মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মঙ্গলবার নির্ধারিত দিনেই খসড়া তালিকা প্রকাশ করল নির্বাচন কমিশন। পশ্চিমবঙ্গের কত ভোটারের নাম প্রথম তালিকায় জায়গা পেল না, তা জানাতে খসড়া তালিকার আগে কমিশন নাম বাদের তালিকা প্রকাশ করেছে। কমিশন প্রদত্ত ওয়েবসাইট- ceowestbengal.wb.gov.in/asd_SIR –এ গেলেই দেখা যাচ্ছে নাম বাদের তালিকা। রাজ্যের প্রতিটি বিধানসভা এবং বুথভিত্তিক কত নাম বাদ পড়ল সেই সংক্রান্ত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে এই ‘বাদের খাতায়’। ওয়েবসাইটে ক্লিক করলেই ডাউনলোড করা যাচ্ছে সেই তালিকা।
কীভাবে দেখবেন?
প্রথমেই ক্লিক করে চলে যান এই ওয়েবসাইটে। তারপর আপনার চোখের সামনে ভেসে উঠবে তিনটি অপশন –
এপিক নম্বর সার্চ
বিধানসভা ভিত্তিক এএসডি তালিকা
বিএলও-বিএলএ-র তালিকা
এপিক নম্বর অপশনে ক্লিক করলে আপনাকে দিতে হবে আপনার ভোটার কার্ডে উল্লেখিত এপিক নম্বর। যদি আপনার নাম বাদ না যায়, তা হলে এই সার্চের পর কোনও কিছু পাবেন না। কিন্তু কোনও নাম বাদ গেলে, তা উঠে আসতে পারে।
সার্চ বাই এপিক নম্বরের পাশে রয়েছে নাম বাদের তালিকা অর্থাৎ বিধানসভা-ভিত্তিক এএসডি তালিকা। এই অপশনে ক্লিক করার পর ভোটারকে দু’টি তথ্য দিতে হবে। প্রথম জেলা, দ্বিতীয় তাঁর বিধানসভা কেন্দ্র। তারপর সেই অনুযায়ী চলে আসবে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের অধীনস্থ ভোটকেন্দ্রগুলি। তার পাশেই থাকবে ডাউনলোড অপশন। তাতে ক্লিক করলেই ভেসে উঠবে নাম বাদের তালিকা। সংশ্লিষ্ট ভোটকেন্দ্র থেকে কাদের নাম বাদ গেল, কেন বাদ গেল, সবটাই লেখা রয়েছে এই তালিকায়।
কতজন বাদ গেলেন?
নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুসারে, ৫৮ লক্ষ ২০ হাজার ৮৯৮ জনের নাম বাদ পড়েছে। এর মধ্যে মৃত ভোটারের নাম, ২৪ লক্ষ ১৬ হাজার ৮৫২। নিখোঁজ ভোটার ১২ লক্ষ ২০ হাজার ৩৮ জন। স্থানান্তরিত ভোটার ১৯ লক্ষ ৮৮ হাজার ৭৬ জন। ডুপ্লিকেট ভোটার ১ লক্ষ ৩৮ হাজার ৩২৮। অন্যান্য কারণে ৫৭ হাজার ৬০৪ নাম বাদ গিয়েছে। এছাড়া কমিশন জানাচ্ছে, ৩০ লক্ষ আনম্যাপড- তাদের শুনানিতে ডাকা হবে। এদের ২০০২-এ কারও সঙ্গে কোনও লিঙ্ক হয়নি।
নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুসারে, ১ কোটি ৬৭ লক্ষের মতো এরকম ভোটার ছিল, যাদের তথ্যগত কিছু অসঙ্গতি পাওয়া গিয়েছিল। নাম, বয়স, মা-বাবার সঙ্গে বয়সের ফারাক, একাধিক জনের সঙ্গে ম্যাপিং, এরকম নানা অসঙ্গতি পাওয়া গিয়েছিল। এদের হিয়ারিংয়ে ডাকা হতে পারে। সেক্ষেত্রে কাকে শুনানিতে ডাকা হবে, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন ইআরও। মঙ্গলবার থেকেই বিএলও-রা বাড়ি বাড়ি যাবেন। ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত শুনানি চলবে। সে সব পর্যালোচনা করা হবে। ১৪ ফেব্রুয়ারি তারিখে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। এছাড়া, আর যে ৩০ লক্ষের মতো ব্যক্তি আনম্যাপড, তাঁদেরও ইআরও, এইআরও হিয়ারিং পর্বে ডাকবেন।
শুনানির প্রস্তুতি শুরু কমিশনের
খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের পর এবার শুনানির প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে কমিশন। শুনানির জন্য বুথে বাধ্যতামূলকভাবে বসতে হবে বিএলও-দের। মঙ্গলবার থেকে ১৫ জানুয়ারি এক মাস বিএলও-দের বসতে হবে সংশ্লিষ্ট বুথে। জেলায় জেলায় স্কুলের রুম চেয়ে চিঠি জেলা নির্বাচনী আধিকারিকের চিঠি দিচ্ছে কমিশন। সেইসব স্কুলের রুমেই অভিযোগ বা আপত্তি বিএলও-কে জানাতে পারবেন ভোটাররা।
কমিশনের তরফে বলা হয়েছে, নাম না থাকলেও পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা হলে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এবার ডাকা হবে শুনানিতে। ফর্ম ৬ পূরণ করতে হবে। অনলাইনেই ওই ফর্ম পূরণ করতে পারবেন। অফলাইনেও জেলাশাসকের দফতর থেকেও সংগ্রহ করা যাবে ফর্ম ৬। খসড়া তালিকা প্রকাশ হওয়ার পর ৪ থেকে ৭ দিনের মধ্যে নোটিস যাবে নাম না থাকা ভোটারের কাছে। একদিনে অন্তত ১০০ জনের শুনানি হবে। প্রয়োজনে বাড়ানো হতে পারে সংখ্যাটা।
