Category: পরম্পরা

Get updated History and Heritage and Culture and Religion related news from the Madhyom news portal madhyom.com, West Bengal leading news portal Madhyom.com

  • Ramakrishna 252: “কি আশ্চর্য, দর্শন করিতে করিতে একেবারে সমাধিস্থ, প্রস্তরমূর্তির ন্যায় নিস্তব্ধভাবে দণ্ডায়মান, নয়ন পলকশূন্য!”

    Ramakrishna 252: “কি আশ্চর্য, দর্শন করিতে করিতে একেবারে সমাধিস্থ, প্রস্তরমূর্তির ন্যায় নিস্তব্ধভাবে দণ্ডায়মান, নয়ন পলকশূন্য!”

    শ্রীরামকৃষ্ণ দক্ষিণেশ্বরে ও ভক্তগৃহে

    পঞ্চম পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ২১শে জুলাই

    যদু মল্লিকের বাড়ি—সিংহবাহিনী সম্মুখে—‘সমাধিমন্দিরে’

    অধরের বাটিতে অধর ঠাকুরকে ফলমূল মিষ্টান্নাদি দিয়া সেবা করিলেন। ঠাকুর (Ramakrishna) বলিলেন, আজ যদু মল্লিকের বাড়ি যাইতে হইবে।

    ঠাকুর যদু মল্লিকের বাটী আসিয়াছেন। আজ আষাঢ় কৃষ্ণ প্রতিপদ, রাত্রি জ্যোৎস্নাময়ী। যে-ঘরে ৺সিংহবাহিনীর নিত্যসেবা হইতেছে ঠাকুর সেই ঘরে ভক্তসঙ্গে উপস্থিত হইলেন। মা সচন্দন পুষ্প ও পুষ্প-মালা দ্বারা অর্চিত হইয়া অপূর্ব শ্রী ধারণ করিয়াছেন। সম্মুখে পুরোহিত উপবিষ্ট। প্রতিমার সম্মুখে ঘরে আলো জ্বলিতেছে। সাঙ্গোপাঙ্গের মধ্যে একজনকে ঠাকুর টাকা দিয়া প্রণাম করিতে বলিলেন; কেননা ঠাকুরের কাছে আসিলে কিছু প্রণামী (Kathamrita) দিতে হয়।

    ঠাকুর (Ramakrishna) সিংহবাহিনীর সম্মুখে হাতজোড় করিয়া দাঁড়াইয়া আছেন। পশ্চাতে ভক্তগণ হাতজোড় করিয়া দাঁড়াইয়া আছেন।

    ঠাকুর অনেকক্ষণ ধরিয়া দর্শন করিতেছেন।

    কি আশ্চর্য, দর্শন করিতে করিতে একেবারে সমাধিস্থ। প্রস্তরমূর্তির ন্যায় নিস্তব্ধভাবে দণ্ডায়মান। নয়ন পলকশূন্য!

    অনেকক্ষণ পরে দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলিলেন। সমাধি ভঙ্গ হইল। যেন নেশায় মাতোয়ারা হইয়া বলিতেছেন(Kathamrita), মা, আসি গো!

    কিন্তু চলিতে পারিতেছেন না—সেই একভাবে দাঁড়াইয়া আছেন।

    তখন রামলালকে (Ramakrishna) বলিতেছেন—“তুমি ওইটি গাও — তবে আমি ভাল হব।”

    রামলাল গাহিতেছেন, ভুবন ভুলাইলি মা হরমোহিনী।

    গান সমাপ্ত হইল।

    এইবার ঠাকুর বৈঠকখানার দিকে আসিতেছেন—ভক্তসঙ্গে। আসিবার সময় মাঝে একবার বলিতেছেন, মা, আমার হৃদয়ে থাক মা।

    শ্রীযুক্ত যদু মল্লিক স্বজনসঙ্গে বৈঠকখানায় বসিয়া। ঠাকুর ভাবেই আছেন, আসিয়া গাহিতেছেন:

    গো আনন্দময়ী হয়ে আমায় নিরানন্দ (Kathamrita) করো না।

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 251: “এই শুন, এরই নাম নিরাকার সচ্চিদানন্দ-দর্শন, বিশুদ্ধচক্র ভেদ হলে সকলি আকাশ”

    Ramakrishna 251: “এই শুন, এরই নাম নিরাকার সচ্চিদানন্দ-দর্শন, বিশুদ্ধচক্র ভেদ হলে সকলি আকাশ”

    শ্রীরামকৃষ্ণ দক্ষিণেশ্বরে ও ভক্তগৃহে

    চতুর্থ পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ২১শে জুলাই

    শ্রীযুক্ত অধর সেনের বাটীতে কীর্তনানন্দে

    রামালাল (Ramakrishna) আবার গাইলেন:

    ভবদারা ভয়হরা নাম শুনেছি তোমার,
    তাইতে এবার দিয়েছি ভার তারো তারো না তারো মা।
    তুমি মা ব্রহ্মাণ্ডধারী ব্রহ্মাণ্ড ব্যাপিকে,
    কে জানে তোমারে তুমি কালী কি রাধিকে,
    ঘটে ঘটে তুমি ঘটে আছ গো জননী,
    মূলাধার কমলে থাক মা কুলকুণ্ডলিনী।
    তদূর্ধ্বেতে আছে মাগো নামে স্বাধিষ্ঠান,
    চতুর্দল পদ্মে তথায় আছ অধিষ্ঠান,
    চর্তুদলে থাক তুমি কুলকুণ্ডলিনী,
    ষড়দল বজ্রাসনে বস মা আপনি।
    তদূর্ধ্বেতে নাভিস্থান মা মণিপুর কয়,
    নীলবর্ণের দশদল পদ্ম যে তথায়,
    সুষুম্নার পথ দিয়ে এস গো জননী,
    কমলে কমলে থাক কমলে কামিনী।
    তদূর্ধ্বেতে আছে মাগো সুধা সরোবর,
    রক্তবর্ণের দ্বাদশদল পদ্ম মনোহর,
    পাদপদ্মে দিয়ে যদি এ পদ্ম প্রকাশ।
    (মা), হৃদে আছে বিভাবরী তিমির বিনাশ।
    তদূর্ধ্বেতে আছে মাগো নাম কণ্ঠস্থল,
    ধূম্রবর্ণের পদ্ম আছে হয়ে ষোড়শদল।
    সেই পদ্ম মধ্যে আছে অম্বুজে আকাশ,
    সে আকাশ রুদ্ধ হলে সকলি আকাশ।
    তদূর্ধ্বে ললাটে স্থান মা আছে দ্বিদল পদ্ম,
    সদায় আছয়ে মন হইয়ে আবদ্ধ।
    মন যে মানে না আমার মন ভাল নয়,
    দ্বিদলে বসিয়া রঙ্গ দেখয়ে সদায়।
    তদূর্ধ্বে মস্তকে স্থান মা অতি মনোহর,
    সহস্রদল পদ্ম আছে তাহার ভিতর।
    তথায় পরম শিব আছেন আপনি,
    সেই শিবের কাছে বস শিবে মা আপনি।
    তুমি আদ্যাশক্তি মা জিতেন্দ্রিয় নারী,
    যোগীন্দ্র মুনীন্দ্র ভাবে নগেন্দ্র কুমারী।
    হর শক্তি হর শক্তি সুদনের এবার,
    যেন না আসিতে হয় মা ভব পারাবার।
    তুমি আদ্যাশক্তি মাগো তুমি পঞ্চতত্ত্ব,
    কে জানে তোমারে তুমি তুমিই তত্ত্বাতীত।
    ওমা ভক্ত জন্য চরাচরে তুমি সে সাকার,
    পঞ্চে পঞ্চ লয় হলে তুমি নিরাকার।

    নিরাকার সচ্চিদানন্দ দর্শন—ষট্‌চক্রভেদ—নাদভেদ ও সমাধি 

    শ্রীযুক্ত রামলাল যখন গাহিতেছেন (Kathamrita):

    “তদূর্ধ্বেতে আছে মাগো নাম কণ্ঠস্থল,
    ধূম্রবর্ণের পদ্ম আছে হয়ে ষোড়শদল।
    সেই পদ্ম মধ্যে আছে অম্বুজে আকাশ,
    সে আকাশ রুদ্ধ হলে সকলি আকাশ।”

    তখন ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) মাস্টারকে বলিতেছেন—

    “এই শুন, এরই নাম নিরাকার সচ্চিদানন্দ-দর্শন। বিশুদ্ধচক্র ভেদ হলে সকলি আকাশ।”

    মাস্টার—আজ্ঞে হাঁ।

    শ্রীরামকৃষ্ণ—এই মায়া-জীব-জগৎ পার হয়ে গেলে তবে নিত্যতে পৌঁছানো যায়। নাদ ভেদ হলে তবে সমাধি হয়। ওঁকার সাধন করতে করতে নাদ ভেদ হয়, আর সমাধি হয়।

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 250: “গোবিন্দ, গোবিন্দ, সচ্চিদানন্দ, হরিবোল! হরিবোল! নাম করিতেছেন, আর যেন মধু বর্ষণ হইতেছে”

    Ramakrishna 250: “গোবিন্দ, গোবিন্দ, সচ্চিদানন্দ, হরিবোল! হরিবোল! নাম করিতেছেন, আর যেন মধু বর্ষণ হইতেছে”

    শ্রীরামকৃষ্ণ দক্ষিণেশ্বরে ও ভক্তগৃহে

    চতুর্থ পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ২১শে জুলাই

    শ্রীযুক্ত অধর সেনের বাটীতে কীর্তনানন্দে

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) অধরের বাড়ি আসিয়াছেন। রামলাল, মাস্টার, অধর আর অন্য অন্য ভক্ত তাঁহার কাছে অধরের বৈঠকখানায় বসিয়া আছেন। পাড়ার দু-চারিটি লোক ঠাকুরকে দেখিতে আসিয়াছেন (Kathamrita)। রাখালের পিতা কলিকাতায় আছেন—রাখাল সেইখানেই আছেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (অধরের প্রতি)—কই রাখালকে খবর দাও নাই?

    অধর—আজ্ঞে হাঁ, তাঁকে খবর দিয়াছি।

    রাখালের জন্য ঠাকুরকে ব্যস্ত দেখিয়া অধর দ্বিরুক্তি না করিয়া রাখালকে আনিতে একটি লোক সঙ্গে নিজের গাড়ি পাঠাইয়া দিলেন।

    অধর ঠাকুরের কাছে বসিলেন। আজ ঠাকুরকে দর্শনজন্য অধর ব্যাকুল হইয়াছেন। ঠাকুরের এখানে আসিবার কথা পূর্বে কিছু ঠিক ছিল না। ঈশ্বরের ইচ্ছায় তিনি আসিয়া পড়িয়াছেন।

    অধর—আপনি অনেকদিন আসেন নাই। আমি আজ ডেকেছিলাম(Kathamrita),—এমন কি চোখ দিয়ে জল পড়েছিল।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)(প্রসন্ন হইয়া, সহাস্যে)—বল কি গো!

    সন্ধ্যা হইয়াছে। বৈঠকখানায় আলো জ্বালা হইল। ঠাকুর জোড় হস্তে জগন্মাতাকে প্রণাম করিয়া নিঃশব্দে বুঝি মূলমন্ত্র করিলেন। তৎপরে মধুর স্বরে নাম করিতেছেন। বলিতেছেন, গোবিন্দ, গোবিন্দ, সচ্চিদানন্দ, হরিবোল! হরিবোল! নাম করিতেছেন, আর যেন মধু বর্ষণ হইতেছে। ভক্তেরা অবাক্‌ হইয়া সেই নাম-সুধা পান করিতেছেন। শ্রীযুক্ত রামলাল (Ramakrishna) এইবার গান গাইতেছেন:

    ভুবন ভুলাইলি মা, হরমোহিনী।
    মূলাধারে মহোৎপলে, বীণাবাদ্য-বিনোদিনী।
    শরীর শারীর যন্ত্রে সুষুম্নাদি ত্রয় তন্ত্রে,
    গুণভেদ মহামন্ত্রে গুণত্রয়বিভাগিনী ॥
    আধারে ভৈরবাকার ষড়দলে শ্রীরাগ আর,
    মণিপুরেতে মহ্লার, বসন্তে হৃৎপ্রকাশিনী
    বিশুদ্ধ হিল্লোল সুরে, কর্ণাটক আজ্ঞাপুরে,
    তান লয় মান সুরে, তিন গ্রাম-সঞ্চারিণী।
    মহামায়া মোহপাশে, বদ্ধ কর অনায়াসে,
    তত্ত্ব লয়ে তত্ত্বাকাশে স্থির আছে সৌদামিনী।
    শ্রীনন্দকুমারে কয়, তত্ত্ব না নিশ্চয় হয়,
    তব তত্ত্ব গুণত্রয়, কাকীমুখ-আচ্ছাদিনী।

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Maha Kumbh Mela 2025: কুম্ভ মেলার সাত-সতেরো, জানেন আখড়া কী, অমৃত স্নানই বা কী?

    Maha Kumbh Mela 2025: কুম্ভ মেলার সাত-সতেরো, জানেন আখড়া কী, অমৃত স্নানই বা কী?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মঙ্গল সংক্রান্তির দিন উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে অমৃত স্নান (Amrit Snan) সারলেন কয়েক কোটি পুণ্যার্থী (Maha Kumbh Mela 2025)। সোমবারই শুরু হয়েছে মহাকুম্ভ ২০২৫। প্রথম শাহি স্নান হল মঙ্গলবার, মকর সংক্রান্তির পবিত্র দিনে। প্রতি ১২ বছর অন্তর হয় পূর্ণকুম্ভ। আর ১৪৪ বছর পর হয় মহাকুম্ভ। এবার সেই যোগ।

    সঙ্গমে স্নান

    প্রত্যাশিতভাবেই প্রয়াগরাজে গঙ্গা-যমুনা ও পৌরাণিক সরস্বতীর সঙ্গমে স্নান করবেন লাখ লাখ পুণ্যার্থী। কুম্ভস্নানে মোক্ষ লাভ হয় বলে হিন্দুদের বিশ্বাস। তাই কুম্ভমেলায় সাধুদের পাশাপাশি ভিড় করেন সাধারণ মানুষও। এঁদের সিংহভাগই পুণ্যার্থী। দর্শনার্থীও ভিড় করেন অনেকে। কুম্ভে আখড়া বসে। মোট ১৩টি আখড়া রয়েছে। এই আখড়াগুলি আবার তিনটি দলে বিভক্ত। এগুলি হল, সন্ন্যাসী (শৈব), বৈরাগী (বৈষ্ণব) এবং উদাসীন। শৈব আখড়াগুলির মধ্যে রয়েছে মহানির্বাণী, আতাল, নিরঞ্জনী, আনন্দ, ভৈরব, আওহান এবং অগ্নিষ। বৈরাগী আখড়াগুলি হল, নির্মোহী, দিগম্বর আনি এবং নির্বাণী আনি। উদাসীন আখড়া দুটি – উদাসীন আখড়া ও নির্মলা আখড়া।

    আখড়ার ভূমিকা

    আসুন, আখড়াগুলির সংগঠন, ঐতিহাসিক গুরুত্ব এবং কুম্ভমেলায় তাদের মূল ভূমিকা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। এই আখাড়াগুলি কুম্ভমেলার (Maha Kumbh Mela 2025) রক্ষক হিসেবে কাজ করে, যেখানে তারা গুরুত্বপূর্ণ আচার-অনুষ্ঠান পালন করে এবং পবিত্র ঘটনায় অবদান রাখে, যেমন ‘অমৃত স্নান’। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে, আখাড়াগুলি হিন্দু ঐতিহ্য সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। দেশের মন্দির এবং পবিত্র স্থানগুলি রক্ষায় সহায়ক ছিল। অষ্টম শতাব্দী থেকে বিভিন্ন আখাড়ার সাধুরা প্রয়াগরাজে জমায়েত হচ্ছেন অমৃত স্নান করতে। নবম শতাব্দী থেকে অষ্টাদশ শতাব্দী পর্যন্ত আখাড়াগুলি একমাসব্যাপী কুম্ভ উৎসবের আয়োজন করত। অমৃত স্নানের ক্রম নির্ধারণ করত। বর্তমানে অমৃত স্নানের ক্রম প্রতিষ্ঠানভুক্ত হয়েছে। তা সত্ত্বেও আখাড়াগুলির এখনও একটি প্রাধান্য রয়েছে।

    আখড়ার গঠন

    আখড়াগুলির শীর্ষে থাকেন একজন মহন্ত বা আচার্য। এঁরা আধ্যাত্মিক ও প্রশাসনিক দায়িত্বগুলি পালন করেন। আখড়ার মধ্যে বিভিন্ন পদমর্যাদা রয়েছে। এঁদের মধ্যে আখড়ায় উচ্চ পদমর্যাদার সন্ন্যাসী হলেন মহামণ্ডলেশ্বর। তাঁদের প্রভাব এবং কর্তৃত্ব সবচেয়ে বেশি। আখড়াগুলিতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় নবাগতদের। যা অত্যন্ত কঠোর। প্রশিক্ষণ পর্বে আধ্যাত্মিক অনুশীলন, ধ্যান, ধর্মগ্রন্থ পাঠ, এবং শারীরিক অনুশীলন যেমন ঐতিহ্যবাহী ভারতীয় কুস্তি এবং মার্শাল আর্টস অনুশীলন। এই প্রতিষ্ঠানগুলিতে অনুসৃত শৃঙ্খলা শারীরিক এবং মানসিক দক্ষতা উভয়ই অর্জন করে, যার লক্ষ্য আধ্যাত্মিকতা অর্জন।

    হিন্দু ধর্মে আখড়ার গুরুত্ব

    হিন্দু ধর্মে আখড়ার বিশাল (Amrit Snan) গুরুত্ব রয়েছে বিভিন্ন কারণে। এগুলি হল—

    প্রথা সংরক্ষণ: আখড়া প্রাচীন আধ্যাত্মিক প্রথা, আচার-অনুষ্ঠান এবং শিক্ষা সংরক্ষণে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তারা পবিত্র গ্রন্থ, স্তোত্র এবং অভ্যাসের জ্ঞান এক প্রজন্ম থেকে পরবর্তী প্রজন্মে পৌঁছে দেয় এবং এভাবে তা সংরক্ষণ করে।

    আধ্যাত্মিক প্রশিক্ষণ: এই প্রতিষ্ঠানগুলি আধ্যাত্মিক অনুসন্ধানীদের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট পরিবেশ দেয়। এখানে তারা কঠোর প্রশিক্ষণ নেয়। এগুলি শৃঙ্খলা, ভক্তি এবং আত্ম-আবিষ্কারের বিকাশ ঘটায়। আধ্যাত্মিক আলোকোজ্জ্বলতা অর্জনের উদ্দেশ্যে সদস্যরা কঠোর জীবনযাপন করেন।

    সাংস্কৃতিক রক্ষক: প্রধান ধর্মীয় অনুষ্ঠান, উৎসব এবং তীর্থযাত্রায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে আখড়াগুলি হিন্দু সমাজের সাংস্কৃতিক পরিসরে অবদান রাখে। কুম্ভ মেলার মতো অনুষ্ঠানগুলিতে তাদের উপস্থিতি তাদের সাংস্কৃতিক এবং আধ্যাত্মিক নেতৃস্থানীয় ভূমিকা তুলে ধরে।

    যুদ্ধকালীন ঐতিহ্য: ঐতিহাসিকভাবে, আখড়াগুলি যুদ্ধ প্রশিক্ষণের সঙ্গে যুক্ত ছিল। আখড়ার সদস্যদের ধর্মরক্ষা এবং পবিত্র স্থানগুলির সুরক্ষা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত করা হত। এই যুদ্ধকালীন ঐতিহ্য এখনও কিছু আখড়ায় দেখা যায়, বিশেষ করে নাগা সাধুরা — যারা তাদের যোদ্ধা-ভাবমূর্তির জন্যই পরিচিত।

    সামাজিক প্রভাব: আখাড়াগুলি সামাজিক এবং দানশীল কর্মকাণ্ডে জড়িত, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং নানা প্রয়োজনে সাহায্য দিয়ে থাকে।

    ‘অমৃত স্নান’ ১৩টি আখড়ার (Maha Kumbh Mela 2025) অংশগ্রহণ দিয়ে শুরু হয়। প্রতিটি আখড়া তাদের ঐতিহ্যবাহী ক্রম এবং নির্ধারিত সময় অনুযায়ী পবিত্র স্নান সারেন। এই অনুষ্ঠানটি অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে সংগঠিত হয়, যেখানে প্রশাসন সময়সূচি সমন্বয় করে নিশ্চিত করে যে প্রতিষ্ঠিত রীতিনীতি সঠিকভাবে অনুসরণ করা হচ্ছে (Amrit Snan)।

    কুম্ভমেলায় গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি আখড়া হল-

    জুনা আখড়া: এটি ১৩টি আখড়ার মধ্যে সবচেয়ে বড়। জুনা আখড়া শৈবধর্মের দশনামী সাম্প্রদায়ে বিশ্বাসী, যা আদি শংকরাচার্য প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। এঁরা ভগবান দত্তাত্রেয়র পুজো করেন। কিন্নর আখড়া (তৃতীয় লিঙ্গ আখাড়া) জুনা আখড়ারই একটি অংশ। জুনা আখড়ার অনুসারীরা প্রধানত শৈব, যাঁরা ভগবান শিবের প্রতি নিবেদিত। এঁদের মধ্যে অনেক নাগাও আছেন। জুনা আখড়া কুম্ভ মেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই আখড়ার সাধুরা তপস্যা ও ত্যাগের জন্য পরিচিত। আখড়াটির একটি সমৃদ্ধশালী আধ্যাত্মিক ও মার্শাল আর্ট প্রশিক্ষণের ঐতিহ্য রয়েছে। এর প্রধান হলেন আচার্য মহামণ্ডলেশ্বর স্বামী অভদেশনন্দ।

    নিরঞ্জনী আখড়া: দ্বিতীয় বৃহত্তম আখড়া হল শ্রী পঞ্চায়েতি নিরঞ্জনী আখড়া। ৯০৪ খ্রিস্টাব্দে গুজরাটে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এই প্রতিষ্ঠানে ভক্তরা প্রধানত কার্তিকের পুজো করেন। এই আখড়ায় বহু উচ্চশিক্ষিত সদস্য রয়েছেন। পিএইচডি এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারীরাও রয়েছেন। এর প্রধান হলেন আচার্য মহামণ্ডলেশ্বর কৈলাশানন্দজি মহারাজ।

    মহানির্বাণী আখড়া (প্রয়াগরাজ): শ্রী পঞ্চায়েতি মহানির্বাণী আখড়ার প্রধান দেবতা হলেন ঋষি কপিলমুনি। ভক্তরা ভৈরব প্রকাশ ভল্লা এবং সূর্য প্রকাশ ভল্লার মতো পবিত্র চিহ্নগুলির পুজো করেন। এগুলি যথাক্রমে সুরক্ষা ও জ্ঞানদানের প্রতীক। এই আখড়ার প্রধান হলেন আচার্য মহামণ্ডলেশ্বর স্বামী বিশোকানন্দ।

    আরও পড়ুন: দেশে সত্যিকারের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল রাম মন্দির প্রতিষ্ঠার দিন, বললেন ভাগবত

    কিন্নর আখড়া: তৃতীয় লিঙ্গ আখড়া একটি অনন্য এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক আধ্যাত্মিক সম্প্রদায়। এই সম্প্রদায় কুম্ভ মেলা এবং অন্যান্য পবিত্র আচার-অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে। ঐতিহ্যবাহী আখড়াগুলি মূলত পুরুষদের দ্বারা পরিচালিত হয়। আর কিন্নর আখড়া পরিচালিত হয় তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তিদের দ্বারা। কিন্নর আখড়ার সদস্যরা বিভিন্ন আধ্যাত্মিক চর্চায় অংশগ্রহণ করেন, যেমন আচার, প্রার্থনা, এবং ধ্যান। কুম্ভ মেলা প্রক্রিয়ায় অন্যান্য আখড়ার সঙ্গে তাঁদের অংশগ্রহণ তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তিদের গ্রহণযোগ্যতা এবং পরিচিতির বড় প্রমাণ। কিন্নর আখড়ার উপস্থিতি হিন্দুধর্মের অন্তর্ভুক্তি ও বৈচিত্র্যের একটি শক্তিশালী স্মারক। এটি আধ্যাত্মিক যাত্রায় সমস্ত শ্রেণীর মানুষকে আলিঙ্গন করে (Maha Kumbh Mela 2025)।

    অমৃত স্নান

    কুম্ভে গিয়ে পবিত্র দিনে স্নানকে বলা হত শাহি স্নান। বর্তমানে এই নাম বদলে হয়েছে অমৃত স্নান। শব্দটি চালু করেছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। তিনি নিজে নাথ সম্প্রদায়ের যোগী। হরিদ্বারের মাণসা দেবী মন্দির ট্রাস্টের সভাপতি মহন্ত পুরী বলেন, ‘‘আমরা সবাই হিন্দি এবং উর্দু ভাষায় কথা বলি। এটা সম্ভব নয় যে আমরা কোনও উর্দু শব্দ বলি না। কিন্তু আমরা ভাবলাম যে যখন আমাদের দেবতাদের কথা আসে, তখন আমাদের চেষ্টা করা উচিত সংস্কৃত ভাষায় নাম রাখা বা ‘সনাতনী’ নাম দেওয়ার। সেই কারণেই শাহি স্নান হয়েছে অমৃত স্নান (Amrit Snan)। আমাদের উদ্দেশ্য, হিন্দু বনাম মুসলিম করা নয় (Maha Kumbh Mela 2025)।’’ প্রসঙ্গত, এবছর অমৃত স্নানের যোগ রয়েছে পাঁচটি। এগুলি হল, ১৪ জানুয়ারি মকর সংক্রান্তি, ২৯ জানুয়ারি মৌনী অমাবস্যা, ৩ ফেব্রুয়ারি বসন্ত পঞ্চমী, ১২ ফেব্রুয়ারি মাঘি পূর্ণিমা এবং ২৬ ফেব্রুয়ারি মহা শিবরাত্রি।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Gangasagar Mela 2025: গঙ্গাসাগরের স্নানে কেন পুণ্য হয়, পৌরাণিক কাহিনিতে ভগীরথ কেন গঙ্গাকে এনেছিলেন?

    Gangasagar Mela 2025: গঙ্গাসাগরের স্নানে কেন পুণ্য হয়, পৌরাণিক কাহিনিতে ভগীরথ কেন গঙ্গাকে এনেছিলেন?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ১৪৪ বছর পর উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে পূর্ণ মহাকুম্ভ মেলার শুভ পুণ্যস্নান শুরু হয়েছে। একই ভাবে সারা ভারতে কুম্ভের পরেই বঙ্গের সাগরদ্বীপের গঙ্গাসাগর মেলা (Gangasagar Mela 2025) জগদ্বিখ্যাত। এই মেলা অনুষ্ঠিত হয় পৌষ মাসের সংক্রান্তিতে। বলা হয় দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় মেলা। আবার এই সময় থেকে সূর্যের দক্ষিণায়ন থেকে উত্তরায়ণের পথে ধাবিত হয়। এই তিথিতে বৃহস্পতিও অত্যন্ত শুভ জায়গায় অবস্থান করে। এই মাহেন্দ্রক্ষণকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হয়। গঙ্গাসাগরে স্নান করে কপিল মুনির আশ্রমে পুজো দিলে মনের সকল বাসনা পূর্ণ বলে মনে করা হয়। গঙ্গাকে কীভাবে সাগরের সঙ্গমে আনা হয়েছিল এবং পুজো করা হয়েছিল সেই পৌরাণিক কাহিনি (Mythological Story) এখনও লোকমুখে প্রচলিত। স্থাননাম এবং আধ্যাত্মিক গুরুত্বের বিচারে গঙ্গাসাগর হিন্দুশাস্ত্রে শ্রেষ্ঠ তীর্থ ধামের মধ্যে অন্যতম।

    কোন তিথিতে গঙ্গা সাগরে পুণ্যস্নান (Gangasagar Mela 2025)?

    প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই গঙ্গাসাগর মেলা (Gangasagar Mela 2025) চলবে আগামী ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত। মকর সংক্রান্তি লাগবে ১৪ জানুয়ারি দুপুর ২টো ৫৮ মিনিট থেকে এবং পুণ্যস্নান করার সময় লাগবে সকাল ৬টা ৫৮ মিনিটে। ওই মুহূর্ত চলবে সকাল ৬টা ৫৮ মিনিট থেকে ১৫ জানুয়ারি সকাল ৬টা ৫৮ মিনিট পর্যন্ত। প্রত্যেক বছরের মতো লক্ষ লক্ষ ভক্তরা পুণ্যের আশায় সাগরসঙ্গমে স্নান করবেন। গঙ্গায় স্নান করে ভক্তরা কপিলমুনির আশ্রমে দেবেন পুজোও। সমস্ত পাপ ধুয়ে নতুন ভাবে জীবনে পুণ্য সঞ্চয়ের ইচ্ছা প্রকাশ করেন তীর্থযাত্রী এবং ভক্তগণ। জন্ম-মৃত্যুর চক্র থেকে মুক্তি পেয়ে ক্ষুদ্র আত্মা পরমাত্মায় বিলীন হয়ে যেতে চান ভক্তরা। আর এই জন্য ভক্তরা মনে করেন ‘সব তীর্থ বার বার গঙ্গাসাগর একবার’।

    মেলাকে ঘিরে বিশ্বাস করা হয় যে কেউ যদি মাহেন্দ্রক্ষণে গঙ্গাসাগরে ডুব দেন তবে ১০০টি অশ্বমেধ যজ্ঞ করার সমান পুণ্য হয়। এই স্নান একটি বৈদিক আচার স্বরূপ। এই পুণ্যস্নান হিন্দু ধর্মের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ভক্তরা গঙ্গাসাগর মেলায় বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠানে অংশ নেন। যেমন- গঙ্গা নদীতে ডুব দেওয়া এবং প্রদীপ জ্বালিয়ে থাকেন। প্রাচীন মহাভারতে এই গঙ্গা-সাগর-ভগীরথ-কপিলমুনির গল্প কথা রয়েছে। আজকের সাগরদ্বীপ বহুপুরাতন হিন্দু সংস্কৃতি বহন করেছে। তাই তো লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি তীর্থযাত্রীদের সমাগম হয়।

    জ্যোতিষশাস্ত্রে মকর সংক্রান্তির বিরাট গুরুত্ব

    মকর সংক্রান্তিতে (Gangasagar Mela 2025) জ্যোতিষশাস্ত্রের বিরাট গুরুত্ব রয়েছে। ভারতীয় জ্যোতিষ শাস্ত্র মতে সূর্য দেবতা এক রাশি থেকে অন্যরাশিতে চলন শুরু করে। আবার হিন্দুপঞ্জিকা ও পুরাণ  (Mythological Story) মতে সূর্য এদিন থেকে মকর রাশিতে প্রবেশ করে এবং এখানে টানা একমাস অবস্থান করেন। মকর হল শনিঘর। সূর্য এবং শনি একে অপরের ঠিক বিপরীতে অবস্থান করে। শনি হলেন আবার সূর্য দেবের পুত্র। মকর সংক্রান্তি থেকে সূর্য তাঁর ছেলের উপর রাগ কমিয়ে দেয় এবং একে অপরের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক প্রসারিত করে। একেই শুভ সময় বলে ধরা হয়। অপর দিকে মকর সংক্রান্তি হল দীর্ঘ শীতের অবসান, একই সঙ্গে নতুন ফসল কাটার সময়। হিন্দুধর্ম মতে একেই সূর্যের উত্তরায়ণ হিসেবে ভাবা হয়। সকল অশুভ সময়ের অবসান হয় এবং শুভ সময়ের সূচনা হয়। এই সময় থেকে দিন বড় হতে শুরু করে এবং রাত ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে। এই বিষয়টি সম্পূর্ণ ভাবে জ্যোতিষ অনুশীলন এবং জ্যোতির্বিদ্যাগত দৃষ্টিভঙ্গিতে গুরুত্বপূর্ণ।

    আরও পড়ুনঃ “প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর পরিস্থিতি সংবেদনশীল, কিন্তু স্থিতিশীল”, বললেন সেনাপ্রধান

    ভগীরথের গঙ্গা আনয়ন

    গঙ্গাসাগরের (Gangasagar Mela 2025) এই মেলা এবং তীর্থস্থান সম্পর্কে পৌরাণিক (Mythological Story) গল্পগাঁথা রয়েছে। বলা হয়, যেদিন মহাদেবের কেশ থেকে উৎপন্ন হয়ে গঙ্গা পৃথিবীতে প্রবাহিত হয়ে ঋষি কপিলমুনির আশ্রমে পৌঁছে গিয়েছিল সেই দিনটি ছিল মকর সংক্রান্তি। পৌরাণিক গল্পের আদলে গঙ্গাসাগরে কপিলমুনির মন্দির এখনও লক্ষ্য করা যায়। শোনা যায় মূল মন্দির সাগর গর্ভে অনেক আগেই তলিয়ে গিয়েছে। পরবর্তী সময়ে বর্তমান মন্দির নির্মাণ করা হয়েছে। এই কপিলমুনিকে ভাগবান বিষ্ণুর অবতার বলা হয়।

    কপিলমুনির অভিশাপে ভস্ম হয়ে গিয়েছিল সাগরের ৬০ হাজার পুত্র

    এই কপিলমুনির সময়ে ইক্ষাকু বংশের রাজা সাগর অশ্বমেধ যজ্ঞের আয়োজন করেছিলেন। দেবরাজ ইন্দ্র ৯৯ বার এই রাজার যজ্ঞ দেখে ভয় পেয়ে আটকানোর ফন্দি করেন। রাজা সাগর যজ্ঞের ঘোড়াকে ছেড়ে দিয়েছিলেন এবং ঘোষণা করে ছিলেন এই ঘোড়া যে যে রাজ্যের উপর দিয়ে যাবে তাঁরা সাগরের জয় স্বীকার করতে হবে। একইভাবে ঘোড়াকে রক্ষা করতে ৬০ হাজার পুত্রকে পাঠিয়ে ছিলেন। দেখা গিয়েছে একটি ঘোড়া হারিয়ে যায়, এরপর ওই ঘোড়া পাওয়া যায় কপিলমুনির আশ্রমে। কার্যত ইন্দ্র ঘোড়াকে কপিলমুনির আশ্রমে লুকিয়ে রাখেন কৌশল করে। তারপর রাজার ছেলেরা কুপিলমুনিকে কুকথা বলে সম্বোধন করেন। ফলে মুনি ক্ষিপ্ত হয়ে চোখের তীক্ষ্ণ ক্ষোভের আগুনে ৬০ হাজার ছেলেকে ভস্ম করে দেন। এরপর বহু বছর ধরে অভিশাপ থেকে মুক্তি পাননি রাজা সাগর। পরে সূর্যবংশের পরবর্তী বংশধর রাজা ভগীরথ কপিল মুনির আশ্রমে পৌঁছে গিয়ে ক্ষমা চান। তিনি পিতৃপুরুষের মুক্তির জন্য আশীর্বাদ কামনা করেন। তখন গঙ্গাকে (Gangasagar Mela 2025) কঠিন তপস্যার মাধ্যমে গঙ্গাকে নিয়ে আসার কথা বলে ভগীরথকে মুক্তির পথ দেখান কপিলমুনি।

    শ্রাদ্ধ, প্রদীপ প্রজ্বলন, পিন্ডদান হয়

    রাজা ভগীরথ তপস্যা করে গঙ্গাকে হিমালয় থেকে সমুদ্রে নিয়ে আসেন। ফলে গঙ্গার প্রবহমান জলধারায় মুক্তি লাভ করেন সাগরের ৬০ হাজার পুত্র। আত্মমুক্তির তাই পীঠস্থান হল গঙ্গাসাগর। সমস্ত পাপের স্খলন হয় গঙ্গাস্নানে। সাগর রাজার নামে দক্ষিণ ২৪ পরগনার এই জায়গার সাগর নামকরণ করা হয়েছে। একই ভাবে রাজা ভগীরথের নামে নদীর নাম হয় ভাগীরথী। সমুদ্র এবং দ্বীপের নামে নামকরণ হয়েছে সাগরদ্বীপ। হিন্দুদের কাছে অত্যন্ত পবিত্রধাম। এখানে স্নানের সঙ্গে সঙ্গে শ্রাদ্ধ, প্রদীপ প্রজ্বলন, পিন্ডদান এবং পূজা আচার সব করা হয়। এককথায় হিন্দুদের কাছে মোক্ষধাম গঙ্গাসাগর (Gangasagar Mela 2025)।   

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 249: “হে ঈশ্বর! আমি তোমায় চাই, দেখো যেন তোমার ভুবনমোহিনী মায়ার ঐশ্বর্যে মুগ্ধ করো না”

    Ramakrishna 249: “হে ঈশ্বর! আমি তোমায় চাই, দেখো যেন তোমার ভুবনমোহিনী মায়ার ঐশ্বর্যে মুগ্ধ করো না”

    শ্রীরামকৃষ্ণ দক্ষিণেশ্বরে ও ভক্তগৃহে

    তৃতীয় পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ২১শে জুলাই

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ কলিকাতা রাজপথে ভক্তসঙ্গে

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—মাইরি বলছি, আমার যদি একটুও অভিমান হয়।

    মণি—গ্রীস দেশে একটি লোক ছিলেন, তাঁহার নাম সক্রেটিস। দৈববাণী হয়েছিল যে, সকল লোকের মধ্যে তিনি জ্ঞানী। সে ব্যক্তি অবাক্‌ হয়ে গেল। তখন নির্জনে অনেকক্ষণ চিন্তা করে বুঝতে পারলে। তখন সে বন্ধুদের বললে, আমিই কেবল বুঝেছি যে, আমি কিছুই জানি না। কিন্তু অন্যান্য সকল লোকে বলছে, “আমাদের বেশ জ্ঞান হয়েছে।” কিন্তু বস্তুতঃ সকলেই অজ্ঞান।

    শ্রীরামকৃষ্ণ—আমি এক-একবার ভাবি যে, আমি কি জানি যে এত লোকে আসে! বৈষ্ণবচরণ খুব পণ্ডিত ছিল। সে বলত, তুমি যে-সব কথা বল সব শাস্ত্রে পাওয়া যায়, তবে তোমার কাছে কেন আসি জানো? তোমার মুখে সেইগুলি শুনতে আসি।

    মণি—সব কথা শাস্ত্রের সঙ্গে মেলে। নবদ্বীপ গোস্বামীও সেদিন পেনেটীতে সেই কথা বলছিলেন। আপনি বললেন যে, “গীতা গীতা” বলতে বলতে “ত্যাগী ত্যাগী” হয়ে যায়। বস্তুতঃ তাগী হয়, কিন্তু নবদ্বীপ গোস্বামী বললেন, ‘তাগী’ মানেও যা ‘ত্যাগী’ মানেও তা, তগ্‌ ধাতু একটা আছে তাই থেকে ‘তাগী’ হয়।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—আমার সঙ্গে কি আর কারু মেলে? কোন পণ্ডিত, কি সাধুর সঙ্গে?

    মণি—আপনাকে ঈশ্বর স্বয়ং হাতে গড়েছেন। অন্য লোকদের কলে ফেলে তয়ের করেছেন — যেমন আইন অনুসারে সব সৃষ্টি হচ্ছে।

    শ্রীরামকৃষ্ণ—(সহাস্যে রামলালাদিকে)—ওরে, বলে কিরে!

    ঠাকুরের হাস্য আর থামে না। অবশেষে বলিতেছেন, মাইরি বলছি, আমার যদি একটুও অভিমান হয়।

    মণি—বিদ্যাতে একটা উপকার হয়, এইটি বোধ হয় যে, আমি কিছু জানি না, আর আমি কিছুই নই।

    শ্রীরামকৃষ্ণ—ঠিক ঠিক। আমি কিছুই নই!—আমি কিছুই নই!—আচ্ছা, তোমার ইংরেজী জ্যোতিষে বিশ্বাস আছে (Kathamrita)?

    মণি—ওদের নিয়ম অনুসারে নূতন আবিষ্ক্রিয়া (Discovery) হতে পারে, ইউরেনাস (Uranus) গ্রহের এলোমেলো চলন দেখে দূরবীন দিয়ে সন্ধান করে দেখলে যে, নূতন একটি গ্রহ (Neptune) জ্বলজ্বল করছে। আবার গ্রহণ গণনা হতে পারে।

    শ্রীরামকৃষ্ণ—তা হয়ে বটে।

    গাড়ি চলিতেছে,—প্রায় অধরের বাড়ির নিকট আসিল। ঠাকুর মণিকে বলিতেছেন:

    “সত্যেতে থাকবে, তাহলেই ইশ্বরলাভ হবে।”

    মণি—আর-একটি কথা আপনি নবদ্বীপ গোস্বামীকে বলেছিলেন (Kathamrita), “হে ঈশ্বর! আমি তোমায় চাই। দেখো, যেন তোমার ভুবনমোহিনী মায়ার ঐশ্বর্যে মুগ্ধ করো না!—আমি তোমায় চাই।”

    শ্রীরামকৃষ্ণ(Ramakrishna)—হাঁ, ওইটি আন্তরিক বলতে হবে।

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 248: “তাঁর চৈতন্যে জগতের চৈতন্য। এক-একবার দেখি, ছোট ছোট মাছের ভিতর সেই চৈতন্য কিলবিল করছে!”

    Ramakrishna 248: “তাঁর চৈতন্যে জগতের চৈতন্য। এক-একবার দেখি, ছোট ছোট মাছের ভিতর সেই চৈতন্য কিলবিল করছে!”

    শ্রীরামকৃষ্ণ দক্ষিণেশ্বরে ও ভক্তগৃহে

    তৃতীয় পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ২১শে জুলাই

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ কলিকাতা রাজপথে ভক্তসঙ্গে

    “তাঁর কাণ্ড কি কিছু বুঝা যায় গা! কাছে তিনি — অথচ বোঝবার জো নাই, বলরাম কৃষ্ণকে ভগবান বলে জানতেন না।”

    মণি—আজ্ঞা হাঁ! আপনি ভীষ্মদেবের কথা যেমন বলেছিলেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—হাঁ, হাঁ, কি বলেছিলাম বল দেখি।

    মণি—ভীষ্মদেব শরশয্যায় কাঁদছিলেন, পাণ্ডবেরা শ্রীকৃষ্ণকে বললেন, ভাই, একি আশ্চর্য! পিতামহ এত জ্ঞানী, অথচ মৃত্যু ভেবে কাঁদছেন! শ্রীকৃষ্ণ বললেন, ওঁকে জিজ্ঞাসা কর না, কেন কাঁদছেন! ভীষ্মদেব বললেন, এই ভেবে কাঁদছি যে, ভগবানের কার্য কিছুই বুঝতে পারলাম না! হে কৃষ্ণ, তুমি এই পাণ্ডবদের সঙ্গে সঙ্গে ফিরছ, পদে পদে রক্ষা করছ, তবু এদের বিপদের শেষ নাই।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—তাঁর মায়াতে সব ঢেকে রেখেছেন — কিছু জানতে দেন না। কামিনী-কাঞ্চন মায়া। এই মায়াকে সরিয়ে যে তাঁকে দর্শন করে সেই তাঁকে দেখতে পায়। একজনকে বোঝাতে বোঝাতে (ঈশ্বর একটি আশ্চর্য ব্যাপার) দেখালেন, হঠাৎ সামনে দেখলাম, দেশের (কামারপুকুরের) একটি পুকুর, আর-একজন লোক পানা সরিয়ে যেন জলপান করলে। জলটি স্ফটিকের মতো। দেখালে যে, সেই সচ্চিদানন্দ মায়ারূপ পানাতে ঢাকা,—যে সরিয়ে জল খায় সেই পায়।

    “শুন, তোমায় অতি গুহ্য কথা বলছি! ঝাউতলার দিকে বাহ্যে করতে করতে দেখলাম—চোর কুঠরির দরজার মতো একটা সামনে, কুঠরির ভিতর কি আছে দেখতে পাচ্ছি না। আমি নরুন দিয়ে ছেঁদা করতে লাগলাম, কিন্তু পারলুম না। ছেঁদা করি কিন্তু আবার পুরে আসে! তারপর একবার এতখানি ছেঁদা হল!”

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) এই কথা বলিয়া মৌনাবলম্বন করিলেন। এইবার আবার কথা কহিতেছেন, “এ-সব বড় উঁচু কথা—ওই দেখ আমার মুখ কে যেন চেপে চেপে ধরছে!

    “যোনিতে বাস স্বচক্ষে দেখলাম (Kathamrita)!—কুকুর-কুক্কুরীর মৈথুন সময়ে দেখেছিলাম।

    “তাঁর চৈতন্যে জগতের চৈতন্য। এক-একবার দেখি, ছোট ছোট মাছের ভিতর সেই চৈতন্য কিলবিল করছে!”

    গাড়ি শোভাববাজারের চৌমাথায় দরমাহাটার নিকট উপস্থিত হইল। ঠাকুর আবার বলিতেছেন:

    “এক-একবার দেখি বরষায় যেরূপ পৃথিবী জরে থাকে,—সেইরূপ এই চৈতন্যতে (Kathamrita) জগৎ জরে রয়েছে।

    “কিন্তু এত তো দেখা হচ্ছে, আমার কিন্তু অভিমান হয় না।”

    মণি (সহাস্যে)—আপনার আবার অভিমান!

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Masterda Surya Sen: আজ ‘মাস্টারদা’র আত্মবলিদান দিবস, ১২ জানুয়ারি ফাঁসি হয় বিপ্লবী সূর্য সেনের

    Masterda Surya Sen: আজ ‘মাস্টারদা’র আত্মবলিদান দিবস, ১২ জানুয়ারি ফাঁসি হয় বিপ্লবী সূর্য সেনের

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আজ মাস্টারদা (Masterda Surya Sen) সূর্য সেনের আত্মবলিদান দিবস।  ১৯৩৪ সালের ১২ জানুয়ারি তাঁর ‘ফাঁসি’ হয়। ফাঁসির আগে মাস্টারদার ওপর নৃশংস অত্যাচার চালায় ব্রিটিশ পুলিশ। পিটিয়ে হাতুড়ি দিয়ে সূর্য সেনের দাঁত ও নখ ভাঙা হয়। গোটা শরীরের হাড়পাঁজরা টুকরো টুকরো করা হয়। সেই অবস্থাতেই তাঁকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল বলে জানা যায়। মৃত্যু ঘোষণার পরে সূর্য সেনের পরিবারের হাতে দেহ তুলে দিয়ে সৎকারের ব্যবস্থাও করা হয়নি।

    জন্ম ১৮৯৪ সালের ২২ মার্চ (Masterda Surya Sen) 

    জানা যায়, বিপ্লবী সূর্য সেনের (Masterda Surya Sen) আসল নাম সূর্যকুমার সেন। ডাকনাম ছিল কালু। ১৮৯৪ সালের ২২ মার্চ চট্টগ্রামের রাউজান থানার নোয়াপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন তিনি। তাঁর মায়ের নাম ছিল শশীবালা সেন এবং পিতার নাম রাজমণি সেন। জানা যায়, পিতা-মাতার অকালপ্রয়াণের পর কাকা গৌরমণি সেনের কাছে বড় হন মাস্টার দা সূর্য সেন। দয়াময়ী উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয়, নোয়াপাড়া উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয়, নন্দনকাননের ন্যাশনাল হাইস্কুল, চট্টগ্রাম কলেজ ও পরে বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজে তিনি পড়তে আসেন বলে জানা যায়। বহরমপুর থেকে থেকে বিএ পাশ করে চট্টগ্রামে (Chittagong) ফিরে ন্যাশনাল হাইস্কুলে শিক্ষকতা শুরু করেন তিনি।

    মাথার দাম ঘোষণা করা হয় ১০ হাজার

    পরে দেওয়ানবাজারে উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয়ে গণিত শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন তিনি। এ সময় থেকেই বিপ্লবীদলের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ বাড়তে থাকে। তখনই তিনি হয়ে ওঠেন ‘মাস্টারদা’ (Masterda Surya Sen)। ইংরেজ শাসকের কাছে ত্রাস হয়ে ওঠেন তিনি। ইতিহাসের পাতায় আজও যা লিপিবদ্ধ হয়ে আছে। ব্রিটিশদের ত্রাস মাস্টারদার (Masterda Surya Sen) মাথার দাম প্রথমে ৫০০০ টাকা এবং পরবর্তীতে ১০,০০০ টাকা ঘোষণা করা হয়। জানা যায়, গৈরলা গ্রামে ক্ষীরোদপ্রভা বিশ্বাসের বাড়িতে আত্মগোপন করে থাকাকালীন তাঁকে ধরে ব্রিটিশ পুলিশ।

      

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 247: “বাটীতে ফিরিয়া গিয়া ভাবিয়া দেখিলেন যে, সংস্কার সম্বন্ধে এখনও তাঁহার পূর্ণ বিশ্বাস হয় নাই”

    Ramakrishna 247: “বাটীতে ফিরিয়া গিয়া ভাবিয়া দেখিলেন যে, সংস্কার সম্বন্ধে এখনও তাঁহার পূর্ণ বিশ্বাস হয় নাই”

    শ্রীরামকৃষ্ণ দক্ষিণেশ্বরে ও ভক্তগৃহে

    তৃতীয় পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ২১শে জুলাই

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ কলিকাতা রাজপথে ভক্তসঙ্গে

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) গাড়ি করিয়া দক্ষিণেশ্বর-কালীবাড়ি হইতে বাহির হইয়া কলিকাতা অভিমুখে আসিতেছেন। সঙ্গে রামলাল ও দু-একটি ভক্ত। ফটক হইতে বহির্গত হইয়া দেখিলেন চারিটি ফজলি আম হাতে করিয়া মণি পদব্রজে আসিতেছেন। মণিকে দেখিয়া গাড়ি থামাইতে বলিলেন। মণি গাড়ির উপর মাথা রাখিয়া প্রণাম করিলেন।

    শনিবার, ২১শে জুলাই, ১৮৮৩ খ্রীষ্টাব্দ, (৬ই শ্রাবণ), আষাঢ় কৃষ্ণা প্রতিপদ, বেলা চারিটা। ঠাকুর অধরের বাড়ি যাইবেন, তৎপরে শ্রীযুক্ত যদু মল্লিকের বাটী, সর্বশেষে ৺খেলাৎ ঘোষের বাটী যাইবেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (মণির প্রতি, সহাস্যে)—তুমিও এস না—আমরা অধরের বাড়ি যাচ্ছি।

    মণি যে আজ্ঞা বলিয়া গাড়িতে উঠিলেন।

    মণি ইংরেজী পড়িয়াছেন, তাই সংস্কার মানিতেন না, কিন্তু কয়েকদিন হইল ঠাকুরের নিকটে স্বীকার করিয়া গিয়াছিলেন যে, অধরের সংস্কার ছিল তাই তিনি অত তাঁহাকে ভক্তি করেন। বাটীতে ফিরিয়া গিয়া ভাবিয়া দেখিলেন যে, সংস্কার সম্বন্ধে এখনও তাঁহার পূর্ণ বিশ্বাস হয় নাই। তাই ওই কথা বলিবার জন্যই আজ ঠাকুরকে দর্শন করিতে আসিয়াছেন। ঠাকুর কথা কহিতেছেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—আচ্ছা, অধরকে তোমার কিরূপ মনে হয়?

    মণি—আজ্ঞে, তাঁর খুব অনুরাগ।

    শ্রীরামকৃষ্ণ—অধরও তোমার খুব সুখ্যাতি করে।

    মণি কিয়ৎক্ষণ চুপ (Kathamrita) করিয়া আছেন; এইবার পূর্বজন্মের কথা উত্থাপন করিতেছেন।

    কিছু বুঝা যায় না—অতি গুহ্যকথা 

    মণি—আমার ‘পূর্বজন্ম’ ও ‘সংস্কার’ এ-সব তাতে তেমন বিশ্বাস নাই; এতে কি আমার ভক্তির কিছু হানি হবে?

    শ্রীরামকৃষ্ণ—তাঁর সৃষ্টিতে সবই হতে পারে এই বিশ্বাস থাকলেই হল; আমি যা ভাবছি — তাই সত্য; আর সকলের মত মিথ্যা; এরূপ ভাব আসতে দিও না। তারপর তিনিই বুঝিয়ে দিবেন।

    “তাঁর কাণ্ড মানুষে কি বুঝবে? অনন্ত কাণ্ড! তাই আমি ও-সব বুঝতে আদপে চেষ্টা করি না। শুনে রেখেছি তাঁর সৃষ্টিতে সবই হতে পারে। তাই ও-সব চিন্তা না করে কেবল তাঁরই চিন্তা করি। হনুমানকে জিজ্ঞাসা করেছিল, আজ কি তিথি, হনুমান বলেছিল (Kathamrita), ‘আমি তিথি নক্ষত্র জানি না, কেবল এক রাম চিন্তা করি।’

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Swami Vivekananda: আজ স্বামী বিবেকানন্দের ১৬২তম জন্মজয়ন্তী, ফিরে দেখা স্বামীজির অমর বাণী

    Swami Vivekananda: আজ স্বামী বিবেকানন্দের ১৬২তম জন্মজয়ন্তী, ফিরে দেখা স্বামীজির অমর বাণী

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: প্রতিবছর ১২ জানুয়ারি স্বামী বিবেকানন্দের (Swami Vivekand) জন্মজয়ন্তীতে (National Youth Day 2025) পালিত হয় ‘জাতীয় যুব দিবস’। ভারতবর্ষে সমগ্র যুব সমাজের কাছে আদর্শের প্রাণ কেন্দ্র হল স্বামীজি। তিনি হলেন ‘আইকন’। তাঁর উজ্জ্বলদীপ্ত দৃষ্টিকোণ, অগ্নিপ্রজ্বলিত লেখা এবং প্রখর বুদ্ধিদীপ্ত কর্মনিষ্ঠা, এক কথায় ভারতবর্ষের পুনঃজাগরণের অনুপ্রেরণস্থল হলেন তিনি। তিনি ভারতীয় সনাতন হিন্দু ধর্মের প্রতিনিধি হয়ে আমেরিকার শিকাগো শহরে ভাষণ দিয়ে গোটা বিশ্বের কাছে হিন্দু ধর্মের জয়জয় করেছেন। ভারত পৃথিবীকে যে আধ্যাত্মিক জ্ঞান এবং প্রজ্ঞা দিয়েছেন তা সভ্যতা ধ্বংসের আগের মুহূর্ত পর্যন্ত চির শাশ্বত, অক্ষয় ও অমর-অজয় হয়ে থাকবে। আজ বিবেকানন্দের ১৬২ তম জন্মজয়ন্তী। দেশজুড়ে পালিত হবে বিবেক উৎসব, মেলা, আলোচনা চক্র, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, খেলা-সহ নানা কর্মকাণ্ড।

    আধ্যাত্মিক জাগরণেরই স্বাধীনতার ‘স্ব’(National Youth Day 2025)

    বিবেকানন্দ (Swami Vivekand) উনিশতকের একজন আধ্যাত্মিক এবং সমাজ সংস্কারক। তাঁর গুরু ছিলেন ঠাকুর শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণ। শাক্ত মায়ের সাধনা এবং মূর্তিপুজোর অন্যতম পুরধা ছিলেন তিনি। নিজের জীবনের জ্ঞান-বিদ্যাবুদ্ধি দিয়ে নরেন্দ্রনাথকে বিবেকানন্দ গড়তে বিশেষ ভাবে সচেষ্ট হয়েছিলেন। একই ভাবে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ এবং ঔপনিবেশিকবাদের বিরুদ্ধে প্রবল ভাবে সরব হয়েছিলেন বিবেকানন্দ। দেশের বৃহত্তর মানুষের জাগরণের জন্য কাজ করেছেন। কীভাবে পাঠান-মুঘল-ইংরেজরা দেশের সম্পদ লুট করে দেশের সংস্কৃতিকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দিয়েছিল সেই কথাই সমাজের সামনে তুলে ধরেছিলেন। তাই পরাধীন ভারতকে পুনরায় স্বমহিমায় নিয়ে যেতে ব্রাহ্মণ, চর্মকার, চণ্ডাল এবং শূদ্রের একসঙ্গে জাগরণের কথা বলেছিলেন। সকলকে একত্রিত হতে হবে। ভারতের আধ্যাত্মিক জাগরণের মধ্যেই স্বাধীনতার ‘স্ব’-কে দেখেছিলেন বিবেকানন্দ (National Youth Day 2025)।

    আরও পড়ুনঃ মহাকুম্ভে হাজির মহিলা নাগা সাধুরাও, জানুন তাঁদের জীবনের ৭টি দিক

    শিকাগোতে বিশ্বজয়

    ১৮৯৩ সালের ১১ সেপ্টেম্বরে স্বামীজি (National Youth Day 2025) ভারতের হয়ে বিশ্ববাসীকে হিন্দুধর্মের গূঢ়অর্থকে তুলে ধরেছিলেন। ধর্মসভায় তাঁকে সকলের শেষে মাত্র সামান্য কয়েক মিনিটের জন্য বলতে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাঁর সেই সময়ের বক্তৃতায় প্রিয় ‘ভাই ও বোনেরা’ সম্বোধনে গোটা আমেরিকাবাসী চমকে গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, আমি সেই দেশ থেকে এসেছি যে দেশে হাজার হাজার বছরের পুরাতন সন্ন্যাসীরা বসবাস করছেন। তাঁদের আবহমান কালের ধর্ম পরম্পরার পক্ষ থেকে বিশ্ববাসীকে আমি শ্রদ্ধা এবং অভিনন্দন জানাই। ভারতীয় ব্রাহ্মণের মহাজ্ঞান, পাণ্ডিত্য এবং বুদ্ধের বিনয় বিশ্বকে শান্তির বাণী উপহার দিয়েছে। পাশ্চাত্য এবং মধ্য-প্রাচ্য থেকে কেবল হিংসা এবং ধ্বংসের কথাই বার বার বার এসেছে। এরপর গোটা ইউরোপ, আমেরিকা সহ একাধিক দেশে ভারতীয় ধর্ম কথাকে প্রচার করে বিশ্বকে জয় করেছেন স্বামীজি। তাঁর দ্বারা আরও প্রভাবিত হয়েছিল আইরিশ বিদেশী নারী ভগ্নী নিবেদিতা। তিনি বিবেকানন্দর (Swami Vivekand) শিষ্যত্ব গ্রহণ করেছিলেন। তিনিও অনুপ্রাণিত হয়ে ভারত মুক্তির লড়াইতে বিপ্লবীদের সঙ্গে ব্রিটিশ বিরোধী কাজে যোগদান করেছিলেন।

    স্বামীজির বাণী

    তাঁর লেখা উল্লেখ যোগ্য গ্রন্থগুলির মধ্যে হল, ‘সঙ্গীতকল্পতরু’ ১৮৮৭, ‘কর্মযোগ’ ১৮৯৬, ‘রাজযোগ’ ১৮৯৬, ‘বেদনান্ত ফিলোজফি’ ১৮৯৬, ‘বর্তমান ভারত’ ১৮৯৯, ‘মাই মাস্টার’ ১৯০১, ‘পরিব্রাজক’। ১৮৯৭ সালে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন রামকৃষ্ণ মিশন। তাঁর বাণী রামকৃষ্ণ মিশন থেকে প্রকাশিত হয়েছে। স্বামীজি (National Youth Day 2025) বলতেন—

    ১> “জেগে ওঠো, সর্বদা সচেতন থাকো, যতক্ষণ না লক্ষ্যে পৌঁছাবে ততক্ষণ পর্যন্ত থেমে যেও না।”

    ২> “যাঁরা তোমাকে সাহায্য করেন, তাঁদের কখনও ভুলেও যেও না। যাঁরা তোমাকে ভালোবাসেন, তাঁদের কখনও ঘৃণা করো না। আর যাঁরা তোমাকে সব সময় বিশ্বাস করেন, তাঁদের কখনও ঠকিও না।”

    ৩> “প্রতিদিন একবার হলেও নিজের সঙ্গে কথা বলো। নাহলে পৃথিবীতে বুদ্ধিমান ব্যক্তির সঙ্গে দেখা হবে না তোমার।”

    ৪> “যতক্ষণ না আপনি নিজেকে বিশ্বাস করতে পারবেন, ততক্ষণ আপনি ভগবানকেও বিশ্বাস করতে পারবেন না।”

    ৫> “নিত্যদিনের চলার পথে যদি আপনি কোনও সমস্যায় না পড়েন, তাহলে বুঝবেন আপনি ভুল পথে যাচ্ছেন।”

    ৬> “সবচেয়ে পাপ হল নিজেকে দুর্বল ভাবা’। তাই নিজেকে দুর্বল ভাববেন না।… নিজের দোষ থাকা সত্ত্বেও যদি আমরা নিজেকে ভালোবাসি। তবে অন্যদের দোষের কারণে কীভাবে তাঁদের ঘৃণা করব, কি করে?”

    ৭> “প্রতিটি মানুষের ধর্ম হল, নিজেকে সৎ রাখা, নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখুন’। তাহলে জীবনে এগিয়ে যেতে পারবেন। মহাবিশ্বের সমস্ত শক্তি সকলের মধ্যে রয়েছে। আমরাই চোখের সামনে হাত রেখে কেঁদেছি, যে কি অন্ধকার! যে কাজের জন্য আপনি প্রতিশ্রুতি দেন, তা সঠিক সময়ে করা উচিত, অন্যথায় মানুষ তাদের বিশ্বাস হারিয়ে ফেলে। নিজের মনের মতো কাজ পেলে অতি মূর্খও করতে পারে। যে সকল কাজকেই মনের মতো করে নিতে পারে, সেই বুদ্ধিমান। কোনও কাজকেই আপনি ছোট মনে করবেন না।”

    ৮> “ধ্যান মূর্খদের ঋষিতে পরিণত করতে পারে, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, বোকারা কখনই ধ্যান করে না।”

    ৯> “অন্যদের কাছ থেকে যা ভালো তা শিখুন, ভুল জিনিস জীবন থেকে সরিয়ে ফেলুন। তবেই জীবনে এগোতে পারবেন।”

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

LinkedIn
Share