Category: পরম্পরা

Get updated History and Heritage and Culture and Religion related news from the Madhyom news portal madhyom.com, West Bengal leading news portal Madhyom.com

  • Jagadhatri Puja 2023: জগদ্ধাত্রী পুজোর প্রচলন বাংলায় কীভাবে? জানুন ইতিহাস

    Jagadhatri Puja 2023: জগদ্ধাত্রী পুজোর প্রচলন বাংলায় কীভাবে? জানুন ইতিহাস

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: কালীপুজো, ভাইফোঁটার পর এবার জগদ্ধাত্রী পুজো। জগদ্ধাত্রী পুজোকে (Jagadhatri Puja 2023) ঘিরে উৎসবমুখর বাঙালির নজর এবং গন্তব্য থাকে দুটি জায়গায়–একটি কৃষ্ণনগর এবং অপরটি চন্দননগর। রাজনৈতিক দলগুলির সমাবেশ ‘ব্রিগেড চলো’, ‘কলকাতা চলো’ ইত্যাদি নামে পরিচিত। জগদ্ধাত্রী পুজোর দিন কোনও রাজনৈতিক দল ডাক না দিলেও ‘কৃষ্ণনগর চলো’ এবং ‘চন্দননগর চলো’ ডাকে সাড়া দিয়ে হাজির হয় রাজ্যের বড় অংশের মানুষ। সুসজ্জিত মণ্ডপ, দুর্দান্ত আলোকসজ্জা, মাতা জগদ্ধাত্রীর প্রতিমা দেখতে লক্ষ মানুষের সমাগম হয় এই দুই শহরে। জমজমাট জগদ্ধাত্রী পুজোর (Jagadhatri Puja 2023) জন্য ভারতীয় রেল বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থাও করে। রাত বাড়লে মানুষের ঢল নামতে দেখা যায়। কিন্তু জানেন কেন এই দুই শহরের জগদ্ধাত্রী পুজো এত জনপ্রিয়? এর নেপথ্যে ইতিহাস কী? কারা শুরু করেছিল এই পুজো?

    জগদ্ধাত্রী পুজোর প্রচলন কীভাবে হল?

    উত্তর জানতে আমাদের যেতে হবে নবাব আলিবর্দী খাঁ-এর আমলে। রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের কাছে ১২ লক্ষ টাকা নজরানা দাবি করেন নবাব‌। কৃষ্ণচন্দ্র রায় দিতে অপারগ হলে, তাঁকে বন্দি করে নবাবের বাহিনী। মুর্শিদাবাদ অথবা বিহারের মুঙ্গেরে রাজাকে রাখা হয় বলে জানা যায়। মুক্তির পর নদীপথে নিজের রাজ্যে ফিরছিলেন রাজা। এমন সময় বিজয়া দশমীর প্রতিমা নিরঞ্জনের বাজনা শুনে তাঁর অন্তরে আকুলতা তৈরি হয়। দুর্গাপুজোয় অংশ না নিতে পারার আকুলতা। প্রাসাদে ফিরে রাজা মনের দুঃখে ঘুমোতে যান। কথিত আছে, ওই রাতে মাতা দুর্গা রাজাকে স্বপ্ন দেন, শুক্লা নবমী তিথিতে জগদ্ধাত্রী (Jagadhatri Puja 2023) রূপে তাঁকে পুজো করতে হবে। তখন থেকেই নাকি কৃষ্ণনগরে জগদ্ধাত্রী পুজোর সূচনা।

    অন্য একটি মতে, ১৭৬৬ সালে কৃষ্ণনগরের রাজবাড়িতে জগদ্ধাত্রী পুজোর সূচনা হয়। আবার অনেকে কৃষ্ণচন্দ্রের প্রপৌত্র গিরিশচন্দ্রকে কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির জগদ্ধাত্রী পুজোর প্রবর্তক মনে করেন। কৃষ্ণনগরের প্রাচীন জগদ্ধাত্রী পুজোগুলোর মধ্যে চাষা পাড়াতে বুড়িমার পুজো অত্যন্ত প্রসিদ্ধ। ৭৫০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার দ্বারা মাতা জগদ্ধাত্রীকে (Jagadhatri Puja 2023) সাজানো হয় এখানে। এই দেবী অত্যন্ত জাগ্রত বলে এলাকার মানুষ মনে করেন এবং দেবী তাঁর ভক্তদের সমস্ত মনস্কামনাও পূর্ণ করেন বলেই বিশ্বাস। এই পুজো শুরু হয় ১৭৯০ সালে। জগদ্ধাত্রী পুজোর দিন কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির দরজা খুলে রাখার রীতি আজও চোখে পড়ে। তৎকালীন কৃষ্ণনগরের রানিমা রাজবাড়িতে বসেই প্রতিমা দর্শন করতেন। নিরঞ্জনের পূর্বে প্রতিমা রাজবাড়ির সামনে থেকে একবার ঘুরিয়ে আনতে হয়, এটাই এখানকার রীতি।

    চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজোর ইতিহাস

    অন্যদিকে ফরাসি ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ছিল চন্দননগর। এখানকার জগদ্ধাত্রী (Jagadhatri Puja 2023) পুজোর সূচনা করেন ইন্দ্রনারায়ণ চৌধুরী। রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের অত্যন্ত  ঘনিষ্ঠ ছিলেন ইন্দ্রনারায়ণ। কর্মজীবনে তিনি ছিলেন চন্দননগরের ফরাসি সরকারের দেওয়ান। কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির পুজো দেখে মুগ্ধ হয়ে ইন্দ্রনারায়ণ চন্দননগরে জগদ্ধাত্রী পুজো শুরু করেন। তাঁর প্রচলিত পুজো চন্দননগরে আদি পুজো নামে বিখ্যাত। জনশ্রুতি আছে, আদি প্রতিমাকে জলে নিরঞ্জন করা মাত্রই শুশুক বা সাপের দেখা পাওয়া যায়। স্থানীয় বিশ্বাসে এই দেবী অত্যন্ত জাগ্রত এবং ভক্তদের সকল মনস্কামনা পূর্ণ করেন।

     

    দেশের খবরদশের খবরসব খবরসবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • Jagadhatri Puja 2023: মা জগদ্ধাত্রী ত্রিনয়না, চতুর্ভুজা…, জানুন দেবীর পৌরাণিক আখ্যান

    Jagadhatri Puja 2023: মা জগদ্ধাত্রী ত্রিনয়না, চতুর্ভুজা…, জানুন দেবীর পৌরাণিক আখ্যান

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: উৎসবের মরসুমে দুর্গাপুজো, লক্ষ্মীপুজো, কালীপুজোর পরেই আসে জগদ্ধাত্রী পুজো। মা জগদ্ধাত্রী (Jagadhatri Puja 2023) ত্রিনয়না, চতুর্ভুজা ও সিংহের উপর আসীন। তাঁর হাতে শঙ্খ, চক্র, ধনুক ও বাণ; গলায় নাগযজ্ঞোপবীত। দেবীর গাত্রবর্ণ উদীয়মান সূর্যের মতো। রাজসিক দেবী দুর্গা, তামসিক দেবী কালীর পরে সত্ত্বগুণের দেবী জগদ্ধাত্রীর পুজো হয়। দেবী জগদ্ধাত্রীর পুজো অনুষ্ঠিত হয় দুর্গাপুজোর ঠিক একমাস পর, কার্তিক মাসের শুক্লা নবমী তিথিতে।

    ধর্মশাস্ত্রগুলি কী বলছে?

    কাত্যায়নীতন্ত্র অনুসারে কার্তিকী শুক্লা নবমীতে দেবী জগদ্ধাত্রীর আবির্ভূত হওয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে। আবার দুর্গাকল্প অনুযায়ী,

    কার্তিকে শুক্লপক্ষেঽহনি ভৌমবারে জগৎপ্রসূঃ। 
    সর্বদেবহিতার্থায় দুর্বৃত্তশমনায় চ।।
    আবিরাসীৎ জগচ্ছান্ত্যৈ যুগাদৌ পরমেশ্বরী।।

    যার বাংলা অনুবাদ হল, দেবতাদের হিত, দুর্বত্তের দমন এবং জগতের কল্যাণের জন্য যুগের প্রারম্ভে কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের মঙ্গলবারে পরমেশ্বরী অর্থাৎ মাতা জগদ্ধাত্রী আবির্ভূতা হলেন। চলতি বছরের জগদ্ধাত্রী পুজো অবশ্য অগ্রহায়ণ মাসে সম্পন্ন হচ্ছে।

    জগদ্ধাত্রী পুজোর পৌরাণিক আখ্যান

    সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমী–এই তিনদিন মাতা জগদ্ধাত্রীর (Jagadhatri Puja 2023) আরাধনা করে থাকেন ভক্তরা। তবে অনেকে নবমীর দিন তিনবার পুজো করে সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমী পুজো সম্পন্ন করেন। কোথাও কোথাও প্রথম বা দ্বিতীয় পুজোর পর কুমারী পুজোরও আয়োজন করা হয়। পুষ্পাঞ্জলি ও প্রণাম মন্ত্রসহ জগদ্ধাত্রী পুজোর অনেক মন্ত্রও দুর্গাপুজোর অনুরূপ। পৌরাণিক কাহিনী অনুযায়ী, একবার দেবতা ও অসুরদের সংগ্রামে দেবগণ অসুরদের পরাস্ত করলেন। কিন্তু তাঁরা বিস্মৃত হলেন যে নিজ শক্তিতে নয়, বরং ব্রহ্মার বলে বলীয়ান হয়েই তাঁদের এই বিজয়। ফলে তাঁরা হয়ে উঠলেন অহংকার-প্রমত্ত। তখন দেবী লক্ষ্মী এক কুমারী বালিকার রূপ ধারণ করে তাঁদের সম্মুখে আবির্ভূত হলেন। তিনি একটি তৃণখণ্ড দেবতাদের সামনে রাখলেন। অগ্নি ও বায়ু তাদের সমস্ত শক্তি প্রয়োগ করেও সেই তৃণখণ্ডটিকে দগ্ধ করতে বা উড়িয়ে দিতে পারলেন না। তখন দেবতারা ইন্দ্রকে বালিকার পরিচয় জানবার জন্য পাঠালেন। ইন্দ্র আত্মঅহংকার নিয়ে দেবীর সামনে আসেননি, এসেছিলেন জিজ্ঞাসু মন নিয়ে। তাই ব্রহ্মরূপী দেবী মহালক্ষ্মী তাঁর সম্মুখ হতে তিরোহিত হলেন এবং নিমেষে তাঁর সম্মুখের আকাশে দিব্য স্ত্রীমূর্তিতে আবির্ভূত হলেন হৈমবতী রমা। রমা, ব্রহ্মের স্বরূপ ব্যাখ্যা করে ইন্দ্রের জ্ঞানপিপাসা নিবৃত্ত করলেন। এই দেবী পুরাণে মাতা জগদ্ধাত্রী নামে প্রসিদ্ধ। জগদ্ধাত্রী (Jagadhatri Puja 2023) অর্থাৎ জগতকে ধারণ যিনি করেন। ভক্তদের বিশ্বাস রয়েছে, মাতা জগদ্ধাত্রী সমগ্র জগতে কল্যাণকারী। তাঁর আরাধনায় ভক্তের জীবনে সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধি বিরাজ করে।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।

  • Kali Puja 2023: ধর্মীয় বিশ্বাস, নাকি বিজ্ঞানসম্মত? কেন কালীপুজোর আগের দিন ‘চোদ্দ শাক’ খাওয়া হয়?

    Kali Puja 2023: ধর্মীয় বিশ্বাস, নাকি বিজ্ঞানসম্মত? কেন কালীপুজোর আগের দিন ‘চোদ্দ শাক’ খাওয়া হয়?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: কথায় বলে বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বন। তবে, বাঙালিদের যে কোনও উৎসব বা পার্বনে একটা বিষয় থাকবেই। তা হল, যে কোনও উৎসবে ওতঃপ্রোতভাবে জড়িত খাওয়া-দাওয়ার আচার। এটাই যে কোনও উৎসবের পাওনা। যেমন, সরস্বতী পুজোর পরদিন গোটা সেদ্ধ খাওয়ার প্রথা রয়েছে অধিকাংশ বাড়িতে। আবার কিছু ব্রত রয়েছে, যেখানে গৃহস্থ কর্ত্রীরা শুধুমাত্র ময়দার তৈরি খাবার খান। প্রতিটি খাওয়া-দাওয়ার আচার, পরিবার এবং স্বজনদের মঙ্গল কামনার উদ্দেশ্যেই পালিত হয়।

    নেপথ্যে রয়েছে ধর্মীয় বিশ্বাস

    রাজ্য জুড়ে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে কালীপুজো ও দীপান্বিতা উৎসব। জানেন কি, আশ্বিন মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী তিথিতে অর্থাৎ কালীপুজোর আগের দিন অনেক বাড়িতেই চোদ্দ শাক খাওয়ার রীতি রয়েছে? এখন প্রশ্ন হল, চোদ্দ শাক খাওয়ার এই আচারের পিছনে কোন ধর্মীয় বিশ্বাস কাজ করছে? কথিত আছে, মৃত্যুর পরে মানুষ পঞ্চভূতে বিলীন হয়ে যায়। এরপর এই বিশেষ দিনেই নাকি পূর্ব পুরুষদের আগমন ঘটে মর্ত্যলোকে। হিন্দু শাস্ত্রমতে, আকাশ, জল, বায়ু, অগ্নি, মাটি—প্রকৃতির এই পাঁচ উপাদানের মধ্যেই ছড়িয়ে রয়েছেন আমাদের পিতৃপুরুষরা। বিশ্বাস মতে, চোদ্দ শাক খাওয়ার রীতি পালনের মধ্যে দিয়েই তাঁদের ছুঁয়ে থাকা যায়। 

    অশুভ শক্তির বিনাশ ঘটাতে প্রকৃতি থেকে সংগ্রহ করা চোদ্দ রকম শাক জলে ধুয়ে, সেই জল বাড়ির চারদিকে ছিটিয়ে দেওয়া হয়। পূর্বের সাত পুরুষকে উৎসর্গ করে পরবর্তী সাত পুরুষের জন্য খাওয়া হয় শাক। তাই মোট চোদ্দ রকমের শাক খাওয়ার রীতি প্রচলিত রয়েছে। এই শাকগুলি হল, জয়ন্তী, শাঞ্চে, হিলঞ্চ, ওল, পুঁই, বেতো, সর্ষে, কালকাসুন্দে, নিম, পলতা, শুলকা, গুলঞ্চ, ভাঁটপাতা ও শুষণী।

    রয়েছে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাও…

    এই প্রচলিত রীতিগুলোর পিছনে বিজ্ঞানসম্মত কারণ রয়েছে বলে অনেকের ধারণা। এদেশের সমস্ত আচার এবং অনুষ্ঠান বিজ্ঞানসম্মত হয় এবং প্রকৃতির সাথে সম্পর্কযুক্ত হয়। শরৎকালের শেষ এবং হেমন্তকালে শুরুতে অনেক রকমের রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। ভেষজ গুণে সমৃদ্ধ শাক দেয় বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা। এবার এক নজরে দেখে নেওয়া যাক, এই চোদ্দ রকমের শাকগুলোর কী কী গুণ রয়েছে। 

    জয়ন্তী—উদরাময়, জ্বর, বহুমূত্র নিয়ন্ত্রণ করে।
    শাঞ্চে—রক্তের পরিমাণ বৃদ্ধি করে।
    হিংচে—পিত্তনাশক।
    ওল—অর্শ, রক্ত আমাশা, বাত, চর্মরোগ কমায়।
    পুঁই—হজমে সহায়ক।
    বেতো—কৃমিনাশক।
    সর্ষে—যকৃৎ, চোখ যত্নে রাখে।
    কালকাসুন্দে—অর্শ, কাশি দূর করে।
    নিম—যে কোনও চর্মরোগ নাশ করে।
    পলতা—শ্বাসযন্ত্র ভালো রাখে।
    শুলকা—হৃদ্‌যন্ত্র ভালো রাখে।
    গুলঞ্চ—উচ্চ রক্তচাপ, যকৃৎ যত্নে রাখে।
    ভাঁটপাতা—ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়ক।
    শুষণী—স্মৃতিবর্ধক।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের , Twitter এবং Google News পেজ।

  • Kali Puja 2023: আজ ‘ধনতেরস’, জেনে নিন কেন পালন করা হয় এই উৎসব

    Kali Puja 2023: আজ ‘ধনতেরস’, জেনে নিন কেন পালন করা হয় এই উৎসব

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। বিশেষত এই সময়টা অর্থাৎ শরৎকাল এবং হেমন্তকাল যেন পুজোর ঋতু। মহালয়া থেকে শুরু হয়ে একে একে দুর্গাপুজো, লক্ষ্মীপুজো, কালীপুজো (Kali Puja 2023)। পরপর চলতেই থাকে। কিন্তু কালীপুজোর ঠিক দু’দিন আগে পালন করা হয় আরও একটি উত্‍সব, যার নাম ‘ধনতেরস’ (Dhanteras 2023)।

    কার্তিক মাসের কৃষ্ণ ত্রয়োদশী তিথি

    ধন শব্দের অর্থ সম্পদ এবং তেরস শব্দের অর্থ ত্রয়োদশী। দীপাবলির দিন বা কালীপুজোর (Kali Puja 2023) সন্ধ্যার অমাবস্যায় অলক্ষ্মীকে বিদায় করে লক্ষ্মীপুজোর রীতি রয়েছে। এই লক্ষ্মী পুজোর দু’দিন আগে, অর্থাৎ ত্রয়োদশীতে পালিত হয় ধনতেরস। হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, কার্তিক মাসের কৃষ্ণ ত্রয়োদশী তিথিতে এই উত্‍সব পালিত হয়। আলোর ঝরনায় যখন মেতে ওঠে সম্পূর্ণ বিশ্ব, তখন আত্মীয়স্বজন, পরিবারের মঙ্গল কামনায় এবং ধন-সম্পদের আশায় বহু মানুষ দেবতা কুবেরের আরাধনা করেন। কুবের হল ধনদেবতা‌। বিশ্বাস মতে, এই দিন কোনও না কোনও মূল্যবান ধাতু, বাসনপত্র অথবা নতুন পোশাক কিনলে মা লক্ষ্মী সন্তুষ্ট হন। আশীর্বাদ করেন তাঁর ভক্তদের।

    বহু পৌরাণিক গল্পে ধনতেরসের মাহাত্ম্য 

    ধনতেরসকে (Dhanteras 2023) ঘিরে রয়েছে অজস্র পৌরাণিক কাহিনী। তারই মধ্যে একটি জনপ্রিয় কাহিনী হল, প্রাচীনকালে হিম নামে এক রাজা ছিলেন। তাঁর পুত্রের একটি অভিশাপ ছিল যে বিয়ের চার দিনের মাথায় সর্প দংশনে তাঁর মৃত্যু হবে। এই দিনের কথা সকলেই জানতেন। তাই স্বামীকে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচানোর জন্য নববধূ সারারাত স্বামীকে ঘুমাতে দেননি, নানা কৌশলে জাগিয়ে রেখেছিলেন তাঁকে।

    তাঁদের শয্যাকক্ষের বাইরে প্রচুর ধন-সম্পদ, সোনা-রুপোর গয়না, বাসনপত্র সাজিয়ে রেখেছিলেন নববধূ। ঘরের সর্বত্র প্রদীপ জ্বালিয়ে রেখেছিলেন। এতো ভালো, উজ্জ্বল, আলোকময় পরিবেশের জন্য সারারাত সেই ঘরে কোনও সাপ প্রবেশ করতে পারেনি। স্বামীকে জাগিয়ে রাখার জন্য সারারাত নববধূ গল্প এবং গান করে কাটিয়ে ছিলেন। পরদিন মৃত্যুর দেবতা যমরাজ সেখানে আসেন। ঘরের দরজায় গয়নার জৌলুস এবং প্রদীপের আলোতে চোখ ধাঁধিয়ে যায় তাঁর। তিনি রাজপুত্রের কাছে পৌঁছাতে পারেন না। রাজপুত্রের ঘরের বাইরে সারারাত ওই গয়নার ওপর শুয়ে শুয়ে রানীর গান এবং গল্প শুনে বিভোর হয়ে পরের দিন তিনি ফিরে যান‌। 

    এই ঘটনার পর থেকে প্রতি বছর রাজ পরিবারে সোনা এবং রুপোর তিথি ধনতেরস (Dhanteras 2023) উত্‍সব পালন করা শুরু হয়ে যায়। কুবেরের সঙ্গে এই দিন লক্ষ্মীদেবীর আরাধনা করা হয়, একথা পূর্বেই বলা হয়েছে। ব্যবসায়ীদের জন্য এই দিনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। এই দিন ধনদেবী লক্ষ্মীরও আরাধনা করা হয়‌। অর্থাৎ একই মাসে দুবার লক্ষ্মী পুজোর রীতি হিন্দু ধর্মে দেখা যায়‌। ধনতেরস বা ধন ত্রয়োদশীর দিন লক্ষ্মীপুজোর তাৎপর্য কী? পুরাণে বলা হয়েছে যে, এক সময় দুর্বাসা মুনির অভিশাপে সৌভাগ্যের দেবী লক্ষ্মী স্বর্গ থেকে চলে যান এবং মহাসাগরে বসবাস শুরু করেন। লক্ষ্মী চলে যাওয়াতে স্বর্গলোক শ্রীহীন হয়ে পড়ে। এরপর দেবতারা অসুরের সঙ্গে ব্যাপক যুদ্ধ করে সমুদ্র মন্থনে ফিরিয়ে এনেছিলেন লক্ষ্মীকে। এই দিনটি ছিল ধনতেরসের দিন। মানে কার্তিক মাসের কৃষ্ণা পক্ষের ত্রয়োদশী তিথি। তাই তখন থেকেই দেবী লক্ষ্মীর উদ্দেশে সূচনা করা হয়েছিল দীপাবলি উত্‍সব এবং তার আগে ধনদেবীর আরাধনা করা হয়।

    আরেক নাম ধন্বন্তরি ত্রয়োদশী

    আবার অন্য একটি মতে, ধনতেরসের (Dhanteras 2023) এই দিনটি ধন্বন্তরি ত্রয়োদশী নামেও পরিচিত। ধন্বন্তরি হিন্দু ধর্মের একজন দেবতা এবং আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক। এই বিশেষ দিনে দেবতা ধন্বন্তরি সকলকে আরোগ্য থাকার আশীর্বাদ প্রদান করেন। ধন্বন্তরি দুধের মহাসাগর থেকে উত্থিত হয়েছিলেন বলেই পৌরাণিক মত রয়েছে। ভাগবত পুরাণে বর্ণিত আখ্যান অনুযায়ী সমুদ্র মন্থন কালে অমৃতের পাত্রের সঙ্গে ধন্বন্তরি উঠেছিলেন। এটাও বিশ্বাস করা হয় যে ধন্বন্তরি আয়ুর্বেদ প্রথা চালু করেছিলেন। এই কারণের জন্য, ২৮ অক্টোবর ২০১৬ থেকে কার্তিক মাসের কৃষ্ণা পক্ষের ত্রয়োদশী তিথিতে ভারত সরকার ধনতেরসের দিনটি জাতীয় আয়ুর্বেদ দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছে।

    অন্য একটি পৌরাণিক কাহিনী হল, এক সময় বিষ্ণু মর্ত্যলোকে বিচরণ করতে এলে লক্ষ্মীও তাঁর সঙ্গে আসতে যান। তখন বিষ্ণু বলেন, তাঁর কথা মেনে চললে মা লক্ষ্মী তাঁর সঙ্গে যেতে পারেন। তাঁর কথা মান্য করে মা লক্ষ্মী বিষ্ণুর সঙ্গে পৃথিবীতে আসেন। একটি জায়গায় এসে বিষ্ণু মা লক্ষীকে অপেক্ষা করতে বলেন। তিনি বলেন যে, তিনি দক্ষিণ দিকে যাচ্ছেন এবং তাঁর না আসা পর্যন্ত লক্ষ্মী যেন সেখান থেকে কোথাও না যায়। লক্ষ্মীর মনে দক্ষিণ দিকে বিষ্ণুর যাওয়ার কারণ জানার কৌতূহল জেগে ওঠে। এরপর তিনি বিষ্ণুর পিছু নেন। কিছু দূর এগোনোর পর সর্ষের ক্ষেতে ফুল ফুটে থাকতে দেখে সেই ফুল দিয়ে লক্ষ্মী নিজেকে সাজানোর জন্য সেই দিকে অগ্রসর হন। কিছু দূর যাওয়ার পর আখের ক্ষেত থেকে আখ তুলে তার রস পান করেন। সেই সময় বিষ্ণু সেখানে আসেন এবং লক্ষ্মীকে দেখে ভীষণ রেগে যান। এরপর বিষ্ণু মা লক্ষ্মীকে অভিশাপ দেন। বারণ করা সত্ত্বেও তাঁর পিছু নেওয়া ও দরিদ্র কৃষকের ক্ষেত থেকে চুরির অপবাদে লক্ষ্মীকে ১২ বছর পর্যন্ত কৃষকের সেবা করতে বলে ক্ষীর সাগরের উদ্দেশে প্রস্থান করেন বিষ্ণু। 

    সেই কৃষকের বাড়িতে কৃষকের স্ত্রীকে স্নান করে লক্ষ্মীপুজো ও তারপর রান্না করার কথা বলেন। পুজোর পর কৃষকের স্ত্রীর সমস্ত মনস্কামনা পূর্ণ হয়ে যায়। ফলে দ্বিতীয় দিন থেকেই কৃষকের ঘর অন্ন, বস্ত্র, রত্নতে ভরে যায়। এভাবে বারো বছর পর্যন্ত খুব আনন্দে কাটে কৃষকের। ১২ বছর পর বিষ্ণু লক্ষীকে নিতে এলে কৃষকের স্ত্রী তাঁকে যেতে দেন না। তখন বিষ্ণু জানান, লক্ষ্মীকে কেউ যেতে দিতে চায় না। লক্ষ্মী চঞ্চলা, কোথাও টিকতে পারেন না। তখন লক্ষ্মী কৃষককে জানান, তাঁর কথা মতো চললে পরিবারে কখনও অর্থাভাব থাকবে না। ধনতেরসের (Dhanteras 2023) দিনে ঘরবাড়ি পরিষ্কার করার কথা বলেন লক্ষ্মী। এরপর রাতে ঘিয়ের প্রদীপ জ্বালিয়ে রেখে সন্ধ্যাকালে পুজো করতে বলেন। একটি রুপোর ঘটে তাঁর জন্য টাকা ভরে রাখার কথাও বলেন তিনি।

     

    দেশের খবরদশের খবরসব খবরসবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • Durga Puja 2023: ‘উমা ফিরে আসছে…’, দশমীতে শিবের কাছে বার্তা পৌঁছে দেয় নীলকণ্ঠ পাখি

    Durga Puja 2023: ‘উমা ফিরে আসছে…’, দশমীতে শিবের কাছে বার্তা পৌঁছে দেয় নীলকণ্ঠ পাখি

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: যখন মোবাইল ফোন ছিল না, হোয়াটসঅ্যাপ ছিল না, ডাকঘরের পিওন ছিল না, তখন বার্তা পাঠানোর উপায় কী ছিল জানেন? রূপকথার গল্পে রাজকুমারী তার প্রেমিককে চিঠি লিখলে পৌঁছে দিত কে? বার্তাবাহক পাখির ভূমিকায় সবথেকে জনপ্রিয় পাখির নাম পায়রা। প্রাচীন যুগের পটভূমিকায় রচিত চলচ্চিত্রগুলিতে আমরা দেখেছি পায়রার গলায় বার্তা বেঁধে তাকে উড়িয়ে দেওয়া হত এবং নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছে সেই বার্তা পায়রা পৌঁছে দিত। কোথাও হ্যাক হত না সেই বার্তা। এরকমই একটি পাখির কাহিনি প্রচলিত আছে, জানেন কি? যে পাখিকে পৌরাণিক মতে স্বয়ং মহাদেবের সঙ্গী মনে করা হয়। মহাদেবের বার্তাবাহক রূপে কাজ করে এই পাখি। এই পাখিই (Durga Puja 2023) কৈলাসে গিয়ে শিবকে খবর দেয় বাপের বাড়ি থেকে উমা আসছে। বিজ্ঞানের ভাষায় এর নাম ইন্ডিয়ান রোলার।

    বিজয়া দশমীর দিন নীলকন্ঠ পাখির দেখা পাওয়াকে শুভ মনে করা হয়

    বিজয়া দশমীর দিন (Durga Puja 2023) নীলকন্ঠ পাখির দেখা পাওয়াকে শুভ এবং সৌভাগ্যদায়ী  বলে মনে করা হয়। কথিত আছে এই পাখিটি দেখা গেলে সম্পদ বৃদ্ধি পায়, জীবনের সমস্ত অশুভ প্রভাব বিনষ্ট হয়। ফলস্বরূপ, বাড়িতে নিত্য শুভ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হতে থাকে। নীলকন্ঠ পাখি দেখার বিষয়ে বিভিন্ন ধারণা রয়েছে। নীলকন্ঠ পাখি উড়ে যাও, সেই কৈলাসে যাও, খবর দাও, উমা আসছে তখন নীলকন্ঠ পাখি আগমনের বার্তা নিয়ে মহাদেবের কাছে এসেছিল। আরেকটি জনপ্রিয় বিশ্বাস হল, মনে করা হয়, রাবণবধের ঠিক আগে এই পাখিটির (Durga Puja 2023) দেখা পান রামচন্দ্র। আবার অন্য একটি পৌরাণিক মতে, রাবণবধের আগেও, সেতুবন্ধনের সময় হাজির হয়েছিল নীলকণ্ঠ পাখি। পথ দেখিয়ে রাম-সেনাকে লঙ্কায় নিয়ে গিয়েছিল সে। এরকম পৌরাণিক কাহিনি থেকেই এই পাখির মাহাত্ম্য ছড়িয়ে পড়ে সমস্ত জায়গায়। তখন থেকেই মনে করা হয়, এই পাখির দর্শন অত্যন্ত শুভ।

    নীলকণ্ঠ পাখি কেন কৃষকদের বন্ধু?

    আরও একটি মত রয়েছে এবিষয়ে। লঙ্কা বিজয়ে রাম ব্রাহ্মণ হত্যার পাপ করেছিলেন। কারণ দশানন রাবণ ছিলেন ব্রাহ্মণ। তখন লক্ষ্মণ সহ রামচন্দ্র শিবের পুজো করেছিলেন এবং ব্রাহ্মণকে বধ করার পাপ থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন। সেই সময় শিব নীলকন্ঠ পাখির রূপে পৃথিবীতে এসেছিলেন বলে অনেকের বিশ্বাস রয়েছে। নীলকণ্ঠ অর্থ, যার গলা নীল। দেবাদিদেব মহাদেব সমুদ্র মন্থন করার সময় বিষ পান করেছিলেন। কণ্ঠে সেই বিষকে ধারণ করার ফলে মহাদেবের কণ্ঠ নীল হয়ে যায়। তাই শিবের আর একটি নাম হল নীলকণ্ঠ। নীলকণ্ঠ পাখিকে (Durga Puja 2023) মর্ত্যলোকে শিবের প্রতিনিধি মানা হয় এবং দেবাদিদেব মহাদেবের রূপ হিসাবে বিবেচনা করা হয়। জনশ্রুতি অনুসারে, শিব পৃথিবীতে নীলকণ্ঠ পাখি রূপেই ঘোরাফেরা করেন। এই পাখিটিকে কৃষকদের মিত্রও বলা হয়। কারণ নীলকণ্ঠ পাখি জমিতে ফসলের সাথে জড়িত পোকামাকড় খেয়ে কৃষকদের উপকার করে থাকে। এ প্রসঙ্গে বলা দরকার, একসময় দুর্গাপুজোর পর এই পাখিকে উড়িয়ে দেওয়া বনেদি ও জমিদার পরিবারগুলির ঐতিহ্য ছিল। যেমন কলকাতার শোভাবাজার রাজবাড়িতে আগে নীলকণ্ঠ পাখি ওড়ানো হত বিজয়া দশমীর দিনে। এখন বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের ফলে এটা সম্ভব হয় না। তবে কাঠের বা মাটির নীলকন্ঠ পাখি তৈরি করে সেটি প্রতিমা নিরঞ্জনের আগে জলে দেওয়া হয়।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ। 

  • Navaratri 2023: মা দুর্গা ও তাঁর সন্তানরা কীভাবে বেছে নিয়েছিলেন বাহন? জানুন সেই পৌরাণিক গল্প

    Navaratri 2023: মা দুর্গা ও তাঁর সন্তানরা কীভাবে বেছে নিয়েছিলেন বাহন? জানুন সেই পৌরাণিক গল্প

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: শরৎকালে প্রতি বছর মা দুর্গা বাপের বাড়িতে আসেন সন্তানদের সঙ্গে নিয়ে (Navaratri 2023)। মা দুর্গা এবং তাঁর সন্তানদের সঙ্গে আসে তাঁদের বাহনগুলিও। গণেশের সঙ্গে ইঁদুর আসে, মা সরস্বতীর সঙ্গে আসে হাঁস, মা লক্ষ্মীর সঙ্গে প্যাঁচা আসে, কার্তিকের সঙ্গে ময়ূর আসে এবং স্বয়ং মা দুর্গার সঙ্গে আসে সিংহ। বাহনগুলির পৌরাণিক কাহিনিতে যাওয়ার আগে বলা দরকার ভারতীয় উপমহাদেশে প্রকৃতি পুজোর রীতি বৈদিক আমল থেকেই। মাটি, অগ্নি, বায়ু, নদী, গাছ সবকিছুর পুজো হয় এই সভ্যতায়। ভারতীয় সভ্যতায় গাছপালা, নদ-নদীর সঙ্গে সঙ্গে জীবজন্তুও মানুষের দৈনন্দিন কাজে উপকারী বলেই গণ্য করা হয়। এই ধারণা থেকেই হয়ত বাহন হিসেবে তারাও পুজো পায়। এবার আসা যাক পৌরাণিক কাহিনিগুলিতে।

    মা দুর্গার বাহন কেন সিংহ?

    পুরাণ (Navaratri 2023) অনুযায়ী, দেবী পার্বতী হাজার বছর ধরে তপস্যা করেছিলেন শিবকে তাঁর স্বামী হিসাবে পাওয়ার জন্য। তপস্যার কারণে দেবী অন্ধকারে মিশে যান। বিয়ের পর পার্বতীকে মহাদেব ‘কালী’ বলে সম্বোধন করলে দেবী তৎক্ষণাৎ কৈলাস ত্যাগ করে ফের তপস্যায় মগ্ন হয়ে যান। তপস্যারত দেবীকে শিকার করার ইচ্ছায় এক ক্ষুধার্ত সিংহ তাঁর দিকে আসতে শুরু করে। কিন্তু দেবীকে দেখে সেখানেই চুপ করে বসে পড়ে। এর মধ্যে বহু বছর কেটে যায়, কিন্তু সিংহ তার নিজের জায়গা থেকে নড়ে না। এদিকে দেবী পার্বতীর তপস্যা সম্পন্ন হওয়ার পর মহাদেব আবির্ভূত হলে পার্বতীকে গৌরবর্ণ (Navaratri 2023) বলে বর্ণনা করেন। যে সিংহটি দেবীকে শিকার করতে এসেছিল, তাকেই বাহন হিসেবে গ্রহণ করেন দেবী। কারণ দেবীর জন্য অনেক বছর অপেক্ষা করেছিল সে। সিংহের এই কর্মকাণ্ডের জন্য দেবী পার্বতীর বাহনকে সিংহ বলে মনে করা হয়। আবার কালিকাপুরাণ অনুযায়ী, শ্রীহরি দেবীকে বহন করছেন। এই হরি শব্দের এক অর্থ সিংহ। আবার শ্রীশ্রীচণ্ডীতে উল্লেখ আছে, গিরিরাজ হিমালয় দেবীকে সিংহ দান করেন। শিবপুরাণ মতে, ব্রহ্মা দুর্গাকে বাহনরূপে সিংহ দান করেছেন। সিংহ হল শৌর্য, পরাক্রম, শক্তির প্রতীক। অসুরদের ধ্বংসকারী মাতার বাহন তাই সিংহ। এটাই পণ্ডিত মহলের মতামত।

    গণেশের বাহন ইঁদুর কেন? 

    স্বর্গে দেবলোকের সভায় গান গেয়ে সকলের মনোরঞ্জন করতেন ক্রঞ্চ নামে এক গন্ধর্ব। এক দিন বামদেব নামে এক ঋষি এসে উপস্থিত হন সেই সভায়। তিনি গান করতে থাকেন। সেই গান শুনে নিজের হাসি চাপতে পারেননি গন্ধর্ব ক্রঞ্চ। সেই হাসি দেখে ফেলেন বামদেব। সঙ্গে সঙ্গে ক্রোধান্বিত হয়ে পড়েন বামদেব। তিনি  ক্রঞ্চকে অভিশাপ দেন। অভিশাপের ফলে ক্রঞ্চ ইঁদুর হয়ে যান। ঋষি অভিশাপ দেন, কোনও দিন আর গান গাইতে পারবেন না ক্রঞ্চ। ক্রঞ্চ নিজের ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চান। কিন্তু তাতে বিশেষ কোনও ফল হয় না। তিনি ইঁদুর হয়ে যান এবং মর্ত্যে নেমে আসেন। তবে মুনি বলেছিলেন, কোনও দিন যদি গণেশ তাঁকে বাহন করেন, তা হলে মুক্তি মিলবে। মর্ত্যলোকে তিনি যেখানে নেমেছিলেন, কাছেই ছিল পরাশর মুনির কুটির। ইঁদুর ক্রঞ্চ সেখানেই নিজের খাদ্যের সন্ধানে যেতে  শুরু করেন। এ দিকে ইঁদুরের উৎপাতে অতিষ্ট হয়ে ওঠে কুটিরবাসীরা। এক দিন গণেশ সেই মুনির কুটিরে পৌঁছান। জানতে পারেন ইঁদুরের কুকীর্তির কথা। তখন তাকে ধরতে উদ্যত হন গণেশ। অবশেষে ধরেও ফেলেন। কিন্তু ক্রঞ্চ নিজের পরিচয় দিয়ে সব কথা বলেন গণেশকে। এ কথা শুনে ইঁদুরকেই তিনি নিজের বাহন করে নেন (Navaratri 2023)।

    মা লক্ষ্মীর বাহন প্যাঁচা কেন?

    পৌরাণিক গল্প অনুযায়ী, যখন দেব-দেবীরা প্রাণীজগতের সৃষ্টি করেন, তখন তাঁরা পৃথিবী ভ্রমণে আসেন। সেই সময় পশু ও পাখিরা দেবতাদের ধন্যবাদ জানায় তাদের প্রাণী হিসেবে তৈরি করার জন্য। পশু ও পাখিরা বলতে থাকে, ‘‘আপনারা যেহেতু আমাদের তৈরি করেছেন তাই আপনাদের বাহন হয়ে আমরা পৃথিবীতে থাকব।’’ সেই সময় দেবতারা নিজেদের বাহন পছন্দ করে নেন। যখন দেবী লক্ষ্মীর নিজের বাহন (Navaratri 2023) বেছে নেওয়ার সময় আসে, তখন তিনি বলেন আমি যেহেতু রাতে পৃথিবীতে আসি, তাই রাতে যে প্রাণী দেখতে পায় সেই হবে আমার বাহন। এখান থেকেই প্যাঁচা হয়ে ওঠে দেবী লক্ষ্মীর বাহন। লক্ষ্মীমাতা ধানের দেবী, ইঁদুর ধান খেয়ে ফেলে। তাই এই ধারণা থেকেও লক্ষ্মীর বাহন প্যাঁচা হতে পারে।

    কার্তিকের বাহন ময়ূর কেন?

    তারকাসুরকে বধ করেছিলেন (Navaratri 2023) দেবসেনাপতি কার্তিক। পৌরাণিক কাহিনি অনুযায়ী, মৃত্যুর আগে তারকাসুর কার্তিকের বাহন হিসেবে থাকতে চেয়েছিলেন। ময়ূরের ছদ্মবেশে কার্তিককে আক্রমণও করেছিল যুদ্ধ ক্ষেত্রে তারকাসুর। কথিত আছে ওই ময়ূরটিই হল কার্তিকের বাহন, যা আসলে তারকাসুর।

    সরস্বতীর বাহন হাঁস কেন?

    হাঁস নাকি জল, স্থল, অন্তরীক্ষে থাকতে পারে। জ্ঞান ও বিদ্যার দেবীকেও এই তিনটি জায়গায় থাকতে হয় জ্ঞান ও বিদ্যাদানের জন্য। তাই বাহন হিসেবে হাঁসকেই বেছে নিয়েছেন মা সরস্বতী।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।

  • Pandit Deendayal Upadhyay: জাতীয়তাবাদী লেখক, দার্শনিক, সমাজ সংস্কারক ছিলেন পণ্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায়

    Pandit Deendayal Upadhyay: জাতীয়তাবাদী লেখক, দার্শনিক, সমাজ সংস্কারক ছিলেন পণ্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায়

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: জাতীয়তাবাদী লেখক, রাজনীতিবিদ, দার্শনিক এবং সমাজ সংস্কারক হিসাবে বিশেষ ব্যক্তিত্বের অধিকারী ছিলেন পণ্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায় (Pandit Deendayal Upadhyay)। আজ তাঁর জন্মজয়ন্তী। অত্যন্ত একটি সাধারণ নিম্নবিত্ত পরিবারের মধ্যে জন্ম হয়েছিল তাঁর। ভারতীয় ইতিহাসতত্ত্ব, শিক্ষা, চেতনা, আধ্যাত্মিকতা, রাজনীতি এবং সমাজতত্ত্বের উপর প্রচুর লেখালেখি করে গেছেন তিনি। ভারতীয় জনসংঘ দলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। পরে সভাপতি হিসাবে নির্বাচিত হয়ে ছিলেন তিনি। “একাত্ম মানববাদ” দর্শনের স্রষ্টা ছিলেন। রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের প্রচারক হিসাবেও অনক দিন ভারত রাষ্ট্র পুনর্নির্মাণের জন্য সমর্পিত ছিলেন। 

    প্রথম জীবন (Pandit Deendayal Upadhyay)

    পণ্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায় (Deendayal Upadhyaya) উত্তরপ্রদেশের বৃজভূমিতে জন্ম গ্রহণ করেন ১৯১৬ সালের ২৫ সেপ্টেম্বরে। মামার বাড়িতে থেকে মেট্রিকুলেশন, ইন্টার মিডিয়েট পরীক্ষা দেন। এরপর বিএ পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। অত্যন্ত মেধাবী এবং পড়াশুনায় আগ্রহী ছাত্র ছিলেন। এরপর ১৯৩৭ সাল থেকে নিজেকে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘে নিবেদন করেন। অনেক দিন সামজিক আন্দোলন এবং ভারত রাষ্ট্র পুনর্নির্মাণের জন্য নিজেকে নিয়োজিত করেন। এরপর সংঘের প্রচারক হয়ে যান। ১৯৩৯ সালে নাগপুরে সংঘের প্রথমবর্ষ এবং ১৯৪২ সালে দ্বিতীয় বর্ষ সংঘ শিক্ষাবর্গ করেন। এরপর উপলব্ধি করেন সমাজকে সংস্কার করে ভরতের স্বাধীনতা অর্জন করা একান্ত প্রয়োজন। ধীরে ধীরে সমাজিক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হন।

    ভারতীয় জন সংঘের সভাপতি

    পণ্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায় (Pandit Deendayal Upadhyay) ১৮৬৭ সালে কালিকটে ভারতীয় জন সংঘের সভাপতি রূপে নির্বাচিত হন। তিনি ভারতীয় পরম্পরা, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও ইতিহাসবোধের বাইরে গিয়ে ভারতের চিন্তাকে কখনই প্রকাশ করতেন না। ভারতীয় মানসিকতার মধ্যে বিদেশী সংস্কৃতির প্রভাবকে মুক্ত করার কথা বলতেন। এই জনসংঘের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন বাংলার আরেক রাজনীতিবিদ ডক্টর শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। বর্তমান ভারতের ভারতীয় জনতা পার্টি হল যথার্থ জনসংঘের উত্তরসুরী রাজনৈতিক দল।

    লেখক এবং সাংবাদিকতা

    পণ্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায় (Pandit Deendayal Upadhyay) অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র যেমন ছিলেন, সেই সঙ্গে প্রচুর লেখালেখি করেছেন। ভারতীয় পুরাণ, উপনিষদ, বেদ, রামায়ণ, মহাভারতের উপর প্রচণ্ড আগ্রহ ছিল তাঁর। তিনি ভারতীয় হিন্দু রাজাদের বিষয়ে উপান্যাস লেখেন। “সম্রাট চন্দ্রগুপ্ত” এবং “জগতগুরু শঙ্করাচার্য” নামক দুটি উপন্যাস লেখেন। এগুলি প্রকাশ হয়েছিল ১৯৪৬ এবং ১৯৪৭ সালে। আরএসএসের প্রচারক থাকার সময় ১৯৪৫ সালে মসিক “রাষ্ট্রধর্ম” এবং সপ্তাহিক “পঞ্চজন্য” সম্পাদনা করে প্রকাশ করতেন। এছাড়াও দৈনিক “স্বদেশ” নামক পত্রিকা প্রকাশ করেছিলেন তিনি। ইংরেজরা চক্রান্ত করে দেশকে ভাগ করেছিল, তাই তিনি দেশভাগের জন্য অত্যন্ত ব্যথিত হন। ১৯৬৮ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি মুঘলসরাই স্টেশনে রহস্যজনক ভাবে তাঁর মৃত্যু হয়।

    একাত্ম মানববাদ

    পণ্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায় (Pandit Deendayal Upadhyay) মনে করতেন পুঁজিবাদ, সমাজবাদ, সাম্যবাদ, ব্যক্তি নির্ভর ভাবনার মধ্যে একটা সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এই সব মতবাদের শিকড় দেশে নয় বিদেশে অর্থাৎ ভারতের বাইরে। এই ভাবনাগুলি মানুষের মূল্যবোধের মধ্যে মানবতার পরিসরকে অনেক দূরে নিয়ে চলে গেছে। তাই ভারতীয়ত্বকে সন্ধান করা একান্ত প্রয়োজন বলে মনে করতেন। আর তাই তিনি তাঁর একাত্ম মানবতাবাদে, মানুষের পরস্পর দ্বন্দ্ব-সংঘর্ষের পরিসরকে মানবতার সমন্বয় এবং আত্ম্যানুভবের পরিভাষায় মানব দর্শনকে প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর এই দর্শনে ব্যক্তিকে সমাজ-দেশ-রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত করেন। তিনি স্পষ্ট ভাবে দেখান, ভারতীয় সমাজ পরিবারকে বর্জন করে কখনই দাঁড়িয়ে থাকতে পরে না। ব্যক্তির যেমন পরিবারের প্রতি দায়িত্ব থাকে, ঠিক তেমনি পরিবার তার অধিকারকে সুরক্ষিত করে। আবার পরিবার, সামজের প্রতি কর্তব্য পালন করলে, সমাজও পরিবারের অধিকারকে সুরক্ষিত করে। ঠিক তেমনি সমাজ, রাষ্ট্রের জন্য কর্তব্য পালন করে আর রাষ্ট্র, সমাজের অধিকারকে সুরক্ষিত করে। এই ভাবেই মানবজাতি পরস্পরের মধ্যে মেলবন্ধনে একাত্মভাবের প্রতি বিশ্বাসের নাম হল মানবাতাবাদ। সকালের কাছে এক সত্যকে অনুভব করার নাম হল একাত্ম মানবদর্শন।   

     

     দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের , Twitter এবং Google News পেজ।

  • Goddess Durga: দেবী দুর্গার নয়টি রূপ কী কী? জেনে নিন তাঁদের মাহাত্ম্য

    Goddess Durga: দেবী দুর্গার নয়টি রূপ কী কী? জেনে নিন তাঁদের মাহাত্ম্য

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভগবান শ্রী রামচন্দ্র রাবণকে বধ করার জন্য দেবী দুর্গার অকালবোধন করেছিলেন। এই নিয়ম বা প্রথা মেনে শারদীয়া দুর্গাপুজো করে থাকে বাঙালি সমাজ। কিন্তু দুর্গাপুজোর আসল সময় হল বসন্ত ঋতুতে, যা দেবী বাসন্তীর পুজো হিসেবে পরিচিত। নবরাত্রির সঙ্গে দেবী দশভূজার একটি বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। তিথি-নক্ষত্র মিলিয়ে রীতিনীতির মধ্যেই পুজো করা হয়। বসন্ত ঋতুতে চৈত্র মাসে যে নবরাত্রি পালন করা হয়, তাতে দেবী দুর্গাকে (Goddess Durga) নয়টি অবতারে পুজো করা হয়।

    কবে পালিত হয়?

    চৈত্র নবরাত্রি পালিত হয় চৈত্র মাসের শুক্ল পক্ষের প্রতিপদ তিথিতে। এই সময় মা দুর্গা (Goddess Durga) নয় রকম অবতারে পূজিতা হন। এই পুজো পশ্চিমবঙ্গে যেমন বাসন্তী পুজো নামে পরিচিত, ঠিক তেমনি মহারাষ্ট্রের কোঙ্কণে চৈত্র নবরাত্রিকে গুড়ি পদওয়া বলা হয়। আবার দক্ষিণ ভারতে নবরাত্রি উগাদি নামেও পরিচিত। নবরাত্রি পালনের সঙ্গে বসন্তকালীন চৈতালি ফসল কাটার একটা সম্পর্ক রয়েছে। এতে ভক্তের মনের বাসনা পূর্ণ হয় বলে বিশ্বাস ও আস্থা রয়েছে।

    দেবীর নয় অবতার

    দেবী বাসন্তীর ন’টি অবতার হল, দেবী শৈলপুত্রী, দেবী ব্রহ্মচারিণী, দেবী চন্দ্রঘণ্টা, দেবী কুস্মাণ্ডা, দেবী স্কন্ধমাতা, দেবী কাত্যায়নী, দেবী কালরাত্রি, দেবী মহাগৌরী, দেবী সিদ্ধিদাত্রী। নয় দিন ধরে পুজো করে মায়ের কাছে বর চেয়ে অশুভ শক্তির পরাজয় এবং শুভ শক্তির জাগরণের জন্য কামনা করা হয়। সংসারের শ্রীবৃদ্ধি, অর্থধন লাভ, সন্তানদের সাফল্য, পারবারিক সুখ সমৃদ্ধি এবং নারী শক্তির জাগরণের আশায় ভক্তরা এই নবরূপে দেবী বাসন্তী মায়ের পুজো করে থাকেন। বলা হয়ে থাকে, দেবী দুর্গা (Goddess Durga) মা নৌকাতে করে পরিবারের সঙ্গে মর্ত্যে বাপের বাড়িতে আসেন। নবরাত্রির পর আবার কৈলাসে পাড়ি দেন মা দুর্গা।

    দেবী শৈলপুত্রী

    দেবী শৈলপুত্রী হলেন হিমালয়ের কন্যা। তাঁর স্বামী হলেন ভগবান শিব। তাঁর দুই সন্তান কার্তিক এবং গণেশ। দক্ষরাজের কন্যা হলেন সতী। সতীর অপর নাম শৈলপুত্রী। এই দেবীর পুজো করা হয় নবরাত্রির (Chaitra Navratri 2023) প্রথম দিনে।

    দেবী ব্রহ্মচারিণী

    দেবী ব্রহ্মচারিণী হলেন মা দুর্গার (Goddess Durga) অবতার। তাঁর পুজো করা হয় নবরাত্রির দ্বিতীয় দিনে। দেবী দুর্গার তপস্যার প্রতীক হলেন দেবী ব্রহ্মচারিণী। তিনি ভগবান ব্রহ্মার চলার পথে সাধনা করে সিদ্ধিলাভ করেন।

    দেবী চন্দ্রঘণ্টা

    দেবী চন্দ্রঘণ্টা হলেন দেবী দুর্গার (Goddess Durga) আরেক রূপ। বাঘের উপর উপবিষ্ট থাকেন। অসুর বিনাশিনী দেবী। দশ হাতে পদ্ম, গদা, ত্রিশূল, তলোয়ার, তীরধনুক ইত্যাদি দশ অস্ত্রে সুসজ্জিত থাকেন। দেবীর মস্তকে অর্ধচন্দ্র অবস্থান করে। তাই দেবীকে চন্দ্রঘণ্টা নামে ডাকা হয়।

    দেবী কুস্মাণ্ডা

    দেবী কুস্মাণ্ডা হলেন চতুর্থ অবতার। এই দেবী স্বয়ং ব্রহ্মাণ্ডকে সৃষ্টি করেছেন। তাঁর অনাহত চক্রে মানুষকে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী করেন।

    দেবী স্কন্দমাতা

    দেবী স্কন্ধ হলেন পঞ্চম অবতার। তিনি ভক্তের কাছে মুক্তি এবং শক্তির প্রতীক। তিনি এই রূপে সিংহবাহনা। ত্রিনয়নী এবং চারটি মস্তকে সজ্জিত। স্কন্দের জননী হওয়ায় তাঁকে স্কন্দমাতা বলা হয়।

    দেবী কাত্যায়নী

    দেবী কাত্যায়নী হলেন মহিষাসুরমর্দিনী। তিনি হলেন মায়ের ষষ্ঠ অবতার। সকল অশুভ শক্তিকে পরাজয় করে অসুরদের বিনাশ করে থাকেন। বৈদিক যুগে কাত্যায়ন নামে এক ঋষি ছিলেন। তাঁর সূত্রেই এই নাম।

    দেবী কালরাত্রি

    দেবী কালরাত্রি হলেন দুর্গার (Goddess Durga) সপ্তম অবতার। সব রকম রাক্ষস এবং ভূতেদের বিনাশ করে থাকেন এই দেবী।

    দেবী মহাগৌরী

    মহাগৌরী হলেন দেবীর অষ্টম অবতার। তিনি হলেন ভক্তের সমৃদ্ধি এবং সুখ প্রদানের দেবী।

    দেবী সিদ্ধিদাত্রী

    সিদ্ধিদাত্রী দেবী হলেন মহা সিদ্ধি প্রদানের দেবী। নবরাত্রির নবম অবতার এবং ভগবান শিবের পত্নী। সিদ্ধিদাত্রীকে বলা হয় শিবের অর্ধাঙ্গিনী দেবী।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।

  • Tarkeswar: শ্রাবণের প্রথম সোমবার! শিবভক্তদের ভিড়ে ঠাসা তারকেশ্বর, ৬ জোড়া ট্রেন পূর্ব রেলের

    Tarkeswar: শ্রাবণের প্রথম সোমবার! শিবভক্তদের ভিড়ে ঠাসা তারকেশ্বর, ৬ জোড়া ট্রেন পূর্ব রেলের

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: শ্রাবণের প্রথম সোমবার। দেশজুড়ে কোটি কোটি ভক্ত আজ মেতেছেন দেবাদিদেব মহাদেবের আরধনায়। পুরাণ বলে, শ্রাবণের সোমবার হল শিবের জন্মবার। তাই এইসময় মহাদেব ভক্তদের প্রতি বিশেষ প্রসন্ন হন। পশ্চিমবঙ্গের সবচেয়ে জনপ্রিয় শৈব তীর্থ তারকেশ্বর (Tarkeswar)। ফি বছর লাখ লাখ ভক্ত পায়ে হেঁটে জল নিয়ে যান মহাদেবের উদ্দেশে। চলতি বছরের শ্রাবণের পয়লা সোমবারে লক্ষাধিক পূর্ণাথীর ভিড় দেখা গেল তারকেশ্বর মন্দিরে। 

    চলতি বছরে শ্রাবণ মাসে ৮টি সোমবার পাবেন ভক্তরা

    প্রথা অনুযায়ী, মূলত প্রতি বছর গুরু পূর্ণিমার দিন থেকে শুরু হয় এখানে শ্রাবণী মেলা। রাখী পূর্ণিমার দিন পর্যন্ত চলে মেলা। বাংলা পঞ্জিকা মতে, চলতি বছরের শ্রাবণ মল মাস। এবছর তাই মোট ৮টি সোমবার পাবেন ভক্তরা মহাদেবের মাথায় জল ঢালতে। ১৭ আষাঢ় অর্থাৎ গুরু পূর্ণিমার দিন থেকে শুরু হয়েছে শ্রাবণী মেলা, দুই মাস চলবে এই মেলা। শেষ হবে আগামী ১২ ভাদ্র রাখী পূর্ণিমার দিন।

    তীর্থযাত্রীদের কথা মাথায় রেখে ৬ জোড়া অতিরিক্ত ট্রেন চালাচ্ছে পূর্ব রেলওয়ে 

    লাখ লাখ ভক্ত পাড়ি দেবেন তারকেশ্বরের (Tarkeswar) উদ্দেশে। তাই তাদের যাতায়তে যেন কোনও অসুবিধা না হয়, তার প্রতি বিশেষ দৃষ্টি দিয়েছে ভারতীয় রেল। মোট ৬ জোড়া অতিরিক্ত ট্রেন চালানো হচ্ছে তারকেশ্বরের রুটে। প্রশাসনের তরফে জানা গিয়েছে, মেলা উপলক্ষে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে পূর্ণার্থীদের সুরক্ষার স্বার্থে। তারকেশ্বরের (Tarkeswar) মূল মন্দিরে প্রবেশের আগে মোট আটটি ড্রপ গেট করেছে প্রশাসন। রয়েছে সাতটি পুলিশি সহায়তা ক্যাম্প, চারটি স্বাস্থ্য পরিষেবা ক্যাম্প। পাশাপাশি মন্দির সংলগ্ন দুধপুকুর হল ভক্তদের অন্যতম আস্থার কেন্দ্র। এখানে স্পিড বোট সহ সর্বক্ষণ হাজির থাকছে বিপর্যয় মোকাবিলার একটি দল। ২৪ ঘণ্টার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে ফায়ার ব্রিগেডের একটি টিম। মোতায়েন করা হয়েছ বোম্ব ডিসপোশাল টিমও। তীর্থযাত্রীদের কথা মাথায় রেখে রাস্তায় পর্যাপ্ত পানীয় জল ও আলোর ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • Shravan 2023: ৩০ নয়, এবছর শ্রাবণ মাস ৫৯ দিনের! ১৯ বছর পর ফিরে এলো বিরল যোগ

    Shravan 2023: ৩০ নয়, এবছর শ্রাবণ মাস ৫৯ দিনের! ১৯ বছর পর ফিরে এলো বিরল যোগ

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: শ্রাবণ মাস (Shravan 2023) শিবভক্তদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র। দেশ জুড়ে দেবাদিদেবের বিশেষ আরাধনা সম্পন্ন হয় এই মাসে। মাইলের পর মাইল হেঁটে কাঁধে জল নিয়ে শিবভক্তরা দেবাদিদেবের মন্দিরের উদ্দেশে যান। এ বড়ো চেনা দৃশ্য। আমাদের বাংলায় তারকেশ্বরে এসময় তিল ধারণের জায়গা থাকে না। শ্রাবণ মাসের বৃষ্টিকে ভগবান শিবের আশীর্বাদ বলে মানেন ভক্তরা।

    হিন্দু শাস্ত্রে চাতুর্মাসের তাৎপর্য

    শাস্ত্র বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সময়ের বৃষ্টি হল জীবনের পুনর্নবীকরণের প্রতীক। আবার পৌরাণিক বিশ্বাস অনুসারে, চাতুর্মাসের সময় ভগবান বিষ্ণু ক্ষীরসাগরে শয়ন করেন। চলতি বছরের হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুযায়ী শ্রাবণ মাস (Shravan Mass) বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। এবছরে শ্রাবণ মাস শুরু হবে ৪ জুলাই থেকে এবং শেষ হবে ৩১ অগাস্ট। অর্থাৎ শ্রাবণ মাস ৩০ দিনের পরিবর্তে ৫৯ দিনের হবে। এই কারণে এ বছর ৪টির পরিবর্তে ৮টি শ্রাবণ সোমবার পড়তে চলেছে। শাস্ত্র বিশেষজ্ঞরা বলছেন এমনটা শেষবার হয়েছিল ২০০৪ সালে (Adhimas 2023)। অর্থাৎ ১৯ বছর আগে। 

    কেন এই বছরের শ্রাবণ (Shravan 2023) বিশেষ?

    হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী, প্রায় ১৯ বছর পর বিক্রম সংবত ২০৮০ অর্থাৎ ২০২৩ সালে শ্রাবণ হবে অধীমাস। হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুসারে, এই বছরটি ১২ নয়, ১৩ মাসের হতে চলেছে। আগামী ৪ জুলাই থেকে শ্রাবণ মাস শুরু হবে। ৩১ অগাস্ট শ্রাবণের দুই মাস পূর্ণ হবে। অধিমাস শুরু হবে ১৮ জুলাই থেকে যা চলবে ১৬ অগাস্ট পর্যন্ত চলবে। হিন্দু ধর্ম অনুসারে, অধিমাসে কোনও শুভকাজ করা যায়না। এই অশুভ সময়ে বাড়ি নির্মাণ, গৃহ প্রবেশ, অন্নপ্রাশন, দেবতা স্থাপন, কূপ খনন ইত্যাদি সব কিছুই বন্ধ রাখা উচিত। শাস্ত্র বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, শ্রাবণ অধিমাসের (Adhimas 2023) কাকতালীয় ঘটনা ঘটেছিল বিক্রম সংবত ১৯৪৭, ১৯৬৬, ১৯৮৫, ২০০৪ সালে। এবার এই গুরুত্বপূর্ণ মাস শুরু হবে এই বছরেও। শুধু ২০২৩ সালেই নয়, পরবর্তী ২০৪২ ও ২০৬১ সালেও পালিত হবে শ্রাবণ অধিমাস। অর্থাৎ প্রতি ১৯ বছর পরে হবে অধিমাস (Adhimas 2023)। এ বছর তাই চাতুর্মাস হবে পাঁচ মাস। 

    ভক্তরা ৮টি সোমবার পাবেন শিবের মাথায় জল ঢালতে

    শ্রাবণ মাসে (Shravan 2023) বিশেষভাবে ভক্তরা মন্দিরে ভগবান মহাদেবের মূর্তি বা শিবলিঙ্গে দুধ, জল এবং বেল পাতা দিয়ে পুজো করে। শিব মন্দিরে ভগবানকে দুধ, দই, মধু, ঘি এবং পবিত্র জল দিয়ে স্নান করিয়ে রুদ্রাভিষেক করা হয়। শাস্ত্র বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এবছরে শিবলিঙ্গকে উত্তর দিকে মুখ করে রেখে উপাসনা করতে, এতে ফল মিলবে। এর সঙ্গে সঙ্গে প্রার্থনা এবং মন্ত্র উচ্চারণ করতে হবে।

    আরও পড়ুন: গোত্রের উদ্ভব হল কী করে? কী এর গুরুত্ব?

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।

LinkedIn
Share