Tag: Chaitanya Mahaprabhu

Chaitanya Mahaprabhu

  • Srirampur: ফ্রেডরিকনগর থেকে শ্রীরামপুর! গঙ্গাপাড়ের এই শহর বহু ইতিহাসের সাক্ষী

    Srirampur: ফ্রেডরিকনগর থেকে শ্রীরামপুর! গঙ্গাপাড়ের এই শহর বহু ইতিহাসের সাক্ষী

    হরিহর ঘোষাল

    শ্রীরামপুর। বহু প্রাচীন জনপদ। গঙ্গার পাড়ে গড়ে ওঠা এই শহর বহু ইতিহাসের সাক্ষী বহন করে চলেছে। শ্রীরামপুর (Srirampur) হাওড়া-ব্যান্ডেল রেললাইনের অষ্টম স্টেশন। গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোড (জিটি রোড) এই শহরের ওপর দিয়ে চলে গিয়েছে। কলকাতা থেকে দূরত্ব ২০ কিমি। শ্রীরামপুর থেকে ডেনীয়রা চলে গেলেও গঙ্গাতীরে তাঁদের নির্মিত সুরম্য অট্টালিকাসমূহ আজও তাঁদের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। চৈতন্যদেব, উইলিয়াম কেরি, মার্শম্যান ও ওয়ার্ডের স্মৃতি বিজড়িত শহর এই শ্রীরামপুর।

    ফ্রেডরিকনগর থেকে শ্রীরামপুর (Srirampur) 

    ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায়, শ্রীরামপুর (Srirampur) এক সময় ডেনমার্কের দখলে ছিল। ডেনীয় বা দিনেমার শাসকেরা এই শহরের রাম রাখেন ফ্রেডরিকনগর (Fredrik Nagar)। শ্রীপুর, আকনা, গোপীনাথপুর, মোহনপুর ও পেয়ারাপুর-এই পাঁচটি জনপদ নিয়ে ফ্রেডরিকনগর গঠিত হয়েছিল। বার্ষিক ১৬০১ সিক্কা খাজনায় ডেনীয়রা শেওড়াফুলি-রাজের কাছ থেকে এই স্থানগুলি ইজারা নেন। ১৭৫২ খ্রিষ্টাব্দে শেওড়াফুলির রাজা মনোহর রায় শ্রীরামচন্দ্রের মন্দির নির্মাণ করেন। শ্রীরামপুর নামটি শ্রীরামচন্দ্র জীউ থেকে উদ্ভূত হয়েছে। ডেনীয় কুঠির অধ্যক্ষ সোয়েটমানের চেষ্টায় শ্রীরামপুর শহরটির বিশেষ উন্নতি ঘটে।

    পুরসভা

    গঙ্গার তীরে এই শহরটি তৎকালীন ইউরোপীয়দের একটি বিহার ক্ষেত্রে পরিণত হয়। ১৭৯৯ খ্রিষ্টাব্দে মার্শম্যান ও ওয়ার্ড খ্রিষ্টধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে শ্রীরামপুরে (Srirampur) এসেছিলেন। কিছুকাল পরে উইলিয়াম কেরি তাঁদের সঙ্গে মিলিত হন। ১৮০৫ খ্রিষ্টাব্দে কর্নেল বাই-এর চেষ্টায় সেন্ট ওলাফের গির্জা নির্মিত হয়। বঙ্গদেশে খ্রিষ্টান মিশনারিদের কার্যকলাপের প্রধান কেন্দ্র ছিল শ্রীরামপুর। বাংলা ভাষা ও সাহিত্য, মুদ্রণশিল্প ও প্রকাশনা এবং আধুনিক শিক্ষাবিস্তারের ক্ষেত্রে শ্রীরামপুর ছিল অগ্রণী। ১৮১৮ খ্রিষ্টাব্দে শ্রীরামপুরের মিশনারিগণ শ্রীরামপুর কলেজের জন্য জমি ক্রয় করেন। ১৮২১ খ্রিষ্টাব্দে ডেনমার্কের রাজকীয় সনদ অনুযায়ী কলেজ তৈরি হয়। ১৮৪৫ খ্রিষ্টাব্দে ইংরেজরা এই শহরটিকে ডেনীয়দের  থেকে কিনে নেন। ১৮৪৭ খ্রিষ্টাব্দে মহকুমার সদর দফতর দ্বারহাট্টা থেকে শ্রীরামপুরে স্থানান্তরিত হয়। ১৮৬৫ খ্রিষ্টাব্দে শ্রীরামপুর পুরসভার পথচলা শুরু হয়।

    গোস্বামী পরিবার

    গোস্বামীরা শ্রীরামপুরের (Srirampur) প্রাচীন জমিদার পরিবার, এই শহরের উন্নতির ক্ষেত্রে যাদের দান অপরিসীম। বর্ধমানের পাটুলি থেকে রামগোবিন্দ গোস্বামী (চক্রবর্তী) শেওড়াফুলি-রাজের থেকে এখানে বাস্তুভূমি পান। তাঁর কনিষ্ঠ পুত্র হরিনারায়ণ ডেনীয় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির দেওয়ান হিসেবে অনেক অর্থ রোজগার করেন। তাঁর পুত্র রঘুরাম জন পামার কোম্পানির বেনিয়ান ছিলেন। সেই সঙ্গে ছিলেন ইউনিয়ন ব্যাঙ্কের অংশীদার। তিনি বিপুল জমিদারি কিনে নেন। এমনকী ডেনীয়রা ইংরেজদের শ্রীরামপুর বিক্রয়ের উদ্যোগী হলে তিনি বারো লক্ষ টাকায় তা কিনে নিতে চান। রাজা কিশোরীলাল গোস্বামী এবং তুলসী গোস্বামী এই বংশেরই লোক ছিলেন। এই গোস্বামী পরিবারের অনেকগুলি প্রাসাদতুল্য ভবন আছে, যেগুলির অধিকাংশই রাজা কিশোরীলাল গোস্বামী ও তুলসী গোস্বামীর নামাঙ্কিত রাস্তার ওপর অবস্থিত। শ্রীরামপুর রেল স্টেশন থেকে যে ভবনটি ট্রেন থেকে সকলে দেখতে পান, সেটি তুলসী গোস্বামী তৈরি করেছিলেন।

    উইলিয়াম কেরির সমাধি

    সেন্ট ওলাফের গির্জাটি ১৮০৫ খ্রিষ্টাব্দে নির্মিত। ১৯৪০ সালে শ্রীরামপুর পুরসভার চেয়ারম্যান শ্রীযুক্ত কানাইলাল গোস্বামী ১৫টি কামান একত্রে সেন্ট ওলাফের গির্জার সামনে স্থাপন ও সংরক্ষণের ব্যবস্থা করেন। শ্রীরামপুরের সঙ্গে ডেনদের সম্পর্কের বিষয় একটি ফলকে লেখা রয়েছে। শ্রীরামপুরের আদি রোমান ক্যাথলিক চ্যাপেল ১৭৬৪ সালে তৈরি হয়। এটি ছোট হওয়ার কারণে ১৭৭৬ সালে নতুন করে তা তৈরি করা হয়। ডেনীয় কবরখানার কথাও এই প্রসঙ্গে বলা যেতে পারে। শ্রীরামপুরে রেলওয়ে স্টেশনের কাছেই রয়েছে এই সমাধিক্ষেত্র। সেখানে উইলিয়াম কেরি, মার্শম্যান ও ওয়ার্ডের সমাধি আছে। এখানে প্রোটেস্টান্ট ও ক্যাথলিকদের জন্য পৃথক স্থান নির্দিষ্ট। অষ্টাদশ ও উনবিংশ শতকের বহু সমাধি এখানে আছে যাঁদের মধ্যে প্রধান ডেনীয় বিচারপতি হলেনবার্গের নাম উল্লেখযোগ্য। প্রসঙ্গত, একথাও বলা দরকার যে দেশীয় খ্রিস্টানদের সমাধি নির্মাণও প্রথম শ্রীরামপুরে হয়। প্রথম মৃত দেশীয় খ্রিষ্টানের নাম গোকুল দাস।

     রাধাবল্লভ মন্দির 

    রাধাবল্লভের নামেই শ্রীরামপুরের (Srirampur) গঙ্গার ধারে একটি অঞ্চলের নামকরণ হয় বল্লভপুর। কথিত আছে, চাতরার রুদ্ররাম পণ্ডিত বল্লভপুরে সাধনা করতেন। তখন বল্লভপুর ছিল জঙ্গলে ভরা এলাকা। তাঁর সাধনায় সন্তুষ্ট হয়ে কৃষ্ণ স্বয়ং যোগীর বেশে তাঁর কাছে আসেন। তাঁকে বলেন, গৌড়ের সুলতানের শয়নকক্ষের দ্বারপ্রান্তের পাথরের স্তম্ভ থেকে তাঁর মূর্তি তৈরি করে প্রতিষ্ঠা করতে। সেই মতো রুদ্ররাম গৌড়ে গিয়ে বিস্মিত হয়ে দেখেন, নানারূপ অশুভ লক্ষণ দেখে ওই বিশেষ পাথরটিকে সুলতান প্রাসাদ থেকে বের করে দিয়েছে। ওই ভারী পাথরকে কীভাবে নিয়ে আসবেন এই চিন্তায় রুদ্ররাম খুবই ব্যাকুল হয়ে ওঠেন। তখন দেবতা তাঁকে স্বপ্নে জানান যে তিনি যেন পাথরটিকে নিকটস্থ নদীতে ফেলে দিয়ে বল্লভপুরে ফিরে যান। নির্দেশ মতো তিনি বল্লভপুরে ফিরে এসে দেখেন যে ওই পাথর সেখানে ভেসে চলে এসেছে। তা থেকে তিনটি কৃষ্ণমূর্তি তৈরি করা হয়-প্রথমটির নাম হয় রাধাবল্লভ, দ্বিতীয়টির নাম হয় শ্যামসুন্দর যে মূর্তি এখন খড়দায় পূজিত হয়। আর তৃতীয়টির নাম হয় নন্দদুলাল, যাঁর অধিষ্ঠান সাঁইবোনায়। ১৬৭৭ সালে রুদ্ররাম অন্যান্য ভক্তের সহযোগিতায় রাধাবল্লভ মন্দির গড়ে তোলেন। এই মন্দিরই হচ্ছে হেনরি মার্টিনের প্যাগোডা। এই মন্দিরটি পরিত্যক্ত হলে ১৭৬৪ সালে কলকাতার নয়নচাঁদ মল্লিক বর্তমান রাধাবল্লভ মন্দির তৈরি করেন। রাধাবল্লভ এবং রাধিকার যুগ্ম মূর্তি ছাড়াও জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার মূর্তি এখানে রয়েছে। আগে রথযাত্রার সময় মাহেশের জগন্নাথকে এই মন্দিরে নিয়ে আসা হত। ১৮৫০ সালের পর তা বন্ধ হয়ে যায়।

    ওয়ালশ হাসপাতাল!

    অষ্টাদশ শতকের মধ্যভাগে রামানুজ সম্প্রদায়ভুক্ত দক্ষিণী বৈষ্ণবেরা শ্রীরামপুরে (Srirampur) তাঁদের একটি আখড়া স্থাপন করেন ও মদনমোহন মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। পরে, আখড়া উঠে গেলে ওই স্থানে ১৮৩৬ খ্রিষ্টাব্দে ওয়ালশ হাসপাতাল গড়ে তোলা হয়। মদনমোহনের বিগ্রহ অন্যত্র স্থানান্তরিত করা হয়। ডেনীয় সরকার এই বিগ্রহের সেবার জন্য বাৎসরিক ১২০ টাকা বরাদ্দ করেন। ব্রিটিশ সরকার এই ব্যবস্থা বন্ধ করে ১০,০০০ টাকা এককালীন অনুদান দিয়ে। এই টাকায় মদনমোহনের বর্তমান আটচালা মন্দির তৈরি হয়। লাহিড়ী পাড়ায় গোস্বামীদের প্রতিষ্ঠিত একটি আটচালা শিবমন্দির আছে। এটি তৈরি হয়েছিল ১৭৭৩ খ্রিষ্টাব্দ।

    চৈতন্যদেব

    উত্তরে চাতরা ও দক্ষিণে মাহেশ-বল্লভপুর নামক স্থানগুলি শ্রীরামপুর (Srirampur) পুরসভার অন্তর্গত। চাতরা একটি প্রাচীন জনপদ। শ্রীরামপুর রেল স্টেশন থেকে দুই কিমি উত্তরে অবস্থিত। এখানকার চৌধুরীপাড়ায় অবস্থিত গৌরাঙ্গ মন্দিরটি শ্রীচৈতন্যের পার্ষদ কালীশ্বর পণ্ডিত প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনটি শিখরবিশিষ্ট এই মন্দিরে মাঝের শিখরটি দুই পাশের অন্য দুই শিখরের চেয়ে বেশি উচ্চতাসম্পন্ন। শিখরগুলি পিরামিডাকার ও রেখ ধরনের খাঁজকাটা। মন্দিরের সামনের সমতল ছাদ বিশিষ্ট বারান্দাটি পরবর্তীকালে নির্মিত। মন্দিরের মধ্যে কৃষ্ণ-রাধা ও শ্রীগৌরাঙ্গ-বিষ্ণুপ্রিয়া দুটি সিংহাসনে রয়েছেন। এ রকম অবস্থান নবদ্বীপ ছাড়া আর কোথাও দেখা যায় না। কথিত আছে যে মহাপ্রভু স্বয়ং পুরী যাত্রার সময় নিমাই-তীর্থের ঘাট থেকে চাতরার এই মন্দিরে এসেছিলেন। মন্দিরে তাঁর নিজের মূর্তি দেখে তিনি ক্ষুব্ধ হন এবং তাঁর বিগ্রহ গঙ্গায় বিসর্জন দেওয়ার নির্দেশ দেন। এই নির্দেশ পালিত হয়। পরে মহাপ্রভুর দেহত্যাগের পর কাশীশ্বর পণ্ডিতের পৌত্র পুনরায় মহাপ্রভুর মূর্তি প্রতিষ্ঠা করেন। 

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Chaitanya Mahaprabhu: এবার অডিও মাধ্যমে মহাপ্রভু শ্রী চৈতন্যদেবের মতাদর্শ ‘জীবাতু’

    Chaitanya Mahaprabhu: এবার অডিও মাধ্যমে মহাপ্রভু শ্রী চৈতন্যদেবের মতাদর্শ ‘জীবাতু’

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: জীবন ধারণের জন্য জৈবিক আহারের পাশাপাশি আধ্যাত্মিক আহারেরও প্রয়োজন মানুষের। এই ধারণা সাধু-সন্তদের। মহাপ্রভু শ্রী চৈতন্যদেব (Chaitanya Mahaprabhu) তাঁর গৌড়ীয় বৈষ্ণবধর্ম প্রচারের মধ্য দিয়ে কেবল যে প্রেম ও ভক্তির প্রচার করতে চেয়েছিলেন, তাই নয়, সেই আধ্যাত্মিকতার মাধ্যমেই জগতের মানুষের কল্যাণ করতে চেয়েছিলেন তিনি। মহাপ্রভুর এই মতাদর্শকে পরবর্তীকালে ভক্তি সিদ্ধান্ত সরস্বতী প্রভুপাদও প্রচারে চেয়েছিলেন। নাম প্রচার ও গৌড়ীয় রসাস্বাদন প্রিয় মানুষের মধ্যে গৌড়ীয় বৈষ্ণব গ্রন্থগুলিকে নবরূপে উপস্থাপন ও রসসম্পৃক্ত প্রবন্ধ-নিবন্ধ পরিবেশনের মাধ্যমেই তা করতে চেয়েছিলেন তিনি। গৌড়ীয়, নদীয়া প্রকাশ, সজ্জন তোষণীর মতো পত্রিকাগুলি তারই পরিচয় বহন করছে।

    আধ্যাত্মিক আহার (Chaitanya Mahaprabhu)

    ঊনবিংশ শতাব্দীতে বিভিন্ন পত্র ও পত্রিকায় প্রকাশিত বিভিন্ন গৌড়ীয় প্রবন্ধ, ভক্তজীবন ও সমকালীন বিষয়ক গৌড়ীয় মঠে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন উৎসব, ভক্তি সিদ্ধান্ত সরস্বতী প্রভুপাদের সঙ্গে বিভিন্ন গুণী ব্যক্তির কথোপকথনও আপামর মানুষের শ্রবণে পৌঁছে দিতে শুরু হল উদ্যোগ (Chaitanya Mahaprabhu)। গৌড়ীয় বৈষ্ণব ধর্মের মাহাত্ম্যকে তুলে ধরা এবং গৌড়ীয় সন্ত জীবনী ও বাণীকে আধুনিক মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে বাগবাজার গৌড়ীয় মঠের উদ্যোগে শুরু হল ‘জীবাতু’’ নামে এবার একটি অডিও বুক। জীবাতুর অর্থ হল জীবন ধারণের আহার বা রসদ। সাধু-সন্তরা মনে করেন, এই অডিও বুক শ্রবণের মাধ্যমে জীব অর্থাৎ মানুষ তার আধ্যাত্মিক আহার বা জীবন ধারণের আহার বা রসদ পেয়ে যাবেন।

    প্রবাসী বাংলা ভাষাভাষী মানুষের জন্য (Chaitanya Mahaprabhu)

    শুধু তাই নয়, বিশ্বজুড়ে প্রবাসী বাংলা ভাষাভাষী মানুষের সংখ্যাও বহু। আধুনিকতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষাকে সামনে রেখে তাঁদের কাছে মহাপ্রভু শ্রী চৈতন্যদেবের বাণী ও কর্মকাণ্ডকে অডিও ফর্মে নতুনভাবে পোঁছে দেওয়াই প্রধান উদ্দেশ্য। আধুনিক শ্রোতাদের কথা ভেবেই মূল প্রবন্ধের ভাবকে বিকৃত না করে কিছুটা ভাষার সরলীকরণ করে পরিবেশন করা হয়েছে। গৌড়ীয় মঠ ও ভক্তিবেদান্ত রিসার্চ সেন্টারের যৌথ উদ্যোগে সোমবার এই ‘জীবাতু’ অডিও বুকের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন গৌড়ীয় মঠের আচার্য্য ও সভাপতি শ্রীমৎ ভক্তি সুন্দর সন্ন্যাসী মহারাজ। তিনি বলেন, ‘জীবাতু’-র দ্বারা আপামর বাংলাভাষী বা বাংলা জানা মানুষের কাছে গৌড়ীয় সন্তদের জীবনী এবং প্রভুপাদ, গৌড়ীয় বৈষ্ণব ধর্ম প্রচারের কর্মকাণ্ড ও গৌড়ীয় দর্শন পৌঁছে দেওয়া যাবে। মানুষ কর্মব্যাস্ততার মধ্যেও এটি শুনতে পারবেন (Chaitanya Mahaprabhu)।

    কী বললেন ডিন?

    গৌড়ীয় বৈষ্ণব ধর্মের নানান দিক, গৌড়ীয় বৈষ্ণব সাহিত্য, পুরাণ এবং মহাপ্রভুর জীবন ও কর্মকাণ্ড নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা করে চলেছে ভক্তিবেদান্ত রিসার্চ সেন্টার। রিসার্চ সেন্টারের ডিন ড. সুমন্ত রুদ্র বলেন, সামনেই আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। সেই কথা মাথায় রেখেই বাংলা ভাষায় গৌড়ীয় মতাদর্শকে (Chaitanya Mahaprabhu) রাজ্যের গন্ডি ছাড়িয়ে দেশ-বিদেশের মানুষের কাছে তুলে ধরার এই প্রয়াস নেওয়া হয়েছে।

     

    দেশের খবরদশের খবরসব খবরসবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • Bengali Kirtan: বাংলা কীর্তনের হারানো গরিমা ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগ শুরু কলকাতায়

    Bengali Kirtan: বাংলা কীর্তনের হারানো গরিমা ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগ শুরু কলকাতায়

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বাংলার পদাবলি ‘কীর্তন’ (Bengali Kirtan) ভারতীয় সংগীতের এমন একটি অধ্যায়, যার সাংগীতিক উপাদান, ভাষা, দর্শন এবং নান্দনিক আবেদন সবই অভিজাত শ্রেণির। বর্তমানে বাংলা সংগীতের এই সুবিশাল সম্পদ সঠিক সংরক্ষণ ও চর্চার অভাবে শিক্ষিত ও রুচিশীল গুণগ্রাহীদের কদর পায় না। সেই সব হারিয়ে যাওয়া, অপ্রচলিত উচ্চাঙ্গের কীর্তনকে জনসমক্ষে ফিরিয়ে আনার এক অভিনব উদ্যোগ শুরু হল, যার পোশাকি নাম ‘দরবারি পদাবলি’।

    নানা ধারায় বিকশিত বাংলা কীর্তন (Bengali Kirtan)

    মধ্যযুগের কবি জয়দেব রাজা লক্ষ্মণ সেনের দরবারে যে ‘গীত গোবিন্দম্’-এর পরিবেশনা করতেন, তার সুর-তাল ও কাঠামোর ভিত্তি ছিল প্রাচীন রাগ-রাগিনী ও গান্ধর্ব সংগীত থেকে জাত বিভিন্ন প্রবন্ধ গীতে ব্যবহৃত তাল। দরবার থেকেই যে সংগীতের পথ চলা শুরু, সেই গান মঠ-মন্দিরে আশ্রয় পায় বিদেশি আক্রমণের ঘাত-প্রতিঘাতে। আবার সেই গান পথে নেমে এসে আপামর বাঙালির সঙ্গী হয়ে ওঠে চৈতন্যদেবের গৌড়ীয় বৈষ্ণব ধর্মের প্রচারের সময়। নানা ধারায় বাংলা কীর্তন (Bengali Kirtan) বিকশিত হয়ে বঙ্গ সমাজের অঙ্গ হয়ে ওঠে।

    প্রাচীন আভিজাত্য আর চোখে পড়ে না

    তবু আজ ফিরে তাকালে, কীর্তনের সেই প্রাচীন আভিজাত্য আর চোখে পড়ে না। কিছু নির্দিষ্ট ক্ষেত্র ছাড়া সেই ঊনবিংশ শতাব্দী থেকে ক্রমেই  কীর্তনের সাংগীতিক উৎকর্ষতা লঘু হয়ে পড়েছে। কীর্তনের বিভিন্ন অঙ্গ ও বিষয়বস্তু রবীন্দ্রনাথ থেকে শুরু করে বহু বাঙালি সুরকার ও সাহিত্যিকের সৃষ্টির অংশ হয়েছে ঠিকই। তবু  অনেক ক্ষেত্রেই কীর্তনকে লোকগান, ধর্মীয় বা লোকাচারের বিষয় মনে করা হয়েছে, এমনকী ব্যঙ্গও করা হয়েছে। এই ভ্রান্তি দূর করে কীর্তনের (Bengali Kirtan) ঐতিহাসিক গুরুত্ব ও নান্দনিক দিকটি আজকের প্রজন্মের কাছে তুলে ধরাই ‘দরবারি পদাবলি’র উদ্দেশ্য।

    হতে চলেছে অভিনব অনুষ্ঠান (Bengali Kirtan)

    আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিশিষ্ট উচ্চাঙ্গ সংগীত শিল্পী পণ্ডিত শ্যামকক সুন্দর গোস্বামীর সারা জীবনের গবেষণা এবং তাঁর শিষ্যা শ্রীমতী দেবলীনা ঘোষের অনুসন্ধানের নির্যাস প্রকাশ পাবে এই অনুষ্ঠানে। গুরু-শিষ্য পরম্পরার এক অনন্য নিবেদন রচনা হবে বাংলার দর্শকের দরবারে। দেবুস দরবার ও হিন্দুস্থান রেকর্ডের উদ্যোগে এই ‘দরবারি পদাবলি, রূপ অপরূপ’ বিষয়ে এক অভিনব অনুষ্ঠান (Bengali Kirtan) হতে চলেছে কলকাতার বিড়লা আকাদেমি সভাঘরে, আগামী ১৯ জানুয়ারি বিকাল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ। সহযোগিতায় ভক্তি বেদান্ত রিসার্চ সেন্টার।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।

  • Purba Bardhaman: ‘চৈতন্যের বংশধর, সার্থক উত্তরসূরী মমতা’! ব্রাত্যর মন্তব্যে তীব্র বিতর্ক

    Purba Bardhaman: ‘চৈতন্যের বংশধর, সার্থক উত্তরসূরী মমতা’! ব্রাত্যর মন্তব্যে তীব্র বিতর্ক

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: চৈতন্যদেবের কোনও উত্তরাধিকারী বাংলায় যদি থেকে থাকেন তিনি হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পূর্বস্থলী ১ নম্বর (Purba Bardhaman) ব্লকের খাল-বিল, চুনো মাছ, পিঠে-পুলি ও প্রাণীপালন উৎসবে এসে মঙ্গলবার বিকেলে এমনই বললেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এদিনের এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে তিনি বলেন, ‘চৈতন্যদেব সর্বধর্ম সমন্বয়ের কথা বলেছেন, চৈতন্যদেব কোনও দিন বিভাজনের রাজনীতি করেননি, চৈতন্যদেবের উত্তরাধিকারী যদি বাংলায় কেউ থেকে থাকেন তাহলে তিনি মুখ্যমন্ত্রী’। তৃণমূল নেতার এই মন্তব্যে সামজিক মাধ্যমে ব্যাপক শোরগোল পড়ে গিয়েছে। বৈষ্ণবভক্তারা বিষয়টি একদম ভালোভাবে নেননি বলে জানা গিয়েছে। একই ভাবে বিজেপিও তীব্র কটাক্ষ করেছে।

    চৈতন্যের বংশধর (Purba Bardhaman)

    শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু মুখ্যমন্ত্রীকে শ্রীচৈতন্যের সঙ্গে তুলনা করে বলেন, “চৈতন্যের বংশধর সার্থক উত্তরসূরী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চৈতন্যদেব একটি বিশেষ রাজনীতির কথা বলেছিলেন। সবাইকে নিয়ে চলতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী সকলকে সঙ্গে নিয়ে চলেন। কাউকেই আলাদা দেখেননা। আমি এখানে এসে খুব আনন্দ পেলাম।” উল্লেখ্য মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে আগেও এমন ভাবে মহাপুরুষের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। ডাক্তার নির্মল মাজি সারদা মায়ের সঙ্গে মমতাকে তুলনা করে ব্যাপক বিতর্ক তৈরি করে ছিলেন। আবার কেউ কেউ লতা মাঙ্গেসকার, সচিন তেন্দুলকার আবার ভগ্নী নিবেদিতার সঙ্গে তুলনা করছেন তৃণমূলের নেতারা।  জেলার (Purba Bardhaman) বিজেপির পক্ষ থেকে অবশ্য কটাক্ষ করে বলা হয়, ‘শ্রীচৈতন্যের সঙ্গে মমতার তুলনা মূর্খতার পরিচয়’। বৈষ্ণব ভক্তরা বিষয়টি নিয়ে বলেন, “মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্যকে অপমান করেছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী।”

    আর কী বললেন শিক্ষামন্ত্রী

    বর্ধমানে (Purba Bardhaman) গিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, “এই মুহুর্তে সারা বিশ্বে যুদ্ধ চলছে ইজরায়েল, গাজা, ইউক্রেন, রাশিয়ায় ব্যাপক যুদ্ধ চলছে। প্রাকৃতিক পরিবেশ ধ্বংস হচ্ছে। আমরা আজ থেকে ৫ থেকে ৬ হাজার বছর আগে একটা বাঘ দেখলে নিজদের লুকিয়ে ফেলতাম গাছের আড়ালে, সামনে হাতি দেখলে মাটিতে শুয়ে আত্মগোপন করতাম। কিন্তু এখন আমরা বাঘকে খাঁচায় ধরতে শিখে ফেলেছি। কারণ আমরা মানুষ, তাই কল্পনা করে আমরা নিয়ম তৈরি করেছি। প্রকৃতির সঙ্গে আমাদের জীবনকে মিলিয়ে ফেলেছি। আমরা দেখেছি মনসামঙ্গল, ধর্মমঙ্গল কাব্যে পরিবেশের কথা বলা হয়েছে। কালকেতু প্রচুর খাওয়ার বিবরণ রয়েছে। এই ভাবে এই প্রকৃতির চিন্তা একমাত্র বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভেবেছেন। বাকি কোনও রাজনৈতিক দলের এমন একক ভাবনা নেই। বাংলার সরকারের এই কাজ মানুষ সামনের দিনে মনে রাখবেন।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।

LinkedIn
Share