Category: পরম্পরা

Get updated History and Heritage and Culture and Religion related news from the Madhyom news portal madhyom.com, West Bengal leading news portal Madhyom.com

  • Sri Ramakrishna Kathamrita 7: “ভালো লোকের সঙ্গে মাখামাখি চলে, মন্দ লোকের কাছ থেকে তফাত থাকতে হয়”

    Sri Ramakrishna Kathamrita 7: “ভালো লোকের সঙ্গে মাখামাখি চলে, মন্দ লোকের কাছ থেকে তফাত থাকতে হয়”

    সর্বভূতস্থমাত্মানং সর্বভূতানি চাত্মনি।

    ঈক্ষতে যোগযুক্তাত্মা সর্বত্র সমদর্শনঃ।।

    নরেন্দ্র, ভবানাথ, মাস্টার

    মাস্টার তখন বরাহনগরে ভগিনীর বাড়িতে ছিলেন। ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণকে (Sri Ramakrishna Kathamrita) দর্শন করা অবধি সর্বক্ষণ তাহারই চিন্তা। সর্বদাই যেন সেই আনন্দময় মূর্তি দেখিতেছেন ও তাঁহার সেই অমৃতময়ী কথা শুনিতেছেন। ভাবিতে লাগিলেন, এই দরিদ্র ব্রাহ্মণ কিরূপে এই সব গভীর তত্ত্ব অনুসন্ধান করিলেন ও জানিলেন? আর এত সহজে এই সকল কথা বুঝাইতে তিনি এ–পর্যন্ত কাহাকেও কখনও দেখেন নাই। কখন তাঁহার কাছে যাইবেন ও আবার তাঁহাকে দর্শন করিবেন এই কথা রাত্রিদিন ভাবিতেছেন।

    দেখিতে দেখিতে রবিবার আসিয়া পড়িল। বরাহনগরের নেপালবাবুর সঙ্গে বেলা ৩টা-৪টার সময় তিনি দক্ষিণেশ্বরের বাগানে আসিয়া পৌঁছিলেন। দেখিলেন, সেই পূর্বপরিচিত ঘরের মধ্যে ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ছোট তক্তপোশের উপর বসিয়া আছেন। ঘরে একঘর লোক। রবিবারে অবসর হইয়াছে, তাই ভক্তেরা দর্শন করিতে আসিয়াছেন। এখনও মাস্টারের সঙ্গে কাহার আলাপ হয় নাই। তিনি সভামধ্যে একপার্শ্বে আসন গ্রহণ করিলেন। দেখিলেন, ভক্তসঙ্গে সহাস্যবদনে ঠাকুর কথা কহিতেছেন।

    একটি ঊনবিংশতিবর্ষ বয়স্ক ছোকরাকে উদ্দেশ করিয়া ও তাঁহার দিকে তাকাইয়া ঠাকুর যেন কত আনন্দিত হইয়া অনেক কথা বলিতেছেন। ছেলেটির নাম নরেন্দ্র (Sri Ramakrishna Kathamrita)। কলেজে পড়েন ও সাধারণ ব্রাহ্ম সমাজে যাতায়াত করেন। কথাগুলি তেজঃপরিপূর্ণ। চক্ষু দুটি উজ্জ্বল, ভক্তের চেহারা।

    মাস্টার অনুমানে বুঝিলেন যে, কথাটি বিষয়াসক্ত সংসারী ব্যক্তির সমন্ধে হইতেছিল। যারা কেবল ঈশ্বর ঈশ্বর করে, ধর্ম ধর্ম করে তাদের ওই সকল ব্যক্তিরা নিন্দা করে। আর সংসারে কত দুষ্টু লোক আছে, তাদের সঙ্গে কিরূপ ব্যবহার করা উচিত–এ সব কথা হইতেছে।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (নরেন্দ্রের প্রতি) – নরেন্দ্র তুই কি বলিস? সংসারী লোকেরা কত কি বলে! কিন্তু দেখ, হাতি যখন চলে যায়, পেছনে কত জানোয়ার কত রকম চিৎকার করে। কিন্তু হাতি ফিরেও চায় না। তোকে যদি কেউ নিন্দা করে, তুই কি মনে করবি?

    নরেন্দ্র – আমি মনে করব কুকুর ঘেউ ঘেউ করছে।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (সহাস্যে) – না রে, অতদূর নয়। (সকলের হাস্য) ঈশ্বর সর্বভূতে (Sri Ramakrishna Kathamrita) আছেন। তবে ভালো লোকের সঙ্গে মাখামাখি চলে, মন্দ লোকের কাছ থেকে তফাত থাকতে হয়। বাঘের ভিতরেও নারায়ণ আছেন; তা বলে বাঘকে আলিঙ্গন করা চলে না। (সকলের হাস্য) যদি বল বাঘ তো নারায়ণ, তবে কেন পালাব। তার উত্তর – যারা বলেছে “পালিয়ে এস” তারাও নারায়ণ, তাদের কথা কেন না শুনি?

    আরও পড়ুনঃ “ঈশ্বরে ভক্তিলাভ না করে যদি সংসার করতে যাও তাহলে আরও জড়িয়ে পড়বে”

    আরও পড়ুনঃ “মাস্টার দেখিলেন, একঘর লোক নিস্তব্ধ হইয়া তাঁহার কথামৃত পান করিতেছেন”

    আরও পড়ুনঃ “টাকায় কি হয়? ভাত হয়, ডাল হয়, থাকবার জায়গা হয়–এই পর্যন্ত, ভগবানলাভ হয় না”

        

    তথ্যসূত্রঃ শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণকথামৃত, ৬ষ্ঠ পরিচ্ছেদ, তৃতীয় দর্শন 

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Sri Ramakrishna Kathamrita 5: “টাকায় কি হয়? ভাত হয়, ডাল হয়, থাকবার জায়গা হয়–এই পর্যন্ত, ভগবানলাভ হয় না”

    Sri Ramakrishna Kathamrita 5: “টাকায় কি হয়? ভাত হয়, ডাল হয়, থাকবার জায়গা হয়–এই পর্যন্ত, ভগবানলাভ হয় না”

     

    পঞ্চম পরিচ্ছেদ

    সংসার জল, আর মনটি যেন দুধ। যদি জলে ফেলে রাখ, তাহলে দুধে-জল মিশে এক হয়ে যায়, খাঁটি দুধ খুঁজে পাওয়া যায় না। দুধকে দই পেতে মাখন তুলে যদি জলে রাখা যায় তাহলে ভাসে। তাই নির্জন সাধনা দ্বারা আগে জ্ঞানভক্তিরূপ মাখন লাভ করবে। সেই মাখন সংসার-জলে ফেলে রাখলেও মিশবে না, ভেসে থাকবে।

    সঙ্গে সঙ্গে বিচার করা খুব দরকার। কামিনী-কাঞ্চন অনিত্য। ঈশ্বরই (Sri Ramakrishna Kathamrita) একমাত্র বস্তু। টাকায় কি হয়? ভাত হয়, ডাল হয়, থাকবার জায়গা হয়–এই পর্যন্ত। ভগবানলাভ হয় না। তাই টাকা জীবনের উদ্দেশ্য হতে পারে না-এর নাম বিচার, বুঝেছ?

    মাস্টার–আজ্ঞে হ্যাঁ, প্রবোধচন্দ্রোদয় নাটক আমি সম্প্রতি পড়েছি, তাতে আছে ‘বস্তু বিচার’! শ্রীরামকৃষ্ণ—হ্যাঁ বস্তুবিচার এই দেখ, টাকাতেই বা কি আছে, আর সুন্দর দেহেই বা কি আছে! বিচার কর, সুন্দরীর দেহেতেও কেবল হাড়, মাংস, চর্বি, মল, মূত্র–এই সব আছে। এই সব বস্তুতে মানুষ ঈশ্বরকে ছেড়ে কেন মন দেয়? কেন ঈশ্বরকে ভুলে যায়?

    ঈশ্বরদর্শনের উপায়

    মাস্টার—ঈশ্বরকে কি দর্শন করা যায়?

    শ্রীরামকৃষ্ণ–হ্যাঁ, অবশ্য করা যায়। মাঝে মাঝে নির্জনে বাস; তাঁর নামগুণগান, বস্তুবিচার–এই সব উপায় অবলম্বন করতে হয়।

    মাস্টার–কী অবস্থায় তাঁকে দর্শন হয়?

    শ্রীরামকৃষ্ণ–খুব ব্যাকুল হয়ে কাঁদলে তাঁকে দেখা যায়। মাগছাগলের জন্য লোকে একঘটি কাঁদে, টাকার জন্য লোকে কেঁদে ভাসিয়ে দেয়, কিন্তু ঈশ্বরের জন্য কে কাঁদছে? ডাকার মতো ডাকতে হয়।

    এই বালিয়া ঠাকুর গান ধরিলেনঃ

    ডাক দেখি মন ডাকার মতো কেমন শ্যামা থাকতে পারে।

    কেমন শ্যামা থাকতে পারে, কেমন কালী থাকতে পারে।।

    মন যদি একান্ত হও, জবা বিল্বদল লও,

    ভক্তি-চন্দন মিশাইয়ে (মার) পদে পুষ্পাঞ্জলি দাও।।

    ব্যাকুলতা হলেই অরুণ উদয় হল। তারপর সূর্য দেখা দিবেন। ব্যাকুলতার পরই ঈশ্বরদর্শন (Sri Ramakrishna Kathamrita)।

    তিন টান একত্র হলে তবে তিনি দেখা দেন—বিষয়ীর বিষয়ের উপর, মায়ের সন্তানের উপর আর সতীর পতির উপর টান। এই তিন টান যদি কারও একসঙ্গে হয়, সেই টানের জোরে ঈশ্বরকে লাভ করতে পারে।

    কথাটা এই ঈশ্বরকে (Sri Ramakrishna Kathamrita) ভালবাসতে হবে। মা যেমন ছেলেকে ভালবাসে, সতী যেমন পতিকে ভালবাসে, বিষয়ী যেমন বিষয় ভালবাসে। এই তিনজনের ভালবাসা, এই তিন টান একত্র করলে যতখানি ঈশ্বরকে দিতে পারলে তাঁর দর্শন লাভ হয়।

    ব্যাকুল হয়ে তাঁকে ডাকা চাই। বিড়ালের ছানা কেবল মিউ মিউ করে মাকে ডাকতে জানে। মা তাকে যেখানে রাখে, সেইখানেই থাকে – কখনো হেঁশেলে, কখন বা বিছানার উপর রেখে দেয়। তার কষ্ট হলে সে কেবল মিউ মিউ করে ডাকে, আর কিছু জানে না। মা যেখানেই থাকুক, এই মিউ মিউ করে ডাকে, আর কিছু জানে না। মা যেখনেই থাকুক, এই মিউ মিউ শব্দ শুনে এসে পড়ে।”

    আরও পড়ুনঃ”এইটি জেনো যে, নিরাকারও সত্য, তোমার যেটি বিশ্বাস, সেইটিই ধরে থাকবে”

    আরও পড়ুনঃ “শেষরাত্রে ঘুম ভেঙে যেত আর কাঁদতুম, বলতুম, মা, কেশবের অসুখ ভালো করে দাও”

    আরও পড়ুনঃ”ঠাকুর মাঝে মাঝে যেন অন্যমনস্ক হইতেছেন! পরে শুনিলেন, এরই নাম ভাব”

    তথ্যসূত্রঃ শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণকথামৃত, ৫ম পরিচ্ছেদ 

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Sri Ramakrishna Kathamrita 6: “ঈশ্বরে ভক্তিলাভ না করে যদি সংসার করতে যাও তাহলে আরও জড়িয়ে পড়বে”

    Sri Ramakrishna Kathamrita 6: “ঈশ্বরে ভক্তিলাভ না করে যদি সংসার করতে যাও তাহলে আরও জড়িয়ে পড়বে”

     

    সংসারর্ণবঘোরে যঃ কর্ণধারস্বরূপঃ।

    নমোহস্ত রামকৃষ্ণায় তস্মৈ শ্রীগুরবে নমঃ।।

     

    ভক্তির উপায়

    মাষ্টার (বিনীতভাবে)-ঈশ্বরে কি করে মন হয়?

    শ্রীরামকৃষ্ণ—ঈশ্বরের (Sri Ramakrishna Kathamrita) নামগুণগান সর্বদা করতে হয়। আর সৎসঙ্গ-ঈশ্বরের ভক্ত বা সাধু, এঁদের কাছে মাঝে মাঝে যেতে হয়। সংসারের ভিতর ও বিষয়কাজের ভিতর রাতদিন থাকলে ঈশ্বরে মনে হয় না। মাঝেমাঝে নির্জনে গিয়ে তাঁর চিন্তা করা বড় দরকার। প্রথম অবস্থায় মাঝে মাঝে নির্জন না হলে ঈশ্বরে মনে রাখা বড়ই কঠিন।

    যখন চারাগাছ থাকে, তখন তার চারিদিকে বেড়া দিতে হয়। বেড়া না দিলে ছাগল-গরু খেয়ে ফেলে।

    “ধ্যান করবে মনে, কোণে ও বনে। আর সর্বদা সদসৎ বিচার করবে। ঈশ্বরই (Sri Ramakrishna Kathamrita) সৎ-কিনা নিত্যবস্তু, আর সব অসৎ-কিনা অনিত্য। এই বিচার করতে করতে অনিত্য বস্তু মন থেকে ত্যাগ করবে।”

    মাস্টার (বিনীতভাবে)–সংসারে কিরকম করে থাকতে হবে?

    গৃহস্থ সন্ন্যাস উপায় নির্জনে সাধন

    শ্রীরামকৃষ্ণ –সব কাজ করবে কিন্তু মন ঈশ্বরেতে রাখবে। স্ত্রী, পুত্র, বাপ, মা—সকলে নিয়ে থাকবে ও সেবা করবে। যেন কত আপনার লোক। কিন্তু মনে জানবে যে তারা তোমার কেউ নয়।

    “বড় মানুষের বাড়িতে দাসী সব কাজ কচ্ছে, কিন্তু দেশে নিজের বাড়ির দিকে মন পড়ে আছে। আবার সে মনিবের ছেলেদের আপনার ছেলে মতো মানুষ করে। বলে ‘আমার রাম’ ‘আমার হরি’, কিন্তু মনে বেশ জানে এরা আমার কেউ নয়।

    “কচ্ছপ জলে চরে বেড়ায়, কিন্তু তার মন কোথায় পড়ে আছে জানো?–আড়ায় পড়ে আছে। যেখানে তার ডিমগুলি আছে। সংসারের সব কর্ম করবে, কিন্তু ঈশ্বরে মন ফেলে রাখবে।

    “ঈশ্বরে ভক্তিলাভ না করে যদি সংসার করতে যাও তাহলে আরও জড়িয়ে পড়বে। বিপদ, শোক, তাপ–এসবে অবৈধ হয়ে যাবে। আর যত বিষয়- চিন্তা করবে ততই আসক্তি বাড়বে।

    “তেল হাতে মেখে তবে কাঁঠাল ভাঙতে হয়! তা না হলে হাতে আঠা জড়িয়ে যায়। ঈশ্বরে ভক্তিরূপ তেল লাভ করে তবে সংসারের কাজে হাত দিতে হয়।

    “কিন্তু এই ভক্তিলাভ করতে হলে নির্জন হাওয়া চাই। মাখন তুলতে গেলে নির্জনে দই পাততে হয়। দইকে নাড়ানাড়ি করলে দই বসে না। তারপর নির্জনে বসে, সব কাজ ফেলে দই মন্থন করতে হয়। তবে মাখন তোলা যায়।

    “আবার দেখ, এই মনে নির্জনে ঈশ্বরচিন্তা (Sri Ramakrishna Kathamrita) করলে জ্ঞান বৈরাগ্য ভক্তিলাভ হয়। কিন্তু সংসারে ফেলে রাখালে ওই মন নীচ হয়ে যায়। সংসারে কেবল কামিনী-কাঞ্চন চিন্তা।

    আরও পড়ুনঃ “শেষরাত্রে ঘুম ভেঙে যেত আর কাঁদতুম, বলতুম, মা, কেশবের অসুখ ভালো করে দাও”

    আরও পড়ুনঃ “মাস্টার দেখিলেন, একঘর লোক নিস্তব্ধ হইয়া তাঁহার কথামৃত পান করিতেছেন”

    আরও পড়ুনঃ “এইটি জেনো যে, নিরাকারও সত্য, তোমার যেটি বিশ্বাস, সেইটিই ধরে থাকবে”

     

    তথ্যসূত্রঃ শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণকথামৃত, ৫ম পরিচ্ছেদ

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Makhan Singh: ঘরে-বাইরে বিশ্ব মাঝে স্বাধীনতার দাবি জানিয়েছিলেন পাঞ্জাবের মাখন সিং, চেনেন তাঁকে?

    Makhan Singh: ঘরে-বাইরে বিশ্ব মাঝে স্বাধীনতার দাবি জানিয়েছিলেন পাঞ্জাবের মাখন সিং, চেনেন তাঁকে?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: “চিত্ত যেথা ভয় শূন্য, উচ্চ যেথা শির” এই সংকল্পই ছিল তাঁর মন্ত্র। তিনি স্বাধীনতাকে নিজের দেশের মধ্যে আবদ্ধ রাখতে চানিনি। স্বাধীনতা মানে হল তাঁর কাছে স্বপ্ন, সমান অধিকারের দাবি। ঘরে-বাইরে বিশ্ব মাঝে স্বাধীনতার দাবি জানিয়েছিলেন পাঞ্জাবের মাখন সিং। কেনিয়ার স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগদানকারী এক বিরল ভারতীয় নেতা হলেন মাখন সিং। মাখন সিং, ঔপনিবেশিক ব্রিটিশদের উদাসীনতা স্বীকার করে, তার জন্মভূমি এবং তার দত্তক বাড়ি উভয় ক্ষেত্রেই অন্যায়ের বিরোধিতা করার জন্য আত্মনিয়োগ করেছিলেন। ভারত এবং কেনিয়াতে আরও ন্যায়সঙ্গত রাজনীতির ভিত্তি স্থাপনের জন্য সিংয়ের সংকল্প অনুপ্রেরণাদায়ক।

    মাখন সিং-এর জন্ম

    মাখন সিং ১৯১৩ সালের ডিসেম্বরে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবে বেশিরভাগ সময় তিনি অবিভক্ত পাঞ্জাবে কাটিয়েছিলেন। তার বয়স যখন ছয়, তার বাবা, কেনিয়ায় চলে যান। সেই সময় অনেক পাঞ্জাবি রেলওয়েতে কাজ করার জন্য কেনিয়া পাড়ি দিয়েছিলেন। মাখন সিংও ১৪ বছর বয়সে তাঁর মা এবং বোনের সঙ্গে কেনিয়াতে বাবার কাছে চলে যান। তার আগেই দেশে স্বাধীনতা আন্দোলনের ডাক তাঁর মনে দাগ কেটেছিল। মাখনের বাবা রেলওয়ে ছেড়ে দিয়ে একটি ছাপাখানায় যোগ দেন।  স্কুলে পড়ার সময় থেকেই বাবাকে প্রেসের কাজে সাহায্য করতে থাকেন মাখন। এই সময়েই তিনি ট্রেড ইউনিয়নের প্রতি আগ্রহী হন। এই সময়ে মুদ্রণ শিল্পে শ্রমিকদের নানা দাবি নিয়ে  শ্রমিক ধর্মঘট সংগঠিত করেছিলেন মাখন।

    শ্রমিকদের জন্য দাবি

    শ্রমিকদের কাছে একটি আবেগপ্রবণ ভাষণে মাখন সিং  ‘উহুরু সাসা’ দাবি করেছিলেন, যার কিসোয়াহিলি অর্থ ছিল ‘এখনই স্বাধীনতা’। এটি ছিল ব্রিটেনের কাছ থেকে কেনিয়ার সম্পূর্ণ স্বাধীনতার প্রথম আহ্বান। বাবার ছাপাখানায় কাজ করতে করতে  শ্রমিকদের শোষণ এবং ঔপনিবেশিক অবিচার সম্পর্কে জানতে পারেন মাখন। এখানেই তিনি ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির মিত্র, গদর [গদর নামেও লেখা] পার্টির সদস্যদের সাথে দেখা করেছিলেন। এই আন্দেলনে শ্রমিকদের স্বার্থে মাখন নিজের বাবার বিরুদ্ধেও দাঁড়ান। তিনি বলেছিলেন যে তাঁর ক্রিয়াকলাপ “পরিস্থিতিতে ন্যায়সঙ্গত”।

    বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই

    এক সময় পূর্ব আফ্রিকার উপনিবেশগুলিতে বসতি স্থাপনের জন্য ব্রিটিশরা ভারতীয়দের উৎসাহিত করত। এই ভারতীয়দের অধিকাংশই ছিল ব্যবসায়ী, কারিগর বা নিম্ন পেশাজীবী, যারা ঔপনিবেশিক শ্রেণিবিন্যাসে কালো ও সাদাদের মধ্যবর্তী অবস্থান দখল করত। তাঁরা আফ্রিকান এবং ইংরেজ উভয় থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে তাঁদের নিজস্ব বৃহৎ সম্প্রদায়ে বাস করত। তারা আদিবাসী জনগোষ্ঠীর উপর ব্রিটিশ শাসনের অপরিহার্য হাতিয়ার ছিল এবং ব্রিটিশদের তুলনায় আফ্রিকানদের সাথে তাদের বেশি যোগাযোগ ছিল। এইভাবে, তাঁরা সেই দেশে আফ্রিকানদের থেকে বেশি সুযোগ সুবিধা পেলেও, কৃষ্ণাঙ্গরা তাঁদের প্রতি বিরক্ত হত। মাখনের সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব ছিল রঙের বাধা ভেঙে ভারতীয় ও আফ্রিকান জনগণকে এক করে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকদের চ্যালেঞ্জ করা। ১৯৩৪ সালে লেবার ট্রেড ইউনিয়ন অফ কেনিয়ার সম্পাদক (LTUK) নির্বাচিত হন। এই সংগঠন সমস্ত বর্ণের সদস্যদের জন্য উন্মুক্ত ছিল। এদের উদ্দেশ্য ছিল নিপীড়িত সম্প্রদায়গুলিকে একত্রিত করা।

    ভারতের সঙ্গে যোগ

    কেনিয়ায় আন্দোলন সংগঠিত করার সঙ্গে সঙ্গে নিজের জন্মভূমি ভারতে ঘটে চলা নানা প্রতিবাদ সম্পর্কে অবগত ছিলেন মাখন। ১৯৩৯ সালে ভারতে আসেন তিনি। বম্বে এবং আমেদাবাদে ট্রেড ইউনিয়নিজমের কার্যকারিতা এবং শ্রমিক শ্রেণীর অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে আসেন মাখন। তিনি তৎকালীন বোম্বেতে শ্রমিক ধর্মঘটকারীদের জনসভায় ভাষণ দেন। আফ্রিকান প্রতিনিধি হিসাবে রামগড়ে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের অধিবেশনেও যোগ দিয়েছিলেন মাখন। তাঁর ঔপনিবেশিক বিরোধী সংবেদনশীলতা সমস্যায় ফেলতে পারে এই ভয়ে, ব্রিটিশরা তাঁকে গ্রেফতার করে। দুই বছর ধরে এক কারাগার থেকে অন্য কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয় মাখনকে। আড়াই বছরের জন্য গুজরানওয়ালায় তাঁর নিজের গ্রামে তাঁকে নজরবন্দি করে  রাখে ব্রিটিশরা। অবশেষে ১৯৪৫ সালের জানুয়ারি মাসে ব্রিটিশরা তাঁকে মুক্তি দেয়। এরপর তিনি একটি বিপ্লবী সাপ্তাহিক জং-ই-আজাদির সাব-এডিটর হিসেবে কাজ পান। এরপরে ১৯৪৭ সালে ফের তিনি কেনিয়ায় ফিরে যান।

    আরও পড়ুুন: তৃতীয় দফায় কী প্রচার করবেন, কৌশল বাতলে এনডিএ প্রার্থীদের চিঠি মোদির

    কেনিয়ার স্বাধীনতা

    কেনিয়ায় ফিরে মাখন ফের ঔপনিবেশিক বিরোধী আন্দোলনে যোগ দেন। তিনি কেনিয়া যুব সম্মেলনের আয়োজন করেছিলেন। পূর্ব আফ্রিকান ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের কাজে সক্রিয় হন মাখন। পূর্ব আফ্রিকান ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, আফ্রিকান বিপ্লবী ফ্রেড কুবাই এর সভাপতি ছিলেন তিনি। মাখন ভারতীয়দের আফ্রিকানদের সাথে একত্রে কাজ করার জন্য উৎসাহিত করেছিলেন। পাঞ্জাবি, গুজরাটিদের জন্য কেনিয়ায় স্কুল স্থাপন করেছিলেন। ১৯৫০ সালে ব্রিটিশ সরকার সিংকে শেষবারের মতো আটক করার পরেই মউ মউ বিদ্রোহ শুরু হয়। ১৯৬১ সালে ব্রিটিশরা ঔপনিবেশিক বিদ্রোহের প্রতিক্রিয়ায় জারি করা জরুরি অবস্থা তুলে নেওয়ার পর তিনি মুক্তি পান। এরপর মাখন স্বাধীন কেনিয়ার প্রথম প্রধান জোমো কেনিয়াত্তার জন্য প্রচার শুরু করেন। মাখন বিশ্বাস করতেন যে স্বাধীনতা এবং ন্যায়বিচারের সাধনা আপনার জন্মের দেশ দ্বারা সীমাবদ্ধ নয়। অবশেষে তিনি রাজনৈতিক লাইমলাইট থেকে দূরে সরে যান এবং ১৯৭৩ সালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে নাইরোবিতে তাঁর মৃত্যু হয়। কিন্তু তাঁর জীবন ও আন্দোলন সারা পৃথিবীর মানচিত্রে দাগ কেটে যায়।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

     

  • Thumb Shapes: হাতের আঙুলের গঠন বলে দেবে আপনি কেমন! জানেন কীভাবে?

    Thumb Shapes: হাতের আঙুলের গঠন বলে দেবে আপনি কেমন! জানেন কীভাবে?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক : প্রাচীন ভারতে  সমুদ্রশাস্ত্রের (Thumb Shapes) রচয়িতা ছিলেন সমুদ্র ঋষি। সমুদ্রশাস্ত্র অনেক পুরনো এক শাস্ত্র। এই শাস্ত্র অনুসারে একজন ব্যক্তির শরীরের অঙ্গগুলির গঠন অনেক গুরুত্বপূর্ণ গোপন তথ্য প্রকাশ করে। এই শাস্ত্র অনুসারে আঙুলের গঠন দেখে বলে দেওয়া যায় ব্যক্তিটি কেমন।

    আঙুল বলবে নানা তথ্য

    বুড়ো আঙুল লম্বা : যাদের বুড়ো আঙুল লম্বা হয় তারা বেশি মননশীল এবং আদর্শবাদী হন। এই ধরনের আঙ্গুলের লোকেরা সৃজনশীল এবং কল্পনাপ্রবণ কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকনে। এই ধরনের লোকেরা তাদের সমস্ত কাজ খুব নিখুঁতভাবে সম্পন্ন করেন। এছাড়া শ্রম দানের চাইতে আরও স্মার্ট উপায়ে কাজ করতে পছন্দ করেন লম্বা আঙুলধারী লোকেরা।

    বুড়ো আঙুল ছোট: যাদের হাতের বুড়ো আঙুল ছোট, তারা খুব অন্যের সেবা প্রিয় হন। ছোট আঙুলের অধিকারীরা কঠোর পরিশ্রমের উপর নির্ভর করেন এবং খুব সাবধানে যে কোনও সিদ্ধান্ত নেন। শুধু তাই নয়, এই লোকেরা খুব ভালো করে জানেন কীভাবে অন্যের কাছ থেকে কাজ আদায় করতে হয়। তবে আচার-ব্যবহারের দিক থেকে এই মানুষগুলো একটু দুর্বল প্রকৃতির হন। এরা একটু বিলাস ব্যসনে থাকতে ভালোবাসেন। নিজের শখ পূরণের জন্য প্রচুর অর্থ ব্যয় করতেও এদের বাধে না।

    বুড়ো আঙুল মোটা: যে সকল ব্যক্তির বুড়ো আঙুল মোটা হয় তারা অনেক বেশি কৃপণ হন। এই ধরনের ব্যক্তিরা অর্থ সঞ্চয় করতে পছন্দ করেন। এরা মুখের উপর কথা বলতে ভালোবাসেন। রাজনীতি এদের পছন্দের বিষয়।

    আরও পড়ুন: সোমবার রাজ্যের উষ্ণতম ছিল কলাইকুন্ডা, কলকাতার তাপমাত্রা কত?

     বুড়ো আঙুলের গাঁট লম্বা: যাদের বুড়ো আঙুলের উপরের গাঁটের পরের অংশ লম্বা হয় থাকে তারা খুব বুদ্ধিমান হয়। এই ধরনের মানুষদের পড়া-লেখার প্রতি অনেক আগ্রহ থাকে। এই লোকের যে কোনও সমস্যার একটি ভাল সমাধান খুঁজে বের করার ক্ষমতা থাকে। বিশ্লেষণ করার ক্ষমতাও এদের বেশি থাকে।

    বাঁকা বুড়ো আঙুল: বাঁকা বুড়ো আঙুলযুক্ত ব্যক্তিরা খোলা মনের এবং অপ্রচলিত সমাধানগুলি অন্বেষণ করতে ইচ্ছুক হন। এই আকারটি প্রায়শই সৃজনশীলতা, নমনীয়তা এবং অভিযোজনযোগ্যতার সাথে যুক্ত থাকে। 

    প্রশস্ত বুড়ো আঙুল: একটি প্রশস্ত বুড়ো আঙুল যুক্ত ব্যক্তিদের দৃঢ়চেতা, উচ্চাকাঙ্ক্ষী এবং অবিচল বলে মনে করা হয়। তারা নেতৃত্বের ভূমিকায় আকৃষ্ট হতে পারে এবং তাদের সিদ্ধান্তে আস্থা প্রদর্শন করা যেতে পারে।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Sri Ramakrishna Kathamrita 4: “এইটি জেনো যে, নিরাকারও সত্য, তোমার যেটি বিশ্বাস, সেইটিই ধরে থাকবে”

    Sri Ramakrishna Kathamrita 4: “এইটি জেনো যে, নিরাকারও সত্য, তোমার যেটি বিশ্বাস, সেইটিই ধরে থাকবে”

     

    অখণ্ডমণ্ডলাকারং ব্যাপ্তং যেন চরাচরম্

         তৎপদং দর্শিত যেন তস্মৈ শ্রীগুরুবে নমঃ।।

     

      মাস্টারকে তিরস্কার ও তাঁহার অহঙ্কার চূর্ণকরণ

     

    শ্রীরামকৃষ্ণ (মাস্টারের প্রতি)-তোমার কি বিবাহ হয়েছে?

    মাস্টার–আজ্ঞে হ্যাঁ।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (শিহরিয়া)-ওরে রামলাল! যাঃ, বিয়ে করে ফেলেছে!

    মাস্টার ঘোরতর অপরাধী ন্যায় অবাক হইয়া অবনতমস্তকে চুপ করিয়া বসিয়া রহিলেন। ভাবিতে লাগিলেন, বিয়ে করা কি এত দোষ!

    ঠাকুর আবার জিজ্ঞাসা করিলেন, তোমার কি ছেলে হয়েছে?

    মাস্টারের বুক ঢিপঢিপ করিতেছে। ভয়ে ভয়ে বলিলেন, আজ্ঞে ছেলে হয়েছে। ঠাকুর আবার আক্ষেপ করিয়া বলিতেছেন, যাঃ ছেলে হয়ে গেছে! তিরস্কৃত হইয়া তিনি স্তব্ধ হইয়া রহিলেন। তাঁহার অহঙ্কারচূর্ণ হইতে লাগিল। কিয়ৎক্ষণ পরে ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ (Sri Ramakrishna Kathamrita) আবার কৃপাদৃষ্টি করিয়া সস্নেহে বলিতে লাগিলেন, ‘দেখ, তোমার লক্ষণ ভাল ছিল, আমি কপাল, চোখ -এসব বুঝতে পারি। আচ্ছা, তোমার পরিবার কেমন? বিদ্যাশক্তি না অবিদ্যাশক্তি?”

    জ্ঞান কাহাকে বলে? প্রতিমাপূজা

    মাস্টার-আজ্ঞা ভাল, কিন্তু অজ্ঞান।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (বিরক্ত হইয়া)–আর তুমি জ্ঞানী?

    তিনি জ্ঞান কাহাকে বলে, অজ্ঞান কাহাকে বলে, এখনও জানেন না। এখনও পর্যন্ত জানিতেন যে, লেখাপড়া শিখিলে ও বই পড়িতে পারিলে জ্ঞান হয়। এই ভ্রম পরে দূর হইয়াছিল। তখন শুনিলেন যে, ঈশ্বরকে জানার নাম জ্ঞান, ঈশ্বরকে না জানার নামই অজ্ঞান। ঠাকুর বলিলেন, তুমি কি জ্ঞানী!” মাস্টারের অহঙ্কারে আবার বিশেষ আঘাত লাগিল।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Sri Ramakrishna Kathamrita)-আচ্ছা, তোমার ‘সাকারে’ বিশ্বাস, না ‘নিরাকার’?

    মাস্টার (অবাক হইয়া স্বগত)–সাকারে বিশ্বাস থাকলে কি নিরাকারে বিশ্বাস হয়? ঈশ্বর নিরাকার, এ-বিশ্বাস থাকিলে ঈশ্বর সাকার এ-বিশ্বাস কি হইতে পারে? বিরুদ্ধে অবস্থা দুটাই কি সত্য হইতে পারে? সাদা জিনিস-দুধ, কি আবার কালো হতে পরে?

    মাস্টার–আজ্ঞা, নিরাকার–আমার এইটি ভাল লাগে।

    শ্রীরামকৃষ্ণ-তা বেশ। একটাতে বিশ্বাস থাকলেই হল। নিরাকার বিশ্বাস, ততো ভালোই। তবে এ-বুদ্ধি কারো না যে, এইটি কেবল সত্য আর সব মিথ্যা। এইটি জেনো যে, নিরাকারও সত্য। তোমার যেটি বিশ্বাস, সেইটিই ধরে থাকবে।

    মাস্টার দুইই সত্য এই কথা বারবার শুনিয়া অবাক্‌ হইয়া রহিলেন। এ-কথা তো তাঁহার পুঁথিগত বিদ্যার মধ্যে নেই।

    তাঁহার অহঙ্কার তৃতীয়বার চূর্ণ হইতে লাগিল। কিন্তু এখনও সম্পূর্ণ হয়ে নাই। তাই আবার একটু তর্ক করিতে অগ্রসর হইলেন।

    মাস্টার–আজ্ঞা, তিনি সাকার, এ-বিশ্বাস যেন হল! কিন্তু মাটির প্রতিমা তিনি তো নন—

    শ্রীরামকৃষ্ণ—মাটি কেন গো! চিন্ময়ী।

    মাস্টার ‘চিন্ময়ী প্রতিমা’ বুঝিতে পারিলেন না। বলিলেন, আচ্ছা যারা মাটিতে প্রতিমা পূজা করে তাদের তো বুঝিয়ে দেওয়া উচিত যে, মাটির প্রতিমা ঈশ্বর নয়, আর প্রতিমার সম্মুখে ঈশ্বরকে উদ্দেশ্য করে পূজা করা উচিত।    

    আরও পড়ুনঃ “শেষরাত্রে ঘুম ভেঙে যেত আর কাঁদতুম, বলতুম, মা, কেশবের অসুখ ভালো করে দাও”

    আরও পড়ুনঃ “ঠাকুর মাঝে মাঝে যেন অন্যমনস্ক হইতেছেন! পরে শুনিলেন, এরই নাম ভাব”

    আরও পড়ুনঃ “মাস্টার দেখিলেন, একঘর লোক নিস্তব্ধ হইয়া তাঁহার কথামৃত পান করিতেছেন”

     

    তথ্যসূত্রঃ শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণকথামৃত, ৪র্থ পরিচ্ছেদ

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Akshaya Tritiya 2024: অক্ষয় তৃতীয়ায় কেনা ধনসম্পদের ক্ষয় হয় না, জানেন এই বিশেষ দিনের গুরুত্ব?

    Akshaya Tritiya 2024: অক্ষয় তৃতীয়ায় কেনা ধনসম্পদের ক্ষয় হয় না, জানেন এই বিশেষ দিনের গুরুত্ব?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বাঙালির বারো মাসে ১৩ পার্বণ। অক্ষয় তৃতীয়া (Akshaya Tritiya 2024) তার মধ্যে একটি। পাঁজি মতে, পয়লা বৈশাখের পর বাংলা বছরের প্রথম শুভদিন অক্ষয় তৃতীয়া। সনাতন ধর্ম মতে, এদিন ব্রহ্মার পুত্র অক্ষয় কুমারের জন্ম হয়। এদিন ধরাধামে আর্বিভূত হয়েছিলেন ভগবান পরশুরাম। পরশুরামকে ২৪ দেবতার মধ্যে ষষ্ঠ অবতার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। জ্যোতিষশাস্ত্র ও হিন্দুধর্মে অক্ষয় তৃতীয়ার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। যেকোনও শুভ কাজ যদি এই দিনে করা হয় তাহলে সে কাজে সাফল্য আসে। এতে দেবী লক্ষ্মীর বিশেষ কৃপা পাওয়া যায় বলে মনে করা হয়। বৈশাখ মাসের শুক্ল পক্ষের তৃতীয়ায় এই দিনটিতে যে ধনসম্পদ ক্রয় করা হয়, তার ক্ষয় হয় না।

    চলতি বছরে কবে অক্ষয় তৃতীয়া

    চলতি বছর অক্ষয় তৃতীয়া পড়েছে শুক্রবার, ১০ মে (Akshaya Tritiya 2024)। জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে এই দিনে সূর্য এবং চন্দ্র তাদের সর্বোচ্চ রাশিতে থাকে। শাস্ত্রে অক্ষয় তৃতীয়ার তিথিকে স্বয়ংসিদ্ধ মুহূর্ত বলা হয়। কথায় বলে এর মানে বৈশাখের মতো কোনও পুণ্য-মাস নেই, সত্যযুগের মতো কোনও যুগ নেই, বেদের মতো কোনও শাস্ত্র নেই এবং গঙ্গার মতো কোনও তীর্থযাত্রা নেই। একইভাবে অক্ষয় তৃতীয়ার মতো কোনও তিথি নেই। কথিত আছে, অক্ষয় তৃতীয়ায় রোহিণী নক্ষত্র থাকলে এই দিনের গুরুত্ব হাজার গুণ বেড়ে যায় এবং এবার ১০ মে অক্ষয় তৃতীয়ার দিন রোহিণী নক্ষত্র থাকবে সকাল ১০টা ৪৭ মিনিট পর্যন্ত। বছরে মাত্র একবার, অক্ষয় তৃতীয়ায়, বৃন্দাবনে বাঁকেবিহারীর পা দেখা যায় বলে বিশ্বাস। 

    অক্ষয় তৃতীয়ার গুরুত্ব

    বিশ্বাস করা হয় ,অক্ষয় তৃতীয়ার (Akshaya Tritiya 2024) দিনে শুরু করা কাজ শুভ ফল দেয়। এই কারণেই এই তিথিতে মানুষ নতুন ব্যবসা শুরু করেন। হালখাতার পুজো হয়। এই দিনে নতুন কিছু কেনাও শুভ। অক্ষয় তৃতীয়ার দিনে আপনি যে কাজই করুন না কেন, তার ফল অবশ্যই পাবেন। তাই এই দিনে কোনও খারাপ বা অন্যায় কাজ করবেন না। অক্ষয় তৃতীয়া  থেকে সত্যযুগ, দ্বাপরযুগ ও ত্রেতাযুগের সূচনা হয়। কেনাকাটার পাশাপাশি অক্ষয় তৃতীয়া দান ধ্যানের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।  অক্ষয় তৃতীয়ায় যব দান করা স্বর্ণদানের সমতুল্য বলে বিবেচিত হয়। সেই সঙ্গে জমি, সোনা, পাখা, ছাতা, জল, সত্তু, কাপড় ইত্যাদিও এই দিনে দান করা যেতে পারে।

    আরও পড়ুন: নিয়মিত পুজো করেন? জেনে নিন ঠাকুরের সামনে কতক্ষণ প্রসাদ রাখা যায়

    এদিন কী কী নিয়ম মানবেন

    ব্যবসা থেকে কেরিয়ারে উন্নতির জন্য আপনি অক্ষয় তৃতীয়ার (Akshaya Tritiya 2024) দিন সোনার গয়না কিনুন। সোনার গয়না বাড়ির উত্তর দিকে রাখুন। এতে আপনার ঘরে মা লক্ষ্মী বিরাজ করবে। দেবীর আশীর্বাদে আপনি জীবনে এগিয়ে যেতে পারবেন। আয়ের নতুন পথ খুলবে এবং জীবনে উন্নতি হবে আপনার। আর্থিক সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে অক্ষয় তৃতীয়ায় দেবী লক্ষ্মীকে জাফরান ও হলুদ নিবেদন করুন। এতে আপনারা আর্থিক সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। শুধু তাই নয়, নতুন সম্পত্তি করতে পারেন এবং নয়া চাকরির সুযোগ পাবেন আপনি। যদি আপনি ভাগ্যের পূর্ণ সমর্থন পেতে চান এবং সেই সঙ্গে দেবী লক্ষ্মীর কৃপা পেতে চান তাহলে অক্ষয় তৃতীয়ার দিন আপনি বাড়ির প্রধান দরজায় কাঁচা আম এবং অশোক পাতা একই সঙ্গে বেঁধে রাখুন। এতে আপনারা ভাগ্যের পূর্ণ সমর্থন পাবেন আপনি। পরিবারের উপর ইতিবাচক শক্তি বজায় থাকবে। দূর হবে নেতিবাচক শক্তি।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Sri Ramakrishna Kathamrita: “শেষরাত্রে ঘুম ভেঙে যেত আর কাঁদতুম, বলতুম, মা, কেশবের অসুখ ভালো করে দাও”

    Sri Ramakrishna Kathamrita: “শেষরাত্রে ঘুম ভেঙে যেত আর কাঁদতুম, বলতুম, মা, কেশবের অসুখ ভালো করে দাও”

     

    অখণ্ডমণ্ডলাকারং ব্যাপ্তং যেন চরাচরম্

          তৎপদং দর্শিতং যেন তস্মৈ শ্রীগুরুবে নমঃ।।

    গুরু শিষ্য-সংবাদ

    দ্বিতীয় দর্শন সকাল বেলা, আটটার সময়। ঠাকুর তখন কামাতে যাচ্ছেন। এখনও একটু শীত আছে। তাই তাঁহার গায়ে মেলেস্কিনের র‍্যাপার। র‍্যাপারের কিনারা শালু দিয়ে মোড়া। মাস্টারকে দেখিয়ে বলিলেন, তুমি এসেছ? আচ্ছা, এখানে বস।

    এ-কথা দক্ষিণ-পূর্ব বারান্দায় হইতেছিল। নাপিত উপস্থিত। সেই বারান্দায় ঠাকুর কামাইতে বসিলেন ও মাঝে মাঝে মাস্টারের সহিত কথা কহিতে লাগিলেন। গায়ে ওইরূপ র‍্যাপার, পায়ে চটি জুতা, সহাস্যবদন। কথা কহিবার সময় কেবল একটু তোতলা।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (মাস্টারের প্রতি)–হ্যাঁগা, তোমার বাড়ি কোথায়?

    মাস্টার–আজ্ঞা, কলিকাতায়।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Sri Ramakrishna Kathamrita)–এখানে কোথায় এসেছে?

    মাস্টার-এখানে বরাহনগরে বড় দিদির বাড়ি আসিয়াছি। ঈশান কবিরাজের বাটী।

    শ্রীরামকৃষ্ণ–ওহ্‌ ঈশানের বাড়ি!

    শ্রীকেশবচন্দ্র সেন ও মার কাছে ঠাকুরের ক্রন্দন

    শ্রীরামকৃষ্ণ–হ্যাঁগা, কেশব আছে? বড় অসুখ হয়েছিল।

    মাস্টার–আমিও শুনেছিলাম বটে, এখন বোধ হয় ভাল আছেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Sri Ramakrishna Kathamrita)–আমি আবার কেশবের জন্য মার কাছে ডাব-চিনি মেনেছিলুম। শেষরাত্রে ঘুম ভেঙে যেত আর মার কাছে কাঁদতুম, বলতুম, মা, কেশবের অসুখ ভালো করে দাও; কেশব না থাকলে আমি কলকাতায় গেলে কার সঙ্গে কথা কব? তাই-চিনি মেনেছিলুম।

    হ্যাঁগা, কুক্‌ সাহেব নাকি একজন এসেছে? সে নাকি লেকচার দিচ্ছে? আমাকে কেশব জাহাজে তুলে নিয়ে গিছিল। কুক্‌ সাহেবও ছিল।”

    মাস্টার–আজ্ঞা, এই রকম শুনেছিলুম বটে, কিন্তু আমি তাঁর লেকচার শুনি নাই। আমি তাঁর বিষয় বিশেষ জানি না।

    আরও পড়ুনঃ “ঠাকুর মাঝে মাঝে যেন অন্যমনস্ক হইতেছেন! পরে শুনিলেন, এরই নাম ভাব”

    গৃহস্থ ও পিতার কর্তব্য

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Sri Ramakrishna Kathamrita)-প্রতাপের ভাই এসেছিল। এখানে কয়দিন ছিল। কাজকর্ম নাই। বলে, আমি এখানে থাকব। শুনলাম, মাগছেলে সব শ্বশুরবাড়িতে রেখেছে। অনেকগুলি ছেলেপিলে। আমি বকলুম, দেখ দেখি ছেলেপিলে হয়েছে; তাঁদের কি আবার ও-পাড়ার লোক এসে খাওয়াবে-দাওয়াবে, মানুষ করবে? লজ্জা করে না যে, মাগছেলেদের আর একজন খাওয়াচ্ছে, আর তাদের শ্বশুরবাড়ি ফেলে রেখেছে। অনেক বকলুম, আর কর্মকাজ খুঁজে নিতে বললুম। তবে এখান থেকে যেতে চায়।    

     

    তথ্যসূত্রঃ ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের সংক্ষিপ্ত চরিতামৃত, ৩য় পরিচ্ছেদ, দ্বিতীয় দর্শন

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Sri Ramakrishna Kathamrita: “ঠাকুর মাঝে মাঝে যেন অন্যমনস্ক হইতেছেন! পরে শুনিলেন, এরই নাম ভাব”

    Sri Ramakrishna Kathamrita: “ঠাকুর মাঝে মাঝে যেন অন্যমনস্ক হইতেছেন! পরে শুনিলেন, এরই নাম ভাব”

     

    এটি রাসমণির দেবালয়

    সিধুর সঙ্গে ঘরের বাহিরে আসিতে না আসিতে আরতির মধুর শব্দ হইতে লাগিল। এককালে কাঁসর, ঘণ্টা, খোল, করতালি বাজিয়ে উঠল। বাগানের দক্ষিণসীমান্ত হইতে নহবতের মধুর শব্দ আসিতে লাগিল। সেই শব্দ ভাগীরথীবক্ষে যেন ভ্রমণ করিতে করিতে অতিদূরে গিয়া কোথায় মিশিয়া যাইতে লাগিল। মন্দ মন্দ কুসুমগন্ধবাহী বসন্তানিল! সবে জ্যোৎস্না উঠিতেছে। ঠাকুরদের আরতির যেন চতুর্দিকে আয়োজন হইতেছে! মাস্টার দ্বাদশ শিবমন্দিরে, শ্রীশ্রী রাধাকান্তের মন্দিরে ও শ্রীশ্রীভবতারিণীর মন্দিরে আরতি দর্শন করিয়া পরম প্রীতিলাভ করিলেন। সিধু বলিলেন, “এটি রাসমণির দেবালয়। এখানে নিত্যসেবা। অনেক অতিথি, কাঙাল আসে।”

    কথা কহিতে কহিতে ভবতারিণীর মন্দির হইতে বৃহৎ পাকা উঠানের মধ্য দিয়া পাদচারণ করিতে করিতে দুইজনে আবার ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের ঘরের সম্মুখে আসিয়া পড়িলেন। এবার দেখিলেন, ঘরের দ্বার দেওয়া (Sri Ramakrishna Kathamrita)। 

    এইমাত্র ধুনা দেওয়া হইয়াছে। মাস্টার ইংরেজী পড়িয়াছেন, ঘরে হঠাৎ প্রবেশ করিতে পারিলেন না। দ্বারদেশে বৃন্দে (ঝি) দাঁড়াইয়াছিল। জিজ্ঞাসা করিলেন, “হ্যাঁ গা, সাধুটি কি এখন এর ভিতর আছেন?”

    বৃন্দে– হ্যাঁ এই ঘরের ভিতর আছেন।

    মাস্টার– ইনি এখানে কত দিন আছেন –

    মাস্টার—আচ্চা, ইনি এখানে কতদিন আছেন?

    বৃন্দে—তা অনেকদিন আছেন –

    মাস্টার—আচ্ছা, ইনি কি খুব বই-টই পড়েন?

    বৃন্দে– আর বাবা বই-টই পড়েন?

    বৃন্দে—আর বাবা বই-টই! সব ওঁর মুখে!

    মাস্টার সবে পড়াশুনা করে এসেছেন। ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ বই পড়েন না শুনে আর অবাক্‌ হলেন।

    মাস্টার—সবে পড়াশুনা করে এসেছেন। ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ বই পড়েন না শুনে আরও অবাক্‌ হলেন।

    মাস্টার—আচ্ছা, ইনি বুঝি এখন সন্ধ্যা করবেন?—আমরা কি এ-ঘরের ভিতর যেতে পারি?—তুমি একবার খবর কিবে?

    বৃন্দে—তোমার যাও না বাবা। গিয়ে ঘরে বস।

    তখন তাঁহার ঘরে প্রবেশ করিয়া দেখেন, ঘরে আর অন্য কেহ নাই। ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ঘরে একাকী তক্তপোশের উপর বসিয়া আছেন। ঘরে ধুনা দেওয়া হইয়াছে ও সমস্ত দরজা বন্ধ। মাস্টার প্রবেশ করিয়াই বদ্ধাঞ্জলি হইয়া প্রণাম করিলেন। ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ বসিতে অনুজ্ঞা করিলেন তিনি ও সিধু মেঝেতে বসিলেন। ঠাকুর জিজ্ঞাসা করিলেন, “কোথায় থাক, কি কর, বরাহনগরে কি করতে এসেছ” ইত্যাদি। মাস্টার সমস্ত পরিচয় দিলেন। কিন্তু দেখিতে লাগিলেন যে, ঠাকুর মাঝে মাঝে যেন অন্যমনস্ক হইতেছেন (Sri Ramakrishna Kathamrita)। পরে শুনিলেন, এরই নাম ভাব। যেমন কেহ ছিপ হাতে করিয়া মাছ ধরিয়া মাছ ধরিতে বসিয়াছে। মাছ আসিয়া টোপ খাইতে থাকিলে ফাতনা যখন নড়ে, সে ব্যক্তি যেমন শশব্যস্ত হইয়া ছিপ হাতে করিয়া ফাতনার দিকে একদৃষ্টে একমনে চাহিয়া থাকে, কাহারও সহিত কথা কয় না; এ- ঠিক সেইরূপ ভাব। পরে শুনিলেন ও দেখিলেন, ঠাকুর সন্ধ্যারপর এই রূপ ভাবান্তর হয়, কখন কখন তিনি একেবারে বাহ্যশূন্য হন!

    মাস্টার – আপনি এখন সন্ধ্যা করবেন, তবে এখন আমরা আসি।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (ভাবস্থ)– না – সন্ধ্যা — তা এমন কিছু নয়।

    আর কিছু কথাবার্তার পর মাস্টার প্রণাম করিয়া বিদয় গ্রহণ করিলেন। ঠাকুর বলিলেন, “আবার এস”।

    মাস্টার ফিরিবার সময় ভাবিতে লাগিলেন, “এ সৌম্য কে? যাঁহার কাছে ফিরিয়া যাইতে ইচ্ছা করিতেছে। বই না পড়িলে কি মানুষ মহৎ হয়?—কি আশ্চর্য, আবার আসিতে ইচ্ছা হইতেছে। ইনি বলিয়াছেন, “আবার এস! কাল কি পরশু সকালে আসিব (Sri Ramakrishna Kathamrita)।”  

     

    তথ্যসূত্রঃ শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণকথামৃত, ২য় পরিচ্ছেদ, প্রথম দর্শন

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Sri Ramakrishna Kathamrita: “মাস্টার দেখিলেন, একঘর লোক নিস্তব্ধ হইয়া তাঁহার কথামৃত পান করিতেছেন”

    Sri Ramakrishna Kathamrita: “মাস্টার দেখিলেন, একঘর লোক নিস্তব্ধ হইয়া তাঁহার কথামৃত পান করিতেছেন”

    তব কথামৃতং তপ্তজীবনং, কবিভিরীড়িতং কল্মষা পহম্‌।

    শ্রবণমঙ্গলং শ্রীমদাততং, ভুবি গৃণান্তি যে ভূরিদা জনাঃ।।

    গঙ্গাতীরে দক্ষিণেশ্বরে কালীবাড়ি। মা-কালীর মন্দির। বসন্তকাল, ইংরেজী ১৮৮২ খ্রীস্টাব্দের মার্চ মাস। ঠাকুর জন্মোৎসবের কয়েক দিন পরে। শ্রীযুক্ত কেশব সেন ও শ্রীযুক্ত জোসেফ্‌ কুক সঙ্গে ২৩শে ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার (১২ই ফাল্গুন, ১২৮৮, শুক্লাষষ্ঠী) ঠাকুরের স্টীমারের বেড়াইয়াছিলেন—তাহারই কয়েকদিন পরে। সন্ধ্যা হয় হয়। ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের ঘরে মাস্টার আসিয়া উপস্থিত। এই প্রথম দর্শন। দেখিলেন একঘর লোক নিস্তব্ধ হইয়া তাঁহার কথামৃত (Sri Ramakrishna Kathamrita) পান করিতেছেন। ঠাকুর তক্তপোশে বসিয়া পুর্বাস্য হইয়া সহাস্যবদনে হরি কথা কহিতেছেন। ভক্তেরা মেঝেয় বসিয়া আছেন।

    মাস্টার দাঁড়াইয়া অবাক্‌ হইয়া দেখিতেছেন। তাঁহার বোধ হইল যেন সাক্ষাৎ শুকদেব ভগবৎ-কথা কহিতেছেন, আর সর্বতীর্থের সমাগম হইয়াছে। অথবা যেন শ্রীচৈতন্য পুরীক্ষেত্রে রামানন্দ স্বরূপাদি ভক্তসঙ্গে বসিয়া আছেন ও ভগবানের নামগুণকীর্তন করিতেছেন। ঠাকুর (Sri Ramakrishna Kathamrita) বলিতেছেন, “যখন একবার হরি বা একবার রামনাম করলে রোমাঞ্চ হয়, অশ্রুপাত হয়, তখন নিশ্চয়ই জেনো যে সন্ধ্যাদি কর্ম—আর করতে হবে না। তখন কর্মত্যাগের অধিকার হয়েছে—কর্ম আপনা আপানি ত্যাগ হয়ে যাচ্ছে। তখন কেবল রামনাম, কি হরিনাম, কি শুদ্ধ ওঁকার জপলেই হল।” আবার বলিলেন, “সন্ধ্যা গায়ত্রীতে লয় হয়। গায়েত্রী আবার ওঁকারে লয় হয়।”

    মাস্টার সিধুর সঙ্গে বরাহনগরের এ-বাগান ও-বাগান বেড়াইতে বেড়াইতে এখানে আসিয়া পড়িয়াছেন। আজ রবিবার অবসর আছে, তাই বেড়াইতে আসিয়াছেন; শ্রীযুক্ত প্রসন্ন বাঁড়ুজ্যের বাগানে কিয়ৎক্ষণ পূর্বে বেড়াইতেছিলেন। তখন সাধু বলিয়াছিলেন, “গঙ্গার ধারে একটি চমৎকার বাগান আছে, সে-বাগানটি কি দেখতে যাবেন? সেখানে একজন পরমহংস (Sri Ramakrishna Kathamrita) আছেন।”

     

    বাগানে সদর ফটক দিয়া ঢুকিয়াই মাস্টার ও সিধু বরাবর ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের ঘরে আসিলেন। মাষ্টার অবাক্‌ হইয়া দেখিতে দেখিতে ভাবিতেছেন, আহা কি সুন্দর স্থান! কি সুন্দর মানুষ! কি সুন্দর কথা! এখান থেকে নড়তে ইচ্ছা করছে না।” কিয়ৎক্ষণ পরে মনে মনে বলিতে লাগিলেন, “একবার দেখি কোথায় এসেছি। তারপর এখানে বসব।” (Sri Ramakrishna Kathamrita)

     

    তথ্যসূত্রঃ শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণকথামৃত, ২য় পরিচ্ছেদ, প্রথম দর্শন

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

LinkedIn
Share