Tag: Ahilyabai Holkar

Ahilyabai Holkar

  • Ahilyabai: ৩১ মে তাঁর জন্মদিন, নারী ক্ষমতায়ন ও সশক্তিকরণের প্রতীক লোকমাতা অহল্যা বাঈ

    Ahilyabai: ৩১ মে তাঁর জন্মদিন, নারী ক্ষমতায়ন ও সশক্তিকরণের প্রতীক লোকমাতা অহল্যা বাঈ

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ৩১ মে জন্মদিন লোকমাতা অহল্যা বাঈয়ের (Ahilyabai)। ৩০০ বছর আগে ১৭২৫ সালে আজকের দিনেই জন্ম নেন লোকমাতা অহল্যা বাঈ। সুশাসন, জনকল্যাণের কারণে তাঁর শাসন ব্যবস্থা ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করেছে। লোকমাতা অহল্যা বাঈয়ের শাসন ছিল ধর্মের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত। এভাবেই তাঁর রাজত্বে প্রতিধ্বনিত হত প্রাচীন ভারতীয় সভ্যতা। বিশেষজ্ঞদের মতে, তাঁর শাসনব্যবস্থা শুধুমাত্র একটি সুশাসন ছিল না, উপরন্ত একটি পবিত্র জনকল্যাণমূলক পরিষেবা ছিল। যার ভিত্তি ছিল প্রাচীন ভারতের আধ্যাত্মিকতা। প্রতিদিন ভোর ৪টেতে উঠতেন রানি। শৈব, বৈষ্ণব এই দুই মতে সারতেন পুজো। তারপর বসতেন নিজের দরবারে।

    আদর্শ রানি লোকমাতা অহল্যা বাঈ (Ahilyabai)

    নারী ক্ষমতায়নের দিক থেকে তিনি একটি আদর্শ উদাহরণ তৈরি করতে পেরেছিলেন তিনি। পাশ্চাত্যের সঙ্গে যদি ভারতীয় সভ্যতার তুলনা টানা হয় মধ্যযুগের নারী সশক্তিকরণের ক্ষেত্রে, সেখানে লোকমাতা অহল্যা বাঈ নয়া অধ্যায় লিখতে পেরেছিলেন। অহল্যা বাঈ হোলকার জন্মগ্রহণ করেন মহারাষ্ট্রের এক অখ্যাত গ্রাম নাম চন্ডীতে। জন্মের পরেই পারিবারিকভাবে তিনি ক্ষমতার অলিন্দে প্রবেশ করেননি। বর্তমান দিনের পাশ্চাত্যের যে আধুনিক ফেমিনিজম, সেটিকে দূরে সরিয়ে, বিপরীতে হেঁটে রানি পদে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলেন অহল্যা বাঈ।

    নারী ক্ষমতায়ন ও সশক্তিকরণের প্রতীক অহল্যা বাঈ (Ahilyabai)

    প্রাচীন ভারতে এবং মধ্যযুগে নারীদের নাকি কোনও ক্ষমতাই ছিল না এবং তাঁদেরকে নাকি পর্দা প্রথার মধ্যে থাকতে হত। প্রচলিত এই মিথ-কে একেবারেই ভেঙে তছনছ করে দিয়েছেন অহল্যা বাঈ। সুশাসন, জনকল্যাণ মূলক কাজ, মন্দির প্রতিষ্ঠা- এই সমস্ত কিছুর ভিত্তিতে তিনি দেখিয়ে গিয়েছেন যে মধ্যযুগেও এই ভারতবর্ষের নারী শক্তি কতটা এগিয়েছিল। একজন বিধবা নারী যাঁকে হয়তো ঘরের ভিতরেই থাকতে হত। কিন্তু তাঁর ভাগ্য, তাঁর জন্য অন্য কিছু পরিকল্পনা করেছিল। তাঁর শ্বশুর ছিলেন অত্যন্ত দেশপ্রেমিক মালহার হোলকার। তিনি ছিলেন মারাঠা সাম্রাজ্যের একজন অগ্রণী সেনা নায়ক। অহল্যা বাঈ তাঁর কাছ থেকেই শিক্ষা পেয়েছিলেন। প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন সুশাসনের এবং কূটনীতির। সামরিক অভিযানে স্বামীর মৃত্যুর পরে তিনি এবং তাঁর শ্বশুর মালহার, হোলকার সাম্রাজ্যকে নতুন ভাবে গড়ে তুলতে শুরু করেন।

    রাজধানী ছিল মাহেশ্বর (Ahilyabai)

    অহল্যা বাঈ হোলকারের রাজধানী ছিল মাহেশ্বর। এই জনপদকেই তিনি সংস্কৃতি, আধ্যাত্মিকতা এবং সুশাসনের কেন্দ্র ভূমিতে পরিণত করেন। তাঁর রাজত্বে ছিল সুবিচার, জনকল্যাণ ও অহিংসা- এই সমস্ত কিছুরই প্রাণকেন্দ্র। অহল্যা বাঈকে জানতে গেলে আগে বুঝতে হবে, তাঁর মাহেশ্বর সাম্রাজ্যকে। কীভাবে তিনি তাঁর এই রাজধানীকে গড়ে তুলেছিলেন নর্মদা নদীর ধারে। এটি পরিণত হয়েছিল একটি কর্মভূমিতে। যেখানে প্রাচীন ভারতীয় সভ্যতা প্রতিধ্বনিত হত। সহাবস্থান করত প্রাচীন ভারতীয় নৈতিকতা এবং আধ্যাত্মিকতা। তাঁর দরবারে ছিলেন বিদ্বান, জ্ঞানী, পণ্ডিত, শিল্পী, সাধু সন্তরা এবং কূটনীতিকরা।

    জনগণ তাঁর দরবারে আসতে উৎসাগহিতবোধ করত

    তাঁর প্রতিদিনকার শাসনের মধ্যে থাকত তন্ত্র চুক্তি এবং রাজধর্ম। এই দুই নীতির উপর ভিত্তি করেই তিনি রাজত্ব চালাতেন। যেটি তিনি অর্থশাস্ত্রের মতো গ্রন্থগুলি থেকে নিয়েছিলেন। রাজ্যের বিচার ব্যবস্থা এবং নাগরিকদের জীবনোন্নয়নের মানকে তিনি অনেক ওপরে তুলতে পেরেছিলেন। তাঁর দরবারে আসতে জনগণ উৎসাহিত বোধ করত। কারণ তারা জানত এখানেই মিলবে সুবিচার। এখানেই মিলবে সুশাসন। তিনি তাঁর মন্ত্রীদের বলতেন যে প্রত্যেকটি প্রশাসনিক পদক্ষেপে যেন নৈতিকতা এবং সুবিচারের আবরণ থাকে। অহল্যাবাঈ সাধারণ মানুষের সমস্যা সমাধানের জন্য প্রতিদিন গণ শুনানির ব্যবস্থা করতেন। তাঁর রাজ্যের আদালতের সিদ্ধান্তের প্রতি কারও আপত্তি থাকলে, অহল্যাবাঈ ব্যক্তিগতভাবে তাঁদের সমস্যার কথা শুনতেন।

    সংস্কারমূলক কাজ

    অহল্যা বাঈয়ের (Ahilyabai Holkar) শাসন সেই অষ্টাদশ শতাব্দীর সময়কার। যেসময়ে মুঘল সাম্রাজ্যের পতন হচ্ছে এবং ব্রিটিশরা ভারতবর্ষে প্রবেশ করছে। আফগান আক্রমণ হচ্ছে ও মারাঠা সাম্রাজ্য ভেঙে পড়ছে। সেই সময় তিনি নতুনভাবে এই ভারতবর্ষকে ঐক্যবদ্ধভাবে গাঁথার কাজ শুরু করেছিলেন। অহল্যা বাঈ হোলকার সাধু মহাত্মাদের জন্য আশ্রম তৈরি করে দিতেন। ভগ্ন মন্দির তিনি প্রতিষ্ঠা করতেন। যে মন্দিরগুলিকে ইসলামিক আক্রমণকারীরা বারবার হামলা করে ভেঙে দিয়ছিল। এর পাশাপাশি তিনি অনেক বাণিজ্য পথ তৈরি করেছিলেন, মধ্য ভারতের ওপর দিয়ে। অহল্যা বাঈয়ের আগে যেভাবে ভারতবর্ষ শাসন হয়েছে, সেখানে ইসলামিক আমলে মধ্যযুগের শুধুমাত্র ধ্বংস এবং হিংসার রাজনীতির দেখা দিয়েছে।

    আগ্রাসনে বিশ্বাস রাখতেন না

    দেশীয় রাজ্যগুলোর সঙ্গে তিনি কূটনৈতিকভাবে অত্যন্ত ভালো সম্পর্ক রেখে চলতেন। শুধু তাই নয়, সেখানে তিনি দূত নিয়োগও করতেন। তিনি কখনও আগ্রাসনকারীর ভূমিকা নেননি। পাশ্চাত্যের রাজনৈতিক তত্ত্বগুলিতে যে ধরনের কূটনীতি দেখা যায়, অহল্যা বাঈ হোলকার (Ahilyabai Holkar) সম্পূর্ণ তার বিপরীত পথে হেঁটেছিলেন এবং তাঁর কূটনীতিতে একেবারেই ব্রাত্য ছিল আগ্রাসন।

  • Rani Rashmoni: আজ রানি রাসমণির জন্মতিথি, অহল্যাবাঈয়ের সঙ্গে তাঁর মিল কোথায় জানেন?

    Rani Rashmoni: আজ রানি রাসমণির জন্মতিথি, অহল্যাবাঈয়ের সঙ্গে তাঁর মিল কোথায় জানেন?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আজ ১৯ ফেব্রুয়ারি, রানি রাসমণির (Rani Rashmoni) জন্মতিথি। হিন্দু ধর্ম সংরক্ষণ, সামাজিক সংস্কারের পক্ষে সওয়াল করা এবং ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ (Ahilyabai Holkar) গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রেখেছিলেন তিনি। তিনিই বাংলার অহল্যাবাঈ হোলকর নামে পরিচিত। সনাতন ধর্মের প্রতি তাঁর অবিচল শ্রদ্ধা এবং সমাজ ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে তাঁর ছিল গভীর অন্তর্দৃষ্টি।

    অহল্যাবাঈ হোলকর (Rani Rashmoni)

    এ বছর অহল্যাবাঈ হোলকরের ত্রিশততম জন্মবার্ষিকী। তাঁর সঙ্গে বহু বিষয়ে সাদৃশ্য রয়েছে রানি রাসমণির। এই দুই মহিয়সী নারীই হিন্দু ঐতিহ্যের রক্ষক, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়নের পথিকৃৎ ও প্রাতিষ্ঠানিক দানশীলতার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন। ১৭৯৩ সালে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনার কোণা গ্রামে জন্ম রাসমণির। তিনি ছিলেন প্রভাবশালী জমিদার, দক্ষ উদ্যোক্তা ও দূরদর্শী সমাজ সংস্কারক। তিনি ছিলেন দেবী কালীর ভক্ত। ১৮৫৫ সালে দক্ষিণেশ্বরে কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। হুগলি নদীর পূর্ব তীরে অবস্থিত এই মন্দির নিছকই একটি উপাসনাস্থল নয়, এটি ধীরে ধীরে পরিণত হয় আধ্যাত্মিক ও বৌদ্ধিক জাগরণের কেন্দ্রবিন্দুতে।

    রাসমণির প্রতিষ্ঠিত মন্দির

    রাসমণির প্রতিষ্ঠিত দক্ষিণেশ্বরের মন্দিরের দেবীর নাম ভবতারিণী। এই মন্দিরের প্রধান পুরোহিত ছিলেন শ্রী রামকৃষ্ণ। তাঁরই শিষ্য স্বামী বিবেকানন্দের আদর্শ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। মূলত তাঁরই প্রচেষ্টায় গঠিত হয় রামকৃষ্ণ মিশন। এই রামকৃষ্ণ মিশনের গভীর প্রভাব আজও বিদ্যমান। এই মিশন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মতো ব্যক্তিত্বদের আজও অনুপ্রাণিত করে চলেছে। এ থেকে এটাই প্রমাণিত হয় যে রাসমণির উত্তরাধিকার আজও আলোচনা ক্ষেত্রে সমান প্রাসঙ্গিক। রাসমণির কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা কেবল ভগবৎ ভক্তির প্রকাশ ছিল না, ছিল ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক প্রভাবের বিরুদ্ধে হিন্দু পরিচয়ের এক সুপরিকল্পিত ঘোষণা। এই মন্দির পরবর্তীকালে উদীয়মান জাতীয়তাবাদী চেতনার কেন্দ্রস্থল হয়ে ওঠে। এখানে ধর্মীয় পরিচয় আত্মশাসনের চেতনার সঙ্গে যুক্ত হয়। এটি ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের আদর্শ পূর্বসূরি হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

    রাসমণির অবদান

    রাসমণির অবদানগুলির (Rani Rashmoni) সঙ্গে মালবার মহিমান্বিত রানি পুণ্যশ্লোক অহল্যাবাঈ হোলকরের চেষ্টার বিষয়ে একটি সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায়। অহল্যাবাঈয়ের স্থাপত্য পৃষ্ঠপোষকতার ফলে কাশী বিশ্বনাথ মন্দির পুনর্নির্মাণ, চার ধাম, জ্যোতির্লিঙ্গ ও শক্তিপীঠগুলোর সংস্কার এবং অসংখ্য মন্দির ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সৃষ্টি হয়েছিল। একইভাবে, রানি রাসমণি গঙ্গার তীরে বাবুঘাট, আহিরীটোলা ঘাট ও নিমতলা ঘাট নির্মাণে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন। তিনি মেদিনীপুর থেকে পুরী পর্যন্ত এক বিস্তৃত তীর্থযাত্রার পথ নির্মাণে অর্থায়ন করেছিলেন (Ahilyabai Holkar)।

    দৃঢ়চেতা নারী

    এই দুই দৃঢ়চেতা নারীই বহিরাগত শাসকদের চাপিয়ে দেওয়া দমনমূলক নীতির বিরুদ্ধে প্রতিরোধের অসাধারণ ক্ষমতা প্রদর্শন করেছিলেন। রানি রাসমণি সাহসিকতার সঙ্গে ব্রিটিশ শাসনের বাণিজ্যিক কার্যকলাপে বাধা সৃষ্টি করেন। ফলে ব্রিটিশ প্রশাসন বাধ্য হয় জেলেদের ওপর ধার্য করা কর প্রত্যাহার করতে। ব্রিটিশরা হিন্দুদের ধর্মীয় শোভাযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। তীব্র প্রতিবাদ করেছিলেন রাসমণি। তার জেরে ব্রিটিশরা বাধ্য হয়েছিল হিন্দু ধর্মীয় শোভাযাত্রার অনুমতি দিতে। প্রায় একই ভূমিকা পালন করেছিলেন অহল্যাবাঈও। তিনিও অনুরূপ প্রতিরোধমূলক ভূমিকা পালন করেছিলেন। তিনি তাঁর শাসনব্যবস্থায় স্বদেশি শাসন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলিতে অর্থায়নের মাধ্যমে হিন্দু সার্বভৌমত্ব রক্ষা করেছিলেন। তা সত্ত্বেও সাম্রাজ্যবাদী শক্তির সঙ্গে আপোস করেননি তিনি।

    অহল্যাবাঈয়ের স্থাপত্য

    অহল্যাবাঈয়ের স্থাপত্য পৃষ্ঠপোষকতার ফলে কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের পুনর্নির্মাণ হয়েছিল। চার ধাম, জ্যোতির্লিঙ্গ এবং শক্তিপীঠের সংস্কারও করেছিলেন তিনি। দুই নারীই অসম সাহসী। ব্রিটিশদের আরোপিত শাসনকে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন তাঁরা। অহল্যাবাঈ তাঁর প্রশাসনে আদিবাসী শাসন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। হিন্দু সার্বভৌমত্ব রক্ষা করে সাম্রাজ্যবাদী শক্তির সঙ্গে জোট বাঁধার পরিবর্তে সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করেছিলেন তাঁরা।

    ধর্মীয় অবদান

    ধর্মীয় অবদানের পাশাপাশি (Rani Rashmoni) রাসমণি প্রগতিশীল সমাজ সংস্কারের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। তবে তার শিকড় ছিল গভীরভাবে প্রথাগত মূল্যবোধের মধ্যে প্রোথিত। তিনি বিধবা বিবাহ প্রচারের জন্য ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে সক্রিয়ভাবে সমর্থন করেছিলেন। বহুবিবাহ প্রথার বিরোধিতায় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কাছে একটি আবেদনপত্রও পাঠিয়েছিলেন। তাঁর দানশীলতা শিক্ষা ও জনকল্যাণ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। তিনি ইম্পেরিয়াল লাইব্রেরি (বর্তমানে জাতীয় গ্রন্থাগার) এবং হিন্দু কলেজ (Ahilyabai Holkar) (বর্তমানে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়)-এর মতো প্রতিষ্ঠানগুলিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিলেন। এই দুই প্রতিষ্ঠানই বাংলার বুদ্ধিবৃত্তিক নবজাগরণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। তাঁর অর্থনৈতিক দক্ষতা, তাঁর বিশাল জমিদারি পরিচালনার ক্ষমতার মাধ্যমেও প্রতিফলিত হয়েছিল। তিনি ঔপনিবেশিক প্রশাসনের দ্বারা সৃষ্ট আইনি ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলির মোকাবিলা করেছিলেন দক্ষতার সঙ্গে। এসবই তিনি করেছিলেন যাতে তাঁর সম্পদ জনগণের কল্যাণে ব্যবহৃত হয়। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় স্থাপনার জন্য জমি দান করে, তিনি সূক্ষ্মভাবে ব্রিটিশদের বাংলার হিন্দু ঐতিহ্য ক্ষুণ্ণ করার প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন।

    রাসমণির প্রভাব

    রানি রাসমণির প্রভাব তাঁর জীবদ্দশার অনেক পরে পর্যন্তও স্থায়ী ছিল। জানবাজারে তাঁর বার্ষিক দুর্গাপূজা উদযাপন ঐতিহ্যবাহী উৎসবের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছিল। এটিও পরোক্ষে ঔপনিবেশিক প্রভাবের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। সেখানে হিন্দু সাংস্কৃতিক অভিব্যক্তিকে দুর্বল করার চেষ্টা হয়েছিল। তিনি সচেতনভাবে দেশীয় বিনোদনের রূপ, যেমন যাত্রা মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে পৃষ্ঠপোষকতা করতেন। তিনি তৎকালীন অনেক জমিদারের মতো পাশ্চাত্যধর্মী উৎসবকে উৎসাহিত করেননি। এই সাংস্কৃতিক সার্বভৌমত্বের দাবি তাঁকে ঔপনিবেশিক বাংলার হিন্দু ঐতিহ্যের অন্যতম প্রধান রক্ষক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিল।

    রাসমণির উত্তরাধিকার

    রাসমণির উত্তরাধিকারের প্রতিধ্বনি সরকারিভাবে স্বীকৃতি পায় ১৯৯৪ সালে। যখন ভারত সরকার তাঁর সম্মানে একটি ডাকটিকিট প্রকাশ করে। তবে এই ধরনের প্রতীকী স্বীকৃতির পরেও, গত কয়েক দশকে বাংলার বৃহত্তর ধর্মীয় পরিচয় গভীর সংকটের মুখে পড়েছে। যে অঞ্চল একসময় শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভু, রামকৃষ্ণ পরমহংস এবং বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের মতো মহাপুরুষদের লালন করেছিল, সেখানেই (Rani Rashmoni) ধীরে ধীরে তার আধ্যাত্মিক ও জাতীয়তাবাদী চেতনার ক্ষয় পরিলক্ষিত হয়।

    অহল্যাবাঈ হোলকর ও রানি রাসমণি

    অহল্যাবাঈ হোলকর ও রানি রাসমণির ঐতিহাসিক বর্ণনাগুলি ধর্মীয় ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও উন্নয়নে নারীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রতিফলন ঘটায়। তাঁদের দৃঢ়তা, ভক্তি এবং রাজনৈতিক প্রজ্ঞা আধুনিক সমাজে প্রচলিত সেই ভুল ধারণাগুলিকে চ্যালেঞ্জ করে, যা হিন্দু রানি ও নারী নেতৃবৃন্দের প্রভাবকে উপেক্ষা করে। আধুনিকতার স্রোতে আমরা এগিয়ে চললেও, এমন অনন্য ব্যক্তিত্বদের জীবন থেকে অনুপ্রেরণা গ্রহণ করা আমাদের প্রয়োজন (Ahilyabai Holkar)। কারণ এঁরাই আধ্যাত্মিকতা, সামাজিক ন্যায়বিচার এবং শাসনব্যবস্থাকে দক্ষতার সঙ্গে একীভূত করেছিলেন।

    অহল্যাবাঈ হোলকরের ত্রিশততম জন্মবার্ষিকী উদযাপন রানি রাসমণির স্থায়ী উত্তরাধিকার পুনর্মূল্যায়নের এক উপযুক্ত সুযোগ এনে দেয়। পশ্চিমবঙ্গের ধর্মীয় গৌরব পুনরুদ্ধারের প্রতি আমাদের সচেতন করে তোলে। সাংস্কৃতিক গর্ব পুনরুদ্ধার, ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানগুলিকে পুনরুজ্জীবিত করা এবং এই অঞ্চলের হিন্দু ঐতিহ্যকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। রানি রাসমণির অবিচল (Ahilyabai Holkar) মনোবল আমাদের পথ দেখায়। তাঁর দেখানো পথে হাঁটলে বাংলা আবার তার ধর্মীয় শিকড়ে ফিরে গিয়ে আধ্যাত্মিক ও বৌদ্ধিক দুর্গ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারবে বলেও ধারণা ওয়াকিবহাল মহলের মতে (Rani Rashmoni)।

  • Ahmednagar: আহমেদনগর এখন থেকে অহল্যানগর, নয়া নামে সিলমোহর মহারাষ্ট্র মন্ত্রিসভার

    Ahmednagar: আহমেদনগর এখন থেকে অহল্যানগর, নয়া নামে সিলমোহর মহারাষ্ট্র মন্ত্রিসভার

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পশ্চিম মহারাষ্ট্রের আহমেদনগর (Ahmednagar) জেলার নাম পরিবর্তন করা হল। ১৮ শতাব্দীতে ইন্দোরের রানি ছিলেন অহল্যাদেবী হোলকার (Ahilya Devi Holkar)। তাঁর নামেই এই জেলার নামান্তর করে রাখা হচ্ছে অহল্যানগর (Ahilyanagar)। বুধবার মহারাষ্ট্রের মুখ্য়মন্ত্রী একনাথ শিন্ডে (Eknath Shinde) এই কথা জানান। এবার থেকে আহমেদনগর পরিচিত হবে অহল্যানগর নামে। অহল্যাদেবী হোলকারের ২৯৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানেই এই নয়া নামকরণের প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছিল।

    কেন এই নাম পরিবর্তন (Ahmednagar)

    মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে জানান, জেলার বাসিন্দাদের দাবি মেনে আহমেদনগরের (Ahmednagar) নাম পরিবর্তন করে অহল্যাদেবী হোলকর নগর করা হচ্ছে। তাঁর কথায়, ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ ও অহল্যাদেবী হোলকারের শাসনের আদর্শকে মাথায় রেখেই মহারাষ্ট্র এগিয়ে চলেছে। মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবীস বলেন, “যদি অহল্যাদেবী হোলকার না থাকতেন, তবে কাশী বিশ্বনাথ মন্দির থাকত না। তাই তাঁকে স্মরণ করে এই নয়া নামকরণ করা হল।” মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের দফতর থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করে সামাজিক মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে একটি পোস্ট করা হয়। সেখানে জানানো হয়, আহমেদনগরের (Ahmednagar) নাম ‘পুণ্যশ্লোক অহল্যাদেবী নগর’ করার বিষয়ে মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিয়েছে ৷  

    অহল্যাদেবী হোলকারের পরিচয়

    মারাঠা রানি ছিলেন অহল্যাদেবী। ইন্দোরের প্রায় সবটা জুড়ে তাঁর রাজত্ব ছিল। তাঁর স্বামী খান্দেররাও হোলকারের মৃত্যুর পর তিনি রাজ্য শাসন করেন। তিনি রাজধানী পরিবর্তন করেছিলেন। তিনি চৌন্ডিতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ইসলাম শাসকদের হাতে ধ্বংস হওয়া ভারতের শতাধিক হিন্দু মন্দিরের সংস্কার করেছিলেন তিনি। তাঁর সাহায্যেই কাশী বিশ্বনাথ মন্দির নতুন করে নির্মাণ করা হয়। 

    শিবাজির বিরুদ্ধে অভিযান 

    পুণে থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত আহমেদনগরের (Ahmednagar) নামকরণ করা হয়েছিল ১৫ শতাব্দীর শাসক আহমেদ নিজাম শাহের নাম থেকে। জানা যায়, জীবনের শেষলগ্নে মুঘল বাদশা আলমগীর ঔরঙ্গজেব দিল্লি ছেড়ে আহমেদনগরে এসে বসবাস শুরু করেন। ছত্রপতি শিবাজির বিরুদ্ধে একাধিক অভিযান চালিয়েছিলেন এখান থেকেই। ১৭০৭ দশকে আহমেদনগরে প্রয়াত হন ঔরঙ্গজেব। এই জেলাতেই তাঁর সমাধি রয়েছে।

    আরও পড়ুন: বিজেপিতে যোগ দিতে চলেছেন বারাকপুরের “বেতাজ বাদশা” অর্জুন সিং

    স্টেশনের নাম বদল

    এছাড়াও এদিন আরও কয়েকটি স্টেশনের নাম পরিবার্তন করা হয়। প্রস্তাব অনুযায়ী, কারি রোড স্টেশনের নাম পরিবর্তন করে হবে লালবাগ, স্যান্ডহার্স্ট রোড স্টেশনের নামকরণ করা হবে ডংরি, মেরিন লাইন স্টেশনের নাম মুম্বাদেবী, চার্নি রোড স্টেশনের নাম হবে গিরগাঁও, কটন গ্রিন স্টেশনের নাম হবে কালাচৌকি, ডকইয়ার্ড রোড স্টেশনের নাম মাজগাও এবং কিংস সার্কেল হবে তীর্থঙ্কর পরশনাথ। স্যান্ডহার্স্ট রোড স্টেশনটিকে দু’টি স্টেশন হিসাবে বিবেচনা করা হয়েছে ৷ কারণ, এটি সেন্ট্রাল এবং হারবার উভয় লাইনের সঙ্গে সংযুক্ত।

     

    দেশের খবরদশের খবরসব খবরসবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

LinkedIn
Share