Category: Uncategorized

  • Bangladesh Election: ২০২৬ এপ্রিলে বাংলাদেশ নির্বাচনের ঘোষণা, রাজনৈতিক চাপে সময় কিনছেন ইউনূস?

    Bangladesh Election: ২০২৬ এপ্রিলে বাংলাদেশ নির্বাচনের ঘোষণা, রাজনৈতিক চাপে সময় কিনছেন ইউনূস?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: শুক্রবার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস (Md Yunus) জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। ওই ভাষণে তিনি ঘোষণা করেন যে, ২০২৬ সালের এপ্রিল মাসের শুরুতেই বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচন (Bangladesh Election) অনুষ্ঠিত হবে। উল্লেখযোগ্য যে, এর আগে বাংলাদেশের বিএনপি সহ প্রায় ৫০টি রাজনৈতিক দল ২০২৫ সালের ডিসেম্বরেই নির্বাচনের দাবি করেছিল। তবে বেশিরভাগ রাজনৈতিক দলের দাবিকে উপেক্ষা করলেন ইউনূস। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রাজনৈতিক চাপের কারণে আসলে এভাবেই সময় কিনতে চাইছেন ইউনূস। একারণেই ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের পরিবর্তে, ২০২৬ সালের এপ্রিলে নির্বাচন করানোর সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি।

    শর্ত সাপেক্ষে ছাত্রদের জাতীয় নাগরিক দলের সমর্থন ইউনূসের সিদ্ধান্তকে

    বাংলাদেশের অন্যতম সংবাদমাধ্যম প্রথম আলোয় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, ছাত্রদের জাতীয় নাগরিক দল (এনসিপি) ইউনূসের ২০২৬ এপ্রিলের নির্বাচনের ঘোষণাকে সমর্থন করেছে। তারা জানিয়েছে, জুলাই মাসের ঘোষণা ও অন্যান্য সংস্কারমূলক কর্মসূচি যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হলে এপ্রিলেই নির্বাচন হলে অসুবিধা নেই।

    ইউনূসের সিদ্ধান্ত নিয়ে কী বলছেন ঢাকার শিক্ষাবিদ (Bangladesh Election)

    তবে ইউনূস (Md Yunus) যখন এপ্রিলে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বলেন, তিনি কোনও নির্দিষ্ট দিনক্ষণ উল্লেখ করেননি। এনিয়েই ঢাকার বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ রেজাউল রহমান লেনিন এক ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, “বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, অচলাবস্থা এবং ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচনী আইন রয়েছে। এ কারণে মনে হয় না ইউনূস সরকার একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন (Bangladesh Election) পরিচালনা করতে পারবে।”

    বিশৃঙ্খল ও অনিশ্চয়তার পরিবেশেই ৮ মাস দেশ শাসন ইউনূসের

    উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের অগাস্ট মাসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতন হয়। জামাতদের ষড়যন্ত্রে দখল করা হয় গণভবন। দেশ ছাড়েন হাসিনা। আশ্রয় নেন ভারতে। এর পর মহম্মদ ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন (Bangladesh Election)। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই তাঁর সরকারকে ঘিরে নানা বিতর্ক দেখা গেছে। দেশে বেড়েছে রাজনৈতিক অস্থিরতা, বেকারত্ব এবং ভারত-বিরোধী কার্যকলাপ। সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর লাগামছাড়া অত্যাচারের কারণে মুখ পুড়েছে ইউনূস সরকারের। প্রায় ৮ মাস এই বিশৃঙ্খল ও অনিশ্চয়তার পরিবেশের মধ্যেই ইউনূস সরকার দেশ শাসন করছে।

    সংস্কারকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে ছাত্ররা

    ইউনূসের ঘোষণার আগে তাঁর উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা জানিয়েছিলেন যে, ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের জুন মাসের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। অন্যদিকে, বাংলাদেশে বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ছাত্রদের দল এনসিপি দাবি তুলেছে, নির্বাচন কমিশনকে যেন বিএনপির প্রভাব মুক্ত হয়। তারা সংস্কারকে অগ্রাধিকার দিতে চাইছে। এরপরে নির্বাচন করাতে চায় ছাত্ররা। অন্যদিকে, বিএনপি সমেত প্রায় ৫০টি রাজনৈতিক দল দ্রুত নির্বাচন চায়।

    বিএনপির তাড়াহুড়োর কারণ (Bangladesh Election)

    বিএনপির এত তাড়া কিসের? বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, শেখ হাসিনার দল আওয়ামি লিগ এখন দুর্বল অবস্থায় রয়েছে বাংলাদেশে। একটা সময়ে আওয়ামি লিগের প্রধান প্রতিপক্ষ ছিল বিএনপি। এই সুযোগ নিয়ে বিএনপি মসনদ দখল করতে চাইছে বাংলাদেশে। বিএনপির আশঙ্কা, সময় যত পেরিয়ে যাবে সেই সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে যেতে পারে।

    সেনাপ্রধান কী বলেছিলেন?

    এদিকে বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী গত ৫ জুন অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে নির্বাচন বিলম্ব করার অভিযোগ আনেন। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম দৈনিক যুগান্তরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুধু বিএনপি নয়, দেশের প্রায় ৫০টি রাজনৈতিক দল চলতি বছরের ডিসেম্বরেই নির্বাচন চাইছে। শুধু রাজনৈতিক দল নয়, বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামানও ডিসেম্বর মাসেই নির্বাচনের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছিলেন, একটি নির্বাচিত সরকারই নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণে সক্ষম।

    শীতকালে বাংলাদেশে নির্বাচন নিয়ে কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?

    সম্প্রতি মহম্মদ ইউনূস তাঁর উপদেষ্টা পরিষদকে জানিয়েছিলেন যে তিনি পদত্যাগের পরিকল্পনা করছেন। এতে দেশজুড়ে রাজনৈতিক চর্চা শুরু হয়। তবে পরে তিনি সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০২৫ সালের মধ্যেই একটি নির্বাচিত সরকার গঠন হওয়া প্রয়োজন। কারণ, বাংলাদেশে শীতকালই নির্বাচনের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। এপ্রিল মাসে কালবৈশাখী ঝড়-বৃষ্টি হয়। ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে পরীক্ষা চলে, ফলে শিক্ষকরাও ব্যস্ত থাকেন। রাজনৈতিক কর্মসূচিগুলিতেও লাগাম টানা হয়। তা সত্ত্বেও ইউনূস সরকার সরাসরি ঘোষণা করেছে যে নির্বাচন এপ্রিল মাসেই অনুষ্ঠিত হবে।

  • PM Modi: ‘মন কি বাতে’ অপারেশন সিঁদুর, মোদির গলায় ‘মেড ইন্ডিয়া’র প্রশস্তি

    PM Modi: ‘মন কি বাতে’ অপারেশন সিঁদুর, মোদির গলায় ‘মেড ইন্ডিয়া’র প্রশস্তি

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ‘অপারেশন সিঁদুরে’র পর এই প্রথম হল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (PM Modi) ‘মন কি বাতে’র (Mann Ki Baat) অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানেও প্রধানমন্ত্রীর গলায় শোনা গেল দেশীয় প্রযুক্তির প্রশস্তি। প্রত্যয়ী প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ভারতের তৈরি অস্ত্র, কৌশল এবং প্রযুক্তি ব্যবহার করেই এসেছে সাফল্য।” রবিবার ছিল ‘মন কি বাতে’র ১২২তম পর্বের সম্প্রচার। এদিন দেশবাসীর উদ্দেশে দেওয়া ‘মনের কথা’য় প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আজ সমগ্র দেশ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ, ক্রুদ্ধ এবং দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।”

    অপারেশন সিঁদুর (PM Modi)

    তিনি বলেন, “অপারেশন সিঁদুর কেবল একটি সামরিক অভিযান নয়, এটি ভারতের সংকল্প, সাহস এবং নবজাগরণের প্রতীক। এই অভিযানে ভারতীয় সেনাবাহিনীর অসামান্য বীরত্ব গোটা দেশবাসীকে গর্বিত করেছে এবং দেশজুড়ে তেরঙ্গা যাত্রা ও জনসমাবেশের মাধ্যমে এক অনন্য দেশাত্মবোধের আবহ তৈরি হয়েছে।” প্রধানমন্ত্রী বলেন, “দেশীয় অস্ত্রে সাফল্য এসেছে, যা আমাদের সকলকে গর্বিত করেছে। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ করেছে সমগ্র দেশকে। অপারেশন সিঁদুর পাল্টে যাওয়া ভারতের ছবি (Mann Ki Baat)।” তিনি বলেন, “এই অপারেশন বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের এক নয়া আত্মবিশ্বাসের সঞ্চার করেছে।” প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের বাহিনী নির্ভুলভাবে সীমান্তের ও পারে থাকা জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করেছে। এই অভিযান শুধু একটি সামরিক অভিযান নয়, বরং আমাদের সংকল্প, সাহস এবং পরিবর্তনশীল ভারতের একটি ছবি। এই ছবিই সমগ্র ভারতবাসীর দেশপ্রেমের অনুভূতিকে তেরঙ্গার রঙে রাঙিয়েছে।”

    ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’

    অপারেশন সিঁদুর যে আদতে ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’র শক্তির পরিচায়ক, এদিন তাও মনে করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “অপারেশন সিঁদুরে ব্যবহৃত বেশিরভাগ অস্ত্রশস্ত্র এই দেশের মাটিতেই তৈরি। আমাদের সেনার, ইঞ্জিনিয়রদের, টেকনিশিয়ানদের, এই দেশের রক্ত-ঘামের পরিচায়ক এই (PM Modi) সাফল্য।” প্রসঙ্গত, দক্ষিণ কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিরা বেছে বেছে হত্যা করে ২৭ জন হিন্দু পর্যটককে। তার পরেই পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে অপারেশন সিঁদুর চালায় ভারত। ওই দুই এলাকায় অন্তত ৯টি জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করে ভারতীয় সেনা। ঘটনার জেরে সীমান্তে বাড়ে উত্তেজনা। শুরু হয় গোলাবর্ষণ। পরে (Mann Ki Baat) পাকিস্তানের অনুরোধে যুদ্ধবিরতিতে সায় দেয় ভারত (PM Modi)।

  • Ramakrishna 353: “গোপীরা সর্বভূতে শ্রীকৃষ্ণ দর্শন করেছিল, তৃণ দেখে বলে, শ্রীকৃষ্ণকে স্পর্শ করে পৃথিবীর রোমাঞ্চ হয়েছে”

    Ramakrishna 353: “গোপীরা সর্বভূতে শ্রীকৃষ্ণ দর্শন করেছিল, তৃণ দেখে বলে, শ্রীকৃষ্ণকে স্পর্শ করে পৃথিবীর রোমাঞ্চ হয়েছে”

    দক্ষিণেশ্বরে ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ও ‘দেবী চৌধুরাণী’ পাঠ

    তৃতীয় পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৪, ২৭শে ডিসেম্বর
    ঈশ্বরদর্শনের উপায়—শ্রীমুখ-কথিত চরিতামৃত

    পূর্বকথা—ঠাকুরের ব্রহ্মজ্ঞানের অবস্থা ও সর্বভূতে ঈশ্বরদর্শন 

    “তাঁকে সর্বভূতে দর্শন (Ramakrishna) করতে লাগলুম। পূজা উঠে গেল! এই বেলগাছ! বেলপাতা তুলতে আসতুম! একদিন পাতা ছিঁড়তে গিয়ে আঁশ খানিকটা উঠে এল। দেখলাম গাছ চৈতন্যময়! মনে কষ্ট হল। দূর্বা তুলতে গিয়ে দেখি, আর-সেরকম করে তুলতে পারিনি। তখন রোখ করে তুলতে গেলুম।

    “আমি লেবু কাটতে পারি না। সেদিন অনেক কষ্টে, ‘জয় কালী’ বলে তাঁর সম্মুখে বলির মতো করে তবে কাটতে পেরেছিলুম। একদিন ফুল তুলতে গিয়ে দেখিয়ে দিলে,—গাছে ফুল ফুটে আছে, যেন সম্মুখে বিরাট—পূজা হয়ে গেছে—বিরাটের মাথায় ফুলের তোড়া! আর ফুল তোলা হল না (Kathamrita)!

    “তিনি মানুষ হয়েও লীলা করছেন। আমি দেখি, সাক্ষাৎ নারায়ণ। কাঠ ঘষতে ঘষতে আগুন বেরোয়, ভক্তির জোর থাকলে মানুষেতেই ঈশ্বর দর্শন (Ramakrishna) হয়। তেমন টোপ হলে বড় রুই কাতলা কপ্‌ করে খায়।

    প্রেমোন্মাদ হলে সর্বভূতে সাক্ষাৎকার হয়। গোপীরা সর্বভূতে শ্রীকৃষ্ণ দর্শন করেছিল। কৃষ্ণময় দেখেছিল। বলেছিল, আমি কৃষ্ণ! তখন উন্মাদ অবস্থা! গাছ দেখে বলে, এরা তপস্বী, শ্রীকৃষ্ণের ধ্যান করছে। তৃণ দেখে বলে, শ্রীকৃষ্ণকে স্পর্শ করে ওই দেখ পৃথিবীর রোমাঞ্চ হয়েছে।

    “পতিব্রতাধর্ম; স্বামী দেবতা। তা হবে না কেন? প্রতিমায় পূজা হয়, আর জীয়ন্ত মানুষে কি হয় না?”

    প্রতিমায় আবির্ভাব—মানুষে ঈশ্বরদর্শন (Ramakrishna) কখন? নিত্যসিদ্ধি ও সংসার

    “প্রতিমায় আবির্ভাব হতে গেলে তিনটি জিনিসের দরকার,—প্রথম পূজারীর ভক্তি, দ্বিতীয় প্রতিমা সুন্দর হওয়া চাই, তৃতীয় গৃহস্বামীর ভক্তি। বৈষ্ণবচরণ বলেছিল, শেষে নরলীলাতেই মনটি কুড়িয়ে আসে।

    “তবে একটি কথা একটি আছে(Kathamrita),—তাঁকে সাক্ষাৎকার না করলে এরূপ লীলাদর্শন হয় না। সাক্ষাৎকারের লক্ষণ কি জান? বালকস্বভাব হয়। কেন বালকস্বভাব হয়? ঈশ্বর নিজে বালকস্বভাব কি না! তাই যে তাঁকে দর্শন করে, তারও বালকস্বভাব হয়ে যায়।”

  • Ramakrishna 342: “প্রেম রজ্জুর স্বরূপ, প্রেম হলে ভক্তের কাছে ঈশ্বর বাঁধা পড়েন আর পালাতে পারেন না।”

    Ramakrishna 342: “প্রেম রজ্জুর স্বরূপ, প্রেম হলে ভক্তের কাছে ঈশ্বর বাঁধা পড়েন আর পালাতে পারেন না।”

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ প্রহ্লাদচরিত্রাভিনয় দর্শনে স্টার থিয়েটারে

    তৃতীয় পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৪, ১৪ই ডিসেম্বর
    ঈশ্বরদর্শনের উপায় — ব্যাকুলতা

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) গিরিশের প্রতি—তীব্র বৈরাগ্য হলে তাঁকে পাওয়া যায়। প্রাণ ব্যাকুল হওয়া চাই। শিষ্য গুরুকে জিজ্ঞাসা করেছিল, কেমন করে ভগবানকে পাব। গুরু বললেন, আমার সঙ্গে এসো,—এই বলে একটা পুকুরে লয়ে গিয়ে তাকে চুবিয়ে ধরলেন। খানিক পরে জল থেকে উঠিয়ে আনলেন ও বললেন, তোমার জলের ভিতর কিরকম হয়েছিল? শিষ্য বললে, প্রাণ আটুবাটু করছিল—যেন প্রাণ যায়! গুরু বললেন দেখ, এইরূপ ভগবানের জন্য যদি তোমার প্রাণ আটুবাটু করে তবেই তাঁকে লাভ করবে।

    “তাই বলি (Kathamrita), তিন টান একসঙ্গে হলে তবে তাঁকে লাভ করা যায়। বিষয়ীর বিষয়ের প্রতি টান, সতীর পতিতে টান, আর মায়ের সন্তানেতে টান—এই তিন ভালবাসা একসঙ্গে করে কেউ যদি ভগবানকে দিতে পারে তাহলে তৎক্ষণাৎ সাক্ষাৎকার হয়।

    “ডাক দেখি মন ডাকার মতো কেমন শ্যামা থাকতে পারে! তেমন ব্যাকুল হয়ে ডাকতে পারলে তাঁর দেখা দিতেই হবে।”

    জ্ঞানযোগ ও ভক্তিযোগের সমন্বয়—কলিকালে নারদীয় ভক্তি

    “সেদিন তোমায় যা বললুম ভক্তির (Ramakrishna) মানে কি—না কায়মনোবাক্যে তাঁর ভজনা। কায়,—অর্থাৎ হাতের দ্বারা তাঁর পূজা ও সেবা, পায়ে তাঁর স্থানে যাওয়া, কানে তাঁর ভাগবত শোনা, নামগুণকীর্তন শোনা, চক্ষে তাঁর বিগ্রহ দর্শন। মন—অর্থাৎ সর্বদা তাঁর ধ্যান-চিন্তা করা, তাঁর লীলা স্মমরণ-মনন করা। বাক্য—অর্থাৎ তাঁর স্তব-স্তুতি, তাঁর নামগুণকীর্তন—এই সব করা।

    “কলিতে নারদীয় ভক্তি—সর্বদা তাঁর নামগুণকীর্তন করা। যাদের সময় নাই, তারা যেন সন্ধ্যা-সকালে হাততালি দিয়ে একমনে হরিবোল হরিবোল বলে তাঁর ভজনা করে।

    “ভক্তির আমিতে অহংকার হয় না। অজ্ঞান করে না, বরং ঈশ্বরলাভ করিয়ে দেয়। এ ‘আমি’ আমির মধ্যে নয়। যেমন হিঞ্চে শাক শাকের মধ্যে নয়, অন্য শাকে অসুখ হয়, কিন্তু হিঞ্চে শাক খেলে পিত্তনাশ হয়, উলটে উপকার হয়, মিছরি মিষ্টের মধ্যে নয়, অন্য মিষ্ট খেলে অপকার হয়, মিছরি খেলে অম্বল নাশ (Kathamrita) হয়।

    “নিষ্ঠার পর ভক্তি। ভক্তি পাকলে ভাব হয়। ভাব ঘনীভূত হলে মহাভাব হয়। সর্বশেষে প্রেম।

    “প্রেম রজ্জুর স্বরূপ। প্রেম হলে ভক্তের কাছে ঈশ্বর বাঁধা পড়েন আর পালাতে পারেন না। সামান্য জীবের ভাব পর্যন্ত হয়। ঈশ্বরকোটি (Ramakrishna) না হলে মহাভাব প্রেম হয় না। চৈতন্যদেবের হয়েছিল।

  • Ramakrishna 339: “প্রহ্লাদকে দর্শন করিয়া ঠাকুর সস্নেহে ‘প্রহ্লাদ’ ‘প্রহ্লাদ’ এই কথা বলিতে বলিতে একেবারে সমাধিস্থ হইলেন”

    Ramakrishna 339: “প্রহ্লাদকে দর্শন করিয়া ঠাকুর সস্নেহে ‘প্রহ্লাদ’ ‘প্রহ্লাদ’ এই কথা বলিতে বলিতে একেবারে সমাধিস্থ হইলেন”

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ প্রহ্লাদচরিত্রাভিনয় দর্শনে স্টার থিয়েটারে

    প্রথম পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৪, ১৪ই ডিসেম্বর
    শ্রীরামকৃষ্ণ সমাধিমন্দিরে

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) আজ স্টার থিয়েটারে প্রহ্লাদচরিত্রের অভিনয় দেখিতে আসিয়াছেন। সঙ্গে মাস্টার, বাবুরাম ও নারায়ণ প্রভৃতি। স্টার থিয়েটার তখন বিডন স্ট্রীটে, এই রঙ্গমঞ্চে পরে এমারল্ড থিয়েটার ও ক্লাসিক থিয়েটারের অভিনয় সম্পন্ন হইত।

    আাজ রবিবার। ৩০শে অগ্রহায়ণ, কৃষ্ণা দ্বাদশী তিথি, ১৪ই ডিসেম্বর, ১৮৮৪ খ্রীষ্টাব্দ। শ্রীরামকৃষ্ণ একটি বক্সে উত্তরাস্য হইয়া বসিয়া আছেন। রঙ্গালয় আলোকাকীর্ণ। কাছে মাস্টার, বাবুরাম ও নারায়ণ বসিয়া আছেন। গিরিশ আসিয়াছেন। অভিনয় এখনও আরম্ভ হয় নাই। ঠাকুর গিরিশের সঙ্গে কথা কহিতেছেন (Kathamrita)।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (সহাস্যে)—বা! তুমি বেশ সব লিখছ!

    গিরিশ—মহাশয়, ধারণা কই, শুধু লিখে গেছি।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—না তোমার ধারণা আছে। সেই দিন তো তোমায় বললাম ভিতরে ভক্ত না থাকলে চালচিত্র আঁকা যায় না—

    “ধারণা চাই। কেশবের বাড়িতে নববৃন্দাবন নাটক দেখতে গিয়েছিলাম (Kathamrita)। দেখলাম, একজন ডিপুটি ৮০০ টাকা মাহিনা পায়, সকলে বললে, খুব পণ্ডিত, কিন্তু একটা ছেলে লয়ে ব্যতিব্যস্ত! ছেলেটি কিসে ভাল জায়গায় বসবে, কিসে অভিনয় দেখতে পাবে, এইজন্য ব্যাকুল! এদিকে ঈশ্বরীয় কথা হচ্ছে তা শুনবে না, ছেলে কেবল জিজ্ঞাসা করছে, বাবা এটা কি, বাবা ওটা কি?—তিনিও ছেলে লয়ে ব্যতিব্যস্ত। কেবল বই পড়েছে মাত্র কিন্তু ধারণা হয় নাই।”

    গিরিশ—মনে হয়, থিয়েটারগুলো আর করা কেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—না না ও থাক, ওতে লোকশিক্ষা হবে।

    অভিনয় আরম্ভ হয়েছে। প্রহ্লাদ পাঠশালে লেখাপড়া করিতে আসিয়াছেন। প্রহ্লাদকে দর্শন করিয়া ঠাকুর সস্নেহে ‘প্রহ্লাদ’ ‘প্রহ্লাদ’ এই কথা বলিতে বলিতে একেবারে সমাধিস্থ হইলেন।

    প্রহ্লাদকে হস্তীপদতলে দেখিয়া ঠাকুর কাঁদিতেছেন। অগ্নিকুণ্ডে যখন ফেলিয়া দিল তখনও ঠাকুর কাঁদিতেছেন।

    গোলোকে লক্ষ্মীনারায়ণ বসিয়া আছেন (Kathamrita)। নারায়ণ প্রহ্লাদের জন্য ভাবিতেছেন। সেই দৃশ্য দেখিয়া ঠাকুর আবার সমাধিস্থ হইলেন।

  • Ramakrishna 335: “সীতাকে দেখে এলুম, শুধু দেহটি পড়ে রয়েছে, মন-প্রাণ তোমার পায়ে সব সমর্পণ করেছেন”

    Ramakrishna 335: “সীতাকে দেখে এলুম, শুধু দেহটি পড়ে রয়েছে, মন-প্রাণ তোমার পায়ে সব সমর্পণ করেছেন”

    দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে ভক্তসঙ্গে শ্রীরামকৃষ্ণ

    চতুর্দশ পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৪, ৯ই-১০ই নভেম্বর
    সেবকসঙ্গে

    রাত ১০টা-১১টা হইল। ঠাকুর ছোট খাটটিতে তাকিয়া ঠেসান দিয়া বিশ্রাম করিতেছেন। মণি মেঝেতে বসিয়া আছেন। মণির সহিত ঠাকুর কথা কহিতেছেন। ঘরের দেওয়ালের কাছে সেই পিলসুজের উপর প্রদীপে আলো জ্বলিতেছে।

    ঠাকুর অহেতুক কৃপাসিন্ধু। মণির সেবা লইবেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—দেখ, আমার পাঞ্চটা কামড়াচ্ছে। একটু হাত বুলিয়া দাও তো।

    মণি ঠাকুরের পাদমূলে ছোট্ট খাটটির উপর বসিলেন ও কোলে তাঁহার পা দুখানি লইয়া আস্তে আস্তে হাত বুলাইতেছেন। ঠাকুর মাঝে মাঝে কথা কহিতেছেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (সহাস্যে)—আজ সব কেমন কথা হয়েছে (Kathamrita)?

    মণি—আজ্ঞা খুব ভাল।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (সহাস্যে)—আকবর বাদশাহের কেমন কথা হল?

    মণি—আজ্ঞা হাঁ।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—কি বলো দেখি?

    মণি—ফকির আকবর বাদশাহের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল। আকবর শা তখন নমাজ পড়ছিল। নমাজ পড়তে পড়তে ঈশ্বরের কাছে ধন-দৌলত চাচ্ছিল, তখন ফকির আস্তে আস্তে ঘর থেকে চলে যাবার উপক্রম করলে। পরে আকবর জিজ্ঞাসা করাতে বললে, যদি ভিক্ষা করতে হয় ভিখারীর কাছে কেন করব!

    শ্রীরামকৃষ্ণ—আর কি কি কথা হয়েছিল (Kathamrita)?

    মণি—সঞ্চয়ের কথা খুব হল।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—(সহাস্যে) — কি কি হল?

    মণি—চেষ্টা যতক্ষণ করতে হবে বোধ থাকে, ততক্ষণ চেষ্টা করতে হয়। সঞ্চয়ের কথা সিঁথিতে কেমন বলেছিলেন!

    শ্রীরামকৃষ্ণ—কি কথা?

    মণি—যে তাঁর উপর সব নির্ভর করে, তার ভার তিনি লন। নাবালকের যেমন অছি সব ভার নয়। আর-একটি কথা শুনেছিলাম যে, নিমন্ত্রণ বাড়িতে ছোট ছেলে নিজে বসবার জায়গা নিতে পারে না। তাকে খেতে কেউ বসিয়া দেয়।

    শ্রীরামকৃষ্ণ — না। ও হলো না, বাপে ছেলের হাত ধরে লয়ে গেলে সে ছেলে আর পড়ে না।

    মণি—আর আজ আপনি তিনরকম সাধুর কথা বলেছিলেন। উত্তম সাধু সে বসে খেতে পায়। আপনি ছোকরা সাধুটির কথা বললেন, মেয়েটির স্তন দেখে বলেছিল, বুকে ফোঁড়া হয়েছে কেন? আরও সব চমৎকার চমৎকার কথা বললেন, সব শেষের কথা।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (সহাস্যে)—কি কি কথা?

    মণি—সেই পম্পার কাকের কথা। রামনাম অহর্নিশ জপ করছে, তাই জলের কাছে যাচ্ছে কিন্তু খেতে পারছে না। আর সেই সাধুর পুঁথির কথা, — তাতে কেবল “ওঁ রামঞ্চঞ্চ এইটি লেখা। আর হনুমান রামকে যা বললেন —

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—কি বললেন?

    মণি—সীতাকে দেখে এলুম, শুধু দেহটি পড়ে রয়েছে, মন-প্রাণ তোমার পায়ে সব সমর্পণ করেছেন (Kathamrita)!

  • Ramakrishna 333: “রাত্রে একটু সুজির পায়েস ও একখানি কি দুখানি লুচি খান, ঠাকুর রামলালকে বলিতেছেন সুজি কি আছে?”

    Ramakrishna 333: “রাত্রে একটু সুজির পায়েস ও একখানি কি দুখানি লুচি খান, ঠাকুর রামলালকে বলিতেছেন সুজি কি আছে?”

    ত্রয়োদশ পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৪, ৯ই নভেম্বর
    ভক্তসঙ্গে সংকীর্তনানন্দে

    ভক্ত সঙ্গে–ভক্তকথাপ্রসঙ্গে 

    মণি এবং গোপালের আর যাওয়া হইল না, তাঁহারা আজ রাত্রে থাকিবেন। তাঁহারা ও আরও ২/১ জন ভক্ত মেঝেতে বসিয়া আছেন। কিয়ৎক্ষণ পরে ঠাকুর শ্রীযুক্ত রাম (Ramakrishna) চক্রবর্তীকে বলিতেছেন, “রাম, এখানে যে আর-একখানি পাপোশ ছিল। কোথায় গেল?”

    ঠাকুর (Ramakrishna) সমস্ত দিন অবসর পান নাই—একটু বিশ্রাম করিতে পান নাই। ভক্তদের ফেলিয়া কোথায় যাইবেন! এইবার একবার বর্হিদেশে যাইতেছেন। ঘরে ফিরিয়া আসিয়া দেখিলেন যে, মণি রামলালের নিকট গান লিখিয়া লইতেছেন (Kathamrita) —

    “তার তারিণি!
    এবার ত্বরিত করিয়ে তপন-তনয়-ত্রাসিত”—ইত্যাদি।

    ঠাকুর মণিকে জিজ্ঞাসা করিতেছেন, “কি লিখছো?” গানের কথা শুনিয়া বলিলেন, “এ যে বড় গান।”

    রাত্রে ঠাকুর একটু সুজির পায়েস ও একখানি কি দুখানি লুচি খান। ঠাকুর রামলালকে বলিতেছেন (Kathamrita), “সুজি কি আছে?”

    গান এক লাইন দু’লাইন লিখিয়া মণি লেখা বন্ধ করিলেন।

    ঠাকুর মেঝেতে আসনে বসিয়া সুজি খাইতেছেন।

    ঠাকুর (Ramakrishna) আবার ছোট খাটটিতে বসিলেন। মাস্টার খাটের পার্শ্বস্থিত পাপোশের উপর বসিয়া ঠাকুরের সহিত কথা কহিতেছেন। ঠাকুর নারায়ণের কথা বলিতে বলিতে ভাবযুক্ত হইতেছেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ—আজ নারায়ণকে দেখলুম।

    মাস্টার—আজ্ঞা হাঁ, চোখ ভেজা। মুখ দেখে কান্না পেল।

    শ্রীরামকৃষ্ণ—ওকে দেখলে যেন বাৎসল্য হয়। এখানে আসে বলে ওকে বাড়িতে মারে। ওর হয়ে বলে এমন কেউ নাই। ‘কুব্জা তোমায় কু বোঝায়। রাইপক্ষে বুঝায় এমন কেউ নাই।’

    মাস্টার (সহাস্যে) — হরিপদর বাড়িতে বই রেখে পলায়ন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) —ওটা ভাল করে নাই।

    ঠাকুর চুপ করিয়াছেন। কিয়ৎক্ষণ পরে কথা কহিতেছেন (Kathamrita)।

    শ্রীরামকৃষ্ণ—দেখ, ওর খুব সত্তা। তা না হলে কীর্তন শুনতে শুনতে আমায় টানে! ঘরের ভিতর আমার আসতে হল। কীর্তন ফেলে আসা—এ কখনও হয় নাই।

  • Ramakrishna 330: “রাগভক্তির কিন্তু পতন নাই! কাদের রাগভক্তি হয়? যাদের পূর্বজন্মে অনেক আছে অথবা যারা নিত্যসিদ্ধ”

    Ramakrishna 330: “রাগভক্তির কিন্তু পতন নাই! কাদের রাগভক্তি হয়? যাদের পূর্বজন্মে অনেক আছে অথবা যারা নিত্যসিদ্ধ”

    দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে ভক্তসঙ্গে শ্রীরামকৃষ্ণ

    একাদশ পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৪, ৯ই নভেম্বর
    স্ব-স্বরূপে থাকা কিরূপ—জ্ঞানযোগ বড় কঠিন

     

    শ্রীরামকৃষ্ণ ও ভক্তিযোগ—রাগভক্তি হলে ঈশ্বরলাভ 

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—রাগভক্তি এলে, অর্থাৎ ঈশ্বরে ভালবাসা এলে তবে তাঁকে পাওয়া যায়। বৈধীভক্তি হতেও যেমন যেতেও তেমন। এত জপ, এত ধ্যান করবে, এত যাগ-যজ্ঞ-হোম করবে, এই এই উপচারে পূজা করবে, পূজার সময় এই এই মন্ত্র পাঠ করবে—এই সকলের নাম বৈধীভক্তি। হতেও যেমন, যেতেও তেমন! কত লোকে বলে, আর ভাই, কত হবিষ্য করলুম, কতবার বাড়িতে পূজা আনলুম, কিন্তু কি হল (Kathamrita)?

    “রাগভক্তির কিন্তু পতন নাই! কাদের রাগভক্তি হয়? যাদের পূর্বজন্মে অনেক কাজ করা আছে। অথবা যারা নিত্যসিদ্ধ। যেমন একটা পোড়ো বাড়ির বনজঙ্গল কাটতে কাটতে নল-বসানো ফোয়ারা একটা পেয়ে গেল! মাটি-সুরকি ঢাকা ছিল; যাই সরিয়ে দিলে অমনি ফরফর করে জল উঠতে লাগল!

    “যাদের রাগভক্তি (Ramakrishna) তারা এমন কথা বলে না, ‘ভাই, কত হবিষ্য করলুম—কিন্তু কি হল!’ যারা নূতন চাষ করে তাদের যদি ফসল না হয়, জমি ছেড়ে দেয়। খানদানি চাষা ফসল হোক আর না হোক, আবার চাষ করবেই। তাদের বাপ-পিতামহ চাষাগিরি করে এসেছে, তারা জানে যে চাষ করেই খেতে হবে।

    “যাদের রাগভক্তি, তাদেরই আন্তরিক। ঈশ্বর তাদের ভার লন। হাসপাতালে নাম লেখালে — আরাম না হলে ডাক্তার ছাড়ে না।

    “ঈশ্বর (Ramakrishna) যাদের ধরে আছেন তাদের কোন ভয় নাই। মাঠের আলের উপর চলতে চলতে যে ছেলে বাপকে ধরে থাকে সে পড়লেও পড়তে পারে—যদি অন্যমনস্ক হয়ে হাত ছেড়ে দেয়। কিন্তু বাপ যে ছেলেকে ধরে থাকে সে পড়ে (Kathamrita) না।”

    “বিশ্বাসে কি না হতে পারে? যার ঠিক, তার সব তাতে বিশ্বাস হয়,—সাকার-নিরাকার, রাম, কৃষ্ণ, ভগবতী।

    “ও-দেশে যাবার সময় রাস্তায় ঝড়-বৃষ্টি এলো। মাঠের মাঝখানে আবার ডাকাতের ভয়। তখন সবই বললুম—রাম, কৃষ্ণ, ভগবতী; আবার বললুম, হনুমান! আচ্ছা সব বললুম—এর মানে কি?

  • Eggs: নিয়মিত ডিম খেলেই বাড়বে কোলেস্টেরল? হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন গবেষণা কী বলছে?

    Eggs: নিয়মিত ডিম খেলেই বাড়বে কোলেস্টেরল? হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন গবেষণা কী বলছে?

    মাধ্যম ডেস্ক: মধ্য বয়সের পরে হাড়ের ক্ষয় রোগ রুখতে কিংবা শিশুদের পেশি মজবুত করতে ডিমের (Eggs) পুষ্টিগুণ অপরিসীম। কিন্তু ডিম নিয়ে রয়েছে নানান রকমের ধারণা। অনেকেই মনে করেন, ভারতের মতো গরম প্রধান দেশে ডিম নিয়মিত খেলে হজমের গোলমাল হতে পারে। আবার অনেকেই মনে করেন ডিম খেলে দেহে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায়। তাই বয়স চল্লিশের চৌকাঠ পেরিয়ে গেলে অনেকেই ডিম খেতে চান না। কিন্তু ডিম নিয়ে এমন নানান ধারনা বদলে দিল হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন গবেষণা। ডিম নিয়ে গবেষণা করেছিলেন একদল চিকিৎসক-গবেষক। আর সেখানেই নানান নতুন তথ্য পাওয়া গেল।

    ডিম খেলে কি কোলেস্টেরল বাড়ে? (Harvard University) 

    বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অনেকেই কোলেস্টেরলের সমস্যায় ভোগেন। দেহে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায়। এর ফলে হৃদরোগের ঝুঁকিও বেড়ে যায়‌। তাই অনেকেই ডিম এড়িয়ে যেতে চান। সাম্প্রতিক ওই গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ডিমে ২১০ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল (Eggs) থাকে। মূলত এই কোলেস্টেরলের উৎস ডিমের কুসুম। চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, মানুষের শরীরে নিয়মিত ৩০০ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল স্বাভাবিক। তাই নিয়মিত ডিম খেলে কোলেস্টেরলের মাত্রা লাফিয়ে বাড়বে এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। তবে, কোলেস্টেরলের পরিমাণ খুব বেড়ে গেলে কুসুম বাদ দিয়ে নিয়মিত একটি ডিম খাওয়া যেতেই পারে‌। তাতে ডিমের পুষ্টিগুণ শরীর পায় আবার কোলেস্টেরলের মাত্রা ওঠানামার ঝুঁকিও সম্পূর্ণ এড়ানো যায়‌।

    গরমে নিয়মিত ডিম খাওয়া যেতে পারে? (Eggs)

    চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, ডিমে থাকে ভিটামিন বি-১২, ভিটামিন এ, ভিটামিন ডি। এছাড়াও থাকে পটাশিয়াম, সোডিয়াম, প্রোটিন এবং ফ্যাট। তাই শরীরের একাধিক পুষ্টির চাহিদা ডিম সহজেই পূরণ করে‌। নিয়মিত তাই ডিম খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকদের (Harvard University) একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, ডিম (Eggs) খেলে হজমের সমস্যা হবে, এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। ডিমে ৬ গ্রাম প্রোটিন থাকে। যা সহজেই হজম করা যেতে পারে। তাই যে কোনও মরশুমে ডিম খাওয়া যেতে পারে‌।

    নিয়মিত কতগুলো ডিম খাওয়া যেতে পারে?

    পুষ্টিবিদদের একাংশ জানাচ্ছেন, ডিম অত্যন্ত পুষ্টিকর খাবার (Eggs)। কিন্তু নিয়মিত খেলে একটা ডিম খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। বিশেষত মধ্য বয়সিদের নিয়মিত একটার বেশি ডিম খাওয়া উচিত নয় বলেই তাঁরা জানাচ্ছেন। তাঁরা বলছেন, ডিমে যথেষ্ট পরিমাণে ভিটামিন, ফ্যাট এবং প্রোটিন রয়েছে। কোলেস্টেরলের অন্যতম উৎস ডিম। তাই নিয়মিত একটি ডিম খেলে দেহের ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, প্রোটিনের চাহিদা মিটবে। কিন্তু বেশি পরিমাণে ডিম নিয়মিত খেলে নানান সমস্যা দেখা দিতে পারে। ওজন বেড়ে যাওয়া, রক্তচাপ ওঠানামা করা কিংবা কোলেস্টেরলের সমস্যাও হতে পারে। তবে শিশুরা দিনে দুটি ডিম খেতেই পারে। তাঁরা জানাচ্ছেন, শিশুদের প্রোটিনের চাহিদা বেশি থাকে। তাছাড়া তারা অনেক বেশি দৌড়াদৌড়ি করে। ফলে শরীরে বাড়তি এনার্জির প্রয়োজন হয়। তাই শিশুদের দুটি ডিম নিয়মিত দেওয়া যেতে পারে।

     

    DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

  • Ramakrishna 285: “শ্রীমতীর মহাভাব, গোপীপ্রেমে কোন কামনা নাই, ঠিক ভক্ত যে, সে কোন কামনা করে না”

    Ramakrishna 285: “শ্রীমতীর মহাভাব, গোপীপ্রেমে কোন কামনা নাই, ঠিক ভক্ত যে, সে কোন কামনা করে না”

    শ্রীরামকৃষ্ণ দক্ষিণেশ্বরে ভক্তসঙ্গে ও কলিকাতায় চৈতন্যলীলা-দর্শন

    প্রথম পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৪, ২১শে সেপ্টেম্বর

    রাখাল, নারাণ, নিত্যগোপাল ও ছোটগোপালের সংবাদ

    “তাদের সামনে বুঝি বাবুরামকে বললুম (Ramakrishna), নারাণের জন্য আর তোর জন্য এই সন্দেশগুলি রেখে দে। তারপর গণির মা ওরা সব বললে, মা গো, নৌকাভাড়ার জন্য যা করে! আমায় বললে যে আপনি নারাণকে বলুন যাতে বিয়ে করে। সে কথায় বললুম, ও-সব অদৃষ্টের কথা। ওতে কথা দেব কেন? সকলের হাস্য (Kathamrita)

    “ভাল করে পড়াশুনা করে না; তাই বললে, আপনি বলুন, যাতে ভাল করে পড়ে। আমি বললুম, পড়িস রে। তখন আবার বলে, একটু ভাল করে বলুন। (সকলের হাস্য)

    (চুনির প্রতি) “হ্যাঁ গা, গোপাল আসে না কেন?”

    চুনি—রক্ত আমেশা হয়েছে।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna),—ওষুধ খাচ্ছে?

    থিয়েটার ও বেশ্যার অভিনয়—পূর্বকথা—বেলুনদর্শন ও শ্রীকৃষ্ণের উদ্দীপন 

    ঠাকুর আজ কলিকাতায় স্টার থিয়েটারে চৈতন্যলীলা দেখিতে যাইবেন। স্টার থিয়েটারে তখন যেখানে অভিনয় হইত, আজকাল সেখানে কোহিনূর থিয়েটার। মহেন্দ্র মুখুজ্জের সঙ্গে তাঁহার গাড়ি করিয়া অভিনয় দেখিতে যাইবেন। কোন্‌খানে বসিলে ভাল দেখা যায়, সেই কথা হইতেছে। কেউ কেউ বললেন, একটাকার সিটে বসলে বেশ দেখা যায়। রাম বললেন, কেন, উনি বক্সে বসবেন।

    ঠাকুর হাসিতেছেন। কেহ কেহ বলিলেন, বেশ্যারা অভিনয় করে। চৈতন্যদেব, নিতাই এ-সব অভিনয় তারা করে।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (ভক্তদিগকে)—আমি তাদের মা আনন্দময়ী দেখব।

    “তারা চৈতন্যদেব সেজেছে, তা হলেই বা। শোলার আতা দেখলে সত্যকার আতার উদ্দীপন হয়।

    “একজন ভক্ত রাস্তায় যেতে যেতে দেখে, কতকগুলি বাবলাগাছ রয়েছে। দেখে ভক্তটি একেবারে ভাবাবিষ্ট। তার মনে হয়েছিল যে, ওই কাঠে শ্যামসুন্দর বাগানের কোদালের বেশ বাঁট হয়! অমনি শ্যামসুন্দরকে মনে পড়েছে! যখন গড়ের মাঠে বেলুন দেখতে আমায় নিয়ে গিয়েছিল, তখন একটি সাহেবের ছেলে একটা গাছে ঠেসান দিয়ে ত্রিভঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। দেখাও যা, অমনি কৃষ্ণের উদ্দীপন হল; অমনি সমাধিস্থ হয়ে গেলাম!

    “চৈতন্যদেব (Ramakrishna) মেড়গাঁ দিয়ে যাচ্ছিলেন! শুনলেন, গাঁয়ের মাটিতে খোল তৈয়ার হয়! যাই শোনা অমনি ভাবাবিষ্ট হয়ে গেলেন।

    “শ্রীমতী মেঘ কি ময়ূরের কণ্ঠ দেখলে আর স্থির থাকতে পারতেন না। শ্রীকৃষ্ণের উদ্দীপন হয়ে বাহ্যশূন্য হয়ে যেতেন (Kathamrita)।”

    ঠাকুর একটু চুপ করিয়া বসিয়া আছেন। কিয়ৎক্ষণ পরে আবার কথা কহিতেছেন—“শ্রীমতীর মহাভাব। গোপীপ্রেমে কোন কামনা নাই। ঠিক ভক্ত যে, সে কোন কামনা করে না। কেবল শুদ্ধাভক্তি প্রার্থনা করে; কোন শক্তি কি সিদ্ধাই কিছু চায় না।”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

LinkedIn
Share