Category: পরম্পরা

Get updated History and Heritage and Culture and Religion related news from the Madhyom news portal madhyom.com, West Bengal leading news portal Madhyom.com

  • Ramakrishna 187: “চিটেগুড়ের পানা দিয়ে ভুলে থাকলে, মিছরীর পানার সন্ধান কত্তে ইচ্ছা হয় না”

    Ramakrishna 187: “চিটেগুড়ের পানা দিয়ে ভুলে থাকলে, মিছরীর পানার সন্ধান কত্তে ইচ্ছা হয় না”

    ভক্তসঙ্গে শ্রীরামকৃষ্ণ

    তৃতীয় পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ১৫ই এপ্রিল

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ও সাকার-নিরাকার

    রাত্রি প্রায় সাড়ে নয়টা। শ্রীশ্রীঅন্নপূর্ণা ঠাকুরদালান আলো করিয়া আছেন। সম্মুখে ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) ভক্তসঙ্গে দাঁড়াইয়া। সুরেন্দ্র, রাখাল, কেদার, মাস্টার, রাম, মনোমোহন ও অন্যান্য অনেক ভক্তেরা রহিয়াছেন। তাঁহারা সকলে ঠাকুরের সঙ্গে প্রসাদ পাইয়াছেন। সুরেন্দ্র সকলকে পরিতোষ করিয়া খাওয়াইয়াছেন। এইবার ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ দক্ষিণেশ্বর-বাগানে প্রত্যাবর্তন করিবেন। ভক্তেরাও স্ব স্ব ধামে চলিয়া যাইবেন। সকলেই ঠাকুরদালানে আসিয়া সমবেত হইয়াছেন।

    সুরেন্দ্র (শ্রীরামকৃষ্ণের প্রতি)—আজ কিন্তু মায়ের নাম একটিও হল না।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (ঠাকুরের (Ramakrishna) প্রতিমা দেখাইয়া)—আহা, কেমন দালানের শোভা হয়েছে। মা যেন আলো করে বসে আছেন। এরূপ দর্শন কল্লে কত আনন্দ হয়। ভোগের ইচ্ছা, শোক—এ-সব পালিয়ে যায়। তবে নিরাকার কি দর্শন হয় না—তা নয়। বিষয়বুদ্ধি একটুও থাকলে হবে না; ঋষিরা সর্বত্যাগ করে অখণ্ড সচ্চিদানন্দের চিন্তা করেছিলেন।

    “ইদানীং ব্রহ্মজ্ঞানীরা ‘অচল ঘন’ বলে গান গায়,—আমার আলুনী লাগে। যারা গান গায়, যেন মিষ্টরস পায় না। চিটেগুড়ের পানা দিয়ে ভুলে থাকলে, মিছরীর পানার সন্ধান কত্তে ইচ্ছা হয় না।

    “তোমরা দেখ, কেমন বাহিরে দর্শন কচ্ছ আর আনন্দ পাচ্ছ। যারা নিরাকার নিরাকার করে কিছু পায় না, তাদের না আছে বাহিরে না আছে ভিতরে।”

    “তোমরা দেখ, কেমন বাহিরে দর্শন কচ্ছ আর আনন্দ পাচ্ছ। যারা নিরাকার নিরাকার করে কিছু পায় না, তাদের না আছে বাহিরে না আছে ভিতরে।”ঠাকুর মার নাম করিয়া গান গাহিতেছেন:

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 186: “ঠাকুর ভাবে মগ্ন…খুলির দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করিয়া বলিতেছেন, আ মরি! আ মরি! আমার রোমাঞ্চ হচ্ছে”

    Ramakrishna 186: “ঠাকুর ভাবে মগ্ন…খুলির দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করিয়া বলিতেছেন, আ মরি! আ মরি! আমার রোমাঞ্চ হচ্ছে”

    ভক্তসঙ্গে শ্রীরামকৃষ্ণ

    দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ১৫ই এপ্রিল

    ভক্তসঙ্গে সংকীর্তনানন্দে—সমাধিমন্দিরে

    এইবার সংকীর্তন আরম্ভ হইবে। খোল বাজিতেছে। গোষ্ঠ খোল বাজাইতেছে। এখনও গান আরম্ভ হয় নাই। খোলের মধুর বাজনা, গৌরাঙ্গমণ্ডল ও তাঁহাদের নামসংকীর্তন কথা উদ্দীপন করে। ঠাকুর ভাবে মগ্ন হইতেছেন। মাঝেমাঝে খুলির দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করিয়া বলিতেছেন, “আ মরি! আ মরি! আমার রোমাঞ্চ হচ্ছে।”

    গায়কেরা জিজ্ঞাসা কল্লেন, কিরূপ পদ গাহিবেন? ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) বিনীতভাবে বলিলেন “একটু গৌরাঙ্গের কথা গাও।”

    কীর্তন আরম্ভ (Kathamrita) হইল। প্রথমে গৌরচন্দ্রিকা। তৎপরে অন্য গীত:

    লাখবান কাঞ্চন জিনি। রসে ঢর ঢর গোরা মুঁজাঙ নিছনি ॥
    কি কাজ শরদ কোটি শশী। জগৎ করিলে আলো গোরা মুখের হাসি ॥

    কীর্তনে গৌরাঙ্গের রূপবর্ণনা হইতেছে। কীর্তনিয়া আখর দিতেছে।

    (সখি! দেখিলাম পূর্ণশশী।) (হ্রাস নাই মৃগাঙ্ক নাই)
                    (হৃদয় আলো করে।)

    কীর্তনিয়া আবার বলছে, কোটি শশীর অমৃতে মুখ মাজা।

    এইকথা শুনিতে শুনিতে ঠাকুর সমাধিস্থ হইলেন।

    গান চলিতে লাগিল। কিয়ৎক্ষণ পরে ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের (Ramakrishna) সমাধি ভঙ্গ হিল। তিনি ভাবে বিভোর হইয়া হঠাৎ দণ্ডায়মান হইলেন ও প্রেমোন্মত্ত গোপিকার ন্যায় শ্রীকৃষ্ণের রূপের বর্ণনা করিতে করিতে কীর্তনিয়ার সঙ্গে সঙ্গে আখর দিতেছেন:

    (সখি! রূপের দোষ, না মনের দোষ?)
    (আন্‌ হেরিতে শ্যামময় হেরি ত্রিভুবন!)

    ঠাকুর নৃত্য করিতে করিতে আখর দিতেছেন। ভক্তেরা অবাক্‌ হইয়া দেখিতেছেন। কীর্তনীয়া আবার বলছেন। গোপীকার উক্তি — বাঁশি বাজিস না! তোর কি নিদ্রা নাই কো?

    আখর দিয়া বলছেন:

    (আর নিদ্রা হবেই বা কেমন করে!) (শয্যা তো করপল্লব!)
    (আহার তো শ্রীমুখের অমৃত।) (তাতে অঙ্গুলির সেবা!)

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ আসন পুনর্বার গ্রহণ করিয়াছেন। কীর্তন চলিতে লাগিল। শ্রীমতী বলছেন, চক্ষু গেল, শ্রবণ গেল, ঘ্রাণ গেল, ইন্দ্রিয় সকলে চলে গেল,—(আমি একেলা কেন বা রলাম গো)।

    শেষে শ্রীরাধাকৃষ্ণের মিলন গান হইল:

    ধনি মালা গাঁথে, শ্যামগলে দোলাইতে,
    এমন সময়ে আইল সম্মুখে শ্যাম গুণমনি।

    [গান—যুগলমিলন ]

    নিধুবনে শ্যামবিনোদিনী ভোর।
    দুঁহার রূপের নাহিক উপমা প্রেমের নাহির ওর ॥
    হিরণ কিরণ আধ বরণ আধ নীল মণি-জ্যোতিঃ।
    আধ গলে বন-মালা বিরাজিত আধ গলে গজমতি ॥
    আধ শ্রবণে মকর-কুণ্ডল আধ রতন ছবি।
    আধ কপালে চাঁদের উদয় আধ কপালে রবি ॥
    আধ শিরে শোভে ময়ূর শিখণ্ড আধ শিরে দোলে বেণী।
    করকমল করে ঝলমল, ফণী উগারবে মণি ॥

    কীর্তন থামিল। ঠাকুর, ‘ভগবত-ভক্ত-ভগবান’ এই মন্ত্র উচ্চারণ (Kathamrita) করিয়া বারবার ভূমিষ্ঠ হইয়া প্রণাম করিতেছেন। চতুর্দিকে ভক্তদের উদ্দেশ করিয়া প্রণাম করিতেছেন ও সংকীর্তনভূমির ধূলি গ্রহণ করিয়া মস্তকে দিতেছেন।

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Meherbai Tata: টাটাকে বাঁচিয়েছিল এই মহিলার হিরে, চেনেন ভারতের প্রথম মহিলা টেনিস অলিম্পিয়ানকে?

    Meherbai Tata: টাটাকে বাঁচিয়েছিল এই মহিলার হিরে, চেনেন ভারতের প্রথম মহিলা টেনিস অলিম্পিয়ানকে?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভারতের উন্নয়ন এবং সমৃদ্ধিতে টাটা (India’s First Female Tennis Olympian) পরিবারের অবদান অনস্বীকার্য। আজকের প্রজন্ম রতন টাটার দানশীলতার জন্য তাঁকে চেনেন। তাঁর অকাল প্রয়াণের পরে তাঁর সৎভাই নোয়েল টাটাকেও মানুষ চিনেছে। তবে এঁদের আগে এমন অনেকেই ছিলেন যাঁরা টাটা পরিবারের রত্ন। একবার, ব্যবসার উদ্দেশে বেঙ্গালুরু গিয়ে বিজ্ঞানী হোমি ভাবার সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল টাটা কোম্পানির (Tata Steel) প্রতিষ্ঠাতা জামশেদজি টাটার। ভাবা তখন বেঙ্গালুরুর একটি কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন। ভাবার নিমন্ত্রণে তাঁর বাড়ি গিয়ে তাঁর মেয়ে মেহরবাইয়ের সঙ্গে পরিচয় হয় জামশেদজির। প্রথম দেখাতেই মেহরবাইকে ভালো লেগে গিয়েছিল। এর কিছু দিন পরই ছেলে দোরাবজিকে বেঙ্গালুরুতে ভাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন মেহরবাইয়ের সঙ্গে আলাপ করার জন্য। মেহরবাইকেই পরিবারের বড় বউ করে ঘরে তুলেছিলেন জমশেদজি। তিনি নিজের সময়ের থেকে অনেকটাই এগিয়ে ছিলেন। ১৯২৪ সালে তিনি প্যারিস অলিম্পিক্সের টেনিস খেলায় অংশগ্রহণ করেছিলেন। তাও আবার পরিবারের সম্মান বজায় রাখতে শাড়ি পরেই টেনিস কোর্টে নেমেছিলেন তিনি। পারসি শৈলিতে শাড়ি পরিধান করে তিনি খেলতে নেমেছিলেন। এটাকে ‘গারা’ বলা হয়ে থাকে।

    মেহেরবাই টাটার পরিচয়

    ১৮৭৯ সালে জন্মগ্রহণকারী মেহেরবাই মাত্র ১৮ বছর বয়সে জামশেদজি টাটার বড় ছেলে স্যার দোরাবজির সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। সেই সময়ে, যখন নারীদের ঘরের বাইরে যাওয়া নিষিদ্ধ ছিল, লেডি মেহেরবাই নারী শিক্ষার পক্ষে সওয়াল করেছিলেন, তাদের ভোটাধিকার এবং পুরনো পর্দা প্রথা বিলোপের জন্য কাজ করেছিলেন। জমশেদজির মনের মতো করে, নিজের শিক্ষা এবং সংস্কৃতি দিয়ে পরিবারকে আগলে রেখেছিলেন মেহরবাই। পরিবারের প্রতি এবং স্বামীর প্রতি এতটাই দায়বদ্ধ ছিলেন যে নিজের পছন্দের সবচেয়ে মূল্যবান জিনিসটিও পরিবারের স্বার্থে বেচে দিয়েছিলেন মেহেরবাই। অত্যন্ত স্বাধীনচেতা মানসিকতার মানুষ ছিলেন তিনি। এই মানসিকতা অবশ্য বাবার কাছ থেকে পেয়েছিলেন বলে বহু বার জানিয়েছিলেন তিনি। মহিলাদের উপর কোনও নির্যাতন মেনে নিতে পারতেন না মেহরবাই। পর্দা প্রথা রোধ, বাল্যবিবাহ রোধ, মহিলাদের মধ্যে শিক্ষার প্রসার ঘটানো— সবেতেই তাঁর উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। দেশের বাইরেও এই সমস্ত বিষয়ে সংগঠন গড়ে তুলেছিলেন তিনি। ভারতীয় রেড ক্রস সোসাইটির সদস্যও ছিলেন তিনি। তাঁর প্রচেষ্টায় ১৯২৯ সালের শিশু বিবাহ নিষেধাজ্ঞা আইন কার্যকর হয়। 

    সংস্থাকে দেউলিয়া থেকে বাঁচান

    সালটা ১৯২০। টাটাদের ব্যবসা সে সময় ফুলে ফেঁপে উঠেছিল। একাধিক ব্যবসায় হাত লাগাতে শুরু করেছিল গোষ্ঠী। কিন্তু ১৯২৪ সাল নাগাদ ব্যবসায় বড় মাপের ক্ষতি হয়ে গিয়েছিল। প্রচুর ধার হয়ে গিয়েছিল ব্যাঙ্কের কাছে। ধার শোধ করে ব্যবসা বাঁচানোর উপায় বাতলে দিয়েছিলেন মেহরবাই। স্বামীর কাছ থেকে উপহার পাওয়া জুবিলি হিরের আংটি বেচে ধার শোধ করেছিলেন তিনি। সেইসময় হিরের ওজন ২৪৫.৩৫ ক্যারেট ছিল। আয়তনে কোহিনূর হিরের প্রায় দ্বিগুণ। বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহত্তম হিরে ছিল সেটি। 

    অলিম্পিকে ভারতের প্রতিনিধিত্ব

    মেহরবাই শুধু ভালো মানুষ ছিলেন না, তিনি ভালো খেলোয়াড়ও (India’s First Female Tennis Olympian) ছিলেন। টেনিস খেলতে খুব ভালোবাসতেন। স্বামীর সঙ্গে উইম্বলডন দেখতে যেতেন। ১৯২৪ সালে প্যারিস অলিম্পিকে টেনিসে প্রথম ভারতীয় মহিলা হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তিনি ঐতিহ্যবাহী শাড়ি পরে অলিম্পিকে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এই টুর্নামেন্টের মিক্সড ডাবলস ইভেন্টে অংশগ্রহণ করেছিলেন লেডি মেহরবাই টাটা। তাঁর পার্টনারের নাম ছিল মহম্মদ সেলিম। যদি অলিম্পিক্স টুর্নামন্টে এই জুটি কোনও পদক জিততে পারেনি। তবে আন্তর্জাতিক টেনিসে একাধিক পদক জয় করেছেন লেডি মেহরবাই টাটা। প্রায় ৬০টি টুর্নামেন্টে তিনি অংশগ্রহণ করেছিলেন। ভারতে মহিলাদের খেলাধুলোর প্রসারে লেডি মেহরবাই টাটার একটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। তিনি এক জন দক্ষ ঘোড়সওয়ারও ছিলেন। তিনিই প্রথম ভারতীয় মহিলা যিনি বিমানে উঠেছিলেন। ১৯১২ সালে জেপলিন এয়ারশিপে উঠেছিলেন তিনি।

    আরও পড়ুন: কমলার থেকে কম ভোট পেয়েও আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হতে পারেন ট্রাম্প! জানেন কীভাবে?

    আজও অনুপ্রেরণা

    ১৯৩১ সালে মাত্র ৫২ বছর বয়সে লিউকোমিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় মেহরবাইয়ের। স্ত্রীর কষ্ট খুব কাছ থেকে দেখেছিলেন স্বামী দোরাবজি। স্ত্রীর মৃত্যুর পর তাই লেডি টাটা মেমোরিয়াল ট্রাস্ট গড়ে তোলেন তিনি। রক্তের বিভিন্ন রোগ নিয়ে গবেষণা করাই ছিল এর কাজ। লেডি মেহরবাই এখনও ভারতীয় মেয়েদের কাছে অনুপ্রেরণার প্রতীক।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Sohrai Utsav: আদিবাসীদের সোহরাই উৎসব, দেবতাজ্ঞানে পুজো করা হয় গবাদিপশুদের

    Sohrai Utsav: আদিবাসীদের সোহরাই উৎসব, দেবতাজ্ঞানে পুজো করা হয় গবাদিপশুদের

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দীপাবলি উৎসব শেষ হওয়ার পরেই আদিবাসীরা সোহরাই (Sohrai) উৎসবে মেতে ওঠেন। কার্তিক মাসের শুক্ল পক্ষে পালিত হয় এই উৎসব। চলতি বছরে, সোহরাই উৎসব শুরু হয়েছে গত ১ নভেম্বর থেকে। ঝাড়খণ্ড, বিহার, ওড়িশা, ছত্তিশগড় ও পশ্চিমবঙ্গে বেশ জাঁকজমকভাবেই এই উৎসব পালন হতে দেখা যায়। প্রসঙ্গত, সোহরাই হল ছয় দিনের উৎসব। কোথাও কোথাও ৩ থেকে ৫ দিনের উৎসবও হয় এটি। দীপাবলির পরে দেশজুড়ে যে গোবর্ধন পুজো হয়, সেই উৎসবের সঙ্গে অনেক মিল দেখা যায় সোহরাইয়ের (Sohrai)। সাঁওতাল বা আদিবাসীদের অন্যতম বড় উৎসব হল এই সোহরাই। সোহরাই মূলত পশু পালনের উৎসব। রীতি অনুযায়ী, গ্রামবাসীরা এই উৎসবে গরু ও ষাঁড়ের পুজো করে থাকেন।

    সোহরাই (Sohrai) উৎসবের কাহিনী 

    আদিবাসীদের বিশ্বাস, প্রাচীনকালে অয়নী, বায়ানি, সুগি, সাওয়ালি, কড়ি ও কপিল- এই সমস্ত নামে দৈবক্ষমতাসম্পন্ন গবাদিপশু ছিল। এই গবাদিপশুরা স্বর্গ লোকে থাকত ভগবান শিবের কাছে। আদিবাসী ভক্তদের বিশ্বাস, তাঁদের দেবতা মারাংবুরু ভগবান শিবের চেয়ে কম শক্তিশালী ছিলেন না। মূলত শিশুদের দুধের প্রয়োজন মেটাতে মারাংবুরুর অনুরোধেই এই গবাদিপশুরা মর্ত্যলোকে এসেছিল। মারাংবুরু, দৈবক্ষমতাসম্পন্ন এই গবাদিপশুগুলিকে বলেছিলেন, পৃথিবীর মানুষ যুগ যুগ ধরে তাদের উপাসনা করবেন। সোহরাই একটি ফসল কাটারও উৎসবও বটে। সাঁওতাল, ওরাওঁ, মুন্ডা প্রভৃতি উপজাতি এই উৎসবের (Cattle Festival) মাধ্যমে তাঁদের গবাদি পশুর সমৃদ্ধির জন্য প্রার্থনা করেন। প্রসঙ্গত, আদিবাসীদের কাছে নিজেদের পরিবারের ভরণ পোষণ এবং জীবিকার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হল গবাদিপশু। তাই সোহরাইয়ের (Sohrai) মাধ্যমে সেই গবাদি পশুগুলিকে পুজো করার রীতি দেখা যায়।

    গবাদি পশুদের আবাসস্থল গোয়ালঘর কার্যত মন্দিরে পরিণত হয়

    উৎসবের (Sohrai) মাধ্যমে গ্রামবাসীরা নাচ-গানে মেতে ওঠেন। কেউ কেউ লাঠি খেলাও দেখাতে থাকেন। প্রতিটি আদিবাসী বাড়িতেই সোহরাই গান গাওয়া হয়। সোহরাই উৎসবকে কেন্দ্র করে গবাদি পশুদের আবাসস্থল গোয়ালঘর কার্যত মন্দিরে পরিণত হয়। নিজেদের মতো করে আদিবাসীরা গোয়ালঘর সাজিয়ে তোলেন। এখানে মাটির প্রদীপে জ্বলে। গরু-ষাঁড়ের শিং-এ তেল দেওয়া হয়। উৎসবের দিনগুলিতে মাঝিথান বা গ্রামের উপাসনালয়গুলিতে বিশেষ পুজো করা হয়। এই পুজো খুন্তদেব পুজো নামেও পরিচিত।

    গবাদি পশুদের (Cattle Festival) বিশেষ যত্ন নেওয়া হয়

    গ্রামবাসীরা সোহরাইয়ের দিনগুলিতে গবাদি পশুদের কপালে সিঁদুর লাগান ও মালা পরান। গবাদি পশুদের এই দিন বিশেষ যত্ন নেওয়া হয় এবং বিশেষ খাবার দেওয়া হয়। সোহরাইয়ের প্রায় এক মাস আগে থেকে আদিবাসীরা লাঠি দিয়ে গরু-মহিষকে আঘাত করাও বন্ধ করে দেন। এই উৎসবে স্থানীয় পুকুর ও জলাশয়গুলি থেকে গ্রামবাসীরা মাছ ও কাঁকড়া ধরেন। এছাড়া, তাঁরা কাছাকাছি বনে শিকার করতেও যান।

    কী বলছেন গবেষক?

    রাঁচি বিশ্ববিদ্যালয়ে নাগপুরী ভাষার অধ্যাপক বীরেন্দ্র কুমার মাহতো বলেন, ‘‘গড় পুজো দিয়ে সোহরাই উৎসব শুরু হয়। স্তূপ করা ধান এদিন একটি খোলা জায়গায় রাখা হয়। ধানের স্তূপে একটি ডিমও রাখা হয়। তারপরে, গরু এবং ষাঁড়গুলিকে স্তূপের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। যে গবাদি পশু ডিম ভাঙতে পারে, তাকে ভাগ্যবান বলে গণ্য করা হয় এবং পুজো করা হয়।’’

    উৎসবকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন প্রতিযোগিতারও আয়োজন করা হয়

    উৎসবকে (Cattle Festival) কেন্দ্র করে বিবাহিত মেয়েরা তাঁদের বাপের বাড়িতে যান। কবে অনুষ্ঠিত হবে এই উৎসব সেরকম নির্দিষ্ট কোনও দিনক্ষণ নেই। আদিবাসী গ্রামের মাথারা নিজেদের মধ্যে বৈঠক করে এই উৎসবের দিন ঠিক করেন। সোহরাই উৎসবে খোলা মাঠে বাঁশের মাথায় সাদা পতাকা (ঝান্ডি) বাঁধা হয়। তারপর এর চারদিক ঘিরে বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে নারী-পুরুষের নাচ-গান। বিভিন্ন সাঁওতাল গ্রামগুলিতে দেখা যায় অনুষ্ঠানকে ঘিরে দূরদূরান্ত থেকে আসা প্রতিযোগীরা দলবদ্ধ হয়ে নাচ-গান পরিবেশন করছেন। উৎসব ঘিরে বিভিন্ন প্রতিযোগিতারও আয়োজন করা হয়। একেবারে শেষে সোহরাই উৎসব কমিটি বিজয়ী প্রতিযোগিতার মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন।

    নারী-পুরুষদের সাজ পোশাক

    এ সময় আদিবাসী রমণীদের হলুদ-লাল ও সাদা-লাল পাড়ের শাড়ি পরতে দেখা যায়। তাঁরা নিজেদের সাজাতে গায়ে অলঙ্কার পরেন, খোঁপায় বাহারি রঙের ফুল বাঁধেন। হাতে ফুলের চুরি, পায়ে নূপুর পরে নাচ-গানে সামিল হন। অন্যদিকে, পুরুষদের পরনে থাকে সাদা ধুতি, গায়ে গেঞ্জি, মাথায় পাগড়ি। গলায় মাদল ঝুলিয়ে দলবদ্ধ হয়ে কাঁধে কাঁধ, হাতে হাত রেখে ঢাকঢোল পিটিয়ে নৃত্য পরিবেশন করেন তাঁরা। এই নৃত্য বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

     

  • Ramakrishna 185: “একদিনে কি নাড়ী দেখতে শেখা যায়? যাদের নাড়ী দেখা ব্যবসা, তাদের সঙ্গ করতে হয়”

    Ramakrishna 185: “একদিনে কি নাড়ী দেখতে শেখা যায়? যাদের নাড়ী দেখা ব্যবসা, তাদের সঙ্গ করতে হয়”

     ভক্তসঙ্গে শ্রীরামকৃষ্ণ

    প্রথম পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ১৫ই এপ্রিল

     শ্রীশ্রীঅন্নপূর্ণাপূজা উপলক্ষে ভক্তসঙ্গে সুরেন্দ্রভবনে

    স্বাধীন ইচ্ছা না ঈশ্বরের ইচ্ছা? Free will or God’s Will 

    বৈদ্যনাথ—মহাশয়! একটি সন্দেহ আমার আছে। এই যে বলে Free Will অর্থাৎ স্বাধীন ইচ্ছা—মনে কল্লে ভাল কাজও কত্তে পারি, মন্দ কাজও কত্তে পারি, এটি কি সত্য? সত্য সত্যই কি আমরা স্বাধীন?

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—সকলই ঈশ্বরাধীন। তাঁরই লীলা। তিনি নানা জিনিস করেছেন। ছোট, বড়, বলবান, দুর্বল, ভাল, মন্দ। ভাললোক; মন্দলোক। এ-সব তাঁর মায়া, খেলা। এই দেখ না, বাগানের সব গাছ কিছু সমান হয় না।

    “যতক্ষণ ঈশ্বরকে লাভ না হয়, ততক্ষণ মনে হয় আমরা স্বাধীন। এ-ভ্রম তিনিই রেখে দেন, তা না হলে পাপের বৃদ্ধি হত। পাপকে ভয় হত না। পাপের শাস্তি হত না।

    “যিনি ঈশ্বরলাভ করেছেন, তাঁর ভাব কি জানো? আমি যন্ত্র, তুমি যন্ত্রী; আমি ঘর, তুমি ঘরণী; আমি রথ, তুমি রথী; যেমন চালাও, তেমনি চলি। যেমন বলাও, তেমনি বলি।”

    ঈশ্বরদর্শন কি একদিনে হয়? সাধুসঙ্গ প্রয়োজন 

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) (বৈদ্যনাথের প্রতি)—তর্ক করা ভাল নয়; আপনি কি বল?

    বৈদ্যনাথ—আজ্ঞে হাঁ, তর্ক করা ভাবটি জ্ঞান হলে যায়।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—Thank you (সকলের হাস্য)। তোমার হবে! ঈশ্বরের কথা যদি কেউ বলে, লোকে বিশ্বাস করে না। যদি কোন মহাপুরুষ বলেন, আমি ঈশ্বরকে দেখেছি তবুও সাধারণ লোকে সেই মহাপুরুষের কথা লয় না। লোকে মনে করে, ও যদি ঈশ্বর দেখেছে, আমাদের দেখিয়ে দিগ্‌। কিন্তু একদিনে কি নাড়ী দেখতে শেখা যায়? বৈদ্যের সঙ্গে অনেকদিন ধরে ঘুরতে হয়; তখন কোন্‌টা কফের কোন্‌টা বায়ূর কোন্‌টা পিত্তের নাড়ী বলা যেতে পারে। যাদের নাড়ী দেখা ব্যবসা, তাদের সঙ্গ করতে হয়। (সকলের হাস্য)

    “অমুক নম্বরের সুতা, যে-সে কি চিনতে পারে? সুতোর ব্যবসা করো, যারা ব্যবসা করে, তাদের দোকানে কিছুদিন থাক, তবে কোন্‌টা চল্লিশ নম্বর, কোন্‌টা একচল্লিশ নম্বরের সুতা ঝাঁ করে বলতে পারবে।”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 184: “ঈশ্বর কি কারুকে বেশি শক্তি দিয়েছেন? বিভূরূপে সর্বভূতে আছেন, কেবল শক্তিবিশেষ”

    Ramakrishna 184: “ঈশ্বর কি কারুকে বেশি শক্তি দিয়েছেন? বিভূরূপে সর্বভূতে আছেন, কেবল শক্তিবিশেষ”

     ভক্তসঙ্গে শ্রীরামকৃষ্ণ

    প্রথম পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ১৫ই এপ্রিল 

    শ্রীশ্রীঅন্নপূর্ণাপূজা উপলক্ষে ভক্তসঙ্গে সুরেন্দ্রভবনে

    সুরেন্দ্রের বাড়ির উঠানে ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) সভা আলো করিয়া বসিয়া আছেন, অপরাহ্ন বেলা ছয়টা হইল।

    উঠান হইতে পূর্বাস্য হইয়া ঠাকুরদালানে উঠিতে হয়। দালানের ভিতর সুন্দর ঠাকুর-প্রতিমা। মার পাদপদ্মে জবা, বিল্ব, গলায় পুষ্পমালা। মাও ঠাকুরদালান আলো করিয়া বসিয়া আছেন।

    আজ শ্রীশ্রীঅন্নপূর্ণাপূজা। চৈত্র শুক্লাষ্টমী, ১৫ই এপ্রিল, ১৮৮২ রবিবার, ৩রা বৈশাখ, ১২৯০। সুরেন্দ্র মায়ের পূজা আনিয়াছেন তাই ঠাকুরের নিমন্ত্রণ। ঠাকুর ভক্তসঙ্গে আসিয়াছেন, আসিয়া ঠাকুরদালানে উঠিয়া শ্রীশ্রীঠাকুর-প্রতিমা দর্শন করিলেন, প্রণাম ও দর্শনানন্তর দাঁড়াইয়া মার দিকে তাকাইয়া শ্রীকরে মূলমন্ত্র জপ (Kathamrita) করিতেছেন, ভক্তেরা ঠাকুর-প্রতিমাদর্শন ও প্রণামানন্তর প্রভুর কছে দাঁড়াইয়া আছেন।

    উঠানে ঠাকুর ভক্তসঙ্গে আসিয়াছেন। উঠানে সতরঞ্চি পাতা হইয়াছে, তাহার উপর চাদর, তাহার উপর কয়েকটি তাকিয়া। এক ধারে খোল-করতাল লইয়া কয়েকটি বৈষ্ণব বসিয়া আছেন—সংকীর্তন হইবে। ঠাকুরকে ঘেরিয়া ভক্তেরা সব বসিলেন।

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণকে (Ramakrishna) একটি তাকিয়া লইয়া বসিতে বলা হইল। তিনি তাকিয়ার কাছে বসিলেন না। তাকিয়া সরাইয়া বসিলেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (ভক্তদের প্রতি)—তাকিয়া ঠেসান দিয়া বসা! কি জানো, অভিমান ত্যাগ করা বড় কঠিন। এই বিচার কচ্ছ, অভিমান কিছু নয়। আবার কোথা থেকে এসে পড়ে!

    “ছাগলকে কেটে ফেলা গেছে, তবু অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নড়ছে।

    “স্বপ্নে ভয় দেখেছ; ঘুম ভেঙে গেল, বেশ জেগে উঠলে তবু বুক দুড়দুড় (Kathamrita) করে। অভিমান ঠিক সেইরকম। তাড়িয়ে দিলেও আবার কোথা থেকে এসে পড়ে! অমনি মুখ ভার করে বলে, আমায় খাতির কল্লে না।”

    কেদার—তৃণাদপি সুনীচেন, তরোরিব সহিষ্ণুনা।

    শ্রীরামকৃষ্ণ—আমি ভক্তের রেণুর রেণু।

    বৈদ্যনাথের প্রবেশ

    বৈদ্যনাথ কৃতবিদ্য। কলিকাতার বড় আদালতের উকিল, ঠাকুরকে হাতজোড় করিয়া প্রণাম করিলেন ও একপার্শ্বে আসন গ্রহণ করিলেন।

    সুরেন্দ্র (শ্রীরামকৃষ্ণের প্রতি)—ইনি আমার আত্মীয়।

    শ্রীরামকৃষ্ণ — হাঁ, এঁর স্বভাবটি বেশ দেখছি।

    সুরেন্দ্র—ইনি আপনাকে কি জিজ্ঞাসা (Kathamrita) করবেন, তাই এসেছেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (বৈদ্যনাথের প্রতি)—যা কিছু দেখছ, সবই তাঁর শক্তি। তাঁর শক্তি ব্যতিরেকে কারু কিছু করবার জো নাই। তবে একটি কথা আছে, তাঁর শক্তি সব স্থানে সমান নয়। বিদ্যাসাগর বলেছিল, “ঈশ্বর কি কারুকে বেশি শক্তি দিয়েছেন?” আমি বললুম, শক্তি কমবেশি যদি না দিয়ে থাকেন, তোমায় আমরা দেখতে এসেছি কেন? তোমার কি দুটো শিঙ বেরিয়েছে? তবে দাঁড়ালো যে, ঈশ্বর (Ramakrishna) বিভূরূপে সর্বভূতে আছেন, কেবল শক্তিবিশেষ।

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 183: “বীজ এত কোমল, অঙ্কুর এত কোমল, তবু শক্ত মাটি ভেদ করে, মাটি ফেটে যায়”

    Ramakrishna 183: “বীজ এত কোমল, অঙ্কুর এত কোমল, তবু শক্ত মাটি ভেদ করে, মাটি ফেটে যায়”

    শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে ও বলরাম-মন্দিরে

    ঊনবিংশ পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ৮ই এপ্রিল

    অধরের প্রতি উপদেশ — সম্মুখে কাল

    ঠাকুর (Ramakrishna) অধরের সঙ্গে তাঁর ঘরে উত্তরের বারান্দায় দাঁড়াইয়া কথা কহিতেছেন (Kathamrita)।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (অধরের প্রতি)—তুমি ডিপুটি। এ-পদও ঈশ্বরের অনুগ্রহে হয়েছে। তাঁকে ভূলো না। কিন্তু জেনো, সকলের একপথে যেতে হবে। এখানে দুদিনের জন্য।

    “সংসার কর্মভূমি। এখানে কর্ম করতে আসা। যেমন দেশে বাড়ি কলকাতায় গিয়ে কর্ম করে।

    “কিছু কর্ম করা দরকার। সাধন। তাড়াতাড়ি কর্মগুলি শেষ করে নিতে হয়। স্যাকরারা সোনা গলাবার সময় হাপর, পাখা চোঙ দিয়ে হাওয়া করে যাতে আগুনটা খুব হয়ে সোনাটা গলে। সোনা গলার পর তখন বলে, তামাক সাজ্‌। এতক্ষণ কপাল দিয়ে ঘাম পড়ছিল। তারপর তামাক খাবে।

    খুব রোখ চাই। তবে সাধন হয়। দৃঢ় প্রতিজ্ঞা।

    তাঁর নামবীজের খুব শক্তি। অবিদ্যা নাশ করে। বীজ এত কোমল, অঙ্কুর এত কোমল, তবু শক্ত মাটি ভেদ করে। মাটি ফেটে যায়।

    কামিনী-কাঞ্চনের ভিতর থাকলে মন বড় টেনে লয়। সাবধানে থাকতে হয়। ত্যাগীদের অত ভয় নাই। ঠিক ঠিক তাগী কামিনী-কাঞ্চন থেকে তফাতে থাকে। তাই সাধন থাকলে ঈশ্বরে সর্বদা মন রাখতে পারবে।

    “ঠিক ঠিক ত্যাগী। যারা সর্বদা ঈশ্বরে (Ramakrishna) মন দিতে পারে, তারা মৌমাছির মতো কেবল ফুলে বসে মধু পান করে। সংসারে কামিনী-কাঞ্চনের ভিতরে যে আছে, তার ঈশ্বরে মন হতে পারে, আবার কখন কখন কামিনী-কাঞ্চনেও মন হয়। যেমন সাধারণ মাছি, সন্দেশেও বসে আর পচা ঘায়েও বসে, বিষ্ঠাতেও বসে।

    “ঈশ্বরেতে সর্বদা মন রাখবে। প্রথমে একটু খেটে নিতে হয়। তারপর পেনশন ভোগ (Kathamrita) করবে।”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Bhai Phonta: আজ ভাইফোঁটা! এর নেপথ্যে রয়েছে একাধিক পৌরাণিক কাহিনী

    Bhai Phonta: আজ ভাইফোঁটা! এর নেপথ্যে রয়েছে একাধিক পৌরাণিক কাহিনী

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: জলযোগে বিভিন্ন রকমের মিষ্টি জাতীয় খাবার, লুচি, ঘুগনি। দুপুরে মাংস অথবা মাছ-ভাত। ভাইফোঁটা মানেই যে কোনও বাঙালি বাড়ির পাতে এগুলি থাকবেই‌। সকাল থেকেই বাঙালি বাড়িতে ব্যস্ততা তুঙ্গে ওঠে‌‌। একদিকে জলযোগের আয়োজন তো অন্যদিকে সাজগোজ। ভাই-দাদারা পাঞ্জাবি পড়বে তো দিদি-বোনেরা শাড়ি। হিন্দু ধর্মের যে কোনও পুজো বা ব্রত সম্পন্ন হয় পরিবার, আত্মীয়স্বজনের মঙ্গল কামনার উদ্দেশে। ভাইফোঁটা (Bhai Phonta) হল ভাই ও বোনের মঙ্গল কামনার ব্রত। উভয়ের জীবনেই যেন সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধি বিরাজ করে , সেই প্রার্থনাই ভাই-বোনেরা একে অপরের উদ্দেশে করে থাকেন এই বিশেষ তিথিতে। বাঙালির ঘরোয়া এই উৎসবে অন্যান্য পুজোর মতো রীতি, আচার বা মন্ত্রোচ্চারণ সেভাবে নেই বললেই চলে। ছড়ার মতো পাঠ করা হয় –
    ‘‘ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা, 
    যমের দুয়ারে পড়ল কাঁটা।
    যমুনা দেয় যমকে ফোঁটা, 
    আমি দিই আমার ভাইকে ফোঁটা।’’

    দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ভাইফোঁটার (Bhai Phonta) আলাদা আলাদা নাম

    ভাইফোঁটা (Bhai Phonta) যেন বাঙালির নিজস্ব উৎসব। সবকিছুতেই বাঙালি মোড়ক। তবে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ভাইফোঁটার বিভিন্ন নাম রয়েছে। উত্তর ও পশ্চিম ভারতের এই উৎসব ভাইদুজ (Bhai Dooj) নামে পরিচিত। সেখানে ভাইফোঁটা পাঁচ-দিনব্যাপী দীপাবলি উৎসবের শেষদিন। আবার, মহারাষ্ট্র, গোয়া ও কর্নাটকে ভাইফোঁটাকে বলে ভাইবিজ। নেপালে ও পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং পার্বত্য অঞ্চলে এই উৎসব পরিচিত ভাইটিকা নামে পরিচিত। ভাঁইফোটা, ভাই ও বোনদের  উপহার পাওয়ার দিনও বটে। সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে আধুনিক প্রজন্মকে ভাঁইফোটার দিন ভাই ও বোনদের জন্য পছন্দ মতো ‘গিফট আইটেম’ কিনতে দেখা যায়। কোথাও কোথাও সামাজিক সদ্ভাবনার উদ্দেশে গণ ভাইফোঁটার আয়োজন করা হয়।

    যমুনা ও যমের পৌরাণিক আখ্যান

    ভাইফোঁটার (Bhai Phonta) নেপথ্যে  রয়েছে বেশ কয়েকটি পৌরাণিক কাহিনী। কথিত আছে, সূর্যদেব ও তার পত্নী সংজ্ঞার, যমুনা নামে কন্যা এবং যম নামে পুত্র ছিল। পুত্র কন্যা সন্তানের জন্মের পরে সূর্যদেবের উত্তাপ স্ত্রী সংজ্ঞা সহ্য করতে পারতেন না। তিনি তখন নিজের প্রতিলিপি ছায়াকে স্বর্গলোকে রেখে মর্তে নেমে আসেন। সংজ্ঞার প্রতিরূপ হওয়ার কারণে, দেবতারা ছায়াকে চিনতে পারে না। স্বর্গে বিমাতা ছায়া যমুনা ও যমের প্রতি দুর্ব্যবহার করতে শুরু করেন। কিন্তু ছায়ার মোহে অন্ধ সূর্যদেব কোনও প্রতিবাদ না করায় অত্যাচারের মাত্রা দিনের পর দিন বাড়তেই থাকে। এভাবেই একদিন বিমাতা কর্তৃক স্বর্গরাজ্য থেকে বিতাড়িত হন যমুনা।  যমুনার বিয়ে হয় এক উচ্চ বংশ জাত পরিবারে। বিয়ের পর দীর্ঘকাল যমুনাকে দেখতে না পেয়ে মনে আকুলতা তৈরী হয় যমের। এরপরই মন শান্ত করতে দিদির বাড়ি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় যম। কালী পুজোর দুদিন পরে যমুনার বাড়ি পৌঁছায় যম। ভাইয়ের আগমনে, নানা রকমের খাবারের আয়োজন করেন দিদি যমুনা। দিদির আন্তরিকতায় ও ব্যবহারে মুগ্ধ হয়ে দিদিকে উপহার স্বরূপ বরদান প্রার্থনা করতে বলেন যম। সেই সময় যমুনা ভাইয়ের কাছে প্রার্থনা করেন যে, ‘ভ্রাতৃদ্বিতীয়ার দিন প্রত্যেক ভাই যেন তার বোনের কথা স্মরণ করে এবং প্রত্যেক বোন যেন তার ভাইয়ের মঙ্গল ময় দীর্ঘ জীবন কামনা করে।’ তখন থেকেই নাকি ভাইফোঁটার প্রচলন।

    অন্যান্য পৌরাণিক গল্প

    অন্য একটি পৌরাণিক কাহিনী হল ,  নরকাসুর বধের পূর্বে শ্রী কৃষ্ণ , সুভদ্রার কাছে আসেন। সুভদ্রা তখন শ্রী কৃষ্ণের মঙ্গল ও বিজয় কামনা করে , কপালে ফোঁটা (Bhai Phonta) দিয়ে মিষ্টি খেতে দেন শ্রী কৃষ্ণকে। এরপরই নরকাসুরকে বধ করেন শ্রী কৃষ্ণ।  আবার আরও একটি কাহিনী হলো, বালির হাতে পাতালে বন্দি হন ভগবান বিষ্ণু। তখন মাতা লক্ষ্মী বালিকে ভাই হিসেবে স্বীকার করে তাঁর কপালে তিলক এঁকে দেন। বালি উপহার স্বরূপ মাতা লক্ষ্মীকে কিছু দিতে চাইলে , দেবী লক্ষ্মী ভগবান বিষ্ণুকে চেয়ে নেন। তখন থেকেই নাকি ভাঁইফোটা প্রচলিত। অন্য একটি কাহিনী অনুযায়ী, জৈন ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা মহাবীরের নির্বাণকালে তাঁর ভাই রাজা নন্দীবর্ধন খুব কষ্ট পেয়েছিলেন। সেই সময় বোন সুদর্শনা রাজা নন্দীবর্ধনকে সান্ত্বনা দেন এবং এই পরিস্থিতি থেকে তাঁকে উদ্ধার করেন। অনেকের ধারনা, সেইসময় থেকেই ভাইফোঁটা অথবা ভাইদুজের (Bhai Dooj)।

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 182: “ঈশ্বরের সহিত কথা—শ্রীরামকৃষ্ণের দর্শন—কৃষ্ণ সর্বময়..হে দীনবন্ধু প্রাণবল্লভ! গোবিন্দ!”

    Ramakrishna 182: “ঈশ্বরের সহিত কথা—শ্রীরামকৃষ্ণের দর্শন—কৃষ্ণ সর্বময়..হে দীনবন্ধু প্রাণবল্লভ! গোবিন্দ!”

    শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে ও বলরাম-মন্দিরে

    অষ্টাদশ পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ৮ই এপ্রিল

    শ্রীরামকৃষ্ণের ঈশ্বরাবেশ, তাঁহার মুখে ঈশ্বরের বাণী

    শ্রীযুক্ত অধর সেনের দ্বিতীয় দর্শন—গৃহস্থের প্রতি উপদেশ

    পুত্রশোক—“জীব সাজ সমরে” 

    ঠাকুর অধরের কুশল পরিচয় লইলেন। অধর তাঁহার বন্ধুর পুত্রশোকের কথা নিবেদন করিলেন। ঠাকুর (Ramakrishna) অপনার মনে গান গাহিতেছেন:

    জীব সাজ সমরে, রণবেশে কাল প্রবেশ তোর ঘরে।
    ভক্তিরথে চড়ি, লয়ে জ্ঞানতূণ, রসনাধনুকে দিয়ে প্রেমগুণ,
    ব্রহ্মময়ীর নাম ব্রহ্ম-অস্ত্র তাহে সন্ধান করে ॥
    আর এক যুক্তি রণে, চাই না রথরথী, শত্রুনাশে জীব হবে সুসঙ্গতি,
    রণভূমি যদি করে দাশরথি ভাগীরথীর তীরে ॥

    “কি করবে? এই কালের জন্য প্রস্তুত হও। কাল ঘরে প্রবেশ করেছে, তাঁর নামরূপ অস্ত্র লয়ে যুদ্ধ করতে হবে, তিনিই কর্তা। আমি বলি (Kathamrita), যেমন করাও, তেমনি করি; যেমন বলাও তেমনি বলি; আমি যন্ত্র, তুমি যন্ত্রী; আমি ঘর, তুমি ঘরণী; আমি গাড়ি, তুমি ইঞ্জিনিয়ার।

    “তাঁকে আম্‌মোক্তারি দাও! ভাল লোকের উপর ভার দিলে অমঙ্গল হয় না। তিনি যা হয় করুন।

    “তা শোক হবে না গা? আত্মজ! রাবণ বধ হল; লক্ষণ দৌড়িয়ে গিয়ে দেখলেন (Kathamrita)। দেখেন যে, হাড়ের ভিতর এমন জায়গা নাই — যেখানে ছিদ্র নাই। তখন বললেন, রাম! তোমার বাণের কি মহিমা! রাবণের শরীরে এমন স্থান নাই, যেখানে ছিদ্র না হয়েছে! তখন রাম বললেন, ভাই হাড়ের ভিতর যে-সব ছিদ্র দেখছ, ও বাণের জন্য নয়। শোকে তার হাড় জরজর হয়েছে। ওই ছিদ্রগুলি সেই শোকের চিহ্ন। হাড় বিদীর্ণ করেছে।

    “তবে এ-সব অনিত্য। গৃহ, পরিবার, সন্তান দুদিনের জন্য। তালগাছই সত্য। দু-একটা তাল খসে পড়েছে। তার আর দুঃখ কি?

    “ঈশ্বর (Ramakrishna) তিনটি কাজ করেছেন — সৃষ্টি, স্থিতি, প্রলয়। মৃত্যু আছেই। প্রলয়ের সময় সব ধ্বংস হয়ে যাবে, কিছুই থাকবে না। মা কেবল সৃষ্টির বীজগুলি কুড়িয়ে রেখে দেবেন। আবার নূতন সৃষ্টির সময় সেই বীজগুলি বার করবেন। গিন্নীদের যেমন ন্যাতা-কাঁতার হাঁড়ি থাকে। (সকলের হাস্য) তাতে শশাবিচি, সমুদ্রের ফেনা নীলবড়ি ছোট ছোট পুটলিতে বাঁধা থাকে।”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Govardhan Puja: আজ দেশজুড়ে ভক্তরা মেতে উঠেছেন গোবর্ধন পুজোয়, জানুন এর মাহাত্ম্য

    Govardhan Puja: আজ দেশজুড়ে ভক্তরা মেতে উঠেছেন গোবর্ধন পুজোয়, জানুন এর মাহাত্ম্য

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দীপাবলি ও কালীপুজোর পর্ব মিটে যেতেই হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা মেতে উঠেছেন গোবর্ধন পুজোয় (Govardhan Puja)। আজ শনিবার ২ নভেম্বর সারা দেশ জুড়ে মহাসমারোহে পালিত হচ্ছে গোবর্ধন পুজো। এই উৎসবে সাধারণত কৃষ্ণভক্তরা অংশগ্রহণ করেন এবং এই দিনে তাঁরা ভগবানের উদ্দেশে বিশেষ প্রার্থনাও করেন। গোবর্ধন পুজোর দিনে অনেকে বাড়িতে গোবর থেকে গোবর্ধন (Govardhan Puja) পাহাড়ের মূর্তিও তৈরি করেন এবং ভগবান কৃষ্ণের জন্য বিশেষ পুজো করা হয়। এই দিনেই নতুন ফসল থেকে অন্নকূটও দেওয়া হয়। এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে এই পুজোয় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ (Lord Krishna) প্রসন্ন হন এবং তাঁর আশীর্বাদে ঘরে কখনও খাবারের অভাব হয় না।

    গোবর্ধন পুজোর (Govardhan Puja) পৌরাণিক আখ্যান

    মনে করা হয়, বিশেষ এই তিথিতে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের পুজো করলে তাঁর আশীর্বাদপ্রাপ্ত হন ভক্তরা। মথুরা-বৃন্দাবন সহ উত্তর ভারতে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় গোবর্ধন পুজো। কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের প্রতিপদ তিথিতেই এই পুজো অনুষ্ঠিত হয়। হিন্দু পুরাণ অনুযায়ী, দীপাবলির ঠিক পরের দিনে গিরি গোবর্ধনকে তাঁর আঙুলের ডগায় তুলেছিলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এবং সেই গোবর্ধন পাহাড়ের নিচেই আশ্রয় নিয়েছিলেন বৃন্দাবনের সকল মানুষ। পৌরাণিক আখ্যান অনুযায়ী, তারপর থেকেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে গোবর্ধন পুজো। পৌরাণিক কাহিনী অনুযায়ী, দেবরাজ ইন্দ্রের পুজো করতেন বৃন্দাবনবাসী। ভালো বর্ষা ও উৎকৃষ্ট মানের ফসলের আশাতেই চলত এই পুজো। বৃন্দাবনবাসীরা ছিলেন অত্যন্ত গরিব, তাই দেবরাজ ইন্দ্রের পুজোর জন্য তাঁকে বিপুল পরিমাণ ভোগ নিবেদন করতে হত, যা শ্রীকৃষ্ণের পছন্দ হয়নি। শ্রীকৃষ্ণ মনে করতেন, সেই ভোগ ইন্দ্রকে না দিয়ে বৃন্দাবনের গরিবদের খাওয়ানো উচিত। এর পরবর্তীকালে শ্রীকৃষ্ণের কথা মেনে নেন বৃন্দাবনবাসী এবং ইন্দ্রের পুজো না করার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। তখনই দেবরাজ ইন্দ্র প্রচন্ড ক্ হন বৃন্দাবনবাসীর ওপর। এরপরেই বৃন্দাবনের সাধারণ মানুষের ওপর রেগে গিয়ে প্রবল বৃষ্টি নামান দেবরাজ ইন্দ্র। বৃষ্টিতে বৃন্দাবন তখন ভেসে যাচ্ছে, তখন একথা জানতে পেরে বৃন্দাবনবাসীকে উদ্ধার করতে এগিয়ে আসেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ। নিজের আঙুলের ডগায় গোবর্ধন পাহাড়কে অনায়াসে তুলে ফেলেন তিনি। বৃষ্টির হাত থেকে বৃন্দাবনবাসী বাঁচতে গোবর্ধন পাহাড়ের নিচে আশ্রয় নেয়। এরপরে নিজের ভুল বুঝতে পেরে প্রবল বৃষ্টি বন্ধ করেন দেবরাজ ইন্দ্র।

    পালিত হয় অন্নকূট উৎসবও

    দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এই দিনটিতে অন্নকূট উৎসবও পালন করতে দেখা যায় অনেককে। এই দিনে, প্রত্যেকে তাঁদের বাড়ি থেকে চাল, ডাল, শাকসবজি এবং অন্যান্য খাবারের মতো বিভিন্ন ধরনের খাবার সংগ্রহ করে এবং এক জায়গায় রাখেন ও ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে (Lord Krishna) অর্পণ করে। এর সঙ্গে, ভগবানকে ৫৬ ভোগের একটি বিশেষ নৈবেদ্যও দেওয়া হয়। ৫৬ ভোগ মানে দিনের ৮ ঘণ্টা অনুসারে প্রতি ঘন্টায় ৭ প্রকারের খাবার ভগবানকে নিবেদন করা হয়। এই নৈবেদ্য ভগবান কৃষ্ণের (Govardhan Puja) প্রতি ভালোবাসা এবং উৎসর্গের প্রতীক। কলকাতার বহু মন্দির ও পরিবারেও অন্নকূট উৎসব পালিত হয়ে থাকে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় উৎসব হয় বাগবাজারের মদনমোহন মন্দিরে। সেখানে ১১৫ রকমের রান্না করা, ১২০ রকমের মিষ্টির ভোগ অর্পণ করা হয়ে থাকে। মোচা, থোড়, কুমড়ো এসব তো থাকেই, এর পাশাপাশি ফুচকা, আইসক্রিমও অর্পণ করেন অনেকে। আসলে, গোবর্ধন পুজোর দিনে যে অন্নকূট উৎসব হয় তা হল সম্পদ এবং প্রাচুর্যের প্রতীক। মনে করা হয়, এই দিন অন্নকূট উৎসব পালন করলে কোনও অভাব থাকে না।

    জ্যোতিষশাস্ত্রেও উল্লেখযোগ্য দিন

    গোবর্ধন পুজোর (Govardhan Puja) এই বিশেষ দিনটি জ্যোতিষ শাস্ত্রেও অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য বলে মনে করা হয়। এই বিশেষ দিনে কিছু কাজ করা হলে সৌভাগ্য আসতে পারে বলেই ধারণা অনেকের। জ্যোতিষ শাস্ত্র অনুসারে, গোবর্ধন পুজোর দিন, গরুকে স্নান করিয়ে দেওয়ার পরে তিলক লাগিয়ে, ৭ বার প্রদক্ষিণ করলে অর্থভাগ্য ফিরে যায়।

    গোবর্ধন পুজোর তাৎপর্য

    গোবর্ধন পুজোতে ভারতীয় সভ্যতা ও পরম্পরার প্রতিফলনও দেখা যায়।

    প্রকৃতিকে শ্রদ্ধা: গোবর্ধন পুজোর দিনটি আমাদের প্রকৃতিমাতাকে শ্রদ্ধা করতে শেখায়। প্রকৃতির ভরপুর সংস্থানকেও পুজো করতে শেখায়। তার কারণ, পাহাড়, নদী, অরণ্য অথবা মাঠ এগুলি থেকে আমাদের প্রতিদিনকার খাদ্য, পানীয় ও এবং বাসস্থানের বন্দোবস্ত হয়। তাই বর্তমান যুগে গোবর্ধন পুজোর মাধ্যমে প্রকৃতিদেবীকে রক্ষা করারও একটি বার্তা দেওয়া হয়।

    ভগবানে বিশ্বাস:  গোবর্ধন পুজো, আমাদেরকে শেখায় যে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের ওপর বিশ্বাস রাখা ঠিক কতটা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, বৃন্দাবনের সাধারণ মানুষ ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ওপরে ভরপুর ভরসা করেছিল, ইন্দ্রদেবের ক্রোধ থেকে বাঁচতে। পরে ভগবানের আশীর্বাদেই বৃন্দাবনে নাগরিকরা সুরক্ষিত হন।

    অহঙ্কার না করা: গোবর্ধন পুজো আমাদের অহঙ্কার না করতে শেখায়। নিজের ক্ষমতার দম্ভে বৃন্দাবনবাসীর ওপরে প্রয়োগ করেছিলেন দেবরাজ ইন্দ্র এবং এর মাধ্যমেই তিনি বৃন্দাবনবাসীর ওপর বদলা নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ইন্দ্রের সেই দর্পকে চূর্ণ করেন। আমাদের সর্বদাই মনে রাখতে হবে, অহঙ্কার এবং দম্ভ বিনাশের কারণ হয়।

    গোবর্ধন পাহাড়ের চারিপাশে ভক্তদেরকে হাঁটতে দেখা যায়

    গোবর্ধন পুজো সারা দেশজুড়ে বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পালন করা হয়। মথুরা এবং বৃন্দাবনে সবচেয়ে জনপ্রিয় হল এই উৎসব। এই দিন কৃষ্ণভক্তরা বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠানের পালন করে থাকেন। গোবর্ধন পাহাড়ের চারিপাশে ভক্তদেরকে হাঁটতে দেখা যায়। সেখানেই তাঁরা প্রার্থনা জানান ও মন্ত্র পাঠ করেন ও ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে স্মরণ করেন। এর মাধ্যমে প্রতিফলিত হয় প্রকৃতি এবং আধ্যাত্মিকতার প্রতি তাদের সমর্পণভাব।

    এই দিন গো মাতারও পুজো করেন অনেকে

    হিন্দু ধর্মে গরুর এক আলাদা মর্যাদা রয়েছে। গোবর্ধন পুজো হল সেই দিন, যেদিন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা গরুকে পুজো করে। বিভিন্ন গ্রাম এবং গ্রামীণ অঞ্চলগুলিতে এদিন গরুকে স্নান করানো হয়। ফুল দিয়ে পুজো করা হয়। গরুকে বিশেষ খাবার খেতে দেওয়া হয়। এই আচার অনুষ্ঠানই প্রতিফলিত করে যে ভারতীয় সভ্যতা,সংস্কৃতি ও কৃষিক্ষেত্রে গরু ঠিক কতটা গুরুত্বপূর্ণ।

    মহারাষ্ট্রে বর্ষগণনা শুরু হয়

    অন্যদিকে মহারাষ্ট্রে গোবর্ধন পুজো বালি প্রতিপদ নামে পরিচিত। এই দিনে সেখানে নতুন বছরেরও সূচনা হয় বলে মনে করা হয়। মারাঠীরা তাঁদের স্ত্রীদের বিশেষ উপহার প্রদান করেন এই বিশেষ দিনে। দম্পতিরা নিজেদের সমৃদ্ধি ও সুখী জীবনের জন্য ভগবানের কাছে প্রার্থনা করেন।

    গুজরাতের গোবর্ধন পুজো

    গুজরাতে গোবর্ধন পুজোর বিশেষ স্থান রয়েছে। এই দিনেই ভগবান শ্রীকৃষ্ণের উদ্দেশ্যে বিশেষ ভোগ অর্পণ করেন গুজরাতিরা এবং নানারকমের আধ্যাত্মিক ও ভক্তিগীতিতে ভরে ওঠে কৃষ্ণ মন্দিরগুলি। বিশেষ কিছু অঞ্চলে মাটির তৈরি গোবর্ধন পাহাড়ের প্রতিকৃতি তৈরি করা হয় এবং তা পুজো করা হয়।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

LinkedIn
Share