মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তির দিনেই বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচনের (Bangladesh Election) ইঙ্গিত দিয়েছিলেন বাংলাদেশের (Bangladesh) অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস। রমজানের আগেই জাতীয় নির্বাচন সম্পন্ন হবে। তাই ইউনূসের ইচ্ছানুসারেই ঘোষণা হল নির্বাচনের নির্ঘণ্ট। তবে এই নির্বাচনের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছে বাংলাদেশ আওয়ামি লিগ। বৃহস্পতিবার বিকেলে বাংলাদেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসিরুদ্দিন ঘোষণা করেছেন, আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি একসঙ্গে জাতীয় সংসদের নির্বাচন এবং জুলাই সনদ নিয়ে গণভোট হবে। একই ভাবে নিষিদ্ধ করা আওয়ামি লিগ অংশ নিতে পারেব না বলে জানা গিয়েছে। এরপরেই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর দল এক বিবৃতি দিয়ে নির্বাচনী নির্ঘণ্ট প্রত্যাখান করার কথা ঘোষণা করেছে।
জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট (Bangladesh Election)
বাংলাদেশের প্রধান নির্বাচন কমিশন এএমএম নাসির উদ্দিন জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে বলেছেন, “আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে হবে গণভোট। এক দফাতেই আয়োজন হবে নির্বাচনের। এদিন নির্বাচন কমিশন জানিয়েছেন, ১২ ফেব্রুয়ারি নেওয়া হবে ভোট। সকাল সাতটা থেকে বিকেল চারটে পর্যন্ত চলবে ভোট গ্রহণ। নির্বাচনকে ঘিরে মনোনয়নের তারিখও জানিয়ে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। মনোনয়ন দাখিল পর্ব চলবে ২৯ ডিসেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত। কোনও প্রার্থীর মনোনয়ন গৃহীত হলে, কোনও প্রার্থীর প্রত্যহার হলে সেই তালিকা দেওয়া হবে ২০ জানুয়ারি। এরপর ২১ তারিখ দেওয়া হবে প্রতীক দেওয়ার কাজ। ২২ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে ভোট প্রচারের কাজ। তবে এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচনের দিনেই ঘোষণা হবে গণভোট। এটাও একটা ঐতিহাসিক ঘটনা। একদিকে নির্বাচনের (Bangladesh) জন্য থাকবে সাদা ব্যালট ওপর দিকে গণভোটের জন্য থাকবে গোলাপি ব্যালট।
‘‘খুনি-ফ্যাসিস্ট ইউনূস গ্যাংয়ের অবৈধ নির্বাচন’’
ইউনূস সরকারের আমলে নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামি লিগ একটি লিখিত বিবৃতি আকারে জানিয়েছে, “বাংলাদেশ (Bangladesh) আওয়ামি লিগ গভীর ভাবে অবৈধ দখলদার খুনি-ফ্যাসিস্ট ইউনূস গ্যাংয়ের অবৈধ নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ঘোষিত তফসিল পর্যবেক্ষণ করেছে। এটা সুস্পষ্ট ভাবে প্রমাণিত যে, বর্তমান দখলদার বাহিনী শতভাগ পক্ষপাতদুষ্ট এবং তাদের অধীনে সুষ্ঠ-স্বাভাবিক পরিবেশ স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা বজায় রেখে জনগণের মতমতের প্রতিফলন অসম্ভব। হাসিনার দলের অবশ্য দাবি, নির্বাচনে রাজনৈতিক ভাবেই লড়াই আর জনপ্রিয়তাই দলের মাপকাঠি। আওয়ামি লিগ দল নির্বাচনমুখী দল, জনগণের সামনে গিয়ে দাঁড়ানোর মতো শক্তি কোনও দলেরই নেই। আওয়ামি লিগের শক্তি, সাহস এবং সামর্থ রক্ষায় বিশেষভাবে সক্ষম। বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকে আমরা এখনও পর্যন্ত ১৩টি নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছি তাঁর মধ্যে ৯টিতে ব্যাপক ভাবে জয়ী হয়েছে।
রাজবন্দির নিঃশর্ত মুক্তি চাই
অন্তর্বর্তী সরকারে গভীর চক্রান্তে বাংলাদেশের (Bangladesh) নির্বাচন এখন একটি প্রহসনে পরিণত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযুদ্ধের প্রতি সহমর্মতা রয়েছে এমন রাজনৈতিক দল বা গোষ্ঠীর একটা বড় অংশকে ষড়যন্ত্র করে বাইরে রাখা হয়েছে। সমগ্র দেশ এবং জাতিকে একটা সঙ্কটের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। তাই হাসিনার দলের দাবি, বাংলাদেশ আওয়ামি লিগের উপর আরোপিত সকল নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে হবে। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা-সহ জাতীয় নেতৃবৃন্দ ও সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। সকল রাজবন্দির নিঃশর্ত মুক্তি চাই। বর্তমান বর্ণচোরা দখলদার সরকার বাদ দিয়ে নির্বাচনকালীন একটা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন করতে হবে।
ইউনূসের প্রতিক্রিয়া
অপর দিকে নির্বাচন এবং গণভোট ঘোষণার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, “এই নির্বাচনী নির্ঘণ্ট ঘোষণার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক অতিক্রম করল। ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের পর দেশ এখন যে নতুন পথে অগ্রসর হচ্ছে। বাংলাদেশের (Bangladesh) গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে। এই তফসিল ঘোষণার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক অতিক্রম করবে। আমি বিশ্বাস করি, নির্বাচন কমিশন তাদের সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করবে স্বাধীনভাবে, নিরপেক্ষভাবে এবং সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সঙ্গে।”






