবেন না। মনে করা হয়, পুজোর পর আরতি করলে পুজোয় যে ভুল হয়ে থাকে, তার ক্ষমা লাভ করা যায় এবং পুজোর পূর্ণ ফল পাওয়া যায়।

    বিশ্বাস করা হয়, এই ব্রত পালনের মাধ্যমে ব্যক্তির সমস্ত ইচ্ছা পূরণ হয়। যারা নিজেদের পাপ সম্পর্কে ভয় পায়, তাদের অবশ্যই এই ব্রত করা উচিত। পাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য একাদশী ব্রতের চেয়ে ভাল আর কোনও দ্বিতীয় উপায় নেই। একাদশীর দিন ভগবান বিষ্ণুর পূজা করা অত্যন্ত লাভদায়ক।

    আরও পড়ুন: প্রদীপের মুখ কোনদিকে থাকা উচিত? নিয়মগুলি না জানলে হতে পারে অমঙ্গল!

    কামিকা একাদশীর তিথির পুজাবিধি

    কামিকা একাদশীর দিন যারা ব্রত করবেন, তাদের খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে স্নান করে পরিষ্কার বস্ত্র পরিধান করা উচিত। প্রথমে ব্রতের সংকল্প গ্রহণ করুন এবং চারিদিকে গঙ্গাজল ছিটিয়ে ও গঙ্গাজল দিয়ে পূজার স্থান শুদ্ধ করে নিন। এই দিনে ভগবান বিষ্ণুর পুজো করা হয়। দুধ, পঞ্চামৃত, ফল, হলুদ ফুল, তিল, ইত্যাদি শ্রীহরিকে অর্পণ করুন। এই দিন বেশির ভাগ সময় ভগবান বিষ্ণুর নাম স্মরণ করে ব্যয় করুন। এই দিনে ব্রাহ্মণ ভোজন করান এবং দক্ষিণা দিন। যদি এটি সম্ভব না হয়, তাহলে আপনার সাধ্যমতো অভাবীদের সাহায্য করুন। একাদশীর পূজায় বিষ্ণু সহস্রনাম পাঠ অবশ্যই করুন।

    এরপর ব্রতকারীরা ফলমূল, নিরামিষ ভোজন বা অরন্ধ্রনজাত খাবার খেয়ে ব্রত ভাঙ্গতে পারেন।

  • Bahuda Yatra: আজ উল্টো রথ, ৮ দিন মাসির বাড়ি কাটিয়ে ঘরে ফিরছেন জগন্নাথ

    Bahuda Yatra: আজ উল্টো রথ, ৮ দিন মাসির বাড়ি কাটিয়ে ঘরে ফিরছেন জগন্নাথ

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আষাঢ় মাসে শুক্লা দ্বিতীয়াতে হয় রথযাত্রা (Ratha Yatra 2022)। ঠিক ৯ দিনের মাথায়, অর্থাৎ শুক্লা একাদশীর দিন উল্টো রথযাত্রা হয়। কথিত, আজকের দিন মাসির বাড়িতে আটদিন কাটিয়ে নিজ গৃহ অর্থাৎ, শ্রীমন্দিরে ফিরবেন জগন্নাথ (Lord Jagannath), বলরাম ও সুভদ্রা।

    গত ১ জুলাই তিন দেবদেবী মাসির বাড়ির উদ্দেশে যাত্রা করেছিলেন। আট দিন সেখানে কাটিয়ে আজ গুণ্ডিচা থেকে জগন্নাথধামের (Jagannath Dham) পথে তিন দেবদেবী। সেদিন ছিল রথযাত্রা। আজকের গন্তব্য ঠিক উল্টো। তাই ফেরাকে বলা হয় উল্টো রথযাত্রা। এই যাত্রা বহুদা যাত্রা (Bahuda Yatra) নামেও ভক্তদের মধ্যে পরিচিত।

    আজকের এই ফিরতি যাত্রার মধ্য দিয়েই সম্পন্ন হবে বার্ষিক রথযাত্রা উৎসব। এরপর দিনই হবে ১০ জুলাই, অর্থাৎ রবিবার হবে সুনাবেশ যাত্রা। এদিন তিন দেবদেবীকে নতুন বস্ত্র পরানো হবে। ২৩ জুলাই সম্পন্ন হবে নিলাদ্রি বিজে যাত্রা।

    আরও পড়ুন: বাড়িতে সুখ-সমৃদ্ধি আনতে চান? রথযাত্রার পবিত্র দিনে করুন এই কাজগুলো

    পুরীর জগন্নাথ ধামের রথযাত্রা জগদ্বিখ্যাত। বলা বাহুল্য, রথযাত্রার মতো উল্টো রথেও সেখানে প্রচুর ভক্ত সমাগম হয়। পুরীর এই উৎসবের অনেক মাহাত্ম্যও রয়েছে। 

    সুভদ্রার (দর্পদলন) রথটি মাঝখানে, তার পরে পশ্চিমে বলভদ্রের (তালধ্বজ) রথ এবং সবশেষে পূর্বে জগন্নাথের (নন্দীঘোষ) রথ। অর্থাৎ, মাঝখানে সুভদ্রা, ডানে জগন্নাথ এবং বামদিকে বলভদ্র।

    উল্টো রথযাত্রার সময় প্রভু জগন্নাথ, বলভদ্র এবং সুভদ্রার রথগুলি মৌসিমা মন্দিরে থামে। ভগবান জগন্নাথের মাসিকে উৎসর্গ করা মৌসিমা মন্দিরে তিন দেবতাকে ‘পোদা পিঠা পরিবেশন করা হয়, যা ভাত, নারকেল, মসুর এবং গুড় সমন্বিত একটি অনন্য সুস্বাদু খাবার।

    এর পরে, জগন্নাথের রথ গজপতির প্রাসাদের সামনে লক্ষীনারায়ণ ভেতা বা লক্ষ্মীর সমাবেশের জন্য থামে। তারপর রথ টানা হয় এবং তার চূড়ান্ত গন্তব্যে পৌঁছায়। বলা বাহুল্য, রথযাত্রার মতো উল্টো রথেও সেখানে প্রচুর ভক্ত সমাগম হয়। পুরীর এই উৎসবের অনেক মাহাত্ম্যও রয়েছে। 

    আরও পড়ুন: পুরীর মন্দির ঘিরে রয়েছে এই অলৌকিক গল্পগুলি, জানতেন কি?

    সুভদ্রার (দর্পদলন) রথটি মাঝখানে, তার পরে পশ্চিমে বলভদ্রের (তালধ্বজ) রথ এবং সবশেষে পূর্বে জগন্নাথের (নন্দীঘোষ) রথ। অর্থাৎ, মাঝখানে সুভদ্রা, ডানে জগন্নাথ এবং বামদিকে বলভদ্র।

    উল্টো রথযাত্রার সময় প্রভু জগন্নাথ, বলভদ্র এবং সুভদ্রার রথগুলি মৌসিমা মন্দিরে থামে। ভগবান জগন্নাথের মাসিকে উৎসর্গ করা মৌসিমা মন্দিরে তিন দেবতাকে ‘পোদা পিঠা পরিবেশন করা হয়, যা ভাত, নারকেল, মসুর এবং গুড় সমন্বিত একটি অনন্য সুস্বাদু খাবার।

    এর পরে, জগন্নাথের রথ গজপতির প্রাসাদের সামনে লক্ষীনারায়ণ ভেতা বা লক্ষ্মীর সমাবেশের জন্য থামে। তারপর রথ টানা হয় এবং তার চূড়ান্ত গন্তব্যে পৌঁছায়।

  • Guru Purnima 2022: আজ গুরু পূর্ণিমা, কখন শুরু তিথি? কী এর মাহাত্ম্য?

    Guru Purnima 2022: আজ গুরু পূর্ণিমা, কখন শুরু তিথি? কী এর মাহাত্ম্য?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: গুরুকে শ্রদ্ধা, ভক্তি ও সম্মান জানানোর বিশেষ দিনই হল গুরু পূর্ণিমা (Guru Purnima)। আষাঢ় মাসের পূর্ণিমা তিথিতেই প্রতি বছর গুরু পূর্ণিমা পালন করা হয়। এ দিন গুরুর পুজো করার প্রথা রয়েছে। 

    হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মে এই দিনটির গুরুত্ব অসীম। গুরু আমাদের মনের সব সংশয়, সন্দেহ, অন্ধকার দূর করেন এবং নতুন পথের দিশা দেখান। গুরুর দেখানো পথে চললে জীবনে সুখ, শান্তি, আনন্দ ও মোক্ষ প্রাপ্তি হয়। অর্থাৎ যিনি অন্ধকার থেকে আলোয় নিয়ে যান তিনিই গুরু। গুরুকে শ্রদ্ধা জানাতে বৈদিক যুগ থেকেই গুরু পূর্ণিমা পালিত হয়ে আসছে।

    গুরু পূর্ণিমার তাৎপর্য ও গুরুত্ব


    গুরু পূর্ণিমায় গুরু পুজোর প্রথা বহু শতাব্দী প্রাচীন। এই দিনে, যাকে আপনি আপনার গুরু বলে মনে করেন, তাঁর পুজো করা হয়। প্রাচীনকাল থেকেই এই দেশে গুরুদের সম্মানজনক স্থান দেওয়া হয়েছে। গুরুর স্থান সবার উপরে। গুরুই আমাদের পরম জ্ঞান দান করেন। তাই, তাঁদের ঈশ্বরতুল্য বলে মনে করা হয়। গুরু পূর্ণিমা হল একটি বৈদিক প্রথা, যার মধ্য দিয়ে শিষ্য তার গুরুকে শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেন। 

    আরও পড়ুন: পুজোয় মঙ্গল ঘট কেন স্থাপন করা হয়, জানেন?

    গুরু পূর্ণিমার মাহাত্ম্য

    পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, গুরু পূর্ণিমার পূণ্য তিথিতেই মুনি পরাশর এবং মাতা সত্যবতীর গৃহে জন্মগ্রহণ করেন মহাভারত রচয়িতা মহর্ষি বেদব্যাস। তাই এই দিনে মহর্ষি বেদব্যাসের জন্মজয়ন্তীও পালন করা হয়। মনে করা হয়, তিনিই চারটি বেদের ব্যাখ্যা করেছেন। বেদ বিভাজনের শ্রেয় তাঁকেই দেওয়া হয়েছে। তাই তাঁর নাম বেদব্যাস। ১৮টি পুরাণ ছাড়াও তিনি রচনা করেন মহাভারত ও শ্রীমদ্ভগবত। এই কারণে গুরু পূর্ণিমাকে ব্যাস পূর্ণিমাও বলা হয়। হিন্দু ধর্মে, মহর্ষি বেদব্যাসকে সর্বশ্রেষ্ঠ গুরু মানা হয়। 

    আবার হিন্দু পুরাণ অনুযায়ী, মহাদেব হলেন আদি গুরু। দেবাদিদেব মহাদেব এই তিথিতে সপ্তর্ষির সাত ঋষিকে মহাজ্ঞান প্রদান করেন। আদিযোগী শিব এই তিথিতে আদিগুরুতে রূপান্তরিত হন। এছাড়া, বৌদ্ধ ধর্মেও গুরু পূর্ণিমার গুরুত্ব অসীম। বলা হয়, ভগবান বুদ্ধ বোধিজ্ঞান লাভের পর গুরু পূর্ণিমাতেই প্রথম মহা উপদেশ দান করেছিলেন। মহাবীরও এই পূণ্য তিথিতে তাঁর প্রধান শিষ্যকে দীক্ষা দেন।

    আরও পড়ুন: বাড়িতে শঙ্খ আছে! সঠিক ব্যবহারের নিয়ম জানেন তো?

    গুরু পূর্ণিমা তিথি ও সময় 

    ইংরাজি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, এবছর গুরু পূর্ণিমা (Guru Purnima 2022) পড়েছে ১৩ জুলাই, বুধবার। পূর্ণিমা তিথি শুরু – ১৩ জুলাই, ভোর ৪টে পূর্ণিমার তিথি শেষ – ১৪ জুলাই, মধ্যরাত ১২টা ০৬ মিনিটে।

  • Bipodtarini Puja: আজ বিপত্তারিণী ব্রতপালন, এই পুজোয় তেরো সংখ্যার মাহাত্ম্য জানেন কি?

    Bipodtarini Puja: আজ বিপত্তারিণী ব্রতপালন, এই পুজোয় তেরো সংখ্যার মাহাত্ম্য জানেন কি?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: হিন্দু শাস্ত্র মতে, দেবী দুর্গার ১০৮ রূপের মধ্যে অন্যতম দেবী সঙ্কটনাশিনীর এক রূপ, দেবী বিপত্তারিণী। যে কোনও মাতৃ-মন্দিরে দেবীর আরাধনা হয়। বাঙালি গৃহস্থ বাড়ির সধবা মহিলারা এই ব্রত করেন। 

    হিন্দুরা মূলত বিপদ থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্য এই দেবীর পুজো করেন। আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া থেকে দশমী পর্যন্ত এই দেবীর পুজো করা হয়ে থাকে। এর মধ্যে যে কোনও শনি বা মঙ্গলবারে এই ব্রত পালন করা হয়।

    গ্রামাঞ্চলে বিপত্তারিণী পুজো চারদিন ধরে চলে। প্রথম দিনে দেবীর আরাধনা করা হয়। মহিলারা গঙ্গা বা কোনও নদীতে স্নান করে দণ্ডী কাটেন। তারপর দুই রাত্রি ধরে রাতে বাংলা লোকগান, ভজন ও কীর্তন চলে। চতুর্থ দিনে বিসর্জন হয়। বিপত্তারিণী পুজো উপলক্ষে মেয়েরা উপবাস করেন।

    আরও পড়ুন: বিপদ এড়াতে বিপত্তারিণী পুজোয় ভুলেও করবেন না এই কাজগুলি

    মার্কণ্ডেয় পুরাণ অনুসারে, এই পুজোর একটা বিশেষ নিয়ম হল সবকিছু ১৩টা করে উৎসর্গ করতে হয় দেবীকে। ব্রতর আচার হিসেবে সব কিছু দিতে হয় তেরোটি করে। যেমন— তেরোটি নৈবেদ্য সাজাতে হয়। ব্রত পালনে লাগে তেরো রকম ফুল, তেরো রকম ফল, তেরোটি পান, তেরোটি সুপুরি, তেরোটি এলাচ।

    এছাড়া, বিপত্তারিণী ব্রতপালনের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হিসেবে হাতে বাঁধতে হয় লাল ডুরি বা ডোর বা তাগা। এই ডোর তৈরির ক্ষেত্রেও তেরো সংখ্যা গুরুত্বপূর্ণ।

    তেরো গাছা লাল সুতোর সঙ্গে তেরোটি দূর্বা রেখে তেরোটি গিঁট বেঁধে তৈরি হয় এই পবিত্র তাগা বা ডোর। বিশ্বাস করা হয় যে, এই তাগা হাতে পরলে তাঁকে কোনও বিপদ স্পর্শ করতে পরে না৷ 

    বিপত্তারিণী পুজোর শেষে সকলেই হাতে ওই তাগা বেঁধে দেওয়া হয়৷ মেয়েরা বাম হাতে ও ছেলেরা ডান হাতে এটি পরেন৷ এটি শুধু ব্রত পালন যিনি করছেন তিনিই যে বাঁধেন তা নয়, পরিবারের অন্য সদস্যরাও বাঁধেন বিপন্মুক্তির জন্য৷

    আরও পড়ুন: বিপদ এড়াতে বিপত্তারিণী পুজো! জানুন এই ব্রতর মাহাত্ম্য

    ব্রতপালনের পর খাবার যা খেতে হয়, সেখানেও ১৩ সংখ্যা রাখা আবশ্যক৷ মায়েরা প্রসাদ হিসেবে খান, তেরোটি লুচি বা পরটা সঙ্গে তেরো রকমের ফল। চাল-চিঁড়ে-মুড়ি এসব খাওয়া যায় না৷

    ফল বা ময়দার রান্না যাই খাওয়া হোক না কেন সেটা ১৩ সংখ্যায় গ্রহণ করার কথাই ব্রতে বলা হয়৷ তবে যদি সেটা না হয় তাহলে পুজো মিটে যাওয়ার পর বিজোড় সংখ্যাতেও খাদ্যগ্রহণ করা যায়৷

  • Rath Yatra 2022: পুরীর রথযাত্রার তিন রথের আলাদা মাহাত্ম্য আছে, জানেন কি?

    Rath Yatra 2022: পুরীর রথযাত্রার তিন রথের আলাদা মাহাত্ম্য আছে, জানেন কি?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সংস্কৃত ভাষায় রথ মানে গাড়ি এবং যাত্রা মানে মিছিল। ক্ষণিকের জন্য জগন্নাথদেবকে রথের উপর দর্শন করাকে বহু পুণ্য কর্মের ফল হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই অনুষ্ঠানটি এতই পবিত্র যে, কেউ যদি এই দিনে রথ স্পর্শ করে অথবা এমনকি রথের দড়ি স্পর্শ করে, তাহলে বহু পুণ্য কর্মের ফল লাভ করতে পারেন।

    জগন্নাথদেবের রথযাত্রায় আজও আমরা দেখে থাকি, প্রতিবছর রথযাত্রার উদ্বোধন করেন সেখানকার রাজা। রাজত্ব না থাকলেও বংশ পরম্পরাক্রমে পুরীর রাজপরিবারের নিয়মানুযায়ী যিনি রাজা উপাধিপ্রাপ্ত হন, তিনি জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রাদেবীর পরপর তিনটি রথের সামনে এসে পুষ্পাঞ্জলি প্রদান ও সোনার ঝাড়ু দিয়ে রথের সম্মুখভাগ ঝাঁট দেওয়ার পরই পুরীর রথের রশিতে টান পড়ে। শুরু হয় জগন্নাথদেবের রথযাত্রা।

    আরও পড়ুন: বিপদ এড়াতে বিপত্তারিণী পুজো! জানুন এই ব্রতর মাহাত্ম্য

    পুরীর রথযাত্রা উৎসব হচ্ছে, বড় ভাই বলরাম বা বলভদ্র ও বোন সুভদ্রাকে সঙ্গে নিয়ে শ্রীকৃষ্ণের বৃন্দাবন যাত্রার স্মারক। তিন জনের জন্য আলাদা আলাদা তিনটি রথ। রথযাত্রা উৎসবের মূল দর্শনীয় জিনিস হল এই রথ তিনটি। প্রথমে যাত্রা শুরু করে বড় ভাই বলভদ্রের রথ। তারপর সুভদ্রা এবং শেষে জগন্নাথ।

    পুরীর এই রথ তিনটির আলাদা আলাদা নাম। জগন্নাথ দেবের রথ — নন্দী ঘোষ, বলরামের রথ — তালধ্বজ ও সুভদ্রার রথ — দর্পদলন নামে পরিচিত। প্রতি বছর উল্টোরথের পর রথ তিনটি ভেঙে ফেললেও রথের পার্শ্বদেবদেবীর মূর্তি, সারথি ও ঘোড়াগুলিকে সযত্নে তুলে রাখা হয়। 

    এবারে রথ তিনটির একটু পরিচয় দেওয়া যাক :

    আরও পড়ুন: যোগিনী একাদশী কবে জেনে নিন, ব্রত পালনের নিয়মবিধি জানেন তো?

    নন্দীঘোষ (জগন্নাথ): কথিত আছে, এই রথটি দেবরাজ ইন্দ্র শ্রীজগন্নাথদেবকে প্রদান করেছিলেন। এই রথ নির্মাণে ছোট বড় ৮৩২টি কাঠের টুকরো লাগে। উচ্চতা ৪৪’২” বা ১৩.৫ মিটার ও দৈর্ঘ্য প্রস্থ ৩৪’৬” x ৩৪’৬”। আগে ১৮টি চাকা থাকলেও, বর্তমানে ১৬টি থাকে। রথের ধ্বজার নাম ত্রৈলোক্যমোহিনী ও রশির নাম শঙ্খচূড় নাগিনী। দ্বারপাল ব্রহ্মা ও ইন্দ্র। রথে উপস্থিত নয় জন পার্শ্ব দেবগণ হলেন — বরাহ, গোবর্ধন, কৃষ্ণ/গোপীকৃষ্ণ, নৃসিংহ, রাম, নারায়ণ, ত্রিবিক্রম, হনুমান ও রুদ্র। এঁদের সঙ্গে রয়েছেন ধ্যানমগ্ন ঋষিরা — নারদ, দেবল, ব্যাসদেব, শুক, পরাশর, বশিষ্ঠ, বিশ্বামিত্র ও মরীচি। লাল ও হলুদ কাপড়ে মোড়া এই রথে কালো রঙের চারটি ঘোড়া হল— শঙ্খ, বলাহক, শ্বেত ও হরিদাক্ষ। রথের সারথি দ্বারুজ ও রক্ষক গরুড়। রথের কলসের নাম হিরন্ময়। রথের দ্বারপাল জয়, বিজয়। রথের রজ্জুর নাম শঙ্খচূড়। রথের নেত্রের নাম তৈলক্ষ মোহিনী। রথের অধীশ্বর প্রভু জগন্নাথ।

    তালধ্বজ (বলভদ্র/বলরাম): ৭৬৩টি ছোট বড় কাঠের টুকরো দিয়ে নির্মিত এই রথ। এই রথের উচ্চতা ১৩.২ মিটার। দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ৩৩’ x ৩৩’। আগে ১৬টি থাকলেও এখন চাকার সংখ্যা ১৪টি। ধ্বজার নাম উন্মনী এবং রশির নাম বাসুকী নাগ। ন’জন পার্শ্বদেবতা হলেন — গণেশ, কার্তিক, সর্বমঙ্গলা, প্রলম্ব, হলায়ুধ, মৃত্যুঞ্জয়, নাটেশ্বর, মহেশ্বর ও শেষদেব। দ্বারপাল রুদ্র ও সাত্যকি। সারথি মাতলি এবং রক্ষক বাসুদেব। রথের শ্বেতবর্ণের চারটি ঘোড়ার নাম তীব্র, ঘোর, শ্রম (স্বর্ণনাভ) ও দীর্ঘ (দীর্ঘশর্মা)। সুদর্শন চক্রের পাশে দুটি পাখির (কাকাতুয়া) নাম স্বধা ও বিশ্বাস। রথটি সবুজ ও লাল কাপড়ে মোড়া। রথের ধ্বজার/পতাকার নাম উন্মনী। 

    দর্পদলন (সুভদ্রা): ৫৯৩টি টুকরো কাঠ দিয়ে তৈরি এই রথের উচ্চতা ৪২’৩” বা ১২.৯ মিটার এবং দৈর্ঘ্য – প্রস্থ ৩১’৬” x ৩১’৬”। চাকার সংখ্যা ১২। ধ্বজার নাম নাদম্বিক এবং রশির নাম স্বর্ণচূড় নাগ। ধ্বজার পাশের পাখি দুটির নাম শ্রুতি ও স্মৃতি। রথটি লাল ও কালো কাপড়ে ঢাকা। ন’জন পার্শ্বদেবী হলেন — চণ্ডী, চামুণ্ডা, মঙ্গলা, উগ্রতারা, বনদুর্গা, শুলিদুর্গা, শ্যামাকালী, বিমলা ও বরাহি। দ্বারপালিকা — ভূদেবী ও শ্রীদেবী। সারথি অর্জুন আর রক্ষক জয়দুর্গা। লাল রঙের ঘোড়া চারটির নাম রচিকা, মোচিকা‚ জিতা ও অপরাজিতা। 

     

  • Hindu Rituals: পুজোয় মঙ্গল ঘট কেন স্থাপন করা হয়, জানেন?

    Hindu Rituals: পুজোয় মঙ্গল ঘট কেন স্থাপন করা হয়, জানেন?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: হিন্দুশাস্ত্রে পুজোয় মঙ্গল ঘট স্থাপন করা অপরিহার্য। যে কোনও পুজোতেই প্রথমে ঘট স্থাপন করা হয়। বলতে গেলে ঘট স্থাপনের মাধ্যমেই ওই পুজোর আনুষ্ঠানিকতার শুরু হয়। যে পুজোর জন্য ঘট স্থাপন করা হয়, মূলত ঘট স্থাপনের মাধ্যমে ওই দেব বা দেবীকে আহ্বান জানানো হয় পুজো গ্রহণের জন্য।

    কোনও কোনও ক্ষেত্রে দেব এবং দেবীর জন্য দেখা যায় আলাদা আলাদা ঘট। বিশ্বাস, ঘট কোনও দেবী বা দেবতার মূর্তি বা প্রতিমা নয়। ঘট ভগবানের নিরাকার অবস্থার প্রতীক। সনাতন ধর্মের প্রত্যেক দেবদেবী এক, অভিন্ন ও নিরাকার পরম ব্রহ্মেরই এক একটি সাকার রুপের প্রকাশ।

    আরও পড়ুন: প্রদীপের মুখ কোনদিকে থাকা উচিত? নিয়মগুলি না জানলে হতে পারে অমঙ্গল!

    শাস্ত্রমতে, ঘট হল মঙ্গলের চিহ্ন। যে কোনও পুজো, মাঙ্গলিক অনুষ্ঠান, গৃহপ্রবেশ ইত্যাদি অনুষ্ঠানে ঘট স্থাপন করা হয়। ঘটের মধ্যে আম্রপল্লব, বেলপাতা, ফুল ইত্যাদি দিয়ে ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বরের পুজো হয়। বেলপাতা হল ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বরের প্রতীক। মানবজীবনকে ঘটের সঙ্গে তুলনা করা হয়। তাতে থাকে জল। জল হল জীবনের প্রতীক। প্রাণহীন শরীর যেমন মূল্যহীন, তেমনই জলবিহীন ঘটও মূল্যহীন।

    এই ঘট স্থাপন এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে, দেব-দেবীর কোনও মূর্তি ছাড়া শুধু ওই ঘটেই পুজো সম্পন্ন করা যায়, যার নাম হলো ঘট পুজো। ঘট স্থাপন করে যে দেব-দেবীকে আহ্বান জানানো হয়, সেই দেবদেবী ওই ঘটে অবস্থান নেন এবং ওই ঘটে থেকেই পুজো গ্রহণ করেন। 

    ঘটের পেছনে যে আমরা নানা ভঙ্গিমার মূর্তি স্থাপন করি, সেটা মূলত পূজাকে একটি বড় অনুষ্ঠানে রূপ দেবার জন্য, যাতে ভক্তরা ওই মূর্তি দর্শনের জন্য পূজাস্থানে আসে এবং নিজের কল্যাণ লাভ করে। ঘটেই যে কোনও দেব-দেবী অবস্থান করেন। তার বড় প্রমাণ হল- পূজা শেষে পুরোহিত যখন বিসর্জন দেন, তখন তিনি মন্ত্র উচ্চারণ শেষে ঘট নারিয়ে তা সম্পন্ন করেন। বিসর্জন প্রকৃতপক্ষে এটাই। 

    আরও পড়ুন: শঙ্খ তিনবার বাজানো হয়, কেন জানেন? কী বলা হয়েছে শাস্ত্রে?

    জলে মূর্তি ডুবিয়ে দেওয়া বিসর্জন নয়, ওটা হল পুরনোকে ত্যাগ করা। পরের বছরে নতুন কিছু সৃষ্টির জন্য। জলে মূর্তি ডুবিয়ে দেওয়া যে প্রকৃত বিসর্জন নয়, তার আরেকটি প্রমাণ হল যে সব মন্দিরে-পাথর, পিতল বা সোনা রূপার স্থায়ী মূর্তি আছে, সেগুলোর জলে বিসর্জন না দেওয়া।

LinkedIn
Share