Category: পরম্পরা

Get updated History and Heritage and Culture and Religion related news from the Madhyom news portal madhyom.com, West Bengal leading news portal Madhyom.com

  • Ramakrishna 233: “ব্যাসদেব তীরে বললেন, হে যমুনে, যদি আজ কিছু খেয়ে না থাকি, তোমার জল দুভাগ হয়ে যাবে”

    Ramakrishna 233: “ব্যাসদেব তীরে বললেন, হে যমুনে, যদি আজ কিছু খেয়ে না থাকি, তোমার জল দুভাগ হয়ে যাবে”

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়িমধ্যে

    ত্রয়োদশ পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ১৫ই জুন

    সাধনার প্রয়োজন—গুরুবাক্যে বিশ্বাস—ব্যাসের বিশ্বাস

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—সাধন বড় দরকার। তবে হবে না কেন? ঠিক বিশ্বাস যদি হয়, তাহলে আর বেশি খাটতে হয় না। গুরুবাক্যে বিশ্বাস!

    “ব্যাসদেব যমুনা পার হবেন, গোপীরা এসে উপস্থিত। গোপীরাও পার হবে কিন্তু খেয়া মিলছে না। গোপীরা বললে, ঠাকুর! এখন কি হবে? ব্যাসদেব বললেন (Kathamrita), আচ্ছা তোদের পার করে দিচ্ছি, কিন্তু আমার বড় খিদে পেয়েছে, কিছু আছে? গোপীদের কাছে দুধ, ক্ষীর, নবনী অনেক ছিল, সমস্ত ভক্ষণ করলেন। গোপীরা বললে, ঠাকুর পারের কি হল। ব্যাসদেব তখন তীরে গিয়ে দাঁড়ালেন; বললেন, হে যমুনে, যদি আজ কিছু খেয়ে না থাকি, তোমার জল দুভাগ হয়ে যাবে, আর আমরা সব সেই পথ দিয়ে পার হয়ে যাব। বলতে বলতে জল দুধারে সরে গেল। গোপীরা অবাক্‌; ভাবতে লাগল—উনি এইমাত্র এত খেলেন, আবার বলছেন, ‘যদি আমি কিছু খেয়ে না থাকি?’

    “এই দৃঢ় বিশ্বাস। আমি না, হৃদয় মধ্যে নারায়ণ (Ramakrishna)—তিনি খেয়েছেন।

    “শঙ্করাচার্য এদিকে ব্রহ্মজ্ঞানী; আবার প্রথম প্রথম ভেদবুদ্ধিও ছিল (Kathamrita)। তেমন বিশ্বাস ছিল না। চণ্ডাল মাংসের ভার লয়ে আসছে, উনি গঙ্গাস্নান করে উঠেছেন। চণ্ডালের গায়ে গা লেগে গেছে। বলে উঠলেন, ‘এই তুই আমায় ছুঁলি!’ চণ্ডাল বললে, ‘ঠাকুর, তুমিও আমায় ছোঁও নাই, আমিও তোমায় ছুঁই নাই।’ যিনি শুদ্ধ আত্মা, তিনি শরীর নন, পঞ্চভূত নন, চতুর্বিংশতি তত্ত্ব নন। তখন শঙ্করের জ্ঞান হয়ে গেল।

    “জড়ভরত রাজা রহুগণের পালকি বহিতে বহিতে যখন আত্মজ্ঞানের কথা বলতে (Kathamrita) লাগল, রাজা (Ramakrishna) পালকি থেকে নিচে এসে বললে, তুমি কে গো! জড়ভরত বললেন, আমি নেতি, নেতি, শুদ্ধ আত্মা। একেবারে ঠিক বিশ্বাস, আমি শুদ্ধ আত্মা।”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Raja Bikramjit Ghosh: বাঙালি রাজা বিক্রমজিৎ ঘোষের অমিত বিক্রম গাথা জানেন?

    Raja Bikramjit Ghosh: বাঙালি রাজা বিক্রমজিৎ ঘোষের অমিত বিক্রম গাথা জানেন?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দিল্লির সুলতানকে (Delhi sultanate) প্রতিহত করেছিলেন বাঙালি রাজা বিক্রমজিৎ ঘোষ (Raja Bikramjit Ghosh)। বাংলার মঙ্গলকোটের সদগোপ শাসক বিক্রমজিৎ। তাঁর সাহস ও দৃঢ় সঙ্কল্পের গল্প আজও ফেরে লোকের মুখে মুখে। চতুর্দশ শতাব্দীর এই শাসক পরিচিত ছিলেন বিক্রম কেশরী নামে। দিল্লির সুলতানদের একাধিক আক্রমণ তিনি রুখে দিয়েছিলেন অমিত বিক্রমে। 

    মঙ্গলকোট গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য কেন্দ্র (Raja Bikramjit Ghosh)

    সেন ও দেব বংশের পতনের পর, উত্তর দিক থেকে বারবার আক্রমণের মুখোমুখি হয়েছিল বাংলা। শেষ সেন রাজা মধু সেন এবং দেব রাজা দনুজ রায়ের মৃত্যুর ফলে এই অঞ্চলে নেতৃত্বের শূন্যতা সৃষ্টি হয়। সেই সময়ই একজন শক্তিশালী নেতা হিসেবে আবির্ভূত হন রাজা বিক্রমজিৎ ঘোষ। মঙ্গলকোট ছিল বাংলার গোপভূম অঞ্চলে অবস্থিত। রাজা বিক্রমজিতের শাসন কালে এটি একটি সমৃদ্ধশালী এবং কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ শহর ছিল। ঐতিহাসিকভাবে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য কেন্দ্র ছিল। এখান থেকেই লঙ্কা (বর্তমানে শ্রীলঙ্কা), বার্মা (অধুনা মায়ানমার), থাইল্যান্ড-সহ দূরবর্তী অঞ্চলের সঙ্গে বাণিজ্যিক লেনদেন পরিচালনা হত।

    কুলদেবী ছিলেন মা অভয়া চণ্ডী

    ঐতিহাসিকভাবে বাংলায় উল্লেখযোগ্য প্রভাব ছিল সদগোপদের। মেদিনীপুর রাজ, নারায়ণগড় রাজ, বলরামপুর রাজ, নাড়াজোল রাজ এস্টেটের মতো বিশিষ্ট এস্টেট ও সমগ্র অঞ্চলের অন্যান্য জমিদারি নিয়ন্ত্রণ করতেন এই সদগোপরা। মঙ্গলকোটের সদগোপ শাসক পরিবার গৌড়িয় বৈষ্ণব ঐতিহ্যের গভীরে প্রোথিত ছিল। এঁদের কুলদেবী ছিলেন মা অভয়া চণ্ডী। ত্রয়োদশ (Raja Bikramjit Ghosh) শতাব্দীর শেষ ভাগ ও চতুর্দশ শতাব্দীর শুরুর দিকে বাংলায় প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করেছিল দিল্লির সুলতানরা। বাংলায় তারা বারংবার হানা দিয়েছিল। এই সময়ই রুখে দাঁড়ান মঙ্গলকোটের রাজা বিক্রমজিৎ ঘোষ। সদগোপ সম্প্রদায়ের এই রাজার বাধায় পিছু হটে দিল্লির  মুসলমান শাসকরা। মঙ্গলকোটের ওপর প্রথম বড় ধরনের আক্রমণ হয় ১৩০৩ সালে। নেতৃত্ব দেন উজবেক গাজি। এই বাহিনী মঙ্গলকোটের পশ্চিমাঞ্চলের জঙ্গলে শিবির গড়ে আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছিল।মা অভয়া চণ্ডীর একনিষ্ঠ ভক্ত রাজা বিক্রমজিৎ তাঁর সদগোপ যোদ্ধাদের সংগঠিত করে পাল্টা আক্রমণ করেন। প্রবল যুদ্ধে পরাস্ত হয় হানাদারেরা। বহু সৈন্যের মৃত্যু হয়। রাজা বিক্রমজিতের আদেশে তাদের মৃতদেহ ভাসিয়ে দেওয়া হয় অজয়ের জলে।

    আরও পড়ুন: ক্রিসমাসে পালিত হয় বীর বাল দিবস, কী কারণে জানেন?

    বিক্রমজিতের বিক্রম

    ১৩০৩ থেকে ১৩২৭ সালের মধ্যে দিল্লির সুলতানরা অন্তত ১৭ বার মঙ্গলকোট আক্রমণ করেছিল। এই ১৭ বারই বুক চিতিয়ে লড়াই করে শত্রুদের মুখের মতো জবাব দিয়ে মঙ্গলকোট রক্ষা করেছিলেন বিক্রমজিৎ। আক্রমণকারীদের মধ্যে বিশিষ্ট সাত হানাদার হল মহম্মদ, হাজি ফিরোজ, গুলাম পাঠান, মহম্মদ ইসমাইল গাজি, আব্দুন্নাহ গুজরাটি, মকচুম বিলায়ে এবং গজনাভি। বিক্রমজিতের নেতৃত্বে এই যুদ্ধগুলি কেবল সদগোপ যোদ্ধাদের সামরিক দক্ষতাই প্রদর্শন করেনি, রাজা বিক্রমজিতের কৌশলগত প্রজ্ঞাও প্রতিপন্ন করেছে। অমিত বীরত্বের কারণে তাঁকে “বিক্রম কেশরী” উপাধিতে ভূষিত করা হয় (Raja Bikramjit Ghosh)। দিল্লির সুলতানদের বিশাল সম্পদ এবং নিরলস প্রচেষ্টা সত্ত্বেও, রাজা বিক্রমজিতের শাসনকালে তারা মঙ্গলকোটকে বশীভূত করতে ব্যর্থ হয়।

    সনাতন ধর্ম রক্ষায় ছিলেন একনিষ্ঠ

    রাজা বিক্রমজিৎ কেবল একজন যোদ্ধাই ছিলেন না, তিনি ছিলেন সংস্কৃতি ও সনাতন ধর্মের একজন পৃষ্ঠপোষকও। তাঁর দরবারে উদযাপিত হত গৌড়ীয় বৈষ্ণব ঐতিহ্য। গীতগোবিন্দ ছিল ভক্তির কেন্দ্রীয় গ্রন্থ। তিনি বাংলার সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় ঐতিহ্য বজায় রাখতে জানও বাজি রেখেছিলেন। মুসলমান শাসকদের আধিপত্যের মধ্যেও মাথা উঁচু করে সনাতন ধর্ম রক্ষায় অটল ছিলেন বিক্রমজিৎ। রাজা বিক্রমজিতের (Raja Bikramjit Ghosh) মৃত্যুর পর নতুন করে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয় মঙ্গলকোট। অস্থায়ীভাবে এই অঞ্চল দখল করে অটোমান হানাদারেরা। তারা এখানে নিহত জেনারেলদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে সমাধি নির্মাণ করে। যা তাদের বিজয়গাথা ঘোষণা করে। তাদের জয় ছাপিয়ে গিয়েছিল বিক্রমজিতের জয়। কারণ যতদিন তিনি বেঁচেছিলেন, ততদিন মঙ্গলকোটে দাঁত ফোটাতে পারেননি দিল্লির সুলতানরা। মুসলমাদের (Delhi sultanate) ওই সমাধি কি বিক্রমজিতের বিজয়গাথাও ঘোষণা করে না (Raja Bikramjit Ghosh)?

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  WhatsappFacebookTwitterTelegram এবং Google News পেজ।

     

  • Ramakrishna 232: “বায়ুতে সুগন্ধ দুর্গন্ধ সবরকমই থাকে, কিন্তু বায়ু নিজে নির্লিপ্ত…সৃষ্টিই এইরকম; ভালমন্দ, সদসৎ”

    Ramakrishna 232: “বায়ুতে সুগন্ধ দুর্গন্ধ সবরকমই থাকে, কিন্তু বায়ু নিজে নির্লিপ্ত…সৃষ্টিই এইরকম; ভালমন্দ, সদসৎ”

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়িমধ্যে

    দ্বাদশ পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ১৫ই জুন

    দক্ষিণেশ্বরে দশহরাদিবসে গৃহস্থাশ্রমকথা-প্রসঙ্গে

    রাখাল, অধর, মাস্টার, রাখালের বাপ, বাপের শ্বশুর প্রভৃতি 

    একজন ভক্ত—ঈশ্বর (Ramakrishna) যদি সবই করছেন, তবে ভালমন্দ, পাপ-পুণ্য—এ-সব বলে কেন? পাপও তাহলে তাঁর ইচ্ছা?

    রাখালের বাপের শ্বশুর—তাঁর ইচ্ছা আমরা কি করে বুঝব?

    “Thou Great First Cause least understood”— Pope.

    শ্রীরামকৃষ্ণ—পাপ-পুণ্য আছে, কিন্তু তিনি নিজে নির্লিপ্ত। বায়ুতে সুগন্ধ দুর্গন্ধ সবরকমই থাকে, কিন্তু বায়ু নিজে নির্লিপ্ত। তাঁর সৃষ্টিই এইরকম; ভালমন্দ, সদসৎ; যেমন গাছের মধ্যে কোনটা আমগাছ, কোনটা কাঁঠালগাছ, কোনটা আমরাগাছ। দেখ না দুষ্ট লোকেরও প্রয়োজন আছে। যে-তালুকের প্রজারা দুর্দান্ত, সে-তালুকে একটা দুষ্ট লোককে পাঠাতে হয়, তবে তালুকের শাসন হয়।

    আবার গৃহস্থাশ্রমের (Kathamrita) কথা পড়িল।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (ভক্তদের প্রতি)—কি জানো, সংসার করলে মনের বাজে খরচ হয়ে পড়ে। এই বাজে খরচ হওয়ার দরুন মনের যা ক্ষতি হয়, সে ক্ষতি আবার পূরণ হয়, যদি কেউ সন্ন্যাস করে। বাপ প্রথম জন্ম দেন, তারপরে দ্বিতীয় জন্ম উপনয়নের সময়। আর-একবার জন্ম হয় সন্ন্যাসের সময়। কামিনী ও কাঞ্চন এই দুটি বিঘ্ন। মেয়েমানুষে আসক্তি ঈশ্বরের পথ থেকে বিমুখ করে দেয়। কিসে পতন হয়, পুরুষ জানতে পারে না। যখন কেল্লায় যাচ্ছি, একটুও বুঝতে পারি নাই যে, গড়ানে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছি। কেল্লার ভিতর গাড়ি পৌঁছুলে দেখতে পেলুম, কত নিচে এসেছি। আহা, পুরুষদের বুঝতে দেয় না! কাপ্তেন বলে, আমার স্ত্রী জ্ঞানী! ভূতে যাকে পায়, সে জানে না যে, ভূতে পেয়েছে! সে বলে, বেশ আছি! (সকলে নিস্তব্ধ)

    “সংসারে শুধু যে কামের ভয়, তা নয়। আবার ক্রোধ আছে। কামনার পথে কাঁটা পড়লেই ক্রোধ।”

    “মাস্টার—আমার পাতের কাছে বেড়াল নুলো বাড়িয়ে মাছ নিতে আসে, আমি কিছু বলতে পারি না।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—কেন! একবার মারলেই বা, তাতে দোষ কি? সংসারী ফোঁস করবে! বিষ ঢালা উচিত নয়। কাজে কারু অনিষ্ট যেন না করে। কিন্তু শত্রুদের হাত থেকে রক্ষা পাবার জন্য ক্রোধের আকার দেখাতে হয়। না হলে শত্রুরা এসে অনিষ্ট করবে। ত্যাগির ফোঁসের দরকার নাই।

    একজন ভক্ত—মহাশয়, সংসারে তাঁকে পাওয়া বড়ই কঠিন দেখছি। কটা লোক এরকম হতে পারে? কি! দেখতে তো পাই না।

    শ্রীরামকৃষ্ণ(Ramakrishna)—কেন হবে না? ও-দেশে শুনেছি, একজন ডেপুটি, খুব লোক—প্রতাপ সিং; দান-ধ্যান, ঈশ্বরে ভক্তি, অনেক গুণ আছে। আমাকে লতে পাঠিয়েছিল (Kathamrita)। এইরকম লোক আছে বইকি।

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 231: “তেঁতুল মনে করলে মুখে জল সরে, পুরুষের পক্ষে স্ত্রীলোক আচার তেঁতুলের মতো”

    Ramakrishna 231: “তেঁতুল মনে করলে মুখে জল সরে, পুরুষের পক্ষে স্ত্রীলোক আচার তেঁতুলের মতো”

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়িমধ্যে

    দ্বাদশ পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ১৫ই জুন

    দক্ষিণেশ্বরে দশহরাদিবসে গৃহস্থাশ্রমকথা-প্রসঙ্গে

    রাখাল, অধর, মাস্টার, রাখালের বাপ, বাপের শ্বশুর প্রভৃতি 

    আজ দশহরা (২রা আষাঢ়), জৈষ্ঠ শুক্লা দশমী, শুক্রবার, ১৫ই জুন, ১৮৮৩। ভক্তেরা শ্রীরামকৃষ্ণকে (Ramakrishna) দর্শন করিতে দক্ষিণেশ্বর-কালীবাড়িতে আসিয়াছেন। অধর, মাস্টার দশহরা উপলক্ষে ছুটি পাইয়াছেন।

    রাখালের বাপ ও তাঁহার শ্বশুর আসিয়াছেন। বাপ দ্বিতীয় সংসার করিয়াছিলেন। ঠাকুরের নাম শ্বশুর অনেকদিন হইতে শুনিয়াছেন। তিনি সাধক লোক, শ্রীরামকৃষ্ণকে দর্শন করিতে আসিয়াছেন। ঠাকুর আহারান্তে ছোট খাটটিতে বসিয়া আছেন। রাখালের বাপের শ্বশুরকে এক-একবার দেখিতেছেন (Kathamrita)। ভক্তেরা মেঝেতে বসিয়া আছেন।

    শ্বশুর—মহাশয়, গৃহস্থাশ্রমে কি ভগবান লাভ হয়?

    শ্রীরামকৃষ্ণ (সহাস্যে)—কেন হবে না? পাঁকাল মাছের মতো থাক। সে পাঁকে থাকে, কিন্তু গায়ে পাঁক নাই। আর ঘুষকীর মতো থাক। সে ঘরে-কন্নার সব কাজ করে কিন্তু  মন উপপতির উপর পড়ে থাকে। ঈশ্বরের (Ramakrishna) উপর মন ফেলে রেখে সংসারের কাজ সব কর। কিন্তু বড় কঠিন। আমি ব্রহ্মজ্ঞানীদের বলেছিলুম, যে-ঘরে আচার তেঁতুল আর জলের জালা সেই ঘরেই বিকারের রোগী! কেমন করে রোগ সারবে? আচার তেঁতুল মনে করলে মুখে জল সরে। পুরুষের পক্ষে স্ত্রীলোক আচার তেঁতুলের মতো। আর বিষয় তৃষ্ণা সর্বদাই লেগে আছে; ওইটি জলের জালা। এ তৃষ্ণার শেষ নাই। বিকারের রোগী বলে, এক জালা জল খাব! বড় কঠিন। সংসারে নানা গোল। এদিকে যাবি, কোঁস্তা ফেলে মারব; ওদিকে যাবি, ঝাঁটা ফেলে মারব; এদিকে যাবি জুতো ফেলে মারব। আর নির্জন না হলে ভগবানচিন্তা হয় না। সোনা গলিয়ে গয়না গড়ব তা যদি গলাবার সময় পাঁচবার ডাকে, তাহলে সোনা গলানো কেমন করে হয়? চাল কাঁড়ছ একলা বসে কাঁড়তে হয়। এক-একবার চাল হাত করে তুলে দেখতে হয়, কেমন সাফ হল। কাঁড়তে কাঁড়তে যদি পাঁচবার ডাকবে, ভাল কাঁড়া কেমন করে হয়?

    উপায়—তীব্র বৈরাগ্য; পূর্বকথা—গঙ্গাপ্রসাদের সহিত দেখা 

    একজন ভক্ত—মহাশয়, এখন উপায় কি?

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—আছে। যদি তীব্র বৈরাগ্য হয়, তাহলে হয়। যা মিথ্যা বলে জানছি, রোখ করে তৎক্ষণাৎ ত্যাগ কর। যখন আমার ভারী ব্যামো, গঙ্গাপ্রসাদ সেনের কাছে লয়ে গেল। গঙ্গাপ্রসাদ বললে, স্বর্ণপটপটি খেতে হবে, কিন্তু জল খেতে পাবে না; বেদানার রস খেতে পার। সকলে মনে করলে, জল না খেয়ে কেমন করে আমি থাকব। আমি রোখ কল্লুম আর জল খাব না। ‘পরমহংস’! আমি তো পাতিহাঁস নই—রাজহাঁস! দুধ খাব।

    “কিছুদিন নির্জনে থাকতে হয়। বুড়ী ছুঁয়ে ফেললে আর ভয় নাই। সোনা হলে তারপরে যেখানেই থাক। নির্জনে থেকে যদি ভক্তিলাভ (Kathamrita) হয়, যদি ভগবানলাভ হয়, তাহলে সংসারেও থাকা যায়। (রাখালের বাপের প্রতি) তাই তো ছোকরাদের থাকতে বলি। কেননা, এখানে দিন কতক থাকলে ভগবানে ভক্তি হবে। তখন বেশ সংসারে গিয়ে থাকতে পারবে।”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Tulsi Pujan Diwas: ২৫ ডিসেম্বর পালিত হয় তুলসী পূজন দিবস, দিনটির গুরুত্ব জানেন?

    Tulsi Pujan Diwas: ২৫ ডিসেম্বর পালিত হয় তুলসী পূজন দিবস, দিনটির গুরুত্ব জানেন?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আজ ২৫ ডিসেম্বর। কেবল খ্রিস্টান নন, হিন্দুদের কাছেও দিনটি অত্যন্ত পবিত্র। এই দিনে হিন্দুরা উপাসনা করেন দেবী তুলসীর (Significance)। দিনটি তুলসী পূজন দিবস হিসেবে পালন করেন সনাতনীরা (Tulsi Pujan Diwas)।

    তুলসী পূজন উৎসব (Tulsi Pujan Diwas)

    হিন্দুদের বিশ্বাস, তুলসী অত্যন্ত পবিত্র। তাই হিন্দুদের ঘরে ঘরে নিত্যদিন তুলসী পুজো হয়। প্রতিদিন তুলসীর আরাধনা করলে সমস্ত বাধাবিপত্তি দূর হয়। ২০১৪ সালে প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় তুলসী পূজন। তার পর থেকে ফি বছর ২৫ ডিসেম্বর দিনটিতে পুজো হয় তুলসীর। চতুর্দশী তিথিতে হয় তুলসী পূজন উৎসব। তুলসীর আর এক নাম বিষ্ণুপ্রিয়া।তুলসীকে ঐশ্বর্য ও সৌভাগ্যের দেবী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তুলসীর কাছে প্রার্থনা করা সৌভাগ্য আনে বলে বিশ্বাস। তুলসী পুজন দিবসে বাড়িতে নতুন তুলসী গাছ আনা হয়। এদিন তুলসী চারা কোনও মন্দির বা উপাসনা স্থলে দান করলে পুণ্য লাভ হয়। জীবনভর সুখ-শান্তি বজায় রাখতে চাইলে অবশ্যই তুলসীর পুজো করা উচিত।

    শুভ দিন

    তুলসী পূজন দিবস জাঁকজমকপূর্ণ আচার-অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পালিত হয়, যা বিবাহ ও গৃহপ্রবেশ অনুষ্ঠানের জন্য শুভ বলে বিবেচিত হয়। এদিন ভক্তরা ভোরে উঠে বাড়িঘর পরিষ্কার করেন। তুলসী গাছকে ফুল-মালা-গয়নায় সাজানো হয়। তুলসী ও ভগবান বিষ্ণুর বৈবাহিক অনুষ্ঠানের আয়োজন অত্যন্ত ভক্তিভরে করা হয়। তুলসী পূজন ভক্তদের জীবনে সমৃদ্ধি, সুখ এবং আধ্যাত্মিক কল্যাণ বয়ে আনে বলে হিন্দুদের বিশ্বাস। তুলসী পূজন দিবসের (Tulsi Pujan Diwas) উৎপত্তি বর্ণিত হয়েছে হিন্দু পুরাণে।

    আরও পড়ুন: ইউনূস সরকারের বিরুদ্ধে লিগ্যাল অ্যাকশন নেওয়ার হুমকি টাইকুন এস আলমের?

    কিংবদন্তি অনুসারে, তুলসী মূলত এক নিবেদিতপ্রাণ নারী। তাঁর নাম ছিল বৃন্দা। তিনি অসুররাজ জলন্ধরের স্ত্রী। বৃন্দার পবিত্রতার শক্তি থেকে অপরাজেয় হয়ে উঠেছিলেন তিনি। দেবতারা যখন জলন্ধরকে পরাস্ত করতে ব্যর্থ হলেন, তখন তাঁরা বিষ্ণুর সাহায্য চাইলেন। বিষ্ণু ছদ্মবেশে বৃন্দার পবিত্রতা ভঙ্গ করেন। যার ফলে জলন্ধর হেরে যান। দুঃখে বৃন্দা তুলসী গাছে রূপান্তরিত হন। বিষ্ণু এই পাপ মোচনের জন্য তুলসীকে প্রতিশ্রুতি দেন যে তিনি প্রতি বছর এই দিনে তুলসীর সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হবেন (Significance)। সেই থেকেই তুলসী পূজন দিবস পালন করা হয় (Tulsi Pujan Diwas)।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  WhatsappFacebookTwitterTelegram এবং Google News পেজ।

  • Haridas Pal: শুধু নিছকই প্রবাদ নয়, কে ছিলেন ‘হরিদাস পাল’?

    Haridas Pal: শুধু নিছকই প্রবাদ নয়, কে ছিলেন ‘হরিদাস পাল’?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বাংলার পথে মাঠে ঘাটে সামান্য মন কষাকষি বা বিতর্কের স্ফুলিঙ্গ দেখা দিলেই, যুযুধান দুই পক্ষের ঠোঁটের ডগায় উঠে আসে একটি বাক্য, “তুমি কোন হরিদাস পাল?” গত পাঁচ ছয় দশক ধরে কোনও মানুষকে ইচ্ছাকৃতভাবে অযোগ্য ও তুচ্ছ বোঝাতে, দ্বিধাহীনভাবে বাঙালি ব্যবহার করেছে ‘হরিদাস পাল’ নামটিকে। কাউকে ‘হরিদাস পাল’ (Haridas Pal) বললেই বক্তব্যটির সত্যতা বোঝা যাবে। মূলত, উপোহাস হিসেবে ব্যবহার হয়। কিন্তু, প্রশ্ন হল হরিদাস পাল আদৌ কেউ ছিলেন, না এটা জনশ্রুতি।

    কে সেই হরিদাস পাল? (Haridas Pal)

    কেউ বলেন এই হরিদাস পাল (Haridas Pal) একটি কাল্পনিক চরিত্র। কারণ বাঙালির ইতিহাসে এই মানুষটির জীবন কাহিনির খোঁজ মিলবে না। অপরপক্ষের মতবাদ হল, গত পাঁচ- ছয় দশক ধরে বাঙালির বুলিতে পাকাপাকিভাবে জায়গা করে নেওয়া মানুষটি ছিলেন রক্ত মাংসেই গড়া। কারণ, এরকম অনেক মানুষের নামই বাঙালি চলতি কথায় ব্যবহার করে, যাঁরা ছিলেন বাস্তব জগতের মানুষ। দু’জন হরিদাস পালই, কিংবদন্তির হরিদাস পাল হওয়ার যোগ্যতা রাখতেন। ফলে তাঁদের মধ্যে কে কিংবদন্তির ‘হরিদাস পাল’ তা নিয়ে আজ অবধি কোনও সিদ্ধান্তে আসা যায়নি। তবুও আসুন, চিনে নিই দুই পালকেই।

    রিষড়ার হরিদাস পাল

    জানা গিয়েছে, রিষড়ার হরিদাস পাল (Haridas Pal) হুগলির রিষড়া এলাকার এক গন্ধবণিক পরিবারের ১৮৭৬ সালে জন্মেছিলেন। নিতাইচরণ পালের পরিবারে জন্ম নেওয়া হরিদাস পালের সর্বক্ষণের সঙ্গী ছিল দারিদ্র। তাই ষোল বছর বয়সে কাজ নিয়েছিলেন কলকাতার শোভাবাজার এলাকার একটি সোনার দোকানে। মাইনে ছিল অতি সামান্য। তাতে সংসার চলত না। একসময় ঋণের ফাঁদে পড়ে শেষ হতে বসেছিলেন। কিন্তু অভাবনীয়ভাবে একদিন ঘুরে গিয়েছিল ভাগ্যের মোড়। হরিদাস পালকে তাঁর সুবিশাল সম্পত্তির একমাত্র উত্তরাধিকারী করে, প্রয়াত হয়েছিলেন তাঁর নিঃসন্তান মামা। রাতারাতি ধনকুবের হয়ে গিয়েছিলেন, ঝাঁপ তুলে সোনার দোকানে ঝাঁট দেওয়ার কর্মী হরিদাস পাল। পেল্লায় দোকানঘর কিনে ফেলেছিলেন বড়বাজারে। বঙ্কিম চ্যাটার্জি স্ট্রিটে কিনে ফেলেছিলেন প্রাসাদোপম বাড়ি। শুরু করেছিলেন বিদেশি কাচ ও লণ্ঠনের ব্যবসা। সাফল্যের মুখ দেখেছিলেন ব্যবসাতেও। ব্যবসা প্রসারিত হয়েছিল গুয়াহাটি সহ ভারতের অন্যান্য শহরে। বিপুল বিত্তশালী হওয়া সত্ত্বেও এই হরিদাস পাল ছিলেন সৎ ও দয়ালু। আমরা দানবীর হাজি মহম্মদ মহসীন ও দানবীর আলামোহন দাসের নাম জানি। কিন্তু দানের দিক থেকে এই হরিদাস পাল সেই উচ্চতায় পৌঁছতে না পারলেও, সমাজের স্বার্থে একসময় প্রচুর অর্থব্যয় করেছিলেন। গড়ে তুলেছিলেন প্রচুর দাতব্য প্রতিষ্ঠান ও অবৈতনিক শিক্ষা কেন্দ্র।

    হরিদাস পাল লেন

    জনশ্রুতি আছে, তাঁর কিছু বাড়িও দুঃস্থদের দান করে গিয়েছিলেন এই হরিদাস পাল। রিষড়া (Haridas Pal) থেকে কলকাতায় আসা এই হরিদাস পাল, প্রয়াত হয়েছিলেন ১৯৩৩ সালে। কিডনির অসুখে ভুগে মাত্র সাতান্ন বছর বয়সে বিদায় নিয়েছিলেন প্রভাবশালী মানুষটি। ১৯৬৫ সালে, এই হরিদাস পালের সম্মানার্থে, কলকাতা মিউনিসিপ্যাল করপোরেশন, বঙ্কিম চ্যাটার্জি স্ট্রিট ও মহাত্মা গান্ধী রোডকে সংযুক্ত করা কলেজ লেনের নাম দিয়েছিল হরিদাস পাল লেন।

    হরিপুরের হরিদাস পাল

    ঊনবিংশ শতকের এই হরিদাস পাল (Haridas Pal) ছিলেন বাংলাদেশের হরিপুরের বাসিন্দা। হরিপুরের হরিদাস পাল কিন্তু রিষড়ার হরিদাস পালের মতো প্রথম জীবনে দারিদ্রের সম্মুখীন হননি। কারণ সোনার চামচ মুখে দিয়ে জন্ম হয়েছিল তাঁর। হরিপুরের হরিদাস পালের পূর্বপুরুষেরা ইংরেজদের মোসাহেবি করে প্রভুত সম্পত্তির মালিক হয়েছিলেন। স্ফূর্তি করতে নিয়মিত কলকাতায় আসতেন তাঁরা। বিভিন্নভাবে টাকা উড়িয়ে ফিরে যেতেন হরিপুরে। হরিপুরের হরিদাস পালের ওপরেও তাঁর পূর্বপুরুষের এই বদগুণগুলির প্রভাব ফেলেছিল। প্রচুর অর্থ নিয়ে হরিদাস পাল, হরিপুর থেকে পাকাপাকিভাবে চলে এসেছিলেন কলকাতায়। কিনেছিলেন প্রচুর স্থাবর সম্পত্তি। শুরু করেছিলেন নানান ব্যবসা। দু’হাতে অর্থ বিলিয়ে প্রভাবশালী হয়ে উঠেছিলেন কলকাতায়। কিন্তু ভোগবিলাস ও দান খয়রাতে ব্যস্ত থাকায়, ব্যবসাগুলির গণেশ উল্টে গিয়েছিল। একেবারে নিঃস্ব হয়ে গিয়েছিলেন হরিপুরের হরিদাস পাল। নিঃস্ব হরিদাস পালকে কেউ আগের মতো মান্য করত না। সমস্ত সুনাম ও সম্মান হারিয়ে ফেলেছিলেন প্রভাবশালী এই মানুষটি। নানান অসুখে হারিয়ে ফেলেছিলেন শরীর ও স্বাস্থ্য। চিকিৎসা করার মতো অর্থও তাঁর কাছে ছিল না শেষজীবনে।

    হরিদাস পালকে নিয়ে কাহিনী

    ডক্টর মোহাম্মদ আমীন, ‘হরিদাস পাল (Haridas Pal) কে ছিলেন: কেন প্রবাদে হরিদাস এলেন’ প্রবন্ধে উল্লেখ করেছিলেন হরিপুরের হরিদাস পালের একটি কাহিনি। অসুস্থ শরীর নিয়ে হরিপুরের হরিদাস পাল একদিন গিয়েছিলেন তাঁর এক প্রাক্তন কর্মচারীর কাছে। সাহায্য পাওয়ার আশায়। কিন্তু তাঁর স্বাস্থ্য তখন এতটাই ভেঙে গিয়েছিল, সেই কর্মচারী হরিদাস পালকে প্রথমে চিনতে পারেননি। তখন হরিদাস পাল তাঁর পরিচয় দিয়ে, প্রাক্তন কর্মচারীর কাছে সাহায্য চেয়েছিলেন। কিন্তু সুনাম হারানো ও নিঃস্ব প্রাক্তন মালিকের কথা পাত্তাই দেননি সেই কর্মচারী। বিস্মিত হরিদাস পাল বলেছিলেন, “এক সময় তুমি আমার কথা শুনতে।” তেলেবেগুনে জ্বলে উঠে বিরক্ত কর্মচারীটি বলেছিলেন, “তুমি কোন হরিদাস পাল, যে তোমার কথা এখনও শুনতে হবে?” কর্মচারীটি বোঝাতে চেয়েছিলেন, তুমি আর আগের মতো প্রভাবশালী হরিদাস পাল নেই, তাই তোমার কথা শোনার কোনও প্রয়োজন নেই। মাথা নিচু করে সেদিন ফিরে এসেছিলেন অপমানিত হরিদাস পাল। এই ঘটনাটির পর থেকেই নাকি প্রথমে কলকাতা ও পরে সারা বাংলায় “তুমি কোন হরিদাস পাল” বাগধারাটি প্রচলিত হয়ে গিয়েছিল।

    দুই হরিদাস পালের (Haridas Pal) জীবন কাহিনি থেকে এটা স্পষ্ট, তাঁরা দু’জনেই ধনী, দাতা ও প্রভাবশালী ছিলেন। তাই তাঁরা জীবনের সর্বক্ষেত্রে অসফল ছিলেন, একথা বলা যাবে না। বরং গড়পড়তা বাঙালির থেকে অনেক ওপরেই ছিল তাঁদের অবস্থান। তবুও রঙ্গপ্রিয় বাঙালির নিদারুণ পরিহাসে, ‘হরিদাস পাল’ নামটি তার সাবেক গরিমা হারিয়ে, আজ হয়ে উঠেছে উপহাসের বস্তু।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 230: “মন যখন চতুর্থভূমিতে উঠে অনাহত পদ্মে, জীবাত্মাকে তখন শিখার ন্যায় দর্শন হয়”

    Ramakrishna 230: “মন যখন চতুর্থভূমিতে উঠে অনাহত পদ্মে, জীবাত্মাকে তখন শিখার ন্যায় দর্শন হয়”

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়িমধ্যে

    একাদশ পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ১০ই জুন

    বেলঘরের ভক্তকে শিক্ষা—ব্যাকুল হয়ে আর্জি কর—ঠিক ভক্তের লক্ষণ

    “তোমরা এত কষ্ট করে এখানে এসেছ, তোমরা ঈশ্বরকে (Ramakrishna) খুঁজে বেড়াচ্ছ। সব লোক বাগান দেখেই সন্তুষ্ট, বাগানের কর্তার অনুসন্ধান করে দু-একজন। জগতের সৌন্দর্যই দেখে, কর্তাকে খোঁজে না।”

    হঠযোগ, রাজযোগ ও বেলঘরের ভক্ত—ষড়চক্র ভেদ ও সমাধি 

    (গায়ককে দেখাইয়া)—ইনি ষড়চক্রের গান গাইলেন। সে-সব যোগের কথা। হঠযোগ আর রাজযোগ। হঠযোগী শরীরের কতকগুলো কসরৎ করে; উদ্দেশ্য—সিদ্ধাই, দীর্ঘ আয়ু হবে, অষ্টসিদ্ধি হবে; এই সব উদ্দেশ্য। রাজযোগের উদ্দেশ্য—ভক্তি, প্রেম, জ্ঞান, বৈরাগ্য। রাজযোগই ভাল।

    “বেদান্তের সপ্তভূমি, আর যোগশাস্ত্রের ষড়চক্র অনেক মেলে। বেদের প্রথম তিনভূমি, আর ওদের মূলাধার, স্বাধিষ্ঠান, মণিপুর। এই তিন ভূমিতে গুহ্য, লিঙ্গ, নাভির মনের বাস। মন যখন চতুর্থভূমিতে উঠে অর্থাৎ অনাহত পদ্মে, জীবাত্মাকে তখন শিখার ন্যায় দর্শন হয়, আর জ্যোতিঃদর্শন হয়। সাধক বলে, ‘এ কি! এ কি!’

    “পঞ্চভূমিতে মন উঠলে, কেবল ঈশ্বরের (Ramakrishna) কথাই শুনতে ইচ্ছা হয়। এখানে বিশুদ্ধচক্র। ষষ্ঠভূমি আর আজ্ঞাচক্র এক। সেখানে মন গেলে ঈশ্বরদর্শন হয়। কিন্তু যেমন লণ্ঠনের ভিতর আলো—ছুঁতে পারে না, মাঝে কাচ ব্যবধান আছে বলে।

    “জনক রাজা পঞ্চভূমি থেকে ব্রহ্মজ্ঞানের উপদেশ দিতেন। তিনি কখনও পঞ্চমভূমি, কখনও ষষ্ঠভূমিতে থাকতেন।

    “ষড়চক্র ভেদের পর সপ্তমভূমি। মন সেখানে গেলে মনের লয় হয়। জীবাত্মা পরমাত্মা (Kathamrita) এক হয়ে যায়—সমাধি হয়। দেহবুদ্ধি চলে যায়, বাহ্যশূন্য হয়; নানা জ্ঞান চলে যায়; বিচার বন্ধ হয়ে যায়।

    “ত্রৈলঙ্গ স্বামী বলেছিল, বিচারে অনেক বোধ হচ্ছে; নানা বোধ হচ্ছে। সমাধির পর শেষে একুশদিনে মৃত্যু হয়।

    “কিন্তু কুলকুণ্ডলিনী জাগরণ না হলে চৈতন্য হয় না!”

    ঈশ্বরদর্শনের লক্ষণ 

    “যে ঈশ্বরলাভ (Kathamrita)  করেছে, তার লক্ষণ আছে। সে হয়ে যায়—বালকবৎ, উন্মাদবৎ, জড়বৎ, পিশাচবৎ। আর তার ঠিক বোধ হয় ‘আমি যন্ত্র আর তিনি যন্ত্রী; তিনিই কর্তা, আর সকলেই অকর্তা।’ শিখরা যেমন বলেছিল, পাতাটি নড়ছে সেও ঈশ্বরের ইচ্ছা। রামের ইচ্ছাতেই সব হচ্ছে—এই বোধ। তাঁতী যেমন বলেছিল, রামের ইচ্ছাতেই কাপড়ের দাম এক টাকা ছয় আনা, রামের ইচ্ছাতেই ডাকাতি হল; রামের ইচ্ছাতেই ডাকাত ধরা পড়ল। রামের ইচ্ছাতেই আমাকে পুলিশে নিয়ে গেল, আবার রামের ইচ্ছাতেই আমাকে ছেড়ে দিল।”

    সন্ধ্যা আগত প্রায়। ঠাকুর একবারও বিশ্রাম করেন নাই। ভক্তসঙ্গে অবিশ্রান্ত হরিকথা হইতেছে। এইবার মণিরামপুর ও বেলঘরের ভক্তেরা ও অন্যান্য ভক্তেরা তাঁহাকে ভূমিষ্ঠ হইয়া প্রণাম করিয়া, ঠাকুরবাড়িতে (Ramakrishna)  ঠাকুরদের দর্শন করিয়া নিজ নিজ স্থানে প্রত্যাগমন করিতেছেন।

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • History Of Christmas: যীশুর জন্মের আগে থেকেই ক্রিসমাস পালনের রীতি ছিল ইউরোপে!

    History Of Christmas: যীশুর জন্মের আগে থেকেই ক্রিসমাস পালনের রীতি ছিল ইউরোপে!

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ২৫ ডিসেম্বর ক্রিসমাস উৎসব (History Of Christmas) পালিত হয়। এই পবিত্র উৎসবে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ছুটি থাকে। বাঙালির কাছে ক্রিসমাস মানে ঘুরতে যাওয়া, পিকনিক করা। ২৫ ডিসেম্বর ক্রিসমাস উৎসব পালনের রীতি বিশ্বে অনেক পুরনো। এর যেমন একটা ধর্মীয় বিষয় রয়েছে। তেমনই ক্রিসমাসে ধর্মনিরপেক্ষতার প্রকৃতিও দেখা যায়। খ্রিস্টানদের ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে এই দিনে তাঁদের উপাস্য যীশু জন্মগ্রহণ করেছিলেন। যীশু হলেন একজন ধর্মীয় নেতা, যাঁর শিক্ষা মেনে চলেন খ্রিস্টানরা। এদিন  ক্রিসমাস ট্রি সাজানো হয়। একে অপরকে উপহার বিনিময় করেন খ্রিস্টানরা। গির্জায় গিয়ে তাঁরা প্রার্থনা করেন। পরিবারের সঙ্গে খাওয়া-দাওয়ার রীতিও দেখা যায়। এদিন তাঁরা এও বিশ্বাস করেন যে সান্তাক্লজ এসে তাঁদের উপহার দিয়ে যাবেন।

    কীভাবে শুরু হয়েছিল ক্রিসমাস পালন (Christmas)?

    বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যীশুর আগমনের (History Of Christmas) কয়েক শতাব্দী আগেই প্রথমদিকে ইউরোপীয়রা শীতকালে এই দিনটি পালন করতেন। ২২ ডিসেম্বরের পর থেকেই উত্তর গোলার্ধে ধীরে ধীরে দিনের দৈর্ঘ্য বাড়তে থাকে এবং রাতের দৈর্ঘ্য কমতে থাকে। সূর্যালোকের সময় বাড়ার ফলে, এই সময়েই ইউরোপের বিভিন্ন দেশে উৎসব পালন করার রীতি দেখা যেত। অন্যদিকে, ইউরোপের অন্যতম দেশ স্ক্যান্ডিনেভিয়ায় ২১ ডিসেম্বর থেকেই বড়দিন পালনের রীতি দেখা যেত। এই সময়ে তাঁরা বাড়িতে আগুন জ্বালাতেন এবং ১২ দিন ধরে পালন করা হত বড়দিন। ডিসেম্বরে শেষে ইউরোপে যিশুখ্রিস্টের জন্মের আগে থেকেই উৎসবের এমন মেজাজ দেখা যেত। এই সময় তাঁরা গবাদি পশুকে হত্যা করে, তাদের মাংস খেত। সঙ্গে থাকত মদ এবং বিয়ার। অন্যদিকে জার্মানিতে শীতকালের মাঝামাঝি সময়ে তাদের দেবতা উডেনকে সম্মান জানাতে বড়দিন পালন করা হত, জার্মান জাতির বিশ্বাস ছিল যে ওডেন আকাশ পথে গমন করতেন এবং মানুষের ভাগ্য় নির্ধারণ করতেন।

    রোমে সাটুরনালিয়া দেবতার সম্মানে পালন করা হত উৎসব

    অন্যদিকে, রোমে এই উৎসব এক মাস (History Of Christmas) ধরে পালন করা হত। রোমান ধর্মে কৃষি দেবতা ছিলেন সাটুরনালিয়া। তাঁরই সম্মানে শীতকালের মাঝামাঝি সময়ে শুরু করে পুরো একমাস ধরে পালন চলত উৎসব। এই সময়ে ক্রীতদাসদেরও সাময়িক স্বাধীনতা দেওয়া হত। তাঁদের ছুটি দেওয়া হত। একই সঙ্গে শীতকালে রোমানরা জুভেনালিয়া নামের একটি উৎসব পালন করতেন। এই উৎসবে রোমান শিশুদের সম্মান একটি ভোজের ব্যবস্থা করা হত এবং সেখানকার উচ্চ বংশজাতরা ২৫ ডিসেম্বর সূর্যদেবতা মিত্রার জন্মদিন পালন করতেন। বিশ্বাস করা হয়, মিত্রা হলেন একজন শিশু দেবতা। যিনি একটি শিলা থেকে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। মিত্রার জন্মদিন ছিল বছরের সবচেয়ে পবিত্র দিন। তাই এটা স্পষ্ট, শুধুমাত্র যিশুখ্রিস্টের জন্মদিন হিসেবেই যে বড়দিন এমনটা নয়, বড়দিন পালনের ইতিহাস দেখলে আমরা বুঝতে পারছি যে যীশুর জন্মের আগেও বড় দিন পালনের রীতি ইউরোপে ছিল।

    প্রথমদিকে যীশুর জন্ম সেভাবে উদযাপন করা হয়নি

    প্রথমদিকে যীশুর জন্ম সেভাবে উদযাপন করা হয়নি। চতুর্থ শতাব্দীতে গির্জার সঙ্গে যুক্ত ধর্মীয় কর্তা ব্যক্তিরা প্রথম যীশুর জন্মদিনকে ছুটি হিসেবে পালন করা সিদ্ধান্ত নেন। জানা যায়, বাইবেলে যীশুখ্রিষ্টের জন্মদিন হিসেবে কোনও তারিখ উল্লেখ করা হয়নি। অন্যদিকে কিছু সূত্রে দাবি করা হয়, যে যীশুখ্রিস্টের জন্ম হয়েছিল বসন্ত কালে। তবুও পোপ জুলিয়াস-১, ২৫ ডিসেম্বর বেছে নেন যীশুখ্রিষ্টের জন্মদিন হিসেবে। এর পরবর্তীকালে এই প্রথাটি ৪৩২ সালের মধ্যে মিশরে এবং ষষ্ঠ শতাব্দীর মধ্যে ইংল্যান্ডে ছড়িয়ে পড়ে। তখন থেকেই ২৫ ডিসেম্বর যীশুখ্রীষ্টের জন্মদিন হিসেবে পালন করা হতে থাকে। অর্থাৎ শীতকালীন উৎসবের যে প্রথা সেই রীতি থেকে ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসতে থাকে ইউরোপ। শীতকালীন উৎসবটা কেন্দ্রীভূত হতে থাকে যিশুখ্রিস্টের জন্মদিন হিসেবে। এখানে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন গির্জার ধর্ম প্রচারকরা। তাঁরা সেভাবেই ২৫ ডিসেম্বর যীশুখ্রীষ্টের জন্মদিন হিসেবে ঘোষণা করেন।

    ইংল্যান্ড আমেরিকায় নিষিদ্ধ হয়েছিল ক্রিসমাস 

    অন্যদিকে, ১৭ শতকের একেবারে গোড়ার দিকে ইউরোপে ক্রিসমাস (History Of Christmas) উদযাপনের পদ্ধতি অনেকটাই বদলে যায়। ১৬৪৫ সালে ইংল্যান্ড দখল করেন অলিভার ক্রোমওয়েলের বাহিনী। এই সময় তাঁরা অবক্ষয় থেকে ইংল্যান্ডকে বাঁচানোর জন্য সে দেশের জনগণকে প্রতিশ্রুতি দেন। সেই প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবেই তাঁরা ক্রিসমাসকে বাতিল বলে ঘোষণা করেন। পরবর্তীকালে রাজা দ্বিতীয় চার্লস ইংল্যান্ডের সিংহাসনে বসলে, ফের ক্রিসমাসের প্রচলন শুরু হয়। অন্যদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম দিকে ক্রিসমাস ছুটির দিন ছিল না। ১৬৫৯ থেকে ১৬৮১ সাল পর্যন্ত সে দেশের বস্টনে বড়দিন উদযাপন নিষিদ্ধ ছিল। যে কেউ ক্রিসমাস পালন করলে তাঁকে জরিমানা পর্যন্ত করা হত। পরবর্তীকালে উনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে আমেরিকায় ক্রিসমাস পালন শুরু হয়।

    সান্তাক্লজের ইতিহাস

    অন্যদিকে ক্রিসমাস উৎসবের সঙ্গে জড়িত রয়েছে সান্তাক্লজ। আবার সান্তাক্লজ নামের সঙ্গে জড়িত রয়েছে, সেন্ট নিকোলাস নামে এক সন্ন্যাসীর কথা। যিনি ২৮০ খ্রিস্টাব্দে তুরস্কে জন্মগ্রহণ করেছিলেন বলে জানা যায়। সেন্ট নিকোলাস, তাঁর উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সমস্ত সম্পদ দরিদ্র এবং অসুস্থদের সাহায্য করার জন্য বিতরণ করেছিলেন। এই সময় তিনি গ্রামাঞ্চলগুলিতে ভ্রমণ করতেন ও সেখানকার বাচ্চা ছেলে, অসুস্থ রোগী এবং নাবিকদের কাছে তাঁর সমস্ত সম্পত্তি বিতরণ করে দিয়েছিলেন। সেই সময়ে ওই সেন্ট নিকোলাস সকলের অভিভাবক হিসেবে পরিচিত হতে থাকেন। পরবর্তীকালে অষ্টাদশ শতকের শেষের দিকে নিউইয়র্কে সেন্ট নিকোলাস আমেরিকার সংস্কৃতির মধ্যে প্রবেশ করেন। সেন্ট নিকোলাসকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডাচ নাগরিকরা সেন্টার ক্লাস নামে ডাকতেন। পরবর্তীকালে সেন্টার ক্লাস নাম থেকে আসে সান্তাক্লজ।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Naga sadhu: মুঘল-ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে সনাতনধর্ম রক্ষার জন্য লড়াই করেছিলেন নাগা সন্ন্যাসীরা!

    Naga sadhu: মুঘল-ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে সনাতনধর্ম রক্ষার জন্য লড়াই করেছিলেন নাগা সন্ন্যাসীরা!

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভারতে বহিরাগত বর্বর আক্রমণকারী পাঠান, মুঘল এবং ব্রিটিশদের বিরদ্ধে প্রত্যক্ষ লড়াই করেছিলেন নাগা সাধুরা (Naga sadhu)। জুনাগড়ের অত্যাচারী নিজাম শাসক সাধুদের বিষ প্রয়োগ করে হত্যা করেছিলেন। বহু সাধু সন্ন্যাসীদের হত্যা করা হয়েছিল। কিন্তু যাঁরা বেঁচে ছিলেন তাঁরাই তৈরি করেছিলেন জুনা আখড়া। যুগে যুগে যখনই সনাতন ধর্ম (Sanatan Dharma) গভীর সঙ্কটে পড়েছে নাগারা রক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। মুসলমান আক্রমণ এবং লুটের হাত থেকে অনেক মন্দির ও মঠ রক্ষা করেছিলেন তাঁরা। আফগান পাঠান শাসক আহমেদ শাহ আবদালি মথুরা-বৃন্দাবন লুণ্ঠন করতে এলে নাগা সাধুরা বিরাট প্রতিবাদ গড়ে তোলেন। তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্রও ধারণ করেন নাগা সন্ন্যাসীরা। 

    সনাতন ধর্মের রক্ষার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে (Naga sadhu)

    ১৪৪ বছর পর এবার উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে অনুষ্ঠিত হবে মহাকুম্ভ। ইতিমধ্যেই বিশ্বের এই বৃহৎ ধর্মীয় (Sanatan Dharma) সমাবেশে অনেক আখড়ার মুনি, ঋষি, সাধু-সন্ন্যাসীরা আসতে শুরু করেছেন। ভারতীয় মার্শাল আর্টিস্ট এবং ধর্মীয় সন্ন্যাসীদের জন্য সম্প্রদায়িক ঐতিহ্য ও আধ্যাত্মিক পরম্পরা মেনে মঠ কেন্দ্রীক একটি আখড়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানে ভক্তদের থাকা-খাওয়া এবং প্রশিক্ষণের সুবিধার ব্যবস্থা থাকবে। এখানে কুম্ভমেলার অনুষ্ঠানের সঙ্গে মার্শাল আর্ট অনুশীলনের একটি বিরাট জায়গা ঠিক করা হয়েছে। অনেকেই প্রশিক্ষণ নেবেন আবার দিয়েও থাকবেন প্রশিক্ষণ। মূল লক্ষ্য হল হিন্দু সমাজের আত্মরক্ষা। সাধারণত নাগারা (Naga sadhu) তাঁদের গলায়, শরীরের চারপাশে রুদ্রাক্ষ এবং অন্যান্য অলঙ্কার পরিধান করেন। তাঁদের হাতে থাকে তলোয়ার, শঙ্খ এবং ত্রিশূলও। 

    সব রকম অপশক্তির সঙ্গে লড়াই করতে প্রস্তুত

    এই আখড়ার মধ্যে ভৈরব আখড়া অন্যতম। এটিকে পঞ্চ দশনম জুনা আখড়াও বলা হয় এবং এটি ১৩টি আখড়ার মধ্যে সবচেয়ে বড়। এটি নাগা সন্ন্যাসীদের (Naga sadhu) একটি প্রধান আখড়া। এখানকার সাধুরা যোদ্ধা সন্ন্যাসী। ভগবান শিবের উপাসক তাঁরা। সন্ন্যাসীদের দেহে ছাই-মাখার জন্য বিশেষ পরিচিতি রয়েছে। হিন্দু ধর্মের আধ্যাত্মিকতা এবং পরাক্রমের গৌরবময় ইতিহাস ধারণ করেন তাঁরা। নাগা সাধুরা সর্বদা তলোয়ার, ত্রিশূল, বর্শা বহন করে থাকেন। তাঁরা মুঘল থেকে ব্রিটিশ পর্যন্ত সমস্ত বহিঃশত্রুর সঙ্গে যুদ্ধ করেছেন। সনাতন হিন্দু (Sanatan Dharma) ধর্ম রক্ষার জন্য সব রকম অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করতে প্রস্তুত থাকেন এই সাধুরা। এই জুনা আখড়ায় একটি অস্ত্রাগারও রয়েছে, যেখানে ৪০০ বছরের পুরনো অস্ত্রও সংরক্ষিত রয়েছে। নাগা সাধুরা মহাকুম্ভ উদযাপনের সময় এই অস্ত্রগুলি নিয়ে আসেন এবং প্রদর্শনী করেন। 

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    ১১৪৫ সালে জুনা আখড়া প্রথম প্রতিষ্ঠিত হয়

    জুনা আখড়া হল শৈব সম্প্রদায়ের সাতটি আখড়ার একটি। ১১৪৫ সালে উত্তরাখণ্ডের কর্ণ প্রয়াগে প্রথম এই মঠ নির্মাণ হয়েছিল। আবার কেউ কেউ মনে করেন এই মঠ ১২৫৯ সালে প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। পরবর্তীকালে ১৮৬০ সালে সরকারি নথিভুক্ত হয় আখড়া। ভগবান শিব বা তাঁর রুদ্র অবতার, ভগবান দত্তাত্রেয়, জুনা আখড়ার মূর্তি। এর সদর দফতর এবং প্রধান কেন্দ্র বারাণসীতে অবস্থিত। আরও একটি মন্দিরের আশ্রম হরিদ্বারের মহামায়া মন্দিরের কাছে নির্মিত হয়েছিল। এখন এই নাগাদের (Naga sadhu) আখড়াগুলোতে প্রায় ৫ লাখ নাগা সাধু রয়েছেন। নাগা সাধুরা হিন্দু ধর্মের উত্থানকে সাহায্য করার জন্য ধর্মগ্রন্থগুলিতে যেমন পারদর্শী, ঠিক তেমনি যুদ্ধ-অস্ত্রশস্ত্রেও প্রশিক্ষিত তাঁরা। তখন থেকেই আখড়া চলছে তাঁদের। বলা হয়ে থাকে আদি শঙ্করাচার্যের নির্দেশনায় গঠিত হয়েছিল এবং পরে মুসলিম আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধেও অনেক যুদ্ধ করেছিল এই আখড়ার সন্ন্যাসীরা।

    জুনা আখড়ার ইতিহাস

    জানা গিয়েছে, নাগা সাধুরা (Naga sadhu) গুজরাটের জুনাগড়ের নিজামের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছিলেন। নিজাম ও তাঁর বাহিনী নাগাদের দ্বারা পরাজিত হয়েছিল। তিনি সাধুদের সামরিক দক্ষতা দেখে মুগ্ধ হয়েছেন বলেও জানা গেছে। এই শাসককে সন্ন্যাসীদের সামনে মাথা নত হতে হয়েছিল এবং একটি চুক্তিতে আমন্ত্রণ জানাতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি। জুনা আখড়ার মহারাজ মহন্ত হরি গিরি বলেন, “আখড়ার সন্ন্যাসীরা (Sanatan Dharma) একটি চুক্তির জন্য নিজামের কাছে গিয়েছিলেন। জুনাগড় সন্ন্যাসীদের হাতে তুলে দেওয়ার অজুহাতে একটি নৈশভোজের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে সেই খাবারে বিষ মিশিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটিয়েছিল শয়তান শাসক। এর ফলে শত শত সন্ন্যাসী প্রাণ হারিয়েছিলেন। যাঁরা বেঁচে ছিলেন তাঁরাই জুনা আখড়া তৈরি করেছিলেন।”

    জাহাঙ্গীরের সঙ্গে লড়াই করেছিলেন নাগারা

    একবার মুঘল শাসক জাহাঙ্গীর প্রয়াগরাজ কুম্ভমেলায় যোগ দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন বলে গুজব উঠেছিল। তখন শৈব ও বৈষ্ণব তপস্বীরা একসঙ্গে একটি দেওয়াল নির্মাণ করেন এবং তা থেকে গোপন যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছিলেন সন্ন্যাসীরা (Naga sadhu)। একজন সন্ন্যাসী জাহাঙ্গীরকে মারতে ছুরিও ব্যবহার করেছিলেন। মুঘলদের প্রতি নাগাদের ক্রোধ ছিল অদম্য। পঞ্চ দশনম জুনা আখড়ার অষ্ট কৌশল মহন্ত যোগানন্দ গিরি বলেন, “যে নাগা সন্ন্যাসীরা (Sanatan Dharma) অস্ত্র বহন করেন, তাঁরা মুঘলদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন। একই ভাবে ব্রিটিশ শাসন কালেও লড়াই করেছিলেন তাঁরা। অস্ত্রগুলিকে আমরা বিরাট সম্মানের সঙ্গে রাখি।”

    প্রয়াগরাজে মহাকুম্ভের প্রস্তুতি এখন তুঙ্গে। আর মাত্র হাতে কয়েকটা দিন বাকি। মকর সংক্রান্তি থেকে শুরু হবে পুণ্যস্নান। ইতিমধ্যে উত্তরপ্রদেশ সরকার কড়া নিরাপত্তা এবং প্রয়োজনীয় আয়োজনে কোনও খামতি রাখতে চাইছেন না। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি স্বয়ং এলাকা পরিদর্শন করে সব রকম প্রস্তুতি নিরীক্ষণ করেছেন। রাজ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে প্রায় ৪০ কোটি ভক্ত সমাগম হবে এই রাজ্যে।

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 229: “‘সন্তানের উপর মায়ের টান, সতী স্ত্রীর স্বামীর উপর টান, আর বিষয়ীর বিষয়ের উপর টান”

    Ramakrishna 229: “‘সন্তানের উপর মায়ের টান, সতী স্ত্রীর স্বামীর উপর টান, আর বিষয়ীর বিষয়ের উপর টান”

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়িমধ্যে

    একাদশ পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ১০ই জুন

    বেলঘরের ভক্তকে শিক্ষা—ব্যাকুল হয়ে আর্জি কর—ঠিক ভক্তের লক্ষণ

    বেলঘরের ভক্ত—আপনি আমাদের কৃপা করুন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—সকলের ভিতরই তিনি রয়েছেন। তবে গ্যাস কোম্পানিকে আর্জি কর। তোমার ঘরের সঙ্গে যোগ হয়ে যাবে।

    “তবে ব্যাকুল হয়ে আর্জি (Prayer) করতে হয়। এমনি আছে, তিন টান একসঙ্গে হলে ঈশ্বরদর্শন হয়। ‘সন্তানের উপর মায়ের টান, সতী স্ত্রীর স্বামীর উপর টান, আর বিষয়ীর বিষয়ের (Kathamrita) উপর টান।’

    “ঠিক ভক্তের (Ramakrishna) লক্ষণ আছে। গুরুর উপদেশ শুনে স্থির হয়ে থাকে। বেহুলার কাছে জাতসাপ স্থির হয়ে শুনে, কিন্তু কেউটে নয়। আর-একটি লক্ষণ—ঠিক ভক্তের ধারণা শক্তি হয়। শুধু কাচের উপর ছবির দাগ পড়ে না, কিন্তু কালি মাখানো কাচের উপর ছবি উঠে, যেমন ফটোগ্রাফ; ভক্তিরূপ কালি।

    “আর-একটি লক্ষণ। ঠিক ভক্ত জিতেন্দ্রিয় হয়, কামজয়ী হয়। গোপীদের কাম হত না।

    “তা তোমরা সংসারে আছ তাহলেই বা; এতে সাধনের আরও সুবিধা, যেমন কেল্লা থেকে যুদ্ধ করা। যখন শবসাধন করে, মাঝে মাঝে শবটা হাঁ করে ভয় দেখায়। তাই চাল, ছোলাভাজা রাখতে হয়। তার মুখে মাঝে মাঝে দিতে হয়। শবটা ঠাণ্ডা হলে, তবে নিশ্চিন্ত হয়ে জপ করতে পারবে। তাই পরিবারদের ঠাণ্ডা রাখতে হয়। তাদের খাওয়া-দাওয়ার যোগাড় করে দিতে হয়, তবে সাধন-ভজনের (Kathamrita) সুবিধা হয়।

    “যাদের ভোগ একটু বাকী আছে, তারা সংসারে থেকেই তাঁকে ডাকবে। নিতাই-এর ব্যবস্থা ছিল, মাগুর মাছের ঝোল, ঘোর যুবতীর কোল, বোল হরি বোল।

    “ঠিক ঠিক ত্যাগীর আলাদা কথা; মৌমাছি ফুল বই আর কিছুতেই বসবে না। চাতকের কাছে ‘সব জল ধুর’; কোন জল খাবে না কেবল স্বাতী-নক্ষত্রের বৃষ্টির জন্য হাঁ করে আছে। ঠিক ঠিক ত্যাগী অন্য কোন আনন্দ নেবে না, কেবল ঈশ্বরের আনন্দ। মৌমাছি কেবল ফুলে বসে। ঠিক ঠিক ত্যাগী সাধু যেন মৌমাছি। গৃহীভক্ত (Ramakrishna) যেন এই সব মাছি—সন্দেশেও বসে, আবার পচা ঘায়েও বসে।

    আরও পড়ুনঃ “লজ্জা, ঘৃণা, ভয়, জাতি, কুল, শীল, শোক, জুগুপ্সা, ওই অষ্টপাশ-গুরু না খুলে দিলে হয় না”

    আরও পড়ুনঃ “ষড় চক্র ভেদ হলে মায়ার রাজ্য ছাড়িয়ে জীবাত্মা পরমাত্মার সঙ্গে এক হয়ে যায়, এরই নাম ঈশ্বরদর্শন”

    আরও পড়ুনঃ “গোপীদের কি ভালবাসা, কি প্রেম, শ্রীমতী স্বহস্তে শ্রীকৃষ্ণের চিত্র এঁকেছেন”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

LinkedIn
Share