Category: পরম্পরা

Get updated History and Heritage and Culture and Religion related news from the Madhyom news portal madhyom.com, West Bengal leading news portal Madhyom.com

  • Ramakrishna 25: “দক্ষিণেশ্বরের পরমহংস সামান্য নহেন, এক্ষণে পৃথিবীর মধ্যে এত বড় লোক কেহ নাই”

    Ramakrishna 25: “দক্ষিণেশ্বরের পরমহংস সামান্য নহেন, এক্ষণে পৃথিবীর মধ্যে এত বড় লোক কেহ নাই”

    তৃতীয় পরিচ্ছেদ

    শ্রীযুক্ত কেশবের হিন্দুধর্মের উপর উত্তরোত্তর শ্রদ্ধা

    ১৮৯৭, ২৯ শে অক্টোবর বুধবার (১৩ই কার্তিক, ১২৮৬), কোজাগর পূর্ণিমায় বেলা ১ টার সময় কেশব আবার ভক্তসঙ্গে শ্রীরামকৃষ্ণকে দক্ষিণেশ্বরে দর্শন করতে যান। স্টীমারের সঙ্গে একখানি বজরা, ছয়খানি নৌকা, দুইখানি ডিঙ্গি, প্রায় ৮০ জন ভক্ত। সঙ্গে পতাকা পুষ্পপল্লব খোল করতাল ভেরী। হৃদয় অভ্যর্থনা করিয়া কেশবকে স্টীমার হইতে আনেন—গান গাইতে গাইতে সুরধনীর তীরে হরি বলে কে, বুঝি প্রেমদতা নিতাই এসেছে। ব্রাহ্মভক্তগণও পঞ্চবটী হইতে কীর্তন করিতে করিতে তাঁহার সঙ্গে আসিতে লাগিলেন; সচ্চিদানন্দ বিগ্রহ রূপানন্দ ঘন! তাহাদের মধ্যে ঠাকুর মাঝে মাঝে সমাধিস্থ। এই দিনে সন্ধ্যার পর বাঁধঘাটে পূর্ণচন্দ্রের আলোকে কেশব উপাসনা করিয়াছিলেন।    

    উপাসনার পর ঠাকুর বলিতেছিলেন, তোমরা বল “ব্রহ্ম আত্মা ভগবান” “ব্রহ্ম মায়া জীব জগৎ” “ভগবত ভক্ত ভগবান”। কেশবাদি ব্রাহ্মভক্তগণ সেই চন্দ্রালোকে ভাগীরথীতীরে সমস্বরে শ্রীরামকৃষ্ণের সঙ্গে সঙ্গে ওই সকল মন্ত্র ভক্তিভরে উচ্চারণ করিতে লাগিলেন। শ্রীরামকৃষ্ণ আবার যখন বলিলেন, “বল গুরু কৃষ্ণ বৈষ্ণব”। তখন কেশব আনন্দে হাসিতে হাসিতে বলিতেছেন, মহাশয়, এখন অতদূর নয়; “গুরু কৃষ্ণ বৈষ্ণব” আমরা যদি বলি লোকে বলিবে গোঁড়া! শ্রীরামকৃষ্ণও হাসিতে লাগিলেন ও বলিলেন, বেশ তোমরা (ব্রাহ্মরা) যতদূর পার তাহাই বল।

    কিছু দিন পরে ১৩ই নভেম্বর (২৮ শে কার্তিক), ১৮৭৯ কালীপূজার পরে রাম, মনোমোহন, গোপাল মিত্র দক্ষিণেশ্বরে শ্রীরামকৃষ্ণকে প্রথম দর্শন করেন।

    ১৮৮০ খ্রিষ্টাব্দে একদিন গ্রীষ্মকালে রাম ও মনোমোহন কমলকুটিরে কেশবের সহিত দেখা করিতে আসিয়াছিলেন। তাঁহাদের ভারী জানিতে ইচ্ছা, কেশববাবু ঠাকুরকে কিরূপ মনে করেন। তাঁহারা বলিয়াছেন, কেশববাবুকে জিজ্ঞাসা করাতে বলিলেন, “দক্ষিণেশ্বরের পরমহংস সামান্য নহেন, এক্ষণে পৃথিবীর মধ্যে এত বড় লোক কেহ নাই। ইনি এত সুন্দর, এত সাধারণ ব্যক্তি, ইঁহাকে অতি সাবধানে সন্তর্পণে রাখতে হয়; অযত্ন করলে এঁর দেহ থাকবে না; যেমন সুন্দর মূল্যবান জিনিস গ্লাসকেসে রাখতে হয়।

    আরও পড়ুনঃ “ঈশ্বরলাভ না করলে তাঁর আদেশ পাওয়া যায় না”

    “বেঙাচির ল্যাজ খসলে জলেও থাকতে পারে, আবার ডাঙাতেও থাকতে পারে”

    আরও পড়ুনঃ “দু-চারটা মাছ এমন সেয়ানা যে, কখনও জালে পড়ে না”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Buddha Purnima: আজ দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে বুদ্ধ পূর্ণিমা, জানুন এই দিনের মাহাত্ম্য

    Buddha Purnima: আজ দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে বুদ্ধ পূর্ণিমা, জানুন এই দিনের মাহাত্ম্য

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বুদ্ধ পূর্ণিমা (Buddha Purnima) বৌদ্ধ ধর্মের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং পবিত্রতম উৎসব। প্রতিবছর বৈশাখ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে এই উৎসব পালিত হয়। ইতিহাসবিদদের মতে, এই পবিত্র দিনেই গৌতম বুদ্ধ জন্মগ্রহণ করেছিলেন। শুধু তাই নয় এই দিনেই বোধিবৃক্ষের নীচে তিনি জ্ঞান লাভ করেছিলেন।

    এবছরের বুদ্ধপূর্ণিমার শুভ তিথি (Buddha Purnima 2024)

    এ বছর, আজ, ২৩ মে পড়ছে বুদ্ধপূর্ণিমা। এই পূর্ণিমার শুভ তিথি শুরু হয়েছে ২২ মে, অর্থাৎ বুধবার সন্ধ্যে থেকেই। ২২ মে সন্ধ্যা ৫.৫৭ মিনিটে এই বুদ্ধপূর্ণিমার তিথি শুরু হয়েছে। আজ, বৃহস্পতিবার ২৩ মে, সন্ধ্যা ৬টা ৪১ মিনিটে শেষ হতে চলেছে বুদ্ধ পূর্ণিমা (Buddha Purnima)। ফলে, উদয়-তিথি হিসেবে, আজ, বৃহস্পতিবার, দেশজুড়ে পালিত হবে বুদ্ধ পূর্ণিমা। অনেকেই এই দিনটিকে বুদ্ধজয়ন্তী হিসাবে পালন করে। এই গুরুত্বপূর্ণ সময়কালকে হিন্দুশাস্ত্রমতে বিশেষ কিছু আচারপালনের মাধ্যমে পালন করা হয়।

    নবম অবতার গৌতম বুদ্ধ

    হিন্দু ধর্মের মতে, অবশ্য গৌতম বুদ্ধ হলেন শ্রী বিষ্ণুর নবম অবতার। এই বিশেষ তিথিতে গৌতম বুদ্ধের জন্মবার্ষিকী পালন করা হয় সারা বিশ্ব জুড়ে। এই দিনে ভারতে সরকারিভাবে ছুটি থাকে। সারাদেশ জুড়ে উৎসব পালিত হয় বৌদ্ধ মঠ ও মন্দিরে। ভারত ছাড়াও শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভুটান, তাইল্যান্ড, মায়ানমার, দক্ষিণ কোরিয়া, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়ায় উৎসব পালিত হয়।

    আরও পড়ুন: প্রাচীন ভারতের খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয়! কেমন ছিল জগদ্দলা মহাবিহারের রোজকার জীবন?

    এই দিন (Buddha Purnima 2024) গৌতম বুদ্ধের শিক্ষা ও বাণী স্মরণ করেন বৌদ্ধরা। বৌদ্ধ মঠ ও মন্দিরগুলিতে প্রচুর ভক্ত সমাগম হয়। ভগবান বুদ্ধকে পূজা করা ছাড়াও অধিকাংশ বৌদ্ধ ভিক্ষুক ধ্যানে লিপ্ত থাকেন। পঞ্চাঙ্গ (বা পাঁজি) অনুসারে, কবে বুদ্ধ পূর্ণিমা (Buddha Purnima) পালিত হয় এবং এই দিনের শুভ সময়, তাৎপর্য ও পুজোর নিয়ম জানেন না অনেকেই। অবশ্য অনেক হিন্দু ও বাঙালির বাড়িতে লক্ষ্মী নারায়ণ পুজোর আয়োজন হয়ে থাকে।

    বুদ্ধ পূর্ণিমা পুজোর নিয়ম

    বুদ্ধ পূর্ণিমার (Buddha Purnima 2024) দিন খুব ভোরে ঘুম থেকে ওঠা উচিত। ঘুম থেকে উঠে বাড়ির সব জায়গা পরিষ্কার করে সুন্দর করে সাজিয়ে নিতে হবে। এরপর স্নান সেরে পরিষ্কার বা নতুন পোশাক পরতে পারেন। এদিন গঙ্গা স্নান করা অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়। এরপর একটি মোমবাতি বা প্রদীপ জ্বালিয়ে বাড়ির সর্বত্র ঘুরিয়ে আনতে পারেন। বাড়ির প্রবেশদ্বারের সামনে হলুদ, লাল সিঁদুর বা রঙ ব্যবহার করে স্বস্তিক চিহ্ন আঁকতে পারেন। বোধি গাছের কাছে দুধ ঢেলে বুদ্ধের বাণী ও শিক্ষাকে স্মরণ করতে পারেন। দানকর্মেরও বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে এদিন। বস্ত্র ও খাদ্য বিলি করলে পূণ্যলাভ করতে পারেন আপনি (Buddha Purnima)।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • IST Story: গোটা দেশে সময় একটাই! আইএসটি নির্ধারণে রেল ও সর্দার প্যাটেলের ভূমিকা জানেন?

    IST Story: গোটা দেশে সময় একটাই! আইএসটি নির্ধারণে রেল ও সর্দার প্যাটেলের ভূমিকা জানেন?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সারা ভারতে এখন ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ড টাইম (IST Story) মেনে সময় নির্ধারণ করা হয়। ১ সেপ্টেম্বর ১৯৪৭ সালে ভারতে আইএসটি চালু করা হয়েছিল। এতে ঠিক হয়েছিল যে ভারত যে আইএসটি (Indian Standard Time) বলে টাইম জোন মেনে চলবে তা গ্রিনিচ মিন টাইম-এর থেকে ৫.৩০ঘণ্টা এগিয়ে থাকবে। মানে গ্রিনিচ মিন টাইম-এ কোথাও সকাল ৬টা বাজলে ভারতে তখন সময় হবে ১১.৩০টা। ভারতের সমস্ত প্রদেশকে এ বিষয়ে এক ছাতার তলায় এনেছিলেন সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল। এক্ষেত্রে ভারতীয় রেলওয়েরও একটা ভূমিকা ছিল।

    প্রাচীন ভারতে সময় নির্ধারণ

    কমন এরার চার শতকে অবশ্য ভারতে সময় গোনার পদ্ধতি একটু অন্যরকম ছিল। সূর্য সিদ্ধান্তে বর্ণিত স্ট্যানডার্ড টাইম (IST Story) মেনে এই সময় গোনা হত। অবন্তি তথা উজ্জয়ন-এর উপর দিয়ে আদ্য দ্রাঘিমা গিয়েছে বলে সূর্য সিদ্ধান্তে বলা হয়েছিল। ২৩ডিগ্রি ১১ ইঞ্চি উত্তর ও ৭৫ডিগ্রি ৪৫ ইঞ্চি পূর্ব দিয়ে উজ্জয়নের উপর দিয়ে এই আদ্য দ্রাঘিমা গিয়েছে বলে বর্ণিত করা হয়েছিল এই গ্রন্থে। আবার রোহিতাকা, যার আধুনা নাম রোহতক-এও ২৮ ডিগ্রি ৫৪ ইঞ্চি উত্তর, ৭৬ডিগ্রি ৩৮ ইঞ্চি পূর্ব দিয়ে আদ্য দ্রাঘিমা যাওয়ার কথা বলা হয়েছিল সূর্য সিদ্ধান্তে। এমনকী এই গ্রন্থে এটাও উল্লেখ করা হয় যে রোহিতাকা ও অবন্তি বিষুবরেখা ও উত্তর মেরুর লাইন বরাবর স্থাপিত।প্রাচীন ভারতে এই সূর্য সিদ্ধান্ত মতে উজ্জয়নের আদ্য দ্রাঘিমা রেখায় সূর্যোদয় দেখে প্রাথমিকভাবে সময় গোনা হত। এরপর এই সময়কে গণিতিক আকারে ভেঙে ছোট ছোট সময়-এ ভাগ করা হত। তবে, সময় গণনাকে তখনকার দিনে শুধুমাত্র জ্যোতিষশাস্ত্রেই ব্যবহার করা হত।  সে সময় বিভিন্ন রাজ্য়গুলি হিন্দু ক্যালেন্ডার মেনে নিজস্ব স্থানীয় সময় নির্ধারণ করত। 

    আধুনিক ভারতে সময় নির্ধারণ

    ১৭৩৩ সালে জয়পুরে যন্তর-মন্তর তৈরি করেছিলেন মহারাজা সোয়াই জয় সিং। যিনি সময় গণনার জন্য যন্তর-মন্তরে বড় ডায়ালের ঘড়িও লাগিয়েছিলেন। ১৭৯২ সালে ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানি চেন্নাই-এ মাদ্রাজ অবজারভেটরি তৈরি করে। এরপর ১৮০২ সালে জ্যোতিষবিদ জন গোল্ডিনংহাম চেন্নাই লংঙ্গিটুড গঠন করেন। যা গ্রিনিচ মিন টাইমের থেকে ৫ ঘণ্টা এগিয়ে ছিল।

    সময় নির্ধারণে ভারতীয় রেলের ভূমিকা

    ১৮৫০ সালে ভারতীয় রেলের জন্মের আগে পর্যন্ত দেশের ভিন্ন অঞ্চলে ভিন্ন ভিন্ন টাইম জোন কাজ চালিয়ে দিচ্ছিল। কিন্তু রেলের জন্ম হতেই দেশজুড়ে একই সময় গণনার দাবি উঠল। এক দেশ এক টাইমের দাবিতে সওয়াল হতে শুরু করেছিল। সমস্যা সমাধানে রেল এক অভূতপূর্ব ব্যবস্থার আমদানি করল। ১৯ শতকে রেল টাইম সিগন্যালের মাধ্য়মে বিভিন্ন রেলস্টেশনকে সূচনা দিতে থাকল সেখানকার স্থানীয় সময় অনুসারে কখন ট্রেন পৌঁছবে।

    টাইম জোনের সূচনা

    টাইম-জোন-এর গণনা নিয়ে বিশ্বজুড়ে আলোচনা শুরু হয়েছিল ১৮৮৪ সালে। এর ফলে ভারতে টাইম জোনের আবির্ভাব ঘটেছিল, একটি কলকাতা ও অন্যটি মুম্বই। কলকাতার টাইমজোন গ্রিনিচ মিন টাইমের থেকে ৫ ঘণ্টা ৩০ মিনিট ও ২১ সেকেন্ড এগিয়ে ছিল। অন্যদিকে মুম্বই টাইম জোন গ্রিনিচ মিন টাইমের থেকে ৪ ঘণ্টা ৫১ মিনিট এগিয়ে ছিল। ১৮৮৪ সালে ওয়াশিংটন ডিসি-তে আন্তর্জাতিক মেরিডিয়ান কনফারেন্সে ইউনিফর্ম টাইম জোনস গঠনের দাবি ওঠে। ১৯০৫ সালে ভারতের ব্রিটিশ সরকার স্ট্যান্ডাডাইজড টাইম জোনের নীতি গ্রহণ করে। এর জেরে এলাহাবাদকে এই নীতির আওতায় আনা হয়। কারণ, দেশের অন্যান্য জায়গার থেকে দ্রাঘিমার রেখার কাছে এর সর্বনিকট অবস্থান। ১৯০৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে এলাহাবাদে কাজ শুরু করে।

    ভারতীয় মান সময় নির্ধারণ

    শেষমেশ স্বাধীনতা লাভের পর ১৯৪৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর এলাহাবাদের সময় গণনাকে আইএসটির (Indian Standard Time) মর্যাদা দেওয়া হয়। এবং তখন থেকে ভারত জুড়ে এই আইএসটি (IST Story) প্রয়োগের কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। চেন্নাই থেকে সেন্ট্রাল অবজারভেটরি সেন্টারকে এলাহাবাদের মিরজাপুরে সরিয়ে নিয়ে আসা হয়। আইএসটি মূলত নির্ধারণ হয় এলাহাবাদের মীরজাপুরের ক্লক টাওয়ার থেকে ৮২.৫ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশের ভিত্তিতে। এই মীরজাপুর ভারতে দ্রাঘিমা রেখার সবচেয়ে কাছাকাছি এলাকা। সেই কারণে ক্লক টাওয়ারকে এখানেই প্রতিস্থাপন করা হয়। 

    সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের ভূমিকা 

    কিন্তু স্বাধীনতার পরও প্রথমে কলকাতা এবং বোম্বে প্রেসিডেন্সিগুলি তাদের নিজস্ব সময় ধরে রেখেছিল। তারা ভারতীয় মান সময় মানতে চায়নি। এর জন্য পশ্চিমবঙ্গ ও বোম্বের মুখ্যমন্ত্রীদের সময়ের সাপেক্ষে জাতীয় মান অনুসরণ করার জন্য বল্লভভাই প্যাটেলের জোরাজুরির প্রয়োজন ছিল। সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলই তখন রাজ্যগুলিকে বোঝায়। তাঁর বুদ্ধি ও যুক্তি গ্রহণ করে কলকাতা ও মুম্বই। তাই শুধু রাজ্যগুলিকে ভারতীয় ইউনিয়নে একীভূত করার জন্য নয়, বাংলা ও বোম্বের রাজনৈতিক নেতৃত্বকে ভারতীয় প্রমাণ সময় মেনে নেওয়ার জন্যও প্যাটেলের কৃতিত্ব রয়েছে।

    আরও পড়ুন: গুজরাটই ছিল তাঁর আদি বাড়ি, জানেন বিশ্বের একমাত্র হিন্দু শেখ কনকসি খিমজির গল্প?

    দেবাশীষ দাস তার প্রবন্ধে উল্লেখ করেছেন , ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ড টাইমের (IST Story) ভূমিকা : একটি ঐতিহাসিক সমীক্ষা , “১৯৪৭ সালের জুলাই মাসে, স্বাধীনতার ঠিক আগে, সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলকে বাংলার সময়কে সরিয়ে দেওয়ার জন্য একটি অনুরোধ করা হয়েছিল: যখন একটি কঠোর পরিবর্তন সারা ভারতে, বিশেষ করে বাংলায় তৈরি করা হচ্ছে, একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রয়োজনীয় বিষয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্বারা উপেক্ষা করা হচ্ছে, অর্থাৎ, বেঙ্গল টাইম যা ভারতীয় মান সময়ের থেকে এক ঘন্টা এগিয়ে এবং শুধুমাত্র বাংলায় অনুসরণ করা হয় যা দেশের স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর। নাগরিকেরা… আমরা বাঙালিরা এক সময় দাঁড়াতে চাই, অর্থাৎ ভারতীয় মান সময় অন্য সব প্রদেশে অনুসরণ করে।” বোম্বে সম্পর্কেও অনুরূপ অনুরোধ করা হয়েছিল। স্বরাষ্ট্র দফতর পরামর্শ দিয়েছিল যে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারগুলি বিবেচনা করতে পারে। এরপরই কলকাতা তথা বাংলায় ৩১ অগাস্ট বা ১ সেপ্টেম্বর ১৯৪৭ সালের মধ্যরাত থেকে আইএসটি (Indian Standard Time) গ্রহণ করে। এর প্রায় আড়াই বছর পরে বোম্বে আনুষ্ঠানিকভাবে ১৪ মার্চ ১৯৫০ আইএসটি গ্রহণ করে। 

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 24: “ঈশ্বরলাভ না করলে তাঁর আদেশ পাওয়া যায় না”

    Ramakrishna 24: “ঈশ্বরলাভ না করলে তাঁর আদেশ পাওয়া যায় না”

    তৃতীয় পরিচ্ছেদ

    কমলাকুটিরে শ্রীরামকৃষ্ণ শ্রীযুক্ত কেশব সেন

    তোমরা বক্তৃতা দাও সকলের উপকারের জন্য, কিন্তু ঈশ্বরদর্শন করে বক্তৃতা দিলে উপকার হয়। তাঁর আদেশ না পেয়ে লোকশিক্ষা দিলে উপকার হয় না। ঈশ্বরলাভ না করলে তাঁর আদেশ পাওয়া যায় না। ঈশ্বরলাভ যে হয়েছে, তার লক্ষণ আছে। বালকবৎ, জড়বৎ, উন্মাদবৎ, পিশাচবৎ হয়ে যায়; যেমন শুকদেবাদি। চৈতন্যদেব কখন বালকবৎ, কখন উন্মাদের ন্যায় নৃত্য করিতেন। হাসে, কাঁদে, নাচে, গায়। পুরীধামে যখন ছিলেন, তখন অনেক সময় জড় সমাধিতে থাকতেন।  

    শ্রীযুক্ত কেশবের হিন্দুধর্মের উপর উত্তরোত্তর শ্রদ্ধা

    এইরূপ নানাস্থানে শ্রীযুক্ত কেশবচন্দ্র সেনকে শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) কথাচ্ছলে নানা উপদেশ দিয়েছিলেন। বেলঘরের বাগানে প্রথম দর্শনের পর কেশব ২৮শে মার্চ, ১৮৭৫ রবিবার ‘মিরার’ সংবাদপত্রে লিখিয়াছিলেন, আমরা অল্প দিন হইল, দক্ষিণেশ্বরে পরমহংস রামকৃষ্ণকে বেলঘরের বাগানে দর্শন করিয়াছি। তাঁহার গভীরতা, অর্ন্তদৃষ্টি, বালকস্বভাব দেখিয়া আমরা মুগ্ধ হইয়াছি। তিনি শান্তস্বভাব, কোমল প্রকৃতি, আর দেখিলে বোধ হয়, সর্বদা যোগেতে আছেন। এখন আমাদের বোধ হইতেছে যে, হিন্দুধর্মের গভীরতম প্রদেশ অনুসন্ধান করিলে কত সৌন্দর্য, সত্য ও সাধুতা দেখিয়ে পাওয়া যায়। তা না হইলে পরমহংসের ন্যায় ঈশ্বরীয়ভাবে ভাবিত যোগীপুরুষ কিরূপে দেখা যাইতেছে? ১৮৭৬ জানুয়ারি আবার মাঘোৎসব আসিল, তিনি টাউন হলে বক্তৃতা দিলেন; বিষয়—ব্রাহ্মধর্ম ও আমরা কি শিখিয়াছি—(Our Faith and Experiences)—তাহাতেও হিন্দুধর্মের সৌন্দর্যের কথা অনেক বলিয়াছেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) তাঁহাকে যেমন ভালবাসিয়াছিলেন, কেশবও তাঁহাকে তদরূপ ভক্তি করিতেন। প্রায় প্রতি বৎসর ব্রাহ্মোৎসবের সময়েও কেশব দক্ষিণেশ্বরে যাইতেন ও তাঁহাকে কমলকুটিরে লইয়া আসিতেন। কখন কখন একাকী কমলকুটিরের দ্বিতলস্থ উপাসনাকক্ষে পরম অন্তরঙ্গজ্ঞানে ভক্তিভরে লইয়া যাইতেন ও একান্তে ঈশ্বরের পূজা ও আনন্দ করিতেন।

    ১৮৭৯ ভাদোৎসবের সময় আবার কেশব শ্রীরামকৃষ্ণকে (Ramakrishna) নিমন্ত্রণ করিয়া বেলঘরের তপোবনে লইয়া যান। ১৫ই সেপ্টেম্বর সোমবার (৩১ শে ভাদ্র, ১২৮৬, কৃষ্ণা চতুর্দর্শী)। আবার ২১ শে সেপ্টেম্বর কমলকুটিরে উৎসবে যোগদান করিতে লইয়া যান। এই সময় শ্রীরামকৃষ্ণ সমাধিস্থ হইলে ব্রাহ্মভক্তসঙ্গে তাঁহার ফটো লওয়া হয়। ঠাকুর দণ্ডায়মান, সমাধিস্থ। হৃদয় ধরিয়া আছেন। ২২শে অক্টোবর (৬ই কার্তিক, ১২৮৬, বুধবার), মহাষ্টমী—নবমীর দিন কেশব দক্ষিণেশ্বরে গিয়ে তাঁহাকে দর্শন করিলেন।

    “বেঙাচির ল্যাজ খসলে জলেও থাকতে পারে, আবার ডাঙাতেও থাকতে পারে”

    আরও পড়ুনঃ “দু-চারটা মাছ এমন সেয়ানা যে, কখনও জালে পড়ে না”

    আরও পড়ুনঃ “ভালো লোকের সঙ্গে মাখামাখি চলে, মন্দ লোকের কাছ থেকে তফাত থাকতে হয়”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 23: “বেঙাচির ল্যাজ খসলে জলেও থাকতে পারে, আবার ডাঙাতেও থাকতে পারে”

    Ramakrishna 23: “বেঙাচির ল্যাজ খসলে জলেও থাকতে পারে, আবার ডাঙাতেও থাকতে পারে”

    তৃতীয় পরিচ্ছেদ

    কমলকুটিরে শ্রীরামকৃষ্ণ ও শ্রীযুক্ত কেশব সেন

    শ্রীরামকৃষ্ণ কাপ্তেনের বাটি হইয়া শ্রীযুক্ত কেশব সেনের কমলকুটির নামক বাটিতে আসিয়াছেন। সঙ্গে রাম, মনোমোহন, সুরেন্দ্র, মাস্টার প্রভৃতি অনেকগুলি ভক্ত। সকলে দ্বিতল হল ঘরে উপবেশন করিয়াছেন। শ্রীযুক্ত প্রতাপ মজুমদার, শ্রীযুক্ত ত্রৈলোক্য প্রভৃতি ব্রাহ্মভক্তগণও উপস্থিত আছেন।

    ঠাকুর শ্রীযুক্ত কেশবকে বড় ভালবাসেন। যখন বেলঘরের বাগানে সশিষ্য তিনি সাধন-ভজন করিতেছিলেন, অর্থাৎ ১৮৭৫ খ্রিষ্টাব্দে মাঘোৎসবের পর—কিছুদিনের মধ্যে ঠাকুর একদিন বাগানে গিয়া তাঁহার সহিত দেখা করিয়াছিলেন। সঙ্গে ভাগিনেয় হৃদয়রাম। বেলঘরের এই বাগানে তাঁহাকে বলেছিলেন, তোমারই ল্যাজ খসেছে, অর্থাৎ তুমি সব ত্যাগ করে সংসারের বাহিরেও থাকতে পার; আবার সংসারেও থাকতে পার; যেমন বেঙাচির ল্যাজ খসলে জলেও থাকতে পারে, আবার ডাঙাতেও থাকতে পারে। পরে দক্ষিণেশ্বরে, কমলকুটিরে, ব্রাহ্মসমাজ ইত্যাদি স্থানে অনেকবার ঠাকুর কথাচ্ছলে তাঁহাকে উপদেশ দিয়াছিলেন, নানা পথ দিয়া, নানা ধর্মের ভিতর দিয়া ঈশ্বরলাভ হতে পারে। মাঝে মাঝে নির্জনে সাধন-ভজন করে ভক্তিলাভ করে সংসারে থাকা যায়, জনকাদি ব্রহ্মজ্ঞানলাভ করে সংসারে ছিলেন; ব্যাকুল হয়ে তাঁকে ডাকতে হয়, তবে দেখা দেন; তোমরা যা কর, নিরাকার সাধন, সে খুব ভাল। ব্রহ্মজ্ঞান হলে ঠিক বোধ করবে—ঈশ্বর সত্য আর সব অনিত্য, ব্রহ্ম সত্য, জগৎ মিথ্যা। সনাতন হিন্দু ধর্মে সাকার নিরাকার দুই মানে; নানাভাবে ঈশ্বরের পূজা করে—শান্ত, দাস্য, সখ্য, বাৎসল্য মধুর। রোশনচৌকিওয়ালারা একজন শুধু পোঁ ধরে বাজায় অথচ তার বাঁশীর সাত ফোকর আছে। কিন্তু আর একজন তারও সাত ফোকর আছে, সে নানা রাগরাগিণী বাজায়।

    তোমরা সাকার মানো না, তাতে কিছু ক্ষতি নাই, নিরাকারের নিষ্ঠা থাকলেই হল। তবে সাকারবাদীদের টানটুকু নেবে। মা বলে তাঁকে ডাকলে ভক্তি-প্রেম আরও বাড়বে। কখন দাস্য, কখন বাৎসল্য, কখন মধুর ভাব। কোন কামনা নাই তাঁকে ভালবাসি, এটি বেশ। এর নাম অহেতুকী ভক্তি। বেদ, পুরাণ, তন্ত্রে এক ঈশ্বরেরই কথা আছে ও তাঁহার লীলার কথা; জ্ঞান ভক্তি দুইই আছে। সংসারে দাসীর মতো থাকবে, দাসী সব কাজ করে, কিন্তু দেশে মন পড়ে আছে। মনিবের ছেলেদের মানুষ করে, বলে, আমার হরি, আমার রাম, কিন্তু জানে, ছেলে আমার নয়। তোমরা যে নির্জনে সাধন করছ, এ খুব ভাল, তাঁর কৃপা হবে। জনক রাজা নির্জনে কত সাধন করেছিলেন, সাধন করলে তবে তো সংসারে নির্লিপ্ত হওয়া যায়।

    আরও পড়ুনঃ “গুরুর উপদেশ অনুসারে চলতে হয়, বাঁকাপথে গেলে ফিরে আসতে কষ্ট হবে”

    আরও পড়ুনঃ “পাপ করলে তার ফল পেতে হবে! লঙ্কা খেলে তার ঝাল লাগবে না?”

    আরও পড়ুনঃ “ব্যাকুলতা না এলে কিছুই হয় না, সাধুসঙ্গ করতে করতে ঈশ্বরের জন্য প্রাণ ব্যাকুল হয়”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Valabhi University: নালন্দার সঙ্গে তুলনা হতো, কেমন ছিল প্রাচীন ভারতের বল্লভী বিশ্ববিদ্যালয়?

    Valabhi University: নালন্দার সঙ্গে তুলনা হতো, কেমন ছিল প্রাচীন ভারতের বল্লভী বিশ্ববিদ্যালয়?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: প্রাচীন ভারতের অন্যতম খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল বল্লভী (Valabhi University)। বর্তমানে পশ্চিম গুজরাটের ভাবনগর অঞ্চলে এর ধ্বংসাবশেষ অবস্থিত এবং এই  স্থান বল্লবীপুর নামে পরিচিত। বৌদ্ধ ধর্মের প্রচার এবং প্রসার কেন্দ্র হিসেবে বল্লভী বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্ব প্রাচীন ভারতবর্ষে খুব বেশি ছিল। ৬০০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১৪০০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত এটি একটি প্রধান বৌদ্ধ ধর্মের জ্ঞান চর্চার কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল।

    ৭৭৫ খ্রিস্টাব্দে মুসলমানরা মৈত্রক রাজ্যে আক্রমণ চালায়

    ঐতিহাসিকদের মতে, বল্লভী বিশ্ববিদ্যালয়ে (Valabhi University) হীনযান মতেই শিক্ষা দান করা হতো এবং এই মতকেই প্রচার করা হতো। প্রসঙ্গত, বৌদ্ধ ধর্মের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে তা তিনটি প্রধান সম্প্রদায় বিভক্ত হয়ে যায়। যথা হীনযান, মহাযান এবং বজ্রযান। ৬০০ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৪০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে রাজা মৈত্রক ভট্টর্কা এই বিশ্ববিদ্যালয়কে স্থাপন করেন বলে জানা যায়। প্রসঙ্গত, বল্লভী ছিল মৈত্রক রাজ্যের রাজধানী। মৈত্রক রাজারা অত্যন্ত শিক্ষানুরাগীও ছিলেন। সেই কারণেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অত্যন্ত পৃষ্ঠপোষক হয়ে ওঠেন তাঁরা। ৭৭৫ খ্রিস্টাব্দে মুসলমানরা মৈত্রক রাজ্যে আক্রমণ চালায়। এই কারণে বল্লভী বিশ্ববিদ্যালয়ের (Valabhi University) ওপরেও আঘাত আসে।  কিন্তু পরবর্তীকালে মৈত্রক রাজ বংশের উত্তরসূরীরা একইভাবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে কাজ করতে থাকেন।

    কোন কোন বিষয় পড়ানো হতো

    ঐতিহাসিকদের মতে, বৌদ্ধ ধর্মের পাশাপাশি এখানে বিজ্ঞানও পড়ানো হতো। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মীয় বিজ্ঞান ছাড়াও নীতি পড়ানো হতো। রাজনৈতিক বিজ্ঞানও পড়ানো হতো। ব্যবসা, কৃষি, প্রশাসন, দর্শন, ধর্মীয় চিন্তাধারা, অর্থনীতি, হিসাব শাস্ত্র, আইন উল্লেখযোগ্যভাবে পড়ানো হতো। তৎকালীন ভারতবর্ষে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বল্লভীতেও একটি বৃহৎ গ্রন্থাগার ছিল বলে জানা যায়। এই বিশ্ববিদ্যালয় গুরুত্ব সম্পূর্ণ উত্তর ভারত জুড়েই ছিল। মৈত্রক রাজবংশ এই বিশ্ববিদ্যালয় নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের আদলেই প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বলে জানা যায়। ঐতিহাসিকদের মতে, সারা দেশের পাশাপাশি আশেপাশের দেশগুলি থেকেও ছাত্ররা এই বিশ্ববিদ্যালয় পাঠ নিতে আসতেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের (Valabhi University) ডিগ্রিধারীদের অত্যন্ত সম্মানের চোখে দেখা হতো। সমাজের এবং রাজ দরবারে তাঁরা উচ্চ প্রশাসনিক পদে নিযুক্ত হতেন বলে জানা যায়।

    গুণামতি এবং স্থিরমতি নামের দুই সুপরিচিত বৌদ্ধ পণ্ডিত এই বিশ্ববিদ্যালয় পড়াতেন 

    গবেষকরা জানিয়েছেন, গুণামতি এবং স্থিরমতি নামের দুই সুপরিচিত বৌদ্ধ পণ্ডিত এই বিশ্ববিদ্যালয় পড়াতেন। জানা যায়, তাঁরা উভয়েই আচার্য বসুবন্ধের শিষ্য ছিলেন। পড়ুয়ারা বল্লভীতে ভর্তি হয়ে তাঁদের শিক্ষা শেষ করার জন্য দুই তিন বছর সেখানে আবাসিক হিসেবেই থাকতেন। শিক্ষার সমাপ্তির পরে রাজ দরবারে তাঁরা হাজির হতেন এবং সেখানেই তাদের বিভিন্ন চাকরিতে নিযুক্ত করা হতো। কথাসরিতসাগরেও বল্লভী বিশ্ববিদ্যালয়ের উল্লেখ মেলে। সেখানে একজন জনৈক ব্রাহ্মণের অস্তিত্ব পাওয়া যায়, যিনি তাঁর সন্তানকে নালন্দা বেনারসে ভর্তি না করে বল্লভীতে (Valabhi University) পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কথাসরিতসাগর অনুসারে ব্রাহ্মণের নাম ছিল বাসুদত্ত এবং তাঁর ছেলের নাম ছিল বিষ্ণুদত্ত।

    চিনা পরিব্রাজক হিউয়েন সাঙ কী বলছেন

    চিনা পরিব্রাজক হিউয়েন সাঙ-এর মতে, বল্লভীর গুরুত্ব কোনও অংশেই নালন্দার থেকে কম কিছু ছিল না। সপ্তম শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে ছয় হাজার বৌদ্ধ সন্ন্যাসী এখানে পাঠ নিতেন বলে জানা যায়। জানা যায় খ্রিস্টীয় সপ্তম শতাব্দীতে বল্লভী বিশ্ববিদ্যালয়ের (Valabhi University) গুরুত্ব সবথেকে বেশি ছিল। চিনা পরিব্রাজক হিউয়েন সাং এর বিবরণ থেকে জানা যায় যে দেশের প্রত্যেকটি অঞ্চল থেকেই অনেক ছাত্র সেখানে শিক্ষার জন্য আসতেন। এমনকি দূরবর্তী গাঙ্গেয় সমভূমি থেকেও বিশেষত ব্রাহ্মণ সমাজের ছেলেরা উচ্চ শিক্ষার জন্য তাঁদের সন্তানদের ওই বিশ্ববিদ্যালয় পাঠাতেন।

    এখানে ছাত্ররা আবাসিকভাবে থাকতেন

    জানা যায়, বল্লভীর প্রথম বিহার দুধ বিহার নামে পরিচিত এবং এটিকে বিহার মণ্ডল নামেও ডাকা হতো। সমুদ্র তীরবর্তী জায়গায় অবস্থিত হওয়াতেও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হয়ে ওঠে এই বিশ্ববিদ্যালয়। অসংখ্য ধনী বণিক এই জায়গায় বসবাস করতে বলে জানা যায়। এরা প্রত্যেকেই বল্লভীর অত্যন্ত পৃষ্ঠপোষক ছিলেন বলে জানা যায়। ঐতিহাসিকদের মতে, এখানে ছাত্ররা আবাসিকভাবে থাকতেন এবং তাঁদের বাসস্থানের জন্য অসংখ্য আশ্রম গড়ে তোলা হয়েছিল। যার সংখ্য়া ছিল শতাধিক।

    প্রতি পাঁচ জন পড়ুয়ার জন্য একজন করে পণ্ডিত নিযুক্ত করা হতো 

    ঐতিহাসিকদের মতে, বল্লভী বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ বিষয় ১০ বছর ধরে পড়ানো হতো এবং প্রতি পাঁচ জন পড়ুয়ার জন্য একজন করে পণ্ডিত নিযুক্ত করা হতো। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল যে সকলেই এখানে সমানভাবে বিবেচিত হতেন অর্থাৎ কোনও রকমের জাতিভেদ প্রথা শ্রেণিকক্ষে বা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে কাজ করত না। একজন ধনীর ছেলে তথা গরীবের ছেলে একই সঙ্গে বসে পড়াশোনা করত। এখানের পড়াশোনা সম্পূর্ণভাবে বিনামূল্যে ছিল।

    ২০১৭ সালের বৌদ্ধ সম্মেলন 

    জানা যায় ছাত্রদের জন্য বল্লভী বিশ্ববিদ্যালয় (Valabhi University) কর্তৃপক্ষ আলাদা ইউনিফর্মেরও ব্যবস্থা করেছিল। ২০১৭ সালের গুজরীটের বরোদায় দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় এবং এই সম্মেলনে বল্লভী বিশ্ববিদ্যালয়কে নতুন করে গড়ে তোলার প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। এই মর্মে একটি আবেদনপত্র লেখা হয় এবং যা কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকে পাঠানো হয়েছে।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Kanaksi Khimji: গুজরাটই ছিল তাঁর আদি বাড়ি, জানেন বিশ্বের একমাত্র হিন্দু শেখ কনকসি খিমজির গল্প?

    Kanaksi Khimji: গুজরাটই ছিল তাঁর আদি বাড়ি, জানেন বিশ্বের একমাত্র হিন্দু শেখ কনকসি খিমজির গল্প?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: হিন্দু শেখ! সে আবার কীভাবে হয়? শেখতো আরবদের উপাধি। কিন্তু জানেন কি বিশ্বের একমাত্র হিন্দু শেখ (Worlds Only Hindu Sheikh) কনকসি খিমজির (Kanaksi Khimji) বসবাস ওমানে। যদিও তাঁদের আদি বাড়ি গুজরাটে। তখনও ওমান বিশ্বের ‘অয়েল পাওয়ার’ হয়ে উঠেনি। তখন দেশটির সমুদ্রবন্দর দারুণ শক্তিশালী। ওই সময়ে এক হিন্দু ব্যবসায়ী গুজরাট থেকে ভাগ্য অন্বেষণের জন্য পাড়ি দিলেন ওমানে। ১৮৭০ সালে গুজরাটি ব্যবসায়ী রামদাস খাদ্য শস্য, চা, মশলা নিয়ে ওমান উপকূলে তাঁর জাহাজ লাগালেন। মাসকাটে রামদাস ও তাঁর সন্তানরা গড়ে তুললেন তৎকালীন ওমানের (Oman) সবচেয়ে বড় ব্যবসায়িক এন্টারপ্রাইজ খিমজি রামদাস গ্রুপ।

    হিন্দু শেখের রহস্য

    শেখ সাধারণত একটি মুসলিম উপাধি যা নেতা, শিক্ষক বা সন্মানীত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। কনকসি খিমজিই (Kanaksi Khimji) হচ্ছেন পৃথীবির একমাত্র হিন্দু যার রয়েছে ‘শেখ’ (Worlds Only Hindu Sheikh) উপাধি। সেই সময় ওমানের (Oman) সুলতান সা’ইদ রামদাসের পরিবারের কাছ থেকে ব্যবসায়িক পুঁজি ধার করতেন। সা’ইদ হলেন লিজেন্ডারি সুলতান, প্রয়াত কাবুজের বাবা। পরবর্তীতে কাবুজ সুলতান হলে রামদাসের নাতি কনকসি খিমজিকে সম্মানসূচক নাগরিকত্ব দান করেন। তাঁকে ‘শেখ’ উপাধিও দিয়েছিলেন সুলতান।

    গুজরাটের সঙ্গে আত্মিক টান

    ১৪৪ বছর আগে ১৮৭০ সালে কনকসি খিমজির (Kanaksi Khimji) পিতামহ রামদাস থ্যাকারসি গুজরাটের (Gujarat) উপকূলীয় শহর  মান্ডভি থেকে ওমানের উদ্দেশে যাত্রা করেছিলেন। ব্যবসায়ী হিসাবে, তাঁরা ভারত থেকে শস্য, চা এবং মশলা নিয়ে গিয়েছিলেন। ওমানের খেজুর, শুকনো চুন এবং লবনের বিনিময়ে তাঁরা ব্যবসা শুরু করেন। কনকসি খিমজি মুম্বইতে পড়াশোনা করে ১৯৭০ সালে ব্যবসার দায়িত্ব নেন। ১৯৩৬ সালে মাসকাটে জন্মগ্রহণ করলেও তিনি মুম্বইতে পড়াশোনা করেন। ওমানে হিন্দুদের যে শ্রদধার সঙ্গে দেখা হয় তাঁর কারণ খিমজিরাই। ওমানে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বাড়ালেও হিন্দু মূল্যবোধ ও ভারতীয় সংস্কৃতিকে বিদেশেও ছড়িয়ে দিয়েছেন খিমজিরা।

    ভারতীয় সংস্কৃতির প্রতি সম্মান

     ভগবান শ্রীনাথজি তথা নারায়ণের প্রতি অগাধ বিশ্বাস খিমজিদের। নিরামিষ ভোজী খিমজি (Kanaksi Khimji) তাঁর ভারতীয় শিকড়ের সাথে ওমানকে মোশানোর চেষ্টা করেছিলেন। তাঁর ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠান শুধু ওমানে বাণিজ্যই করে না, সে দেশের মানুষের জন্যও জনহিতকর নানান কাজে নিযুক্ত থাকে। কনকসি খিমজির নিরলস প্রচেষ্টা তাঁর সংস্থাকে সারা বিশ্বের কাছে এক নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখিয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের সম্মানীয় ভারতীয় কনকসি খিমজি। মাসকাটে প্রথম ইংরেজি ভারতীয় স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন কনকসি। এখন ওমানে ৩৫ হাজার ছাত্রদের জন্য ১৯টি ভারতীয় স্কুল রয়েছে। 

    আরও পড়ুন: অলিম্পিক্সে ভারতীয় ভোজ! প্যারিসে নীরজদের পাতে ভাত-ডাল-রুটি, সঙ্গে কী?

    ওমানের উন্নতি 

    ওমানে (Oman) লক্ষ লক্ষ ভারতীয় বাস করে, বেশিরভাগ ধনী গুজরাটি ব্যবসায়ী। ওমান খুব কম মুসলিম দেশের মধ্যে একটি যেখানে হিন্দু মন্দির রয়েছে। মুসলিম ও হিন্দুদের সম্পর্ক বৈষম্য ও কলহমুক্ত। এর একটি কারণ ওমানের উন্নতিতে খিমজিদের ভূমিকা। সবচেয়ে বড় ভূমিকা ছিল কনকসি খিমজিরই (Kanaksi Khimji) । তাঁর বাবা গোলকদাস খিমজির থেকে যখন তিনি দায়িত্ব নেন তখনও  ওমানে মোটরচালিত নৌযান জাহাজ চালু করা হয়নি। এর আগে, দুটি বিশ্বযুদ্ধের সময়, মিত্র বাহিনীর পুরো ঘাঁটির জন্য খিমজিদের সরবরাহকারী হিসাবে বেছে নেওয়া হয়েছিল। “এটি আমাদেরকে রাজস্ব আয় করার এবং আমাদের ভিত্তি শক্তিশালী করার সুযোগ দিয়েছে। আমরা দ্রুত সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট এবং মেরিটাইম শোর সাপোর্টের শিল্প শিখেছি।” এক অনুষ্ঠানে নিজেই একথা বলেছিলেন কনকসি খিমজি। মাসকাটে স্থাপিত প্রথম ব্যাঙ্ক ছিল এইচএসবিসি , ৬০ বছর আগে এই ব্যাঙ্কের ভবন নির্মাণ করেছিল খিমজি রামদাস (কেআর) গ্রুপ। এর আগে লেনদেন হতো বিনিময় বা রূপার মাধ্যমে। বাইত আল ফালাজ, বর্তমানে রুউই নামে পরিচিত, ওমানের প্রথম বিমানবন্দরও খিমজি গ্রুপ দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। খিমজিরাই ১৯৬৯ সালে প্রথম ফোর্ড ডিলারশিপ অর্জন করেছিলেন এবং মজার ব্যাপার হল, ওমানের (Oman) সুলতান তাদের প্রথম গাড়ির অর্ডার দিয়েছিলেন।

    ওমান ক্রিকেটে খিমজিদের ভূমিকা

    পারিবারিক ভাবে ক্রিকেট অনুরাগী কনকসি খিমজি (Kanaksi Khimji) হলেন ওমান ক্রিকেট বোর্ডের ফাউন্ডিং চেয়ারম্যান। ১৯৭৯ সালে তার হাত ধরেই ওমান ক্রিকেটের যাত্রা শুরু। আজকের ওমান ক্রিকেটের যে অবয়ব তার জন্য খিমজি’র অবদান সবচেয়ে বেশি। ওমান ক্রিকেট অ্যাকাডেমি, আমেরাত স্টেডিয়াম তাঁর ভিশনেরই একটি অংশ। ওমান ক্রিকেটে কনকসি খিমজির অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ২০১১ সালে আইসিসি তাঁকে লাইফ টাইম সার্ভিস অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত করে। বর্তমানে কনকসি খিমজির ছেলে পঙ্কজ খিমজি ওমান ক্রিকেটের দায়িত্বে রয়েছেন।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

     

  • Jharkhand: ঝাড়খণ্ডের অন্যতম শক্তিপীঠ উগ্রতারা ছিন্নমস্তা মন্দির, দুর্গাপুজো হয় টানা ১৬ দিন ধরে!

    Jharkhand: ঝাড়খণ্ডের অন্যতম শক্তিপীঠ উগ্রতারা ছিন্নমস্তা মন্দির, দুর্গাপুজো হয় টানা ১৬ দিন ধরে!

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পশ্চিমবঙ্গের নিকটতম প্রতিবেশী রাজ্য ঝাড়খণ্ডের (Jharkhand) লাতেহার জেলা বিখ্যাত তার অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য। এখানকার গভীর-অগভীর অরণ্য, বন্যপ্রাণী, ঝর্ণা, পাহাড় সহজেই যে কোনও প্রকৃতিপ্রেমী পর্যটকের হৃদয় জয় করে নিতে পারে। কিন্তু লাতেহার মানেই কি শুধু বেতলা অরণ্য অথবা নেতারহাট? এর বাইরেও এই অঞ্চলে রয়েছে এমন কিছু স্থান, যেগুলির আকর্ষণও কিন্তু কোনও অংশে কম নয়।এমনই একটি স্থান হল টোরির উগ্রতারা ছিন্নমস্তা মন্দির বা উগ্রতারা নগর ভগবতী মন্দির। প্রায় ৪০০ বছরের প্রাচীন এই মন্দিরটি ষষ্ঠদশ শতাব্দীতে নির্মাণ করেন টোরির রাজা। স্বয়ং রানী অহল্যা বাই এই মন্দিরে পুজো দিয়ে গিয়েছেন। ঝাড়খণ্ডের অন্যতম শক্তিপীঠ বলে এই মন্দিরকে মান্যতা দেন ভক্তজনেরা। এখানে টানা ১৬ দিন ধরে দুর্গাপুজো হয়, যা সচরাচর অন্য কোথাও দেখা যায় না।

    দূর দূরান্ত থেকে আসেন ভক্তরা (Jharkhand) 

    মন্দির স্থাপনের পর থেকেই এখানকার পরম্পরা অনুযায়ী ‘জিউনিয়া তেওহার’-এর দ্বিতীয় দিন মায়ের পবিত্র কলস স্থাপন করা হয় এবং মা অষ্টাদশভূজার পুজো শুরু হয়। তার পর থেকে ভক্তি সহকারে এবং বিবিধ আচার মেনে ১৬ দিন ধরে মায়ের পুজো হয়। এই সময় দূর দূরান্ত থেকে ভক্তরা আসেন এই মন্দিরে। শুধু মাত্র ঝাড়খণ্ড থেকেই নয়, এখানে পুজো দিয়ে মনস্কামনা পূর্ণ করার উদ্দেশ্য নিয়ে ভক্তরা আসেন পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ওড়িশা থেকেও। মূলত মিছরি এবং নারকেল দিয়ে মায়ের পুজো দেওয়া হয়। তবে পশুবলি দেওয়ার প্রথাও আছে এখানে।

    বেতলা থেকে সময় লাগে তিন-চার ঘণ্টা

    লাতেহার শহরের কেন্দ্রস্থল থেকে এই মন্দিরের দূরত্ব প্রায় ৩৮ কিমি। চটকা-চতরা মূখ্য মার্গে (Jharkhand) অবস্থিত এই মন্দিরে পৌঁছনোর সড়ক পথ আছে। টোরি শহরের কেন্দ্রস্থল থেকে এর দূরত্ব প্রায় ১০ কিমি। আর রাঁচি থেকে টোরির দূরত্ব প্রায় ৮৫ কিমি। যাওয়া যায় বেতলা অরণ্য থেকেও। বেতলা থেকে যেতে সময় লাগে প্রায় তিন-চার ঘণ্টা। এই সমগ্র পথেই রয়েছে আরও বেশ কয়েকটি পর্যটন স্থল। ঘুরে নেওয়া যায় সেগুলোও। আর যাতায়াতের পথের দৃশ্যও বেশ মনোরম।

    যাতায়াত এবং থাকা (Jharkhand)

    যাতায়াত-রাঁচি বা বেতলা, দুই জায়গা থেকেই এই মন্দির দর্শন করে আবার ফিরে গিয়ে রাত্রিবাস করা যায় রাঁচি বা বেতলায়। সেক্ষেত্রে ট্রেনে এসে রাঁচি বা বেতলা থেকে গাড়ি নিয়ে আসাই সুবিধার। 
    থাকা খাওয়া-রাঁচিতে রয়েছে প্রচুর হোটেল। এছাড়াও এই পথে রয়েছে বেশ কিছু বন বাংলো। বুকিং করার জন্য যোগাযোগ করতে হবে ডিএফও-র সঙ্গে। প্রয়োজনে ফোন করা যেতে পারে ০৯৯৫৫৫২৭৩৭১ নম্বরে। আর গাড়ি বা জঙ্গল সাফারির জন্য যোগাযোগ করা যেতে পারে ০৬২০৬২২০৩১৪ নম্বরে (Jharkhand)।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  WhatsappFacebookTwitterTelegram এবং Google News পেজ।

  • Jagaddala Mahavihara: প্রাচীন ভারতের খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয়! কেমন ছিল জগদ্দলা মহাবিহারের রোজকার জীবন?

    Jagaddala Mahavihara: প্রাচীন ভারতের খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয়! কেমন ছিল জগদ্দলা মহাবিহারের রোজকার জীবন?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: জগদ্দলা মহাবিহারের (Jagaddala Mahavihara) ধ্বংসাবশেষ বর্তমান বাংলাদেশের উত্তরে অবস্থিত। এই ভৌগোলিক অঞ্চল প্রাচীনকালে বরেন্দ্রভূমি নামেই পরিচিত ছিল। জগদ্দলা মহাবিহার ছিল বিখ্যাত বৌদ্ধ বিহার ও বিদ্যাচর্চার কেন্দ্র। ঐতিহাসিকদের মতে, এই মহাবিহারকে স্থাপন করেছিলেন পাল রাজবংশের রাজা রামপাল। ১০৮৪ খ্রিস্টাব্দে এই মহাবিহার প্রতিষ্ঠিত হয় বলে জানা যায়। ঐতিহাসিকদের মতে জগদ্দলা বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হয়েছে গ্রানাইট পাথর দিয়ে। সাধারণভাবে তৎকালীন সময়ে যেকোনও স্থাপত্য নির্মাণ করা হতো কালো ব্যাসল্ট পাথর এবং বেলে পাথর দিয়ে। কিন্তু গ্রানাইট ছিল বিরল এবং তা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। সেই গ্রানাইট জগদ্দলা মহাবিহারে ব্যবহার করা হয়েছিল। সন্ধ্যাকর নন্দীর রচিত রামচরিতে জগদ্দলা মহাবিহারের উল্লেখ পাওয়া যায়। আমাদের প্রতিবেদনে জগদ্দলা  বিশ্ববিদ্যালয়ের উল্লেখযোগ্য দিক নিয়ে আমরা আলোচনা করব। 

    নালন্দা ও বিক্রমশীলা বিশ্ববিদ্যালয়ের পতনের পরে জগদ্দলাতে বৌদ্ধ ভিক্ষুরা আশ্রয় নেন

    জানা যায় নালন্দা এবং বিক্রমশীলা বিশ্ববিদ্যালয়ের পতনের পরে অনেক বৌদ্ধ পণ্ডিত জগদ্দলা বিশ্ববিদ্যালয়ের (Jagaddala Mahavihara) চলে আসেন এবং এখান থেকেই গবেষণা ও অধ্যাপনা চালাতে থাকেন। ১৯৯৯ সালে জগদ্দলা  বিশ্ববিদ্যালয়কে ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য প্রস্তাব করা রাখা হয়েছিল। জানা যায়, বৌদ্ধ ধর্মের তিনটি ভাগ ছিল হীনযান, মহাযান এবং বজ্রযান। এর মধ্যে জগদ্দলা মহাবিহার ছিল বজ্রযান বৌদ্ধ কেন্দ্র।

    বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জগদ্দলা মহাবিহার সম্পর্কে

    – তিব্বতের বেশ কিছু বিখ্যাত বৌদ্ধ পণ্ডিত যেমন বিভূতি চন্দ্র, দানশীলা, মোক্ষকার গুপ্তা, শুভাকার গুপ্ত এই মঠে অধ্যাপনা করতেন। 

    – জানা যায়, পাঁচটি বিখ্যাত মহাবিহারের মধ্যে জগদ্দলা ছিল অন্যতম। বাকি চারটি মহাবিহার হল বিক্রমশীলা, নালন্দা, সোমপুরা ও ওদন্তপুরী।

    – ঐতিহাসিকদের মতে, জগদ্দলাতে (Jagaddala Mahavihara) বিভিন্ন বিষয় পড়ানো হতো যার মধ্যে অন্যতম ছিল সংস্কৃত সাহিত্য তথা বৌদ্ধ ধর্ম। জগদ্দলাতে সুভাষিতরত্নকোষ যা সাহিত্যের প্রাচীনতম সংকলনগুলির মধ্যে অন্যতম, তা পাওয়া গিয়েছে।

    – এছাড়াও এখানে প্রচুর সংখ্যক তিব্বতীয় গ্রন্থ লেখা হয়েছিল বা সেগুলোকে প্রতিলিপি করা হয়েছিল বলে মনে করা হয়।

    – ১২০৭ খ্রিস্টাব্দে অন্যান্য বৌদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মতো এটিও ধ্বংস করে মুসলিম আক্রমণকারীরা। এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে বিস্তীর্ণ অঞ্চলকে সমৃদ্ধ করেছিল এই বিশ্ববিদ্যালয়।

    বাংলাদেশের পাহাড়পুরে মেলে ধ্বংসাবশেষ

    জানা যায়, ১০৫ মিটার দীর্ঘ ও ৮৫ মিটার প্রস্থ মহাবিহারের ধ্বংসাবশেষ  বাংলাদেশের পাহাড়পুরে আবিষ্কৃত হয়েছে। এখানে আবিষ্কৃত হয়েছে পোড়ামাটির ফলক, ইট, পেরেক ও দেবতাদের তিনটি পাথরের মূর্তি। এছাড়াও সেখানে মিলেছে আরও দেড়শটিরও বেশি বস্তু। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ভাবে রয়েছে মাটির পাত্র, বাটি, পোশাক পরা পাথরের মূর্তি। এর পাশাপাশি বিষ্ণু মূর্তিও সেখান থেকে উদ্ধার হয়েছে। এই বিষ্ণু মূর্তিটি জগদ্দলা মহাবিহারের দক্ষিণ অংশ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। কিন্তু অন্যান্য বিষ্ণু মূর্তির সঙ্গে যেমন দেবী লক্ষ্মীর মূর্তি থাকে, এখানে সেইরকম কিছু মেলেনি।

    উপমহাদেশের বিস্তীর্ণ অংশ থেকে পণ্ডিত এবং ছাত্ররা এখানে আসতেন

    জগদ্দলা মহাবিহার বিভিন্ন কারণেই বৌদ্ধ ধর্ম তথা প্রাচীন ভারতের ইতিহাসে এক অপরিসীম গুরুত্ব বহন করে চলেছে। বৌদ্ধ শিক্ষা, বিভিন্ন ধর্মীয় সাহিত্যের ভাণ্ডার এবং বৌদ্ধ ভিক্ষুকদের অন্যতম আবাসস্থল ছিল এই মহাবিহার। নালন্দা এবং ওদন্তপুরীর মতই জগদ্দলা মহাবিহারেও উপমহাদেশের বিস্তীর্ণ অংশ থেকে পণ্ডিত এবং ছাত্ররা আসতেন। স্বাভাবিকভাবেই বৌদ্ধ ধর্মের বিভিন্ন তত্ত্ব বহির্বিশ্বের সঙ্গে আদান-প্রদানের এক উল্লেখযোগ্য কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল এই মহাবিহার। বলা যেতে পারে তা বহির্বিশ্বের সঙ্গে ভারতীয় সংস্কৃতির এক সেতুবন্ধনের কাজও করত। জগদ্দলা মহাবিহার থেকে পাওয়া শিক্ষা নিয়ে ছাত্ররা তিব্বত সমেত দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া এবং তার বাইরেও বৌদ্ধ ধর্মের প্রচার করতেন।

    জগদ্দলা মহাবিহারের শিক্ষকরা 

    জানা যায়, জগদ্দলা মহাবিহারে (Jagaddala Mahavihara) অনেক প্রথিতযশা পণ্ডিত এবং শিক্ষকদের উপস্থিতিতে এক আদর্শ শিক্ষার পরিবেশ নির্মিত হয়েছিল। জগদ্দলার সঙ্গে যুক্ত বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য পণ্ডিত রয়েছেন।

    অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান: অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান একজন বিখ্যাত বৌদ্ধ পণ্ডিত এবং অধ্যাপক ছিলেন। ঐতিহাসিকদের মতে, জীবনের একটি বড় অংশ তিনি জগদ্দলাতে কাটিয়েছেন। তিব্বতে বৌদ্ধ ধর্মের প্রচারে তিনি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন। জানা যায় বজ্রযান সম্প্রদায়ের প্রচার করতেন তিনি।

    রত্নাকরসন্তি: রত্নাকরসন্তি একজন বিখ্যাত বৌদ্ধ দার্শনিক ছিলেন এবং তিনি জগদ্দলাতে শিক্ষকতা করতেন বলে জানা যায়। বিভিন্ন বৌদ্ধ গ্রন্থের উপরে তাঁর ভাষ্য ভারত ও তিব্বতে সমাদরে গৃহীত হয়েছে।

    জ্ঞানশ্রীমিত্র: জ্ঞানশ্রীমিত্র একজন বিশিষ্ট শিক্ষক এবং দার্শনিক ছিলেন। তিনিও জগদ্দলার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

    জগতলা মহাবিহারের বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য

    প্রধান ভবন: জগদ্দলা মহাবিহারের কেন্দ্রস্থলে ছিল প্রধান ভবনটি। এটি ছিল অত্যন্ত প্রশস্ত। এখানে একাধিক হল, ধ্যানকক্ষ এবং শ্রেণিকক্ষ ছিল। অসংখ্য বৌদ্ধ ভিক্ষুক এবং ছাত্ররা এখানে গবেষণার কাজ করতেন।

    প্রাঙ্গণ: জগদ্দলা মহাবিহার বাগান দ্বারা পরিবেষ্টিত ছিল। একটি সুপ্রশস্ত প্রাজ্ঞণ ছিল এখানে। শান্তির পরিবেশ বিরাজ করত। বৌদ্ধ ভিক্ষুক এবং ছাত্ররা এখানে ধ্যান করতেন।

    গ্রন্থাগার-অধ্যয়ন কক্ষ: প্রাচীন ভারতের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতোই জগদ্দলা মহাবিহারে একটি বড় গ্রন্থাগার ছিল। সেখানে বিভিন্ন বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থের সংগ্রহ ছিল।

    আবাসন: দেশ বিদেশ থেকে আগত ছাত্রদের এবং সন্ন্যাসীদের থাকার জন্য এখানে একটি আবাসনও গড়ে তোলা হয়েছিল

    জগদ্দলা মহাবিহারের সন্ন্যাস জীবন

    জগদ্দলা মহাবিহারের সন্ন্যাস জীবন, বৌদ্ধ ধর্ম অনুসারে কঠোর অনুশাসন মেনেই চলত। আধ্যাত্মিক বিকাশের প্রতি দৃষ্টি দেওয়া হত। সন্ন্যাসী এবং ছাত্রদের অহিংসা পালন, ব্রহ্মচর্য ব্রত পালন, জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে নৈতিক কর্তব্যবোধ -এ সমস্ত নিয়ম অনুসরণ করতে হতো। প্রতিদিন নিয়মিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ছাত্র এবং শিক্ষকরা একসঙ্গে বসে ধ্যান করতেন বলে জানা যায়। এর পাশাপাশি ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানেরও সেখানে আয়োজন করা হতো। সন্ন্যাসীরা আশেপাশের গ্রামে ভিক্ষা করতেন।

    প্রতিদিনের রুটিন কেমন ছিল

    জানা যায়, প্রত্যেক সন্ন্যাসী এবং ছাত্রকে ভোরবেলায় উঠতে হতো এবং তারপরেই তাঁরা ধ্যান করতেন। এরপরেই সন্ন্যাসীরা বিভিন্ন বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থ, দর্শন এবং যুক্তিবিদ্যার পাঠ ছাত্রদের দিতেন। মহাবিহারে দর্শন এবং বৌদ্ধ ধর্মের বিভিন্ন বিষয়ের উপর বক্তৃতা এবং বিতর্কের আয়োজন করা হতো। জগদ্দলা মহাবিহারে পণ্ডিতরা বৌদ্ধ ধর্মের বিভিন্ন গ্রন্থ রচনার কাজেও নিযুক্ত ছিলেন। সারাদিন এভাবেই কাটতো। তারপরে প্রত্যহ সন্ধ্যায় জপ এবং অন্যান্য আচার অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দিন শেষ হতো।

    জগদ্দলা মহাবিহারের পতনের কারণ

    মনে করা হয়, জগদ্দলা মহাবিহারের (Jagaddala Mahavihara) পতনের কারণের মধ্যে প্রধান কারণ ছিল মুসলিম আক্রমণ। সে সময়ে মুসলমান শাসকরা অন্য যেকোনও ধর্ম মতের বিরোধী ছিলেন এবং ইসলাম বিপন্ন হতে পারে এই আশঙ্কায় একাধিক বৌদ্ধ বিহারকে ধ্বংস করা হয়, গ্রন্থাগারগুলিকে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। জগদ্দলাকেও ধ্বংস করে মুসলিম আক্রমণ। অন্যদিকে ভারতবর্ষে বৌদ্ধ ধর্মের প্রভাব ক্রমশ কমতে থাকে। এর ফলে প্রাসঙ্গিকতা হারায় জগদ্দলা।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 22: “গুরুর উপদেশ অনুসারে চলতে হয়, বাঁকাপথে গেলে ফিরে আসতে কষ্ট হবে”

    Ramakrishna 22: “গুরুর উপদেশ অনুসারে চলতে হয়, বাঁকাপথে গেলে ফিরে আসতে কষ্ট হবে”

    শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে

    দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ

    সংসারেও ঈশ্বরলাভ হয়–সকলেরই মুক্তি হবে

    প্রতিবেশী—মহাশয়, সংসারে থেকে কি ভগবানকে পাওয়া যায়?

    শ্রীরামকৃষ্ণ—অবশ্য পাওয়া যায়। তবে যা বললুম, সাধুসঙ্গ আর সর্বদা প্রার্থনা করতে হয়। তাঁর কাছে কাঁদতে হয়। মনের ময়লাগুলো ধুয়ে গেলে তাঁর দর্শন হয়। মনটি যেন মাটি-মাখানো লোহার ছুঁচ—ঈশ্বর চুম্বক পাথর, মাটি না গেলে চুম্বক পাথরের সঙ্গে যোগ হয় না। কাঁদতে কাঁদতে ছুঁচের মাটি ধুয়ে যায়, ছুঁচের মাটি অর্থাৎ কাম, ক্রোধ, লোভ, পাপবুদ্ধি, বিষয়বুদ্ধি। মাটি ধুয়ে গেলেই ছুঁচকে চুম্বক পাথরে টেনে লবে—অর্থাৎ ঈশ্বরদর্শন হবে। চিত্তশুদ্ধি হলে তবে তাঁকে লাভ হয়। জ্বর হয়েছে, দেহেতে রস অনেক রয়েছে তাতে কুইনাইনে কি কাজ হবে। সংসারে হবে না কেন? ওই সাধুসঙ্গ, কেঁদে কেঁদে প্রার্থনা, মাঝে মাঝে নির্জনে বাস, একটু বেড়া না দিলে ফুটপাথের চারাগাছ, ছাগল গরুতে খেয়ে ফেলে।

    প্রতিবেশী—যারা সংসারে আছে, তাহলে তাদেরও হবে?

    শ্রীরামকৃষ্ণ—সকলেরই মুক্তি হবে। তবে গুরুর উপদেশ অনুসারে চলতে হয়। বাঁকাপথে গেলে ফিরে আসতে কষ্ট হবে। মুক্তি অনেক দেরিতে হয়। হয়তো এ-জন্মেও হল না, আবার হয়তো অনেক জন্মের পর হল। জনকাদি সংসারেও কর্ম করেছিলেন। ঈশ্বরকে মাথায় রেখে কাজ করতেন। নৃত্যকী যেমন মাথায় বাসন করে নাচে। আর পশ্চিমের মেয়েদের দেখ নাই? মাথায় জলের ঘড়া, হাসতে হাসতে কথা কইতে কইতে যাচ্ছে।

    প্রতিবেশী—গুরুর উপদেশ বললেন। গুরু কেমন করে পাব?

    শ্রীরামকৃষ্ণ—যে-সে লোক গুরু হতে পারে না। বাহাদুরী কাঠ নিজেও ভেসে চলে যায়, অনেক জীবজন্তুও চড়ে যেতে পারে। হাবাতে কাঠের উপর চড়লে, কাঠও ডুবে যায়, যে চড়ে সেও ডুবে যায়। তাই ঈশ্বর যুগে যুগে লোকশিক্ষার জন্য নিজে গুরুরূপে অবতীর্ণ হন। সচ্চিদানন্দই গুরু।

    জ্ঞান কাকে বলে; আর আমি কে? ঈশ্বরই কর্তা আর সব অকর্তা—এর নাম জ্ঞান। আমি অকর্তা। তাঁর হাতের যন্ত্র। তাই আমি বলি, মা, তুমি যন্ত্রী, আমি যন্ত্র, তুমি ঘরণী, আমি ঘর, আমি ইঞ্জিনিয়র, যেমন চালাও তেমনি চলি; যেমন করাও তেমনি করি; যেমন বলাও তেমনি বলি; নাহং নাহং তুঁহু তুঁহু।

    আরও পড়ুনঃ “পাপ করলে তার ফল পেতে হবে! লঙ্কা খেলে তার ঝাল লাগবে না?”

    আরও পড়ুনঃ “ব্যাকুলতা না এলে কিছুই হয় না, সাধুসঙ্গ করতে করতে ঈশ্বরের জন্য প্রাণ ব্যাকুল হয়”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

LinkedIn
Share