Category: পরম্পরা

Get updated History and Heritage and Culture and Religion related news from the Madhyom news portal madhyom.com, West Bengal leading news portal Madhyom.com

  • Mahakumbh 2025: ‘ভগবানই জ্যাকেট’! প্রবল শীত উপেক্ষা করে বিবস্ত্র মহাকুম্ভের সর্বকনিষ্ঠ ৮ বছরের নাগা সাধু

    Mahakumbh 2025: ‘ভগবানই জ্যাকেট’! প্রবল শীত উপেক্ষা করে বিবস্ত্র মহাকুম্ভের সর্বকনিষ্ঠ ৮ বছরের নাগা সাধু

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আগামী ১৩ জানুয়ারি উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে শুরু হচ্ছে মহাকুম্ভ মেলা (Mahakumbh 2025)। চলবে ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। মহাকুম্ভকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে বিভিন্ন আখড়ার সাধু-সন্তরা ইতিমধ্যে প্রয়াগরাজে হাজির হতে শুরু করেছেন। এর মধ্যে বড় সংখ্যায় নাগা সাধুদের উপস্থিতিও দেখা যাচ্ছে। তবে সবার দৃষ্টি রয়েছে ছোট্ট সাধু গোপাল গিরির ওপর। তিনি নাগা সম্প্রদায়ের। বর্তমানে গোপাল গিরির (Gopal Giri) বয়স ৮ বছর। ইতিমধ্যে ৮ বছর বয়সি এই সাধুর দেওয়া সাক্ষাৎকারের ভিডিও বেশ ভাইরাল হয়েছে।

    আদতে হিমাচলের বাসিন্দা গোপাল গিরি (Gopal Giri) 

    জানা গিয়েছে, মহাকুম্ভের (Mahakumbh 2025) সর্বকনিষ্ঠ সাধু গোপাল গিরি মূলত হিমাচল প্রদেশের চম্পার বাসিন্দা। একটি ইউটিউব চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে গোপাল গিরি জানিয়েছেন নানা কথা। তাঁর সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে ছোটবেলায় তিনি কিভাবে ঘর ছাড়েন এবং আধ্যাত্মিকতার পথে আসেন। প্রসঙ্গত, নাগা সম্প্রদায়ের সন্ন্যাসীরা পার্থিব জগতের সব কিছুই ত্যাগ করেন। সম্পূর্ণ বিবস্ত্র অবস্থায় থাকেন তাঁরা। এত ঠান্ডাতেও গোপাল গিরি জানিয়েছেন যে তাঁর কোনও অস্বস্তি হয় না। ভগবানই তাঁর জ্যাকেট। তিনি আরও জানিয়েছেন, ভগবানের প্রতি সর্বদা সমর্পিত থাকাই, তাঁর জীবনের উদ্দেশ্য।

     ভুল বুঝিয়ে সন্ন্যাসী বানানো হয়নি আমাকে

    গোপাল গিরি বলেন, ‘‘আমাকে কোনও মহল থেকে ভুল বুঝিয়ে সন্ন্যাসী বানানো হয়নি, একজন সাধুকে কেউ কখনও ভুল বোঝাতে পারেন না। আমি নিজের ইচ্ছায় সন্ন্যাস জীবন বেছে নিয়েছি। সাধু হওয়া আমার জীবনের ইচ্ছা ছিল। শুধুমাত্র ভগবানের ভজন-কীর্তন করব বলেই আমি সন্ন্যাসী হয়েছি।’’ আট বছর বয়সি এই সাধু আরও বলেন, ‘‘খেলা করা, ঘুরে ঘুরে বেড়ানো বাচ্চাদের স্বভাব কিন্তু আমার ভালো লাগে ঈশ্বরের ভজনে সর্বদাই মগ্ন থাকতে। আমি ভগবান শিব ও সূর্যদেবের উপাসনা করি। আমার তিন গুরুই বিভূতি লাগিয়ে সমাধিস্ত হয়েছেন। আমি বিদ্যালয়ে ভর্তিও হয়েছিলাম। কিন্তু আমি গুরুকুল ব্যবস্থার শিক্ষা নিতে চেয়েছিলাম। তাই আমি সাধু হয়েছি। আমি কখনও স্কুল-কলেজে পড়ার ভয়ে ঘর ছাড়েনি, গুরুকুলে বাচ্চাদেরকে জোর জবরদস্তি নয় বরং তাদেরকে ভালোবেসে শিক্ষা প্রদান করা হয়।’’

    পিতা-মাতার আজ্ঞাতেই সন্ন্যাসী হওয়া

    তাঁর পিতামাতার বিষয়ে প্রশ্ন জিজ্ঞেস (Mahakumbh 2025) করা হলে গোপাল গিরি বলেন, ‘‘বাবা মায়ের ব্যাপারে কেন প্রশ্ন জিজ্ঞেস করছেন! ওনাদের আজ্ঞা নিয়েই আমি সন্ন্যাসী হয়েছি। যে কোনও বাচ্চা যদি সন্ন্যাসী হতে চায়, তাহলে তাদেরকেও পিতামাতার নির্দেশ নিতে হবে। আমি আরও ছোট বয়সে নিজের বাবাকে বলেছিলাম যে আমি সন্ন্যাসী হব। পিতা ও মাতা দুজনের আজ্ঞা নিয়েই আমি সন্ন্যাসী হয়েছি।’’ জানা গিয়েছে,  তিন বছর আগে গোপাল গিরির বাবা-মা গুরুদক্ষিণা স্বরূপ তাঁদের পুত্রকে সঁপে দেন গুরুর কাছে। সেই সময়ে বিধি-বিধান অনুসারে সন্ন্যাস ধর্মে দীক্ষিত করা হয় গোপাল গিরিকে। পৃথিবীর অন্যতম বড় ইভেন্টের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু এখন গোপাল গিরি।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 239: “ওরে চোরা, তুই বাড়ি থেকে কেবল পালিয়ে পালিয়ে আসিস, আর চুরি করে প্রেম আস্বাদন করিস”

    Ramakrishna 239: “ওরে চোরা, তুই বাড়ি থেকে কেবল পালিয়ে পালিয়ে আসিস, আর চুরি করে প্রেম আস্বাদন করিস”

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ পেনেটীর মহোৎসবক্ষেত্রে রাখাল, রাম, মাস্টার,

    ভবনাথ প্রভৃতি ভক্তসঙ্গে

    প্রথম পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ১৮ই জুন

    ঠাকুর সংকীর্তনানন্দে— ঠাকুর কি শ্রীগৌরাঙ্গ?

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) পেনেটীর মহোৎসবক্ষেত্রে বহুলোকসমাকীর্ণ রাজপথে সংকীর্তনের দলের মধ্যে নৃত্য করিতেছেন। বেলা একটা হইয়াছে। আজ সোমবার, জ্যৈষ্ঠ শুক্লা ত্রয়োদশী তিথী, ১৮ই জুন, ১৮৮৩।

    সংকীর্তনমধ্যে ঠাকুরকে দর্শন করিবার জন্য চতুর্দিকে লোক কাতার দিয়া দাঁড়াইতেছে। ঠাকুর প্রেমে মাতোয়ারা হইয়া নাচিতেছেন, কেহ কেহ ভাবিতেছে, শ্রীগৌরাঙ্গ কি আবার প্রকট হইলেন! চতুর্দিকে হরিধ্বনি সমুদ্রকল্লোলের ন্যায় বাড়িতেছে। চতুর্দিকে হইতে পুষ্পবৃষ্টি ও হরির লুট পড়িতেছে।

    নবদ্বীপ গোস্বামী প্রভু সংকীর্তন করিতে করিতে রাঘবমন্দিরাভিমুখে যাইতেছিলেন। এমন সময়ে ঠাকুর কোথা হইতে তীর বেগে আসিয়া সংকীর্তন দলের মধ্যে নৃত্য করিতেছেন (Kathamrita)।

    এটি রাঘব পণ্ডিতের চিঁড়ার মহোৎসব। শুক্লাপক্ষের ত্রয়োদশী তিথীতে প্রতিবর্ষে হইয়া থাকে। দাস রঘুনাথ প্রথমে এই মহোৎসব করেন। রাঘব পণ্ডিত তাহার পরে বর্ষে বর্ষে করিয়াছিলেন। দাস রঘুনাথকে নিত্যানন্দ বলিয়াছিলেন, ‘ওরে চোরা, তুই বাড়ি থেকে কেবল পালিয়ে পালিয়ে আসিস, আর চুরি করে প্রেম আস্বাদন করিস — আমরা কেউ জানতে পারি না! আজ তোকে দণ্ড দিব, তুই চিঁড়ার মহোৎসব করে ভক্তদের সেবা কর।’

    ঠাকুর (Ramakrishna)  প্রতি বৎসরই প্রায় আসেন, আজও এখানে রাম প্রভৃতি ভক্তসঙ্গে আসিবার কথা ছিল। রাম সকালে কলিকাতা হইতে মাস্টারের সহিত দক্ষিণেশ্বরে আসিয়াছিলেন। সেইখানে আসিয়া ঠাকুরকে দর্শন ও প্রণামান্তর উত্তরের বারান্দায় আসিয়া প্রসাদ পাইলেন। রাম কলিকাতা হইতে যে গাড়িতে আসিয়াছিলেন, সেই গাড়ি করিয়া ঠাকুরকে পেনেটীতে আনা হইল। সেই গাড়িতে রাখাল, মাস্টার, রাম, ভবনাথ, আরো দু-একটি ভক্ত — তাহার মধ্যে একজন ছাদে বসিয়াছিলেন।

    গাড়ি ম্যাগাজিন রোড দিয়া চানকের বড় রাস্তায় (ট্রাঙ্ক রোড) গিয়া পড়িল। যাইতে যাইতে ঠাকুর ছোকরা ভক্তদের সঙ্গে অনেক ফষ্টিনাষ্টি (Kathamrita) করিতে লাগিলেন।

     আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 237: “ভাল কর্ম করলে সুফল, মন্দ কর্ম করলে কুফল; লঙ্কা খেলে ঝাল লাগবে না? এ-সব তাঁর লীলা-খেলা”

    Ramakrishna 237: “ভাল কর্ম করলে সুফল, মন্দ কর্ম করলে কুফল; লঙ্কা খেলে ঝাল লাগবে না? এ-সব তাঁর লীলা-খেলা”

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়িমধ্যে

    চতুর্দশ পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ১৭ই জুন

    শ্রীরামকৃষ্ণ দক্ষিণেশ্বরে ভক্তসঙ্গে

    তান্ত্রিকভক্ত ও সংসার—নির্লিপ্তেরও ভয়

    তান্ত্রিকভক্ত—আজ্ঞা হাঁ, পাহাড়ের উপর দেখা যায় গোলাপের ক্ষেত। যতদূর চক্ষু যায় কেবল গোলাপের ক্ষেত।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—পরমহংস দেখে, এ-সব তাঁর মায়ার ঐশ্বর্য। সৎ-অসৎ, ভাল-মন্দ, পাপ-পুণ্য। সব বড় দূরের কথা। সে অবস্থায় দল টল থাকে না।

    তান্ত্রিকভক্ত ও কর্মফল, পাপ-পুণ্য—Sin and Responsibility

    তান্ত্রিকভক্ত—তবে কর্মফল আছে?

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—তাও আছে। ভাল কর্ম করলে সুফল, মন্দ কর্ম করলে কুফল; লঙ্কা খেলে ঝাল লাগবে না? এ-সব তাঁর লীলা-খেলা।

    তান্ত্রিকভক্ত—আমাদের উপায় কি? কর্মের ফল তো আছে?

    শ্রীরামকৃষ্ণ—থাকলেই বা। তাঁর ভক্তের আলাদা কথা।

    এই বলিয়া (Kathamrita) গান গাইতেছেন:

    মন রে কৃষি কাজ জানো না।
    এমন মানব-জমিন রইল পতিত, আবাদ করলে ফলত সোনা।
    কালীনামে দাওরে বেড়া, ফললে তছরূপ হবে না।
    সে যে মুক্তকেশীর শক্ত বেড়া, তার কাছেতে যম ঘেঁসে না ॥
    গুরুদত্ত বীজ রোপণ করে, ভক্তিবারি সেঁচে দেনা ৷
    একা যদি না পারিস মন, রামপ্রসাদকে সঙ্গে নেনা ॥

    আবার গান গাইতেছেন:

    শমন আসবার পথ ঘুচেছে, আমার মনের সন্দ ঘুচে গেছে।
    ওরে আমার ঘরের নবদ্বারে চারি শিব চৌকি রয়েছে ॥
    এক খুঁটিতে ঘর রয়েছে, তিন রজ্জুতে বাঁধা আছে।
    সহস্রদল কমলে শ্রীনাথ অভয় দিয়ে বসে আছে ॥

    “কাশীতে ব্রাহ্মণই মরুক আর বেশ্যাই মরুক শিব হবে।

    “যখন হরিনামে, কালীনামে, রামনামে, চক্ষে জল আসে তখনই সন্ধ্যা-কবচাদির কিছুই প্রয়োজন নাই। কর্মত্যাগ হয়ে যায়। কর্মের ফল (Kathamrita) তার কাছে যায় না।”

    ঠাকুর (Ramakrishna) আবার গান গাইতেছেন:

    ভাবিলে ভাবের উদয় হয়।
    যেমন ভাব, তেমনি লাভ, মূল সে প্রত্যয়।
    কালীপদ সুধাহ্রদে চিত্ত যদি রয় (যদি চিত্ত ডুবে রয়)।
    তবে পূজা-হোম যাগযজ্ঞ কিছু নয়।

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 238: “হাবাতেগুলোর বিশ্বাস হয় না! সর্বদাই সংশয়! আত্মার সাক্ষাৎকার না হলে সব সংশয় যায় না”

    Ramakrishna 238: “হাবাতেগুলোর বিশ্বাস হয় না! সর্বদাই সংশয়! আত্মার সাক্ষাৎকার না হলে সব সংশয় যায় না”

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়িমধ্যে

    চতুর্দশ পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ১৭ই জুন

    শ্রীরামকৃষ্ণ দক্ষিণেশ্বরে ভক্তসঙ্গে

    তান্ত্রিকভক্ত ও সংসার—নির্লিপ্তেরও ভয়

    ঠাকুর (Ramakrishna) আবার গান গাহিতেছেন:

    ত্রিসন্ধ্যা যে বলে কালী, পূজা সন্ধ্যা সে কি চায় ৷
    সন্ধ্যা তার সন্ধ্যানে ফিরে, কভু সন্ধি নাহি পায় ॥
    গয়া গঙ্গা প্রভাসাদি কাশী কাঞ্চী কেবা চায় ৷
    কালী কালী কালী বলে আমার অজপা যদি ফুরায় ॥

    “তাঁতে মগ্ন হলে আর অসদ্বুদ্ধি, পাপবুদ্ধি থাকে না।”

    তান্ত্রিকভক্ত—আপনি যা বলেছেন “বিদ্যার আমি” থাকে।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—বিদ্যার আমি, ভক্তের আমি। দাস আমি, ভাল আমি থাকে। বজ্জাত আমি চলে যায়। (হাস্য)

    তান্ত্রিকভক্ত—আজ্ঞা, আমাদের অনেক সংশয় চলে গেল।

    শ্রীরামকৃষ্ণ—আত্মার সাক্ষাৎকার হলে সব সন্দেহ ভঞ্জন হয়।

    তান্ত্রিকভক্ত ও ভক্তির তমঃ—হাবাতের সংশয়—অষ্টসিদ্ধি 

    “ভক্তির তমঃ আন। বল, কি! রাম বলেছি (Ramakrishna), কালী বলেছি, আমার আবার বন্ধন; আমার আবার কর্মফল।”

    ঠাকুর (Ramakrishna) আবার গান গাহিতেছেন:

      আমি দুর্গা দুর্গা বলে মা যদি মরি
    আখেরে এ-দীনে না তারো কেমনে, জানা যাবে গো শংকরী।
    নাশি গো ব্রাহ্মণ, হত্যা করি ভ্রূণ, সুরাপান আদি বিনাশী নারী;
       এ-সব পাতক না ভাবি তিলেক (ও মা) ব্রহ্মপদ নিতে পারি।

    শ্রীরামকৃষ্ণ আবার বলিতেছেন—বিশ্বাস! বিশ্বাস! বিশ্বাস! গুরু বলে দিয়েছেন, রামই সব হয়ে রয়েছেন; ‘ওহি রাম ঘট্‌ ঘট্‌মে লেটা!’ কুকুর রুটি খেয়ে যাচ্ছে। ভক্ত বলছে, ‘রাম! দাঁড়াও, দাঁড়াও রুটিতে ঘি মেখে দিই’ এমনি গুরুবাক্যে বিশ্বাস।

    “হাবাতেগুলোর বিশ্বাস হয় না! সর্বদাই সংশয়! আত্মার সাক্ষাৎকার না হলে সব সংশয় যায় না।

    “শুদ্ধাভক্তি—কোন কামনা থাকবে না, সেই ভক্তি দ্বারা তাঁকে শীঘ্র পাওয়া যায়।

    “অণিমাদি সিদ্ধি—এ-সব কামনা। কৃষ্ণ অর্জুনকে বলেছিলেন, ভাই, অণিমাদি সিদ্ধাই, একটিও থাকলে ঈশ্বরলাভ হয় না; একটু শক্তি বাড়তে পারে।”

    “তান্ত্রিকভক্ত—আজ্ঞে, তান্ত্রিক ক্রিয়া আজকাল কেন ফলে না?

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—সর্বাঙ্গীণ হয় না, আর ভক্তিপূর্বক হয় না—তাই ফলে না।

    এইবার ঠাকুর কথা সাঙ্গ করিতেছেন। বলিতেছেন (Ramakrishna), ভক্তিই সার; ঠিক ভক্তের কোন ভয় ভাবনা নাই। মা সব জানে। বিড়াল ইঁদুরকে ধরে একরকম করে, কিন্তু নিজের ছানাকে আর-একরকম করে ধরে।

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Kalpataru Utsav: আজ ‘কল্পতরু উৎসব’, এই দিনেই ঠাকুর রামকৃষ্ণ বলেছিলেন, ‘‘তোমাদের চৈতন্য হোক’’

    Kalpataru Utsav: আজ ‘কল্পতরু উৎসব’, এই দিনেই ঠাকুর রামকৃষ্ণ বলেছিলেন, ‘‘তোমাদের চৈতন্য হোক’’

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ইংরেজি নতুন বছরের পয়লা দিন বলে কথা। বাঙালি মেতেছে বর্ষবরণের আনন্দে। এ আর নতুন কী! তবে ফি বছর ১ জানুয়ারির গুরুত্ব বাঙালির কাছে অন্যভাবেও রয়েছে, এদিন কল্পতর উৎসব (Kalpataru Utsav)। এদিনই বিশ্ববন্দিত হিন্দু ধর্মের প্রচারক স্বামী বিবেকানন্দের গুরু, ঠাকুর শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব তাঁর শিষ্যদের উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘‘তোমাদের চৈতন্য হোক’’। সকাল থেকেই দক্ষিণেশ্বর মন্দির থেকে শুরু করে রাজ্যের সর্বত্র ভক্তরা পালন করছেন কল্পতরু দিবস। ভোর থেকেই ভক্তদের ঢল দক্ষিণেশ্বর-কাশীপুর উদ্যানবাটিতে। এই দিনটির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণদেবের (Sri Ramakrishna) স্মৃতি। ১৮৮৬ সালের ১ জানুয়ারি কল্পতরু রূপে ভক্তদের আশীর্বাদ করেছিলেন ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ।

    ঠাকুরের সংক্ষিপ্ত জীবনী

    পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার আরামবাগ মহকুমার কামারপুকুর গ্রামে ১৮৩৬ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি এক দরিদ্র বৈষ্ণব ক্ষুদিরাম চট্টোপাধ্যায় এবং চন্দ্রমণি দেবীর সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়। কথিত আছে, সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগে গয়া তীর্থ ভ্রমণে গিয়ে ক্ষুদিরাম চট্টোপাধ্যায়, গদাধর বিষ্ণুকে স্বপ্নে দর্শন করেন। তাই নিজের চতুর্থ সন্তানের নাম তিনি রাখলেন গদাধর চট্টোপাধ্যায়। দাদা রামকুমার চট্টোপাধ্যায়ের হাত ধরে ১৮৫৫ সালে গদাধর চট্টোপাধ্যায়ের কলকাতায় আগমন ঘটে। কারণ মাহিষ্য সমাজের জমিদার পত্নী রানি রাসমণি দক্ষিণেশ্বরে কালীমন্দির প্রতিষ্ঠা করেছেন। রানিমা প্রধান পুরোহিতের দায়িত্বভার অর্পণ করেছেন কামারপুকুরের রামকুমারের হাতে। তরুণ গদাধর দাদাকে পুজোতে সাহায্য করবেন। ১ বছরের মধ্যে ছন্দপতন। আকস্মিকভাবেই ১৮৫৬ সালে মৃত্যু হল রামকুমার চট্টোপাধ্যায়ের। তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন গদাধর চট্টোপাধ্যায়।

    দক্ষিণেশ্বর কালীমন্দিরের প্রধান পুরোহিতের দায়িত্বভার গ্রহণ করলেন তিনি। মন্দিরের ঠিক উত্তর-পশ্চিম কোনে তরুণ পুরোহিতের জন্য একটি ছোট্ট ঘর বরাদ্দ করা হল। শোনা যায়, এরপরেই রানি রাসমনির জামাতা মথুরামোহন গদাধর চট্টোপাধ্যায়ের নামকরণ রামকৃষ্ণ (Sri Ramakrishna) করেন, তবে এ নিয়ে বিভিন্ন মত রয়েছে, কেউ কেউ বলেন যে তাঁর এই নামকরণ করেন ঠাকুরের অন্যতম গুরু তোতাপুরী। প্রথাগত শিক্ষা তাঁর কিছুই ছিল না সেভাবে। কিন্তু মুখে মুখে বলে দিতেন হিন্দু শাস্ত্রের সমস্ত গূঢ়তত্ত্ব, অতি সরলভাষায়, একেবারে গল্পের ছলে। এজন্য তাঁকে গল্পের রাজাও বলা হয়। পরবর্তীকালে তাঁর এই বাণী সংকলিত হয় কথামৃত নামক গ্রন্থে। এরমধ্যে ঠাকুরের (Kalpataru Utsav) বিবাহ সম্পন্ন হয় কামারপুকুরের তিন মাইল উত্তর-পশ্চিমে জয়রামবাটী গ্রামের রামচন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের কন্যা সারদাদেবীর সঙ্গে। সেটা ১৮৫৯ সালে। এতদিনে বঙ্গীয় শিক্ষিত সমাজ তাঁকে গুরুর আসনে বসিয়ে ফেলেছে। শিষ্য তালিকায় স্থান পেয়েছেন কেশবচন্দ্র সেন সমেত অন্যান্য গন্যমান্যরা। 

    ১ জানুয়ারী ১৮৮৬

    শরীরে মারণ রোগ বাসা বাঁধলে, ডাক্তার মহেন্দ্রলাল সরকারের নির্দেশে তিনি নিজেকে গৃহবন্দি রাখেন প্রায় এক মাস। ১৮৮৬ খ্রিস্টাব্দের ১ জানুয়ারি কাশীপুর উদ্যানবাটিতে উপস্থিত রয়েছেন প্রায় ৩০জন মতো গৃহী ভক্ত। সকলে হাতে ফুল নিয়ে উপস্থিত। আজ ঠাকুরের দর্শন পাওয়া যাবে। ঘড়ির কাঁটায় তখন ঠিক দুপুর তিনটে। দোতলা ঘর থেকে তিনি নেমে এলেন বাগানে। পরনে সেই চিরাচরিত পোশাক। লাল পেড়ে ধুতি। উপস্থিত গৃহী ভক্তরা তাঁদের হাতে রাখা ফুল ঠাকুরের চরণে অঞ্জলি দিতে থাকেন। কথিত আছে, ঠাকুর তখন নাট্যকার গিরিশ ঘোষকে বলেন, ‘‘হ্যাঁ গো, তুমি যে আমার নামে এত কিছু চারিদিকে বলো, তো আমি আসলে কী?’’ গিরিশ ঘোষ উত্তর দিলেন, ‘‘তুমিই নররূপ ধারী পূর্ণব্রহ্ম ভগবান, আমার মত পাপী-তাপীদের মুক্তির জন্যই তোমার মর্ত্যে আগমন।’’ সবাই তখন ঠাকুরের চরণ স্পর্শ করলেন এবং ঠাকুর (Sri Ramakrishna) বললেন, ‘‘তোমাদের চৈতন্য হোক’’।

    এদিনের উৎসবকে কল্পতরু (Kalpataru Utsav) কেন বলা হয়?

    হরিবংশ ইত্যাদি পুরাণে ‘কল্পতরু’র উল্লেখ রয়েছে। দেবতা এবং অসুরদের মধ্যে সমুদ্র মন্থন হয়েছিল, পুরাণ অনুযায়ী সমুদ্র মন্থনকালে অমৃত, লক্ষ্মীদেবী, ঐরাবত ইত্যাদির সঙ্গে উঠে আসে একটি বৃক্ষ-ও। যাকে পারিজাত বৃক্ষ বলা হত। পরবর্তীতে দেবরাজ ইন্দ্রের বিখ্যাত নন্দনকাননের স্থান পায় এই পারিজাত বৃক্ষ এবং সেখান থেকে স্ত্রী সত্যভামার আবদারে শ্রীকৃষ্ণ (Sri Ramakrishna) পৃথিবীতে নিয়ে আসেন এই বৃক্ষ। এই পারিজাত বৃক্ষকে-ই ‘কল্পতরু’ বলা হয়েছে। অর্থাৎ সেই বৃক্ষ, যার কাছে যা চাওয়া হয় তাই পাওয়া যায়। কল্পতরু উৎসবের (Kalpataru Utsav) দিন ঠাকুরের ভক্তরা তাঁকে অবতার রূপে মেনে নেন। কথিত আছে, সেদিন উপস্থিত সমস্ত ভক্তের মনোবাঞ্ছা ঠাকুরের কৃপায় পূরণ হয়েছিল। ভক্তদের বিশ্বাস রয়েছে, এই দিন ঠাকুর রামকৃষ্ণদেব সকলের মনের ইচ্ছা পূরণ করেন।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 236: “পাপ-পুণ্য কি জানো? পরমহংস অবস্থায় দেখে, তিনিই সুমতি দেন, তিনিই কুমতি দেন”

    Ramakrishna 236: “পাপ-পুণ্য কি জানো? পরমহংস অবস্থায় দেখে, তিনিই সুমতি দেন, তিনিই কুমতি দেন”

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়িমধ্যে

    চতুর্দশ পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ১৭ই জুন

    শ্রীরামকৃষ্ণ দক্ষিণেশ্বরে ভক্তসঙ্গে

    তান্ত্রিকভক্ত ও সংসার—নির্লিপ্তেরও ভয়

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে নিজের ঘরে আহারান্তে কিঞ্চিৎ বিশ্রাম করিয়াছেন। অধর ও মাস্টার আসিয়া প্রণাম করিলেন। একটি তান্ত্রিক ভক্তও আসিয়াছেন। রাখাল, হাজরা, রামলাল প্রভৃতি ঠাকুরের কাছে আজকাল থাকেন (Kathamrita)। আজ রবিবার, ১৭ই জুন, ১৮৮৩ খ্রীষ্টাব্দ। (৪ঠা আষাঢ়) জৈষ্ঠ শুক্লা দ্বাদশী।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (ভক্তদের প্রতি)—সংসারে হবে না কেন? তবে বড় কঠিন। জনকাদি জ্ঞানলাভ করে সংসারে এসেছিলেন। তবুও ভয়! নিষ্কাম সংসারীরও ভয়। ভৈরবীকে দেখে জনক মুখ হেঁট করেছিল; স্ত্রীদর্শনে সঙ্কোচ হয়েছে! ভৈরবী বললে, জনক! তোমার দেখছি এখনও জ্ঞান হয় নাই; তোমার স্ত্রী-পুরুষ বোধ রয়েছে। কাজলের ঘরে যতই সেয়ানা হও না কেন, একটু না একটু কালো দাগ গায়ে লাগবে।

    “দেখেছি, সংসারীভক্ত যখন পূজা করছে গরদ পরে তখন বেশ ভাবটি। এমন কি জলযোগ পর্যন্ত এক ভাব। তারপর নিজ মূর্তি; আবার রজঃ তমঃ।

    “সত্ত্বগুণে ভক্তি হয়। কিন্তু ভক্তির সত্ত্ব, ভক্তির রজঃ, ভক্তির তমঃ আছে। ভক্তির সত্ত্ব, বিশুদ্ধ সত্ত্ব—এ-হলে ঈশ্বর (Ramakrishna) ছাড়া আর কিছুতেই মন থাকে না; কেবল দেহটা যাতে রক্ষা হয় ওইটুকু শরীরের উপর মন থাকে।”

    পরমহংস ত্রিগুণাতীত ও কর্মফলের অতীত—পাপ-পুণ্যের অতীত—কেশব সেন ও দল 

    “পরমহংস (Ramakrishna) তিনগুণের অতীত। তার ভিতর তিনগুণ আছে আবার নাই। ঠিক বালক, কোন গুণের বশ নয়। তাই ছোট ছোট ছেলেদের পরমহংসরা কাছে আসতে দেয়, তাদের স্বভাব আরোপ করবে বলে।

    “পরমহংস সঞ্চয় করতে পারে না। এটা সংসারীদের পক্ষে নয়, তাদের পরিবারদের জন্য সঞ্চয় (Kathamrita) করতে হয়।”

    তান্ত্রিকভক্ত—পরমহংসের কি পাপ-পুণ্য বোধ থাকে?

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—কেশব সেন ওই কথা জিজ্ঞাসা করেছিল। আমি বললাম, আরও বললে তোমার দল টল থাকবে না। কেশব বললে, তবে থাক মহাশয়।

    “পাপ-পুণ্য কি জানো? পরমহংস অবস্থায় দেখে, তিনিই সুমতি দেন, তিনিই কুমতি দেন। তিতো মিঠে ফল কি নেই? কোন গাছে মিষ্ট ফল, কোন গাছে তিতো বা টক ফল। তিনি মিষ্ট আমগাছও করেছেন, আবার টক আমড়াগাছও করেছেন (Kathamrita)।”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 235: “জালে প্রথম প্রথম বড় বড় মাছ পড়ে—রুই, কাতলা… তারপর চুনোপুঁটি, পাঁকাল মাছ বেরোয়”

    Ramakrishna 235: “জালে প্রথম প্রথম বড় বড় মাছ পড়ে—রুই, কাতলা… তারপর চুনোপুঁটি, পাঁকাল মাছ বেরোয়”

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়িমধ্যে

    ত্রয়োদশ পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ১৫ই জুন

    সাধনার প্রয়োজন—গুরুবাক্যে বিশ্বাস—ব্যাসের বিশ্বাস

    জ্ঞানীর লক্ষণ—সাধনসিদ্ধ ও নিত্যসিদ্ধ 

    “সোঽহংসোঽহম্‌ কল্লেই হয় না। জ্ঞানীর (Ramakrishna) লক্ষণ আছে। নরেন্দ্রের চোখ সুমুখঠেলা। এঁরও কপাল ও চোখের লক্ষণ ভাল।

    “আর, সব্বায়ের এক অবস্থা নয়। জীব চার প্রকার বলেছে,—বদ্ধজীব, মুমুক্ষুজীব, মুক্তজীব, নিত্যজীব। সকলকেই যে সাধন (Kathamrita) করতে হয়, তাও নয়। নিত্যসিদ্ধ আর সাধনসিদ্ধ। কেউ অনেক সাধন করে ঈশ্বরকে পায়, কেউ জন্ম অবধি সিদ্ধ, যেমন প্রহ্লাদ। হোমাপাখি আকাশে থাকে। ডিম পাড়লে ডিম পড়তে থাকে। পড়তে পড়তেই ডিম ফুটে। ছানাটা বেরিয়ে আবার পড়তে থাকে। এখনও এত উঁচু যে, পড়তে পড়তে পাখা ওঠে। যখন পৃথিবীর কাছে এসে পড়ে, পাখিটা দেখতে পায়, তখন বুঝতে পারে যে, মাটিতে লাগলে চুরমার হয়ে যাবে। তখন একেবারে মার দিকে চোঁচা দৌড় দিয়ে উড়ে যায়। কোথায় মা! কোথায় মা!

    “প্রহ্লাদাদি নিত্যসিদ্ধের সাধন-ভজন পরে। সাধনের আগে ঈশ্বরলাভ (Ramakrishna)। যেমন লাউ কুমড়োর আগে ফল, তারপরে ফুল। (রাখালের বাপের দিকে চাহিয়া) নীচ বংশেও যদি নিত্যসিদ্ধ জন্মায়, সে তাই হয়, আর কিছু হয় না। ছোলা বিষ্ঠাকুড়ে পড়লে ছোলাগাছই হয়!”

    শক্তিবিশেষ ও বিদ্যাসাগর—শুধু পাণ্ডিত্য 

    “তিনি কারুকে বেশি শক্তি, কারুকে কম শক্তি দিয়েছেন। কোনখানে একটা প্রদীপ জ্বলছে, কোনখানে একটা মশাল জ্বলছে। বিদ্যাসাগরের এক কথায় তাকে চিনেছি, কতদুর বুদ্ধির দৌড়! যখন বললুম (Kathamrita) শক্তিবিশেষ, তখন বিদ্যাসাগর বললে, মহাশয়, তবে কি তিনি কারুকে বেশি, কারুকে কম শক্তি দিয়েছেন? আমি অমনি বললুম, তা দিয়েছেন বইকি। শক্তি কম বেশি না হলে তোমার নাম এত কম হবে কেন? তোমার বিদ্যা, তোমার দয়া—এই সব শুনে তো আমরা এসেছি। তোমার তো দুটো শিং বেরোয় নাই! বিদ্যাসাগরের এত বিদ্যা, এত নাম, কিন্তু এত কাঁচা কথা বলে ফেললে, ‘তিনি কি কারুকে কম শক্তি দিয়েছেন?’ কি জান, জালে প্রথম প্রথম বড় বড় মাছ পড়ে—রুই, কাতলা। তারপর জেলেরা পাঁকটা পা দিয়ে ঘেঁটে দেয়, তখন চুনোপুঁটি, পাঁকাল এই সব মাছ বেরোয়—একটু দেখতে দেখতে ধরা পড়ে। ঈশ্বরকে না জানলে ক্রমশঃ ভিতরের চুনোপুঁটি বেরিয়ে পড়ে। শুধু পণ্ডিত (Ramakrishna) হলে কি হবে?”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 234: “মন স্থির হলে বায়ু স্থির হয়—কুম্ভক, এই কুম্ভক ভক্তিযোগেতেও হয়; ভক্তিতে বায়ু স্থির হয়ে যায়”

    Ramakrishna 234: “মন স্থির হলে বায়ু স্থির হয়—কুম্ভক, এই কুম্ভক ভক্তিযোগেতেও হয়; ভক্তিতে বায়ু স্থির হয়ে যায়”

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়িমধ্যে

    ত্রয়োদশ পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ১৫ই জুন

    সাধনার প্রয়োজন—গুরুবাক্যে বিশ্বাস—ব্যাসের বিশ্বাস

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ও যোগতত্ত্ব—জ্ঞানযোগ ও ভক্তিযোগ 

    ‘আমিই সেই’ ‘আমি শুদ্ধ আত্মা’—এটি জ্ঞানীদের মত। ভক্তেরা বলে, এ-সব ভগবানের ঐশ্বর্য (Ramakrishna)। ঐশ্বর্য না থাকলে ধনীকে কে জানতে পারত? তবে সাধকের ভক্তি দেখে তিনি যখন বলবেন, ‘আমিও যা, তুইও তা’ তখন এক কথা। রাজা বসে আছেন, খানসামা যদি রাজার আসনে গিয়ে বসে, আর বলে, ‘রাজা তুমিও যা, আমিও তা’ লোকে পাগল বলবে। তবে খানসামার সেবাতে সন্তুষ্ট হয়ে রাজা একদিন বলেন, ‘ওরে, তুই আমার কাছে বোস, ওতে দোষ নাই; তুইও যা, আমিও তা!’ তখন যদি সে গিয়ে বসে, তাতে দোষ হয় না। সামান্য জীবেরা যদি বলে, ‘আমি সেই’ সেটা ভাল না। জলেরই তরঙ্গ; তরঙ্গের কি জল হয় (Kathamrita)?

    “কথাটা এই—মন স্থির না হলে যোগ হয় না, যে পথেই যাও। মন যোগীর বশ! যোগী মনের বশ নয়।

    “মন স্থির হলে বায়ু স্থির হয়—কুম্ভক হয়। এই কুম্ভক ভক্তিযোগেতেও হয়; ভক্তিতে বায়ু স্থির হয়ে যায়। ‘নিতাই আমার মাতা হাতি’, ‘নিতাই আমার মাতা হাতি!’ এই বলতে বলতে যখন ভাব হয়ে যায়, সব কথাগুলো বলতে (Kathamrita) পারে না, কেবল ‘হাতি’! ‘হাতি’! তারপর শুধু ‘হা’। ভাবে বায়ু স্থির হয়—কুম্ভক (Ramakrishna) হয়।

    “একজন ঝাঁট দিচ্ছে, একজন লোক এসে বললে, ‘ওগো, অমুক নেই, মারা গেছে!’ যে ঝাঁট দিচ্ছে তার যদি আপনার লোক না হয়, সে ঝাঁট দিতে থাকে, আর মাঝে মাঝে বলে, ‘আহা, তাই তো গা, লোকটা মারা গেল! বেশ ছিল!’ এদিকে ঝাঁটাও চলছে। আর যদি আপনার লোক হয়, তাহলে ঝাঁটা হাত থেকে পড়ে যায়, আর ‘এ্যাঁ’! বলে বসে পড়ে। তখন বায়ু স্থির হয়ে গেছে; কোন কাজ বা চিন্তা করতে পারে না। মেয়েদের ভিতর দেখ নাই! যদি কেউ অবাক্‌ হয়ে একটা জিনিস দেখে বা একটা কথা শুনে, তখন অন্য মেয়েরা বলে (Kathamrita), তোর ভাব লেগেছে নাকি লো! এখানেও বায়ু স্থির (Ramakrishna) হয়েছে, তাই অবাক্‌, হাঁ করে থাকে।”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 233: “ব্যাসদেব তীরে বললেন, হে যমুনে, যদি আজ কিছু খেয়ে না থাকি, তোমার জল দুভাগ হয়ে যাবে”

    Ramakrishna 233: “ব্যাসদেব তীরে বললেন, হে যমুনে, যদি আজ কিছু খেয়ে না থাকি, তোমার জল দুভাগ হয়ে যাবে”

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়িমধ্যে

    ত্রয়োদশ পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ১৫ই জুন

    সাধনার প্রয়োজন—গুরুবাক্যে বিশ্বাস—ব্যাসের বিশ্বাস

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—সাধন বড় দরকার। তবে হবে না কেন? ঠিক বিশ্বাস যদি হয়, তাহলে আর বেশি খাটতে হয় না। গুরুবাক্যে বিশ্বাস!

    “ব্যাসদেব যমুনা পার হবেন, গোপীরা এসে উপস্থিত। গোপীরাও পার হবে কিন্তু খেয়া মিলছে না। গোপীরা বললে, ঠাকুর! এখন কি হবে? ব্যাসদেব বললেন (Kathamrita), আচ্ছা তোদের পার করে দিচ্ছি, কিন্তু আমার বড় খিদে পেয়েছে, কিছু আছে? গোপীদের কাছে দুধ, ক্ষীর, নবনী অনেক ছিল, সমস্ত ভক্ষণ করলেন। গোপীরা বললে, ঠাকুর পারের কি হল। ব্যাসদেব তখন তীরে গিয়ে দাঁড়ালেন; বললেন, হে যমুনে, যদি আজ কিছু খেয়ে না থাকি, তোমার জল দুভাগ হয়ে যাবে, আর আমরা সব সেই পথ দিয়ে পার হয়ে যাব। বলতে বলতে জল দুধারে সরে গেল। গোপীরা অবাক্‌; ভাবতে লাগল—উনি এইমাত্র এত খেলেন, আবার বলছেন, ‘যদি আমি কিছু খেয়ে না থাকি?’

    “এই দৃঢ় বিশ্বাস। আমি না, হৃদয় মধ্যে নারায়ণ (Ramakrishna)—তিনি খেয়েছেন।

    “শঙ্করাচার্য এদিকে ব্রহ্মজ্ঞানী; আবার প্রথম প্রথম ভেদবুদ্ধিও ছিল (Kathamrita)। তেমন বিশ্বাস ছিল না। চণ্ডাল মাংসের ভার লয়ে আসছে, উনি গঙ্গাস্নান করে উঠেছেন। চণ্ডালের গায়ে গা লেগে গেছে। বলে উঠলেন, ‘এই তুই আমায় ছুঁলি!’ চণ্ডাল বললে, ‘ঠাকুর, তুমিও আমায় ছোঁও নাই, আমিও তোমায় ছুঁই নাই।’ যিনি শুদ্ধ আত্মা, তিনি শরীর নন, পঞ্চভূত নন, চতুর্বিংশতি তত্ত্ব নন। তখন শঙ্করের জ্ঞান হয়ে গেল।

    “জড়ভরত রাজা রহুগণের পালকি বহিতে বহিতে যখন আত্মজ্ঞানের কথা বলতে (Kathamrita) লাগল, রাজা (Ramakrishna) পালকি থেকে নিচে এসে বললে, তুমি কে গো! জড়ভরত বললেন, আমি নেতি, নেতি, শুদ্ধ আত্মা। একেবারে ঠিক বিশ্বাস, আমি শুদ্ধ আত্মা।”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Raja Bikramjit Ghosh: বাঙালি রাজা বিক্রমজিৎ ঘোষের অমিত বিক্রম গাথা জানেন?

    Raja Bikramjit Ghosh: বাঙালি রাজা বিক্রমজিৎ ঘোষের অমিত বিক্রম গাথা জানেন?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দিল্লির সুলতানকে (Delhi sultanate) প্রতিহত করেছিলেন বাঙালি রাজা বিক্রমজিৎ ঘোষ (Raja Bikramjit Ghosh)। বাংলার মঙ্গলকোটের সদগোপ শাসক বিক্রমজিৎ। তাঁর সাহস ও দৃঢ় সঙ্কল্পের গল্প আজও ফেরে লোকের মুখে মুখে। চতুর্দশ শতাব্দীর এই শাসক পরিচিত ছিলেন বিক্রম কেশরী নামে। দিল্লির সুলতানদের একাধিক আক্রমণ তিনি রুখে দিয়েছিলেন অমিত বিক্রমে। 

    মঙ্গলকোট গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য কেন্দ্র (Raja Bikramjit Ghosh)

    সেন ও দেব বংশের পতনের পর, উত্তর দিক থেকে বারবার আক্রমণের মুখোমুখি হয়েছিল বাংলা। শেষ সেন রাজা মধু সেন এবং দেব রাজা দনুজ রায়ের মৃত্যুর ফলে এই অঞ্চলে নেতৃত্বের শূন্যতা সৃষ্টি হয়। সেই সময়ই একজন শক্তিশালী নেতা হিসেবে আবির্ভূত হন রাজা বিক্রমজিৎ ঘোষ। মঙ্গলকোট ছিল বাংলার গোপভূম অঞ্চলে অবস্থিত। রাজা বিক্রমজিতের শাসন কালে এটি একটি সমৃদ্ধশালী এবং কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ শহর ছিল। ঐতিহাসিকভাবে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য কেন্দ্র ছিল। এখান থেকেই লঙ্কা (বর্তমানে শ্রীলঙ্কা), বার্মা (অধুনা মায়ানমার), থাইল্যান্ড-সহ দূরবর্তী অঞ্চলের সঙ্গে বাণিজ্যিক লেনদেন পরিচালনা হত।

    কুলদেবী ছিলেন মা অভয়া চণ্ডী

    ঐতিহাসিকভাবে বাংলায় উল্লেখযোগ্য প্রভাব ছিল সদগোপদের। মেদিনীপুর রাজ, নারায়ণগড় রাজ, বলরামপুর রাজ, নাড়াজোল রাজ এস্টেটের মতো বিশিষ্ট এস্টেট ও সমগ্র অঞ্চলের অন্যান্য জমিদারি নিয়ন্ত্রণ করতেন এই সদগোপরা। মঙ্গলকোটের সদগোপ শাসক পরিবার গৌড়িয় বৈষ্ণব ঐতিহ্যের গভীরে প্রোথিত ছিল। এঁদের কুলদেবী ছিলেন মা অভয়া চণ্ডী। ত্রয়োদশ (Raja Bikramjit Ghosh) শতাব্দীর শেষ ভাগ ও চতুর্দশ শতাব্দীর শুরুর দিকে বাংলায় প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করেছিল দিল্লির সুলতানরা। বাংলায় তারা বারংবার হানা দিয়েছিল। এই সময়ই রুখে দাঁড়ান মঙ্গলকোটের রাজা বিক্রমজিৎ ঘোষ। সদগোপ সম্প্রদায়ের এই রাজার বাধায় পিছু হটে দিল্লির  মুসলমান শাসকরা। মঙ্গলকোটের ওপর প্রথম বড় ধরনের আক্রমণ হয় ১৩০৩ সালে। নেতৃত্ব দেন উজবেক গাজি। এই বাহিনী মঙ্গলকোটের পশ্চিমাঞ্চলের জঙ্গলে শিবির গড়ে আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছিল।মা অভয়া চণ্ডীর একনিষ্ঠ ভক্ত রাজা বিক্রমজিৎ তাঁর সদগোপ যোদ্ধাদের সংগঠিত করে পাল্টা আক্রমণ করেন। প্রবল যুদ্ধে পরাস্ত হয় হানাদারেরা। বহু সৈন্যের মৃত্যু হয়। রাজা বিক্রমজিতের আদেশে তাদের মৃতদেহ ভাসিয়ে দেওয়া হয় অজয়ের জলে।

    আরও পড়ুন: ক্রিসমাসে পালিত হয় বীর বাল দিবস, কী কারণে জানেন?

    বিক্রমজিতের বিক্রম

    ১৩০৩ থেকে ১৩২৭ সালের মধ্যে দিল্লির সুলতানরা অন্তত ১৭ বার মঙ্গলকোট আক্রমণ করেছিল। এই ১৭ বারই বুক চিতিয়ে লড়াই করে শত্রুদের মুখের মতো জবাব দিয়ে মঙ্গলকোট রক্ষা করেছিলেন বিক্রমজিৎ। আক্রমণকারীদের মধ্যে বিশিষ্ট সাত হানাদার হল মহম্মদ, হাজি ফিরোজ, গুলাম পাঠান, মহম্মদ ইসমাইল গাজি, আব্দুন্নাহ গুজরাটি, মকচুম বিলায়ে এবং গজনাভি। বিক্রমজিতের নেতৃত্বে এই যুদ্ধগুলি কেবল সদগোপ যোদ্ধাদের সামরিক দক্ষতাই প্রদর্শন করেনি, রাজা বিক্রমজিতের কৌশলগত প্রজ্ঞাও প্রতিপন্ন করেছে। অমিত বীরত্বের কারণে তাঁকে “বিক্রম কেশরী” উপাধিতে ভূষিত করা হয় (Raja Bikramjit Ghosh)। দিল্লির সুলতানদের বিশাল সম্পদ এবং নিরলস প্রচেষ্টা সত্ত্বেও, রাজা বিক্রমজিতের শাসনকালে তারা মঙ্গলকোটকে বশীভূত করতে ব্যর্থ হয়।

    সনাতন ধর্ম রক্ষায় ছিলেন একনিষ্ঠ

    রাজা বিক্রমজিৎ কেবল একজন যোদ্ধাই ছিলেন না, তিনি ছিলেন সংস্কৃতি ও সনাতন ধর্মের একজন পৃষ্ঠপোষকও। তাঁর দরবারে উদযাপিত হত গৌড়ীয় বৈষ্ণব ঐতিহ্য। গীতগোবিন্দ ছিল ভক্তির কেন্দ্রীয় গ্রন্থ। তিনি বাংলার সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় ঐতিহ্য বজায় রাখতে জানও বাজি রেখেছিলেন। মুসলমান শাসকদের আধিপত্যের মধ্যেও মাথা উঁচু করে সনাতন ধর্ম রক্ষায় অটল ছিলেন বিক্রমজিৎ। রাজা বিক্রমজিতের (Raja Bikramjit Ghosh) মৃত্যুর পর নতুন করে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয় মঙ্গলকোট। অস্থায়ীভাবে এই অঞ্চল দখল করে অটোমান হানাদারেরা। তারা এখানে নিহত জেনারেলদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে সমাধি নির্মাণ করে। যা তাদের বিজয়গাথা ঘোষণা করে। তাদের জয় ছাপিয়ে গিয়েছিল বিক্রমজিতের জয়। কারণ যতদিন তিনি বেঁচেছিলেন, ততদিন মঙ্গলকোটে দাঁত ফোটাতে পারেননি দিল্লির সুলতানরা। মুসলমাদের (Delhi sultanate) ওই সমাধি কি বিক্রমজিতের বিজয়গাথাও ঘোষণা করে না (Raja Bikramjit Ghosh)?

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  WhatsappFacebookTwitterTelegram এবং Google News পেজ।

     

LinkedIn
Share