Tag: bgbs

bgbs

  • BGBS: বিনিযোগের অঙ্কে ইচ্ছামতো শূন্য বসিয়ে শিল্পের গ্যাস বেলুন ওড়াচ্ছেন মমতা?

    BGBS: বিনিযোগের অঙ্কে ইচ্ছামতো শূন্য বসিয়ে শিল্পের গ্যাস বেলুন ওড়াচ্ছেন মমতা?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা অনুযায়ী, এবার বিজিবিএস (BGBS) সম্মেলন থেকে রাজ্যে বিনিয়োগের প্রস্তাব এসেছে ৩,৭৬,২৮৮ কোটি টাকার! এর আগে রাজ্যে ছ’টি ‘বিশ্ববঙ্গ শিল্প সম্মেলন’ করেছেন তিনি। ২০১৫ থেকে ২০২২, প্রতিবার এমনই গর্বের ঘোষণা করে জানিয়েছেন বিনিয়োগের প্রস্তাবের পরিমাণ। রাজ্য সরকারে তথ্য বলছে, গত ছ’টি সম্মেলনে রাজ্যে বিনিয়োগের প্রস্তাব এসেছে মোট ১৩ লক্ষ ৭২ হাজার ৩২৯ কোটি টাকার!

    কিন্তু বাস্তব কী? (BGBS)

    একই রাজ্য সরকারের অন্য আরেকটি রিপোর্ট আছে, যা তারা কেন্দ্র সরকারের কাছে পাঠায়। কেন্দ্রীয় সরকারের একটি মন্ত্রক “ডিপার্টমেন্ট অফ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পলিসি অ্যান্ড প্রোমোশন” সংক্ষেপে ‘ডিআইপিপি’। তাদের দায়িত্ব কোন রাজ্যে কত বিনিয়োগ প্রস্তাব এলো, কতগুলির বাস্তব রূপায়ন হল  তার হিসাব রাখা। এবং প্রকাশ করা। সেই ডিআইপিপি তার রিপোর্টে জানাচ্ছে, ২০১৫ থেকে ২০২২-এই সময়ে পশ্চিমবঙ্গে বিনিয়োগের লিখিত প্রস্তাব এসেছে মাত্র ৫৭ হাজার ১২৩ কোটি টাকার। অর্থাৎ বিশ্ববঙ্গ শিল্প সম্মেলনগুলিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষিত মোট প্রস্তাবের মাত্র ৪.১৬ শতাংশ। বুঝতেই পারা যাচ্ছে, বাস্তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণার মাত্র ৪.১৬% বিনিয়োগের প্রস্তাব এসেছে রাজ্যে। 

    বিগত শিল্প সম্মেলনগুলির আসল ছবি কী? (BGBS)

    ২০১৫ সালে রাজ্যের শিল্প উন্নয়ন নিগম জানাচ্ছে ৪০ হাজার ১৯৭ কোটি ২৫ লক্ষ টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাবের কথা। কিন্তু কেন্দ্রের নথি জানাচ্ছে, ওই বছর প্রস্তাব এসেছিল ১৭ হাজার ৬৬০ কোটি টাকার। ২০১৬ তে রাজ্যের শিল্প উন্নয়ন নিগম এবং কেন্দ্র সরকারের ডিআইপিপি’র রিপোর্ট মোতাবেক বিনিয়োগ প্রস্তাব যথাক্রমে ২,৫০,২৫৩ কোটি ৭৪ লক্ষ এবং ৫২০৪ কোটি টাকার। ২০১৭ সালে রাজ্যের শিল্প উন্নয়ন নিগম এবং কেন্দ্র সরকারের ডিআইপিপি’র তথ্যে বিনিয়োগ প্রস্তাব যথাক্রমে ২,৩৫,২৯০ কোটি ৩ লক্ষ এবং ৪০৭৪ কোটি টাকার। ২০১৮ সালের তুলনামূলক তথ্য হল এইরকম-বিনিয়োগ প্রস্তাব রাজ্যের শিল্প উন্নয়ন নিগমের হিসাবে ২,১৯,৯২৫ কোটি টাকা এবং কেন্দ্র সরকারের ডিআইপিপি’র হিসাবে ৪৭২২ কোটি টাকার। ২০১৯ সালের তথ্য হল-রাজ্যের শিল্প উন্নয়ন নিগম ২,৮৪,২৮৮ কোটি টাকা এবং কেন্দ্র সরকারের ডিআইপিপি’র হিসাবে বিনিয়োগ প্রস্তাব (BGBS) ৫৮৪৪ কোটি টাকার। ২০২২ সালে রাজ্যের শিল্প উন্নয়ন নিগম এবং কেন্দ্র সরকারের ডিআইপিপি দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিনিয়োগ প্রস্তাব যথাক্রমে ৩, ৪২,৩৭৫ কোটি টাকা এবং ৪৫৩২ কোটি টাকা। মাঝে করোনার জন্য দু’বছর এই বিশ্ববঙ্গ শিল্প সম্মেলন করা যায়নি। ফলে শিল্প সম্মেলনের নামে কোটি কোটি টাকা অপচয়ের হাত থেকে বেঁচেছিল রাজ্যের সরকার। কিন্তু রাজ্যে বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছিল। ডিআইপিপি জানাচ্ছে, ২০২০ এবং ২০২১ সালে রাজ্যে বিনিয়োগের প্রস্তাব এসেছে যথাক্রমে ৯৫৫২ কোটি টাকা এবং ৫৫৩৫ কোটি টাকার।

    শিল্প সম্মেলনের গ্যাস বেলুন? (BGBS)

    তবে মনে রাখতে হবে, এই সবগুলোই প্রস্তাব। শিল্প স্থাপন নয়। বাস্তবায়নের হিসাব দেখলে এর পরিমাণ আরও অনেকটাই কম (BGBS)। কারণ, প্রস্তাবকে প্রকল্পে রূপায়িত করতে ন্যূনতম যে কাজগুলি একটা রাজ্যের সরকারকে করতে হয়, তার কিছুই এই রাজ্যের শিল্পমন্ত্রীরা করেননি। বরং শিল্প-কর্মসংস্থান নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নিজস্ব স্টাইলে ঢক্কা-নিনাদ চালিয়ে গেছেন (BGBS) এবং যে কোনও সংখ্যার ডানদিকে শূন্য, শূন্য বসিয়ে শিল্প সম্মেলনের গ্যাস বেলুন ফুলিয়েছেন আর দেখিয়ে গেছেন রাজ্যবাসীকে। এবারও রাজ্যের সব বড় সংবাদপত্রে প্রায় পাতাজোড়া বিজ্ঞাপনের ছবিতে দাবি, রাজ্যে বিনিয়োগ প্রস্তাব ৩ লক্ষ ৭৬ হাজার ২৮৮ কোটি টাকার। কিন্তু ভিতরটা যে আক্ষরিক অর্থেই কঙ্কালসার, তা ওইসব তথ্য এবং পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট। 

    স্বাভাবিক কারণেই রাজ্যের মানুষ প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন, আর কতদিন তাঁদের সঙ্গে এই প্রবঞ্চনা চলবে?! 

     

    দেশের খবরদশের খবরসব খবরসবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।    

  • BGBS: শুরু হয়েছে ‘কুমিরছানা’ বিজনেস সামিট! এবারও কি কোটি কোটি টাকা কার্যত জলেই যাবে?

    BGBS: শুরু হয়েছে ‘কুমিরছানা’ বিজনেস সামিট! এবারও কি কোটি কোটি টাকা কার্যত জলেই যাবে?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতার মসনদে রয়েছেন নয় নয় করে ১২ বছর হয়ে গেল। সময়টা নেহাত কম নয়। শিল্প আনার নাম করে এই ক’বছরে তিনি ছ-ছটি বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিট করে এলাহি আয়োজনের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা খরচ করে ফেলেছেন। বিজিবিএসের (BGBS) সপ্তম এডিশন শুরু হয়েছে কলকাতায়, চলবে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত। উল্লেখ্য, শেষ শিল্প সম্মেলনের প্রাপ্তি হিসেবে রাজ্য সরকার জানিয়েছিল, মউ, লেটার অফ ইনটেন্টস (এলওআই) এবং এক্সপ্রেশনস অফ ইন্টারেস্ট (ইওআই) যা এসেছে, তার সংখ্যা ১৩৭, বিনিয়োগ প্রস্তাবের পরিমাণ ৩ লক্ষ ৪২ হাজার ৩৭৫ কোটি টাকা। এই পরিমাণ বিনিয়োগ থেকে চাকরি হতে পারে ৪০ লক্ষের। যদিও এই সময়ের মধ্যে কী হয়েছে, তা জানার সৌভাগ্য বাংলার মানুষের হয়নি। বড় কোনও শিল্প হয়েছে, তা দেখারও ভাগ্য কারও হয়নি।

    রোজগারের আশায় ভিন রাজ্যে

    বাস্তব ঘটনা হল, কী হতে চলেছে, তা ঢাকঢোল পিটিয়ে ঘোষণা করা হয়। অন্যদিকে বাংলার মানুষ জানেনই না, এরপর রাজ্যে সত্যিকারের কত শিল্প এসেছে, বাস্তবে কত শত কোটি টাকার বিনিয়োগ হয়েছে, আর প্রকৃতপক্ষে কতজন চাকরি পেয়েছেন। কিন্তু এটা জানেন, অনাহারে থাকতে থাকতে হতাশার শেষ পর্যায়ে পৌঁছে লক্ষ লক্ষ মানুষ কীভাবে বিপদের ঝুঁকি নিয়ে একটু রোজগারের আশায় ভিন রাজ্যে পাড়ি দিচ্ছেন। ২ জুন ওড়িশার সেই ভয়ঙ্কর ট্রেন দুর্ঘটনার কথা কারোরই মন থেকে মুছে যায়নি। যে সব প্রাণ অকালে ঝরে গিয়েছিল, তাঁর মধ্যে এই রাজ্যেরই ছিলেন ১০৩ জন, যাঁরা একটু কাজের আশায় দক্ষিণের রাজ্যে পাড়ি দিচ্ছিলেন। মিজোরামের আইজলের সেই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার কথা নিশ্চই কেউ ভুলে যাননি। নির্মীয়মাণ রেল ব্রিজের কাজ করতে গিয়ে অকালে ঝরে গিয়েছিল ২৩টি প্রাণ, যারা সকলেই এই রাজ্যেরই মালদার বাসিন্দা। এইসব ঘটনাই বলে দিচ্ছে, রাজ্যে চাকরির পরিস্থিতি কতখানি সঙ্গিন।

    বিজনেস সামিটেও (BGBS) মিথ্যাচার?

    বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিট নিয়ে রাজ্যের বিরুদ্ধে তথ্যে মিথ্যাচারেরও অভিযোগ উঠেছে আগেই। রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের প্রশ্নের উত্তরে সেই সময় রাজ্যের অর্থ এবং শিল্পমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়েছিলেন, ২০১৫ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে ৫টি বিজিবিএসে (BGBS) মোট বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছিল ১২.৩২ লক্ষ কোটি টাকা। এর মধ্যে কার্যকর হয়েছে অর্ধেক, ৬.২ লক্ষ কোটি টাকা। কিন্তু ভারত সরকারের শিল্প-বাণিজ্য মন্ত্রকের অধীন ডিপার্টমেন্ট অফ প্রমোশন অফ ইন্ডাস্ট্রি অ্যান্ড ইন্টারন্যাল ট্রেড (ডিপিআইআইটি) থেকে পাওয়া তথ্যে ব্যাপক গরমিল ধরা পড়েছে। সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ওই ৫ বছরে রাজ্য বিনিয়োগ প্রস্তাব পেয়েছে ৩৭ হাজার ৫১ কোটি টাকার, যার মধ্যে ১৫ হাজার ৬২৫ কোটি টাকার প্রকল্প কার্যকর হয়েছে, যা রাজ্য সরকার যা দাবি করেছে, সেই বিনিযোগ প্রস্তাবের মাত্র ২.৫ শতাংশ।

    উৎপাদন, আয় সবই কমছে

    এবার দেখা যাক, অমিত শাহ ২০২০ সালে কী বলেছিলেন, যা শুনে মমতা তেলেবেগুনে জ্বলে উঠেছিলেন। অমিত শাহ তথ্য দিয়ে বলেছিলেন, স্বাধীনতার সময় দেশের মোট শিল্প উৎপাদনে বাংলার অংশ ছিল ৩০ শতাংশ। কিন্তু তা নেমে এসেছে মাত্র ৩.৫ শতাংশে। অমিত শাহ আরও জানিয়েছিলেন, ১৯৬০ সালে বাংলার জনপ্রতি আয় ছিল মহারাষ্ট্রের ১০৫ শতাংশ। কিন্তু সেটাও কমে হয়ে গেছে অর্ধেক।

    সিঙ্গুরের ক্ষত মোছার নয়

    কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক তাই সাফ বলেছেন, এইসব করে কোটি কোটি টাকা খরচই হবে, কোনও নতুন শিল্প আসবে না। বরং বড় বড় শিল্প বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। দার্জিলিং যেমন সুইৎজারল্যান্ড হয়নি, তেমনই মমতার স্পেন সফরে শিল্পের বন্ধ্যা দশা আদৌ কাটবে না। কাজে আসবে না এইসব বিজনেস সামিট। তার জন্য দরকার পরিকাঠামো, সুস্থ রাজনৈতিক পরিবেশ। সে সব কোথায় পশ্চিমবঙ্গে? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০০৭ সালে যে সিঙ্গুর আন্দোলনের ওপর ভর করে ক্ষমতায় এসেছিলেন, সেটাই এখন হয়ে গেছে ব্যুমেরাং। এখন তিনি সেই খতে প্রলেপ দিতে যতই বিদেশ ঘুরুন, যতই বিজিবিএস (BGBS) করুন, যে ব্ল্যাক স্পট তাঁর সরকারের গায়ে লেগে গিয়েছে, তা আর মোছার নয়। ফলে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মমতার স্পেন সফর ছিল নেহাতই প্রমোদ-ভ্রমণ এবং পুরোপুরি রাজনৈতিক সফর, এর সঙ্গে শিল্পের কোনও সম্পর্ক নেই। কতদিন তিনি এইভাবে কুমিরছানা দেখিয়ে রাজ্যবাসীকে বোকা বানিয়ে রাখবেন, সেটাই সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তার বিষয়।

     

    দেশের খবরদশের খবরসব খবরসবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

LinkedIn
Share