মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ফের রাশিয়া যাওয়ার আমন্ত্রণ পেলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Modi)। আগামী ৯ মে ভিকট্রি ডে পালন (Victory Day Celebrations) করবে রাশিয়া। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ওই দিন জার্মানির সঙ্গে যুদ্ধে জয়ী হয়েছিল রাশিয়া। আগামী ৯ মে সেই যুদ্ধ জয়ের ৮০ বছর পূর্তি। সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে। রাশিয়ার উপ-বিদেশমন্ত্রী আন্দ্রে রুদেঙ্কো জানান, বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মোদিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে অবশ্য এখনও কিছু জানানো হয়নি। পুতিন সরকারের আশা, ৯ মে প্যারেডে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী।
রাশিয়ার উপ-বিদেশমন্ত্রীর বক্তব্য (Victory Day Celebrations)
রাশিয়ার সরকারি সংবাদ মাধ্যমে রুদেঙ্কোর বক্তব্য উদ্ধৃত করা হয়েছে। মঙ্গলবার তিনি বলেন, “এই বছরের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।” চলতি বছরেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে ভারতে আসার কথা রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের। তিনি কবে ভারতে আসবেন, তা এখনও জানা যায়নি। তার মধ্যেই ফের আমন্ত্রণ জানানো হল প্রধানমন্ত্রী মোদিকে। এ বছর ভিকট্রি ডে-র প্যারেডে একাধিক মিত্র দেশের প্রধানদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে মস্কো। ১৯৪৫ সালের জানুয়ারি মাসে জার্মানির বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে রাশিয়া। ৯ মে দুই দেশের কামান্ডার ইন চিফ বিনা শর্তে জার্মান সেনার আত্মসমর্পপণ সংক্রান্ত একটি চুক্তিতে সই করেন। তার পরেই শেষ হয় যুদ্ধ। তার পর থেকে ৯ মে দিনটিকে ভিকট্রি ডে হিসেবে পালন করে আসছে রাশিয়া।
মস্কোর আশা
মস্কোর আশা, প্রধানমন্ত্রী মোদি এই আমন্ত্রণ গ্রহণ করবেন। কারণ এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পাওয়াটা অত্যন্ত সম্মানজনক বিভিন্ন রাষ্ট্রের প্রধানদের কাছে। যদিও প্রধানমন্ত্রীর যাওয়া না- যাওয়ার বিষয়টি এখনও রয়েছে দু’দেশের বৈদেশিক আলোচনার স্তরে। গত জুলাইয়েই রাশিয়া সফরে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেবার মস্কো সফরে গিয়ে পুতিনকে ভারতে আসার আমন্ত্রণ জানানো ছাড়াও বহু বিষয়ে তাঁদের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা হয়েছিল। পুতিন ভারতে আসবেন বলে কথা দিয়েছিলেন। তবে ঠিক কবে তিনি ভারত সফরে আসবেন, তা এখনও ঠিক হয়নি।
প্যারেডে ভারতীয় সেনাবাহিনীও!
প্রধানমন্ত্রী (PM Modi) ছাড়াও এই অনুষ্ঠানে ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি ইউনিটও রেড স্কোয়ারের (মস্কোর) প্যারেডে অংশ নিতে পারে। তা নিয়েও দুই দেশের মধ্যে আলাপ-আলোচনা চলছে। রাশিয়ার ওই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হতে পারে চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকেও। যদি তা হয়, তাহলে ফের একবার মোদি-শি জিনপিং মুখোমুখি হবেন। আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য-যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে ধারণা আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের।
মোদি-পুতিন সম্পর্ক
মোদির সঙ্গে পুতিনের সুসম্পর্কের কথা জানে তামাম বিশ্ব (Victory Day Celebrations)। দুই দেশের এই সম্পর্কের গভীরতা বোঝাতে গিয়ে গত অক্টোবরে রাশিয়ার কাজান শহরে আয়োজিত ব্রিকস সম্মেলনে পুতিন জানিয়েছিলেন, দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক এতটাই ভালো যে কে কী বলছেন, তা অনুধাবনের জন্য অনুবাদকের প্রয়োজন নেই। তিনি বলেন, “আমাদের (মোদি-পুতিন) মধ্যে সম্পর্ক এমন যে কোনও অনুবাদকের প্রয়োজন নেই। এ কথা শুনে প্রধানমন্ত্রী (PM Modi) হেসেও ফেলেছিলেন। কূটনৈতিক মহলের একটা বড় অংশের মতে, নরেন্দ্র মোদিই একমাত্র রাষ্ট্রনেতা, যাঁর সঙ্গে বিবদমান দুই রাষ্ট্র রাশিয়া ও ইউক্রেন – দুই দেশেরই সুসম্পর্ক রয়েছে।
প্রথম বিদেশ সফরেই রাশিয়া
তৃতীয় দফায় প্রধানমন্ত্রী হয়েই প্রথম বিদেশ সফরে মোদি গিয়েছিলেন রাশিয়া। ৪ জুলাই মস্কো সফরে গিয়েছিলেন তিনি। গত পাঁচ বছরে ওটাই ছিল তাঁর প্রথম রাশিয়া সফর। ২০২৪ সালের আগে ২০১৯ সালে রাশিয়ার পূর্বে অবস্থিত ভ্লাদিভোস্তকে গিয়েছিলেন একটি সম্মেলনে অংশ নিতে। জুলাইয়ের সফরে প্রধানমন্ত্রী মোদি বন্ধু প্রেসিডেন্ট পুতিনকে ভারতে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানান। গত ২৭ মার্চ রাশিয়ার (Victory Day Celebrations) বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরফ জানান যে, প্রেসিডেন্ট পুতিন ভারতে আসার আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন। কিন্তু তিনি কবে নয়াদিল্লি আসবেন, তা এখনও জানা যায়নি।
মোদির এই সফর বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এই সফর বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ তিনি যে সময় রাশিয়ায় যাচ্ছেন, সেই সময় ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানের জন্য রাশিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যে আলোচনা চলছে। সম্প্রতি সৌদি আরবে প্রথম দফার আলোচনায় অংশ নেন রাশিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা। সেখানেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শান্তির পক্ষে জোরালো সওয়াল করেন। রাশিয়া সফরের সময় তিনি প্রেসিডেন্ট পুতিন এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি উভয়ের সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন (Victory Day Celebrations)। তিনি যে যুদ্ধ নয়, শান্তির পক্ষেই, সেই অবস্থানও স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী (PM Modi)।