Category: পরম্পরা

Get updated History and Heritage and Culture and Religion related news from the Madhyom news portal madhyom.com, West Bengal leading news portal Madhyom.com

  • Durga Puja 2023: দেবী দুর্গার দশ হাতে দশ অস্ত্রের মাহাত্ম্য কী? জেনে নিন বিস্তারিত

    Durga Puja 2023: দেবী দুর্গার দশ হাতে দশ অস্ত্রের মাহাত্ম্য কী? জেনে নিন বিস্তারিত

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দেবী দশভূজা দুর্গা মায়ের পুজো (Durga Puja 2023) আর মাত্র কয়েক দিন বাকি। মৃৎশিল্পীদের কাজের ব্যস্ততা তুঙ্গে। আকাশে বাতাসে বইতে শুরু করেছে আগমনীর বার্তা। কিন্তু মা দশভূজার দশ হাতে অসুর বধের জন্য যে অস্ত্র দেওয়া হয়, তার তাৎপর্য কী? অস্ত্রের বাহ্যিক এবং অন্তর্নিহিত মাহাত্ম্য কী? অশুভ শক্তিকে জয় করে, শুভ শক্তির জাগরণে এই অস্ত্রের গুরুত্ব কেমন? আসুন জানি এই অস্ত্রের উৎস এবং গুরুত্ব।

    ১. ত্রিশূল

    পুরাণে কথিত রয়েছে যে মহাদেব নিজে ত্রিশূল দিয়েছিলেন। এই ত্রিশূলের তিন মাথায় তিন রকম গুণ রয়েছে। সত্ত্ব, রজঃ এবং তমঃ। দেবী দুর্গা এই ত্রিশূল দিয়ে মহিষাসুরকে বধ করেন।

    ২. সুদর্শন চক্র

    দেবী দুর্গার (Durga Puja 2023) হাতে আরেক অস্ত্র হল সুদর্শন চক্র। ভগবান বিষ্ণু ত্রিকালজয়ী মহিষাসুরকে বিনাশ করার জন্য এই চক্র প্রদান করেন। জগতের সকল সৃষ্টি এবং বিনাশের ভার অর্পিত থাকে এই সুদর্শন চক্রের উপর।

    ৩. পদ্ম ফুল

    সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মা স্বয়ং নিজে দেবী দুর্গার হাতে পদ্ম ফুল তুলে দেন। এই পদ্ম ফুল হল মহাজ্ঞান বা প্রজ্ঞার প্রতীক। পদ্ম মনের আধ্যাত্মিক ভাব জাগরণে বিশেষ ক্রিয়াশীল থাকে।

    ৪. তীর-ধনুক

    তীর-ধনুক শক্তির গতিময়তাকে বিশেষ গতি দান করে। দেবী দুর্গাকে (Durga Puja 2023) পবনদেব এবং সূর্যদেব উভয়ে মিলে এই অস্ত্র প্রদান করেন। মহাজগতে সকল শক্তির আধার হল দেবী দুর্গা। তাই এই অস্ত্র বিশেষ ভাবে শক্তির আধার।

    ৫. তলোয়ার

    তলোয়ার হল বুদ্ধির প্রতীক। যুদ্ধের ক্ষেত্রে বুদ্ধির তীক্ষ্ণতা অনেক বেশি প্রয়োজন থাকে। দেবী দুর্গাকে এই অস্ত্র দান করেন গণেশ। এই অস্ত্র দিয়ে বিনাশ বা অশুভ শক্তিকে ধ্বংস করা হয়। অসুরদের বিনাশ করে জগত জননী কল্যাণ সাধন করে থাকেন এই অস্ত্রের মাধ্যমে।

    ৬. বজ্র

    দেবরাজ ইন্দ্র স্বয়ং দেবী দুর্গাকে (Durga Puja 2023) এই অস্ত্র প্রদান করেন। মেঘ থেকে বজ্র ঘর্ষণ হলে যেমন শক্তি অর্জন হয়, সেই রকম ভাবে অশুভকে জয় করতে শক্তির উদ্ভব করে বজ্র। মহিষাসুরকে বধ করতে দেবী দুর্গা যখন নানান অস্ত্রে সজ্জিত হচ্ছিলেন, সেই সময় দেবী বজ্র অস্ত্রে সজ্জিত হন। এই বজ্র হল দৃঢ়তা এবং সংহতির প্রতীক। জীবন লক্ষ্যকে অবিচল রাখার জন্য এই অস্ত্রের ব্যবহার করা হয়।

    ৭. বর্শা

    আগ্নিদেব নিজে দেবী দুর্গার হাতে বর্শা প্রদান করেন। সত্য-মিথ্যা নির্ধারণের জন্য বর্শা অস্ত্র কাজ করে থাকে। এই বর্শা প্রজ্বলিত শক্তিকে লক্ষ্যের দিকে নিয়ে যেতে ব্যাপক ক্রিয়াশীল থাকে।

    ৮. সর্প

    নাগ দেবতা শেষনাগ নিজে অসুরকে দমন করতে নাগপাশ দিয়েছেন। মনের ভাবকে শুদ্ধ করতে চেতনার প্রয়োজন হয়, তাই হল সাপ অস্ত্রের প্রতীক। এই চেতনা সর্প দেবতার গুণে সাধকের নিজের সাধনা নিম্নস্তর থেকে উচ্চস্তরের দিকে এগিয়ে যায়।

    ৯. কুঠার

    সমাজের জন্য যা হিতকর নয়, তাকে ধ্বংস করতে কুঠার অস্ত্র ব্যবহার করা হয়। বিশ্বকর্মা স্বয়ং এই অস্ত্র প্রদান করেন। সকল ভয় ভীতিকে দূর করতে কুঠার অস্ত্রের প্রয়োজন।

    ১০. গদা

    যমরাজ নিজে দেবী দুর্গাকে গদা দান করছেন। এই গদা হল অস্ত্রের প্রতি আনুগত্য এবং রক্ষার প্রতীক। এই গদা হল কালদণ্ডের প্রতীক।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।

  • Bengali Sweet: শতবর্ষ পেরিয়েও সমান জনপ্রিয় সিউড়ির তাঁতিপাড়ার জিলিপি! লুকিয়ে কোন রহস্য?

    Bengali Sweet: শতবর্ষ পেরিয়েও সমান জনপ্রিয় সিউড়ির তাঁতিপাড়ার জিলিপি! লুকিয়ে কোন রহস্য?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পশ্চিমবঙ্গে প্রায় অনেক জেলাতেই তাদের নিজস্ব জনপ্রিয় মিষ্টি (Bengali Sweet) আছে। যেমন বীরভূমের মোরব্বা, বর্ধমানের মিহিদানা, সীতাভোগ, বাঁকুড়ার মেচা সন্দেশ সহ আরও অনেক কিছু। কিন্তু অনেকেরই অজানা বীরভূমের মোরব্বা ছাড়াও আরও একটি মিষ্টি জনপ্রিয়। সেটি হল সিউড়ির তাঁতিপাড়ার বিউলির ডালের জিলিপি। যা কিনা ১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে জনপ্রিয়। তাই এই মিষ্টিটি সিউড়ির মোরব্বার পাশাপাশি নিজস্ব একটি ঐতিহ্য বহন করে। কিন্তু তা এখনও থেকে গিয়েছে অনেকের অজানা।

    তাঁতিপাড়ার জিলিপির ইতিহাস কী? কেন এটি জনপ্রিয়?

    প্রায় এক শতক পেরিয়ে গেলেও আজও এই জিলিপি তার ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। বীরভূমের একটি স্বনামধন্য মুসলিম ধর্মীয় স্থান “পাথর চাপুরি”। এখানে দাতাবাবার উদ্দেশে যে মেলা অনুষ্ঠিত হয়, তা বর্তমানে সমগ্র দেশ এমনকী বিশ্ব জুড়ে আন্তর্জাতিক মর্যাদা পেয়েছে। এই মেলা থেকেই জনপ্রিয় হয় তাঁতিপাড়ার দে পরিবারের জিলিপি (Bengali Sweet)। এই পরিবারের বর্তমান প্রজন্ম ও বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্য অমৃতলাল দে জানান, তাঁতিপাড়া থেকে খাঁকি বাবার মাধ্যমেই পাথর চাপুরির জন্য মিষ্টির দোকান ডেকে এনেছিলেন স্বয়ং দাতাবাবা। এই খাঁকি বাবা ছিলেন বীরভূমের বক্রেশ্বরের একজন সাধক। তিনি তাঁতিপাড়া থেকে জিলিপি নিয়ে দাতাবাবাকে উপহার দেন। দু’জনের মধ্যে একটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কও ছিল বলে জানা যায়। তার পর থেকেই দাতাবাবার আমন্ত্রণে পাথর চাপুরি মেলায় এই দে পরিবারের বিখ্যাত জিলিপির দোকান খোলা হয়। আর ধীরে ধীরে তা জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। প্রথম জিলিপি দাতাবাবাকে তুলে দিয়ে তারপরে মেলায় বেচাকেনা করত দে পরিবার। এখনও পর্যন্ত সেই রীতি চলে আসছে ১০০ বছর ধরে। প্রথমে দাতাবাবার মাজারে জিলিপি উৎসর্গ করে তবেই মেলাতে সাধারণের জন্য বিক্রি শুরু হয়।

    তাঁতিপাড়ার জিলিপি কতটা আলাদা?

    সাধারণত এই জিলিপি অন্যান্য জিলিপির থেকে অনেকটাই আলাদা। এই জিলিপি তৈরি হয় বিউলির ডাল আর চালগুঁড়ো সহযোগে। মেলাতে দোকান করার এক মাস আগে থেকে শুরু হয় প্রস্তুতি। প্রথমে বিউলির ডাল, আতপ চালের গুঁড়ো তৈরি করতে হয়। ডাল ও চাল যোগে তৈরি হয় এই অনন্য জিলিপি (Bengali Sweet), যা দূর দূরান্তের অনেক মানুষের পছন্দের খাবার। মেলা ছাড়াও বারো মাস পাওয়া যায় এই জিলিপি।

    কোথায় এই তাঁতিপাড়া?

    বীরভূম জেলার মধ্যে অবস্থিত সতীর একান্ন পিঠের অন্যতম পিঠ বক্রেশ্বর ধাম। এর কাছে অবস্থিত তাঁতিপাড়া। বীরভূমের সদর শহর সিউড়ি থেকে মাত্র ২০ কিমি দূরে বাস সহযোগে পৌঁছানো যায় এখানে। যেখানে সকাল সকাল এই বিউলির ডালের জিলিপির (Bengali Sweet) দেখা মেলে।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।

  • Belur Math: দুর্গাপুজোর নির্ঘণ্ট প্রকাশ বেলুড় মঠের, কুমারী পুজো কটায় শুরু?

    Belur Math: দুর্গাপুজোর নির্ঘণ্ট প্রকাশ বেলুড় মঠের, কুমারী পুজো কটায় শুরু?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: হাতে মাত্র কয়েকটা দিন বাকি, তারপরেই বাঙালি মেতে উঠবে দুর্গাপুজোয় (Belur Math)। সারা পৃথিবীতে  ছড়িয়ে থাকা বাঙালিদের কাছে দুর্গাপুজোর উৎসব হল শ্রেষ্ঠ। কলকাতা থেকে পশ্চিমবঙ্গের প্রত্যন্ত গ্রাম অথবা লন্ডন থেকে নিউইয়র্ক, সর্বত্রই বাঙালিরা দুর্গাপুজোর জন্য অপেক্ষা করে থাকেন। বেলুড় মঠের (Belur Math) দুর্গাপুজোর এক আলাদা গুরুত্ব রয়েছে। পুজোকে কেন্দ্র করে ভক্তদের ব্যাপক সমাগম সেখানে লক্ষ্য করা যায়। ইতিমধ্যে বেলুড় মঠ দুর্গাপুজোর নির্ঘণ্ট ঘোষণা করেছে। বেলুড় মঠে পুজোর কয়দিন সন্ধ্যায় শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের আরতির পরে দেবী দুর্গার আরতি করা হয়। ভোগপ্রসাদ বিতরণ করা হয় ভক্তদের মধ্যে। দিনভর চলে নানা ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সমেত নাম সংকীর্তন। পাশাপাশি বেলুড় মঠের কুমারী পুজো খুব জাঁকজমকপূর্ণভাবে হয়ে থাকে। 

    এক নজরে দেখে নিন বেলুড়মঠে (Belur Math) দুর্গাপুজোর নির্ঘণ্ট

    ২১ অক্টোবর ২০২৩, শনিবার সপ্তমী, পুজো শুরু ভোর সাড়ে ৫টা

    ২২ অক্টোবর ২০২৩, রবিবার মহাষ্টমী, পুজোর শুরু হবে ভোর সাড়ে ৫টা
    সকাল ৯টায় শুরু হবে কুমারী পুজো, আর সন্ধিপুজো হবে সন্ধ্যা ৭টা ৩৬ মিনিট থেকে রাত্রি ৮টা ২৪ মিনিট পর্যন্ত

    ২৩ অক্টোবর ২০২৩, সোমবার নবমী, পুজো শুরুর সময় ভোর সাড়ে ৫টা

    বেলুর মঠে (Belur Math) দুর্গাপুজোর ইতিহাস জানেন?

    জানা যায়, ১৯০১ সালে স্বামী বিবেকানন্দ বেলুড় মঠে শারদীয়া দুর্গাপুজোর সূচনা করেন। ওই বছর থেকেই বেলুড়মঠে অষ্টমী পুজোর দিন পাঁচ থেকে সাত বছর বয়সী এক কন্যা কুমারীকে প্রতিমার পাশে বসিয়ে পুজো করা হয়। প্রসঙ্গত, অধিকাংশ দুর্গা পুজোতে দেখা যায় নবমীর দিনে কুমারী পুজোর রীতি। তবে বেলুড় মঠে কুমারী পুজো হয় অষ্টমীর দিনেই। বেনারসি শাড়ি পরিয়ে কুমারীকে মা দুর্গা জ্ঞানে পুজো করা হয়। এখানে বয়স অনুযায়ী কুমারীদের নামকরণও হয়। ১৯০১ সালে স্বামী বিবেকানন্দ সারদা মায়ের উপস্থিতিতে ৯ জন বালিকাকে কুমারী রূপে পুজো করেছিলেন। জানা যায়, স্বামী বিবেকানন্দ নিজে কুমারীদের পায়ে পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ করেন এবং পুজো শেষে তাদের প্রণামীও দেন। স্বামীজীর পুজো পদ্ধতি অনুসরণ করে আজও একইভাবে সমান রীতিতে সেখানে কুমারী পুজো চলছে (Belur Math)।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।

  • Lord Kartikeya: দক্ষিণ ভারতে কার্তিকের মন্দিরের কাছাকাছি শিবের মন্দির দেখা যায় কেন?

    Lord Kartikeya: দক্ষিণ ভারতে কার্তিকের মন্দিরের কাছাকাছি শিবের মন্দির দেখা যায় কেন?

    স্বামী অলোকেশানন্দ

    বিয়ের পর দেবসেনার সঙ্গে কৈলাসে বাস করছিলেন কার্তিক। কিন্তু মাঝে মাঝে ভাই গণেশের সঙ্গে একটু আধটু তর্ক-বিতর্ক ও বাদ-প্রতিবাদের মধ্যে পড়তে হত। এরকমই একদিন তর্ক-বিতর্কে দুই ভাইয়ের মধ্যে ঠিক হল, কে আগে সারা পৃথিবী ঘুরে এসে মা পার্বতীর থেকে পুরস্কার নিতে পারে? কার্তিক (Lord Kartikeya) শুনেই তাঁর বাহন ময়ূরকে নিয়ে পৃথিবী ঘুরতে বেরিয়ে পড়েন। ঘুরে এসে দেখেন, পার্বতী মায়ের পুরস্কার, মুক্তোর মালা নিয়ে গণেশ মায়ের কোলে বসে আছেন। কারণ মা পার্বতী হলেন বিশ্বব্রহ্মাণ্ড। তাঁকে ঘুরলেই সব ঘোরা হয়ে যায়। এই ঘটনা আমরা সকলেই জানি।

    দক্ষিণ ভারতে অন্য কাহিনী (Lord Kartikeya) 

    কিন্তু তামিলনাড়ুতে বা দক্ষিণ ভারতে এই বিষয়ে অন্য একটি কাহিনী শোনা যায়। যখন গণেশ ও কার্তিক তর্ক-বিতর্ক করছিলেন, সেই সময় কোথা থেকে নারদ আমের মত দেখতে একটি ফল নিয়ে উপস্থিত হলেন। দুই ভাই জানতে চাইলেন, এটা কী বস্তু? নারদ বললেন, এটা জ্ঞান ফল। খেলে বুদ্ধি বাড়বে আবার আত্মজ্ঞান বাড়বে। শুনে দু’জনেই দাবি করতে লাগলেন তাঁদের এটি দিতে হবে। বলা বাহুল্য, সেই জ্ঞান ফল নিয়ে দুই ভাইয়ের মধে তর্ক-বিতর্ক আরম্ভ হয়ে গেল। তখন নারদ বললেন, ঠিক আছে, যে সবার আগে ত্রিভুবন ঘুরে আসতে পারবে, তাকে এই ফলটা দেব। শুনেই কার্তিক (Lord Kartikeya) রাজি হয়ে তাঁর ময়ূরের পিঠে উঠে বেরিয়ে পড়লেন ত্রিভুবন ঘুরতে। গণেশ অনেক চিন্তাভাবনা করে মা পার্বতী ও পিতা মহাদেবকে ডেকে কাছে দাঁড় করালেন। মা ও বাবাকে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমরা ত্রিভুবন পতি? তাঁরা বললেন, হ্যাঁ। ব্যাস, গণেশ তাঁর ইদুরের পিঠে চেপে মা-বাবাকে একসঙ্গে দাঁড় করিয়ে তিন পাক ঘুরে নিলেন। এই ঘটনা নারদের সামনেই হল। তাই নারদ ফলটি গণেশকেই দিয়ে দিলেন। এরপর যখন কার্তিক ত্রিভুবন ঘুরে এলেন, দেখলেন যে ফলটি গণেশের হাতে। কার্তিক জিজ্ঞাসা করাতে বললেন, মা ও বাবা ত্রিভুবন পতি। তাঁদেরই তিন পাক ঘুরে ত্রিভুবন ঘুরে নিলাম। এই না দেখে ও শুনে খুব অভিমান সহকারে স্ত্রী দেবসেনা ও বাহন ময়ূরকে নিয়ে কার্তিক ঘুরতে ঘুরতে চলে আসেন দক্ষিণ ভারতে তামিলনাড়ুর পালানিতে।

    কার্তিক (Lord Kartikeya) এখানে ছয়টি জায়গায় থাকতেন

    দক্ষিণ ভারতের তামিল রাজ্য কার্তিকের (Lord Kartikeya) বাসস্থান। কার্তিক এখানে ছয়টি জায়গায় থাকতেন বা আছেন বলে দক্ষিণ ভারতের মানুষ বিশ্বাস করেন। এই ছয়টি হল ১) স্বামীমালাই মুরুগান্‌ মন্দির  ২) পালানী মুরুগান্‌ মন্দির ৩) থিরুচেন্দুর মুরুগান্‌ মন্দির ৪) থিরুপ্‌পারান্‌কুন্ড্রাম্‌ মুরুগান্‌ মন্দির ৫) থিরুথানি মুরুগান্‌ মন্দির ও ৬) পাঝামুদিরচোলাই মুরুগান্‌ মন্দির। কার্তিকের দু’জন স্ত্রী বল্‌লী ও দৈবানৈ (দেবসেনা)। দেবসেনার সঙ্গে আগেই বিয়ে হয়েছেল। কিন্তু  ঘুরতে ঘুরতে যখন পাঝামুদিরচোলাই এলেন, জায়গাটা ট্রাইবাল এরিয়া ছিল। সেখানকার উপজাতি লোকেরা তাঁকে মুরুগন্‌ বলে শ্রদ্ধা জানায়, আদর-আপ্যায়ন শুরু করে। তাকে খুব শ্রদ্ধা ও ভালবাসে। 
    একদিন সেখানে স্থানীয় উপজাতি রাজার মেয়ে, যার গায়ের রঙ কালো, সেই বল্‌লীকে দেখে তাঁর রূপে আকৃষ্ট হন কার্তিক। কিন্তু কার্তিক কয়েক বার চেষ্টা করেও বল্‌লীর মন জয় করতে না পেরে ভাই গণেশকে ডেকে সব বলেন। গণেশ তখন হাতির রূপ ধরে বল্‌লীর কাছে যান। তখন সেখানে বৃদ্ধর রূপ ধরে কার্তিকও হাজির হয়ে যান। সামনে হাতি দেখে ভয়ে চোখ বুজে বল্‌লী বৃদ্ধরূপী কার্তিককে জড়িয়ে ধরে। কার্তিক বলেন, হাতি আমি তাড়িয়ে দেবো, কিন্তু আমাকে বিয়ে করতে হবে। তাতে বললী রাজি হয়। তারপর চোখ খুলে দেখে, হাতি চলে গেছে, সামনে সুদর্শন যুবক কার্তিক। তারপর বিয়ে হয় তার সাথে।

    কেন কার্তিকের (Lord Kartikeya) মন্দিরের কাছাকাছি শিবের মন্দির?

    সেই থেকে কার্তিক (Lord Kartikeya) এখানেই আছেন। বিবাহ করেছেন এখানে, লোকে তাই বলে তামিলনাডুর জামাই। তামিল রাজ্যে শিব ও কার্তিকের ভক্ত বেশি। তবে বর্তমানে শিবের থেকে মুরুগন অর্থাৎ কার্তিকের প্রভাব বেশি। কার্তিকের মন্দিরের কাছাকাছি শিবের মন্দির দেখা যায়। কারণ কার্তিক যখন তামিলনাডু চলে আসেন, তখন শিব ও পার্বতী তাঁকে এখানে নিতে আসেন। কিন্তু তামিলনাডুর লোকেরা এত ভালোবাসা, আদর-আপ্যায়ন করে রেখেছেন, যে কার্তিক এখান থেকে যেতে চাইলেন না। শিব তখন বললেন, কার্তিক না গেলে আমিও যাবো না। এরপর শিব কার্তিককে নিয়ে এখানে রয়ে গেলেন, আর পার্বতী গণেশকে নিয়ে কৈলাসে বাস করতে লাগলেন। দক্ষিণ ভারতে কার্তিকের মন্দিরের কাছাকাছি শিবের মন্দির দেখা যায় এই কারণেই।

     

    দেশের খবরদশের খবরসব খবরসবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • Janmashtami 2023: ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমীতে দহি-হান্ডি উৎসব পালিত হয় কীভাবে?

    Janmashtami 2023: ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমীতে দহি-হান্ডি উৎসব পালিত হয় কীভাবে?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: হাঁড়িতে দই রেখে সেই হাঁড়ি ভাঙা। সংক্ষেপে এমন উৎসবের নামই হল দহি-হান্ডি উৎসব। এই উৎসব মূলত ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী (Janmashtami 2023) তিথিতে পালিত হয়। এই বছর জন্মাষ্টমীর তিথি পড়েছে সেপ্টেম্বরের ৬ এবং ৭ তারিখ। শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী পালন হবে ৬ তারিখ, আর এর ঠিক পরের দিন হবে দহি-হান্ডি উৎসব। কৃষ্ণ ভক্তরা এই দিনটি অত্যন্ত ভক্তি এবং শ্রদ্ধার সঙ্গে পালন করে থাকেন। উৎসবের এই হাঁড়ি ভাঙার খেলার মধ্যে কপটতার ছল এবং কৌতূক থাকে, যা ভগবান শ্রীকৃষ্ণের অত্যন্ত পছন্দের।

    কেমনভাবে পালিত হয় দহি-হান্ডি উৎসব (Janmashtami 2023)?

    দহি-হান্ডি মূলত উত্তর এবং পূর্ব ভারতের খুব জনপ্রিয় উৎসব। শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমীর (Janmashtami 2023) সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত এই উৎসব। এটি সবথেকে বেশি জনপ্রিয় মহারাষ্ট্রে। আদতে এটি একটি খেলার উৎসব। বড় মাঠের মধ্যে যুবকরা একটি মানব পিরামিডের আকৃতি নিয়ে দাঁড়িয়ে শৃঙ্খল তৈরি করে। এর পর উপরে একটি মাটির হাঁড়িতে দই রেখে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। উঁচুতে দই সমেত হাঁড়ি ভাঙার প্রতিযোগিতাই হল খেলা। যুবক প্রতিযোগীরা একে অপরের কাঁধের উপর উঠে, পিরামিডের শৃঙ্খল তৈরি করে হাঁড়ি ভেঙে থাকে। খেলার সময় ভক্তদের মধ্যে বিপুল উন্মাদনা লক্ষ্য করা যায়। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ দই, মাখন, ননী, দুধ খুব পছন্দ করতেন। তাই এই ঝোলানো মাটির হাঁড়ির মধ্যে কৃষ্ণের পছন্দের খাবারগুলিই রাখা থাকে।

    কীভাবে ভাঙা হয় হাঁড়ি (Janmashtami 2023)?

    দহি-হান্ডি উৎসবে একসঙ্গে অনেক জনের এক একটি দল প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করে থাকে। এক এক দল পিরামিডের মতো নিচ থেকে উপরের হাঁড়ি পর্যন্ত একটি শৃঙ্খল নির্মাণ করে। এরপর একজন এই পিরামিড বেয়ে উপরে উঠে দই, মাখন, ননী সম্বলিত হাঁড়িকে ভেঙে সকলের মধ্যে প্রসাদ বিতরণ করে থাকে। অনেক সময় প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণকারী দলের শৃঙ্খল, সম্বলিত পিরামিড ঠিক করে নির্মাণ করতে না পারলে, হাঁড়িতে হাত পৌঁছানোর আগেই মানব বন্ধনের পিরামিড ভেঙে যায়। তাই খেলায় অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে হাঁড়ি ভাঙতে হয়। এই হান্ডি ভাঙা প্রতিযোগিতা হল ভগবান কৃষ্ণের (Janmashtami 2023) কৌতূকপূর্ণ এবং দুষ্টুময়তার প্রতীকবহ।

    এই বছরের জন্মাষ্টমীর তিথি (Janmashtami 2023)

    হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুসারে ভাদ্র মাসের অন্ধকার পক্ষ কাটিয়ে অষ্টম দিনের মাথায় রোহিণী নক্ষত্র যোগে জগতকে আলোকিত করে মর্তে জন্ম গ্রহণ করেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ। এই বছর জ্যোতিষ শাস্ত্র অনুসারে শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমীর (Janmashtami 2023) তিথি পড়েছে দুই দিন। জন্মাষ্টমীর তিথি ৬ সেপ্টেম্বর বিকাল ৩ টা ৩৭ মিনিট থেকে ৭ সেপ্টেম্বর বিকাল ৪ টা ১৪ মিনিট পর্যন্ত। পাশপাশি রোহিণী নক্ষত্রযোগের তিথির সময় হল ৬ সেপ্টেম্বর সকাল ৯ টা ২০ মিনিট থেকে ৭ সেপ্টেম্বর সকাল ১০ টা ২৫ মিনিট পর্যন্ত। জন্মাষ্টমী পালন হবে ৬ সেপ্টেম্বর এবং দহি-হান্ডি উৎসব পালন হবে ৭ সেপ্টেম্বর।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।

  • Janmashtami 2023: জন্মাষ্টমীর তিথি কখন শুরু? জেনে নিন কীভাবে করবেন ব্রতপালন

    Janmashtami 2023: জন্মাষ্টমীর তিথি কখন শুরু? জেনে নিন কীভাবে করবেন ব্রতপালন

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: হিন্দু পঞ্জিকা মতে, সৌর ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে (Janmashtami 2023) যখন রোহিণী নক্ষত্রের প্রাধান্য হয়, তখন জন্মাষ্টমী পালিত হয়। কথিত রয়েছে, দ্বাপর যুগের শেষদিকে মথুরা নগরীতে অত্যাচারী রাজা কংসের কারাগারে বন্দি দেবকী ও বাসুদেবের কোলে এই মহাপূণ্য তিথিতে জন্ম (Janmashtami 2023) নিয়েছিলেন শ্রীকৃষ্ণ। কংস মামার হাত থেকে মধ্যরাতে নিজের দুধের শিশুকে বন্ধু নন্দর কাছে রেখে দিয়ে আসেন বাবা বাসুদেব। পুরাণ মতে, ছোট্ট গোপাল ধীরে ধীরে যশোদা মায়ের কাছে বেড়ে উঠতে থাকে।  অত্যন্ত দুরন্ত শিশু গোপাল দিনরাত গোটা এলাকা মাতিয়ে রাখত। চুরি করে বাড়ির ক্ষীর, মোয়া খেয়ে নিত। জন্মাষ্টমীতে নতুন পোশাকে সাজিয়ে তোলা হয় গোপালকে।  নানারকমের মিষ্টি ও ক্ষীরে সাজিয়ে দেওয়া হয় নৈবেদ্য। এছাড়া নানারকমের শুকনো খাবারও দেওয়া হয়। অনেকেই আবার ভগবানের সামনে সাজিয়ে দেন ৫৬ রকমের উপাচার। আলোতে আলোতে গোটা বাড়ি সাজিয়ে তোলেন ভক্তেরা। ভক্তদের বিশ্বাস এই পবিত্র তিথিতে ভগবান সমস্ত মনস্কামনা পূরণ করেন। এই উৎসবটি গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসারে, প্রতি বছর মধ্য-আগস্ট থেকে মধ্য-সেপ্টেম্বরের মধ্যে কোনও এক সময়ে পড়ে।

    চলতি বছরের জন্মাষ্টমী (Janmashtami 2023) তিথি কখন শুরু হচ্ছে

    শাস্ত্রবিদরা বলছেন, ভাদ্র মাসের কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী (Janmashtami 2023) তিথি শুরু হচ্ছে ৬ সেপ্টেম্বর। বিকাল ৩টে ৩৭ মিনিটে। অষ্টমী তিথি শেষ হবে ৭ সেপ্টেম্বর বিকেল ৪টে ১৪মিনিটে।  পুরাণ অনুসারে, রাত্রি বারোটায় রোহিণী নক্ষত্রে শ্রীকৃষ্ণের জন্ম হয়েছিল। এই বিশ্বাস অনুসারে, ৬ সেপ্টেম্বর গৃহস্থরা জন্মাষ্টমী (Janmashtami 2023) ব্রত পালন করতে পারেন। বৈষ্ণব সমাজের নিয়ম অনুসারে তাঁরা শ্রী কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী পালন করছে আগামী ৭ সেপ্টেম্বর ।

    পুজোর শুভক্ষণ: জন্মাষ্টমী (Janmashtami 2023) পুজোর শুভ ক্ষণের কথা যদি বলেন, তবে তা মাঝরাত ১২টা ২০ মিনিটে শুরু হবে। চলবে ১২টা ৪৮ মিনিট পর্যন্ত।

    কীভাবে পালন করবেন জন্মাষ্টমী (Janmashtami 2023) ব্রত?

    শাস্ত্র মতে, জন্মাষ্টমীর (Janmashtami 2023) ব্রত পালনে ফল পাওয়া যায়। ভক্তদের বিশ্বাস, শ্রীকৃষ্ণের এই জন্মাষ্টমী উপবাস পালন করলে আর এই জড় জগতে জন্ম, মৃত্যু, ব্যাধি, কষ্ট ভোগ করতে হয় না। পুনর্জন্মও হয়না তাঁর।

    ১) জন্মাষ্টমীর (Janmashtami 2023) আগের দিন নিরমিষ আহার করতে হবে।

    ২। জন্মাষ্টমীর  দিন সকাল থেকে মধ্য রাত্রি পর্যন্ত উপবাস এবং জাগরণ। উপবাস থেকে হরিনাম জপ, কৃষ্ণ লীলা শ্রবণ করুন।

    ৩। উপবাস পালনে সমস্যা থাকলে অবশ্যই দুপুর ১২ টার পরে, ভগবানের কাছে ক্ষমা চেয়ে, একটু দুধ, বা ফল খেতে পারবেন।

     

    দেশের খবরদশের খবরসব খবরসবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • Lord Kartikeya: দেবাদিদেব মহাদেব কেন দেব সেনাপতির পদটি ছেড়ে দিয়েছিলেন কার্তিককে?

    Lord Kartikeya: দেবাদিদেব মহাদেব কেন দেব সেনাপতির পদটি ছেড়ে দিয়েছিলেন কার্তিককে?

    স্বামী অলোকেশানন্দ

    আমি কিছুদিন তামিলনাড়ুতে ছিলাম। এখানে বিভিন্ন ধর্ম ও সম্প্রদায়ের লোক থাকলেও মুরুগন্‌ অর্থাৎ কার্তিকের (Lord Kartikeya) পুজোর খুব প্রচলন আছে। কার্তিক সম্বন্ধে এখানকার মানুষের কাছ থেকে যা জেনেছি, তা সকলকে জানানোর জন্যই আমার এই ছোট একটি লেখা।

    পৌরানিক কাহিনী, কবি কালিদাসের কাব্য এবং এখানকার জনশ্রুতি অনুযায়ী কার্তিকের জন্ম কৃত্তিকা নক্ষত্র তিথিতে। ব্রহ্মার বরে বলীয়ান হয়ে তারকাসুর যখন স্বর্গের দেবতাদের খুব অত্যাচার করতে লাগল, তখন দেবতারা শিবের কাছে একটি পুত্রের জন্য প্রার্থনা করতে লাগলেন। কারণ তারকাসুর বধের জন্য শিবপুত্রের প্রয়োজন, তাও আবার তার বয়স হতে হবে সাতদিন। তারকাসুর সাধনা করে এইরূপ বর পেয়েছিলেন ব্রহ্মার কাছ থেকে।

    সংক্ষেপে কার্তিকের (Lord Kartikeya) জন্ম

    শিব ও পার্বতী সেই সময় গভীর তপস্যায় ধ্যানে মগ্ন ছিলেন। দেবতারা শিবের ধ্যান ভাঙানোর জন্য রতি ও মদনদেবকে পাঠালেন। কিন্তু এদের কামনাময় নৃত্যে ধ্যান ভাঙল না। তখন কামদেব শিবের উপর কামবান ছুড়ে দিলেন। তাতে শিবের ধ্যান ভেঙে গেল। কিন্তু ক্রোধে তাঁর ত্রিনয়ন থেকে অগ্নি বেরিয়ে মদনদেবকে ভস্ম করে দিলেন। অন্যদিকে, কামের প্রভাবে পার্বতীর সঙ্গে মিলনে জন্ম হল কার্তিকের। জন্ম হয় শরবনে। তাই কার্তিকের আরেক নাম সারস্বত। ঘটনাচক্রে শিশু কার্তিক এসে পড়ে শরবনের সরোবরে। সেখানে তখন ছয়জন কৃত্তিকা স্নান করছিলেন। তাঁরা শিশুটিকে কোলে নিয়ে দেখেন, তাঁর ছয়টি মাথা। ক্ষুধার্থ শিশুটিকে ছয় কৃত্তিকা মিলে দুগ্ধ পান করালেন। ছয় মুখে ছয়জনের দুগ্ধ পান করেছেন, তাই নাম ষড়ানন।  তাঁরাই লালন-পালন করাতে তাঁর নাম হয়ে গেল কার্তিকেয় বা কার্তিক (Lord Kartikeya)।

    কীভাবে শুরু গৃহস্থের বাড়িতে পুজো (Lord Kartikeya)?

    এই কৃত্তিকারা ছিলেন ঋষি পত্নী। সেই ঋষিরা কার্তিককে মেনে নিতে পারেনি, এমনকি ভেবেছেন যে ওই ঋষি পত্নীদের অন্য পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক থেকেই কার্তিকের জন্ম। তাই তাঁদের তাড়িয়ে দেন। কার্তিক তাঁদের মায়ের সন্মান দিয়ে রেখে দেন। পরে তাঁদের সহায়তায় গৃহস্থ লোকেরা কার্তিকের পুজো শুরু করেন সন্তানের মঙ্গলের জন্য। এমনকি ওই ঋষি পত্নীরা এমন  প্রচার করেছেন, যার সন্তান নেই অর্থাৎ অপুত্রক সে যদি কার্তিকের পুজো করে, তা হলে সেই বিঘ্ন নাশ হবে। আরও প্রচার হল, যদি কার্তিকের পুজো না করে, তাহলে অপদেবতা গৃহস্থের ঘরে প্রবেশ করে অমঙ্গল ঘটাবে। সেই থেকেই গৃহস্থের বাড়িতে কার্তিকের (Lord Kartikeya) মূর্তি রেখে দিলেই পুজো করতে হয়, না হলে অমঙ্গল হবে। তাই সেই মূর্তি পুজো করে বিসর্জন দেবার রীতি।

    দক্ষিণ ভারতে কার্তিক (Lord Kartikeya) পুজোর প্রচলন ভালোই

    মহাভারতে তাঁকে স্কন্দ নামেও পাওয়া যায়। বাংলায় কার্তিক পুজো খুব বেশি না হলেও দক্ষিণ ভারতে কার্তিক পুজোর প্রচলন আছে ভালোই। তামিল ভাষায় কার্তিক এখানে মুরুগান্‌, মালয়ালম ভাষায় মায়ুরী কন্‌দস্বামী। আবার কন্নড় ও তেলেগুতে তিনি সুব্রহ্মণ্য নামে পরিচিত। তামিল দেশের সকল লোক খুব ভক্তি করেন এবং তাঁরা বিশ্বাস করেন, তামিল দেশের রক্ষাকর্তা তিনি। যেখানে যেখানে তামিল সম্প্রদায়ের লোকের আধিক্য, সেখান সেখানে মুরুগান্‌ অর্থাৎ কার্তিকের (Lord Kartikeya) পুজোর প্রচলন আজও আছে। যেমন দক্ষিণ ভারত ছাড়াও সিঙ্গাপুর মালয়েশিয়া, মরিশাস ও শ্রীলঙ্কা। শ্রীলঙ্কাতে হিন্দু ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষ শ্রদ্ধা ও খুব ভক্তি করেন। তার জন্য শ্রীলঙ্কার দক্ষিণ অংশে কার্তিকের উদ্দেশে কথারাগাম উৎসর্‌গিত করেছেন। সিঙ্ঘলি ভাষায় কথারাগম-এর অর্থ দেবালয়।

    কার্তিক (Lord Kartikeya) কি চিরকুমার?

    অনেকের ধারণা কার্তিক চিরকুমার। বিভিন্ন পৌরানিক কাহিনি ও তামিল রাজ্যে জনশ্রুতি–কার্তিকের দুটি বিয়ে। শিব ও পার্বতীর তপস্যা ও সংযম থেকে কার্তিকের জন্ম। জন্মের ছয় দিনের দিন কার্তিকের বিয়ে হয় দেবসেনার সঙ্গে। কেউ বলেন, তিনি ব্রহ্মার কন্যা আবার কেউ বলেন, ইন্দ্রর কন্যা। কেউ কেউ বলেন, দেবসেনাকে বিয়ে করে নাম হয় দেব সেনাপতি। আবার অনেকে বলেন তার জন্মের ছয়দিনের মধ্যে বড় হয়ে যাওয়া, তারকাসুর বধ, দেবতাদের যে কোনও যুদ্ধে কার্তিকের (Lord Kartikeya) বীরত্ব প্রকাশ-এই সব কারণে শিব দেবসেনার পদটি ছেড়ে দিয়েছিলেন। তাই তিনি দেব সেনাপতি।

     

    দেশের খবরদশের খবরসব খবরসবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • Success Story: রাজস্থানের প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে কঠোর পরিশ্রমে আজ খ্যাতির শিখরে! কে এই হস্তশিল্পী?

    Success Story: রাজস্থানের প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে কঠোর পরিশ্রমে আজ খ্যাতির শিখরে! কে এই হস্তশিল্পী?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মানুষের কর্মই তাঁর ভাগ্য নির্ধারণ করে। ভালো কর্ম যে কোনও মানুষের ভবিষ্যৎ বদলে দিতে সক্ষম। আজকের প্রতিবেদন তেমনই একজনকে নিয়ে, যিনি তাঁর কর্ম প্রতিভায় নিজেকে উন্নতির শিখরে পৌঁছে দিয়েছেন, তিনি রুমা দেবী (Success Story)।

    কে এই রুমা দেবী?

    রুমা দেবী রাজস্থানের বারমের জেলার একজন বাসিন্দা। রাজস্থান হস্তশিল্প যেমন শাড়ি, বিছানার চাদর, কুর্তা এবং অন্যান্য পোশাক তৈরিতে উন্নত এক রাজ্য। দেশ-বিদেশের সমস্ত জায়গায় রাজস্থান আজ তার হস্তশিল্পের জন্য বিখ্যাত হয়ে আছে। এই রাজস্থানী হস্তশিল্পের একজন কারিগর তথা শিল্পী হলেন রুমা দেবী। তাঁর নিজস্ব একটি গ্রুপ আছে যারা বর্তমানে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে অবস্থিত বারমের, জেলমের এবং বিকানের জেলার প্রায় ৭৫টি গ্রামের ২২ হাজার মহিলাকে কর্মসংস্থান প্রদান করছে (Success Story) এবং তাঁদের শিল্প সিঙ্গাপুর, জার্মানি এবং কলম্বোর ফ্যাশন উইকেও প্রদর্শিত হয়েছে।

    সাফল্যের রাস্তা মোটেও সহজ ছিল না (Success Story)

    বর্তমানে অনেক মহিলাই তাঁদের নিজস্ব শিল্পীসত্তা এবং কাজের নিরিখে দেশ-বিদেশ জুড়ে অনেক সুনাম কুড়িয়েছেন। কিন্তু আর কয়েকজন সাধারণ মানুষের মতো রুমা দেবীর সফলতার রাস্তা (Success Story) কখনও সহজ ছিল না। এর পিছনে আছে এক কঠিন জীবন সংগ্রামের কাহিনি। ১৯৮৮ সালের নভেম্বরে রাজস্থানের বারমের জেলার রাতওয়াসার গ্রামে পিতা খেতারাম এবং মাতা ইমরাতি দেবীর ঘরে জন্মগ্রহণ করেন রুমা দেবী। মাত্র পাঁচ বছর বয়সেই মাকে হারান তিনি। তার পর তাঁর পিতা আবার একটি বিয়েও করেন। রুমা বেড়ে ওঠেন তাঁর ৭ বোন ও এক ভাইয়ের সাথে। রুমাদেবী তাঁর মামার কাছে বড় হন। সেই গ্রামেরই একটি সরকারি স্কুলে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। রাজস্থানে পানীয় জলের খুব সমস্যা থাকায় রুমা দেবী ১০ কিলোমিটার দূর থেকে গরুর গাড়িতে বসে পানীয় জল নিয়ে আসতেন। এরপর মাত্র ১৭ বছর বয়সে তাঁর বিবাহ হয় বারমের জেলার মঙ্গল বেরি গ্রামের বাসিন্দা টিকুরামের সাথে।

    কীভাবে তিনি সফলতা (Success Story) অর্জন করেন?

    ১৯৯৮ সালে গ্রামীণ বিকাশ এবং চেতনা সংস্থা তৈরি হয়েছিল। এই এনজিওর লক্ষ্য ছিল গ্রামের হস্তশিল্পগুলির মাধ্যমে মহিলাদের স্বনির্ভর করা। ২০০৮ সালে রুমা দেবী এই এনজিওর সাথে যুক্ত হন। এরপর শুরু হয় তাঁর কঠোর পরিশ্রম। নতুন নতুন ডিজাইন এবং আরও নানা হস্তশিল্পের এক খ্যাতনামা শিল্পী হিসেবে রুমা দেবী নাম অর্জন করেন। এর পর তাঁকে সেই এনজিওর চেয়ারম্যান নিযুক্ত করা হয়। বর্তমানে সেই এনজিওর সঙ্গে প্রায় ২২ হাজার মহিলা যুক্ত৷ এইসব নারীরা ঘরে বসেই তাঁদের হস্তশিল্প তৈরি করেন। রুমা দেবী তাঁদের হস্তশিল্প তৈরি করা পণ্য বিক্রি থেকে শুরু করে সব রকম সহায়তা করে থাকেন। সেইসব নারীদের ব্যবসার বার্ষিক টার্নওভার প্রায় কোটি  টাকা (Success Story)।

    রুমা দেবীর অর্জিত সম্মান (Success Story)

    রুমা দেবী ভারতের মহিলাদের জন্য সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান ‘নারী শক্তি পুরস্কার ২০১৮’ তে পুরস্কৃত হন। এমনকি রুমা দেবীকে ১৫ এবং ১৬ ফেব্রুয়ারি আমেরিকায় অনুষ্ঠিত দুই দিনের হাওয়ার্ড ইন্ডিয়া সম্মেলনেও আমন্ত্রণ জানানো হয়। সেখান থেকে হাওওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশুদের হস্তশিল্পের পণ্য তৈরি শেখানোর সুযোগ পান। সেখানে পাশাপাশি তাঁর পণ্য প্রদর্শনেরও সুযোগ  পেয়েছিলেন। রুমা দেবী সোশ্যাল মিডিয়াতেও খুব সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ করে থাকেন। তাঁর বর্তমান সোশ্যাল মিডিয়ায় ফলোয়ারের সংখ্যা কয়েক লাখ। ফেসবুকে তাঁর ফলোয়ারের সংখ্যা ১ লাখ ৬৪ হাজার মানুষ। ট্যুইটারে তাঁকে অনুসরণ করেন ৬ হাজার ৫০০ মানুষ। 
    সম্প্রতি রুমা দেবী তাঁর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একসাথে তাঁর কুঁড়েঘরে থাকার ছবি এবং তার ইউরোপ ভ্রমণের ছবি প্রকাশ করেছেন। ২০১৫-১৬ সালে অনুষ্ঠিত জার্মানির বৃহত্তম বাণিজ্য মেলা, যেখানে অংশগ্রহণের জন্য ফি প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা, সেখানে রুমা দেবী ও তাঁর গ্রুপকে বিনামূল্যে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল (Success Story)।

    রুমা দেবীকে নিয়ে লেখা হয় একটি বইও

    সম্প্রতি নিধি জৈন নামক এক লেখিকা ‘হাউসলে কা হুনার’ নামক একটি বই প্রকাশ করেন, যা রুমা দেবীকে নিয়ে লেখা। বইটিতে রুমা দেবীর সংগ্রাম এবং তাঁর সাফল্যের পুরো কাহিনি বর্ণনা করা হয়েছে। কীভাবে তিনি একটি গ্রাম থেকে উঠে এসে বিদেশেও তাঁর শিল্পকে তুলে ধরেছেন এবং বিদেশে পৌঁছে হাজার হাজার নারীকে স্বাবলম্বী করেছেন (Success Story), তার উল্লেখ এই বইতে আছে।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • Moustache: তাগড়াই গোঁফের কেরামতি! টেনে নিয়ে গেলেন যাত্রী সহ আস্ত একটি টোটো!

    Moustache: তাগড়াই গোঁফের কেরামতি! টেনে নিয়ে গেলেন যাত্রী সহ আস্ত একটি টোটো!

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ‘গোঁফের আমি, গোঁফের তুমি, তাই দিয়ে যায় চেনা।’ সুকুমার রায়ের বিখ্যাত ছড়া ‘গোঁফচুরি’র শেষ দুটি লাইনের কথা মনে করিয়ে দিলেন বাংলারই এক ব্যক্তি। ছোট থেকেই গোঁফ (Moustache) রাখা তাঁর সখ। গোঁফের জন্য স্ত্রীর সঙ্গে একাধিক বার ঝগড়াও হয়েছে। তবে নিজের সখ মেটাতে সব কিছু উপেক্ষা করে এগিয়ে চলেছেন এলাকার ‘গোঁফদা’ ওরফে অশোক মাহাতো। পেশায় একজন টোটো চালক। তবে তার গোঁফের কেরামতি দেখলে অবাক হতে হয়। গোঁফ দিয়েই তিনি তুলে ফেলছেন বাটখারা, ইট। গোঁফ দিয়েই টেনে আনছেন টোটো। যা দেখে স্তম্ভিত এলকার মানুষজন।

    গোঁফ (Moustache) দিয়ে টানলেন যাত্রী সহ টোটো

    অশোক মাহাতো প্রথমে তার গোঁফ দিয়ে দু’টি এক কেজির বাটখারা চাগিয়ে তোলেন। পরবর্তীতে বাটখারার বদলে জায়গা নেয় দু’টি আস্ত ইট। যে ইটের ওজন প্রায় ১০ কেজির কাছাকাছি। সফলভাবে দুটি ইট গোঁফ দিয়ে চাগিয়ে তোলার পর রাউন্ড নম্বর থ্রি। এবারের লক্ষ্য গোঁফ দিয়ে টোটো টানা। গোঁফের (Moustache) মধ্যে দড়ি বেঁধে অনায়াসে একটি টোটোকে টেনে নিয়ে চলে যেতে সক্ষম হন অশোকবাবু। পরবর্তীতে আরেকটু কঠিন করার জন্য টোটোর মধ্যে একজন লোককে বসিয়ে দেওয়া হয়। কী আশ্চর্য, তাঁকেও টেনে নিয়ে এগিয়ে যেতে সক্ষম হন তিনি। গোঁফ দিয়ে ওয়েট লিফটিংয়ের মতো একেবারে নজিরবিহীন ঘটনা ঘটিয়ে চলেছেন হুগলির কোন্নগরের কানাইপুর পঞ্চায়েতের বাসিন্দা অশোক মাহাতো। 

    ‘গোঁফের (Moustache) জন্য জোটে বিশেষ সম্মান’

    অশোকবাবু বলেন, গোঁফ (Moustache) রাখা তাঁর ছোট থেকেই শখ। শেষ ২০ বছর ধরে এই গোঁফ তিনি রেখে আসছেন। তিনি যেখানেই যান গোঁফের জন্য বিশেষ সম্মান পান। গোঁফের জন্য পরিচর্যাও করতে হয়। নিজের গোঁফের পরিচর্যার জন্য বাইরের বাজারের কোনও বিয়ার্ড অয়েল বা এই জাতীয় তেল তিনি ব্যবহার করেন না। দেশীয় সরষের তেল তাঁর কাছে সর্বশ্রেষ্ঠ। 

    কী বলছেন তাঁর স্ত্রী?

    অশোক মাহাতোর স্ত্রী অঞ্জনা মাহাতো জানান, বিয়ের পর থেকেই গোঁফ (Moustache) রাখার প্রবণতা বাড়ে অশোকের। প্রথমে গোঁফের জন্য তাঁদের মধ্যে ঝগড়া হলেও বর্তমানে গোঁফের কেরামতির জন্য তাঁরা সকলেই গর্ব বোধ করেন। 

     

    দেশের খবরদশের খবরসব খবরসবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • Self Reliance: ৩০ বছর ধরে মাত্র ১ টাকায় গরমাগরম আলুর চপ, ফুলুরি, বেগুনি!

    Self Reliance: ৩০ বছর ধরে মাত্র ১ টাকায় গরমাগরম আলুর চপ, ফুলুরি, বেগুনি!

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মাত্র এক টাকায় তেলেভাজা বিক্রি করছেন হাওড়ার সলপ বাজারের গোপালচন্দ্র দে (Self Reliance)। তাও এক-দু’ বছর নয়, বিগত ৩০ বছর ধরে। এই দুর্মূল্যের বাজারে যেখানে দৈনন্দিন সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে, সেখানে মাত্র এক টাকায় মিলছে গরমাগরম আলুর চপ, ফুলুরি, বেগুনি। এছাড়াও সিঙাড়া, কচুরি, নিমকিও পাওয়া যাচ্ছে এক টাকা দামেই। ডোমজুড়ের সলপ বাজারে সপ্তাহে প্রতিদিন দু’ বেলাই স্থানীয় মানুষের রসনাতৃপ্তি ঘটিয়ে চলেছেন গোপালবাবু, মাত্র এক টাকাতে।

    ন্যূনতম ছ’ টাকার নিচে কিছু তো মেলেই না!

    বর্ষাকালে গরমাগরম তেলেভাজা সহযোগে মুড়ির সঙ্গে বাঙালির নস্টালজিক যোগাযোগ। বিকেলের আড্ডা বা ঘরোয়া জলখাবার, তেলেভাজা-মুড়ি বাঙালির পছন্দের খাদ্য তালিকায় সব সময়ই ‘হট ফেভারিট’। সুগার, প্রেশার, কোলেস্টেরলের চোখ রাঙানিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে আজও শীর্ষস্থান অধিকার করে আছে তেলেভাজা-মুড়ি। কোভিড অতিমারির জেরে অর্থনৈতিক সংকট চলছে। জিনিসপত্রের দাম ক্রমশ বেড়ে চলেছে। বিশেষত সর্ষের তেলের মূল্য আকাশ ছুঁয়েছে। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই খাওয়ায় লাগাম টানতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। মুড়ি-তেলেভাজাও সেই লাগাম টানার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। কলকাতা বা হাওড়ার যে কোনও তেলেভাজার দোকানে ন্যূনতম ছ’ টাকার নিচে কিছু মেলে না। কিন্তু সলপ বাজারের গোপালচন্দ্র দে-র তাতে কিছু যায় আসে না। তিনি ওই এক টাকাতেই বেচে চলেছেন (Self Reliance) গরম তেলেভাজা। তাই বলে খাবারের গুণগত মানের সঙ্গে আপস করতে রাজি নন তিনি। লাভক্ষতির কথা মাথায় না রেখে স্থানীয় মানুষের হাতে এই নামমাত্র দামেই টাটকা খাবার তুলে দিচ্ছেন তিনি।

    বয়স বেড়েছে, উৎসাহ এতটুকু কমেনি (Self Reliance)

    আদি বাড়ি হাওড়ার আমতায়। আর্থিক প্রতিকূলতার কারণে পড়াশোনা বেশিদূর হয়নি। তাই রুটি-রুজির টানে বাবার হাত ধরে চলে আসেন ডোমজুড়ের সলপে। বছর পঞ্চাশেক আগে ডোমজুড়ের সলপ বাজারে রাস্তার ধারে পান-বিড়ির দোকান করেন তিনি (৬৫)। কিন্তু ব্যবসায় সেভাবে লাভ না হওয়ায় বাবার কথামতো ৩০ বছর আগে তেলেভাজার দোকান খোলেন। ব্যস, শুরুতেই ছক্কা। ১ টাকায় গোপালবাবু চপ, মুড়ি, বেগুনি, কচুরি, ডালের বড়া, সিঙ্গারা, নিমকি সহ নানা সুস্বাদু খাবার বিক্রি করতে থাকেন (Self Reliance)। জিভে জল আনা সেই খাবারের স্বাদ পেতে খদ্দেররাও ভিড় জমাতে শুরু করেন। বয়স বাড়লেও গোপালবাবু একই উৎসাহে কাজ করে চলেছেন। এক ছেলে মাঝে মাঝে বাজার করে দিয়ে গেলেও কার্যত এক হাতেই তিনি দোকান সামলান। সকাল, বিকেল এবং সন্ধ্যাবেলায় নিয়ম করে বিক্রি করেন বাঙালির প্রিয় তেলেভাজা।

    ‘যতদিন বেঁচে থাকব, এই এক টাকাতেই তেলেভাজা বেচব’ (Self Reliance)

    সলপ বাজারের মোড়েই একচিলতে আটপৌরে দোকান। ব্যবসায় লাভক্ষতির প্রশ্নে তিনি বলেন, লাভ কম হলেও তাঁর পুষিয়ে নিতে অসুবিধা হয় না। ফলে বিক্রিবাটা ভালোই হচ্ছে। আগে পান, বিড়ি, সিগারেট বেচতেন গোপালবাবু। বিগত ৩০ বছর ধরে তেলেভাজা, মুড়ি, চানাচুর ইত্যাদি বিক্রি করছেন। তাঁর নিজের কথায়, যতদিন বেঁচে থাকব, এই এক টাকাতেই তেলেভাজা বেচব। সর্ষের তেলের দাম বাড়লেও খাবারের দাম ওই এক টাকাই থাকবে! দুর্মূল্যের বাজারে সামান্য টাকায় মানুষের হাতে খাবার তুলে দিলে মানুষ খুশি হয়। আনন্দ পায়। মানুষের এই আনন্দটুকুই আমার কাছে বিরাট পাওয়া। জানাচ্ছেন গোপালবাবু (Self Reliance)।

    কী বলছেন ক্রেতারা?

    গোপালবাবুর দোকানে নিয়মিত খাবার কেনেন ঝাঁপরদহ এলাকার একটি স্কুলের শিক্ষক জয়ন্ত মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ছাত্র বয়স থেকে গোপালদাকে দেখছি। অত্যন্ত হাসিখুশি, সৎ ও ভালো মানুষ। কোনও ফালতু ঝুটঝামেলার মধ্যে নেই। এক টাকাতে তেলেভাজা-মুড়ি বিক্রির ফলে গরিব মানুষ, পথচলতি মানুষ উপকৃত হচ্ছে। আর এক ক্রেতা লক্ষ্মীকান্ত সাউ প্রায় ৩০ বছর ধরে তেলেভাজা কিনছেন গোপালবাবুর (Self Reliance) দোকানে। কম পয়সায় এত সুস্বাদু মুখরোচক খাবার নিঃসন্দেহে ভালো বলে মনে করেন তিনি। এই দুর্মূল্যের বাজারে এক টাকা করে খাবার পাওয়া মানে সাধারণ মানুষের পয়সা বেঁচে যাচ্ছে, মন্তব্য লক্ষ্মীকান্তবাবুর। 

    বাবা পরলোকগত। কিন্তু তাঁর আদেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করে চলেছেন গোপালবাবু। ৩০ বছর ধরে তিনি ওই এক টাকাতেই খরিদ্দারকে বেচে চলেছেন গরম তেলেভাজা।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।

LinkedIn
Share