Category: বিজ্ঞান

Get updated Science and Research related news from the Madhyom news portal madhyom.com, West Bengal leading news portal Madhyom.com

  • Vikram Sarabhai: তিনিই ছিলেন দেশের মহাকাশ গবেষণার জনক! ১২ অগাস্ট জন্মদিন বিক্রম সারাভাইয়ের

    Vikram Sarabhai: তিনিই ছিলেন দেশের মহাকাশ গবেষণার জনক! ১২ অগাস্ট জন্মদিন বিক্রম সারাভাইয়ের

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ১৯১৯ সালে আজকের দিনে, অর্থাৎ ১২ অগাস্ট, জন্মগ্রহণ করেছিলেন ডঃ বিক্রম অম্বালাল সারাভাই (Vikram Sarabhai)। তিনি জন্মগ্রহণ করেন গুজরাটের আমেদাবাদে, এক ব্যবসায়ী পরিবারে। বিক্রম সারাভাই প্রথম ব্যক্তি ছিলেন যিনি ভারতবর্ষকে মহাকাশ গবেষণার পথে পরিচালিত করেছিলেন। তাঁর দর্শন, দৃষ্টিভঙ্গি ও চিন্তাভাবনা ভারতীয় মহাকাশ গবেষণায় এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছিল। তিনি প্রযুক্তির ভারতীয়করণ করে এবং আত্মনির্ভর ভারত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। ফলে, ভারতের আর বিদেশি প্রযুক্তির উপর নির্ভর করতে হয়নি — ভারতীয় বিজ্ঞানীরাই হয়ে ওঠেন ভবিষ্যতের পথপ্রদর্শক (Father Of Indian Space)।

    কেমব্রিজে করেন পড়াশোনা (Vikram Sarabhai)

    ব্যবসায়ী পরিবারে জন্ম নেওয়ায় সারাভাই ছোটবেলা থেকেই একটি অনুকূল পরিবেশে বড় হন এবং তাঁর পরিবারে পড়াশোনার পরিবেশও ছিল অত্যন্ত উন্নত। নিজের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা তিনি গুজরাটেই সম্পন্ন করেন। পরে উচ্চশিক্ষার জন্য তিনি বিদেশে যান এবং কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ন্যাচারাল সায়েন্সে ভর্তি হন। ঠিক সেই সময় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। যুদ্ধকালীন সময়েও তিনি তাঁর ডিগ্রি সম্পন্ন করে ভারতে ফিরে আসেন এবং যোগ দেন ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স-এ। সেখানে তাঁকে পথ দেখান বিজ্ঞানী সি. ভি. রমন। এরপর তিনি কসমিক রে ফিজিক্স বিষয়ে পিএইচ.ডি. সম্পন্ন করেন।

    দেশ স্বাধীন হলে প্রতিষ্ঠা করেন ফিজিক্যাল রিসার্চ ল্যাবরেটরি

    ১৯৪৭ সালে, যখন ভারত স্বাধীন হয়, সেই বছরেই তিনি পিএইচ.ডি. সম্পূর্ণ করেন এবং প্রতিষ্ঠা করেন ফিজিক্যাল রিসার্চ ল্যাবরেটরি (Physical Research Laboratory), সংক্ষেপে PRL। এটি তিনি গড়ে তোলেন তাঁর নিজের রাজ্য গুজরাটের আমেদাবাদে (Vikram Sarabhai)। প্রথমে একটি ছোট টিম নিয়ে শুরু করেন কাজ। পরবর্তীকালে তাঁর এই প্রতিষ্ঠিত ল্যাবরেটরি ভারতের মহাকাশ গবেষণার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়।

    প্রথম সাউন্ডিং রকেট তাঁর নেতৃত্বেই উৎক্ষেপণ করা হয়

    ১৯৬০-এর সময় যখন গোটা বিশ্বে ঠান্ডা লড়াই চলছিল — মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত রাশিয়ার মধ্যে মহাকাশ দখলের প্রতিযোগিতা — তখন বিক্রম সারাভাই একটি যুগান্তকারী মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “মহাকাশ প্রযুক্তি কোনও বিলাসিতা নয়, বরং এটি উন্নয়নশীল দেশের পক্ষেও একান্ত প্রয়োজনীয়।” ১৯৬৩ সালে তাঁর নেতৃত্বে ভারতের প্রথম Sounding Rocket উৎক্ষেপণ করা হয় থুম্বা ইকুইটোরিয়াল রকেট লঞ্চিং স্টেশন থেকে। তাঁর দৃষ্টিভঙ্গিতেই ভারতবর্ষে যোগাযোগ ব্যবস্থা, আবহাওয়ার পূর্বাভাস এবং অন্যান্য প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে স্যাটেলাইট ব্যবহারের সূচনা হয়। ৩০ ডিসেম্বর, ১৯৭১ সালে মাত্র ৫২ বছর বয়সে তাঁর মৃত্যু হয় — যা ছিল ভারতীয় মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে এক অপূরণীয় ক্ষতি।

  • ISRO: কালামের নামে নতুন রকেট ইঞ্জিনের সফল স্ট্যাটিক পরীক্ষা, বছর শেষে পাড়ি দিতে পারে মহাকাশে

    ISRO: কালামের নামে নতুন রকেট ইঞ্জিনের সফল স্ট্যাটিক পরীক্ষা, বছর শেষে পাড়ি দিতে পারে মহাকাশে

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: শুক্রবার ইসরো (ISRO) ঘোষণা করেছে যে তারা প্রথম কঠিন জ্বালানির রকেট কালাম-১২০০ এর (KALAM 1200) সফল স্ট্যাটিক পরীক্ষা করতে পেরেছে। শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টার থেকে এই  স্ট্যাটিক পরীক্ষা, সম্পন্ন হয়েছে। ইসরোর তরফ থেকে জানানো হয়েছে, কালাম-১২০০ যে ইঞ্জিন, তা ১১ মিটার লম্বা এবং এটি ৩০ টন কঠিন প্রোপেলান্ট বহন করতে সক্ষম।  ইসরো এটিকে একটি বড় মাইলফলক বলে অভিহিত করেছে এবং নিজেদের এক্স (X) হ্যান্ডলে তারা লিখেছে, স্কাইরুট এরোস্পেস প্রাইভেট লিমিটেড দ্বারা বিক্রম-অ্যাক্স ভেহিকল এর প্রথম পর্যায়ে কালাম-১২০০ সলিড মোটরের সকল স্ট্যাটিক পরীক্ষা সম্পন্ন হল, যা একটি বড় মাইলফলক।

    প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি আব্দুল কালামের নামেই এই ইঞ্জিন (ISRO)

    দেশের রকেট প্রযুক্তি গবেষণা, যুদ্ধবিমান নির্মাণ ও পরমাণু পরীক্ষায় অন্যতম অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন এপিজে আবদুল কালাম। ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা বা ডিআরডিও, শ্রীহরিকোটা উপকূলে ক্ষেপণাস্ত্রের উৎক্ষেপণ কেন্দ্রের নামকরণও করেছে আবদুল কালামের নামে। এবার একটি কঠিন জ্বালানি চালিত রকেট ইঞ্জিন তৈরি করে তার সফল স্ট্যাটিক পরীক্ষাও করল ভারতের বিজ্ঞানী ও গবেষকরা (KALAM 1200)।

    ভারতে প্রথম বেসরকারি উদ্যোগে নির্মিত রকেট হল বিক্রম-এস

    ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার ইসরোর প্রাক্তন বিজ্ঞানীরা তৈরি করেছেন একটি স্টার্টআপ সংস্থা, তার নাম স্কাইরুট এ্যারোস্পেস। তারাই সম্প্রতি সফলভাবে তৈরি করেছে কালাম-১২০০ নামের ওই রকেট ইঞ্জিনটি। চলতি বছরের শেষে এই স্কাইরুট এ্যারোস্পেস তাদের এই নতুন রকেট বিক্রম-১ কে মহাকাশে পাঠাতে পারে বলে খবর, এবং তাতেই ব্যবহৃত হবে আবদুল কালামের নামে নামাঙ্কিত এই ইঞ্জিনটি (ISRO)। এক্ষেত্রে বলা দরকার, ভারতে প্রথম বেসরকারি উদ্যোগে নির্মিত রকেট হল বিক্রম-এস — এরও নির্মাতা ছিল স্কাইরুট এ্যারোস্পেস (২০২২ সালের নভেম্বর)। প্রসঙ্গত, ১ দশক আগেই দেশের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাগুলিকেও টেনে আনার জন্য আলাদা একটি সংস্থা করার প্রস্তাব পাস হয়েছিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে। সেই সংস্থার (ISRO) নাম দেওয়া হয়েছে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল স্পেস প্রমোশন অ্যান্ড অথরাইজেশন সেন্টার (IN-SPACe)।

  • ISRO: লাদাখেই তৈরি হল মঙ্গল গ্রহের পরিবেশ, ইসরোর অভিনব মিশন নিয়ে বাড়ছে কৌতূহল

    ISRO: লাদাখেই তৈরি হল মঙ্গল গ্রহের পরিবেশ, ইসরোর অভিনব মিশন নিয়ে বাড়ছে কৌতূহল

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো, লাদাখে শুরু করল এক অন্য ধরনের মিশন, যার পোশাকি নাম দেওয়া হয়েছে হোপ – হিমালয়ান আউটপোস্ট ফর প্ল্যানেটারি এক্সপ্লোরেশন। গত ১ অগাস্ট থেকে শুরু হয়েছে এই মিশন, চলবে ১০ অগাস্ট পর্যন্ত। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, আগামী দিনে ভারতের চন্দ্র অভিযান এবং মঙ্গল অভিযানের প্রস্তুতির দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হলো ইসরোর (ISRO) এই মিশন। এর জন্য ইসরোর বিজ্ঞানীরা বেছে নিয়েছেন এমন একটি অঞ্চলকে, যে অঞ্চলের সঙ্গে অনেক দিক থেকেই মিল রয়েছে মঙ্গল গ্রহের। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪ হাজার ৫৩০ মিটার উপরে অবস্থিত, এখানে বায়ুর চাপ অত্যন্ত কম রয়েছে। তার সঙ্গে রয়েছে প্রবল ঠান্ডা, আবার অতি বেগুনি রশ্মির তীব্রতাও রয়েছে।

    রাখা হয়েছে দুটি যুক্ত মডিউল বিশিষ্ট আবাসন ব্যবস্থা (ISRO)

    গবেষকরা বলছেন, এই ধরনের পরিস্থিতি হল পৃথিবীর উপগ্রহ চাঁদ কিংবা মঙ্গল গ্রহের সঙ্গে পরিবেশের একদমই সাদৃশ্যপূর্ণ। তাই ভবিষ্যতে মহাকাশচারীরা চন্দ্র বা মঙ্গল অভিযানে (Mars Mission) গেলে, তার আগের পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য একদম আদর্শ পরিবেশ। ইসরোর এই মিশনের অনেক রকমের বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এখানে রাখা হয়েছে দুটি যুক্ত মডিউল বিশিষ্ট আবাসন ব্যবস্থা, যার একটি ৮ মিটার প্রশস্ত এবং এটি ক্রুদের জন্য, অপরটি পাঁচ মিটার ইউটিলিটি ইউনিট (ISRO)। এই আবাসনে মিলছে প্রায় সমস্ত রকমেরই ব্যবস্থা। এখানে রয়েছে রান্নাঘর। ভবিষ্যতে মহাকাশচারীরা যখন যাবেন, তখন চাঁদ বা মঙ্গল গ্রহে রান্না করে খেতে হবে বৈকি। রয়েছে স্যানিটারি সুবিধাও। মানবজীবনের অত্যাবশ্যক প্রয়োজনীয়তাগুলোর ওপরও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে এই পরীক্ষামূলক আবহে। রয়েছে হাইড্রোপনিক ফার্মিংয়ের মতো আধুনিক কৃষিপদ্ধতি, যা জলবিহীন ও মাটিবিহীন কৃষিকে সম্ভব করে তোলে, তা-ও এখানে বাস্তবায়িত হয়েছে। এইভাবে ভবিষ্যতের অভিযানে খাদ্য সরবরাহের সম্ভাব্য বিকল্প পদ্ধতি নিয়ে পরীক্ষা চলছে।

    ইসরোর সঙ্গে যোগ দিয়েছে অন্যান্য সংস্থাও

    ইসরোর তরফ থেকে জানানো হয়েছে, দশ দিনের যে প্রস্তুতিপর্ব চলছে বা মিশন, সেখানে দুজন ক্রু সদস্য আবাসনের ভিতরে থাকবেন। ওই আবাসনের ভিতরে থাকার সময়, তাঁদের শারীরিক, মানসিক এবং বৌদ্ধিক পর্যায়ের কোন কোন প্রতিক্রিয়া উঠে আসছে, তা পর্যবেক্ষণ করা হবে এবং বিশ্লেষণ করা হবে। লাদাখের ওই অঞ্চলে (ISRO) গবেষণা চালাচ্ছে ইসরো। তবে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণার সঙ্গে জুড়েছে দেশের অন্যান্য সেরা প্রতিষ্ঠানগুলি। কোন কোন প্রতিষ্ঠানগুলি ইসরোর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এই প্রকল্পে কাজ করছে, তা একবার জেনে নিই। রয়েছে আইআইটি বোম্বে, আইআইটি হায়দরাবাদ, আইআইএসটি তিরুবনন্তপুরম, আরজিসিবি তিরুবনন্তপুরম এবং ইনস্টিটিউট অব স্পেস মেডিসিন।

    কী কী নিয়ে চলছে গবেষণা (ISRO)

    ইসরো সূত্রে জানানো হয়েছে যে, উপরে উল্লেখ করা এই সংস্থাগুলির গবেষকরা নানাভাবে গবেষণা চালাচ্ছেন, যেমন: ক্রুদের হেলথ মনিটরিং, গ্রহপৃষ্ঠ অপারেশন, জীবাণু সংগ্রহ, উন্নত চিকিৎসা ও প্রযুক্তির নানা বিষয়। এই হোক মিশনে যারা যাবেন, তখন তাদের যে ধরনের পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হবে, তারই একটা মহড়া এবং সেই লক্ষ্যে এই পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হচ্ছে। এইরকম উদ্যোগ ভারতের মহাকাশ গবেষণাকে শুধু আরও আত্মনির্ভরই করবে না, বরং আন্তর্জাতিক মহাকাশ মিশনের প্রতিযোগিতায় ভারতের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী ও মর্যাদাপূর্ণ করে তুলবে বলেই ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

    ২০৪০ সালের মধ্যে চাঁদে মানুষ পাঠানোর লক্ষ্য

    এই প্রকল্পের নেতৃত্ব দিচ্ছে ইসরোর হিউম্যান স্পেস ফ্লাইট সেন্টার। জানা যাচ্ছে, ২০৪০ সালের মধ্যে চাঁদে মানব পাঠানো এবং ভবিষ্যতের মঙ্গল অভিযান সফলভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্য নিয়েছে ইসরো। এবং মহাকাশের পরিবেশের অনুকরণে গড়ে তোলা হয়েছে মিশন। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ইসরোর এই মিশনের মাধ্যমে ধাপে ধাপে তৈরি করা হচ্ছে এমন এক পরিবেশ, যা ভবিষ্যতের চাঁদ বা মঙ্গল অভিযানে অংশগ্রহণকারী মহাকাশচারীদের জন্য প্রস্তুতির মঞ্চ হিসেবে কাজ করবে। এই পরিবেশে টিকে থাকার জন্য যে ধরণের জীবনধারা, শারীরিক সক্ষমতা, মানসিক দৃঢ়তা এবং প্রযুক্তিগত দক্ষতা প্রয়োজন, তা এখানে বাস্তব পরিস্থিতির মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন করা হচ্ছে।

    কী বলছেন ইসরোর চেয়ারম্যান

    এ নিয়ে ইসরোর চেয়ারম্যান ডঃ ভি নারায়ণ বলছেন, যে হোক শুধুমাত্র আমাদের জন্য কেবল একটি ধৈর্যের পরীক্ষা নয় — এটি ভারতের ভবিষ্যতে মানব মহাকাশ অভিযানের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মিশন। এখানে সরাসরি মহাকাশচারীদের প্রশিক্ষণ এবং মিশনের ডিজাইন, তার ব্যবস্থা, প্রযুক্তি ব্যবস্থা — এই সমস্ত কিছুই খুঁটিনাটিতে পরীক্ষা করা হবে। ইসরোর চেয়ারম্যান ডঃ আরও বলছেন যে, ভবিষ্যতের জন্য আমাদের এই মহড়া চলছে। মহাকাশে মানুষ পাঠানোর আগে এধরনের মিশন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

  • NISAR: সহজ হবে দুর্যোগ মোকাবিলা! ভারত-মার্কিন যৌথ উদ্যোগে শ্রীহরিকোটা থেকে সফল উৎক্ষেপণ নাইসার-এর

    NISAR: সহজ হবে দুর্যোগ মোকাবিলা! ভারত-মার্কিন যৌথ উদ্যোগে শ্রীহরিকোটা থেকে সফল উৎক্ষেপণ নাইসার-এর

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মহাকাশে পাড়ি দিল নাইসার (NISAR)। বুধবার, বিকেল ৫টা ৪০ মিনিটে, শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টার থেকে জিএসএলভি-এমকে-২ (GSLV-MkII) রকেটের সাহায্যে এই শক্তিশালী স্যাটেলাইট মহাকাশে পাড়ি দিল। নাসা-ইসরো সিন্থেটিক অ্যাপারেচার রেডার (Nasa Isro Synthetic Aperture Radar) মহাকাশে ভারতের নয়া মাইলফলক। নিসার বিশ্বের প্রথম ডুয়াল-ফ্রিকোয়েন্সি সিন্থেটিক অ্যাপারেচার রেডার স্যাটেলাইট। এতে নাসার এল-ব্যান্ড রেডার (L-band radar) এবং ইসরোর এস-ব্যান্ড রেডার (S-band radar) দু’টো একসঙ্গে ব্যবহার করা হয়েছে। পৃথিবী থেকে ৭৪৩ কিমি দূরে সান-সিনক্রোনাস অরবিটে (এসএসও) ৯৮.৪০ ডিগ্রি কোণে প্রতিস্থাপন করা হয় জিএসএলভি-এফ১৬ (GSLV-F16) রকেট ৷ নাইসার-এর ওজন ২হাজার ৩৯৩ কেজি ৷

    প্রথম ৯০ কাজ করবে না নিসার

    ইসরো সূত্রে খবর, উৎক্ষেপণের পর প্রথম ৯০ দিন নাইসার (NISAR) তার কাঙ্ক্ষিত বৈজ্ঞানিক কাজ শুরু করবে না। এই সময়টিকে বলা হয় ‘কমিশনিং’ বা ইন-অরবিট চেকআউট (IOC) পর্ব, যেখানে স্যাটেলাইট এবং এর অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতিকে পূর্ণ প্রস্তুতির জন্য পরীক্ষা ও ক্যালিব্রেশন করা হয়। নাসা ও ইসরোর যৌথ উদ্যোগে নির্মিত এই উপগ্রহটি উৎক্ষেপণের পর তিন মাসব্যাপী কমিশনিং পর্বে থাকবে। এই সময় স্যাটেলাইটটি বিভিন্ন ধাপে বিভক্ত চেক ও টেস্টের মধ্য দিয়ে যাবে, যাতে তা নিখুঁতভাবে কাজের উপযোগী হয়ে ওঠে। এই ৯০ দিনের মধ্যে নিসার কক্ষপথে নিজেকে স্থিতিশীল করবে, সমস্ত যন্ত্রপাতি ধাপে ধাপে সক্রিয় করা হবে এবং বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় ক্যালিব্রেশন শেষ করা হবে। এরপরই এটি কাজ শুরু করবে। এই ধৈর্যশীল প্রস্তুতি পর্বই নাইসারকে তার নির্ভুল বৈজ্ঞানিক লক্ষ্য পূরণে সহায়তা করবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীরা।

    কীভাবে কাজ করবে নিসার

    নাইসার (NISAR) থেকে পাওয়া সমস্ত তথ্য ওপেন-সোর্স হবে। গবেষক, বিজ্ঞানী, জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা সহজেই সমস্ত তথ্য অ্যাক্সেস করতে পারবেন। এই উপগ্রহ প্রতি ৯৭ মিনিটে একবার পৃথিবী প্রদক্ষিণ করবে। এই প্রদক্ষিণের মধ্যে দিয়ে মাত্র ১২ দিনে নাইসার পুরো পৃথিবীর স্থলভাগ ও বরফ আচ্ছাদিত অঞ্চলের একটি ম্যাপ তৈরি করে ফেলতে পারবে। যা বিজ্ঞানীদের নানা গবেষণায় কাজে আসবে। নাইসার ব্যবহার করে পৃথিবীর পরিবেশ ও বাস্তুতন্ত্র, বায়ুমণ্ডল, বনজঙ্গল, হিমবাহ, ভূকম্পন এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ পর্যবেক্ষণ করবে। ভূপৃষ্ঠে কয়েক মিলিমিটারের পরিবর্তনও ধরা পড়বে এই কৃত্রিম উপগ্রহে। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, বছরের যে কোনও মরসুমে, শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা কিংবা দিন-রাত নির্বিশেষে মহাকাশ থেকে পৃথিবীর উচ্চমানের ছবি তুলতে পারবে এই কৃত্রিম উপগ্রহ। আর সে কারণেই বিশ্বের জলবায়ুর পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ, কৃষি এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় ‘নাইসার’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

    ভারতের জন্য লাভজনক

    ইসরোর এই পদক্ষেপে ফের ভারতের মহাকাশ গবেষণায় এক নতুন দিক উন্মোচন করল। এই মিশনের জন্য মোট খরচ ১২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা (প্রায় ১.৫ বিলিয়ন ডলার)। এর মধ্যে ভারতের অংশ ৭৮৮ কোটি টাকা (প্রায় ৯৬ মিলিয়ন ডলার)। এর ফলে ভারতে দুর্যোগ মোকাবিলার কাজ সহজ হবে। এ ছাড়াও হিমালয়ের হিমবাহ কত দ্রুত গলছে, কৃষিতে জলের সঠিক ব্যবহার কী ভাবে করা যাবে, তা নিয়েও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলবে। নাইসার-এর প্রাপ্ত তথ্য ভারতকে আগে থেকে বন্যা, ভূমিকম্প ও ধসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করতে সাহায্য করবে। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং বলেন, ‘‘এটিই ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো) এবং নাসা-র তরফে পৃথিবীকে পর্যবেক্ষণের প্রথম যৌথ উদ্যোগ। তাই এই অভিযানকে ভারতের আন্তর্জাতিক স্তরে বৈজ্ঞানিক কর্মকাণ্ডের ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসাবে দেখা হচ্ছে।’’ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আরও বলেন, এই অভিযান কেবল একটি কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণই নয়, বরং বিজ্ঞান এবং বিশ্বকল্যাণের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ দু’টি দেশ যৌথ ভাবে কী কী করে দেখাতে পারে তার প্রতীক।

  • NISAR: ৩০ জুলাই মহাকাশে পাড়ি দেবে ইসরো-নাসার যৌথ উদ্যোগে তৈরি উপগ্রহ ‘নিসার’

    NISAR: ৩০ জুলাই মহাকাশে পাড়ি দেবে ইসরো-নাসার যৌথ উদ্যোগে তৈরি উপগ্রহ ‘নিসার’

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ইসরোর আরও এক বিরল কৃতিত্ব। ভূমিকম্প সম্পর্কে আগাম সতর্কতা দেবে শক্তিশালী পৃথিবী পর্যবেক্ষণকারী উপগ্রহ নিসার (NISAR) অর্থাৎ নাসা-ইসরো সিন্থেটিক অ্যাপারচার রেডার (NASA-ISRO Synthetic Aperture Radar)। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো (ISRO) এবং মার্কিন গবেষণা সংস্থা নাসা (NASA) যৌথভাবে তৈরি করেছে এই কার্যকরী উপগ্রহ। আগামী ৩০ জুলাই শ্রীহরিকোটার সতীশ ধবন মহাকাশ কেন্দ্র থেকে উৎক্ষেপণ করা হবে নিসার। ইসরো নিশ্চিত করেছে, ভারতের জিওসিঙ্ক্রোনাস স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকল (GSLV) ব্যবহার করে বিকেল ৫:৪০ মিনিটে এই উৎক্ষেপণ করা হবে। এটি হবে ভারত ও আমেরিকার মধ্যে সবচেয়ে ব্যয়বহুল (প্রায় ১.৫ বিলিয়ন ডলার) এবং গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী উপগ্রহ মিশন।

    বিশ্বের প্রথম দ্বৈত-ফ্রিকোয়েন্সি রেডার সহ উপগ্রহ

    নিসার উপগ্রহে রয়েছে নাসার এল-ব্যান্ড এবং ইসরোর এস-ব্যান্ড সিন্থেটিক অ্যাপারচার রেডার প্রযুক্তির সমন্বয়, যা একসঙ্গে পৃথিবীর ভূমি ও বরফ আবরণের ত্রিমাত্রিক মানচিত্র প্রস্তুত করবে অত্যন্ত নিখুঁতভাবে। এই রেডারগুলো একসঙ্গে পৃথিবীর পৃষ্ঠের সূক্ষ্ম পরিবর্তন, আগ্নেয়গিরি, ভূমিধ্বস, মেরু বরফ গলা, ভূমিকম্প ইত্যাদি নজরদারি করতে পারবে। প্রতি ১২ দিনে একবার পৃথিবীর নির্দিষ্ট অঞ্চল পর্যবেক্ষণ করবে। এটি আপাতত বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল পৃথিবী-পর্যবেক্ষণ উপগ্রহ, যা ডুয়াল এসএআর রেডার প্রযুক্তিতে সজ্জিত। এই প্রকল্পের মোট ব্যয় প্রায় ১.৫ বিলিয়ন ডলার (প্রায় ১২,৫০০ কোটি টাকা), যা এটিকে বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল আর্থ ইমেজিং স্যাটেলাইটে পরিণত করেছে।

    নিসারের বৈজ্ঞানিক লক্ষ্য ও গুরুত্ব

    নিসার যেসব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করবে, তার মধ্যে রয়েছে,

    প্রতিবেশ ব্যবস্থার পরিবর্তন ও বায়োমাসের বণ্টন।

    ভূমিকম্প, ভূমিধস ও আগ্নেয়গিরির ফলে ভূমির বিকৃতি।

    হিমবাহ ও বরফচাদরের গতি।

    মাটির আর্দ্রতা ও ভূগর্ভস্থ জলের হেরফের।

    সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ও শহরাঞ্চলের পরিবর্তন।

    এই ডেটা ব্যবহার হবে পরিবেশ বিজ্ঞান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, কৃষি পরিকল্পনা ও জলসম্পদ ব্যবস্থাপনায়। উপগ্রহটি দিন-রাত, মেঘ বা আবহাওয়ার বাধা অগ্রাহ্য করে কার্যক্ষম থাকবে।

    ভারতের প্রযুক্তিগত অগ্রগতি

    উৎক্ষেপণের পুরো প্রক্রিয়া পরিচালনা করছে ইসরো। ভারতের প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতার আরেক নিদর্শন হিসেবে এই মিশনে ১২ মিটার ব্যাসের বিশাল ভাঁজযোগ্য অ্যান্টেনা সফলভাবে সংযোজন করা হয়েছে। নিসার থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্বের গবেষক ও জরুরি পরিষেবা কর্মীদের জন্য ফ্রি ও ওপেন থাকবে। দুর্যোগের সময়ে প্রায় তাৎক্ষণিক তথ্য সরবরাহ করে প্রাণ ও সম্পদ বাঁচাতে সাহায্য করবে এই মিশন। ২০১২ সালে ইসরো এবং নাসার মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে এই অভূতপূর্ব অভিযানের সূচনা হয়েছিল। ২০১৪ সালে, দুটি সংস্থার মধ্যে একটি আনুষ্ঠানিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল, যার অধীনে একটি রেডার ভারতে এবং অন্যটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি করার কথা ছিল। আমেদাবাদের এসএসি (SAC) সেন্টারের পরিচালক ডঃ নীলেশ দেশাইয়ের মতে, এটি ভারতের প্রযুক্তিগত অগ্রগতির প্রতীক।

  • AdFalciVax: ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’র সাফল্য, দেশে তৈরি হচ্ছে ম্যালেরিয়া প্রতিরোধক ভ্যাকসিন অ্যাডফ্যালসিভ্যাক্স

    AdFalciVax: ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’র সাফল্য, দেশে তৈরি হচ্ছে ম্যালেরিয়া প্রতিরোধক ভ্যাকসিন অ্যাডফ্যালসিভ্যাক্স

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এক নয়া মাইলফলক স্পর্শ করল ভারত। এবার থেকে ভারতেই তৈরি হবে ম্যালেরিয়া প্রতিরোধক ভ্যাকসিন, যার নাম অ্যাডফ্যালসিভ্যাক্স (AdFalciVax)। জানা যাচ্ছে, ভুবনেশ্বরে অবস্থিত ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ম্যালেরিয়া রিসার্চ এবং ডিপার্টমেন্ট অফ বায়োটেকনোলজি ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ইমিউনোলজির যৌথ প্রচেষ্টাতেই এই ভ্যাকসিন তৈরি করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, দেশীয় প্রযুক্তিতে এই প্রথম এই ধরনের ম্যালেরিয়া প্রতিরোধক ভ্যাকসিন তৈরি করা হচ্ছে, অর্থাৎ যা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।

    ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচির অন্যতম সফল দৃষ্টান্ত হতে চলেছে

    ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় (Modi Government) আসার পর থেকেই শুরু হয়েছে এই প্রচেষ্টা। একাধিক ক্ষেত্রে আত্মনির্ভর ভারতের উদ্যোগ নিতে দেখা গিয়েছে মোদি সরকারকে। প্রযুক্তি থেকে শুরু করে যুদ্ধ সরঞ্জাম, করোনা মহামারীতেও ভারতের তৈরি ভ্যাকসিন সারা দুনিয়াতে প্রশংসা কুড়িয়েছে। তার গুণমানের জন্য। এবার এই আবহে তৈরি হচ্ছে ম্যালেরিয়া প্রতিরোধক ভ্যাকসিন। অ্যাডফ্যালসিভ্যাক্স (AdFalciVax) নামের এই ম্যালেরিয়া প্রতিরোধ ভ্যাকসিন ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচির অন্যতম সফল দৃষ্টান্ত হতে চলেছে।

    অ্যাডফ্যালসিভ্যাক্স অত্যন্ত মৌলিক এক ধরনের ম্যালেরিয়া প্রতিরোধক ভ্যাকসিন

    বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, অ্যাডফ্যালসিভ্যাক্স (AdFalciVax) অত্যন্ত মৌলিক এক ধরনের ম্যালেরিয়া প্রতিরোধক ভ্যাকসিন। এটা একেবারে লক্ষ্যবস্তু বানাবে প্লাসমোডিয়াম ফ্যালসিপারাম-কে। প্রসঙ্গত, এই প্যারাসাইট ম্যালেরিয়ার জন্য অত্যন্ত বিপদজনক বলে মনে করা হয় এবং তা প্রাণঘাতীও হয়ে দাঁড়ায় মাঝেমধ্যে। সেই প্যারাসাইটকেই একেবারে লক্ষ্যবস্তু বানাবে ভারতবর্ষে তৈরি হতে চলা অ্যাডফ্যালসিভ্যাক্স।

    কেন অন্যান্য ভ্যাকসিনের থেকে আলাদা?

    বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, সারা বিশ্বে ম্যালেরিয়া প্রতিরোধক যে ভ্যাকসিনগুলি প্রচলিত রয়েছে, সেগুলির বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সম্পূর্ণভাবে ফোকাস করে প্যারাসাইটের লাইফ সাইকেলের উপর। কিন্তু ভারতে তৈরি হতে চলা অ্যাডফ্যালসিভ্যাক্স-কে এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে তা সহজে এবং একেবারে শেষ পর্যন্ত সুরক্ষা দিতে পারে। ম্যালেরিয়ার ফলে মানবদেহে সংক্রমণ যে স্তরেই থাকুক না কেন, এই ভ্যাকসিন লড়াই চালাতে সক্ষম তার বিরুদ্ধে। এর আগে এই ভ্যাকসিন নিয়ে একাধিকবার ল্যাব টেস্টিংও হয়েছে এবং সেখানে বিজ্ঞানীরা যে ফলাফল পেয়েছেন, তা এক কথায় অত্যন্ত ইতিবাচক।

    সংক্রমণের যেকোনও স্তরে মানবদেহকে সুরক্ষা দেবে এই ভ্যাকসিন

    বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করছেন, এই ভ্যাকসিনের ফলে ম্যালেরিয়া আক্রান্ত রোগীদের প্রভূত উপকার হবে। বর্তমানে যে ভ্যাকসিনগুলি প্রচলিত রয়েছে, যেমন: RTS,S/AS01, R21/Matrix-M. এই সমস্ত প্রচলিত ভ্যাকসিনগুলির থেকে অনেক বেশি কার্যকর হতে পারে অ্যাডফ্যালসিভ্যাক্স ভ্যাকসিন। এই ভ্যাকসিন অনেক দিকেই কাজ করবে, যার মধ্যে সবচেয়ে বড় হচ্ছে প্রতিরোধক ব্যবস্থা। অর্থাৎ, সংক্রমণের যেকোনও স্তরে মানবদেহকে সুরক্ষা দেবে এই ভ্যাকসিন। ম্যালেরিয়া প্রতিরোধ করবে — এর পাশাপাশি ইমিউন সিস্টেমকে উন্নত করবে।

    ঘরের তাপমাত্রায় এই ভ্যাকসিনকে কতদিন পর্যন্ত রাখা যাবে?

    ঘরের তাপমাত্রায় এই ভ্যাকসিনকে কতদিন পর্যন্ত রাখা যাবে, এর উত্তরও দিচ্ছেন চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা। তাঁরা বলছেন, এই ভ্যাকসিনকে ৯ মাস ধরে রাখা যেতে পারে ঘরের তাপমাত্রায় এবং খুব সহজেই এটা রাখা যাবে। সহজে এই ভ্যাকসিনকে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়া যাবে, বিশেষত ক্রান্তীয় অঞ্চলে। শুধু তাই নয়, ম্যালেরিয়া প্রতিরোধক এই ভ্যাকসিন অত্যন্ত খরচ-সাশ্রয়ী হতে চলেছে বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা, যাতে সাধারণ মানুষ এই ভ্যাকসিন ব্যবহার করতে পারবেন।

    সাত বছরের মধ্যে আসছে বাজারে

    এই ভ্যাকসিন (AdFalciVax) বর্তমানে প্রি-ক্লিনিকাল স্তরে রয়েছে এবং সমস্ত কিছু পরিকল্পনামাফিক এগিয়ে চলেছে বলে জানাচ্ছেন এই ভ্যাকসিনের কাজের সঙ্গে যুক্ত বিশেষজ্ঞরা। কতদিনের মধ্যে এই ভ্যাকসিন বাজারে আসবে? বিজ্ঞানীরা বলছেন, যেভাবে গবেষণা চলছে, তাতে ৭ বছর লাগবে এই ভ্যাকসিন বাজারে আনতে। ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারবে এই ভ্যাকসিন। একে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে তৈরি করা হচ্ছে এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থাও অত্যন্ত কঠোর।

    গোষ্ঠী সংক্রমণও রুখবে এই ভ্যাকসিন

    চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, অ্যাডফ্যালসিভ্যাক্স-কে তৈরি করতে ল্যাকটোকোকাস ল্যাকটিস (Lactococcus lactis) ব্যবহার করা হয়েছে, যা একটি নিরাপদ এবং প্রচলিত ব্যাকটেরিয়াম। এটিকে এমনভাবে তৈরি করা হচ্ছে, যাতে এটি রোগীকে যেকোনো ধরনের ম্যালেরিয়া সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সক্ষম হয়। এর পাশাপাশি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হল— এই ভ্যাকসিন ম্যালেরিয়াকে যেকোনও গোষ্ঠীর মধ্যেও সংক্রমিত হওয়া থেকে বাধা দেবে।

    অনেক কোম্পানি তৈরি করতে পারবে এই ভ্যাকসিন

    ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চ (ICMR)-এর তরফ থেকে কর্তা ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, তাঁরা এই ভ্যাকসিন প্রযুক্তি অন্যান্য সংস্থাকেও দেবেন এবং নন-এক্সক্লুসিভ চুক্তির মাধ্যমে তাঁদেরকে তৈরি করার অনুমোদন দেবেন। অর্থাৎ, এর মানে হচ্ছে বিভিন্ন এবং অনেকগুলি কোম্পানি এই ভ্যাকসিনের উপর কাজ করতে পারবে এবং এই ভ্যাকসিন উৎপাদন করতে পারবে। এর ফলে জনগণের যতটা চাহিদা থাকবে, ঠিক ততটাই ভ্যাকসিন বাজারে সর্বত্র পাওয়া যাবে।

  • IIT Roorkee: মোদি লিপিকে দেবনাগরী লিপিতে রূপান্তর করতে পারে আইআইটি রুরকির এআই!

    IIT Roorkee: মোদি লিপিকে দেবনাগরী লিপিতে রূপান্তর করতে পারে আইআইটি রুরকির এআই!

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আইআইটি রুরকি (IIT Roorkee) বিশ্বের প্রথম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক (এআই) মডেল তৈরি করেছে, যা ঐতিহাসিক মোদি লিপিকে দেবনাগরী লিপিতে রূপান্তর করতে পারে। এই প্রকল্পের নেতৃত্বে রয়েছেন অধ্যাপক স্পর্শ মিত্তল। এটি কেবল প্রযুক্তিগত কৃতিত্ব নয়, এটি এক সাংস্কৃতিক পুনর্জাগরণ, ভারতের বিস্মৃত ভাষাতাত্ত্বিক (Devanagari) ঐতিহ্যের এক ডিজিটাল পুনর্জন্ম, এবং ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’, ‘ভাষিণী’, ‘ভারত জিপিটি’, ও ‘আজাদি কা অমৃত মহোৎসব’-এর মতো জাতীয় উদ্যোগে একটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান।

    দুটি শক্তিশালী উপকরণ (IIT Roorkee)

    এই উদ্যোগের মূল দুটি শক্তিশালী উপকরণ হল ১) মোদি স্ক্রিপ্ট কনভার্সান নেটওয়ার্ক (এমওএসসি)। এটি একটি একটি উন্নত ভিশন-ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল ভিত্তিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মডেল, যা প্রচলিত অপটিকাল ক্যারেক্টার রিকগনিশন (ওসিআর) টুলগুলোর চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর। এবং ২) মোদি দেবনাগরী ট্রান্সলিটারেটেড ডেটাসেট। এটি হল মোদি লিপিতে হাতে লেখা পাণ্ডুলিপির প্রথম এবং একমাত্র ব্যাপক ডেটাসেট, যেখানে প্রামাণ্য দেবনাগরী প্রতিলিপি যুক্ত রয়েছে। প্রসঙ্গত, এই দুটি টুলই হাগিং ফেস প্ল্যাটফর্মে প্রকাশ করা হয়েছে, যাতে বিশ্বব্যাপী গবেষক, ডেভেলপার ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলি এই উদ্ভাবনের ওপর ভিত্তি করে আরও গবেষণা ও উন্নয়ন চালাতে পারে। এটি প্রাচীন ভাষা বিষয়ক এআইয়ের ক্ষেত্রে এক অভূতপূর্ব পদক্ষেপ।

    মোদি লিপি

    মোদি লিপি কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের পদবির সঙ্গে বিভ্রান্ত হবার মতো নয়। এটি একটি আধা-সাঁড়াশি ধরণের লিপি যা ঐতিহাসিকভাবে মহারাষ্ট্র এবং ভারতের মধ্য ও পশ্চিম অংশে ব্যবহৃত হত। ছত্রপতি শিবাজি মহারাজের শাসন কালে জারি করা রাজকীয় ফরমান, পেশওয়াদের আমলের প্রশাসনিক নথিপত্র, এবং ব্রিটিশ শাসনের সময় ভূমি ও আইনি রেকর্ড – সব কিছুর জন্য শতাব্দীর পর শতাব্দী এই মোদি লিপিই ছিল সরকারিভাবে স্বীকৃত ভাষা (IIT Roorkee)। তবে এত সমৃদ্ধ ব্যবহার থাকা সত্ত্বেও ঔপনিবেশিক শাসকরা দেবনাগরী (Devanagari) ও ইংরেজি চাপিয়ে দেওয়ায় মোদি লিপির ব্যবহার কমে যায়। ধীরে ধীরে এই লিপির চর্চাও প্রায় বিলুপ্তির পথে চলে যায়। বর্তমানে প্রায় ৪ কোটি মোদি লিপিতে লেখা নথি দেশে বিভিন্ন আর্কাইভ, মন্দির, ব্যক্তিগত সংগ্রহ এবং সরকারি দফতরে পড়ে রয়েছে। এর অধিকাংশই অপঠিত, কারণ দক্ষ পাঠকের অভাব রয়েছে।

    কী বললেন প্রধান গবেষক?

    এই প্রেক্ষাপটেই এসেছে মোদিএসসিনেট। সর্বাধুনিক ভিশন-ল্যাঙ্গুয়েজ এআই ব্যবহার করে নির্মিত এই মডেলটি হাতে লেখা মোদি অক্ষরকে চিনতে পারে এবং প্রাসঙ্গিকভাবে তা বুঝে যথাযথভাবে দেবনাগরীতে রূপান্তর করতে পারে। সাধারণ ওসিআর সিস্টেম যেখানে হাতে লেখা, অলঙ্করণযুক্ত বা পুরোনো ক্ষয়প্রাপ্ত লেখার ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়, সেখানে মোদি লিপির গতি, শৈল্পিক বৈচিত্র্য এবং সাঁড়াশি প্রকৃতিকে চমৎকার নিখুঁতভাবে সামলাতে পারে। আইআইটি রূরকির প্রধাণ গবেষক তথা প্রকল্পের প্রধান অধ্যাপক স্পর্শ মিত্তল বলেন, “এটি শুধুমাত্র একটি ট্রান্সলিটারেশন সরঞ্জাম নয়। এটি একটি যন্ত্র, যা কালি ও কালের মাঝে চাপা পড়া সভ্যতার জ্ঞানকে উন্মোচন করতে সক্ষম, আর্কাইভে সংরক্ষিত, হারিয়ে যাওয়া উপভাষায় লুকিয়ে থাকা ঐতিহ্যকে জাগিয়ে তুলতে পারে।” তিনি বলেন, “আমরা এমন একটি এআই তৈরি করছি, যা ঐতিহ্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, উত্তরাধিকারকে (Devanagari) বিশ্লেষণ করতে সক্ষম এবং ভারতীয় ইতিহাসের নতুন অধ্যায় উন্মোচনের পথ খুলে দেয় (IIT Roorkee)।”

    প্রযুক্তির ভিত্তি

    গবেষকরা শুধু একটি মডেল তৈরি করেই থেমে থাকেননি, তাঁরা এই প্রযুক্তির ভিত্তি স্থাপন করেছেন মোদিট্রান্স নামের একটি বিশেষভাবে সংগৃহীত, উচ্চমানের ডেটাসেটের মাধ্যমে, যা প্রামাণিক মোদী লিপিতে লেখা ২০০০-রও বেশি স্ক্যান করা পাণ্ডুলিপির ছবি নিয়ে গঠিত। এই পাণ্ডুলিপিগুলি তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক পর্যায়ে ভাগ করা হয়েছে। এগুলি হল, শিবকালীন (১৭শ শতাব্দী) – ছত্রপতি শিবাজী মহারাজের সময়কাল, পেশওয়াকালীন (১৮শ শতাব্দী)- পেশওয়া প্রশাসনের অধীনে এবং আঙ্গলকালীন (১৯শ শতাব্দী) – ব্রিটিশ শাসনের সময়। প্রতিটি পাণ্ডুলিপির সঙ্গে অভিজ্ঞ ভাষাবিদদের দ্বারা যাচাই করা দেবনাগরী লিপ্যন্তর যুক্ত রয়েছে, যা এটিকে শুধুই একটি প্রযুক্তিগত উপাদান নয় বরং বিপুল মূল্যমানের একটি ভাষাগত ঐতিহ্য-ভান্ডারে পরিণত করেছে। গবেষকদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় তৈরি হয়েছে এমন একটি টুল, যা একদিকে অ্যাকাডেমিক কড়াকড়ি বজায় রাখে, অন্যদিকে ব্যবহারিক প্রয়োগে উপযোগী, ঐতিহ্য সংরক্ষণে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্ষেত্রে এক বিরল কৃতিত্ব (IIT Roorkee)।

    একাধিক প্রধান মিশনের সঙ্গে যুক্ত

    এই এআই মডেলটি ভারতের একাধিক প্রধান মিশনের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। এগুলি হল, ডিজিটাল ইন্ডিয়া – লক্ষ (Devanagari) লক্ষ প্রাচীন পান্ডুলিপিকে যন্ত্র-পঠনযোগ্য রূপে রূপান্তর করে ডিজিটালকরণে সহায়তা করছে। ভাষিণী – বহু-ভাষিক ভাষা প্রবেশগম্যতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সমর্থন জোগাচ্ছে। ভারতজিপিটি– ভারতীয় প্রসঙ্গকে ভিত্তি করে বৃহৎ ভাষা মডেল গঠনের ভিত্তি তৈরি করছে। এবং ন্যাশনাল ল্যাঙ্গুয়েজ ট্রান্সলেশন মিশন– আঞ্চলিক ভাষার সংরক্ষণ এবং লিপ্যন্তরের মাধ্যমে ভাষাগত বৈচিত্র্য রক্ষায় সহায়ক। বৈশ্বিক পর্যায়ে এই উদ্যোগটি রাষ্ট্রসংঘের মজবুত উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ১১.৪-কে সরাসরি সমর্থন করে- বিশ্বের সাংস্কৃতিক ও প্রাকৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও রক্ষার প্রচেষ্টা জোরদার করা (IIT Roorkee)।

    যখন জলবায়ু পরিবর্তন, সময় এবং অবহেলা প্রাচীন নথিগুলোর অস্তিত্বকে হুমকির মুখে ফেলছে, তখন এই ধরনের এআই ভিত্তিক কাঠামো বিশ্বব্যাপী প্রয়োগযোগ্য হতে পারে। এই টুলের মাধ্যমে তামিলনাড়ুর সংস্কৃত (Devanagari) গ্রন্থ লিপি হোক বা লাদাখের তিব্বতি পান্ডুলিপি, কিংবা খেমার, পালি ও থাই ভাষার শিলালিপি – সব ক্ষেত্রেই এআই সাহায্য করতে পারে (IIT Roorkee)।

  • Shubhanshu Shukla: মহাকাশ থেকে মর্ত্যে প্রত্যাবর্তন শুভাংশুদের, প্রশান্ত মহাসাগরে নামল ড্রাগন ক্যাপসুল

    Shubhanshu Shukla: মহাকাশ থেকে মর্ত্যে প্রত্যাবর্তন শুভাংশুদের, প্রশান্ত মহাসাগরে নামল ড্রাগন ক্যাপসুল

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: অবশেষে সেই প্রতীক্ষিত মুহূর্ত এল! ভারতীয় সময় দুপুর ৩টা ১ মিনিটে প্রশান্ত মহাসাগরে সফলভাবে অবতরণ করল স্পেসএক্সের মহাকাশযান ‘ড্রাগন’। এই যানে ছিলেন শুভাংশু শুক্ল-সহ আরও তিন নভশ্চর। মঙ্গলবার দুপুরে, ভারতীয় সময় অনুযায়ী, পৃথিবীতে ফিরে এলেন শুভাংশুরা (Shubhanshu Shukla)। তখন আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ার সান দিয়েগো উপকূলে রাতের সময়। নির্ধারিত সময়মতো পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে ‘ড্রাগন’ ক্যাপসুল। এই সময় যেকোনও মহাকাশযান প্রচণ্ড তাপ ও ঘর্ষণের মুখোমুখি হয়। ক্যাপসুলটি তখন ঘণ্টায় ২৮ হাজার কিলোমিটার গতিতে ছুটছিল, যা ধীরে ধীরে কমে ঘণ্টায় ২৪ কিলোমিটারে নেমে আসে। এরপর একে একে খুলে যায় চারটি প্যারাশুট, আর ধীরে ধীরে সমুদ্রে নামে ক্যাপসুলটি।

    প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থান করছিল স্পেসএক্সের উদ্ধারকারী জাহাজ ও টিম

    প্রশান্ত মহাসাগরে আগে থেকেই অবস্থান করছিল স্পেসএক্সের উদ্ধারকারী জাহাজ ও টিম। অবতরণের পরপরই তারা ক্যাপসুলের কাছে পৌঁছে যায় এবং সেটিকে জাহাজে তুলে নেয়। কিছু সময় পর ক্যাপসুলের হ্যাচ খোলা হয় এবং একে একে চার মহাকাশচারীকে বাইরে আনা হয়। এরপর তাদের উপর শুরু হয় বিভিন্ন মেডিক্যাল পরীক্ষা (Shubhanshu Shukla)।

    “ঘরের ছেলে”র ঘরে ফেরা (Shubhanshu Shukla)

    শুভাংশুর (Shubhanshu Shukla) শহর লখনউয়ে ইতিমধ্যেই ছড়িয়েছে উচ্ছ্বাসের জোয়ার। বাবা শম্ভুদয়াল শুক্ল এবং মা আশা শুক্ল জানিয়েছেন, ছেলের এই কৃতিত্বে তারা গর্বিত। শুভাংশুর মা সংবাদমাধ্যমে বলেন, “আমাদের ছেলে ফিরে এসেছে—এটাই সবচেয়ে বড় কথা। সবাইকে ধন্যবাদ। গোটা পৃথিবী এই মুহূর্তটি দেখেছে। আপনাদের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা। এত দিন পর ছেলেকে দেখে আবেগ সংবরণ করা কঠিন—স্বাভাবিকভাবেই কান্না এসে যাচ্ছে।”

    প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ট্যুইট

    এনিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক্স-এ লিখেছেন, “ঐতিহাসিক অভিযানের শেষে পৃথিবীতে ফিরে আসা গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু শুক্লকে অভিনন্দন জানাই! আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে ভারতের প্রথম প্রতিনিধি হিসেবে তিনি অসীম নিষ্ঠা, সাহস এবং উদ্যমের নিদর্শন দিয়েছেন। কোটি কোটি মানুষের স্বপ্নকে তিনি অনুপ্রাণিত করেছেন। এই অভিযান আমাদের নিজস্ব গগনযান মিশনের পথে আর একটি বড় পদক্ষেপ।”

    ২৫ জুন ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে যাত্রা শুরু

    গত ২৫ জুন ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে নাসার ‘অ্যাক্সিয়ম-৪’ মিশনের অংশ হিসেবে আইএসএসের (আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন) উদ্দেশে যাত্রা করেন শুভাংশুরা (International Space Station)। এই মিশনে ছিলেন চারজন মহাকাশচারী—মিশন কমান্ডার পেগি হুইটসন, স্পেসক্র্যাফ্টের পাইলট হিসেবে ভারতের শুভাংশু শুক্ল, ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির পক্ষ থেকে পোল্যান্ডের মহাকাশ বিজ্ঞানী স্লাওস উজনানস্কি-উইশনিউস্কি এবং হাঙ্গেরির টিবর কাপু।

    দীর্ঘ ২৩ ঘণ্টার ফিরতি যাত্রা

    আইএসএসে ১৮ দিন কাটানোর পর সোমবার বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটে (ভারতীয় সময়) মহাকাশ স্টেশন (International Space Station) থেকে বিচ্ছিন্ন হয় তাদের যান এবং শুরু হয় দীর্ঘ ২৩ ঘণ্টার ফিরতি যাত্রা। অবশেষে প্রশান্ত মহাসাগরে সফলভাবে অবতরণ করে ‘ড্রাগন’ ক্যাপসুল। প্রসঙ্গত মহাকাশ স্টেশনে পৌঁছাতে তাঁদের সময় লেগেছিল প্রায় ২৮ ঘণ্টা।

    আইএসএস থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার মুহূর্ত

    মহাকাশ থেকে পৃথিবীতে ফেরার প্রতিটি ধাপে নজর ছিল আন্তর্জাতিক মহলে। সোমবার ‘আনডকিং’ প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (আইএসএস) থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় স্পেসএক্সের মহাকাশযান ‘ড্রাগন’। এই প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার আগে মহাকাশযানে প্রবেশ করতে দেখা যায় মিশন কমান্ডার পেগি হুইটসন, মিশন পাইলট শুভাংশু ‘শুক’ শুক্লা এবং দুই মিশন বিশেষজ্ঞ স্লাওস উজানানস্কি-উইজনিউস্কি ও টিবর কাপুকে।

    পরীক্ষার নমুনা ও মালপত্র নিয়ে প্রত্যাবর্তন

    এই অভিযানে ফেরার সময় ড্রাগন ক্যাপসুলে প্রায় ২৫০ কেজি মালপত্র সঙ্গে করে নিয়ে আসেন মহাকাশচারীরা। এর মধ্যে ছিল বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার নমুনা এবং অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি, যা মহাকাশে সম্পন্ন হওয়া গবেষণার ফলস্বরূপ।

    বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ ও গতি নিয়ন্ত্রণ

    ড্রাগন ক্যাপসুল যখন পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে, তখন তার গতি ছিল প্রায় ঘণ্টায় ২৮,০০০ কিলোমিটার। তবে সেই সঙ্গে শুরু হয় প্রবল ঘর্ষণ এবং তাপের সৃষ্টি। এই পর্যায়ে, রেট্রো রকেট ইঞ্জিনের মাধ্যমে ক্যাপসুলের গতি ধীরে ধীরে কমানো হয়, যাতে তা নিরাপদে অবতরণ করতে পারে। শেষ পর্যায়ে, স্প্ল্যাশডাউন প্রক্রিয়ায় ড্রাগনের গতি কমে দাঁড়ায় ঘণ্টায় মাত্র ২৩ কিলোমিটারে। কক্ষপথ থেকে বিচ্যুত হওয়ার পর মাত্র ২০ মিনিটের মধ্যে ড্রাগন ক্যাপসুল ক্যালিফোর্নিয়ার উপকূলে প্রশান্ত মহাসাগরে ভেসে ওঠে। সেখানে অপেক্ষা করছিল স্পেসএক্সের উদ্ধারকারী দল এবং রিকভারি ভেহিকল।

    ফিরেও শুরু নতুন অধ্যায়

    সোমবারই মহাকাশ থেকে পৃথিবীর পথে যাত্রা শুরু করেন শুভাংশুরা। টানা সাড়ে ২২ ঘণ্টার দীর্ঘ যাত্রা শেষে নিরাপদে পৃথিবীতে অবতরণ করেন তাঁরা। তবে মাটিতে পা রাখলেও আপাতত বাড়ি ফেরা হচ্ছে না। স্বাস্থ্য সুরক্ষার স্বার্থে নির্ধারিত নিয়ম মেনে তাঁদের কিছুদিন কোয়ারান্টিনে থাকতে হবে। মহাকর্ষণহীন পরিবেশে দীর্ঘদিন থাকার কারণে শরীরে বিভিন্ন পরিবর্তন ঘটে থাকে। সে কারণেই পৃথিবীর আবহাওয়ায় শরীরকে মানিয়ে নিতে কিছুটা সময় প্রয়োজন। এই সময় তাঁদের রাখা হবে বিশেষ পর্যবেক্ষণে, চলবে স্বাস্থ্যপরীক্ষা এবং অভিযোজনমূলক প্রশিক্ষণ। সবকিছু স্বাভাবিক থাকলে তবেই তাঁরা পরিবারের কাছে ফিরতে পারবেন।

  • Subhanshu Sukla: ‘সারে জাঁহা সে আচ্ছা….’! মহাকাশ জয় করে ঘরে ফেরার আগে আপ্লুত শুভাংশু

    Subhanshu Sukla: ‘সারে জাঁহা সে আচ্ছা….’! মহাকাশ জয় করে ঘরে ফেরার আগে আপ্লুত শুভাংশু

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মহাকাশ থেকে পৃথিবীর দিকে তাকালে মনে হয়, ভারত ‘সারে জাঁহা সে আচ্ছা….’। আত্মবিশ্বাসী, ভয়ডরহীন, গর্বিত এবং উচ্চাকাঙ্ক্ষায় পরিপূর্ণ এই দেশ। মহাশূন্য থেকে ঘরে ফেরার আগে এমনই বললেন ভারতীয় মহাকাশচারী শুভাংশু শুক্লা (Subhanshu Sukla)। সব ঠিকঠাক থাকলে ১৫ জুলাই পৃথিবীতে ফিরবেন শুভাংশু। সঙ্গে অ্যাক্সিয়ম-৪ অভিযানের আরও তিন সদস্য- পেগি হুইটসন, টিবর কাপু ও স্লাওস উজনানস্কি। আজ, সোমবার দুপুর দু’টো নাগাদ শুরু হবে শুভাংশুদের আনডকিং প্রক্রিয়া। আনডকিং শেষ হওয়ার পর পৃথিবীর উদ্দেশে যাত্রা শুরু করবেন শুভাংশুরা। এই দু’টি প্রক্রিয়া সরাসরি দেখা যাবে নাসার ওয়েবসাইট এবং সোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলিতে।

    বিদায় সংবর্ধনা, মহাকাশে সংস্কৃতির আদান-প্রদান

    রবিবারই মহাকাশ থেকে পৃথিবীতে ফেরার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন ভারতীয় মহাকাশচারী শুভাংশু শুক্লা। আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে তাঁদের ফেয়ারওয়েল জানানো হয়েছে। রবিবার, ভারতীয় সময় সন্ধে সাড়ে সাতটা থেকে শুরু হয় ফেয়ারওয়েল অনুষ্ঠান। নাসার এক্সপিডিশন ৭৩-এর সাতজন সদস্য বিদায় সংবর্ধনা দেন শুভাংশু-সহ চার মহাকাশচারীকে। সেই সংবর্ধনা সরাসরি সম্প্রচার করে নাসা। আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে একে অপরকে জড়িয়ে ধরেন শুভাংশুরা। গাজরের হালুয়া-আম রস অন্যদের সঙ্গে ভাগ করে নেন শুভাংশু। পোল্যান্ডের স্লাওস উজনানস্কি ভাগ করেন পোলিশ স্যান্ডউইচ। ক্ষণিকের জন্য ঘরোষা উষ্ণতায় ভরে যায় আইএসএস।

    নাসার ওয়েবসাইটে সরাসরি সম্প্রচার

    ১৪ জুলাই ভারতীয় সময়ানুসারে বিকেল ৪টে ৩৫ মিনিটে (আমেরিকার সময় ভোর ৭টা বেজে ৫ মিনিটে) ড্রাগন আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন থেকে বিচ্ছিন্ন হবে। তারপর পৃথিবীর অভিমুখে যাত্রা করবে ড্রাগন। প্রায় ৩০ মিনিট এই যাত্রার সরাসরি সম্প্রচার করবে নাসা। তারপর নাসার সম্প্রচার বন্ধ হয়ে যাবে। শুভাংশুদের মহাকাশযান পৃথিবীতে প্রবেশের পর যখন সমুদ্রে অবতরণ করবে, তখন ফের শুরু হবে লাইভ টেলিকাস্ট। ভারতীয় সময় মঙ্গলবার বিকেল তিনটের সময় পৃথিবীতে ফিরবেন শুভাংশুরা। সেই দৃশ্যও সম্প্রচারিত হবে নাসার ওয়েবসাইটে।

    সাতদিন রিহ্যাবে শুভাংশুরা

    ক্যালিফোর্নিয়ায় উপকূলে অবতরণ করবেন শুভাংশুরা। এরপর সাতদিন রিহ্যাবে থাকবেন ভারতীয় নভশ্চর। ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো একথা জানিয়েছে। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাব নেই। যার ফলে হাড়ের ওজন কমে যায়। দুর্বল হয়ে পড়ে পেশি। এছাড়াও একাধিক শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। পৃথিবীতে ফিরলে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাব পড়বে শরীরে। পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে বেশ কিছুটা সময় লাগবে। সেজন্যই এই রিহ্যাব। বিবৃতিতে ইসরো জানিয়েছে, ‘স্প্ল্যাসডাউনের পর ফ্লাইট সার্জনের পর্যবেক্ষণে সাতদিনের রিহ্যাবে থাকবেন গগনযাত্রী। পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির সঙ্গে মানিয়ে নিতেই এই পদক্ষেপ। যেমন হয়েছিল সুনীতা উইলিয়ামসের ক্ষেত্রেও। বর্তমানে ভিডিও কনফারেন্সিংয়রে মাধ্যমে শুভাংশুর স্বাস্থ্যের খবর রাখছেন ইসরোর ফ্লাইট সার্জনরা।’

    সারে জাঁহা যে আচ্ছা

    ১৯৮৪ সালে প্রথম ভারতীয় মহাকাশচারী রাকেশ শর্মা যে অবিস্মরণীয় মন্তব্য করেছিলেন, সেটার রেশ ধরেই ভারতীয় বায়ুসেনার গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু বলেন, ‘আজও এখান থেকে ভারতকে দেখে মনে হচ্ছে, সারে জাঁহা যে আচ্ছা….।’ সোমবার আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্র থেকে পৃথিবীর দিকে রওনা দিতে চলেছেন ভারতীয় বায়ুসেনার গ্রুপ ক্যাপ্টেন। তার আগে অ্যাক্সিওম-৪ মিশনের মহাকাশচারীদের জন্য বিদায়ী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে তিনি জানান, আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রের অভিজ্ঞতায় পরিপূর্ণ হয়ে যাচ্ছেন। আর তিনি যা শিখেছেন, সেই অভিজ্ঞতা দেশবাসীর সঙ্গে ভাগ করে নেবেন। তাঁর কথায়, ‘এটা আমার কাছে মায়াবী মনে হচ্ছিল। আমার এই যাত্রাটা দুর্দান্ত কাটছে।’

    মহাকাশে ১৭ দিন, শুভাংশুদের জন্য ইসরোর কত খরচ

    মহাকাশে ১৭ দিনে শুভাংশু শুক্লা ৬০টিরও বেশি বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। ভারতের পক্ষ থেকে তিনি ৭টি বিশেষ পরীক্ষা করেছেন, যার মধ্যে ছিল— টার্ডিগ্রেডস, একটি ক্ষুদ্র জীব যা মহাকাশে কীভাবে বেঁচে থাকে এবং বংশবৃদ্ধি করে তা দেখার জন্য গবেষণা। মেথি ও মুগ চাষ, যা থেকে মহাকাশে খাদ্য উৎপাদনের সম্ভাবনা বাড়বে। সায়ানোব্যাকটেরিয়া, মহাশূন্যে অক্সিজেন ও জৈবজ্বালানির সম্ভাব্য উৎস খোঁজাও ছিল শুভাংশুর কাজ। মায়োজেনেসিস, মানুষের পেশীর উপর স্থানের সংস্পর্শের প্রভাব বোঝারও চেষ্টা করেন ভারতীয় মহাকাশচারী। বায়ুসেনার গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশুকে যে মহাকাশে পাঠানো হয়েছে, সেটার জন্য ইসরোর প্রায় ৫৫০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। আসলে কয়েক মাস পরেই ভারতের গগনযান মহাকাশে পাড়ি দেবে। তার আগে যাতে আরও নিখুঁতভাবে পরিকল্পনা করতে পারে ইসরো এবং গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু মহাকাশের পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারেন, সেটার জন্যই তাঁকে মহাকাশে পাঠানো হয়েছিল।

     

     

     

  • Shubhanshu Shukla: “আমি তোমাদের পথ দেখাব”, আইএসএস থেকে ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশে বার্তা শুভাংশুর

    Shubhanshu Shukla: “আমি তোমাদের পথ দেখাব”, আইএসএস থেকে ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশে বার্তা শুভাংশুর

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে মহাশূন্যের পরিবেশ ও জীবনের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিলেন ভারতীয় মহাকাশচারী শুভাংশু শুক্লা (Shubhanshu Shukla)। ‘অ্যাক্সিয়ম-৪’ মিশনের অংশ হিসেবে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে (ISS) গিয়েছেন শুভাংশু। সেখান থেকে মঙ্গলবার সরাসরি হ্যাম রেডিওর মাধ্যমে ইসরোর উত্তর-পূর্ব মহাকাশ প্রয়োগ কেন্দ্র (NESAC)-এর ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন। শুক্লা বলেন, “আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের পরিবেশ অনন্য। এখানে মাইক্রোগ্রাভিটি ও অতিরিক্ত রেডিয়েশনের কারণে সবকিছুই আলাদা।”

    ছাত্রছাত্রীদের অনুপ্রাণিত করলেন শুভাংশু

    আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্র থেকে ছাত্রদের মহাকাশচারী হওয়ার জন্য অনুপ্রাণিত করে শুভাংশু (Shubhanshu Shukla) বলেন, “আমি নিশ্চিত, ভারতের বহু ছাত্র ভবিষ্যতে মহাকাশচারী হবে। হয়তো তোমাদের মধ্যে কেউ প্রথম ভারতীয় হয়ে চাঁদের মাটিতে পা রাখবে। আমি ফিরে এসে তোমাদের সবাইকে পথ দেখাব।” তিনি আরও বলেন, “আমরা সকল সম্ভাব্য সমস্যার জন্য প্রশিক্ষিত হই। যেকোনো জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য আমাদের বিশেষভাবে প্রস্তুত করা হয়। এখানে সূর্যালোকের ওপর আমাদের দৈনন্দিন কাজ নির্ভর করে না।” মহাশূন্য যাত্রার শুরুর কিছু অসুবিধার কথাও অকপটে জানান শুক্লা। তাঁর কথায়, “শুরুতে কিছুটা স্পেস সিকনেস হয়েছিল, তবে তার জন্য ওষুধ রয়েছে”। তিনি আরও জানান, “আইএসএস-এ অনেক রোবোটিক্স ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) ব্যবহৃত হয়।”

    ছাত্রছাত্রীদের আগ্রহ বাড়ানোই লক্ষ্য

    এই আলাপচারিতার জন্য একটি বিশেষ টেলিব্রিজ স্থাপন করা হয়। এটি আয়োজন করে অ্যামেচার রেডিও অন ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন (ARISS)। এই কর্মসূচির মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে ছাত্রছাত্রীদের মহাকাশ, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ইঞ্জিনিয়ারিং ও গণিত বিষয়ে আগ্রহ বাড়ানোই লক্ষ্য। এর আগে ৪ জুলাই, শুভাংশু শুক্লা বেঙ্গালুরুর ইউ আর রাও স্যাটেলাইট সেন্টারে ছাত্রদের সঙ্গে এমনই একটি আলাপচারিতায় অংশ নেন। অনেক হ্যাম রেডিও উৎসাহী নির্ধারিত ফ্রিকোয়েন্সিতে যুক্ত হয়ে এই কথোপকথনে অংশগ্রহণ করেন। উল্লেখযোগ্যভাবে, হ্যাম রেডিও বা অ্যামেচার রেডিও একটি অলাভজনক রেডিও যোগাযোগ ব্যবস্থা, যা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা পরিচালনা করে থাকেন এবং এটি দুর্যোগকালীন সময়ে প্রচলিত যোগাযোগ ব্যবস্থা বিকল হলে বিকল্প মাধ্যম হিসেবে অত্যন্ত কার্যকর বলে বিবেচিত।

    ইসরো প্রধানের সঙ্গে কথা

    আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্র থেকে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর প্রধানের সঙ্গেও ফোনে কথা বললেন মহাকাশচারী শুভাংশু শুক্লা। সেখান থেকে ইসরো চেয়ারম্যান ড. ভি নারায়ণনের সঙ্গেও কথা বললেন তিনি। জানা গিয়েছে, এই টেলিফোনিক কথোপকথনের মূল বিষয় ছিল শুক্লার শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর এবং মিশনের অধীনে বর্তমানে যে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষাগুলি চলছে, তা নিয়ে আলোচনা। ইসরো চেয়ারম্যান এই সমস্ত পরীক্ষার প্রতিটি ধাপ নিখুঁতভাবে নথিভুক্ত করার উপর জোর দেন। তিনি জানান, এই গবেষণাগুলির ফলাফল আগামী দিনে ভারতের মহাকাশ অভিযান, বিশেষ করে গগনযান কর্মসূচির অগ্রগতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এই টেলিফোনিক কলে ছিলেন ইসরোর একাধিক শীর্ষ কর্মকর্তাও। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিক্রম সারাভাই স্পেস সেন্টারের ডিরেক্টর ড. উন্নিকৃষন নায়ার, লিকুইড প্রপালশন সিস্টেমস সেন্টারের ডিরেক্টর এম মোহন এবং ইসরো ইনশিয়াল সিস্টেমস ইউনিটের ডিরেক্টর পদ্মকুমার ই এস। তাঁরা শুভাংশুর সঙ্গে নানা বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা ও মিশনের নানা দিক নিয়ে আলোচনা করেন।

    পৃথিবীতে সূর্যোদয় কেমন দেখায়

    মহাকাশ থেকে ভারতে তাঁর মা-বাবা ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও ফোনে কথা বলেছিলেন শুভাংশু। মহাকাশের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়েছিলেন। মহাকাশ থেকে পৃথিবীতে সূর্যোদয় কেমন দেখায়, তা মা-কে ভিডিয়ো কল করে দেখান শুভাংশু। গত ২৬ জুন আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনের দিকে রওনা দিয়েছিলেন শুভাংশু ও তিন মহাকাশচারী। ১৪ দিনের মিশনে তাঁদের হাতে অনেক কাজ। ফসল উৎপাদন থেকে গবেষণা, বিভিন্ন কাজেই বিগত ৯ দিন ধরে ব্যস্ত তারা। যদি তাদের এই গবেষণা সফল হয়, তবে মহাকাশ অভিযানের ভবিষ্যৎ নিয়ে বড় দিক খুলে যেতে পারে। এর আগে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গেও কথা বলেছিলেন শুভাংশু। তখন তিনি জানিয়েছিলেন মহাকাশে এসে তাঁর প্রথম অনুভূতিই হয়েছিল যে মহাকাশ থেকে কোনও দেশের সীমান্ত দেখা যায় না। পৃথিবী এক। মহাকাশ থেকে ভারত মানচিত্রের থেকেও বেশি বড় দেখায়।

    কেমন দেখায় পৃথিবী

    অন্ধকারের মাঝে ঘন নীল রঙের একটি গোলক। উপরে ভাসছে পেঁজা তুলোর মতো মেঘ। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের জানলা থেকে এমনই দৃশ্যের ছবিও পাঠিয়েছেন ভারতীয় নভশ্চর শুভাংশু শুক্লা। এটাই নাকি পৃথিবী! সে ছবিতে অবশ্য দেশবিদেশের সীমারেখা, স্থল, সমুদ্র— কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। মহাকাশ থেকে নাকি এমনই দেখতে লাগে পৃথিবীকে। নাসার অ্যাক্সিয়ম-৪ অভিযানের গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু শুক্লা। তিনিই ভারতের প্রথম নভশ্চর, যিনি আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (আইএসএস)-এ পা রেখেছেন। শুভাংশু ভারতের ভবিষ্যতের ‘গগনযাত্রী’ও।

LinkedIn
Share