Tag: Al Qaeda female leader

  • Gujarat ATS: বড় সাফল্য গুজরাট এটিএসের, বেঙ্গালুরু থেকে গ্রেফতার আল কায়দার মহিলা জঙ্গি

    Gujarat ATS: বড় সাফল্য গুজরাট এটিএসের, বেঙ্গালুরু থেকে গ্রেফতার আল কায়দার মহিলা জঙ্গি

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দেশে ছড়িয়ে থাকা আল-কায়দা (Al-Qaeda) জঙ্গি নেটওয়ার্ক এবং নাশকতার মডিউলকে উৎখাতের মামলায় বড়সড় সাফল্য পেল গুজরাট পুলিশের সন্ত্রাস দমন শাখা বা এটিএস (Gujarat ATS)। বেঙ্গালুরু থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে শামা পারভিন (Shama Parveen) নামে এক মহিলা জঙ্গিনেত্রীকে। গুজরাট এটিএসের তরফে জানানো হয়েছে, আল-কায়দা ইন ইন্ডিয়ান সাবকন্টিনেন্ট (AQIS)-এর সক্রিয় সদস্য এবং একাধিক জঙ্গি কার্যকলাপের মূল সংগঠক বছর তিরিশের এই মহিলা। তার মোবাইল থেকে একাধিক পাক আধিকারিক এবং জঙ্গি সংগঠনের নম্বর পাওয়া গিয়েছে।

    শামার গ্রেফতারির (Al Qaeda Leader Arrested) পর গুজরাট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হর্ষ সাংভি এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, শামা পারভিন অনলাইন জিহাদি প্রোপাগান্ডা এবং জঙ্গি কার্যকলাপ ছড়ানোর মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মকে উস্কে দেওয়ার কাজ করছিল। নিরাপত্তাবাহিনীর নজর এড়াতে ব্যবহার করা হত ভুয়ো সোশাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট। তাঁর দাবি, “গুজরাট পুলিশ ও এটিএস একটি অনলাইন জঙ্গি নেটওয়ার্ককে চিহ্নিত করে ভেঙে দিতে সক্ষম হয়েছে। এর ফলে ভারতে বড় ধরনের জঙ্গি হামলার ছক বানচাল হয়েছে।”

    কীভাবে মিলল শামা পারভিনের হদিশ?

    গুজরাট এটিএসকে উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা এএনআই-এর দাবি, গত ২৩ জুলাই আল কায়দার সঙ্গে যোগের সন্দেহে চার জনকে গ্রেফতার করেছিল এটিএস। দিল্লির মহম্মদ ফয়েক, আমেদাবাদের মহম্মদ ফারদিন, মোদাসার সাইফুল্লাহ কুরেশি এবং নয়ডার জিশান আলিকে গ্রেফতার করা হয়। তারা সকলেই নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে এসেছে। সকলেই কাজ করত রেস্তোরাঁ বা দোকানে। ধৃতদের জেরা করে পুলিশ জানতে পারে, সকলেই একে অপরের পরিচিত। সমাজমাধ্যমের সাহায্যে একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখত তারা। সোশ্যাল মিডিয়া এবং সন্দেহজনক অ্যাপের মাধ্যমে আল-কায়দার মতাদর্শ পাচার করত। তারা অটো-ডিলিট অ্যাপ ব্যবহার করে তাদের যোগাযোগের প্রমাণ মুছে ফেলত।

    কে এই জঙ্গিনেত্রী শামা পারভিন?

    ধৃতদের জেরা করেই শামা পারভিনের নাম উঠে আসে। পুলিশ জানতে পারে, এই চারজনের মধ্যে সমন্বয়কারী ও আহ্বায়কের ভূমিকা পালন করত শামা। এর পরই, গুজরাট পুলিশের একটি বিশেষ দল বেঙ্গালুরুতে পৌঁছে যায়। সেখানে মনোরমাপাল্যা এলাকার ভাড়া বাড়িতে হানা দেয় দলটি। সেখান থেকেই গ্রেফতার করা হয় ওই শামা পারভিনকে। গুজরাট পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, শামা পারভিন মূলত ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা। তবে গত তিন বছর ধরে সে বেঙ্গালুরুতে বসবাস করছিল। আগে একটি সংস্থায় কাজ করত। কিন্তু, বর্তমানে বেকার ছিল। তবে, সোশ্যাল মিডিয়ায় সারাক্ষণ অ্যাকটিভ থাকত। ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুক-সহ একাধিক সোশাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে অপপ্রচার ও নেটিজেনদের প্রভাবিত করার কাজ করত।

    ফোনে পাক আধিকারিক, জঙ্গিগোষ্ঠীর নম্বর!

    এটিএস জানিয়েছে, শামার মোবাইলে পাকিস্তানের বেশ কিছু পদস্থ আধিকারিকের নম্বর পাওয়া গিয়েছে। তাঁদের সঙ্গে শামা নিয়মিত যোগাযোগ রাখত বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে। এমনকী, সীমান্তের বাইরে বিভিন্ন জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল সামার, দাবি তদন্তকারীদের। পাশাপাশি, ধৃত ফরদিনের কাছ থেকে মৌলবাদী এবং নিষিদ্ধ সংগঠনের বিভিন্ন বইপত্র উদ্ধার করা হয়েছে। পাঁচ জনের এই গ্রুপ তাদের জাল ছড়িয়ে রেখেছিল গোটা ভারতে। অভিযোগ, ভিন্ন ভিন্ন ‘টার্গেট’ দেওয়া হত তাদের।

    এই মডিউলের কর্মপদ্ধতি ছিল আলাদা…

    তদন্তকারীদের দাবি, এই জঙ্গি মডিউলটি আগে চিহ্নিত নেটওয়ার্কগুলির থেকে আলাদা। এদের কোনও নির্দিষ্ট হামলার পরিকল্পনা বা সময়সীমা ছিল না, বরং অনলাইনে প্রোপাগান্ডার মাধ্যমে তরুণদের মগজধোলাই করে জিহাদি আদর্শে উদ্বুদ্ধ করাই ছিল মূল লক্ষ্য। তারা ইনস্টাগ্রামে পাঁচটি অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে ভিডিও ও পোস্টের মাধ্যমে দাবি করত—“জিহাদের জন্য বোমা নয়, একটা ধারালো ছুরিই যথেষ্ট।” এই মডিউল মূলত দেখাতে চেয়েছিল যে খুব সাধারণ অস্ত্র দিয়েও সহিংসতা ঘটানো সম্ভব এবং সন্ত্রাস ছড়ানো যায়।

    ঘুণাক্ষরেও টের পাননি প্রতিবেশীরা…

    শামাকে আদালতে পেশ করে ট্রানজিত রিমান্ড চায় গুজরাট পুলিশ। যা মঞ্জুর করে আদালত। ধৃতদের বিরুদ্ধে বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইনের একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। এ ছাড়া ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (বিএনএস)-র ১১৩, ১৫২, ১৯৬ এবং ৬১ ধারায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। শামা আল-কায়দার জঙ্গি এটা ভেবেই চোখ কপালে উঠেছে তার প্রতিবেশীদের। স্বাভাবিক ভাবে তাঁরা ঘুণাক্ষরেও টের পাননি যে সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের সঙ্গে কোনও যোগসূত্র থাকতে পারে বছর তিরিশের ছটফটে যুবতীর।

LinkedIn
Share