Category: পরম্পরা

Get updated History and Heritage and Culture and Religion related news from the Madhyom news portal madhyom.com, West Bengal leading news portal Madhyom.com

  • Bermuda Triangle: ভারতের বুকেও আছে বারমুডা ট্রায়াঙ্গল, যাকে ঘিরে রহস্যের ঘনঘটা!

    Bermuda Triangle: ভারতের বুকেও আছে বারমুডা ট্রায়াঙ্গল, যাকে ঘিরে রহস্যের ঘনঘটা!

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বারমুডা ট্রায়াঙ্গল-এর নাম শোনেননি, এরকম মানুষ হয়তো খুব কমই আছেন। বিভিন্ন সময় নানা চর্চার কেন্দ্রবিন্দু হয়েছে এই বারমুডা ট্রায়াঙ্গল (Bermuda Triangle)। এই জায়গা ঘিরে আছে অসংখ্য রহস্য এবং অলৌকিক ঘটনা। এই জায়গাকে ঘিরে বিভিন্ন ‘কন্সপিরেসি থিয়োরি’ অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় মানুষকে আরও বেশি আকর্ষণ করে। আটলান্টিক মহাসাগরে ৩টি স্থানের কাল্পনিক বিন্দুকে যোগ করে এই ত্রিভুজাকৃতি জায়গাটি গড়ে উঠেছে। এখানে সময় যেন থমকে যায়। বিভিন্ন বড় বড় জাহাজ থেকে শুরু করে বিমান এই অঞ্চলে একবার এলেই নিমেষের মধ্যে হারিয়ে যায়, যার খোঁজ পাওয়া যায় না কোনও ভাবেই। একের পর এক ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার শিকার হন পাইলট থেকে জাহাজের নাবিকরা। এখানে কাজ করে না কম্পাস, নিজের তালে ঘুরতে থাকে দিকনির্ণয় যন্ত্রগুলি! ফলে অনায়াসে দিক ভুল করে দুর্ঘটনার মুখে পড়ে বিমান ও জাহাজ। এই জায়গাতে এমন কেন হয়, এ নিয়ে অনেক বিতর্ক আছে, যা আজও গবেষণার বিষয়। কিন্তু এই আটলান্টিক মহাসাগরের বারমুডা ট্রায়াঙ্গল ছাড়াও আমাদের বাংলারই প্রতিবেশী রাজ্য ওড়িশাতে আছে এমন এক ট্রায়াঙ্গল, যা বারমুডার থেকে ভিন্ন নয়। এখানেও ঘটে একের পর এক দুর্ঘটনা। কেন হয় এবং কীভাবে হয়, তা আজও রহস্য।

    কোন কোন অঞ্চলকে নিয়ে গড়ে উঠেছে ভারতের বারমুডা ট্রায়াঙ্গল (Bermuda Triangle)?

    আটলান্টিক মহাসাগরের বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের (Bermuda Triangle) মতো ভারতেও ওড়িশার আমারদা রোড বিমানঘাঁটি, ঝাড়খণ্ডের চাকুলিয়া ও পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়ার পিয়ারডোবার কাছে তিনটি অঞ্চলকে নিয়ে একটি কাল্পনিক বিন্দু দিয়ে ত্রিভুজাকৃতি অঞ্চল তৈরি করা হয়েছে। এই এলাকার মধ্যে ঘটে গেছে অনেক বিমান দুর্ঘটনা। কিন্তু কেন শুধুমাত্র এই অঞ্চলেই এমন হয়, সেই যুক্তি হুবহু বারমুডার সাথে মিলে যায়। সেই দিকভ্রষ্ট হওয়া থেকে শুরু করে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনা, সব যেন এক।  এখনও পর্যন্ত মোট ১৬ টি বিমান দুর্ঘটনা হয়েছে এই অঞ্চলেই। এই অঞ্চলের কিছু বিমান দুর্ঘটনা মানুষকে, বিজ্ঞানকে বার বার ভাবিয়েছে।
    এখানে প্রথম দুর্ঘটনাটি ঘটে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়। ১৯৪৪ সালের ৪ মে, মার্কিন লিবারেট যুদ্ধবিমান এবং হার্ভার্ড দ্য হাভিল্যান্ড-এই বিমান দুটি যখন আমারদা রোড বিমানঘাঁটির কাছে এসে পৌঁছায়, তখন মুখোমুখি মারাত্মক সংঘর্ষ হয় তাদের। সঙ্গে সঙ্গে মারা যান দুই বিমানে উপস্থিত মোট চারজন অফিসার। আবার এর ঠিক তিনদিন পরেই অর্থাৎ ১৭ই মে একই জায়গাতে আবার একটি দুর্ঘটনা ঘটে। আরেকটি লিবারেটর যুদ্ধবিমান সেখান থেকে টেক অফ করে এবং কুড়ি মিনিটের মধ্যে সেখানে ভেঙে পড়ে। আরও অবাক হতে হয় ওই একই সপ্তাহের মধ্যে ১৩ই মে আমারদা রোড থেকে আরেকটি বিমান টেক অফ করার পরে সেখানে ভেঙে পড়ে। সেটি ছিল একটি হাভিল্যান্ড বিমান। কিন্তু এই দুর্ঘটনাতে কেউ মারা যায়নি।
    এখানেই শেষ নয়, আবার ১৯৪৫ সালের ২৬ শে জুলাই এই অঞ্চলে সব থেকে বড় দুর্ঘটনাটি ঘটে যায়। চার ইঞ্জিনের দুটি বোমারু বিমান ব্রিটিশ রয়াল যুদ্ধবিমান B-24  লিবারেটর ওই একই স্থানে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। মৃত্যু হয় ১৪ জন অফিসারের। সম্প্রতি ২০১৮ সালে আবার ওই অঞ্চলে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে আরেকটি বিমান। সব থেকে অবাক করা বিষয়, তখন আবহাওয়া ছিল পরিষ্কার। বিমানের কোনও যান্ত্রিক গণ্ডগোলও ছিল না। কিন্তু এই দুর্ঘটনায় কোনও মৃত্যু হয়নি।

    কেন এমন হয় শুধুমাত্র এই অঞ্চলে (Bermuda Triangle)? 

    শেষবার যে দুর্ঘটনাটি ঘটে ২০১৮ সালে, সেই বিমান চালক প্রাণে বেঁচে যান এবং তাঁর দেওয়া বর্ণনা শুনে আঁতকে ওঠেন সবাই। বিমান চালকের বর্ণনা অনুযায়ী, তাঁর বিমানটি যখন আমারদা বিমানঘাঁটির (Bermuda Triangle) ওপর এসে পৌঁছায়, তখন হঠাৎ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। ক্রমশ নিচের দিকে নামতে থাকে প্লেনটি, যেন কোনও অদৃশ্য শক্তি টেনে নামিয়ে আনছে বিমানটিকে। অথচ তাঁর বিমানে কোনও সমস্যা ছিল না। কিছু বুঝে ওঠার আগেই তিনি দেখলেন, বিমানটি একদম মাটির কাছাকাছি নেমে এসেছে। তিনি তৎক্ষণাৎ বিমান থেকে লাফ দেন এবং নিচে পড়ে যান। তাঁর কোনও রকম ক্ষতি না হলেও বিমানটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এমন কেন হয়, এই নিয়ে সবার মধ্যে অনেক বিতর্ক আছে। 
    বিভিন্ন তথ্য থেকে জানা যায়, যত দুর্ঘটনা এই আমারদা বিমানঘাঁটিকে কেন্দ্র করেই। এই বিমানঘাঁটির কাছাকাছি একটি জায়গা আছে ঝাড়খণ্ডের জাদুগোরা ইউরেনিয়াম খনি। সেখানে ইউরেনিয়ামের তেজস্ক্রিয়তার প্রভাবেই হয়তো বিমান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে, যন্ত্রাংশ বিকল হয়ে যায়। বিমানের  র‌্যাডার কাজ করা বন্ধ করে দেয়। আবার কেউ কেউ বলেন, আমারদা বিমানঘাঁটি সংলগ্ন এলাকায় আছে বিশাল এক চৌম্বক ক্ষেত্র, যা বিমানকে টেনে নিচে নামিয়ে আনে এবং দুর্ঘটনা ঘটে।
    কিন্তু এসব যুক্তি এখনও প্রমাণিত নয়, কোনও গবেষণা এখনও এসব প্রমাণ করতে পারেনি। কেউ কেউ মনে করেন, সরকারি গবেষণায় হয়তো এর কারণ খুঁজে পাওয়া গেছে। কিন্তু সেটি সরকার থেকে গোপন রাখা হয়েছে। কেননা কোনও বেসরকারি সংস্থাকে এই বিষয়ে গবেষণা করতে অনুমতি দেওয়া হয়নি। যাই হোক, এই অঞ্চল আজও রহস্যে ঘেরা। অনেক অজানা বিষয় আছে এই অঞ্চলকে ঘিরে। হয়তো ভবিষ্যতে রহস্য উদঘাটন হবে।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।

  • Sulekha Ink: যাদবপুরের ‘সুলেখা মোড়’ নামের পিছনে লুকিয়ে বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের ইতিহাস!

    Sulekha Ink: যাদবপুরের ‘সুলেখা মোড়’ নামের পিছনে লুকিয়ে বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের ইতিহাস!

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: কলকাতার যাদবপুর একটি অতি পরিচিত জায়গা। আর তা পরিচিত হওয়ার পিছনে যার অবদান সবচেয়ে বেশি, সেটি হল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয় আজ বিশ্বের দরবারে পৌঁছে গিয়েছে। কিন্তু এই যাদবপুরেই আছে আরও এক জায়গা, যাকে যাদবপুরের অন্যতম ল্যান্ডমার্ক বলা যেতে পারে। তা হল ‘সুলেখা মোড়’। এই জায়গার নাম অতি সাধারণ হলেও এর পিছনে আছে অনেক ইতিহাস। আসলে ‘সুলেখা’ একটি কোম্পানি, যা লেখার কালি প্রস্তুত করত। সেই কালির (Sulekha Ink) ব্যবহার ও জনপ্রিয়তা যে গোটা ভারত ও বিশ্বে পৌঁছে গিয়েছিল, সেকথাও কমবেশি সবারই জানা। কিন্তু এর ইতিহাস কি জানেন?

    সুলেখা কালির (Sulekha Ink) উৎপত্তি কীভাবে?

    সময়টা ১৯০৫ সাল। লর্ড কার্জনের কুখ্যাত বঙ্গভঙ্গর সূচনা হয়েছে। এর প্রতিবাদে সরব অনেকেই। এটি পরিণত হল স্বদেশি আন্দোলনে। মূল লক্ষ্য ছিল, সমস্ত বিদেশি পণ্য বর্জন করে স্বদেশি পণ্য উৎপাদন ও ব্যবহার করা। এরই ফলে তৈরি হয় এশিয়ান পেইন্টস, টাটা স্টিল নামক অনেক সংস্থা। এই আন্দোলনে গান্ধীজিও প্রভাবিত হন এবং তিনি চিঠি, আবেদনপত্র প্রভৃতি লিখতে দেশীয় পদ্ধতিতে তৈরি কালি খুঁজছিলেন। এই চাহিদার কথা তিনি জানান বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রামী সতীশচন্দ্র দাশগুপ্তকে। আর সতীশচন্দ্রের কাছ থেকে একথা জানতে পেরে ননীগোপাল মৈত্র এবং তাঁর ভাই শঙ্করাচার্য মৈত্র দেশীয় কালি বানানোর প্রথম উদ্যোগ নেন। এই উদ্যোগের ফসল হিসাবেই ১৯৩৪ সালে জন্ম নেয় সুলেখা কালি কোম্পানি। আস্তে আস্তে গোটা ভারতবর্ষে ছড়িয়ে পড়তে থাকে এই কালির জনপ্রিয়তা। সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে তৈরি এই কালি ছিল ভারতের প্রথম তৈরি কালি। আর এই কালি উৎপাদন হত দক্ষিণ কলকাতার যাদবপুরে। বর্তমানের সুলেখা মোড়েই ছিল এর কারখানা। সেই থেকে এই জায়গা নাম পায় ‘সুলেখা মোড়’।

    সুলেখা নাম কে এবং কেন রাখলেন?

    প্রথমে স্বদেশি কালি নামেই পরিচিত পেয়েছিল এই কালি। কিন্তু পরে গান্ধীজির কাছে এই কালির জনপ্রিয়তা এতটাই বেড়ে ওঠে যে তিনি নিজে এর নামকরণ করেন। খুব ভালো লেখা হত, তাই ‘সু-লেখা’ থেকে ‘সুলেখা’ নামকরণ করেন তিনি। এই কালি এই নামেই পরিচিতি পায় সমগ্র ভারতবর্ষে। বাংলার বাইরেও এর উৎপাদন শুরু হয় এই নামেই। এমনকী এই কালির বিজ্ঞাপনের লেখা লেখেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তিনি লেখেন, ‘সুলেখা কালি কলঙ্কের থেকেও কালো’

    ননীগোপাল মৈত্র শিক্ষকতার চাকরি ছেড়েছিলেন কেন?

    স্বাধীনতা সংগ্রামী ননীগোপাল মৈত্র প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি ছিলেন এবং সেই সময় তিনি পদার্থবিদ্যায় স্নাতকোত্তর হন। পরে তিনি ছাড়া পেয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শুরু করেন। কিন্তু সেই সময় স্বদেশী আন্দোলনের দ্বারা তিনি এতটাই প্রভাবিত হয়েছিলেন যে, ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে স্যুট পরে যাওয়ার নীতি থাকলেও তিনি ধুতি-পাঞ্জাবি পরে শিক্ষকতা করতেন। তাঁর এই সিদ্ধান্তকেও মেনে না নেওয়ায় চাকরি ছেড়ে তিনি কলকাতায় চলে আসেন এবং এই কালির ব্যবসাতেই সম্পূর্ণ  মনোনিবেশ করেন। সে সময় এই কালি “প্রফেসর মৈত্রের কালি” নামেও পরিচিতি পেয়েছিল। এক সময় এই কালির মাসিক বিক্রির হার ছিল প্রায় এক মিলিয়ন বোতল, যা অবাক করার মতো বিষয়। স্বাধীনতা ও স্বদেশি আন্দোলনের এটিও এক নতুন পদক্ষেপ ছিল। এই কালি আজও বাঙালির কাছে নস্টালজিক হয়ে আছে। ১৯৮৯ সালে এই কোম্পানি বন্ধ হয়ে গেলেও আবার ২০০৬ সালে এই কালির উৎপাদন শুরু হয়।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • Mahaprabhu: মহাপ্রভুর জামাইষষ্ঠী! কী কী ভোগ নিবেদন করেন বিষ্ণুপ্রিয়ার বাড়ির লোকজন?

    Mahaprabhu: মহাপ্রভুর জামাইষষ্ঠী! কী কী ভোগ নিবেদন করেন বিষ্ণুপ্রিয়ার বাড়ির লোকজন?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: জ্যৈষ্ঠ মাসের শুক্লপক্ষের ষষ্ঠী তিথিতে পালিত হয় জামাইষষ্ঠী। মেয়ে এবং জামাইয়ের মঙ্গল কামনায় মা-বাবারা নানারকম ঘরোয়া আচার-অনুষ্ঠান পালন করে থাকেন এদিন। সকালের জলখাবার থেকে দুপুরের মধ্যাহ্নভোজে জামাইয়ের পাত নানা রকম ব্যঞ্জন দিয়ে সাজানো থাকে। সাধারণভাবে এটাই জামাইষষ্ঠীর রীতি। তবে নবদ্বীপে একটু অন্যভাবে এই জামাইষষ্ঠী পালন করা হয়। সেখানে মহাপ্রভুর (Mahaprabhu) মন্দিরে এদিন নিমাই কোনও অবতার নন, বরং ঘরের জামাই। জানা যায়, এই মন্দিরের সেবায়েতরা হলেন বংশ পরম্পরায় মহাপ্রভুর স্ত্রী বিষ্ণুপ্রিয়ার ভাইদের উত্তরসূরী। প্রায় ৩৫০ বছর ধরে মহাপ্রভু এখানে জামাই আদর পেয়ে থাকেন। রেকাবি ভর্তি নানারকম ব্যঞ্জন তো থাকেই, সঙ্গে এদিন নিমাইকে দেওয়া হয় নতুন পোশাক এবং স্থানীয় প্রবীণরা ষাটের পাখায় বাতাসও দেন নিমাইকে (Mahaprabhu)।

    আরও পড়ুন: বৃহস্পতিবার জামাই ষষ্ঠী! কেন পালিত হয় এই তিথি? কীভাবে হল চালু এই প্রথা?

    মহাপ্রভুর ভোগে কী কী পদ থাকে?

    মরসুমি ফল আম, জাম, লিচু এসব তো থাকেই। পাশাপাশি রুপোর বাটিতে ক্ষীর এবং গ্লাসে জল দিয়ে প্রথমে ঘুম ভাঙানো হয় মহাপ্রভুর (Mahaprabhu)। তারপরে চিঁড়ে, মুড়কি, দই, আম, কাঁঠাল এবং মিষ্টির ফলাহার। এটা অবশ্য নিমাইয়ের জলখাবার। মধ্যাহ্ন ভোজনে থাকে নানা রকমের তরকারি, থোর বেগুন পাতুরি, ছানার ডালনা, লাউ, চাল কুমড়ো, পোস্ত দিয়ে রাঁধা সব নিরামিষ পদ। এরপর দুপুরে একটু জিরিয়ে নেওয়ার পালা। দিবানিত্রা সম্পন্ন হলে ভোগ দেওয়া হয় ছানা এবং মিষ্টির। রাতের মেনুতে থাকে গাওয়া ঘি’তে ভাজা লুচি, তার সঙ্গে মালপোয়া এবং রাবড়ি। সবশেষে মুখশুদ্ধি হিসেবে দেওয়া হয় খিলিপান। এই মন্দিরে জামাইষষ্ঠীর ভোগের বিশেষত্ব হল আমক্ষীর, যা আমের রসে ক্ষীর মিশিয়ে তৈরি হয়।

    মহাপ্রভুকে (Mahaprabhu) নতুন পোশাক দেন বিষ্ণুপ্রিয়ার বাড়ির লোকজন

    জামাইকে পোশাক দিতে কোনও কার্পণ্য করেন না শ্বশুরবাড়ির লোকজন। শ্রীচৈতন্যদেবের বিগ্রহকে সাদা সিল্কের ধুতি, পাঞ্জাবি এবং গলায় উত্তরীয় পরিয়ে সাজানো হয়। আদর-কদর চলতে থাকে। জামাইষষ্ঠীর সকালে বিষ্ণুপ্রিয়ার পরিবারের প্রবীণ মহিলারা মহাপ্রভুকে নতুন পাখা দিয়ে ষাটের বাতাস দেন। হলুদের টিপ পরিয়ে দেওয়া হয় নিমাইয়ের কপালে। হলুদ মাখানো সুতো বেঁধে দেওয়া হয় হাতে।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • Hindu Marriage: বিয়ের সাতপাকে স্বামী-স্ত্রী একে অপরকে কী কী প্রতিশ্রুতি দেন?

    Hindu Marriage: বিয়ের সাতপাকে স্বামী-স্ত্রী একে অপরকে কী কী প্রতিশ্রুতি দেন?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী বিয়ে পৌরাণিক নিয়ম মেনেই হয়ে থাকে। আর বিয়ে (Hindu Marriage) মানেই দুটি মনের মিলন। একে অপরের পাশে সারাজীবন সততা, নিষ্ঠা এবং ভালোবাসার সঙ্গে থাকার নামই বিবাহ। বিভিন্ন জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে বিয়ের ধরন ও নিয়মকানুন আলাদা আলাদা হয়। কিন্তু উদ্দেশ্য একই থাকে। আবার বিয়ে এমন একটি রীতি, যার মাধ্যমে দুজনের সামাজিক ও পারস্পরিক সম্পর্ক স্বীকৃতি লাভ করে। হিন্দু বিবাহের রীতিনীতিগুলির মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান হল কুশণ্ডিকা, লাজহোম, সপ্তপদী গমন, ধৃতিহোম, চতুর্থী হোম। হিন্দু বিবাহের লৌকিক প্রথাগুলি বর্ণ, গোষ্ঠী ও এলাকা ভেদে আলাদা আলাদা হয়ে থাকে।

    বিয়ের (Hindu Marriage) সাধারণ নিয়ম

    সাধারণত হিন্দু বিয়ের অনুষ্ঠানে একটি বিবাহ মঞ্চ করা হয়, যা ছাদনাতলা নামে পরিচিত। সেখানে বসেই বিয়ে (Hindu Marriage) সম্পন্ন হয়। সেই ছাদনাতলায় কনেকে একটি পিঁড়িতে বসিয়ে মুখে পান পাতা ঢেকে নিয়ে আসা হয়। বরের পাশে ঘোরানো হয় সাত পাক। এর পর পিঁড়ি থেকে কনেকে নামিয়ে পান পাতা সরিয়ে স্বামীর দিকে তাকাতে হয়, যা শুভদৃষ্টি নামে পরিচিত। এর পর হয় মালা বদল। শুধু এখানেই শেষ নয়, এই হিন্দু বিবাহ রীতির মধ্যে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ রীতি আছে, যেটিকে সাত পাকে বাঁধা পড়া বলা হয়। এই সাত পাকের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতিও দিতে হয় একে অপরকে। আর এটি সম্পূর্ণ অগ্নিকে অর্থাৎ আগুনকে সাক্ষী রেখে সম্পন্ন করা হয়। 

    সাতপাকের মাধ্যমে (Hindu Marriage) কী কী প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়?

    সাতপাকে ঘোরার (Hindu Marriage) মাধ্যমে মোট ৭ টি প্রতিশ্রুতি স্বামী-স্ত্রী একে অপরকে দিয়ে থাকেন। সেগুলি হল: প্রথম প্রতিশ্রুতি: স্বামী-স্ত্রী সবসময় চান, তাঁদের সংসারে যেন কোনওদিন খাদ্য এবং অর্থের অভাব না হয়। তাই স্ত্রীকে খুশি রাখার জন্য এবং তাঁর সমস্ত দায়িত্ব পালন করার জন্য প্রথম প্রতিজ্ঞা করা হয় প্রথম পাকে। দ্বিতীয় প্রতিশ্রুতি: তাঁদের ভবিষ্যত প্রজন্ম অর্থাৎ তাঁদের সন্তানের দেখভাল ও যত্ন নেওয়ার প্রতিজ্ঞা করা হয়। কনেও প্রতিজ্ঞা করেন, তাঁর স্বামী এবং পরিবারের যত্ন নেবেন। তৃতীয় প্রতিশ্রুতি: স্বামী প্রতিশ্রুতি দেন, সব সময় যে কোনও পরিস্থিতি থেকে তাঁর স্ত্রীকে রক্ষা করবেন। স্ত্রীও প্রতিশ্রুতি দেন, তিনি স্বামীর সবরকম খারাপ অবস্থায় পাশে থাকবেন। চতুর্থ প্রতিশ্রুতি: স্ত্রীর কাছে পরিবারের সমস্ত দায়িত্ব তুলে দেওয়ার ও স্ত্রীর সমস্ত আবেদন মেনে চলার প্রতিশ্রুতি দেন স্বামী। পঞ্চম প্রতিশ্রুতি: স্ত্রীর প্রতি সদা সত্যের প্রতি দায়বদ্ধ থাকার প্রতিশ্রুতি দেন এবং স্ত্রীও স্বামীর প্রতি সদা নিষ্ঠাবান ও সত্যের প্রতি দায়বদ্ধ থাকার প্রতিজ্ঞা করেন। ষষ্ঠ প্রতিশ্রুতি: পরস্পরের সুস্বাস্থ্য ও রোগহীন জীবনের কামনা করেন দুজন। সপ্তম প্রতিশ্রুতি: সর্বশেষে সম্পর্ক যেন সারাজীবন অটুট এবং বন্ধুত্বপূর্ণ থাকে ও এই সম্পর্ক যেন চিরস্থায়ী ও মজবুত হয়, তার প্রতিজ্ঞা করে দুজন দুজনের প্রতি।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • Indian Standard Time: ভারতের বুকে এমনও গ্রাম আছে, যেখানে ঘড়িতে ১২ টার পর বাজে ১১ টা!

    Indian Standard Time: ভারতের বুকে এমনও গ্রাম আছে, যেখানে ঘড়িতে ১২ টার পর বাজে ১১ টা!

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: প্রতিনিয়ত সময় (Indian Standard Time) এগিয়ে চলেছে তার নিজের গতিতে। সবকিছু প্রতি মিনিটে, ঘণ্টায় বদলে যাচ্ছে। জীবনের নির্ধারিত সময় কমে আসছে প্রত্যেক মুহূর্তে। অথচ সময়কে আটকানোর কোনও উপায় নেই। বাড়িতে থাকা ঘড়ি আমাদের সব সময় জানান দেয়, সময় কতটা এগিয়ে গেল। ঘরের দেওয়াল থেকে শুরু করে হাতে ও মোবাইলে সব জায়গায় ঘড়ি তার সময়ের হিসাব দিয়ে চলেছে সব সময়। ঘড়ির কাঁটা ঘুরে চলেছে সময়ের স্রোতে। কিন্তু কখনও কি মাথায় এসেছে, ঘড়ির কাঁটা যদি উল্টো দিকে ঘোরে? যদি দুপুর ১২ টার পর ১১ টা বাজে? কি, শুনলে হাসিঠাট্টা লাগছে তো? কিন্তু বাস্তবে এমনটাই হয় ভারতের বুকে এক গ্রামে, যেখানে ঘড়ির কাঁটা ঘোরে সময়ের উল্টো দিকে।

    কোথায় এই ধরনের উল্টো ঘড়ি দেখা যায়?

    ভারতের বুকেই আছে এমন এক গ্রাম, যেখানে সময় (Indian Standard Time) চলে তার বিপরীত দিকে। ঘড়ির কাঁটা ঘোরে তার নির্ধারিত সময়ের উল্টোদিকে। যেখানে দুপুর ১ টার পর ২ টো নয়, বাজে ১২ টা, অর্থাৎ একদম উল্টো সময় বলে সেখানকার ঘড়ি। এমনটা হয় ছত্তিসগড়ের কোরবা নামক জেলায়, সেখানে গেলেই এই অদ্ভুত দৃশ্য চোখে পড়ে। শোনা যায়, ছত্তিসগড়ের আরও অনেক জায়গায় এই ঘড়ি প্রচলিত আছে। মধ্য ভারতের এই ছত্তিসগড় রাজ্যের বিচ্ছিন্ন অঞ্চল জুড়ে ছড়িয়ে থাকা একটি উপজাতি হল গোন্ড। এই উপজাতিই সাধারণত ব্যবহার করে এই উল্টো ঘড়ি। এমনকী ভারতের ফৌজদারি আইন ছাড়া আইনকানুন, সমাজব্যবস্থা, অর্থনীতি সব কিছুই আলাদা, সব হয় তাদের নিয়ম অনুযায়ী। যেন ভারতের বুকে এক অন্য পৃথিবী। গ্রামের যে কোনও সমস্যা ও বিষয় পরিচালিত হয় তাদের নিজস্ব গ্রামসভার মাধ্যমে। প্রচলিত নিয়মের বাইরে তাদের নিজস্ব তাত্ত্বিক জীবনদর্শনকেই প্রাধান্য দেয় তারা। আর বহু বছর আগে থেকেই চলে আসছে তাদের এই সময়ের উল্টো স্রোতে ভেসে চলা।

    কেন এমন নিয়ম মানেন তাঁরা?

    গোন্ড উপজাতিদের বিশ্বাস, আমাদের জীবনের সময় (Indian Standard Time) বাড়ে না, বরং ক্রমশ কমে আসছে প্রতিনিয়ত। তাই দুপুর ১ টার পর তাদের সময় কমে ১২ টা হয়। এমনকী চাঁদ পৃথিবীকে এবং পৃথিবী সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে ঘড়ির কাঁটার উল্টোদিকেই। এই সব কারণকে সামনে রেখেই তাদের মতানুযায়ী নিজেদের ঘড়ি নির্মাণ করেন, যে ঘড়ি সময়ের উল্টোদিকে চলে। তাদের এই ঘড়িকে অনেকে গণ্ডোয়ানা ঘড়ি বলে নামাঙ্কিত করেছেন।  তাদের মতে, প্রকৃতির নিয়ম মেনে এটিই একমাত্র আদর্শ ঘড়ি যা সঠিক সময় বলে।

    বিয়ের সাতপাকও ঘড়ির কাঁটার উল্টো দিকে

    শুধু যে ঘড়ির ক্ষেত্রে কাঁটা উল্টো দিকে ঘোরে তা নয়, এই উপজাতি বস্তির যখন কোনও বিবাহ অনুষ্ঠান থাকে, সেই বিবাহে স্বামী-স্ত্রীর অগ্নিসাক্ষী রেখে সাতপাক ঘোরার সময়ও (Indian Standard Time) তারা সাধারণ নিয়মের উল্টো দিকেই ঘোরে। সব মিলিয়ে জানা গেছে, সেখানে প্রায় দশ হাজারের বেশি পরিবারে ব্যবহৃত হয় এই একই নিয়ম ও এই উল্টো ঘড়ি। গোন্ড উপজাতি ছাড়াও সেখানে আরও প্রায় ২৯ টি সম্প্রদায় আছে যারা এই অদ্ভুত রীতি মেনে চলে।  আর এই অদ্ভুত রীতিনীতির জন্যই এদেরকে সাধারণের থেকে আলাদা হিসাবে গণ্য করা হয়, যা ভারতের বুকে সত্যিই বিচিত্র।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • Snacks: মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্রের হাত ধরেই বাংলায় জনপ্রিয় হয়েছিল সিঙারা! কিন্তু এর উৎপত্তি কোথায়?

    Snacks: মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্রের হাত ধরেই বাংলায় জনপ্রিয় হয়েছিল সিঙারা! কিন্তু এর উৎপত্তি কোথায়?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সন্ধ্যার জলখাবার কিংবা যে কোনও সময় খিদে পেলে সিঙারার তুলনা হয় না। আর তার সঙ্গে যদি এক কাপ গরম চা হয়ে যায়, তাহলে তো কথাই নেই। কোথাও সিঙারা, আবার কোথাও সামোসা। ভারতে খুবই জনপ্রিয় পদ এটি, খেতেও জবরদস্ত! তাই আট থেকে আশি, সবারই পছন্দের খাবার এই সিঙারা। কিন্তু এর উৎপত্তি নিয়ে আছে অনেক বিতর্ক, আছে লম্বা এক ইতিহাস। সাধারণের মাথায় প্রশ্ন জাগতেই পারে, সামান্য একটি সিঙারার আবার কী ইতিহাস থাকতে পারে? হ্যাঁ, এর একটি ইতিহাস আছে, যা শুনলে অবাকই হবেন। 

    কীভাবে উৎপত্তি হল এই খাবারের?

    সাধারণত আমরা গুগল সার্চ করলে দেখতে পাই, এই সিঙারা বা সামোসার উৎপত্তি বাংলাদেশে। এটি বাংলাদেশের খাবার বলেই বেশি পরিচিতি লাভ করেছে গোটা ইন্টারনেট জুড়ে। কিন্তু আসলে এর উৎপত্তি বাংলাদেশ বা ভারতবর্ষে নয়, উৎপত্তি ফরাসি শব্দ ‘সংবোসাগ’ থেকে। সেই ‘সংবোসাগ’ই ভারতে হিন্দিভাষীদের কাছে সামোসা বা বাঙালিদের কাছে সিঙারা নামে পরিচিত। ইতিহাস থেকে জানা যায়, এই খাবারটির উৎপত্তি এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যেই। মধ্যপ্রাচ্যের তুর্কিদের কাছে একটি প্রিয় এবং মুখরোচক খাবার ছিল এই সামুচা বা সামোসা। পরে ভারতবর্ষে তুর্কি আগমনের পর এই খাবার এখানেও জনপ্রিয়তা পায়, গোটা ভারত জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে এই খাবারটি। 

    বিখ্যাত পর্যটক, লেখকদের লেখায় এর উল্লেখ 

    ইরানি ঐতিহাসিক আবুল ফজল বেহাকির লেখা ‘তারিখ-এ-বেহাগি’ নামের বইয়ে এই সিঙারা বা সামোসার উল্লেখ পাওয়া যায়। যতদূর জানা গেছে, তখন সামোসাগুলি আকারে ছোট ছোট হত, যেগুলি তখন ‘সাম্বোসা’ নামে পরিচিত ছিল। সেই সময় মধ্যপ্রাচ্যের পর্যটক ও বণিকরা ঘোড়া বা উটের পিঠে নানা জায়গায় ভ্রমণ করত, আর খিদে পেলে তাদের ছোট ছোট ঝোলা থেকে বের করত এই সাম্বোসা। এগুলো আকারে ছোট হওয়ায় সহজে সব জায়গায় নিয়ে যাওয়া যেত ও যেখানে খুশি খাওয়া যেত। 

    দিল্লির সুলতানি যুগেও সিঙারার নাম পাওয়া যায়

    আবার দিল্লির সুলতানি যুগেও এই খাবারটির চল ছিল বলে জানা যায়। তৎকালীন সুলতানি যুগের রাজকবি আমির খসরু, যিনি ভারতের তোতাপাখি নামে পরিচিত ছিলেন, তাঁর বই থেকে এই সিঙারার নাম পাওয়া যায়। যেখানে কোনও এক জায়গায় তিনি লিখেছেন, ‘রাজকুমারগণ, আভিজাত্যরা মাংস, পেঁয়াজ ও ঘি দিয়ে তৈরি সামোসা উপভোগ করতেন’। এছাড়াও জানা যায়, দিল্লির তদানীন্তন রাজা মহম্মদ বিন তুঘলকের খুব প্রিয় ছিল এই সামোসা। তখন তাঁর রাজদরবারে রয়্যাল স্ন্যাক্সেরও নাকি মর্যাদা পেত এই খাবার। মুঘল আমলেও জনপ্রিয় ছিল এই পদটি। আবুল ফজলের লেখা ‘আইন-ই-আজবরি’ গ্রন্থ থেকে ‘সানবুসাহ ‘ নামক একটি খাবারের উল্লেখ পাওয়া যায়, যেটির ভিতরে মাংসের পুর থাকত এবং নামি দামি অনেক মশলাও ব্যবহার করা হত। 

    বাংলতেও প্রচলিত ইতিহাস আছে সিঙারার

    মনে করা হয়, বাংলায় প্রথম সিঙ্গারার প্রচলন শুরু প্রায় ১৭০০ এর দশকে, নদিয়া জেলায় রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের হাত ধরে। এক সময় রাজ দরবারের রাঁধুনি গিরিধারী রাজা কৃষ্ণচন্দ্রকে খাবার হিসেবে লুচি দেন। কিন্তু রাজা কোনও এক বৈঠকে ব্যস্ত থাকায় লুচি ঠান্ডা হয়ে যায়। পরে গিরিধারীকে এই লুচি বদলে অন্য খাবার নিয়ে আসার অনুরোধ জানান। কিন্তু খাবার বদলে আনা হয় মিষ্টি, যা রাজার একদম পছন্দের জিনিস ছিল না। কারণ কৃষ্ণচন্দ্রের ছিল মধুমেহ। তাই রেগে গিয়ে রাজা গিরিধারীকে শূলে চড়ানোর আদেশ দেন। পরের দিন গিরিধারীর স্ত্রী ধরিত্রীদেবী কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং রাজার কাছে আরেকটিবার সুযোগ চান। রাজা আদেশ দেন তাঁর জন্য কোনও গরম খাবার বানিয়ে আনতে। ধরিত্রীদেবী রান্নাঘরে গিয়ে বুঝতে পারছিলেন না, কী এমন খাবার বানানো যায়। তখন তিনি লুচি বানিয়ে তার মধ্যে আগে থেকে রান্না করে রাখা ঠান্ডা তরকারি মিশিয়ে পুর হিসেবে ব্যবহার করে গরম ঘিতে ভেজে নিলেন এবং সেটি রাজাকে দিলেন। রাজা খেয়ে অনেক খুশি হয়ে তার রাঁধুনি গিরিধারীকে ছেড়ে দিলেন এবং এই খাবার হয়ে উঠল জনপ্রিয়, যা বর্তমানে সিঙারা নামে পরিচিত।

    অর্থাৎ বোঝাই যাচ্ছে, পাড়ার দোকানে পাওয়া সামান্য টাকার সিঙারার কত বড় ইতিহাস। যা একসময় রাজরাজাদের খাবার হিসাবেই পরিচিত ছিল। এটি আরবের দেশগুলোতে সানবাস্সাজ, আফগানিস্তানে সাম্বোসা, তুর্কিতে সাম্সা, পোর্তুগাল মোজাম্বিকে চেমুকা, পাকিস্তানে ‘সমসা’ ও আমাদের বাংলায় সিঙারা নামে আজও জনপ্রিয়।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • Rabindranath Tagore: “হে নূতন, দেখা দিক আর-বার জন্মের প্রথম শুভক্ষণ…”

    Rabindranath Tagore: “হে নূতন, দেখা দিক আর-বার জন্মের প্রথম শুভক্ষণ…”

    সমগ্র বিশ্বের বাঙালির মনে এই বৈশাখ মাসটি এক রোমাঞ্চকতায় ভরা। কারণ এই মাসেই ২৫ বৈশাখে এমন একজন মহাত্মার জন্ম হয়েছিল, যাঁকে নিয়ে আজও আমরা গর্বিত। কবিগুরুকে ছাড়া বাংলা সাহিত্য, বাংলা সংস্কৃতি সত্যিই যেন অসম্পূর্ণ। বাঙালির সাহিত্যের শুরু ও শেষ তাঁকে দিয়েই। আপামর বাঙালির সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না সমস্ত অনুভূতির সঙ্গে জড়িয়ে আছেন রবিঠাকুর (Rabindranath Tagore)। আজ তাঁর ১৬২ তম জন্মবার্ষিকীতে শ্রদ্ধার্ঘ্য। নিবেদনে মৃণালকান্তি সরকার। 

    রবিপ্রভা দীপ্যমান, রবিপ্রভা আজও মূর্তিমান

    স্রষ্টা মাত্রেরই সংশয়, সৃষ্টি বাঁচবে তো! নশ্বর জীবদেহ বিলীন হয়ে যাবে। মুছে যাবে বেঁচে থাকার যাবতীয় বাহ্যিক অহংকার। সাধারণ মানুষের তো পরিণতি এটাই। তাই বোধহয় এ নিয়ে কারও অভিযোগ থাকে না কিছু। কিন্তু সৃজনশীল মানুষের ভিন্নতর এক অন্বেষণ থাকে, থাকে অমরত্বের এক স্পৃহা। আমি বা আমার নামরূপের লয় হোক, ক্ষতি নেই! কিন্তু আমার সৃষ্টি যেন নিশ্চিহ্ন না হয়ে যায়। মহাকালের অসম্ভাব্য পরিবর্তন তাঁর সর্বজনীন সৃষ্টিকে যেন নিঃশেষে বিদায় না করে দেয়! অনন্ত মানবস্মৃতিতে যেন চিরলগ্ন থাকতে পারে সেই স্মৃতি। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের মতো বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী মহান স্রষ্টারও সংশয় ছিল-আজি হতে শতবর্ষ পরে, কোন সে পাঠক, যিনি তন্ময় হয়ে থাকবেন কবির (Rabindranath Tagore) সৃষ্টিতে? সোচ্চার কোনও দাবি নয়, কবিসুলভ স্মিত এক প্রার্থনা নিজেরই সৃষ্টির কাছে,-‘যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন এই বাটে… তখন আমায় নাইবা মনে রাখলে।’ সৃষ্টির দিকে তাকিয়ে স্বাভাবিক বিস্ময়ে যেন এই উক্তি-‘তুমি কেমন করে গান করো, হে গুণী!’ ক্ষণকাল থেকে চিরকালের উত্তরণের গুণ যেন আমার থাকে। এই আমার সাধনা, বিচারক আমি নই, বিচারক সেই মহাকাল! শতাব্দীর পর নতুন শতাব্দীতে শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতির প্রতিটি বিভাগকে সঞ্জীবিত করে বিশাল গগনে রবিপ্রভা দীপ্যমান, রবিপ্রভা আজও মূর্তিমান, তিনি আমাদের মাঝে বেঁচে থাকবেন অনন্তকাল!

    কবিগুরু বেঁচে থাকুন আমাদের গানে, গল্পে, আড্ডায়

    কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (Rabindranath Tagore) বাঙালি তথা ভারতীয় তথা সারা বিশ্বের অনুপ্রেরণা। “চিত্ত যেথা ভয়শূন্য, উচ্চ যেথা শির”-কবিগুরুর লেখা সেই পংক্তি আজও আমাদের উদ্বুদ্ধ করে। বর্তমান পরিস্থিতিতে এই কবিতা যে কতটা প্রাসঙ্গিক, তা নিশ্চই আলাদা করে বলে দিতে হয় না। আমরা সবাই খুঁজে চলেছি রবীন্দ্র কবিতার সেই দেশ, সেই কবে থেকেই। যুগে যুগে, প্রজন্মের পর প্রজন্মকে নাড়া দিয়েছেন বিশ্বকবি এবং পরবর্তী প্রজন্মের কাছেও তিনি থাকবেন পূজনীয়। কারণ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের বিশ্বকবি মলিন হন না, তিনি আরও প্রাসঙ্গিক হয়ে দাঁড়ান। তাই আজ তাঁর ১৬২ তম জন্মবার্ষিকীতে একটাই চাওয়া, কবিগুরু বেঁচে থাকুন আমাদের গানে, গল্পে, আড্ডায়, প্রেমে, দিনের শেষে ক্লান্ত গলায়। কবিগুরু লহ প্রণাম।

    রবি ঠাকুরের জীবনদর্শন ও সৃষ্টি অস্থিরময় সময়ে সঠিক পথের দিশা

    এতবছর পরেও রবীন্দ্রনাথের (Rabindranath Tagore) জীবন-দর্শন ও তাঁর সৃষ্টি আজকের সমাজেও ভীষণভাবে প্রাসঙ্গিক। রবি ঠাকুরের জীবন-দর্শন ও সৃষ্টি আমাদের এই অস্থিরময় সময়ে সঠিক পথের দিশা দেখাতে পারে, পারে আত্মগ্লানির হাত থেকে মুক্তি দিতে, পারে এই দমবন্ধকর আবহের মধ‍্যে একটু খোলা হাওয়া এনে দিতে। তাই তো প্রত্যেক বছর ২৫শে বৈশাখ আমাদের ‘চির নূতন’ হয়ে ওঠার ডাক দেয়। এবারও দিয়েছে। সেই প্রজ্ঞার পায়ে নিবেদিত হোক শ্রদ্ধার্ঘ্য।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • Narad Jayanti: জানেন কি প্রাচীন ভারতে বার্তাবাহক বা সাংবাদিকতার কাজ করতেন নারদ মুনি?

    Narad Jayanti: জানেন কি প্রাচীন ভারতে বার্তাবাহক বা সাংবাদিকতার কাজ করতেন নারদ মুনি?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভক্তি এবং আধ্যাত্মিকতার এক আলাদা গুরুত্ব রয়েছে হিন্দু সমাজে। ঈশ্বরের প্রতি সমর্পণভাব এটাই সনাতন ধর্মের চিরাচরিত প্রথা। হিমালয়ের উপত্যকা সারা ভারতবর্ষের সাধু সন্ন্যাসীদের কাছে অত্যন্ত প্রিয় স্থান। সাধনার উপযুক্ত স্থান। তাই অনেকে হিমালয় উপত্যকাকে বলেন দেবভূমি। ঋষি অষ্টবক্র, দেবর্ষি নারদ, মহর্ষি ব্যাস, পরশুরাম, গুরু গোরক্ষনাথ আরও অনেকেই এই তালিকায় আছেন।

    শনিবার ছিল নারদ জয়ন্তী (Narad Jayanti) 

    হিন্দু সংস্কৃতিতে দেবর্ষি নারদের (Narad Jayanti) একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ স্থান রয়েছে। যদি আমরা ভারতীয় সাহিত্যগুলোর দিকে তাকাই, তাহলে দেখতে পাবো যে অনেক শাস্ত্র এবং পুরাণে দেবর্ষি নারদের (Narad Jayanti) উল্লেখ রয়েছে। পুরাণ মতে, তিনি হলেন ব্রহ্মার পুত্র। ভগবান বিষ্ণুর একজন পরম ভক্ত এবং দেবগুরু বৃহস্পতির শিষ্য। পুরাণ অনুযায়ী তিনি একজন বার্তাবাহক এবং যিনি জন সংযোগ করে থাকেন। প্রাচীন আমলে ভাব এবং তথ্যের আদান-প্রদান করতেন। বর্তমানকালে আমরা যাকে সাংবাদিকতা বলে থাকি। দেবর্ষি নারদ (Narad Jayanti) একজন পন্ডিত ছিলেন, সঙ্গীতের প্রতি তাঁর বিশেষ অনুরাগ ছিল। তিনি রহস্য বিদ্যা সম্পর্কেও আগ্রহী ছিলেন বলে জানা যায়। ৮৪টি ভক্তি সূত্র তিনি রচনা করেছেন। স্বামী বিবেকানন্দ এই নারদ ভক্তি সূত্রের ওপর ভাষ্যও দিয়েছেন। আমাদের হিন্দু ধর্মে আলাদা আলাদা দেবতাকে আমরা এক বিশেষ বিশেষ কাজের দেবতা হিসেবে মান্যতা দিয়েছি। বিদ্যারস দেবী সরস্বতী, ধনের দেবী লক্ষ্মী, শক্তির জন্য আমরা উপাসনা করে থাকি হনুমানজি এবং মা দুর্গার। ঠিক একইভাবে সম্পাদনার কাজে নারদ মুনিকে স্মরণ করা উচিত। কারণ তিনিই ছিলেন বার্তাবাহক বা প্রাচীন ভারতের সাংবাদিক। ভারতের প্রথম হিন্দি সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘উদন্ত মারটেন্ড’ প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ৩০ মে ১৮২৬ সালে। ঘটনাক্রমে, সেদিন ছিল বৈশাখ মাসের কৃষ্ণপক্ষের দ্বিতীয় তিথি যা নারদজয়ন্তী নামে প্রসিদ্ধ। বার্তাবাহক হিসেবে দেবতা-মানব-অসুর এই তিনের সঙ্গেই যোগাযোগ রাখতেন তিনি।

    নারদ পুরাণ, নারদ স্মৃতি, নারদ ভক্তি সূত্র এই সমস্ত কিছু পড়লে জানা যাবে সাংবাদিকতার নীতি এবং পদ্ধতি। দৈত্য থেকে মানব, মানব থেকে দেবতা প্রত্যেকের দরবারেই মহর্ষি নারদকে যেতে হতো খবর সংগ্রহের জন্য। এবং তাঁর কাজ ছিল, যে বার্তা তিনি পেতেন এবং যাঁর উদ্দেশ্যে পেতেন সেটা সেই নির্দিষ্ট জায়গা পর্যন্ত পৌঁছানো।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • Harmonium: অল ইন্ডিয়া রেডিওতে একসময় হারমোনিয়াম নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছিল, কেন তা জানেন?

    Harmonium: অল ইন্ডিয়া রেডিওতে একসময় হারমোনিয়াম নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছিল, কেন তা জানেন?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভারতীয় বাদ্যযন্ত্রগুলির মধ্যে সেতার, তবলা, বীণা, সরোদ অন্যতম। হয়তো মাথায় আসতে পারে, আরও একটি প্রধান বাদ্যযন্ত্রও তো আছে, যেটি তালিকা থেকে বাদ গেল। যেটি ছাড়া ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতও অসম্পূর্ণ। হ্যাঁ, হারমোনিয়ামের (Harmonium) কথাই বলছি। কিন্তু শুনলে হয়তো একটু অবাক হবেন, হারমোনিয়াম পাশ্চাত্যের একটি বাদ্যযন্ত্র। যার উৎপত্তি বিদেশের মাটিতে। কিন্তু ভারতীয় সঙ্গীতে এটি যেন মিশে গেছে রক্তের মতো।

    হারমোনিয়ামের ইতিহাস

    হারমোনিয়াম (Harmonium) একটি বিদেশি বাদ্যযন্ত্র, যা ক্যাবিনেট অর্গ্যান’ নামেও পরিচিত। ইউরোপের প্যারিসে ১৮৪২ সালে আলেকজান্ডার ডেবিয়ান এটি আবিষ্কার করেন। সেই হারমোনিয়ামটি ছিল আকৃতিতে অনেক বড় এবং পায়ে পাম্প করতে হত। ১৮৫০ সালের পর ভারতে হাতে পাম্প করা হারমোনিয়ামের উৎপত্তি হয়। 

    ভারতে কবে প্রথম ও কীভাবে হারমোনিয়াম আসে?

    বিভিন্ন তথ্যসূত্র ও ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, ভারতবর্ষে প্রথম হারমোনিয়াম (Harmonium) ব্যবহৃত হয় কলকাতাতেই। উনিশ শতকের ষাটের দশকে দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর সখের থিয়েটার, যা জোড়াসাঁকোতে স্থাপিত, সেখানে প্রথম হারমোনিয়াম বাজান। শোনা যায়, এখান থেকেই উৎসাহ ও কৌতূহল বাড়তে থাকে হারমোনিয়ামের। এরপর থেকেই হারমোনিয়াম শিক্ষা জোরকদমে শুরু হয় ভারতবর্ষে। এমনকী সেই সময় যাঁরা হারমোনিয়াম শিখতে আগ্রহ প্রকাশ করেন, তাঁদের জন্য প্রকাশিত হতে থাকে হারমোনিয়াম শিক্ষা সম্পর্কিত নানান বই। সেই সময় এধরনের দুটি বইয়ের সন্ধান পাওয়া গেছে। সেগুলি যথাক্রমে সৌরীন্দ্রমোহন ঠাকুর রচিত হারমোনিয়াম সূত্র, যা ১৮৭৪ সালে এবং কৃষ্ণধন বন্দ্যোপাধ্যায়ের হারমোনিয়াম শিক্ষা, যা ১৮৯৯ সালে প্রকাশিত হয়। এই বইগুলিতে সম্পূর্ণ বিবরণ দেওয়া আছে হারমোনিয়াম বাদন সম্পর্কে। 

    ভারতীয় সঙ্গীতে দশটি শ্রুতি এবং ১২টি স্বর মিলে মোট ২২ টি শ্রুতি আছে। আদিকাল থেকেই ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীত বিশারদরা এই শ্রুতিগুলি ব্যবহার করে এসেছেন। কিন্তু পশ্চিমের সঙ্গীতের যে কোনও ধ্বনি সীমাতে ভারতীয় ২২ এর বদলে ১২ রকমের স্বর আছে। যার জন্য এক বিশাল তফাৎ-এর সৃষ্টি হয়। যার ফলে ভারতীয় সঙ্গীতে হারমোনিয়াম ব্যবহার করলে অনেক অসঙ্গতির সৃষ্টি হতে পারে। এই কারণে অল ইন্ডিয়া রেডিওতে ১৯৪০ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত হারমোনিয়াম নিষিদ্ধ ছিল। 

    হারমোনিয়াম এখনও একটি গুরুত্বপূর্ণ বাদ্যযন্ত্র

    শোনা যায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও হারমোনিয়াম (Harmonium) পছন্দ করতেন না অতটা। ১৯ জানুয়ারি ১৯৪০ তে কবি আকাশবাণী কলকাতার সেই সময়কার স্টেশন ডিরেক্টরকে একটি খোলা চিঠি দেন এবং সেখানে লেখেন, “আমি সর্বদা আমাদের সঙ্গীতজ্ঞদের উদ্দেশে তাদের হারমোনিয়ামের প্রচলিত ব্যবহারের বরাবর বিরুদ্ধে ছিলাম এবং এটি আমাদের আশ্রম থেকেও সম্পূর্ণরূপে ব্যবহার বন্ধ করা হইয়াছে। আপনি যদি অল ইন্ডিয়া রেডিওর স্টুডিওতে এটির ব্যবহার বন্ধ করেন তবে আপনি ভারতীয় সংগীতের জন্য একটি খুব সুন্দরতম কাজ করিলেন বলে বিবেচিত হবে।” সেই সময় ব্রিটিশ শাসনের যুগে ব্রিটিশ সঙ্গীতজ্ঞরাও মনে করতেন ভারতীয় উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের সঙ্গে হারমোনিয়াম কখনও তাল মেলাতে পারে না। পরে স্বাধীন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নেহরু, কবির এই সিদ্ধান্ত মেনে চলারই আদেশ বহাল রাখেন। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে দিলীপকুমার রায়, শচীন দেববর্মণের মতো আরও সঙ্গীতজ্ঞ আকাশবাণীতে গান করা বন্ধ করে দেন। বর্তমানে এত বিতর্কের পরেও হারমোনিয়াম এখনও একটি গুরুত্বপূর্ণ বাদ্যযন্ত্র হিসাবেই ব্যবহৃত হয়। এর জনপ্রিয়তা ভবিষ্যতেও কমবে না, এটুকু নিশ্চিতভাবে বলা যায়।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • Sita-Navami: সীতা হলেন মা লক্ষ্মীর অবতার, জানুন সীতা নবমীর মাহাত্ম্যকথা

    Sita-Navami: সীতা হলেন মা লক্ষ্মীর অবতার, জানুন সীতা নবমীর মাহাত্ম্যকথা

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: হিন্দু পঞ্জিকা মতে সীতা নবমী (Sita-Navami) হল হিন্দু সমাজের সীতা মাতার বিশেষ জন্মতিথি। সীতা নবমী অনুষ্ঠিত হয় রাম নবমীর একমাস পরে বৈশাখের শুক্ল নবমী তিথিতে। সনাতনী হিন্দু সমাজের বাড়ির গৃহবধূরা স্বামীর দীর্ঘায়ু কামনা, পরিবারে কল্যাণ কামনা এবং মনের বিশেষ কামনাপূর্ণ সীতা নবমী পালন করে থাকেন।

    সীতার জন্ম ও নামকরণ 

    ভগবান রামচন্দ্র হলেন ভগবান বিষ্ণুর অবতার, আর মাতা সীতা হলেন মা লক্ষ্মীর অবতার। রামায়ণে সীতা শ্রী রামচন্দ্রের অর্ধাঙ্গিনী। সীতার জন্ম নিয়ে বেশ কিছু কিংবদন্তী কথা রয়েছে। তামিল সংকলনের রামায়ণে বলা হয় সীতা মা ভূগর্ভে গ্রথিত ছিলেন। মূল রামায়ণে সীতা হলেন জনক রাজার ঔরসজাত সন্তান। বিহারের মিথিলার কাছে সীতামারি সীতার জন্মস্থান বলে ধরা হয়।ধরিত্রদেবীর কন্যা হলেন সীতা মা। সীতা মায়ের (Sita-Navami) নানান নাম রয়েছে। যেমন জানকী, যিনি জনককন্যা সীতা। জনকাত্মজা, কারণ জনকরাজার আত্মার স্থল হল সীতা। জনকনন্দিনী, জনক রাজার মনের আনন্দ হলেন সীতা মা। সীতা হলেন ভূগর্ভা। মৈথিলী অর্থাৎ মিথিলার রাজকন্যা সীতা। 

    সীতার চরিত্র গুণ

    একজন রামভক্ত প্রভুর সাধারণ ভক্ত হয়েও আদর্শ পূর্ণস্বরূপা হলেন সীতা মাতা। শ্রী রামের সঙ্গে স্বামীর অর্ধাঙ্গিনী হয়ে ১৪ বছর বনবাসে দিন কাটান সীতা। মিথিলার রাজকন্যা এবং অযোধ্যার রাজরানী হয়েও একমাত্র স্বামীর অনুগত হয়ে জীবনের ঐশ্বর্য, ভোগবিলাস ত্যাগ করে জঙ্গলে মাটির বিছানায় অত্যন্ত সাধারণ জীবনযাপনের দৃষ্টান্ত রাখেন মাতা সীতা (Sita-Navami)। পারিবারিক শৃঙ্খলা, স্বামীর প্রতি মূল্যবোধ ও দায়িত্বের প্রতীক হলেন সীতা মা। সীতা স্বামীর সকল যাত্রার সহচরী হন। এটাই দায়িত্ব এবং মূল্যবোধের পরিচয়। পারিবারিক জীবনের আদর্শ চরিত্র সীতা মা। রাবণের শত প্রলোভনে নিজেকে স্থির, ধীর এবং বিশ্বাস অটল রাখেন যে শ্রীরামচন্দ্র এই রাক্ষসকুল থেকে উদ্ধার করবেনই একদিন। আর ভবিতব্য তাই হয়েছিল। ধর্মের জয় হয়েছে।সীতা ছিলেন রামচন্দ্রের শক্তি আর রামচন্দ্র ছিলেন শক্তির আধার। 

    সীতা নবমীর গুরুত্ব

    বিবাহিত নারীরা পরিবারের মঙ্গল সাধনার জন্য মূলত সীতা নবমী পালন করে থাকেন। বাড়িতে গঙ্গা জলে ফুল, ফল দিয়ে নিবেদন করা হয়। কখনও কখনও হনুমানের পূজাও করা হয়ে থাকে। সীতা ধনলক্ষ্মীর প্রতীকও বটে। তাই অর্থ প্রাপ্তির বিষয় থাকে এই নবমীর পুজোতে। জমিতে ফসলের উর্বরতা, দাম্পত্য জীবনের সুখকামনা এবং আদর্শ সহধর্মিণী হওয়ার বাসনা ভক্তের মনে থাকে এই সীতা নবমীতে (Sita-Navami)।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

      

LinkedIn
Share