Category: পরম্পরা

Get updated History and Heritage and Culture and Religion related news from the Madhyom news portal madhyom.com, West Bengal leading news portal Madhyom.com

  • Ramakrishna 249: “হে ঈশ্বর! আমি তোমায় চাই, দেখো যেন তোমার ভুবনমোহিনী মায়ার ঐশ্বর্যে মুগ্ধ করো না”

    Ramakrishna 249: “হে ঈশ্বর! আমি তোমায় চাই, দেখো যেন তোমার ভুবনমোহিনী মায়ার ঐশ্বর্যে মুগ্ধ করো না”

    শ্রীরামকৃষ্ণ দক্ষিণেশ্বরে ও ভক্তগৃহে

    তৃতীয় পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ২১শে জুলাই

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ কলিকাতা রাজপথে ভক্তসঙ্গে

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—মাইরি বলছি, আমার যদি একটুও অভিমান হয়।

    মণি—গ্রীস দেশে একটি লোক ছিলেন, তাঁহার নাম সক্রেটিস। দৈববাণী হয়েছিল যে, সকল লোকের মধ্যে তিনি জ্ঞানী। সে ব্যক্তি অবাক্‌ হয়ে গেল। তখন নির্জনে অনেকক্ষণ চিন্তা করে বুঝতে পারলে। তখন সে বন্ধুদের বললে, আমিই কেবল বুঝেছি যে, আমি কিছুই জানি না। কিন্তু অন্যান্য সকল লোকে বলছে, “আমাদের বেশ জ্ঞান হয়েছে।” কিন্তু বস্তুতঃ সকলেই অজ্ঞান।

    শ্রীরামকৃষ্ণ—আমি এক-একবার ভাবি যে, আমি কি জানি যে এত লোকে আসে! বৈষ্ণবচরণ খুব পণ্ডিত ছিল। সে বলত, তুমি যে-সব কথা বল সব শাস্ত্রে পাওয়া যায়, তবে তোমার কাছে কেন আসি জানো? তোমার মুখে সেইগুলি শুনতে আসি।

    মণি—সব কথা শাস্ত্রের সঙ্গে মেলে। নবদ্বীপ গোস্বামীও সেদিন পেনেটীতে সেই কথা বলছিলেন। আপনি বললেন যে, “গীতা গীতা” বলতে বলতে “ত্যাগী ত্যাগী” হয়ে যায়। বস্তুতঃ তাগী হয়, কিন্তু নবদ্বীপ গোস্বামী বললেন, ‘তাগী’ মানেও যা ‘ত্যাগী’ মানেও তা, তগ্‌ ধাতু একটা আছে তাই থেকে ‘তাগী’ হয়।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—আমার সঙ্গে কি আর কারু মেলে? কোন পণ্ডিত, কি সাধুর সঙ্গে?

    মণি—আপনাকে ঈশ্বর স্বয়ং হাতে গড়েছেন। অন্য লোকদের কলে ফেলে তয়ের করেছেন — যেমন আইন অনুসারে সব সৃষ্টি হচ্ছে।

    শ্রীরামকৃষ্ণ—(সহাস্যে রামলালাদিকে)—ওরে, বলে কিরে!

    ঠাকুরের হাস্য আর থামে না। অবশেষে বলিতেছেন, মাইরি বলছি, আমার যদি একটুও অভিমান হয়।

    মণি—বিদ্যাতে একটা উপকার হয়, এইটি বোধ হয় যে, আমি কিছু জানি না, আর আমি কিছুই নই।

    শ্রীরামকৃষ্ণ—ঠিক ঠিক। আমি কিছুই নই!—আমি কিছুই নই!—আচ্ছা, তোমার ইংরেজী জ্যোতিষে বিশ্বাস আছে (Kathamrita)?

    মণি—ওদের নিয়ম অনুসারে নূতন আবিষ্ক্রিয়া (Discovery) হতে পারে, ইউরেনাস (Uranus) গ্রহের এলোমেলো চলন দেখে দূরবীন দিয়ে সন্ধান করে দেখলে যে, নূতন একটি গ্রহ (Neptune) জ্বলজ্বল করছে। আবার গ্রহণ গণনা হতে পারে।

    শ্রীরামকৃষ্ণ—তা হয়ে বটে।

    গাড়ি চলিতেছে,—প্রায় অধরের বাড়ির নিকট আসিল। ঠাকুর মণিকে বলিতেছেন:

    “সত্যেতে থাকবে, তাহলেই ইশ্বরলাভ হবে।”

    মণি—আর-একটি কথা আপনি নবদ্বীপ গোস্বামীকে বলেছিলেন (Kathamrita), “হে ঈশ্বর! আমি তোমায় চাই। দেখো, যেন তোমার ভুবনমোহিনী মায়ার ঐশ্বর্যে মুগ্ধ করো না!—আমি তোমায় চাই।”

    শ্রীরামকৃষ্ণ(Ramakrishna)—হাঁ, ওইটি আন্তরিক বলতে হবে।

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 248: “তাঁর চৈতন্যে জগতের চৈতন্য। এক-একবার দেখি, ছোট ছোট মাছের ভিতর সেই চৈতন্য কিলবিল করছে!”

    Ramakrishna 248: “তাঁর চৈতন্যে জগতের চৈতন্য। এক-একবার দেখি, ছোট ছোট মাছের ভিতর সেই চৈতন্য কিলবিল করছে!”

    শ্রীরামকৃষ্ণ দক্ষিণেশ্বরে ও ভক্তগৃহে

    তৃতীয় পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ২১শে জুলাই

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ কলিকাতা রাজপথে ভক্তসঙ্গে

    “তাঁর কাণ্ড কি কিছু বুঝা যায় গা! কাছে তিনি — অথচ বোঝবার জো নাই, বলরাম কৃষ্ণকে ভগবান বলে জানতেন না।”

    মণি—আজ্ঞা হাঁ! আপনি ভীষ্মদেবের কথা যেমন বলেছিলেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—হাঁ, হাঁ, কি বলেছিলাম বল দেখি।

    মণি—ভীষ্মদেব শরশয্যায় কাঁদছিলেন, পাণ্ডবেরা শ্রীকৃষ্ণকে বললেন, ভাই, একি আশ্চর্য! পিতামহ এত জ্ঞানী, অথচ মৃত্যু ভেবে কাঁদছেন! শ্রীকৃষ্ণ বললেন, ওঁকে জিজ্ঞাসা কর না, কেন কাঁদছেন! ভীষ্মদেব বললেন, এই ভেবে কাঁদছি যে, ভগবানের কার্য কিছুই বুঝতে পারলাম না! হে কৃষ্ণ, তুমি এই পাণ্ডবদের সঙ্গে সঙ্গে ফিরছ, পদে পদে রক্ষা করছ, তবু এদের বিপদের শেষ নাই।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—তাঁর মায়াতে সব ঢেকে রেখেছেন — কিছু জানতে দেন না। কামিনী-কাঞ্চন মায়া। এই মায়াকে সরিয়ে যে তাঁকে দর্শন করে সেই তাঁকে দেখতে পায়। একজনকে বোঝাতে বোঝাতে (ঈশ্বর একটি আশ্চর্য ব্যাপার) দেখালেন, হঠাৎ সামনে দেখলাম, দেশের (কামারপুকুরের) একটি পুকুর, আর-একজন লোক পানা সরিয়ে যেন জলপান করলে। জলটি স্ফটিকের মতো। দেখালে যে, সেই সচ্চিদানন্দ মায়ারূপ পানাতে ঢাকা,—যে সরিয়ে জল খায় সেই পায়।

    “শুন, তোমায় অতি গুহ্য কথা বলছি! ঝাউতলার দিকে বাহ্যে করতে করতে দেখলাম—চোর কুঠরির দরজার মতো একটা সামনে, কুঠরির ভিতর কি আছে দেখতে পাচ্ছি না। আমি নরুন দিয়ে ছেঁদা করতে লাগলাম, কিন্তু পারলুম না। ছেঁদা করি কিন্তু আবার পুরে আসে! তারপর একবার এতখানি ছেঁদা হল!”

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) এই কথা বলিয়া মৌনাবলম্বন করিলেন। এইবার আবার কথা কহিতেছেন, “এ-সব বড় উঁচু কথা—ওই দেখ আমার মুখ কে যেন চেপে চেপে ধরছে!

    “যোনিতে বাস স্বচক্ষে দেখলাম (Kathamrita)!—কুকুর-কুক্কুরীর মৈথুন সময়ে দেখেছিলাম।

    “তাঁর চৈতন্যে জগতের চৈতন্য। এক-একবার দেখি, ছোট ছোট মাছের ভিতর সেই চৈতন্য কিলবিল করছে!”

    গাড়ি শোভাববাজারের চৌমাথায় দরমাহাটার নিকট উপস্থিত হইল। ঠাকুর আবার বলিতেছেন:

    “এক-একবার দেখি বরষায় যেরূপ পৃথিবী জরে থাকে,—সেইরূপ এই চৈতন্যতে (Kathamrita) জগৎ জরে রয়েছে।

    “কিন্তু এত তো দেখা হচ্ছে, আমার কিন্তু অভিমান হয় না।”

    মণি (সহাস্যে)—আপনার আবার অভিমান!

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Masterda Surya Sen: আজ ‘মাস্টারদা’র আত্মবলিদান দিবস, ১২ জানুয়ারি ফাঁসি হয় বিপ্লবী সূর্য সেনের

    Masterda Surya Sen: আজ ‘মাস্টারদা’র আত্মবলিদান দিবস, ১২ জানুয়ারি ফাঁসি হয় বিপ্লবী সূর্য সেনের

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আজ মাস্টারদা (Masterda Surya Sen) সূর্য সেনের আত্মবলিদান দিবস।  ১৯৩৪ সালের ১২ জানুয়ারি তাঁর ‘ফাঁসি’ হয়। ফাঁসির আগে মাস্টারদার ওপর নৃশংস অত্যাচার চালায় ব্রিটিশ পুলিশ। পিটিয়ে হাতুড়ি দিয়ে সূর্য সেনের দাঁত ও নখ ভাঙা হয়। গোটা শরীরের হাড়পাঁজরা টুকরো টুকরো করা হয়। সেই অবস্থাতেই তাঁকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল বলে জানা যায়। মৃত্যু ঘোষণার পরে সূর্য সেনের পরিবারের হাতে দেহ তুলে দিয়ে সৎকারের ব্যবস্থাও করা হয়নি।

    জন্ম ১৮৯৪ সালের ২২ মার্চ (Masterda Surya Sen) 

    জানা যায়, বিপ্লবী সূর্য সেনের (Masterda Surya Sen) আসল নাম সূর্যকুমার সেন। ডাকনাম ছিল কালু। ১৮৯৪ সালের ২২ মার্চ চট্টগ্রামের রাউজান থানার নোয়াপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন তিনি। তাঁর মায়ের নাম ছিল শশীবালা সেন এবং পিতার নাম রাজমণি সেন। জানা যায়, পিতা-মাতার অকালপ্রয়াণের পর কাকা গৌরমণি সেনের কাছে বড় হন মাস্টার দা সূর্য সেন। দয়াময়ী উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয়, নোয়াপাড়া উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয়, নন্দনকাননের ন্যাশনাল হাইস্কুল, চট্টগ্রাম কলেজ ও পরে বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজে তিনি পড়তে আসেন বলে জানা যায়। বহরমপুর থেকে থেকে বিএ পাশ করে চট্টগ্রামে (Chittagong) ফিরে ন্যাশনাল হাইস্কুলে শিক্ষকতা শুরু করেন তিনি।

    মাথার দাম ঘোষণা করা হয় ১০ হাজার

    পরে দেওয়ানবাজারে উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয়ে গণিত শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন তিনি। এ সময় থেকেই বিপ্লবীদলের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ বাড়তে থাকে। তখনই তিনি হয়ে ওঠেন ‘মাস্টারদা’ (Masterda Surya Sen)। ইংরেজ শাসকের কাছে ত্রাস হয়ে ওঠেন তিনি। ইতিহাসের পাতায় আজও যা লিপিবদ্ধ হয়ে আছে। ব্রিটিশদের ত্রাস মাস্টারদার (Masterda Surya Sen) মাথার দাম প্রথমে ৫০০০ টাকা এবং পরবর্তীতে ১০,০০০ টাকা ঘোষণা করা হয়। জানা যায়, গৈরলা গ্রামে ক্ষীরোদপ্রভা বিশ্বাসের বাড়িতে আত্মগোপন করে থাকাকালীন তাঁকে ধরে ব্রিটিশ পুলিশ।

      

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 247: “বাটীতে ফিরিয়া গিয়া ভাবিয়া দেখিলেন যে, সংস্কার সম্বন্ধে এখনও তাঁহার পূর্ণ বিশ্বাস হয় নাই”

    Ramakrishna 247: “বাটীতে ফিরিয়া গিয়া ভাবিয়া দেখিলেন যে, সংস্কার সম্বন্ধে এখনও তাঁহার পূর্ণ বিশ্বাস হয় নাই”

    শ্রীরামকৃষ্ণ দক্ষিণেশ্বরে ও ভক্তগৃহে

    তৃতীয় পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ২১শে জুলাই

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ কলিকাতা রাজপথে ভক্তসঙ্গে

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) গাড়ি করিয়া দক্ষিণেশ্বর-কালীবাড়ি হইতে বাহির হইয়া কলিকাতা অভিমুখে আসিতেছেন। সঙ্গে রামলাল ও দু-একটি ভক্ত। ফটক হইতে বহির্গত হইয়া দেখিলেন চারিটি ফজলি আম হাতে করিয়া মণি পদব্রজে আসিতেছেন। মণিকে দেখিয়া গাড়ি থামাইতে বলিলেন। মণি গাড়ির উপর মাথা রাখিয়া প্রণাম করিলেন।

    শনিবার, ২১শে জুলাই, ১৮৮৩ খ্রীষ্টাব্দ, (৬ই শ্রাবণ), আষাঢ় কৃষ্ণা প্রতিপদ, বেলা চারিটা। ঠাকুর অধরের বাড়ি যাইবেন, তৎপরে শ্রীযুক্ত যদু মল্লিকের বাটী, সর্বশেষে ৺খেলাৎ ঘোষের বাটী যাইবেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (মণির প্রতি, সহাস্যে)—তুমিও এস না—আমরা অধরের বাড়ি যাচ্ছি।

    মণি যে আজ্ঞা বলিয়া গাড়িতে উঠিলেন।

    মণি ইংরেজী পড়িয়াছেন, তাই সংস্কার মানিতেন না, কিন্তু কয়েকদিন হইল ঠাকুরের নিকটে স্বীকার করিয়া গিয়াছিলেন যে, অধরের সংস্কার ছিল তাই তিনি অত তাঁহাকে ভক্তি করেন। বাটীতে ফিরিয়া গিয়া ভাবিয়া দেখিলেন যে, সংস্কার সম্বন্ধে এখনও তাঁহার পূর্ণ বিশ্বাস হয় নাই। তাই ওই কথা বলিবার জন্যই আজ ঠাকুরকে দর্শন করিতে আসিয়াছেন। ঠাকুর কথা কহিতেছেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—আচ্ছা, অধরকে তোমার কিরূপ মনে হয়?

    মণি—আজ্ঞে, তাঁর খুব অনুরাগ।

    শ্রীরামকৃষ্ণ—অধরও তোমার খুব সুখ্যাতি করে।

    মণি কিয়ৎক্ষণ চুপ (Kathamrita) করিয়া আছেন; এইবার পূর্বজন্মের কথা উত্থাপন করিতেছেন।

    কিছু বুঝা যায় না—অতি গুহ্যকথা 

    মণি—আমার ‘পূর্বজন্ম’ ও ‘সংস্কার’ এ-সব তাতে তেমন বিশ্বাস নাই; এতে কি আমার ভক্তির কিছু হানি হবে?

    শ্রীরামকৃষ্ণ—তাঁর সৃষ্টিতে সবই হতে পারে এই বিশ্বাস থাকলেই হল; আমি যা ভাবছি — তাই সত্য; আর সকলের মত মিথ্যা; এরূপ ভাব আসতে দিও না। তারপর তিনিই বুঝিয়ে দিবেন।

    “তাঁর কাণ্ড মানুষে কি বুঝবে? অনন্ত কাণ্ড! তাই আমি ও-সব বুঝতে আদপে চেষ্টা করি না। শুনে রেখেছি তাঁর সৃষ্টিতে সবই হতে পারে। তাই ও-সব চিন্তা না করে কেবল তাঁরই চিন্তা করি। হনুমানকে জিজ্ঞাসা করেছিল, আজ কি তিথি, হনুমান বলেছিল (Kathamrita), ‘আমি তিথি নক্ষত্র জানি না, কেবল এক রাম চিন্তা করি।’

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Swami Vivekananda: আজ স্বামী বিবেকানন্দের ১৬২তম জন্মজয়ন্তী, ফিরে দেখা স্বামীজির অমর বাণী

    Swami Vivekananda: আজ স্বামী বিবেকানন্দের ১৬২তম জন্মজয়ন্তী, ফিরে দেখা স্বামীজির অমর বাণী

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: প্রতিবছর ১২ জানুয়ারি স্বামী বিবেকানন্দের (Swami Vivekand) জন্মজয়ন্তীতে (National Youth Day 2025) পালিত হয় ‘জাতীয় যুব দিবস’। ভারতবর্ষে সমগ্র যুব সমাজের কাছে আদর্শের প্রাণ কেন্দ্র হল স্বামীজি। তিনি হলেন ‘আইকন’। তাঁর উজ্জ্বলদীপ্ত দৃষ্টিকোণ, অগ্নিপ্রজ্বলিত লেখা এবং প্রখর বুদ্ধিদীপ্ত কর্মনিষ্ঠা, এক কথায় ভারতবর্ষের পুনঃজাগরণের অনুপ্রেরণস্থল হলেন তিনি। তিনি ভারতীয় সনাতন হিন্দু ধর্মের প্রতিনিধি হয়ে আমেরিকার শিকাগো শহরে ভাষণ দিয়ে গোটা বিশ্বের কাছে হিন্দু ধর্মের জয়জয় করেছেন। ভারত পৃথিবীকে যে আধ্যাত্মিক জ্ঞান এবং প্রজ্ঞা দিয়েছেন তা সভ্যতা ধ্বংসের আগের মুহূর্ত পর্যন্ত চির শাশ্বত, অক্ষয় ও অমর-অজয় হয়ে থাকবে। আজ বিবেকানন্দের ১৬২ তম জন্মজয়ন্তী। দেশজুড়ে পালিত হবে বিবেক উৎসব, মেলা, আলোচনা চক্র, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, খেলা-সহ নানা কর্মকাণ্ড।

    আধ্যাত্মিক জাগরণেরই স্বাধীনতার ‘স্ব’(National Youth Day 2025)

    বিবেকানন্দ (Swami Vivekand) উনিশতকের একজন আধ্যাত্মিক এবং সমাজ সংস্কারক। তাঁর গুরু ছিলেন ঠাকুর শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণ। শাক্ত মায়ের সাধনা এবং মূর্তিপুজোর অন্যতম পুরধা ছিলেন তিনি। নিজের জীবনের জ্ঞান-বিদ্যাবুদ্ধি দিয়ে নরেন্দ্রনাথকে বিবেকানন্দ গড়তে বিশেষ ভাবে সচেষ্ট হয়েছিলেন। একই ভাবে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ এবং ঔপনিবেশিকবাদের বিরুদ্ধে প্রবল ভাবে সরব হয়েছিলেন বিবেকানন্দ। দেশের বৃহত্তর মানুষের জাগরণের জন্য কাজ করেছেন। কীভাবে পাঠান-মুঘল-ইংরেজরা দেশের সম্পদ লুট করে দেশের সংস্কৃতিকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দিয়েছিল সেই কথাই সমাজের সামনে তুলে ধরেছিলেন। তাই পরাধীন ভারতকে পুনরায় স্বমহিমায় নিয়ে যেতে ব্রাহ্মণ, চর্মকার, চণ্ডাল এবং শূদ্রের একসঙ্গে জাগরণের কথা বলেছিলেন। সকলকে একত্রিত হতে হবে। ভারতের আধ্যাত্মিক জাগরণের মধ্যেই স্বাধীনতার ‘স্ব’-কে দেখেছিলেন বিবেকানন্দ (National Youth Day 2025)।

    আরও পড়ুনঃ মহাকুম্ভে হাজির মহিলা নাগা সাধুরাও, জানুন তাঁদের জীবনের ৭টি দিক

    শিকাগোতে বিশ্বজয়

    ১৮৯৩ সালের ১১ সেপ্টেম্বরে স্বামীজি (National Youth Day 2025) ভারতের হয়ে বিশ্ববাসীকে হিন্দুধর্মের গূঢ়অর্থকে তুলে ধরেছিলেন। ধর্মসভায় তাঁকে সকলের শেষে মাত্র সামান্য কয়েক মিনিটের জন্য বলতে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাঁর সেই সময়ের বক্তৃতায় প্রিয় ‘ভাই ও বোনেরা’ সম্বোধনে গোটা আমেরিকাবাসী চমকে গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, আমি সেই দেশ থেকে এসেছি যে দেশে হাজার হাজার বছরের পুরাতন সন্ন্যাসীরা বসবাস করছেন। তাঁদের আবহমান কালের ধর্ম পরম্পরার পক্ষ থেকে বিশ্ববাসীকে আমি শ্রদ্ধা এবং অভিনন্দন জানাই। ভারতীয় ব্রাহ্মণের মহাজ্ঞান, পাণ্ডিত্য এবং বুদ্ধের বিনয় বিশ্বকে শান্তির বাণী উপহার দিয়েছে। পাশ্চাত্য এবং মধ্য-প্রাচ্য থেকে কেবল হিংসা এবং ধ্বংসের কথাই বার বার বার এসেছে। এরপর গোটা ইউরোপ, আমেরিকা সহ একাধিক দেশে ভারতীয় ধর্ম কথাকে প্রচার করে বিশ্বকে জয় করেছেন স্বামীজি। তাঁর দ্বারা আরও প্রভাবিত হয়েছিল আইরিশ বিদেশী নারী ভগ্নী নিবেদিতা। তিনি বিবেকানন্দর (Swami Vivekand) শিষ্যত্ব গ্রহণ করেছিলেন। তিনিও অনুপ্রাণিত হয়ে ভারত মুক্তির লড়াইতে বিপ্লবীদের সঙ্গে ব্রিটিশ বিরোধী কাজে যোগদান করেছিলেন।

    স্বামীজির বাণী

    তাঁর লেখা উল্লেখ যোগ্য গ্রন্থগুলির মধ্যে হল, ‘সঙ্গীতকল্পতরু’ ১৮৮৭, ‘কর্মযোগ’ ১৮৯৬, ‘রাজযোগ’ ১৮৯৬, ‘বেদনান্ত ফিলোজফি’ ১৮৯৬, ‘বর্তমান ভারত’ ১৮৯৯, ‘মাই মাস্টার’ ১৯০১, ‘পরিব্রাজক’। ১৮৯৭ সালে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন রামকৃষ্ণ মিশন। তাঁর বাণী রামকৃষ্ণ মিশন থেকে প্রকাশিত হয়েছে। স্বামীজি (National Youth Day 2025) বলতেন—

    ১> “জেগে ওঠো, সর্বদা সচেতন থাকো, যতক্ষণ না লক্ষ্যে পৌঁছাবে ততক্ষণ পর্যন্ত থেমে যেও না।”

    ২> “যাঁরা তোমাকে সাহায্য করেন, তাঁদের কখনও ভুলেও যেও না। যাঁরা তোমাকে ভালোবাসেন, তাঁদের কখনও ঘৃণা করো না। আর যাঁরা তোমাকে সব সময় বিশ্বাস করেন, তাঁদের কখনও ঠকিও না।”

    ৩> “প্রতিদিন একবার হলেও নিজের সঙ্গে কথা বলো। নাহলে পৃথিবীতে বুদ্ধিমান ব্যক্তির সঙ্গে দেখা হবে না তোমার।”

    ৪> “যতক্ষণ না আপনি নিজেকে বিশ্বাস করতে পারবেন, ততক্ষণ আপনি ভগবানকেও বিশ্বাস করতে পারবেন না।”

    ৫> “নিত্যদিনের চলার পথে যদি আপনি কোনও সমস্যায় না পড়েন, তাহলে বুঝবেন আপনি ভুল পথে যাচ্ছেন।”

    ৬> “সবচেয়ে পাপ হল নিজেকে দুর্বল ভাবা’। তাই নিজেকে দুর্বল ভাববেন না।… নিজের দোষ থাকা সত্ত্বেও যদি আমরা নিজেকে ভালোবাসি। তবে অন্যদের দোষের কারণে কীভাবে তাঁদের ঘৃণা করব, কি করে?”

    ৭> “প্রতিটি মানুষের ধর্ম হল, নিজেকে সৎ রাখা, নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখুন’। তাহলে জীবনে এগিয়ে যেতে পারবেন। মহাবিশ্বের সমস্ত শক্তি সকলের মধ্যে রয়েছে। আমরাই চোখের সামনে হাত রেখে কেঁদেছি, যে কি অন্ধকার! যে কাজের জন্য আপনি প্রতিশ্রুতি দেন, তা সঠিক সময়ে করা উচিত, অন্যথায় মানুষ তাদের বিশ্বাস হারিয়ে ফেলে। নিজের মনের মতো কাজ পেলে অতি মূর্খও করতে পারে। যে সকল কাজকেই মনের মতো করে নিতে পারে, সেই বুদ্ধিমান। কোনও কাজকেই আপনি ছোট মনে করবেন না।”

    ৮> “ধ্যান মূর্খদের ঋষিতে পরিণত করতে পারে, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, বোকারা কখনই ধ্যান করে না।”

    ৯> “অন্যদের কাছ থেকে যা ভালো তা শিখুন, ভুল জিনিস জীবন থেকে সরিয়ে ফেলুন। তবেই জীবনে এগোতে পারবেন।”

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Maha Kumbh 2025: মহাকুম্ভে হাজির মহিলা নাগা সাধুরাও, জানুন তাঁদের জীবনের ৭টি দিক

    Maha Kumbh 2025: মহাকুম্ভে হাজির মহিলা নাগা সাধুরাও, জানুন তাঁদের জীবনের ৭টি দিক

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মহাকুম্ভের (Maha Kumbh 2025) প্রস্তুতি তুঙ্গে চলছে। ১৩ জানুয়ারি শুরু হচ্ছে মহাকুম্ভ, চলবে ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। পুণ্যলাভের আশায় এখন থেকেই ভিড় শুরু হয়েছে প্রয়াগরাজে। হাজির অসংখ্য নাগা সন্ন্যাসী। নাগা সাধুসন্তদের জীবনযাত্রা নিয়ে মানুষের আগ্রহের শেষ নেই। পুরুষ সাধুদের পাশাপাশি সন্ন্যাসিনীরাও আসেন মহাকুম্ভে। মহিলা নাগা সাধুদের বা নাগা সাধ্বীদের জীবনও কৃচ্ছসাধনের। নাগা সাধুরা অন্যান্য সন্ন্যাসীদের থেকে কিছুটা আলাদা। জানা যায়, আদিগুরু শঙ্করাচার্যই নাগা সাধুদের শিক্ষা দিতেন হিন্দুধর্মকে রক্ষা করার। অন্যান্য বারের মতো, ২০২৫ সালের প্রয়াগরাজের মহাকুম্ভেও বড় সংখ্যায় যোগ দিচ্ছেন মহিলা নাগা সন্ন্যাসীরা (Female Naga Sadhus)। তাঁদের সম্পর্কে সাতটি বিষয় আমরা জেনে নেব।

    সম্পূর্ণভাবে কঠোর ব্রত পালন করেন মহিলা নাগা সন্ন্যাসীরা (Maha Kumbh 2025)

    আধ্যাত্মিকতার সন্ধানে মহিলা নাগা সাধুরাও (Maha Kumbh 2025), পার্থিব জগতের সমস্ত বস্তুগত সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য ত্যাগ করে, নিজেদের পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন সন্ন্যাস ধর্ম বেছে নেন। যোগব্যায়াম, ধ্যান, জপের অনুশীলন করেই তাঁরা দিন চর্চা করেন। তবে, মহিলা নাগা সাধুরা বস্ত্রহীনা হন না, তাঁরা পোশাক সেলাইবিহীন পোশাক পরেন এবং কপালে তিলক লাগান।

    কঠোর জীবনযাপন (Maha Kumbh 2025)

    মহিলা নাগা সন্ন্যাসী (Female Naga Sadhus) হতে কঠোর জীবনযাপনের অনুশীলন করতে হয়। বছরের পর বছর ধরে তাঁদেরকে ব্রহ্মচর্য, ধ্যান- এই সমস্ত কিছুর মধ্য দিয়ে যেতে হয়।

    সমতার প্রচার (Maha Kumbh 2025)

    মহিলা নাগা সন্ন্যাসীরা নারী শক্তি এবং আধ্যাত্মিক স্বাধীনতার প্রতীক হিসেবে কাজ করেন। পুরুষদের মতো মহিলারাও যে একইভাবে, একই পদ্ধতিতে আধ্যাত্মিক অনুশীলনের দাবিদার, সেটা মহিলা নাগা সন্ন্যাসীদের দেখলেই বোঝা যায়।

    প্রতিনিয়ত তপস্যা ও শৃঙ্খলা পরায়ণজীবন

    দীক্ষা গ্রহণের পরে মহিলা নাগা সাধুদের অত্যন্ত কঠোর জীবন যাপন করতে হয়। তাঁরা গুহা, জঙ্গল বা নদীর ধারে কোনও আশ্রমে বাস করেন। সাধারণভাবে তাঁরা ভগবান শিবের উপাসনা করেন।

    মহিলা নাগা সাধুদের আখড়া

    অনেক ক্ষেত্রে মহিলা নাগা সাধুরা আখড়াতেও থাকেন এবং সেখানে তাঁরা অধ্যয়ন করেন। আখড়াগুলি অনেক ক্ষেত্রে আধ্যাত্মিক শিক্ষার কেন্দ্র হিসেবেও কাজ করে।

    কুম্ভ মেলায় ব্যাপক ভিড় দেখা যায় মহিলা নাগা সাধুদের

    প্রায় প্রতিটি কুম্ভ মেলাতেই মহিলা নাগা সাধুদের ব্যাপক ভিড় লক্ষ্য করা যায়। তাঁরা বিভিন্ন শোভাযাত্রা পরিচালনা করেন এবং শাহি স্নানে অংশগ্রহণ করেন।

    নারী ক্ষমতায়ন

    মহিলা নাগা সাধুরা আজ নারী ক্ষমতায়নের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছেন। তাঁরাই প্রমাণ করেছেন যে আধ্যাত্মিকতার পথে কোনও লিঙ্গ বৈষম্য নেই।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 246: “আমি দেহ বেচে ভবের হাটে, দুর্গানাম কিনে এনেছি, কালীনাম-কল্পতরু হৃদয়ে রোপণ করেছি”

    Ramakrishna 246: “আমি দেহ বেচে ভবের হাটে, দুর্গানাম কিনে এনেছি, কালীনাম-কল্পতরু হৃদয়ে রোপণ করেছি”

    শ্রীরামকৃষ্ণ দক্ষিণেশ্বরে ও ভক্তগৃহে

    দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, জুন

    নানাভাবে শ্রীরামকৃষ্ণ দক্ষিণেশ্বরে ও ভক্তমন্দিরে

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—যারা যারা এখানে আসে তাদের সংস্কার আছে; কি বল?

    মাস্টার—আজ্ঞে হাঁ।

    শ্রীরামকৃষ্ণ—অধরের সংস্কার ছিল।

    মাস্টার—তা আর বলতে (Kathamrita)।

    শ্রীরামকৃষ্ণ—সরল হলে ঈশ্বরকে শীঘ্র পাওয়া যায়। আর দুটো পথ আছে—সৎ, অসৎ। সৎপথ দিয়ে চলে যেতে হয়।

    মাস্টার—আজ্ঞে হাঁ, সুতোর একটু আঁশ থাকলে ছুঁচের ভিতর যাবে না।

    সর্বত্যাগ কেন? 

    শ্রীরামকৃষ্ণ(Ramakrishna)—খাবারের সঙ্গে চুল জিবে পড়লে, মুখ থেকে সবসুদ্ধ ফেলে দিতে হয়।

    মাস্টার—তবে আপনি যেমন বলেন, যিনি ভগবানদর্শন করেছেন, তাঁকে অসৎসঙ্গে কিছু করতে পারে না। খুব জ্ঞানাগ্নিতে কলাগাছটা পর্যন্ত জ্বলে যায়।

    শ্রীরামকৃষ্ণ ও শ্রীকবিকঙ্কণ—অধরের বাটীতে চণ্ডির গান 

    আর-একদিন ঠাকুর কলিকাতায় বেনেটোলায় অধরের বাড়িতে আসিয়াছেন। ৩১শে আষাঢ়, শুক্লা দশমী, ১৪ই জুলাই ১৮৮৩, শনিবার। অধর ঠাকুরকে রাজনারাণের চন্ডীর গান শুনাইবেন। রাখাল, মাস্টার প্রভৃতি সঙ্গে আছেন। ঠাকুরদালানে গান হইতেছে। রাজনারাণ গান ধরিলেন:

          অভয় পদে প্রাণ সঁপেছি ৷
          আমি আর কি যমের ভয় রেখেছি ॥
    কালীনাম মহামন্ত্র আত্মশির শিখায় বেঁধেছি ৷
    আমি দেহ বেচে ভবের হাটে, দুর্গানাম কিনে এনেছি ॥
    কালীনাম-কল্পতরু হৃদয়ে রোপণ করেছি ৷
    এবার শমন এলে হৃদয় খুলে দেখাব তাই বসে আছি ॥
    দেহের মধ্যে ছজন কুজন, তাদের ঘরে দূর করেছি ৷
    রামপ্রসাদ বলে দুর্গা বলে যাত্রা করে বসে আছি ॥

    ঠাকুর খানিক শুনিতে শুনিতে ভাবাবিষ্ট, দাঁড়াইয়া পড়িয়াছেন ও সম্প্রদায়ের সঙ্গে যোগ দিয়া গান গাইতেছেন।

    ঠাকুর আখর দিতেছেন, “ওমা, রাখ মা।” আখর দিতে দিতে একেবারে সমাধিস্থ। বাহ্যশূন্য, নিস্পন্দ! দাঁড়াইয়া আছেন। আবার গায়ক গাহিতেছেন (Kathamrita):

          রণে এসেছ কার কামিনী
    সজল-জলদ জিনিয়া কায় দশনে দোলে দামিনী!

    ঠাকুর আবার সমাধিস্থ!

    গান সমাপ্ত হইলে দালান হইতে গিয়া ঠাকুর (Ramakrishna) অধরের দ্বিতল বৈঠকখানায় ভক্তসঙ্গে বসিলেন। নানা ঈশ্বরীয় প্রসঙ্গ হইতেছে। কোন কোন ভক্ত অন্তঃসার ফল্গুনদী, উপরে ভাবের কোন প্রকাশ নাই—এ-সব কথাও হইতেছে।

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 245: “স্ব-স্বরূপ দর্শন, ঈশ্বরদর্শন বা আত্মদর্শনের উপায়—আন্তরিক প্রার্থনা—নিত্যলীলা যোগ ”

    Ramakrishna 245: “স্ব-স্বরূপ দর্শন, ঈশ্বরদর্শন বা আত্মদর্শনের উপায়—আন্তরিক প্রার্থনা—নিত্যলীলা যোগ ”

    শ্রীরামকৃষ্ণ দক্ষিণেশ্বরে ও ভক্তগৃহে

    দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, জুন

    নানাভাবে শ্রীরামকৃষ্ণ দক্ষিণেশ্বরে ও ভক্তমন্দিরে

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) দক্ষিণেশ্বর-দেবালয়ে, শিবমন্দিরে সিঁড়িতে বসিয়া আছেন। জৈষ্ঠ মাস, ১৮৮৩, খুব গরম পড়িয়াছে। একটু পরে সন্ধ্যা হইবে। বরফ ইত্যাদি লইয়া মাস্টার আসিয়াছেন ও ঠাকুরকে প্রণাম করিয়া তাঁহার পাদমূলে শিবমন্দিরের সিঁড়িতে বসিলেন (Kathamrita)।

    1. S. Mill and Sri Ramakrishna: Limitations of man—a conditioned being

    শ্রীরামকৃষ্ণ (মাস্টারের প্রতি)—মণি মল্লিকের নাতজামাই এসেছিল। সে কি বই-এ পড়েছে, ঈশ্বরকে তেমন জ্ঞানী, সর্বজ্ঞ বলে বোধ হয় না। তাহলে এত দুঃখ কেন? আর এই যে জীবের মৃত্যু হয়, একেবারে মেরে ফেললেই হয়, ক্রমে ক্রমে অনেক কষ্ট দিয়ে মারা কেন? যে বই লিখেছে সে নাকি বলেছে যে, আমি হলে এর চেয়ে ভাল সৃষ্টি করতে পারতাম।

    মাস্টার হাঁ করিয়া ঠাকুরের কথা শুনিতেছেন ও চুপ করিয়া আছেন। ঠাকুর আবার কথা কহিতেছেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (মাস্টারের প্রতি)—তাঁকে কি বুঝা যায় গা! আমিও কখন তাঁকে ভাবি ভাল, কখন ভাবি মন্দ। তাঁর মহামায়ার ভিতের আমাদের রেখেছেন। কখন তিনি হুঁশ করেন, কখন তিনি অজ্ঞান করেন। একবার অজ্ঞানটা চলে যায়, আবার ঘিরে ফেলে। পুকুর পানা ঢাকা, ঢিল মারলে খানিকটা জল দেখা যায়, আবার খানিকক্ষণ পরে পানা নাচতে নাচতে এসে সে জলটুকুও ঢেকে ফেলে।

    “যতক্ষণ দেহবুদ্ধি ততক্ষণই সুখ-দুঃখ, জন্মমৃত্যু, রোগশোক। দেহেরই এই সব, আত্মার নয়। দেহের মৃত্যুর পর তিনি হয়তো ভাল জায়গায় নিয়ে যাচ্ছেন—যেমন প্রসববেদনার পর সন্তানলাভ। আত্মজ্ঞান হলে সুখ-দুঃখ, জন্মমৃত্যু—স্বপ্নবৎ বোধ হয়।

    “আমরা কি বুঝব! এক সের ঘটিতে কি দশ সের দুধ ধরে? নুনের পুতুল সমুদ্র মাপতে গিয়ে আর খবর দেয় না। গলে মিশে যায় (Kathamrita)।”

     “ছিদ্যন্তে সর্ব্বসংশয়াঃ তস্মিন্‌ দৃষ্টে পরাবরে” 

    সন্ধ্যা হইল। ঠাকুরদের (Ramakrishna) আরতি হইতেছে। ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ নিজের ঘরে ছোট খাটটিতে বসিয়া জগন্মাতার চিন্তা করিতেছেন। রাখাল, লাটু, রামলাল, কিশোরী গুপ্ত প্রভৃতি ভক্তেরা আছেন। মাস্টার আজ রাত্রে থাকিবেন। ঘরের উত্তরে ছোট বারান্দায় ঠাকুর একটি ভক্তের সহিত নিভৃতে কথা কহিতেছেন। বলিতেছেন, “প্রত্যূষে ও শেষ রাত্রে ধ্যান করা ভাল ও প্রত্যহ সন্ধ্যার পর।” কিরূপ ধ্যান করিতে হয় — সাকার ধ্যান, অরূপ ধ্যান, সে-সব বলিতেছেন।

    কিয়ৎক্ষণ পরে ঠাকুর পশ্চিমের গোল বারান্দাটিতে বসিয়া আছেন। রাত্রি ৯টা হইবে। মাস্টার কাছে বসিয়া আছেন, রাখাল প্রভৃতি এক-একবার ঘরের ভিতর যাতায়াত করিতেছেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (মাস্টারের প্রতি)—দেখ, এখানে যারা যারা আসবে সকলের সংশয় মিটে যাবে, কি বল?

    মাস্টার—আজ্ঞে হাঁ।

    এমন সময় গঙ্গাবক্ষে অনেক দূরে মাঝি নৌকা লইয়া যাইতেছে ও গান ধরিয়াছে। সেই গীতধ্বনি, মধুর অনাহতধ্বনির ন্যায় অনন্ত আকাশের ভিতর দিয়া গঙ্গার প্রশস্ত বক্ষ যেন স্পর্শ করিয়া ঠাকুরের কর্ণকুহরে প্রবেশ করিল। ঠাকুর অমনি ভাবাবিষ্ট। সমস্ত শরীর কণ্টকিত। মাস্টারের হাত ধরিয়া বলিতেছেন, “দেখ দেখ আমার রোমাঞ্চ হচ্ছে। আমার গায়ে হাত দিয়ে দেখ!” তিনি সেই প্রেমাবিষ্ট কণ্টকিত দেহ স্পর্শ করিয়া অবাক্‌ হইয়া রহিলেন। “পুলকে পূরিত অঙ্গ”! উপনিষদে কথা আছে যে, তিনি বিশ্বে আকাশে ‘ওতপ্রোত’ হয়ে আছেন। তিনিই কি শব্দরূপে শ্রীরামকৃষ্ণকে স্পর্শ করিতেছেন? এই কি শব্দ ব্রহ্ম?

    কিয়ৎক্ষণ পরে ঠাকুর (Ramakrishna) আবার কথা কহিতেছেন।

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Mahakumbh Mela 2025: আপনি কি মহাকুম্ভ মেলায় যেতে চান? এই জরুরি বিধিনিষেধগুলি আপনাকে মানতেই হবে

    Mahakumbh Mela 2025: আপনি কি মহাকুম্ভ মেলায় যেতে চান? এই জরুরি বিধিনিষেধগুলি আপনাকে মানতেই হবে

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ২০২৫ সালের মহাকুম্ভ (Mahakumbh Mela 2025) হল সনাতন ধর্মের সবচেয়ে বড় এবং প্রতীক্ষিত আধ্যাত্মিক সমাবেশগুলির মধ্যে অন্যতম প্রধান মহামিলন কেন্দ্র। আগামী ১৩ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে এবং ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে অনুষ্ঠিত হবে এই মহাকুম্ভ। কোটি কোটি ভক্তরা সাক্ষী হবেন এই ত্রিবেণী সঙ্গমে। মানবজীবনের পুণ্য সঞ্চয়ের জন্য পবিত্র স্নান (Holy Bathing) করতে ভক্তরা একত্রিত হবেন—গঙ্গা, যমুনা এবং পৌরাণিক সরস্বতী নদীর সঙ্গমস্থলে। পর্যটক, সাধু, সন্ন্যাসী, তীর্থযাত্রী, পুণ্যার্থী এবং বিশ্বব্যাপী ভ্রমণকারীদের জন্য এই পূর্ণ মহাকুম্ভ মেলা ভারতের ঐতিহ্যেকে তুলে ধরবে। নিজেদের এই পবিত্র স্নানে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি ধর্মীয় আচার এবং তীর্থযাত্রা দেখার সুযোগ করে দেবে ভক্তদের। আপনি যদি উৎসবে যোগদানের পরিকল্পনা করে থাকেন, তাহলে কী করণীয় এবং কী করণীয় নয়, সেই বিষয়ে জেনে নিন।

    কী কী করণীয়

    ১> আপনি যদি মহাকুম্ভে (Mahakumbh Mela 2025) যাওয়ার পরিকল্পনা করে থাকেন, তাহলে আগে থেকেই পরিকল্পনা করুন এবং শুধুমাত্র আপনার প্রয়োজনীয় জিনিসগুলি নিয়ে আসবেন।

    ২> থাকার ব্যবস্থা, দিনক্ষণ, তারিখ ইত্যাদির জন্য ওয়েবসাইটটি পরীক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ কাজ। আরও বিস্তারিত জানার জন্য আপনার ফোনে অফিসিয়াল ‘Maha Kumbh 2025 অ্যাপ’ ডাউনলোড করুন।

    ৩> আপনার গুরুত্বপূর্ণ ওষুধগুলি বহন করুন, এবং যদি আপনার কোনও পূর্ব-বিদ্যমান অসুস্থতা বা রোগ থেকে থাকে, অবিলম্বে একজন ডাক্তারের কাছে পরামর্শ গ্রহণ করুন।

    ৪> জরুরি যোগাযোগ নম্বর এবং খাবার, হাসপাতাল, জরুরি পরিষেবা ইত্যাদির মতো সুবিধাগুলি সম্পর্কে জেনে রাখুন।

    ৫> বর্জ্য অপসারণের জন্য শুধুমাত্র একটি ডাস্টবিন ব্যবহার করুন।

    ৬> স্নানের (Holy Bathing) উদ্দেশ্যে, শুধুমাত্র স্নানের এলাকা এবং মেলা প্রশাসন কর্তৃক অনুমোদিত ঘাটগুলিকেই ব্যবহার করুন।

    ৭> সন্দেহজনক কিছু পেলে পুলিশ বা মেলা প্রশাসনকে জানান।

    ৮> মেলা আয়োজনের সঙ্গে জড়িত বিভাগগুলিকে সহযোগিতা করুন।

    ৯> পাবলিক অ্যাড্রেস সিস্টেমর মাধ্যমে দেওয়া নিয়ম এবং নির্দেশাবলী অনুসরণ করুন।

    ১০> সাইনবোর্ডগুলিতে মনোযোগ দিন, যা ভিড়ের মধ্য দিয়ে দিকনির্দেশ এবং সহায়তা প্রদান করবে।

    কী কী করবেন না

    ১> কুম্ভমেলায় (Mahakumbh Mela 2025) অতিরিক্ত এবং অপ্রয়োজনীয় কাপড়, খাবার বা জিনিসপত্র বহন করা এড়িয়ে চলুন।

    ২> অপরিচিত কাউকে বিশ্বাস করবেন না বা অননুমোদিত জায়গায় খাওয়া এড়িয়ে যাবেন না।

    ৩> শেষ মুহূর্তে পরিকল্পনা করবেন না, কারণ এতে থাকার জায়গা খুঁজে পেতে এবং পরিষেবা পেতে সমস্যা হতে পারে।

    ৪> ডিজিটাল পেমেন্ট বেছে নিন এবং আপনার পকেটে অতিরিক্ত নগদ রাখা এড়িয়ে চলুন।

    ৫> আপনার স্বাস্থ্যের অবস্থা বুঝে ঠান্ডা জলের ব্যবহার এড়িয়ে চলুন।

    ৬> আপনার নিরাপত্তার জন্য শুধুমাত্র মনোনীত ঘাট এবং অফিসিয়াল নৌকা পরিষেবা ব্যবহার করুন।

    ৭> ভিড়ে ব্যবস্থাপকদের নির্দেশিকা অনুসরণ করুন এবং ধাক্কা বা তাড়াহুড়ো এড়ান।

    ৮> আপনার নিরাপত্তার জন্য শুধুমাত্র মনোনীত ঘাট এবং অফিসিয়াল নৌকা পরিষেবা ব্যবহার করুন।

    ৯> প্রতারণামূলক কার্যকলাপ এবং কেলেঙ্কারি থেকে সতর্ক থাকুন।

    ১০> উচ্চস্বরে গান, আবর্জনা বা আধ্যাত্মিক পরিবেশকে ব্যাহত করে এমন কোনও আচরণ করবেন না।

    ১১> পরিষ্কার-ধোয়ার উদ্দেশ্যে ডিটারজেন্ট বা সাবান ব্যবহার করে জলাশয়কে দূষিত করবেন না।

    ১২> আপনি যদি ছোঁয়াচে রোগে আক্রান্ত হন, তাহলে জনাকীর্ণ জায়গায় যাবেন না।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Mahakumbh Mela 2025: ত্রিবেণী সঙ্গমে ১৪৪ বছর পর পূর্ণ মহাকুম্ভ যোগ, নেপথ্যে রয়েছে কোন পৌরাণিক কাহিনি?

    Mahakumbh Mela 2025: ত্রিবেণী সঙ্গমে ১৪৪ বছর পর পূর্ণ মহাকুম্ভ যোগ, নেপথ্যে রয়েছে কোন পৌরাণিক কাহিনি?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ২০২৫ সালের পূর্ণকুম্ভমেলা (Mahakumbh Mela 2025) আর বাকি কুম্ভমেলাগুলি থেকে আলাদা। কারণ হিন্দু শাস্ত্রমতে জানা গিয়েছে, এই কুম্ভ ১৪৪ বছর পর পূর্ণ যোগে পূর্ণ কুম্ভমেলা বসবে। ভারতীয় হিন্দু ধর্মের মহামিলন কেন্দ্র হল এই মেলা। পুরাণে কথিত রয়েছে বাসকী নাগের দ্বারা সুরাসুরের সমুদ্র মন্থনে যে অমৃত উঠেছিল, তা এই গঙ্গা-যমুনা-সরস্বতীর ত্রিবেণী সঙ্গমে (Triveni Sangam) এক ফোঁটা পড়েছিল। ফলে এই স্থানের নদী সঙ্গমে স্নান করলে মোক্ষ প্রাপ্তি ঘটে। এবছর উত্তরপ্রদেশ সরকার জানিয়েছে, মেলায় আনুমানিক ৪০-৪৫ কোটি মানুষ পুণ্যস্নান করবেন। আর তাই প্রস্তুতি চলেছে জোর কদমে।

    ১৪৪ বছর পর পূর্ণ মহাকুম্ভ কেন (Mahakumbh Mela 2025)?

    মহাকুম্ভমেলা (Mahakumbh Mela 2025) হল বিশ্বের সর্ব বৃহৎ ধর্মীয়, সামজিক এবং সাংস্কৃতিক মহামিলন মেলা। প্রতি ১২ বছর এক যোগে পূর্ণকুম্ভের আয়োজন হয়ে থাকে। আর প্রতি বছর যে মেলা হয়, তাকে বলা হয় কুম্ভ। ছয় বছরে একবার কুম্ভকে বলা হয় অর্ধকুম্ভ। প্রতি ১২ বছরে অনুষ্ঠিত কুম্ভকে বলা হয় পূর্ণকুম্ভমেলা। আবার ১২টি পূর্ণকুম্ভ অতিক্রান্ত হয়ে বা ১৪৪ বছর পর যে পূর্ণকুম্ভমেলা আসে, তাকে বলা হয় মহাকুম্ভ মেলা। এই কুম্ভ মূলত চারটি জায়গায় চক্রাকারে অনুষ্ঠিত হয়। জায়গাগুলি হল, উত্তরপ্রদেশের গঙ্গা-যমুনা-সরস্বতী নদী সঙ্গমে প্রয়াগরাজ (Triveni Sangam), উত্তরাখণ্ডের গঙ্গা নদীর তীরে হরিদ্বার, মধ্যপ্রদেশের শিপ্রা নদীর তীরে উজ্জয়িনী এবং মহারাষ্ট্রের গোদাবরীর তীরে নাসিকে। সব জায়গায় মূলত নদী সঙ্গমে মেলা বসে এবং পুণ্যস্নান সম্পন্ন হয়। এই বছর পূর্ণ মহাকুম্ভ মেলা আয়োজিত হচ্ছে প্রয়াগরাজে।

    কীভাবে কুম্ভের তারিখ ঠিক হয়?

    কুম্ভমেলার (Mahakumbh Mela 2025) অবস্থান এবং তারিখ নির্ধারণ করতে, জ্যোতিষী এবং বিভিন্ন সম্প্রদায়ের আখড়ার নেতারা একত্রে মিলিত হন। এরপর বৃহস্পতি এবং সূর্যের অবস্থান কেমন রয়েছে তা ভালো করে পরীক্ষা করেন। বৃহস্পতি (গুরু) এবং সূর্য উভয়ই হিন্দু জ্যোতিষশাস্ত্রে উল্লেখযোগ্য বিষয়। তাদের অবস্থানের উপর ভিত্তি করে সময়, দিনক্ষণ, তারিখ এবং তিথি নির্ধারিত হয়। এই মেলা সধারণত মাঘ-ফাল্গুন মাসে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।

    কীভাবে কুম্ভমেলা শুরু, পৌরাণিক কাহিনী?

    এই কুম্ভমেলার (Mahakumbh Mela 2025) উৎপত্তি, হিন্দু পুরাণে, বিশেষ করে সমুদ্র মন্থনের গল্পে নিহিত। প্রাচীন হিন্দু ধর্মগ্রন্থগুলিতে বর্ণনা করা হয়েছে কীভাবে দেবগণ (দেবতা) এবং অসুররা (দানব) অমৃত পাওয়ার জন্য একটি মহাজাগতিক মোক্ষ লাভের জন্য কাজ করে ছিলেন। সমুদ্র মন্থনটি হওয়ার সাথে সাথে পবিত্র অমৃতে ভরা একটি কুম্ভ বা পাত্র উদ্ভূত হয়েছিল। অসুরদের হাত থেকে ওই অমৃতভান্ডার রক্ষা করতে ভগবান বিষ্ণু মোহিনীর ছদ্মবেশে পাত্রটি নিয়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন। তবে তাঁর যাত্রার সময়, অমৃতের কয়েকটি ফোঁটা চারটি স্থানে পড়েছিল। এই স্থানগুলি হল— প্রয়াগরাজ, হরিদ্বার, উজ্জয়িনী এবং নাসিক। এই স্থানগুলি পবিত্রস্থান হিসাবে হিন্দু শাস্ত্রে শ্রদ্ধা করা হয়। এরপর থেকে কুম্ভমেলা ঘূর্ণায়মান হয়ে এই স্থানগুলিতে পালিত হয়।

    আরও পড়ুনঃ ২২ জানুয়ারি মুর্শিদাবাদে রাম মন্দিরের সূচনা, ঘোষণা অম্বিকানন্দের, কারা কারা আমন্ত্রিত?

    জন্ম-মৃত্যুর মায়া বন্ধন কেটে যায়

    হিন্দু শাস্ত্রের তিথি নক্ষত্র অনুয়ায়ী দেখা গিয়েছে, গ্রহ এবং নক্ষত্রের একটি বিরল জ্যোতির্বিজ্ঞানের গণনার ফলে এবারের কুম্ভমেলা (Mahakumbh Mela 2025) অনুষ্ঠিত হচ্ছে। হিন্দু জন্মান্তরবাদে সূত্রে এই কুম্ভে স্নান করলে সকল পাপের অবসান ঘটবে এবং জন্ম-মৃত্যুর মায়া বন্ধন ত্যাগ করে মোক্ষলাভ হবে। নিজের, পরিবার এবং সমাজ, দেশের কল্যাণ কামনায় কোটি কোটি ভক্তরা এই মহামিলন সাগরে সমাবেত হন। এই মেলা অনুষ্ঠিত হবে আনুমানিক ৪৪ দিনের বেশি সময় ধরে। আগামী ১৪ জানুয়ারি, মকর সংক্রান্তি থেকে মেলা শুরু হবে এবং চলবে আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি, শিবরাত্রি পর্যন্ত। বিশেষ বিশষ স্নান হল, ২৯ জানুয়রি মৌনী অমবস্যা স্নান, ৩ ফেব্রুয়ারি বসন্ত পঞ্চমী স্নান, ১২ ফেব্রুয়ারি মাঘী পূর্ণিমা স্নান, ২৬ ফেব্রুয়ারি মহাশিবরাত্রি স্নান।

    আখড়ার ঐতিহ্য, শোভাযাত্রা নিয়ে প্রদর্শনী

    কুম্ভমেলায় (Mahakumbh Mela 2025) হিন্দু সম্প্রদায়ের নানা মত এবং ভাগের সাধু-সন্ত এবং সন্ন্যাসী সমাজের মানুষ অংশগ্রহণ করে থাকেন। তাঁদের নিজের নিজের আখড়ার ঐতিহ্য, শোভাযাত্রা নিয়ে প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। হাতি, ঘোড়া, রথ নিয়ে বেশ সজ্জিত হয়ে নিজের নিজের সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলকে তুলে ধরে থাকেন সন্তসমাজ। হিন্দু সমাজের পরম্পরা এবং ঐতিহ্য তুলেধারার একটা ধারাও লক্ষ্য করা যায় মেলায়। এই সাংস্কৃতিক শোভাযাত্রা যাত্রা দেখার জন্য লক্ষ লক্ষ মানুষ সমববেত হন।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

LinkedIn
Share