Category: পরম্পরা

Get updated History and Heritage and Culture and Religion related news from the Madhyom news portal madhyom.com, West Bengal leading news portal Madhyom.com

  • Basanti Puja: এবছর নৌকায় আগমন দেবী দুর্গার! জেনে নিন বাসন্তী পুজোর তিথি, শুভক্ষণ

    Basanti Puja: এবছর নৌকায় আগমন দেবী দুর্গার! জেনে নিন বাসন্তী পুজোর তিথি, শুভক্ষণ

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: শরৎকালে হয় শারদীয়া দুর্গাপুজো, আর বসন্তকালে দেবী দুর্গার পুজো বাসন্তী পুজো (Basanti Puja) নামে পরিচিত। পুরাণ অনুযায়ী, অশুভ শক্তির বিনাশের উদ্দেশে শ্রীরামচন্দ্র শরৎকালে দেবী দুর্গার আরাধনা করেছিলেন, এই আখ্যানের সঙ্গে আমরা সকলেই কমবেশি পরিচিত। যা দেবীর অকাল বোধন হিসেবে প্রসিদ্ধ। আর চন্দ্রবংশীয় রাজা সুরথ বসন্ত কালে দেবী দুর্গার আরাধনা করেন। তাই এই পুজো বাসন্তী পুজো নামে পরিচিত। চলতি বছর বাসন্তী পুজো পড়েছে ২৮ মার্চ, মঙ্গলবার। 

    চলুন জেনে নেওয়া যাক, বাসন্তী পূজার (Basanti Puja) তিথি, শুভক্ষণ

    বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা অনুসারে

     পঞ্চমী তিথি আরম্ভ – ২৫ মার্চ, শনিবার। বাংলার ১০ চৈত্র। সময় – বিকেল ৪টে ২৫ মিনিট।
     পঞ্চমী তিথি শেষ – ২৬ মার্চ, রবিবার। বাংলার ১১ চৈত্র। সময় – বিকেল ৪টে ৩৩ মিনিট।
     
    ষষ্ঠী তিথি আরম্ভ – ২৬ মার্চ, রবিবার। বাংলার ১১ চৈত্র। সময় – বিকেল ৪টে ৩৪ মিনিট। 
    ষষ্ঠী তিথি শেষ – ২৭ মার্চ, সোমবার। বাংলার ১২ চৈত্র। সময় – বিকেল ৫টা ২৮ মিনিট। 

    সপ্তমী তিথি আরম্ভ – ২৭ মার্চ, সোমবার। বাংলার ১২ চৈত্র। সময় – বিকেল ৫টা ২৯ মিনিট। 
    সপ্তমী তিথি শেষ – ২৮ মার্চ, মঙ্গলবার। বাংলার ১৩ চৈত্র। সময় – সন্ধ্যা ৭টা ০৩ মিনিট।
     
    অষ্টমী তিথি আরম্ভ – ২৮ মার্চ, মঙ্গলবার। বাংলার ১৩ চৈত্র। সময় – সন্ধ্যা ৭টা ০৪ মিনিট।
     অষ্টমী তিথি শেষ – ২৯ মার্চ, বুধবার। বাংলার ১৪ চৈত্র। সময় – রাত ৯টা ০৮ মিনিট।
     
    সন্ধি পুজোর শুভক্ষণ – রাত ৮টা ৪৪ মিনিটে সন্ধি পুজো আরম্ভ। রাত ৯টা ৩২ মিনিটে সন্ধি পুজো সমাপ্ত

    নবমী তিথি আরম্ভ – ২৯ মার্চ, বুধবার। বাংলার ১৪ চৈত্র। সময় – রাত ৯টা ০৯ মিনিট । 
    নবমী তিথি শেষ – ৩০ মার্চ, বৃহস্পতিবার। বাংলার ১৫ চৈত্র। সময় – রাত ১১টা ৩১ মিনিট।

    দশমী তিথি আরম্ভ – ৩০ মার্চ, বৃহস্পতিবার। বাংলার ১৫ চৈত্র। সময় – রাত ১১টা ৩২ মিনিট। 
    দশমী তিথি শেষ – ৩১ মার্চ, শুক্রবার। বাংলার ১৬ চৈত্র।

    গুপ্তপ্রেস পঞ্জিকা মতে

     পঞ্চমী তিথি আরম্ভ – ২৫ মার্চ, শনিবার। বাংলার ১০ চৈত্র। সময় – সন্ধ্যা ৭টা ২ মিনিট ২০ সেকেন্ড।
     পঞ্চমী তিথি শেষ – ২৬ মার্চ, রবিবার। বাংলার ১১ চৈত্র। সময় – সন্ধ্যা ৭টা ৬ মিনিট ৪৪ সেকেন্ড। 

    ষষ্ঠী তিথি আরম্ভ – ২৬ মার্চ, রবিবার। বাংলার ১১ চৈত্র। সময় – সন্ধ্যা ৭টা ৬ মিনিট ৪৫ সেকেন্ড।
     ষষ্ঠী তিথি শেষ – ২৭ মার্চ, সোমবার। বাংলার ১২ চৈত্র। সময় – সন্ধ্যা ৭টা ৪১ মিনিট ৪৫ সেকেন্ড।
     
    সপ্তমী তিথি আরম্ভ – ২৭ মার্চ, সোমবার। বাংলার ১২ চৈত্র। সময় – সন্ধ্যা ৭টা ৪১ মিনিটে ৪৬ সেকেন্ড। 
    সপ্তমী তিথি শেষ – ২৮ মার্চ, মঙ্গলবার। বাংলার ১৩ চৈত্র। সময় – রাত ৮টা ৪৭ মিনিট ২২ সেকেন্ড।
     
    অষ্টমী তিথি আরম্ভ – ২৮ মার্চ, মঙ্গলবার। বাংলার ১৩ চৈত্র। সময় – রাত ৮টা ৪৭ মিনিট ২৩ সেকেন্ড।
     অষ্টমী তিথি শেষ – ২৯ মার্চ, বুধবার। বাংলার ১৪ চৈত্র। সময় – রাত ১০টা ১৭ মিনিট ৩২ সেকেন্ড । 

    সন্ধি পুজোর শুভক্ষণ – রাত ৯টা ৫৩ মিনিট ৩২ সেকেন্ডে সন্ধি পুজো আরম্ভ। রাত ১০টা ৪১ মিনিট ৩২ সেকেন্ডে সন্ধি পুজো সমাপ্ত। 

    নবমী তিথি আরম্ভ – ২৯ মার্চ, বুধবার। বাংলার ১৪ চৈত্র। সময় – রাত ১০ টা ১৭ মিনিট ৩৩ সেকেন্ড। 
    নবমী তিথি শেষ – ৩০ মার্চ, বৃহস্পতিবার। বাংলার ১৫ চৈত্র। সময় – রাত ১২টা ৮ মিনিট ১৮ সেকেন্ড। 

    দশমী তিথি আরম্ভ – ৩০ মার্চ, বৃহস্পতিবার। বাংলার ১৫ চৈত্র। সময় – রাত ১২টা ৮ মিনিট ১৯ সেকেন্ড।
     দশমী তিথি শেষ – ৩১ মার্চ, শুক্রবার। বাংলার ১৬ চৈত্র।

    বাসন্তী পুজোর মাহাত্ম্য

    বাসন্তী পুজোর মাহাত্ম্য শাস্ত্র মতে, রাজ্য হারানো রাজা সুরথ বসন্তকালে সমাধি নামক বৈশ্যের সঙ্গে মিলে ঋষি মেধসের আশ্রমে দেবী দুর্গার আরাধনা করেন। দেবীর আশীর্বাদ পেতেই বসন্তকালের শুক্লপক্ষে রাজা দেবীর উপাসনা করেন। মা দুর্গা ভক্তের পুজোয় সন্তুষ্ট হয়ে রাজা সুরথকে তাঁর হারানো রাজ্য ফিরিয়ে দেন। এই পুজোই পরে বাসন্তী পুজো নামে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে

    এবছর নৌকায় আগমন হবে দেবী দুর্গার

    শারদীয় দুর্গা পুজোর মতো বাসন্তী পুজোতেও (Basanti Puja) মা দুর্গা প্রতি বছর আলাদা আলাদা বাহনে সওয়ার হয়ে আসেন। দেবীর এই সব বাহনের আলাদা আলাদা মাহাত্ম্য রয়েছে। এই বছর বাসন্তী পুজোয় মা দুর্গা আসছেন নৌকায় সওয়ার হয়ে। দেবীর নৌকা বাহন অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়। এর ফলে পৃথিবী সুজলা সুফলা হয়ে ওঠে ও মর্ত্যবাসীর মনে খুশিতে ভরে ওঠে।

     

    দেশের খবরদশের খবরসব খবরসবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

     

     

  • Navaratri: আজ থেকে শুরু নবরাত্রি, ন’দিনে নয় দেবীর আরাধনা, কোন দিন কী পুজো?

    Navaratri: আজ থেকে শুরু নবরাত্রি, ন’দিনে নয় দেবীর আরাধনা, কোন দিন কী পুজো?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: চৈত্রমাসের শুক্লা প্রতিপদ তিথি থেকে শুরু হয় নবরাত্রি (Navaratri)। এদিন হিন্দু নববর্ষেরও সূচনা হয়। চৈত্র মাসের প্রথম দিন, বা প্রতিপদ, ২১ মার্চ রাত ১০.৫২ মিনিটে শুরু হয়। তবে চৈত্র প্রতিপদ শুরু হবে ২২ মার্চ। ৩০ মার্চ নবমীর দিন পালিত হতে চলেছে বাসন্তী রামনবমী। সেই দিনে দেশ জুড়ে থাকবে উৎসবের আসর। নবমী তিথি ২৯ মার্চ রাত ৯.০৭ মিনিটে শুরু হবে। ২০২৩ সালের রাম নবমী এবং চৈত্র নবরাত্রি উদযাপন ৩০ মার্চ শেষ হবে। চলতি বছরে চৈত্র নবরাত্রি শুরু হচ্ছে ২২ মার্চ থেকে, আর তা শেষ হবে ৩১ মার্চ। বসন্ত নবরাত্রিতে দেবীর নয়টি ভিন্ন অবতারকে নয় দিন ধরে পুজো করা হয়।

    ‘শ্রী বরাহপুরাণে’ হরিহর ব্রহ্মা ঋষির দ্বারা রচিত, দেবী কবচে লেখা রয়েছে – 
    প্রথমং শৈলপুত্রী চ
    দ্বিতীয়ম্ ব্রহ্মচারিণী ।
    তৃতীয়ং চন্দ্রঘণ্টেতি কুষ্মাণ্ডেতি চতুর্থকম্ ।।
    পঞ্চমং স্কন্দমাতেতি,
    ষষ্ঠম্ কাত্যায়নীতি চ।
    সপ্তমং কালরাত্রীতি মহাগৌরীতি চাষ্টমং।।
    নবমং সিদ্ধিদাত্রী চ
    নবদুর্গা প্রকীর্তিতাঃ ।।

    নবরাত্রির (Navaratri) কোন দিনে কী পুজো—

    প্রতিপদ তিথিতে সম্পন্ন হবে মাতা শৈলপুত্রীর পুজো – ২২ মার্চ, বুধবার

    নবরাত্রির প্রথম দিনে মাতা শৈলপুত্রীর পুজো করা হয়। দেবীর নামের অর্থ “পাহাড়ের কন্যা”। তাঁর ভক্তদের বিশ্বাস-মাতা শৈলপুত্রীর আশীর্বাদ স্বরূপ সুস্থ, রোগমুক্ত জীবন পাওয়া যায়। মাতার নৈবেদ্যতে খাঁটি ঘি অর্পণ করা হয়। এই দেবীর আরাধনায় মূলাধার চক্র শুদ্ধ হয়।

    দ্বিতীয়া তিথিতে সম্পন্ন হবে মাতা ব্রহ্মচারিণীর পুজো – ২৩ মার্চ, বৃহস্পতিবার

    নবরাত্রির দ্বিতীয় দিনে এই দেবীর পুজো হয়। ব্রহ্মচারিণী মাতাকে খুশি করতে ভক্তরা চিনি নিবেদন করে থাকেন। বিশ্বাস মতে, মাতা তাঁর ভক্তদের দীর্ঘায়ু প্রদান করেন। এই দেবীর উপাসনার দ্বারা সাধিস্তান চক্র শুদ্ধ হয় হয় বলে ভক্তরা মনে করে।

    তৃতীয়া তিথিতে সম্পন্ন হবে মাতা চন্দ্রঘণ্টার পুজো – ২৪ মার্চ, শুক্রবার

    তৃতীয় দিনে মাতা চন্দ্রঘণ্টার প্রতি ভক্তি নিবেদন করা হয়। এই দেবীর বাহন বাঘ। উগ্র মূর্তি এই দেবীকে ক্ষীর ভোগ অর্পণ করেন ভক্তরা। ভক্তদের বিশ্বাস, দেবী সমস্ত অশুভ শক্তির বিনাশ করেন এবং যাবতীয় বাধা বিঘ্ন দূর করেন।

    চতুর্থী তিথিতে সম্পন্ন হবে মাতা কুষ্মাণ্ডার পুজো- ২৫ মার্চ, শনিবার

    চতুর্থ দিনে মাতা কুষ্মান্ডার প্রতি ভক্তি নিবেদিত হয়‌। শাস্ত্র মতে, এই দেবী মহাবিশ্বের স্রষ্টা। তিনি তাঁর ভক্তদের জ্ঞানদানের দ্বারা বৌদ্ধিক বিকাশ ঘটান এবং কর্মক্ষেত্রে জটিলতা দূর করেন। দেবীকে মালপোয়া ভোগ অর্পণ করা হয়।

    পঞ্চমী তিথিতে সম্পন্ন হবে মাতা স্কন্ধমাতার পুজো- ২৬ মার্চ, রবিবার

    নবরাত্রির পঞ্চম দিনে মাতা স্কন্দমাতার আরাধনা করেন ভক্তরা। ভগবান কার্তিককে কোলে নিয়ে উপবিষ্ট এই দেবীর আশীর্বাদ পেতে ভক্তরা কলা নিবেদন করেন। দেবীর আশীর্বাদে ভক্তের জীবনে পরম সুখ ও শান্তি আসে বলে বিশ্বাস।

    ষষ্ঠী তিথিতে সম্পন্ন হবে মাতা কাত্যায়নীর পুজো- ২৭ মার্চ, সোমবার

    ঋষি কাত্যায়নের কন্যা, শক্তির প্রতীক তথা যোদ্ধা দেবী কাত্যায়নী মাতার পুজো নবরাত্রির ষষ্ঠ দিনে সম্পন্ন হয়। ভক্তদের তিনি শক্তি, ধর্ম ও জাগতিক সুখ প্রদান করেন বলে বিশ্বাস। তাঁকে ভক্তদের মধু নিবেদনের রীতি চালু রয়েছে।

    সপ্তমী তিথিতে সম্পন্ন হবে মাতা কালরাত্রির পুজো- ২৮ মার্চ, মঙ্গলবার

    সপ্তমী পুজো হয় এই দেবীর। দেবী ত্রিশূলধারী। মাতা কালরাত্রির আশীর্বাদে জীবনের সমস্ত কুপ্রভাব বিনষ্ট হয় বলে ভক্তদের ধারণা। মাতাকে গুড় নিবেদন করা হয়।

    অষ্টমী তিথিতে সম্পন্ন হবে মাতা  মহাগৌরীর পুজো- ২৯ মার্চ, বুধবার

    উজ্জ্বল সৌন্দর্যের প্রতীক এই দেবী অষ্টমীতে ভক্তদের দ্বারা আরাধিত হন। মাতা মহাগৌরীর একহাতে ত্রিশূল ও অপর হাতে ডমরু থাকে। তাঁর নৈবেদ্যতে নারকেল রাখার রীতি রয়েছে। বিশ্বাস রয়েছে, মাতার আশীর্বাদ স্বরূপ ভক্তদের ভালো বিবাহ হয়।

    নবমী তিথিতে সম্পন্ন হবে মাতা সিদ্ধিদাত্রীর পুজো- ৩০ মার্চ, বৃহস্পতিবার

    নবরাত্রির (Navaratri) শেষদিনে পুজো হয় এই দেবীর। তিনি ভক্তদের জীবনে সমস্ত অশুভ প্রভাব বিনষ্ট করেন এবং সাফল্য আনেন বলে ভক্তদের ধারণা। মাতা সিদ্ধিদাত্রীকে ভক্তরা তিল নিবেদন করে থাকেন।

    বাসন্তী পুজো কবে পড়ছে

    এদিকে, এই নবরাত্রির (Navaratri) সপ্তমী থেকে দশমী পর্যন্ত সময়ে বাংলার বহু এলাকায় বাসন্তী পুজো পালিত হয়। একনজরে দেখে নেওয়া যাক, এই বাসন্তী পুজোর তারিখ ও সময়কাল –

    বাসন্তীপুজোর ষষ্ঠী তিথি শুরু হতে চলেছে ২৭ মার্চ। সোমবার এই মহাষষ্ঠী পড়ছে। আর সপ্তমীর পুজো মঙ্গলবার ২৮ মার্চ। অষ্টমীর পুজো ২৯ মার্চ, বাসন্তী পুজোর নবমী বৃহস্পতিবার ৩০ মার্চ, বাসন্তী বিজয়া দশমীপুজো ৩১ মার্চ শুক্রবার।

     

    দেশের খবরদশের খবরসব খবরসবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • Pap Mochani Ekadashi: আজ পাপমোচিনী একাদশী, জানেন এর তাৎপর্য? এক নজরে পুজো-বিধি

    Pap Mochani Ekadashi: আজ পাপমোচিনী একাদশী, জানেন এর তাৎপর্য? এক নজরে পুজো-বিধি

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: চৈত্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের একাদশী পাপমোচনী একাদশী (Pap Mochani Ekadashi) নামে পরিচিত। হিন্দু পঞ্জিকা অনুসারে, দোল পূর্ণিমা এবং চৈত্র নবরাত্রির মধ্যে এই একাদশী পালিত হয়। বিশ্বাস মতে, এই একাদশী তিথিটিও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও কল্যাণকর। ভক্তদের বিশ্বাস এই দিনে ভগবান বিষ্ণুর পুজো এবং উপবাস করলে পাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। সেই সঙ্গে সংসার পরিপূর্ণ হয় সুখ ও সমৃদ্ধিতে। পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে এই একাদশীকে শ্রী হরির রূপ ধরা হয়। বিশ্বাস করা হয় যে এই দিনে উপবাস করলে মানুষ পার্থিব সুখের সঙ্গে সঙ্গে  মৃত্যুর পর স্বর্গ লাভ করে। পাপমোচনী একাদশীর উপবাস করলে পাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

    পাপমোচনি একাদশী (Pap Mochani Ekadashi) ২০২৩ তারিখ এবং শুভ সময়

    একাদশী তিথি শুরু: ১৭ মার্চ, ২০২৩ দুপুর ২.০৬ মিনিট থেকে
    একাদশী তিথি শেষ: ১৮ মার্চ, ২০২৩, সকাল ১১.১৩ পর্যন্ত

    পাপমোচনী একাদশীর (Pap Mochani Ekadashi) গুরুত্ব

    সারা বছর পালিত বিভিন্ন একাদশী তিথির বিভিন্ন তাৎপর্য রয়েছে। নাম থেকেই বোঝা যায়, এই একাদশী হল পাপ বিনাশকারী একাদশী। এই দিনে ভগবান বিষ্ণুর আরাধনা করলে ব্রহ্মা হত্যা, সোনা চুরি, মদ্যপান, অহিংসা ও ভ্রুণহত্যার মতো বড় পাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এ ছাড়া যে ব্যক্তি এই দিনে ভগবান বিষ্ণুর পূজা করেন, তাঁর জন্ম-জন্মান্তরের পাপ মোচন হয় এবং সেই ব্যক্তি মোক্ষের অধিকারী হন।

    পাপমোচনী একাদশীর (Pap Mochani Ekadashi) উপবাস সম্পর্কে আরও বলা হয় যে, এই উপবাস পালন করলে হিন্দুরা তীর্থস্থানে যাওয়া এবং গরু দান করার চেয়েও বেশি পুণ্য লাভ করে। এছাড়াও, যারা এই শুভ উপবাস পালন করে তারা সকল প্রকার জাগতিক আনন্দ উপভোগ করে এবং অবশেষে ভগবান বিষ্ণুর স্বর্গরাজ্য বৈকুণ্ঠধামে স্থান পায়।

    পাপমোচনী একাদশী (Pap Mochani Ekadashi) সম্বন্ধিত পৌরাণিক কথা

    বলা হয়ে থাকে যে চৈত্ররথ নামে এক সুন্দর বনে বিখ্যাত ঋষি চ্যবন তার পুত্র মেধবীর সঙ্গে বসবাস করতেন। একদিন, যখন মেধাবী তপস্যা করছিলেন, তখন স্বর্গীয় জগতের অপ্সরা মঞ্জুঘোষা পাশ দিয়ে চলে গেলেন। মেধাবীকে দেখে তার তীক্ষ্ণ ও সুন্দরী মঞ্জুঘোষা তার পাগল হয়ে গেল। অপ্সরা মেধবীকে তার দিকে আকৃষ্ট করার অনেক চেষ্টা করেন। তবে তিনি এতে ব্যর্থ হন।

    অপ্সরা মঞ্জুঘোষের এসব কর্মকাণ্ড কামদেব দেখছিলেন। কামদেব মঞ্জুঘোষের আত্মা সম্পর্কে ভালভাবে অবগত ছিলেন। কামদেব স্বয়ং মঞ্জুঘোষাকে মেধবীকে প্ররোচিত করতে সাহায্য করেন এবং উভয়েই শেষ পর্যন্ত সফল হন। এর পর মেধবী ও মঞ্জুঘোষা তাদের জীবনে সুখেই ছিলেন। কিন্তু কিছুক্ষণ পর মেধবী নিজের ভুল বুঝতে পারলেন যে কীভাবে তিনি তার মনোযোগ বিভ্রান্ত করে এই পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। তারপর মঞ্জুঘোষাকে অভিশাপ দেন। যেখানে তিনি তাকে বলেছিলেন যে আপনি রাক্ষসী হয়ে যান।

    মঞ্জুঘোষা এবার মেধাবীদের কাছে ক্ষমা চাইতে শুরু করেন এবং এই অভিশাপ দূর করার উপায় জানতে চান। তখন মেধবী তাঁকে বললেন, ‘তুমি পাপমোচনী একাদশীর উপবাস কর। এটি আপনার পাপ দূর করবে। এর পর মেধবীও ​​এই একাদশীর উপবাস করেন এবং তিনিও তার পাপ থেকে মুক্তি পান এবং এর ফলে মেধবী তার তেজ ফিরে পান।

    পাপমোচনী একাদশী (Pap Mochani Ekadashi) ব্রত পুজো বিধি

    ভোরে ঘুম থেকে উঠে স্নান করে উপবাসের ব্রতের সংকল্প নিন। তার পরে পুজো শুরু করুন। এই দিনের পুজো ষোড়শপচার পদ্ধতিতে করা হয়। পুজোয় ভগবান বিষ্ণুর উদ্দেশ্যে ধূপ, প্রদীপ, চন্দন, ফল, ফুল, ভোগ ইত্যাদি অর্পিত করুন। এই দিনে ভগবান বিষ্ণুকে তুলসী অর্পিত করাও খুব ফলদায়ক হয়ে থাকে তবে একাদশী তিথিতে তুলসী ভাঙা অশুভ বলে মনে করা হয়। এমন অবস্থায় একাদশীর এক দিন আগে তুলসী পাতা ছিঁড়ে রেখে পরের দিনের পুজোয় যোগ করতে পারেন। পুজোর পরে, এই দিন সম্পর্কিত ব্রতকথা পড়ুন, শুনুন আর অন্যদের শোনান। শেষে ভগবান বিষ্ণুর আরতি করুন।

    একাদশী তিথি সংক্রান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম অনুসারে, এই দিনে রাত্রি জাগরণ করা শুভ বলেও বলা হয়। আপনি এই দিনে নির্জল উপবাস করুন এবং পরের দিন অর্থাৎ দ্বাদশীর উপবাস ভঙ্গের আগে পুজো-অর্চনা করুন এবং সম্ভব হলে আপনার সামর্থ্য অনুযায়ী যে কোনও যোগ্য ব্রাহ্মণকে দান করুন। বিশ্বাস মতে, পাপমোচিনী একাদশীর (Pap Mochani Ekadashi) দিনে এই পদ্ধতিতে পুজো করলে ব্যক্তির সমস্ত পাপ ধ্বংস হয় এবং সুখ ও সমৃদ্ধি আসে।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • Holi: দোল উৎসবকে কেন বলা হয় বসন্ত মহোৎসব, জানেন?

    Holi: দোল উৎসবকে কেন বলা হয় বসন্ত মহোৎসব, জানেন?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দোলকে রঙের উৎসব বলা হয়, যা ফাল্গুন মাসের পূর্ণিমা তিথিতে উদযাপিত হয়। এই বছর দোল ৭ মার্চ। দোল হল অশুভ শক্তির ওপর শুভ শক্তির জয়। হিন্দু ধর্মের বিভিন্ন পৌরাণিক আখ্যান তাই বলছে। কিন্তু আপনি কি জানেন দোল বা হোলির ইতিহাস কী এবং কেন একে বসন্ত মহোৎসব বা কাম মহোৎসবও বলা হয়।

    দোল (Holi) বা হোলির ইতিহাস

    প্রাচীন ধর্মীয় গ্রন্থগুলিতে হোলি বা দোলের উল্লেখ পাওয়া যায়। জৈমিনীর পূর্ব মীমাংসা সূত্র এবং কথা গড়্য-সূত্র, নারদ পুরাণ, ভবিষ্য পুরাণ এবং বহু গ্রন্থে এর বর্ণনা পাওয়া যায়। ঐতিহাসিক দিক থেকেও হোলির গুরুত্ব কম কিছু নয়। সম্রাট হর্ষবর্ধন রচিত রত্নাবলী নাটকে এর উল্লেখ মেলে। আবার রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন নামটির সঙ্গেও জড়িয়ে রয়েছে প্রাচীন ভারতের হোলি খেলা। দোল একটি প্রাচীন উত্সব হিসাবে বিবেচিত হয়।

    পৌরাণিক আখ্যান

    পুরাণ মতে, বিষ্ণুর ভক্ত প্রহ্লাদকে হত্যা করতে হিরণ্যকশিপুর পরামর্শ মতো তার বোন হোলিকা অগ্নিকুণ্ডে বসেন। হোলিকার শরীর ছিল ব্রহ্মার বরে প্রাপ্ত চাদর দিয়ে ঢাকা। এই রক্ষাকবচের ফলে হোলিকা অগ্নিদগ্ধ হবেনা কিন্তু প্রহ্লাদ জ্বলে যাবে এই ছিল পরিকল্পনা। কিন্তু শেষে ভগবান বিষ্ণুর কৃপায় চাদর উড়ে গিয়ে পড়ে প্রহ্লাদের গায়ে এবং অগ্নিদগ্ধ হন হোলিকা। তাই দোলের আগেরদিন অশুভ শক্তির পরাজয়ের প্রতীক হিসেবে হোলিকা দহনের রীতি সারা ভারতজুড়ে দেখা যায়।

    কেন দোল (Holi) পূর্ণিমাকে বসন্ত মহোৎসব বলা হয় 

    দোল উৎসব বসন্ত কালে পালিত হয়। এটা বিশ্বাস করা হয় যে বসন্তে পালিত হওয়ার কারণে এটিকে বসন্ত মহোৎসব এবং কাম মহোৎসব বলা হয়েছে। কামদেব সম্পর্কিত কাহিনী অনুসারে, সত্যযুগে এই দিনে, ভগবান শিব কামদেবকে ধ্বংস করার পর, রতিকে শ্রীকৃষ্ণের স্থানে কামদেব রূপে জন্মগ্রহণ করার বর দিয়েছিলেন। তাই দোলকে ‘বসন্ত মহোৎসব’ বা ‘কাম মহোৎসব’ও বলা হয়।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ

  • Holi: দোল পূর্ণিমায় সাফল্য কামনায় এই দেবতাদের পুজো হয়, জেনে নিন রীতি-নিয়ম

    Holi: দোল পূর্ণিমায় সাফল্য কামনায় এই দেবতাদের পুজো হয়, জেনে নিন রীতি-নিয়ম

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পঞ্জিকা মতে দোলযাত্রা আর হোলি (Holi) উৎসবের দিনক্ষণ আলাদা। ২০২৩ দোলপূর্ণিমা ঘিরে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে উৎসবের আবহ। রঙের উৎসবের আগমনী বার্তায় সাজছে চারিদিক। চলতি বছরে দোল পূর্ণিমা পড়ছে ৬ মার্চ বিকেল ৪ টে বেজে ১৮ মিনিট ৪৭ সেকেন্ড থেকে। আর এই তিথি থাকবে ৭ মার্চ সন্ধ্যে ৬ টা বেজে ৪০ মিনিট পর্যন্ত। দেশের বহু প্রান্তে হোলির (Holi) আগের দিন পালিত হয় হোলিকা দহন উৎসব।

    হিন্দু ধর্মে যেকোনও অনুষ্ঠানে তিথি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়। দোলের তিথি দেখেই বাঙালি গৃহস্থ বাড়িতে বিশেষ পূজার আয়োজন করা হয়। দোল পূর্ণিমা হিন্দুদের কাছে এক অত্যন্ত পবিত্র তিথি হওয়াতে, শাস্ত্র মতে এই তিথিতে বিশেষ কিছু নিয়ম-কার্য পালন করলে মানুষের আর্থিক, পরমাত্মিক এবং সাংসারিক শ্রীবৃদ্ধি লাভ সম্ভব হয়। বহু বাড়িতেই দোলের দিন শ্রীরাধাগোবিন্দের পুজো হয়। আবার শালগ্রাম শিলার পুজোও দেখা যায় এই দিন। পূর্ণিমার পুজো সকাল থেকেই চলে বাঙালি হিন্দু বাড়িতে। এই বিশেষ তিথিতে সমস্ত নিয়মকানুন মেনে গোপাল পূজা করলে ঈশ্বরের বিশেষ কৃপা লাভ করা যায়। নিম্নে গোপাল পুজোর নিয়ম কারণ সম্পর্কে জানানো হল। এছাড়া আপনারা নিজেদের আরাধ্য দেবতাদেরও পূজা করতে পারেন এই দিন।

    দোল পূর্ণিমার দিন গোপাল পুজোর রীতি

    শাস্ত্রমতে, মনে করা হয় এই তিথিতে বিশেষ কিছু নিয়ম পালন করলে সংসারের সার্বিক সমৃদ্ধি ফিরিয়ে আনা সম্ভব। এই দিনে বিশেষ কিছু নিয়ম পেলে গোপালের পুজো করলে ঈশ্বরের কৃপাদৃষ্টি বজায় থাকে। শাস্ত্র অনুযায়ী, এই দিনেই ভগবান শ্রীকৃষ্ণ গোপীদের সঙ্গে আবির খেলায় মেতে উঠেছিলেন। হিন্দু শাস্ত্র মতে, এই তিথি অত্যন্ত পবিত্র একটি তিথি। তাই এই দিনে কিছু নিয়ম মেনে চললে ঈশ্বরের কৃপা দৃষ্টি সর্বদা বজায় থাকবে আপনার উপর। একই সঙ্গে বৃদ্ধি পাবে সংসারের সমৃদ্ধিও। জেনে নেওয়া যাক আজ ঠিক কোন নিয়মে পুজো সারবেন। পণ্ডিতরা বলছেন, আগের দিনেই বাড়ি-ঘর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে নিন। রান্না ঘরে মজুত রাখা খাবারের কৌট বা জায়গা কখনও একদম ফাঁকা করে রাখবেন না। কিছু না কিছু ভরে রাখবেন। এই দিনে সকালে স্নান সেরে নিন। রাতে শুতে যাওয়ার আগে বাড়ির প্রধান দরজার সামনে এক বালতি জল রেখে দিন, সকালে ঘুম থেকে উঠেই দরজার সামনে সেই জল ঢেলে ধুয়ে দিন। স্নানের জলে একটা বা দুটো তুলসী পাতা দিয়ে স্নান করুন। স্নানের পর ইষ্ট দেবতার স্মরণ করে পুজো সেরে নিন। গোপাল পুজো আপনি যেভাবে করেন সেই ভাবেই সারুন সঙ্গে শুধু উল্লিখিত নিয়মগুলো মেনে চলুন। এরপর ঠাকুরের পায়ে আবির দিয়ে প্রণাম সেরে নিন। ফুল মিষ্টি দিয়ে পুজো সেরে নিন। এই দিনে খাদ্য শষ্য দান অত্যন্ত পুণ্যের বলে মনে করা হয়। দুঃস্থকে খাদ্য এবং বস্ত্র বা সামর্থ অনুযায়ী এই দিনে দান করলে সমস্ত পাপ বিনষ্ট হয়। সেই সঙ্গে মনের ইচ্ছাও পূরণ হয়।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

     

     

     

     

     

  • Holi: দোল পূর্ণিমার ঐতিহাসিক এবং পৌরাণিক কাহিনীগুলি জানেন?

    Holi: দোল পূর্ণিমার ঐতিহাসিক এবং পৌরাণিক কাহিনীগুলি জানেন?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দরজায় কড়া নাড়ছে দোল (Holi)। হলুদ শাড়ি এবং পাঞ্জাবিতে সাজবে মেয়ে এবং ছেলেরা। বসন্ত এসে গেছে গানের তালে তালে পালিত হবে দোল। শান্তিনিকেতনের দোল (Holi) আবার বিশেষ জনপ্রিয়। সারা রাজ্য থেকেই মানুষের ভিড় দেখা যাবে ওইদিন শান্তিনিকেতনে। রবি ঠাকুরের গানে, বসন্তের আগমনে এক আলাদা মাত্রা পায় শান্তিনিকেতনের দোল। বৈষ্ণব বিশ্বাস অনুযায়ী দোল পূর্ণিমার দিন শ্রীকৃষ্ণ রং এবং আবির দিয়ে রাধা ও অন্যান্য গোপিনীদের সঙ্গে রং খেলায় মেতে উঠেছিলেন। বিশ্বাস মতে দোল খেলার উৎপত্তি সেখান থেকেই শুরু। যা আজও সমানভাবে এগিয়ে চলেছে।

    বাংলায় শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভু দোলযাত্রার (Holi) শুভ সূচনা করেন

    হিন্দু শাস্ত্রবিদরা বলছেন এই দোল (Holi) পূর্ণিমার দিনটিকে গৌড় পূর্ণিমাও বলা হয়। তার কারণ ১৪৮৬ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি শনিবার দোল পূর্ণিমা তিথিতে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর জন্ম হয়েছিল। পাশাপাশি এই বাংলাতে দোল উৎসবের সূচনাও শ্রীচৈতন্যদেবের হাত ধরে হয়েছিল। ১৫১৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি গৃহত্যাগ করে অর্থাৎ নবদ্বীপ ত্যাগ করে বৃন্দাবনে গিয়ে সেখানে রং খেলা দেখে অভিভূত হয়েছিলেন তখন থেকেই নাকি বাংলাতে দোল (Holi) উৎসবের সূচনা হয় ভক্তদের বিশ্বাস এই দোল খেলায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণও হাজির হতেন মহাপ্রভুর সঙ্গে দোল খেলতে।

    আবার কোনও কোনও গবেষক মনে করেন, প্রায় ২০০০ বছর আগে রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন প্রচলন করেছিলেন দোল উৎসব। সপ্তম শতাব্দীতে সম্রাট হর্ষবর্ধনের লেখা রত্নাবলী নাটকেও হোলি (Holi) খেলার উল্লেখ রয়েছে। শুধু উত্তর ভারত নয় দক্ষিণ ভারতের বিজয়নগরের একটি মন্দিরের গায়ে এক রাজকুমার রাজকুমারীর রং খেলার চিত্রকলা রয়েছে। এখান থেকে বলা হয় যে দোল সারা ভারতবর্ষ ব্যাপী প্রচলিত ছিল।

    পৌরাণিক কাহিনীগুলি জানা যাক

    ভক্ত প্রহ্লাদের আখ্যান এবং হোলিকা দহন

    অন্যদিকে পৌরাণিক আখ্যান অনুযায়ী ভগবান বিষ্ণুর পরমভক্ত ছিলেন অসুর রাজ হিরণ্যকশিপুর পুত্র প্রহ্লাদ।  নিজেকে ঈশ্বর ঘোষণা করেছিলেন রাক্ষসরাজা। অহংকারী রাজার ওপর ব্রহ্মার বরদান ছিল দিন বা রাত, গৃহের ভিতর বা বাইরে, মানুষ বা পশু কেউই হিরণ্যকশিপুকে বধ করতে পারবেনা। এরপর নিজের পুত্র প্রহ্লাদকে হত্যার পরিকল্পনা নেন রাক্ষসরাজা। নিজের বোন হোলিকার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেন।

    হোলিকার ওপর আবার ব্রহ্মার বরদান স্বরুপ একটি চাদর ছিল, যেটি ছিল একধরনের রক্ষা কবচ। এই চাদর গায়ে জড়িয়ে প্রহ্লাদকে নিয়ে অগ্নিকুণ্ডে বসেন হোলিকা। ঠিক তখনই ভগবান বিষ্ণুর কৃপায় চাদর উড়ে গিয়ে পড়ে প্রহ্লাদের গায়ে। অগ্নিকুণ্ডে দগ্ধ হয়ে যান হোলিকা। এই কারণে দোল উৎসবের আগের দিন হয় হোলিকা দহন। বাংলাতে এটাই প্রচলিত ন্যাড়াপোড়া নামে। ভক্তদের বিশ্বাস, এইদিনে সকল অশুভ শক্তির নাশ হয়। ভগবান বিষ্ণু তথা কৃষ্ণের পূজা করলে জীবনে সমৃদ্ধি নেমে আসে ভক্তদের।

    পুতনা রাক্ষসী বধ

    পৌরাণিক কাহিনী অনুযায়ী, দোল (Holi) পূর্ণিমার দিনে শ্রীকৃষ্ণকে স্মরণ করার কথা কোথাও কোথাও বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে হোলিকাকে পুতনার ভূমিকায় রাখা হয় এবং পুতানার বিষ দুধে শ্রীকৃষ্ণ পান করেনি বরং তার রক্ত পান করেন, এইভাবেই ভগবান বধ করেন পুতনাকে। এরফলে শ্রীকৃষ্ণের গায়ের রং নীল হয়ে যায়। বিশ্বাসমতে দোল পূর্ণিমা হল পুতনা বধের পর উৎসব।

     

    বিবাহিত নারীরা তাদের পরিবারের কল্যাণ এবং মঙ্গল কামনায় দোল উৎসবে মাতেন এদিন। ভারতের বাইরেও দোল উৎসব ব্যাপকভাবে পালিত হয়।  বৈষ্ণব ধর্ম ছাড়াও শাক্ত-শৈবরাও এই উৎসব পালন করেন। পরিবারিক, বৃহত্তর সমাজ জীবনের ক্ষেত্রে দোল পূর্ণিমার গুরুত্ব অনেক।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ

     

     

     

     

  • Holi: জানেন দোলের আগের দিন ন্যাড়াপোড়া কেন হয়?

    Holi: জানেন দোলের আগের দিন ন্যাড়াপোড়া কেন হয়?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: চলতি বছরে দোল ৮ মার্চ। ঠিক তার আগের দিন ন্যাড়াপোড়া, সেটাই আবার বাংলার বাইরে হোলিকা দহন। হোলি (Holi) ও দোল নিয়ে নানা মতভেদ থাকলেও দোলের আগের দিন রাতে সব জায়গায় এই হোলিকা দহন পালিত হয়। শুধু কোথাও বলে চাঁচড় পোড়া, কোথাও ন্যাড়া পোড়া, আবার কোথাও হোলিকা দহন। তবে, এই উৎসবের পিছনে আধ্যাত্মিক গুরুত্বও রয়েছে। 

    হোলিকা দহনের পৌরাণিক আখ্যান

    পুরাণ কাহিনি অনুযায়ী, রাক্ষস রাজা হিরণ্যকশিপু তাঁর প্রজাদের পুজোপাঠ এবং যেকোনও প্রকারের ধর্মাচরণ বন্ধ করে দেন। হিরণ্যকশিপু নিজেকেই ঈশ্বর মনে করতেন। প্রজারা তাই অন্য কোনও দেবতার পুজো করতে পারত না। অমরত্ব লাভের জন্য রাক্ষস রাজা ব্রহ্মার তপস্যা শুরু করেন। তাঁর তপস্যায় খুশি হয়ে ব্রহ্মা তাঁকে পাঁচটি বর দেন। এক, কোনও মানুষ বা কোনও প্রাণী তাঁকে বধ করতে পারবে না। ঘরের ভিতর বা ঘরের বাইরে তাঁর মৃত্যু হবে না। দিনে বা রাতে তাঁর মৃত্যু হবে না। কোনও অস্ত্র বা শস্ত্রের দ্বারাও মৃত্যু হবে না। এবং জল, ভূমি ও শূন্যেও তাঁর মৃত্যু হবে না।

    হিরণ্যকশিপুর অত্যাচার বাড়ার পর তিনি প্রহ্লাদকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেন। কারণ তাঁর পুত্র হয়ে ভক্ত প্রহ্লাদ ভগবান বিষ্ণুর পুজো করতেন। এটা কোনওভাবেই মেনে নিতে পারছিলেন না রাক্ষসরাজা। এক্ষেত্রে তিনি নিজের বোন হোলিকার সাহায্য নেন। হোলিকা ব্রহ্মার কাছ থেকে একটি শাল পেয়েছিলেন, এই শাল ছিল একধরনের রক্ষাকবচ। যেটা তাঁকে সবসময় রক্ষা করবে। তাই ঠিক হয় যে হোলিকা প্রহ্লাদকে নিয়ে আগুনের মধ্যে বসবেন। শাল থাকায় তাঁর কিছু হবে না কিন্তু প্রহ্লাদ পুড়ে ছাই হয়ে যাবে। কিন্তু আগুনের মধ্যে প্রবেশ করা মাত্র হোলিকার শাল প্রহ্লাদের গায়ে গিয়ে পড়ে আর হোলিকা আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। কিন্তু প্রহ্লাদ সুরক্ষিত থাকে। এখান থেকেই শুরু হয় হোলিকা দহন।

    দোল উৎসব মানে এক পবিত্র তিথি, ভক্তদের বিশ্বাস এই দিন সমস্ত অশুভ শক্তির বিনাশ হয় এবং শুভ শক্তির বিকাশ ঘটে।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ

     

  • Aamlaki Ekadashi: আজ আমলকী একাদশী, জানেন এর মাহাত্ম্য? জেনে নিন ব্রতপালনের নিয়ম

    Aamlaki Ekadashi: আজ আমলকী একাদশী, জানেন এর মাহাত্ম্য? জেনে নিন ব্রতপালনের নিয়ম

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক:  শাস্ত্রকাররা বলছেন একাদশীর অর্থ হল আমাদের ১০ ইন্দ্রিয় এবং এক মন নিয়ন্ত্রণ। হিন্দু শাস্ত্রমতে, একাদশীতে দুটি শব্দ আছে, এক এবং দশ । দশ ইন্দ্রিয় এবং মনের ক্রিয়াকলাপকে জাগতিক জিনিস থেকে ঈশ্বরে রূপান্তরিত করাই আসল একাদশী। ফাল্গুন মাসের শুক্লপক্ষের একাদশী তিথি আমলকী একাদশী (Aamlaki Ekadashi) নামে পরিচিত। এই দিনটিকে অনেকে রঙভরনী একাদশীও বলে থাকেন। আমলকী একাদশীতে আমলকী গাছের পুজো করার রীতি প্রচলিত রয়েছে। ভগবান বিষ্ণুর পুজোও এদিন করা হয়। চলতি বছর আমলকী একাদশীর ব্রত পালন হবে ৩ মার্চ।

    কেন এই একাদশীর নাম আমলকী একাদশী (Aamlaki Ekadashi)

    আমলকী গাছের উত্‍পত্তি নিয়ে পুরাণে একটি কাহিনি প্রচলিত আছে। বিষ্ণু পুরাণ অনুসারে আমলকী গাছের উৎপত্তি ভগবান বিষ্ণুর মুখ থেকে। বিশ্বাস মতে, তাঁর মুখ থেকে একবার চাঁদের সমান একটি বিন্দু প্রকট হয়ে পৃথিবীতে গিয়ে পড়ে। সেই বিন্দু থেকেই আমলকী গাছের উৎপত্তি হয়। বিষ্ণুর মুখ থেকে উৎপন্ন আমলকী গাছকে তাই সর্বশ্রেষ্ঠ বলে মনে করা হয়। ভক্তদের বিশ্বাস, আমলকী ফল ভগবান বিষ্ণুর অত্যন্ত প্রিয়। আয়ুর্বেদ অনুযায়ী এই ফলের প্রচুর উপকারিতা আছে। ভক্তদের আরও বিশ্বাস, আমলকী খেলে তিন গুণ শুভ ফল লাভ করা যেতে পারে। অনেকে মনে করে আমলকী একাদশী তিথি এই গাছে অবস্থান করেন স্বয়ং লক্ষ্মী। সৌভাগ্য ও সমৃদ্ধির দেবীর লক্ষ্মীর কৃপা পাওয়ার জন্যও এদিন আমলকী গাছের পুজো করার রীতি প্রচলিত আছে। দেশের অনেক জায়গায় আমলকী একাদশী থেকেই দোল উৎসবের সূচনা হয়। আবার অন্য একটি পৌরাণিক গল্প অনুসারে, ভগবান বিষ্ণুর নাভি থেকে ব্রহ্মার জন্ম হয়েছিল। পরমব্রহ্মকে জানার জন্য তখন তপস্যা শুরু করেছিলেন ব্রহ্মা। সেই তপস্যায় খুশি হয়ে বিষ্ণু আর্বিভূত হন। চোখের সামনে নারায়ণকে দেখে ব্রহ্মা তাঁর চোখের জল সামলে রাখতে পারেননি। নারায়ণের পায়ে তাঁর চোখের জল পড়েছিল। আর সেখান থেকেই তৈরি হয় এই গোল সবুজ ফল। নারায়ণ তখন বলেছিলেন, ‘আজ থেকে এই ফল আর এই গাছ আমার খুব প্রিয় হবে। এই দিনে ভক্তিভরে আমলকী গাছকে পুজোর মধ্যে দিয়েই আমার আরাধনা করা হবে। আমলকী একাদশীতে পুজো করলে সমস্ত পাপ বিনষ্ট হবে এবং জীবনে আসবে শুভ যোগ’।

    আমলকী একাদশীর (Aamlaki Ekadashi) ব্রত কথা

    কথিত আছে প্রাচীনকালে চিত্রসেন নামে এক রাজার রাজত্ব ছিল। তাঁর রাজ্যে একাদশী ব্রত অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে পালন করা হত। তাঁর রাজ্যের সমস্ত প্রজা একাদশী ব্রত পালন করতেন। অন্যদিকে রাজার মনে আমলকী একাদশীর প্রতি অসীম শ্রদ্ধা ছিল। একদিন শিকার করতে গিয়ে জঙ্গলে অনেক দূর এগিয়ে যান রাজা। সেখানে এক দল ডাকাতের কবলে পড়েন তিনি। অস্ত্র হাতে রাজাকে আক্রমণ করে ডাকাতরা। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে রাজার ওপর যে অস্ত্রই প্রয়োগ করা হোক না কেন, সে সবই ফুলে পরিণত হয়ে যায়।

    বিপুল সংখ্যক ডাকাতদের মোকাবিলা করতে গিয়ে জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যান রাজা। সে সময় রাজার শরীর থেকে একটি দৈব শক্তি প্রকট হয় ও ডাকাতদের বিনাশ করে পুনরায় অদৃশ্য হয়ে যায়। জ্ঞান ফিরলে রাজা দেখেন সমস্ত ডাকাত মৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। হতবাক হয়ে যান রাজা চিত্রসেন। তখন আকাশবাণী হয়, ‘হে রাজা! এই সমস্ত রাক্ষস তোমার আমলকী একাদশীর ব্রতর প্রভাবে মারা গিয়েছে। তোমার শরীর থেকে উৎপন্ন আমলকী একাদশীর বৈষ্ণবী শক্তি এদের সংহার করেছে। এদের বধ করে সেই শক্তি পুনরায় তোমার শরীরে প্রবেশ করেছে। এই কথা শুনে রাজা প্রসন্ন হন এবং নিজের রাজ্যে ফিরে গিয়ে একাদশীর মাহাত্ম্য প্রচার করেন।’

    কীভাবে আমলকী একাদশীর (Aamlaki Ekadashi) ব্রতপালন করবেন

    পণ্ডিতরা বলছেন, এদিন খুব সকালে অর্থাৎ ব্রাহ্ম মুহূর্তে ঘুম থেকে উঠে স্নান সেরে বিষ্ণুর পুজো করুন। এরপর বাড়ির পাশে যেখানে আমলকী গাছ রয়েছে সেখানেও বিষ্ণুর একটি ছবি বসিয়ে পুজো করতে হবে। আমলকী গাছের তলায় হলুদ কাপড় বিছিয়ে নারায়ণের ছবি রাখুন। এবার ধূপ, ফুল, চন্দন আর নৈবেদ্য সাজিয়ে পুজো করুন। পুজো শেষ হলে গাছতলায় ঘি-এর প্রদীপ জ্বালিয়ে আসুন। তবে প্রসাদে একটি গোটা আমলকী যেন অবশ্যই থাকে। এদিন নিরামিষ আহারের রীতি রয়েছে।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।

     

     

     

     

  • Maha Shivratri: আজ মহাশিবরাত্রি, পবিত্র ব্রত পালনের নেপথ্য লৌকিক কাহিনী জানুন

    Maha Shivratri: আজ মহাশিবরাত্রি, পবিত্র ব্রত পালনের নেপথ্য লৌকিক কাহিনী জানুন

    শুভ্র চট্টোপাধ্যায়: ভক্তদের কাছে শিবরাত্রির বিশেষ মাহাত্ম্য রয়েছে। এইদিন দেবাদিদেব মহাদেবের আরাধনায় মেতে ওঠেন দেশবিদেশের ভক্তরা। তাঁদের বিশ্বাস এই বিশেষ তিথিতে মহাদেব সন্তুষ্ট হলে সকল মনস্কামনা পূরণ করেন। এই বিশেষ তিথিতে ভক্তরা একটি সারাদিনব্যাপী উপবাস পালন করে এবং বিশ্বজুড়ে শিব মন্দিরগুলিতে পূজা করা হয়। ভক্তরা সাধারণত শিবলিঙ্গে দুধ, বেলপাতা নিবেদন করেন এবং মোক্ষ প্রার্থনা করেন।
     বেশ কয়েকটি পুরাণে মহা শিবরাত্রির (Maha Shivratri) উল্লেখ পাওয়া যায়। মধ্যযুগীয় শৈব গ্রন্থগুলিতে শিবরাত্রির দিন উপবাস ও লিঙ্গরূপের শিবের পূজার কথা উল্লেখ রয়েছে।

    শিবরাত্রির ব্রত পালনের লৌকিক কাহিনী

    হিন্দু মহাপুরাণ তথা শিবমহাপুরাণ (Maha Shivratri) অনুসারে এই রাত্রেই শিব সৃষ্টি, স্থিতি ও প্রলয়ের মহা তাণ্ডব নৃত্য করেছিলেন। আবার অন্য একটি পৌরাণিক আখ্যান মতে, এই রাত্রেই শিব ও পার্বতীর বিয়ে হয়েছিল।  এই মহাশিবরাত্রিতে শিব তাঁর প্রতীক লিঙ্গ তথা শিবলিঙ্গ রূপে প্রকাশিত হয়ে জীবের পাপনাশ ও মুক্তির পথ দেখিয়েছিলেন। 

    কিন্তু শিবরাত্রির ব্রত পালনের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে একটি প্রচলিত কাহিনী।  এই কাহিনী তিনজনকে কেন্দ্র করে শিব, যমরাজ এবং এক ব্যাধ।
    লৌকিক কথা অনুসারে, কাশীতে বাস করতেন এক ব্যাধ। এমনই একদিন শিকারে বেরিয়ে দিনভর অভুক্ত ছিলেন সেই ব্যাধ। ক্ষুধার্থ অবস্থায় তিনি ঘুমিয়ে পড়েছিলেন এক গাছের নিচে। এদিকে যখন তাঁর ঘুম ভাঙল তখন সন্ধ্যা। হিংস্র জন্তুতে ভর্তি সেই জঙ্গল। প্রাণ বাঁচাতে উঠে পড়লেন একটি বেল গাছে। সেখানেই রাত্রিযাপন করেছিলেন ওই শিকারী।

    এদিকে ওই বেলগাছের নিচেই ছিল একটি শিবলিঙ্গ। গাছে ব্যাধের নড়াচড়ার ফলে ওই গাছ থেকে বেশ কয়েকটি বেলপাতা পড়েছিল শিবলিঙ্গে। আর ব্যাধ ছিলেন উপবাসী। দিনটি ছিল শিবরাত্রির দিন। পরের দিনে ব্যাধ বাড়ি ফিরে খেতে বসলে তাঁর বাড়িতে আসেন এক অতিথি। এদিকে ঘরে খাবার কম। তাই অতিথি সেবা করতে নিজের খাবারই সেই অতিথিকে নিবেদন করেছিলেন শিকারী। ফলে নিজের অজান্তেই পালন করে ফেলেছিলেন ব্রত।

    তারপর কেটে গিয়েছিল বহু বহু বছর। ব্যাধের মৃত্যুর সময় তাঁকে নিতে আসেন যমদূতেরা। এদিকে ব্যাধকে নিতে আসেন শিবদূতেরাও। দুই পক্ষের দূতদের মধ্যে বাধে লড়াই। অবশেষে যমদূতরা কৈলাসে যান দেবাদিদেবকে নালিশ করতে। তখন শিবপ্রহরী নন্দী যমদূতদের বলেন, যেহেতু ব্যাধ শিবচতুর্দশীর দিনে ব্রত পালন করেছিলেন তাই পুণ্যলাভ করেছেন। এই কারণেই যমদূতরা তাঁকে নিয়ে যেতে পারেন না। সমস্ত ঘটনা যমদূতরা জানিয়েছিলেন যমরাজকে। সব শুনে যমরাজ বলেছিলেন, শিব চতুর্দশীতে এই ব্রত যিনি পালন করবেন তিনি সমস্ত পাপ থেকে রক্ষা পাবেন। আরও বলেছিলেন, সেই ব্রতপালনকারীর ওপরে থাকবে না যমের অধিকার।

    আবার হিন্দু পুরাণ অনুসারে, এই দিনে ভগবান শিব দেবী পার্বতীর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। ভগবান শিব পুরুষকে (মননশীলতা) মূর্ত করেছেন, যেখানে মা পার্বতীর প্রকৃতির (প্রকৃতি) ব্যক্তিত্ব রয়েছে। চেতনা এবং শক্তি উভয়ের মিলনের সাথে এটি সৃষ্টিকে সহজ করে তোলে।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।

     

     

     

     

  • Shivaratri: শিবরাত্রির ব্রততে কোন বিধি অবশ্যই মানতে হবে, কী কী করবেন না, জানেন?

    Shivaratri: শিবরাত্রির ব্রততে কোন বিধি অবশ্যই মানতে হবে, কী কী করবেন না, জানেন?

    শুভ্র চট্টোপাধ্যায়: পুরাণ অনুযায়ী ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণা চতুর্দশী তিথিতে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন শিব পার্বতী। ভক্তদের কাছে এই বিশেষ তিথির আলাদা মাহাত্ম্য রয়েছে। বিশ্বাস মতে, এইদিনে ভক্তিভরে শিব আরাধনা করলে জীবনে সুখ শান্তি সমৃদ্ধি আসে। 

    শিবরাত্রির (Shivaratri) দিন কীভাবে শিব আরাধনা করবেন এবং কী কী বিধিনিষেধ মেনে চলবেন তা জেনে নিন

    হিন্দু পঞ্জিকা অনুসারে, ইংরেজির ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ও বাংলার ৫ ফাল্গুন ১৪২৯ শনিবার রাত্রি ৮:০৩ ঘটিকায় শিবচতুর্দশী শুভারম্ভ এবং আগামীদিন ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ বিকাল ৪:১৮-তে মহা সমাপ্তি।

    অমৃতযোগঃ

    শাস্ত্র অনুযায়ী, অমৃতযোগ চলাকালীন লিঙ্গাভিষেক অত্যন্ত শুভ ফলপ্রদ! এ সময় লিঙ্গাভিষেক করলে পুত্র সন্তান প্রাপ্তি হয়, শুভ কাজে আসা সমস্ত বিঘ্ন কেটে যায়। জীবনে সাফল্য আসে। ছাত্ররা পড়াশোনায় আরও মনোযোগী হয়।

    এবছরে অমৃতযোগের শুভক্ষণগুলি হল

    রাত্রি  ০৮:৪৬-১১:১৮ (১৮ ফেব্রুয়ারি)
    রাত্রি  ০১:০০-০২:৪২ (১৯ ফেব্রুয়ারি)
    ভোর  ০৩:৩৩-০৫:১৫ (১৯ ফেব্রুয়ারি)
    সকাল  ০৭:৪২-১০:৪২ (১৯ ফেব্রুয়ারি)

    কী কী বিধি মেনে চলবেন

    পণ্ডিতরা বলছেন, শিবরাত্রির (Shivaratri) আগের দিন “সংযম” ব্রত পালন করা উচিত। সাত্ত্বিক আহার অর্থাৎ নিরামিষ ও হালকা খাদ্য গ্রহণ করতে হয়। পবিত্র চিন্তা করা উচিত।

     শিবরাত্রির (Shivaratri) দিন কালো তিল ভেজানো জলে সূর্যোদয়ের পূর্বে স্নান করতে হবে, এই মন্ত্রটি পাঠ করে- “ওঁ ত্র্যম্বকং যজামহে সুগন্ধিং পুষ্টি বর্দ্ধনম্। উর্বারুকমিব বন্ধনান্মৃত্যোমুক্ষীয় মামৃতাৎ।।” স্নান সেরে পরিষ্কার পোশাক পরতে হবে।

     স্নানের পর সারাদিন উপোস করে থাকতে হবে, তবে ব্রাহ্মণের বিধান অনুযায়ী তরল জাতীয় কিছু পান করা যেতে পারে ভোলানাথের মাথায় জল ঢালার আগে! তবে অনেকে নির্জলা উপোষ করে থাকেন। সারাদিন এই মন্ত্রটি পাঠ করে যেতে হবে “ওঁ নমঃ শিবায়”।

    শিবরাত্রির (Shivaratri) পূজা চারটি প্রহরে হয়, এবছরের প্রহরের সময়গুলি হল –

    প্রথম প্রহরের পূজা – ১৮ ফেব্রুয়ারি, বিকেল ৫টা ৩৫ মিনিট থেকে রাত ৮টা ৪২ মিনিট। এই সময় দুধ দিয়ে অভিষেক করানোর বিধি দিচ্ছেন শাস্ত্রকাররা।

    দ্বিতীয় প্রহরের পূজা – ১৮ ফেব্রুয়ারি, রাত ৮টা ৪২ মিনিট থেকে রাত ১১টা ৫০ মিনিট। এই প্রহরের পুজোতে দই দিয়ে অভিষেক করতে বলছেন পণ্ডিতরা। 

    তৃতীয় প্রহরের পূজা – ১৮ ফেব্রুয়ারি, রাত ১১টা ৫০ মিনিট থেকে ১৯ ফেব্রুয়ারি রাত ২টা ৫৮ মিনিট। ঘি দিয়ে অভিষেকের বিধান রয়েছে এই প্রহরের পুজোতে।

    চতুর্থ প্রহরের পূজা – ১৯ ফেব্রুয়ারি, রাত ২টা ৫৮ মিনিট থেকে সকাল ৬টা ০৬ মিনিট। এই প্রহরের পুজোতে মধু দিয়ে অভিষেক করতে বলছেন পণ্ডিতরা।

    শিবপুজোর উপকরণ

    দুধ, দই, ঘি, মধু, সাদা-চন্দন, বেলপাতা, আকন্দ, ধুতুরা, অখণ্ড চাল, ভাঙ, সাদা ফুল, অপরাজিতা ফুল, মরশুমি ফল এবং বেল, প্রদীপ, কর্পূর, মিষ্টান্ন ইত্যাদি। পিতলের পাত্র ব্যবহার করবেন, অভিষেক করতে।

    কোন কোন উপকরণ ব্যবহার করা যাবেনা

    ১)অভিষেকের জন্য স্টিল, তামা, লোহার পাত্র ব্যবহার করা যাবে না।
    ২)হলুদ, সিঁদুর, কুমকুম ব্যবহার করা যাবে না।
    ৩)তুলসী পাতা ব্যবহার করা যাবে না।
    ৪)ভাঙা চাল ব্যবহার করা যাবে না।
    ৫)শঙ্খ থেকে জল অর্পণ করা যাবে না।
    ৬)শঙ্খ বাজানো যাবে না।
    ৭)করতাল বাজানো যাবে না।
    ৮)উগ্র সুগন্ধি ব্যবহার করা যাবে না।
    ৯)ডাব বা নারকেলের জল ব্যবহার করা যাবে না।

    উপবাস ভঙ্গঃ পূজা কার্যাদি পরিপূর্ণ করার পর ব্রাহ্মণের বিধান অনুযায়ী খাদ্য গ্রহণ করে উপোস ভঙ্গ করা যাবে।

    সমগ্র নিয়ম সঠিকভাবে পালন করে পূজার কাজ করতে পারলে আপনার সমস্ত মনোবাসনা পূর্ণ হবে এবং আপনি মহাদেবের আশীর্বাদ প্রাপ্ত হবেন।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।

     

     

LinkedIn
Share