Tag: breast cancer unhealthy lifestyle

  • Breast Cancer: প্রতি আট মিনিটে একজনের মৃত্যু! বাড়তি ওজন আর অনিয়মিত জীবনযাপনে বাড়ছে স্তন ক্যান্সারের বিপদ?

    Breast Cancer: প্রতি আট মিনিটে একজনের মৃত্যু! বাড়তি ওজন আর অনিয়মিত জীবনযাপনে বাড়ছে স্তন ক্যান্সারের বিপদ?

    তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল

     

    ভারতীয় মহিলাদের ক‌্যান্সার আক্রান্তের সংখ্যার নিরিখে, তালিকায় প্রথম দিকেই রয়েছে স্তন ক্যান্সার (Breast Cancer)। এক দশক আগেও চল্লিশ পেরিয়ে বহু মহিলা স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হতেন। দেরিতে চিকিৎসা শুরু করার জেরে বিপদ‌ বাড়ত। কিন্তু গত এক দশকে বদলে গিয়েছে পরিস্থিতি। তাই উদ্বেগ আরও বাড়ছে। এমনটাই জানাচ্ছেন চিকিৎসকদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, স্তন ক্যান্সার নিয়ে আরও সচেতনতা এবং সতর্কতা না বাড়লে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।

    কী বলছে নতুন তথ্য?

    কেন্দ্রের স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, ভারতীয় ক্যান্সার (Breast Cancer) আক্রান্ত মহিলাদের ২৯ শতাংশ স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। প্রতি চার মিনিটে ভারতে একজন মহিলা স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে। প্রতি আট মিনিটে একজন স্তন ক্যান্সার আক্রান্ত মহিলা মারা যান। প্রতি বছর ৯০ হাজার মানুষ স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।এই তথ্য যথেষ্ট উদ্বেগজনক বলেই জানাচ্ছেন চিকিৎসকদের একাংশ। এ দেশে স্তন ক্যান্সারের সুচিকিৎসা রয়েছে। কিন্তু তারপরেও প্রতি বছর এই মৃত্যু হার জানান দিচ্ছে এই রোগ নিয়ে সচেতনা তলানিতে। তাই রোগ নির্ণয়ে অনেকটা দেরি হয়ে যায়। ফলে চিকিৎসা দেরিতে শুরু হয়। তার জেরেই পরিস্থিতি আরও জটিল হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট মহল সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২১ সালের একাধিক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, তরুণ প্রজন্মের মধ্যে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। বয়স ২৫ কিংবা ৩০ হলেও এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। গত তিন-চার বছরে তিরিশের চৌকাঠ পেরনোর আগেই স্তন ক্যান্সারে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। যা যথেষ্ট উদ্বেগজনক বলেই জানাচ্ছেন ক্যান্সার বিশেষজ্ঞদের একাংশ।

    কেন বাড়ছে এই‌ রোগের দাপট?

    ক্যান্সার বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, দেশ জুড়ে মহিলাদের স্তন ক্যান্সারের (Breast Cancer) দাপট বাড়ার অন্যতম কারণ অস্বাস্থ্যকর জীবন‌ যাপন। তাঁরা জানাচ্ছেন, তরুণ প্রজন্মের মধ্যে স্থুলতা অন্যতম বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যার নেপথ্যে রয়েছে অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস। তাঁরা জানাচ্ছেন, শরীরের বাড়তি ওজন নানান রোগের ঝুঁকি তৈরি করে। শরীরে রোগ প্রতিরোধ শক্তি কমিয়ে দেয়। অতিরিক্ত ওজনের জন্য হরমোনের ভারসাম্যের অভাব দেখা দেয়। আর এই কারণেই ক্যান্সারের মতো রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

    তাঁরা জানাচ্ছেন, নিয়মিত প্রক্রিয়াজাত খাবার শরীরের জন্য ক্ষতিকারক। তরুণ প্রজন্মের একাংশ নিয়মিত প্রক্রিয়াজাত খাবারে অভ্যস্ত হয়ে উঠছে। তাঁরা জানাচ্ছেন, পিৎজা, বার্গার কিংবা প্যাকেটজাত ন্যুডলসের মতো খাবারে নানান রাসায়নিক থাকে। সেগুলো খাবারে স্বাদ ধরে রাখে। কিন্তু তার জেরে শরীরে পুষ্টির ঘাটতি দেখা যায়। তাছাড়া ওই রাসায়নিক শরীরের হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে। এর ফলে শরীরের বাড়তি ওজন হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ওই সমস্ত প্রক্রিয়াজাত খাবারে কার্বোহাইড্রেট বেশি থাকে। প্রয়োজনীয় ভিটামিন, প্রোটিন, খনিজ পদার্থ থাকে না। ফলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ শক্তি বেড়ে ওঠে না। তাই শরীর দূর্বল হয়ে যায়। চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, ওজন ও খাবারের পরিমাণ, এই দুই নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেই স্তন ক্যান্সারের (Breast Cancer) ঝুঁকি কমানো সম্ভব।

    বড় বিপদ এড়ানোর কী কৌশল জানাচ্ছেন ক্যান্সার বিশেষজ্ঞেরা?

    ক্যান্সার বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সচেতনতা সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। বয়ঃসন্ধিকাল থেকেই এই রোগ সম্পর্কে সতর্ক থাকা জরুরি। নিয়মিত প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরীক্ষা প্রয়োজন।‌ যাতে কোনো সমস্যা হলেই প্রথম পর্বেই তার চিকিৎসা শুরু হতে পারে। তাছাড়া, এই রোগ এড়াতে স্বাস্থ্যকর জীবন‌যাপন প্রয়োজন। ওজন নিয়ে সচেতনতা প্রয়োজন। যাতে অতিরিক্ত ওজন না হয়, তার জন্য খাবারে নজরদারির পাশপাশি নিয়মিত শারীরিক কসরত করা জরুরি। তাতে রক্ত সঞ্চালন ঠিকমতো হয়। হরমোনের ভারসাম্য বজায় থাকে। এতে শরীর সুস্থ থাকে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার ক‌্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। তাই নিয়মিত ডাল, ছোলা, আপেল, লেবু জাতীয় খাবার খাওয়া প্রয়োজন। এতে শরীরে রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়ে। পরিবারের কেউ ক্যান্সার আক্রান্ত হলে, অন্যান্য সদস্যদের এই রোগ সম্পর্কে বাড়তি সচেতনতা জরুরি। তাহলে বড় সমস্যা সহজেই এড়ানো যায়।

    চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, স্তন ক্যান্সার (Breast Cancer) জয় করে আবার স্বাভাবিক জীবন যাপন সম্ভব। কিন্তু এ দেশে অসচেতনতার জেরে এই রোগে মৃত্যু হার উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে। প্রথম পর্বে রোগ নির্ণয় হলে এবং সম্পূর্ণ চিকিৎসা করলে আবার স্বাভাবিক জীবন‌ যাপন করা যায়। তাই অযথা আতঙ্ক নয়। বরং সচেতনতাকে হাতিয়ার করলেই এ দেশে স্তন ক্যান্সারের ছবি বদলে যাওয়া যাবে।

     

     

    DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

LinkedIn
Share