Tag: China

China

  • India China Ties: গলছে ভারত-চিন সম্পর্কের বরফ, এবার চালু হচ্ছে সরাসরি বিমান চলাচলও

    India China Ties: গলছে ভারত-চিন সম্পর্কের বরফ, এবার চালু হচ্ছে সরাসরি বিমান চলাচলও

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বিশ্বরাজনীতির অঙ্ক বড় জটিল! এক সময় যে দেশ শত্রু ছিল, সেই দেশই পরে কোনও একটি দেশের বন্ধু হতে পারে। আবার বন্ধুও নিজের স্বার্থে পরিণত হতে পারে শত্রুতে। এই যেমন চিন ও ভারতের সম্পর্ক (India China Ties)। গালওয়ান উপত্যকায় দুই দেশের সেনা সংঘর্ষের পর ভারত-চিন সম্পর্ক গিয়ে ঠেকেছিল তলানিতে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দুই দেশের সম্পর্কের (Mansarovar Yatra) বরফ ক্রমশ গলতে শুরু করে। এর সর্বশেষ পদক্ষেপ হল, ভারত ও চিন সেপ্টেম্বর মাস থেকেই ফের শুরু করতে যাচ্ছে সরাসরি বিমান পরিষেবা। এর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হবে অগাস্টের শেষে, যখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এসসিও শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে যাবেন চিনে।

    ভারত ও চিন সরাসরি যাত্রীবাহি বিমান (India China Ties)

    মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জানা যায়, আগামী মাসের মধ্যেই যাতে ভারত ও চিন সরাসরি যাত্রীবাহি বিমান ফের চালু করা যায়, তার চেষ্টা চলছে। সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, ভারত সরকার এয়ার ইন্ডিয়া ও ইন্ডিগোর মতো বিমানসংস্থাগুলিকে অল্প সময়ের নোটিশে চিনে বিমান চালানোর জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেছে। একই খবর জানিয়েছে ব্লুমবার্গও। তারা জানিয়েছে, এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হবে অগাস্টের শেষে এসসিও সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির চিন সফরের সময়। দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে যাত্রীবাহি ফ্লাইটগুলি কোভিড-১৯ অতিমারির পর স্থগিত রাখা হয়েছিল। যার ফলে ভারত থেকে চিনগামী যাত্রীদের ভায়া হংকং বা সিঙ্গাপুর হয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছিল। এই বিমান চলাচল বন্ধ হওয়ার আগে ভারতের এয়ার ইন্ডিয়া ও ইন্ডিগো-সহ চিনের এয়ার চায়না, চায়না সাউদার্ন এবং চায়না ইস্টার্নের মতো বিমান সংস্থাগুলি উভয় দেশের প্রধান শহরগুলির মধ্যে পরিষেবা দিত (India China Ties)।

    এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল আগেও

    উল্লেখ্য যে, এটি ভারত ও চিনের সরাসরি ফের বিমান চালুর প্রথম প্রচেষ্টা নয়। এরকম উদ্যোগ জানুয়ারি এবং জুন মাসেও নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কূটনৈতিক উত্তেজনার কারণে তা থমকে গিয়েছিল। প্রতিবেশী এই দুই দেশের মধ্যে ফের উড়ান চলাচল শুরু হওয়া এই ইঙ্গিতও দেয় যে, ২০২০ সালে গালওয়ান সংঘর্ষের পর ফের ছন্দে ফিরছে ভারত ও চিনের সম্পর্ক। ২০২১ সালের পর প্রথমবারের মতো ভারতীয় ডিজেলের একটি চালানও চিনের পথে পাড়ি দিয়েছে (Mansarovar Yatra)। ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৮ জুলাই নয়রার ভাদিনার টার্মিনাল থেকে প্রায় ৪,৯৬,০০০ ব্যারেল অতিনিম্ন সালফারযুক্ত ডিজেল বহনকারী একটি জাহাজ যাত্রা শুরু করেছে চিনের উদ্দেশে (India China Ties)।

    চিনে যাচ্ছেন মোদি

    চলতি মাসের শুরুর দিকেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৩১ অগাস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চিনের উত্তরাঞ্চলীয় শহর তিয়ানজিনে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এসসিও শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেবেন। এই সফর হবে গত সাত বছরে মোদির প্রথম চিন সফর। এর মাধ্যমে ১০ মাস আগে রাশিয়ায় মুখোমুখি হওয়ার পর প্রথমবারের মতো তাঁর সঙ্গে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সাক্ষাতের সুযোগ তৈরি হতে চলেছে। কিন্তু শুধু এটুকুই সব নয়। যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেন যে রাশিয়ান তেল কেনার কারণে ভারতের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে, তখন চিন প্রকাশ্যে নয়াদিল্লির প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেছিল, “ভারতের সার্বভৌমত্ব কোনওভাবেই আপসযোগ্য নয় এবং এর বিদেশনীতির সিদ্ধান্ত অন্য কোনও দেশের দ্বারা প্রভাবিত বা নিয়ন্ত্রিত হতে পারে না, তা সে যতই সেই দেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ হোক না কেন।”

    অর্থনৈতিক আশাও জাগাচ্ছে

    ভারতে অবস্থিত চিনা দূতাবাসের মুখপাত্র একটি ছবিও এই বার্তার সঙ্গে যুক্ত করেন। সেখানে দেখা যাচ্ছে একটি হাতি, যা ভারতের প্রতীক এবং একটি বেসবল ব্যাট, যা মার্কিন শুল্কের প্রতীক (Mansarovar Yatra)। আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, গত পাঁচ বছরের বিরতির পর ভারত ২৪শে জুলাই থেকে চিনা নাগরিকদের জন্য ফের পর্যটন ভিসা ইস্যু করতে শুরু করেছে। পাশাপাশি ফের চালু হয়েছে ভারত ও চিন কৈলাশ মানসসরোবর যাত্রাও (India China Ties)। দুই দেশের এই কূটনৈতিক উষ্ণতা অর্থনৈতিক আশাও জাগাচ্ছে। জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ইঙ্গিত দিয়েছেন যে ভারত-চিনের মধ্যে ব্যবসায়িক সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত হতে পারে। তিনি বলেন, “এটি কতদূর যাবে, সেটি আমাদের অপেক্ষা করে দেখতে হবে।”

    তবে এই সব কিছুই ঘটেছে গত বছরের অক্টোবরে ভারত ও চিন টহল ব্যবস্থা ও প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (LAC) বরাবর সেনা প্রত্যাহার করা নিয়ে এক চুক্তিতে পৌঁছনোর পর। দুই দেশ একটি সীমান্ত (Mansarovar Yatra) পরিকল্পনায় একমত হয়েছিল যে, ভারতীয় সেনাবাহিনী সীমান্তের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলিতে টহল দেওয়ার অধিকার নিশ্চিত করেছে, এবং ভারতীয় রাখালরা আবারও পশুচারণ শুরু করতে পেরেছে (India China Ties)।

  • John Bolton: ‘‘বিরাট ভুল’’! ভারতের ওপর চড়া শুল্ক চাপানোয় নিজের দেশেই কড়া সমালোচনার মুখে ট্রাম্প

    John Bolton: ‘‘বিরাট ভুল’’! ভারতের ওপর চড়া শুল্ক চাপানোয় নিজের দেশেই কড়া সমালোচনার মুখে ট্রাম্প

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: নিজের দেশেই কড়া সমালোচনার মুখে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সে দেশের প্রাক্তন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টনের অভিযোগ, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন কূটনীতিকদের কয়েক দশকের প্রচেষ্টা নষ্ট করেছেন – যার লক্ষ্য ছিল ভারতকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছাকাছি আনা এবং রাশিয়া ও চিনের খপ্পর থেকে দূরে রাখা (Tariffs)। সংবাদ মাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে তিনি বলেন (John Bolton), “ট্রাম্প রাশিয়া থেকে তেল কেনার কারণে ভারতের ওপর চড়া শুল্ক আরোপ করেছেন, অথচ চিনের প্রতি তুলনামূলকভাবে নমনীয়।” বোল্টন বলেন, “ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ একটি বিরাট ভুল হতে পারে। কারণ এতে ভারত রাশিয়া ও চিনের আরও কাছাকাছি চলে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।” তিনি বলেন, “যদিও এ বছরের শুরুতে ট্রাম্প চিনের সঙ্গে সামান্য বাণিজ্যিক বিরোধে জড়িয়েছিলেন, তিনি বেজিংয়ের সঙ্গে সম্ভাব্য চুক্তির আশায় সেটিকে আর বাড়াননি। উল্টোদিকে, ভারতকে ৫০ শতাংশেরও বেশি শুল্কের মুখোমুখি হতে হয়েছে, যার মধ্যে ছিল রাশিয়া থেকে তেল আমদানির জন্য শাস্তিমূলক ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্কও।

    কী বলছেন বোল্টন (John Bolton)

    বোল্টনের মতে, রাশিয়াকে শিক্ষা দিতে গিয়ে ভারতের ওপর আরোপিত দ্বিতীয় পর্যায়ের শুল্কই বরং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্যই সবচেয়ে খারাপ ফল তৈরি করেছে। ভারত এ বিষয়ে অত্যন্ত নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। এর একটা কারণ হল তারা দেখেছে চিনের বিরুদ্ধে একই ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাঁর সতর্কবার্তা, এই পরিস্থিতি ভারত, রাশিয়া ও চিনকে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের বিরুদ্ধে সমন্বয় সাধনে উৎসাহিত করতে পারে। মার্কিন বিদেশনীতি বিশেষজ্ঞ ক্রিস্টোফার পাডিলা বলেন, “এই শুল্ক ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি করতে পারে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একজন অংশীদার হিসেবে কতটা নির্ভরযোগ্য, সে বিষয়ে ভারতের সন্দেহ সৃষ্টি করতে পারে।”

    বোল্টনের যুক্তি

    এর আগে দ্য হিল নামে এক পত্রিকায় প্রকাশিত (John Bolton) এক মতামত নিবন্ধে বোল্টন যুক্তি দিয়েছিলেন, বেজিংয়ের প্রতি ট্রাম্পের নরম অবস্থান চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করার প্রচেষ্টায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত স্বার্থকে বিসর্জন দিতে পারে। তিনি এও বলেছিলেন, “চিনের ক্ষেত্রে ভারতের তুলনায় শুল্কে বেশি সুবিধা দেওয়া বিশাল একটি ভুল হতে পারে (Tariffs)। প্রসঙ্গত, ভারত রাশিয়ান তেল আমদানি বন্ধ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ককে অন্যায় ও অযৌক্তিক বলে অভিহিত করেছে। রাশিয়া ভারতের পাশে দাঁড়িয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে অবৈধ বাণিজ্যিক চাপ প্রয়োগের অভিযোগ করেছে। বোল্টনের আশঙ্কা, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তাঁর আসন্ন ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে ভারত-শুল্ক বিরোধকে নিজের স্বার্থে কাজে লাগাতে পারেন।

    ট্রাম্পের সমালোচনায় মুখর প্রাক্তন মার্কিন সেনেটের

    এদিকে, ট্রাম্পের সমালোচনায় মুখর হয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন সেনেটের তথা ডেপুটি সেক্রেটারি কার্ট ক্যাম্পবেল। তিনি সমর্থন করেছেন ভারতকে। কড়া সমালোচনা করেছেন ভারতীয় পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক ঘোষণার পর মার্কিন প্রেসিডেন্টের। ক্যাম্পবেল বলেন, “ট্রাম্পের এই অবস্থান ভারত-মার্কিন সম্পর্ককে সংকটের মুখে ঠেলে দিয়েছে।” তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যেন কখনওই মার্কিন নেতার সামনে মাথা নত না করেন (Tariffs)।” সংবাদ মাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে ক্যাম্পবেল বলেন, শুল্ক ঘোষণার পর থেকে ওয়াশিংটন ও নয়াদিল্লির সম্পর্ক উল্লেখযোগ্যভাবে অবনতি হয়েছে। তিনি বলেন, “২১ শতকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল ভারতের সঙ্গে। কিন্তু এখন তা সংকটে। যেভাবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ভারত ও প্রধানমন্ত্রী মোদি সম্পর্কে কথা বলেছেন, তা ভারত সরকারের জন্য পরিস্থিতিকে অত্যন্ত কঠিন করে তুলেছে।” ক্যাম্পবেল জোর দিয়ে বলেন, মোদি যেন কোনও অবস্থায়ই ট্রাম্পের কাছে নতিস্বীকার না করেন (John Bolton)।

    ভারতের ওপর দু’দফায় ৫০ শতাংশ শুল্ক

    ৬ অগাস্ট ট্রাম্প একটি এক্সিকিউটিভ আদেশে স্বাক্ষর করেন, যার মাধ্যমে ভারতীয় আমদানির ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ কর আরোপ করা হয়, যা আগে থেকেই কার্যকর থাকা ২৫ শতাংশ করের সঙ্গে যুক্ত হবে। প্রশাসন জানিয়েছে, রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যই এই নতুন পদক্ষেপের কারণ, যা ২৭ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে। ভারত ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানিয়ে একে অশ্রদ্ধাশীল ও অযৌক্তিক পদক্ষেপ বলে আখ্যা দিয়েছে। জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় সম্ভাব্য সব উপায় অনুসন্ধানের অঙ্গীকারও করে। ঘোষণার পর জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেন। একে ওয়াশিংটনের প্রতি সরাসরি প্রতিক্রিয়া হিসেবেই দেখা হচ্ছে। ডিসেম্বরের মধ্যেই ভারত সফর করবেন পুতিন (John Bolton)।

    এখন দেখার কোথাকার জল কতদূর গড়ায়।

  • PM Modi: মোদির সম্ভাব্য চিন সফরে গুরুত্ব বেজিংয়ের, ড্রাগনের দেশের সংবাদপত্রে হিন্দু প্রবাদ

    PM Modi: মোদির সম্ভাব্য চিন সফরে গুরুত্ব বেজিংয়ের, ড্রাগনের দেশের সংবাদপত্রে হিন্দু প্রবাদ

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: “তোমার ভাইয়ের নৌকোকে নদী পার করিয়ে দাও, তাতে তোমার নিজের নৌকোও তীরে পৌঁছে যাবে।” হিন্দুদের এই প্রবাদ (Hindu Proverb) বাক্যটি গুরুত্ব সহকারে ছাপা হয়েছে চিনের সরকারি মুখপত্র গ্লোবাল টাইমসের সম্পাদকীয়তে। সেখানে এও লেখা হয়েছে, ভারত-চিন (PM Modi) সম্পর্কের এই ঘনিষ্ঠতা থেকে এটাই প্রমাণিত হয় যে, আমেরিকা ভারতের স্বাধীন বিদেশনীতিকে কোনওভাবেই প্রভাবিত করতে পারবে না। তাহলে কি সংবাদ মাধ্যমের আশঙ্কাই ঠিক? আমেরিকাকে রুখতে জোটবদ্ধ হচ্ছে রাশিয়া-ভারত-চিন, সংক্ষেপে ‘রিচ’ (RICH)!

    এসসিওর শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে চিনে মোদি (PM Modi)

    এবার এসসিও (সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন) সম্মেলন হতে চলেছে চিনের তিয়ানজিনে। এসসিওর এই শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে চিনে যাবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ৩১ অগাস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চিন সফরে যাবেন তিনি। গত সাত বছরের মধ্যে এটাই হবে মোদির প্রথম চিন সফর। প্রধানমন্ত্রী যে এসসিও সম্মেলনে যোগ দিতে চিনে যাচ্ছেন, সে ব্যাপারে এখনও সরকারিভাবে কোনও ঘোষণা হয়নি। তবে পরিবর্তিত ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে যে প্রধানমন্ত্রী ড্রাগনের দেশে যাচ্ছেন, তা একপ্রকার নিশ্চিত। প্রধানমন্ত্রী যদি ওই দিন সত্যিই চিনে যান এসসিও সম্মেলনে যোগ দিতে, তাহলে ২০২০ সালের গালওয়ান সীমান্ত সংঘর্ষের পর দুই দেশের সম্পর্কে সৃষ্টি হওয়া তিক্ততার সম্পর্ক ফের মধুর হতে পারে।

    ভারত-চিনের সম্পর্কের উন্নতি

    সাম্প্রতিক কালে ভারত ও চিনের মধ্যে সম্পর্কের উল্লেখযোগ্য উন্নতি হচ্ছে। বহু বছরের টানাপোড়েনের পর এসসিও সম্মেলনে যোগ দিতে চিনে গিয়েছিলেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। গিয়েছিলেন শীর্ষ পর্যায়ের একাধিক কর্তাও। তাঁদের ধারাবাহিক সফর কূটনৈতিক অচলাবস্থার বরফ গলানোরই ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে ধারণা ওয়াকিবহাল মহলের। ২০২৪ সালের অক্টোবরে কাজানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মধ্যে পার্শ্ববৈঠকে জট খুলতে শুরু করে ভারত-চিন সম্পর্কের। উভয় পক্ষই এ বিষয়ে একমত যে, ভারত ও চিন উন্নয়নের অংশীদার, হুমকি বা প্রতিদ্বন্দ্বী নয়। এরপর থেকে ফের শুরু হয়েছে ভারত চিনের নাগরিকদের জন্য পর্যটন ভিসা ইস্যু করা। কৈলাশ-মানস সরোবর তীর্থযাত্রার পথ আবারও খুলে দিয়েছে চিন (PM Modi)।

    চিনা সংবাদপত্রে হিন্দু প্রবাদ

    চিনের সরকারি সংবাদপত্র গ্লোবাল টাইমস মোদির সম্ভাব্য সফরের খবরে বেশ আশাবাদী। পত্রিকাটি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সাম্প্রতিক গতি স্বীকার করলেও ভারতের তৈরি কিছু প্রতিবন্ধকতা নিয়ে উদ্বেগও প্রকাশ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে, চিনা বিনিয়োগের ওপর ভারতের পর্যালোচনা ও সীমাবদ্ধতা, চিনা প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের ভিসা প্রদানে সীমাবদ্ধতা এবং সরাসরি ফ্লাইট ফের চালুর দেরি। গ্লোবাল টাইমস সতর্ক করেছে যে, এসব প্রতিবন্ধকতার সমাধান না হলে আস্থা ফেরানো কঠিন হবে (Hindu Proverb)। এর পরেই সম্পাদকীয়তে উল্লেখ করা হয়েছে হিন্দু প্রবাদটি: “তোমার ভাইয়ের নৌকোকে নদী পার করিয়ে দাও, তাতে তোমার নিজের নৌকোও তীরে পৌঁছে যাবে।”

    মোদির সফরকে গুরুত্ব

    সম্পাদকীয়তে জোর দেওয়া হয়েছে যে, যদি প্রধানমন্ত্রী মোদির সফর এসব সমস্যার সমাধান করতে পারে, তবে এটি দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা গভীর করার ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হয়ে উঠতে পারে। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, মোদির সম্ভাব্য চিন সফরের সময়টি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ এটি ঘটতে চলেছে এমন একটা সময়ে যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যের ওপর দু’দফায় মোট ৫০ শতাংশ শুল্ক ঘোষণা করার কয়েক দিনের মধ্যেই। এই পদক্ষেপটির সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে ভারতের রাশিয়া থেকে অব্যাহত তেল আমদানিকে, ওয়াশিংটনের মতে যা সে দেশের জাতীয় নিরাপত্তার পক্ষে হুমকি স্বরূপ (PM Modi)।

    মার্কিন হুমকির জবাবে দৃঢ় অবস্থান মোদির

    মার্কিন হুমকির জবাবে প্রধানমন্ত্রী দৃঢ় অবস্থান নিয়েছেন। সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ভারত তার অর্থনৈতিক স্বার্থ রক্ষা করবে এবং কোনও চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না। চিনা গণমাধ্যম মোদির কূটনৈতিক অবস্থান পরিবর্তনকে ভারতের স্বাধীন বিদেশনীতির অংশ হিসেবেই দেখেছে (Hindu Proverb)। পশ্চিমী মহলের জল্পনা, মোদির চিন সফর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কৌশলগত ভারসাম্য রক্ষার পদক্ষেপ। যদিও গ্লোবাল টাইমস জানিয়ে দিয়েছে, চিন-ভারত সম্পর্ক অভিন্ন স্বার্থ ও দীর্ঘস্থায়ী ঐতিহাসিক যুক্তির ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে, তৃতীয় পক্ষের বিরোধিতার ওপর নয় (PM Modi)।

    প্রসঙ্গত, বিশ্বের বৃহত্তম দুটি উদীয়মান অর্থনীতির দেশ হিসেবে চিন ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্য, সন্ত্রাসবিরোধী লড়াই এবং আঞ্চলিক উন্নয়নের মতো ক্ষেত্রে যৌথ স্বার্থ রয়েছে। উভয় দেশই গ্লোবাল সাউথের শীর্ষ কণ্ঠ এবং এসসিওর মতো বহুপাক্ষিক প্ল্যাটফর্মে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রধানমন্ত্রীর এই সফর এই ক্ষেত্রগুলিতে আরও বেশি সহযোগিতার অনুঘটক হতে পারে, সূচনা করতে পারে চিন-ভারত সম্পর্কের একটি নয়া অধ্যায়ের। বিশ্ববাসী দেখতে পারেন (Hindu Proverb) ‘ড্রাগন’ ও ‘হাতি’র যৌথ নৃত্য (PM Modi)।

  • RICH Alliance: শিয়রে ট্রাম্পের শুল্ক বিপদ, তাই কি কাছাকাছি আসছে রাশিয়া-ভারত-চিন?

    RICH Alliance: শিয়রে ট্রাম্পের শুল্ক বিপদ, তাই কি কাছাকাছি আসছে রাশিয়া-ভারত-চিন?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: শিয়রে ট্রাম্পের শুল্ক বিপদ। তাই কি কাছাকাছি আসছে ভারত-চিন-রাশিয়া? গঠিত হচ্ছে নয়া জোট ‘রিচ অ্যালায়েন্স’ (RICH Alliance)? অন্তত এমনই জল্পনা ছড়িয়েছে তামাম বিশ্বে (Trumps Tariff War)। ভারতীয় পণ্যের ওপর প্রথমে এক দফা ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রাশিয়ান তেল কেনার জন্যই এই পরিমাণ শুল্ক আরোপ করা হয়। পরে ট্রাম্পের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করেই রাশিয়া যান ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তারপর ফের ভারতীয় পণ্যের ওপর আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের কথা বুধবার ঘোষণা করেন ট্রাম্প। ৪৭তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট অবশ্য এও জানিয়েছেন, তিনি ভারতের ওপর শুল্ক বাড়াবেন বহুলাংশে। তবে ভারত সাফ জানিয়ে দিয়েছে, কোনওপ্রকার চাপের কাছেই নতিস্বীকার করবে না নয়াদিল্লি। ভারতের পাশাপাশি ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে রাশিয়াও।

    আমেরিকার শত্রু হওয়া বিপজ্জনক! (RICH Alliance)

    প্রাক্তন মার্কিন বিদেশমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার একবার বলেছিলেন, “আমেরিকার শত্রু হওয়া বিপজ্জনক হতে পারে, কিন্তু বন্ধু হওয়া মারাত্মক।” এই কথারই প্রতিধ্বনি যেন শোনা যাচ্ছে বর্তমানে। কারণ ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক পাক খাচ্ছে শুল্ক-যুদ্ধের ঘূর্ণিপাকে। সম্প্রতি রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রকের তরফে জারি করা এক বিবৃতিতে মুখপাত্র মারিয়া জাখালোভা বলেন, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশগুলির ওপর আধিপত্য বিস্তারের হাতিয়ার হিসেবে শুল্ক আরোপ করছে। যারা ওয়াশিংটনের ভিন্ন পথে চলেছে, তাদের ওপর অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। তবে রাশিয়া একটি মাল্টিপোলার ও ন্যায়ভিত্তিক বিশ্বব্যবস্থার পক্ষে। তাই রাশিয়া ভারতের পাশেও রয়েছে, রয়েছে চিনের সঙ্গেও, এক কথায় আমেরিকার একাধিপত্যবাদী দৃষ্টিভঙ্গির বিরুদ্ধে।”

    হতাশার গর্ভে জন্ম রাশিয়ার এই প্রতিক্রিয়া

    তাঁর দাবি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রতিক্রিয়ার জন্ম হতাশা থেকেই। কারণ তারা নতুন বৈশ্বিক ব্যবস্থায় নিজেদের ক্রমহ্রাসমান প্রভাব মেনে নিতে পারছে না। তাঁর মতে, শুল্ক আর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে বিশ্বব্যবস্থার বদল রোখা যাবে না (Trumps Tariff War)। জাখারোভার কথায় স্পষ্ট ইঙ্গিত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নয়া শুল্ক ঘোষণার পর এক নতুন জোট গঠনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। রাশিয়া, ভারত এবং চিনের মধ্যে যে এই ঘনিষ্ঠতা তৈরি হচ্ছে, তা বিশ্বে শক্তির ভারসাম্য নতুনভাবে গড়ে তুলতে পারে (RICH Alliance)।

    অমোঘ প্রশ্ন

    এখানেই উঠছে সেই অমোঘ প্রশ্নটি, ট্রাম্পের আগ্রাসী বাণিজ্যনীতি কি একটি শক্তিশালী ‘রিচ’ (Russia-India-China) জোটের উত্থান ডেকে এনেছে? ওয়াকিবহাল মহলের মতে, রিচ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে ব্রিকসের (BRICS) চেয়েও বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে। কারণ রাশিয়া-ভারত-চিনের (রিচ) এই সংক্ষিপ্ত রূপটিই ধন ও সমৃদ্ধির প্রতীক হিসেবে এক শক্তিশালী জোটের ইঙ্গিত দেয়।

    আমেরিকার শিয়রে বিপদ!

    বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘রিচ’ (RICH Alliance) গঠিত হলে বিপাকে পড়বে আমেরিকা। সে দেশের জিডিপি হল প্রায় ২৩ লাখ কোটি টাকা। অন্যদিকে, রাশিয়া, ভারত ও চিনের সম্মিলিত জিডিপি প্রায় ২১ লাখ কোটি টাকা। ভারত, চিন ও রাশিয়ার সম্মিলিত জনসংখ্যা প্রায় ৩০০ কোটি, বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩৭ শতাংশ। উল্টো দিকে, আমেরিকার জনসংখ্যা মাত্র ৩৩ কোটি, বিশ্ব জনসংখ্যার মাত্র ৪ শতাংশ। ত্রিদেশীয় এই সম্ভাব্য জোটের সম্মিলিত সামরিক বাহিনীর সদস্য সংখ্যা ৪৮ লাখ, সেখানে আমেরিকার মাত্র ১৩ লাখ। ন্যাটো মিত্রদের যুক্ত করলেও, সেনা সংখ্যায় এগিয়ে ‘রিচ’-ই। পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডারের দিক থেকেও এগিয়ে ‘রিচ’। এই সম্ভাব্য জোটের দেশগুলির কাছে আনুমানিক ৬,৩০০টি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। আর আমেরিকার রয়েছে প্রায় ৫,২০০টি (Trumps Tariff War)।

    কে এগিয়ে, পিছিয়েই বা কে

    যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখনও বিশ্বের সর্ববৃহৎ অস্ত্র উৎপাদনকারী দেশ, তবুও রাশিয়া এবং চিনও শীর্ষ অস্ত্র নির্মাতা দেশগুলির মধ্যেই রয়েছে। ভারতও প্রতিরক্ষা উৎপাদনে স্বনির্ভরতার লক্ষ্যে দ্রুত এগোচ্ছে। এই ত্রিদেশীয় জোট গঠিত হলে স্থল, জল ও আকাশে ন্যাটোর জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে (RICH Alliance)। ‘রিচে’র সদস্য দেশগুলি প্রাকৃতিক সম্পদেও সমৃদ্ধ। রাশিয়ার রয়েছে তেল, গ্যাস ও কয়লার বিশাল ভাণ্ডার। এটি জীবাশ্ম জ্বালানির প্রধান রপ্তানিকারক। ভারত পারমাণবিক ও সৌরশক্তিতে ব্যাপক এগিয়েছে। আর চিন সৌর প্যানেল ও উইন্ড টারবাইনের শীর্ষ উৎপাদক।

    প্রাকৃতিক সম্পদেও ঋদ্ধ এই তিন দেশ। রাশিয়ার রয়েছে টাইটানিয়াম, নিকেল, কোবাল্ট ও ইউরেনিয়ামের বিপুল ভাণ্ডার। চিন বিশ্বব্যাপী বিরল খনিজের ৬০ শতাংশেরও বেশি উৎপাদন করে। আর ভারত সমৃদ্ধ বক্সাইট, লোহা আকরিক, গ্রাফাইট ও ম্যাঙ্গানিজে। কৃষিতেও এগিয়ে ‘রিচ’। ভারত দুধ ও ডালের বিশ্বের সর্ববৃহৎ উৎপাদক। রাশিয়া গম রফতানিতে রয়েছে শীর্ষে। আর চিন দক্ষ কৃষিযন্ত্র ও খাদ্য উৎপাদনে। চুম্বকে, এই তিন দেশের জোট গঠিত হলে জ্বালানি, খাদ্য বা প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে বাইরের সাহায্যের কোনও প্রয়োজনই প্রায় থাকবে না (Trumps Tariff War)।

    ‘রিচ’ নামের ত্রিদেশীয় এই জোট দিনের আলো দেখে কিনা, এখন সেটাই দেখার (RICH Alliance)।

  • PM Modi: ট্রাম্পের শুল্ক-যুদ্ধে বদলাচ্ছে ভূ-রাজনৈতিক সমীকরণ, ঘনিষ্ঠ হচ্ছে চিন ও ভারত!

    PM Modi: ট্রাম্পের শুল্ক-যুদ্ধে বদলাচ্ছে ভূ-রাজনৈতিক সমীকরণ, ঘনিষ্ঠ হচ্ছে চিন ও ভারত!

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বদলাচ্ছে বিশ্বের ভূ-রাজনৈতিক সমীকরণ! অন্তত এমনই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ভারতীয় পণ্যের ওপর প্রথমে এক দফা ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রাশিয়ান তেল কেনার জন্যই এই পরিমাণ শুল্ক আরোপ করা হয়। ট্রাম্পের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করেই রাশিয়া গিয়েছেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। তিনি ফিরে এলেই, চলতি মাসের মাঝামাঝি মস্কো সফরে যাবেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। এরই মধ্যে, ফের ভারতীয় পণ্যের ওপর (SCO Summit) আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের কথা বুধবার ঘোষণা করেছেন ট্রাম্প। ওয়াশিংটনের এই কড়া শুল্ক-পদক্ষেপের আবহে চলতি মাসেই চিন সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Modi)। সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) সম্মেলনে অংশ নিতেই চিন যাত্রা করবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। উল্লেখ্য, ২০২০ সালের গালওয়ান উপত্যকায় প্রাণঘাতী সংঘর্ষের পর এটাই হতে চলেছে তাঁর প্রথম চিন সফর।

    এসসিও সম্মেলন (PM Modi)

    তিয়ানজিনের উত্তরের বন্দর শহরে আগামী ৩১ অগাস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হবে এসসিও সম্মেলন। সেই কারণেই চিন সফরে যাচ্ছেন তিনি। তাঁর চিন সফরটি এমন একটা সময়ে হতে যাচ্ছে যখন ভারত একদিকে যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আরোপিত কঠোর নতুন বাণিজ্য শুল্কের প্রভাবের মোকাবিলা করছে, তেমনি অন্যদিকে রাশিয়া থেকে তেলের আমদানির কারণে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণের মুখোমুখিও হয়েছে। এসসিও সম্মেলনে মোদির উপস্থিতিকে অনেকেই ভারতের কৌশলগত অবস্থান পুনর্বিবেচনার একটি প্রচেষ্টা হিসেবে দেখছেন, বিশেষ করে যখন পশ্চিমী বিশ্বের সঙ্গে উত্তেজনা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বেজিংয়ের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের উন্নতির ইঙ্গিত দিচ্ছে।

    চিন সফরে মোদি

    ২০১৯ সালে শেষবারের মতো চিন সফরে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তারপর লাদাখের গালওয়ানে ভারত ও চিন সংঘর্ষের পর থেকে দু’দেশের সম্পর্কে অবনতি ঘটেছে। অবশ্য গত বছরে রাশিয়ার কাজানে আন্তর্জাতিক জোট ব্রিকসের পার্শ্ববৈঠকে সাক্ষাৎ করেন মোদি ও চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। তারপর থেকে ফের স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে ভারত-চিনের সম্পর্ক (SCO Summit)।

    ট্রাম্পের শুল্ক-হুমকি

    সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শুল্ক-হুমকির জেরে কাছাকাছি আসতে শুরু করেছে পড়শি এই দুই (PM Modi) দেশ। বেজিংও আপ্রাণ চেষ্টা করছে নয়াদিল্লির সঙ্গে বন্ধুত্ব আরও নিবিড় করতে। ভারত ও চিনের শক্তির কথা বলতে গিয়ে তারা ব্যবহার করছে যথাক্রমে ‘হাতি’ ও ‘ড্রাগনে’র উপমা। চিনের সাফ কথা, ‘ড্রাগন ও হাতির মধ্যে সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক দুই দেশের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। ড্রাগন আর হাতিকে একসঙ্গে নাচিয়ে দিতে হবে। একে অপরের বিরুদ্ধে কথা না বলে পরস্পরকে সাহায্য করতে হবে। তাতেই লাভ হবে দুই দেশের। যদি এশিয়ার বৃহত্তম দুই অর্থনীতি একজোট হয়, তবে তা লাভজনক হবে সমগ্র বিশ্বের পক্ষেই।’ এহেন আবহে মোদির চিন সফরের দিকেই তাকিয়ে রয়েছে তামাম বিশ্ব।

    চিন ঘুরে এসেছেন রাজনাথ-জয়শঙ্কর

    মোদির চিন সফরের আগে এসসিওর প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং বিদেশমন্ত্রী পর্যায়ের আলাদা সম্মেলন হয়ে গিয়েছে। প্রথমে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং এবং পরে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর উভয়েই সেই উপলক্ষে চিন সফরে গিয়েছিলেন। প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের সম্মেলনে সন্ত্রাসবাদ প্রসঙ্গে পাকিস্তানের নাম না (SCO Summit) নিয়েই তাকে আক্রমণ করেন রাজনাথ। সাফ জানিয়ে দেন (PM Modi), সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ভারত কোনও দু’মুখো আচরণ বরদাস্ত করবে না। এই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা আসিফ মুহম্মদ। তাঁর সামনেই ভারতের এই অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। এবার চিনে হবে এসসিওর শীর্ষ সম্মেলন। সেই সম্মলেন উপস্থিত থাকবেন বিভিন্ন রাষ্ট্রের প্রধানরা। থাকার কথা পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফেরও। তাই শরিফের উপস্থিতিতে ভারত কী বলে, তা শুনতেও মুখিয়ে রয়েছেন বিশ্ববাসী।

    চিনের বিবৃতি

    প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল দক্ষিণ কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে বেছে বেছে ২৬ জন হিন্দু পর্যটককে হত্যা করে পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিরা। তার প্রেক্ষিতে পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করতে অপারেশন সিঁদুর চালায় ভারত। সেই সময় পাকিস্তানের দিকে যারা ঝুঁকেছিল, তাদের মধ্যে ছিল চিনও। অপারেশন সিঁদুর নিয়ে চিনের তরফে জারি করা বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আজ ভোরে ভারত যে সেনা অভিযান চালিয়েছে, তা দুঃখজনক (PM Modi)। বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। ভারত ও পাকিস্তান চিরকাল পরস্পরের প্রতিবেশী হিসেবেই বিরাজ করবে। তারাও চিনের প্রতিবেশী। চিন সব ধরনের সন্ত্রাসের বিরোধী। দুপক্ষের কাছেই আবেদন, বৃহত্তর স্বার্থে, শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য সংযত থাকুন। এমন কিছু করবেন না, যাতে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে (SCO Summit)।’

    পরে অবশ্য আর একটি বিবৃতিতে চিনা বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র লিন জিয়ান বলেন, “চিন সব ধরনের সন্ত্রাসবাদের কঠোর বিরোধিতা করে এবং ২২ এপ্রিল সংঘটিত জঙ্গি হামলার তীব্র নিন্দা করে। চিন আঞ্চলিক দেশগুলিকে সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগিতা জোরদার করার এবং যৌথভাবে আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষার আহ্বান জানায় (PM Modi)।”

  • Supreme court: ভারতীয় ভূখণ্ড চিনের দখলে! বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য সুপ্রিম কোর্টে ভর্ৎসিত রাহুল গান্ধী

    Supreme court: ভারতীয় ভূখণ্ড চিনের দখলে! বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য সুপ্রিম কোর্টে ভর্ৎসিত রাহুল গান্ধী

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ২০০০ কিলোমিটারেরও বেশি ভারতীয় ভূখণ্ড নাকি চিন দখল করে রেখেছে—এমন দাবি করার জন্য সুপ্রিম কোর্টের কাছে ভর্ৎসিত হলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। শীর্ষ আদালত রাহুল গান্ধীকে তিরস্কার করে তাঁকে জানিয়েছে, প্রকৃত ভারতীয় হয়ে কখনও এই ধরনের মন্তব্য করবেন না। প্রসঙ্গত, রাহুল গান্ধীর এমন মন্তব্যের জন্য তাঁর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা রুজু করার দাবি জানানো হয়েছিল। তবে সে দাবি অবশ্য খারিজ করেছে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme court)।

    ভারত জোড়ো যাত্রা করার সময় এমন মন্তব্য করেছিলেন রাহুল (Rahul Gandhi)

    ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত হয় লোকসভা ভোট। ঠিক তার দু’বছর আগে—২০২২ সালে ভারত জোড়ো যাত্রার ডাক দেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)। সেই সময় তিনি বিভিন্ন সভায় দাবি করেছিলেন, চিন ২০০০ কিলোমিটার ভারতীয় ভূখণ্ড দখল করে রেখেছে এবং চিনা সৈন্যরা অরুণাচল প্রদেশে ভারতীয় সৈন্যদের মারধর করছে। এ নিয়েই পরবর্তীকালে দায়ের হয় মামলা। এই মামলার শুনানিতেই সুপ্রিম কোর্ট (Supreme court) রাহুল গান্ধীর উদ্দেশ্যে জানতে চায়, “আপনি কীভাবে জানলেন যে ২০০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা চিনা দখলে রয়েছে?” এর পরে শীর্ষ আদালত (Supreme court) রাহুল গান্ধীকে তিরস্কার করে বলে, “আপনি যদি একজন প্রকৃত ভারতীয় হতেন, তাহলে এমন কথা বলতেন না।”

    মামলার শুনানি ছিল বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত এবং অগাস্টিন জর্জ মাসিহ-র বেঞ্চে

    প্রসঙ্গত, এই মামলার শুনানি ছিল বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত এবং অগাস্টিন জর্জ মাসিহ-র বেঞ্চে। সেখানেই লোকসভার বিরোধী দলনেতাকে তীব্র ভর্ৎসনা করে শীর্ষ আদালত আরও বলে, “আপনি বিরোধী দলের নেতা হয়ে কেন এই ধরনের কথাগুলো বলবেন?” প্রসঙ্গত, এ-সংক্রান্ত মামলাটি প্রথম উঠে এলাহাবাদ হাই কোর্টে। সেখানে রাহুল গান্ধীর আবেদন খারিজ হয়। এরপরেই রাহুল গান্ধী সুপ্রিম কোর্টের (Supreme court) দ্বারস্থ হন এবং তিনি জানান যে, তাঁর বিরুদ্ধে এমন মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং বিদ্বেষপূর্ণ উদ্দেশ্যেই করা হয়েছে।

    রাহুলের দাবি মিথ্যা গল্প, বললেন কিরেন রিজিজু

    এদিন সুপ্রিম কোর্টের (Supreme court) রাহুল গান্ধী সম্পর্কে এমন মন্তব্যের পরেই অরুণাচল প্রদেশের বাসিন্দা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্ট শেয়ার করেন এবং সেখানেই বিজেপি নেতা রাহুল গান্ধীর মন্তব্যকে “মিথ্যা গল্প” বলে অভিহিত করেন এবং তিনি দাবি করেন, চিন অরুণাচল প্রদেশের এক ইঞ্চি জমিও দখল করেনি।প্রসঙ্গত, রাহুলের এই মন্তব্যের পরেই সেসময় তাঁর নিন্দা করেছিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও। বিদেশমন্ত্রী রাহুলের বিরুদ্ধে ‘ভুল তথ্য’ দেওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন। তিনি সেসময় জানান, ১৯৬২ সালের ভারত-চিন যুদ্ধের সময় ভারত চিনের কাছে যে জায়গা খুইয়েছিল, তাকে সাম্প্রতিক ক্ষয়ক্ষতি হিসাবে দেখাতে চাইছেন রাহুল।

    রাজস্থানে এমন দাবি করেছিলেন রাহুল

    প্রসঙ্গত, ২০২২ সালে ভারত জোড়ো যাত্রার সময় রাহুল গান্ধী রাজস্থানে এমন মন্তব্য করেন। রাজস্থানের মাটিতে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন যে, ২০০০ বর্গ কিলোমিটার ভারতীয় ভূখণ্ড দখল করে রেখেছে চিন এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে চিনের আগ্রাসনের পরেও কেন নীরব রয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার—এ নিয়ে বিজেপির সমালোচনা করেছিলেন রাহুল গান্ধী। সেদিন তিনি আরও বলেছিলেন, “আমাদেরকে প্রশ্ন করা হয় ভারত জোড়ো যাত্রা নিয়ে—এখানে, সেখানে, সর্বত্র অশোক গেহলট, শচীন পাইলট ইত্যাদি বিষয়ে আমাদেরকে জিজ্ঞাসা করা হয়। কিন্তু তারা কখনও চিন নিয়ে প্রশ্ন করে না। কেন ২০০০ বর্গ কিলোমিটার ভারতীয় ভূখণ্ড দখল করল চিন—এ নিয়ে প্রশ্ন করা হয় না। ২০ জন ভারতীয় সৈন্যকে হত্যা করল চিন—এ নিয়ে প্রশ্ন করা হয় না। অরুণাচল প্রদেশে আমাদের সৈন্যদের পিটিয়ে হত্যা করল কেন চিন—এই নিয়েও প্রশ্ন করা হয় না। আবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যমও এ নিয়ে কোনও কিছু উত্থাপন করে না। তবে এগুলো কি সত্য নয়? দেশ সবটাই দেখছে। কোনও কিছু ভান করে কিছু হবে না। মানুষ সবটাই জানে।”

    জম্মু-কাশ্মীরে গিয়েও একই দাবি করেন রাহুল

    শুধু তাই নয়, ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে জম্মু-কাশ্মীরে একই দাবি করতে দেখা গিয়েছিল। তিনি বলেছিলেন যে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী দেশের একমাত্র ব্যক্তি, যিনি মনে করেন যে, চিনারা ভারতের কাছ থেকে কোনও জমি দখল করেনি। “আমি সম্প্রতি কিছু প্রাক্তন সেনার সঙ্গে দেখা করেছি এবং লাদাখের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গেও দেখা করেছি। তাঁরা আমাকে স্পষ্ট ভাবে জানিয়েছেন যে, আমাদের ভারতীয় ভূখণ্ডের ২০০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা চিন দখল করে রেখেছে।” রীতিমতো সাংবাদিক সম্মেলন করে জম্মু-কাশ্মীরে এমন দাবি করতে শোনা যায় সে সময় রাহুল গান্ধীকে।

    অনেক টহল পয়েন্টও বর্তমানে পুরোপুরি চিনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, এমনই দাবি রাহুলের

    প্রসঙ্গত, ওই আবহে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী আরও দাবি করেছিলেন যে, প্রাক্তন সেনা কর্মীরা তাঁকে বলেছেন—ভারতীয় ভূখণ্ডের মধ্যে থাকা অনেক টহল পয়েন্টও বর্তমানে পুরোপুরি চিনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। রাহুল গান্ধীর এই সমস্ত বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য উত্তরপ্রদেশে একটি মানহানির মামলা দায়ের করা হয় এবং সেখানেই তাঁকে সমন জারি করা হয়েছিল। এর পরে তিনি এলাহাবাদ হাই কোর্টে মামলা দায়ের করেন এবং স্বপক্ষে মামলাটি বাতিল করার আবেদন জানান।

  • India: চিনকে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে গোল দিল ভারত, স্মার্টফোন রফতানিতে ‘ড্রাগন’কে টপকাল ‘হাতি’

    India: চিনকে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে গোল দিল ভারত, স্মার্টফোন রফতানিতে ‘ড্রাগন’কে টপকাল ‘হাতি’

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: চিনকে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে গোল দিল ভারত (India)! ভারত প্রথমবারের মতো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে স্মার্টফোন রফতানির (Smartphone Supplier) দিক থেকে চিনকে টপকে এক নম্বরে উঠে এল। অ্যাপলের শুল্ক সংক্রান্ত কারণে উৎপাদন কেন্দ্র নয়াদিল্লিতে সরিয়ে আনার পরেই এটা ঘটেছে।

    ‘ক্যানালিসে’র রিপোর্টে ভারত প্রথম (India)

    গবেষণা সংস্থা ‘ক্যানালিস’ প্রকাশিত একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি হওয়া স্মার্টফোনের মধ্যে ভারতে নির্মিত ডিভাইসের অংশ ছিল ৪৪ শতাংশ। গত বছর এই একই সময়ে এই হার ছিল ১৩ শতাংশ। ওই রিপোর্ট থেকেই জানা গিয়েছে, বছরওয়াড়ির ভিত্তিতে ভারতে তৈরি স্মার্টফোনের মোট পরিমাণ ২৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ভারতের লেখচিত্র যখন ঊর্ধ্বমুখী, তখন চিনের ছবিটা করুণ। কারণ চিনে তৈরি স্মার্টফোনের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রফতানির অংশ কমে দাঁড়িয়েছে মাত্রই ২৫ শতাংশে। অথচ গত বছর এর পরিমাণ ছিল ৬১ শতাংশ। এর ফলে চিন এখন আমেরিকায় স্মার্টফোন রফতানিতে ভিয়েতনামেরও পিছনে পড়ে গিয়েছে। এই তালিকায় থার্ড হয়েছে চিন।

    চিনের চিৎপটাং হওয়ার কারণ

    ওয়াকিবহাল মহলের মতে, চিনের এই চিৎপটাং হওয়া এবং ভারতের এই উল্লেখযোগ্য উত্থানের তিনটি প্রধান কারণ রয়েছে। একটি হল আমেরিকা এবং চিনের মধ্যে চলা শুল্ক-যুদ্ধ। ৪৭তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপ করা শুল্কের প্রতিশোধ নিয়েছিল শি জিনপিংয়ের দেশ। প্রত্যাশিতভাবেই এই যুদ্ধে রফতানি কমে গিয়েছিল চিনের। আর একটি কারণ হল ভারতে অ্যাপল আইফোনের উৎপাদন কেন্দ্র। জানা গিয়েছে, এখন অ্যাপল চিনের চেয়ে ভারতে আইফোন উৎপাদনে বেশি মনোযোগ দিচ্ছে। আরও একটি উল্লেখযোগ্য কারণ রয়েছে। সেটি হল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রজেক্ট (India)। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ভারতে উৎপাদন বৃদ্ধি এবং বিদেশে রফতানির এক বিশাল পরিকল্পনা চলছে। এই প্রকল্পের ফলে ভারত বিভিন্ন পণ্য বিদেশে রফতানি করছে। এর মধ্যে নয়া ইতিহাস গড়ে দিল স্মার্টফোন।

    জানা গিয়েছে, স্যামসাং, মোটোরোলাও আমেরিকায় বেশি করে রফতানি করছে ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ স্মার্টফোন। এতদিন মোটোরোলা চিনা কারখানা থেকে সব চেয়ে বেশি স্মার্টফোন উৎপাদন করে রফতানি করত (Smartphone Supplier) মার্কিন মুলুকে। সম্প্রতি সেই মোটোরোলাও ভারতে বাড়িয়েছে স্মার্টফোনের উৎপাদন (India)।

  • PM Modi: মলদ্বীপের স্বাধীনতা দিবসে প্রধান অতিথি মোদি, কী বলছে গ্লোবাল মিডিয়া?

    PM Modi: মলদ্বীপের স্বাধীনতা দিবসে প্রধান অতিথি মোদি, কী বলছে গ্লোবাল মিডিয়া?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: জমে গেল খেলা! ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গিয়ে চিনপন্থী (China) মহম্মদ মুইজ্জু মলদ্বীপের ৬০তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং নন, প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানালেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে (PM Modi)। শুধু তাই নয়, মুইজ্জুর মুখে মোদি-স্তুতিও নজর কেড়েছে তামাম বিশ্বের। এতেই যেন মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে শি জিনপিংয়ের দেশের। মলদ্বীপের স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মোদিকে প্রধান অতিথি হিসেবে সম্মান প্রদর্শন কেবল ভারত ও মলদ্বীপেই নয়, বিশ্বজুড়ে শিরোনাম হয়ে ওঠে সংবাদ মাধ্যমের।

    মোদির সফর বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ (PM Modi)

    ভারতের প্রধানমন্ত্রীর এই দ্বীপরাষ্ট্র সফর বেশ কয়েকটি কারণে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। তার প্রধান কারণ মলদ্বীপের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ২০২৩ সালে নির্বাচনী প্রচারে বেরিয়ে স্লোগান দিয়েছিলেন ‘ইন্ডিয়া আউটে’র। প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরেই প্রতিশ্রুতি পূরণে উঠেপড়ে লাগেন মুইজ্জু। ভারতের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করার পাশাপাশি চিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলতেও উদ্যোগী হন তিনি। কুর্সিতে বসার পরে পরেই তিনি মলদ্বীপে থাকা ভারতীয় সেনাকর্মীদের ভারতে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন। মলদ্বীপের এই পদক্ষেপটিকে নয়াদিল্লি চিনের দিকে মালদ্বীপের একটি কৌশলগত ঝুঁকে পড়া হিসেবে দেখেছিল। সেই একই নেতাই এখন ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে দেশের সবচেয়ে বড় সরকারি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। এই প্রতীকী বার্তাটি একেবারেই স্পষ্ট। এটি ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত, যা বিদেশি রাষ্ট্রদূতরা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছিলেন, বিশেষ করে যখন চিন যখন ভারত মহাসাগরে নিজের প্রভাব আরও বাড়িয়ে তোলার চেষ্টা করে যাচ্ছে।

    কী বলছে গ্লোবাল টাইমস

    বেজিংয়ের রাষ্ট্র-পরিচালিত সংবাদপত্র গ্লোবাল টাইমসে প্রকাশিত একটি প্রবন্ধে ভারতের সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট প্রকাশে ধরনের সমালোচনা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর মলদ্বীপ সফরকে ঘিরেই এই রিপোর্ট। গ্লোবাল টাইমসের মতে, কিছু ভারতীয় মিডিয়া এই সফরকে চিনের কৌশলগত পরাজয় এবং ভারতের কূটনৈতিক সাফল্য হিসেবে তুলে ধরেছে (PM Modi)। গ্লোবাল টাইমসের অভিযোগ, ভারতীয় মিডিয়া (China) ‘জিরো সাম থিংকিং’য়ে জড়িয়ে পড়েছে। এই চিন্তাধারা অনুযায়ী, ভারতের যে কোনও লাভকেই চিনের ক্ষতি হিসেবে দেখা হয়। ওই সংবাদপত্রে চিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয় কৌশল ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টর কিয়ান ফেংয়ের মন্তব্য উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, “মলদ্বীপ স্বাভাবিকভাবেই তার প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ককে অগ্রাধিকার দেয়, তবে একইসঙ্গে বৈচিত্র্যময় বৈদেশিক নীতি অনুসরণ করে, যার মধ্যে চিনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (BRI)-এর সঙ্গে যুক্ত থাকাও অন্তর্ভুক্ত।” তিনি বলেন, “এই কৌশলগুলির মধ্যে কোনও দ্বন্দ্ব নেই।”

    নিউজ এশিয়ার প্রতিবেদন

    সিঙ্গাপুরভিত্তিক চ্যানেল নিউজ এশিয়ার প্রতিবেদনের শিরোনাম “মলদ্বীপের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্গঠনে ভারতের মোদি”। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মোদির সফরে নয়া পরিকাঠামো অংশীদারিত্ব, আর্থিক প্রতিশ্রুতি এবং দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের উষ্ণতার পুনর্জাগরণ স্পষ্ট। মলদ্বীপে প্রধানমন্ত্রী একটি নতুন প্রতিরক্ষামন্ত্রক ভবনের উদ্বোধন করেন। ভারত যেসব প্রকল্পে টাকা ঢেলেছে, সেগুলির উদ্বোধনও করেন। দ্বীপরাষ্ট্রকে দেন অর্থনৈতিক সাহায্যের আশ্বাসও (China)। নিউজ এশিয়ার দাবি, নয়াদিল্লিতে মোদির এই সফরকে চিনের প্রভাব থেকে মলদ্বীপকে দূরে রাখার আশ্বাস হিসেবে দেখা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট মুইজ্জুর শাসনের শুরুতেই ভারতীয় সেনা প্রত্যাহারের নির্দেশে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছিল (PM Modi)। দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে মোদির এই দু’দিনের দ্বীপরাষ্ট্র সফরকে কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আখ্যা দেওয়া হয়েছে। তারা এও জানিয়েছে, এটি ভারত মহাসাগরের প্রধান সমুদ্রপথে ভারতের প্রভাব বিস্তারের বৃহত্তর একটি লক্ষ্য। ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, এই সফর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করার একটি নতুন সূচনার ইঙ্গিত দিতে পারে।

    ব্রিটিশ দৈনিকের বিশ্লেষণ

    ব্রিটিশ দৈনিক দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, ভারত সরকার যখন লাক্ষাদ্বীপকে পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে প্রচার করতে শুরু করে, তখন মলদ্বীপের অনেকেই তাকে ভারতীয় পর্যটকদের নিজেদের সমুদ্রসৈকত থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হিসেবে দেখেছিলেন। তার ফলে উভয় দেশের মধ্যেই উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছিল (PM Modi)। ভারতের বেশ কয়েকজন তারকাও মলদ্বীপকে পর্যটন গন্তব্য হিসেবে বয়কট করার ডাক দিয়েছিলেন। প্রতিবেদনটিতে এও বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট মুইজু ভারত সফরের আগে চিন সফরকে অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন। এটি নজর এড়ায়নি নয়াদিল্লির। চিন সফর শেষে তিনি ওষুধ ও খাদ্য-সহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের জন্য ভারতের ওপর নির্ভরতা কমানোর কথাও ঘোষণা করেন। তার (China) জেরে উভয় দেশেই শুরু হয় উদ্বেগ। তবে পরিস্থিতির উন্নতি হতে শুরু করে যখন মুইজ্জু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে অংশ নেন। ওই সফর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উষ্ণতা ফিরিয়ে আনার পথ প্রশস্ত করে। এরই পরিণাম হল মোদির বর্তমান মলদ্বীপ সফর (PM Modi)।

  • India: চিন সীমান্তের গা ঘেঁষে ‘বিকল্প পথ’ নির্মাণ করছে ভারত, দু’দিনের যাত্রা করা যাবে ১২ ঘণ্টায়

    India: চিন সীমান্তের গা ঘেঁষে ‘বিকল্প পথ’ নির্মাণ করছে ভারত, দু’দিনের যাত্রা করা যাবে ১২ ঘণ্টায়

    মাধ্যম নিজ ডেস্ক: চিন সীমান্তের (China) গা ঘেঁষে সড়ক নির্মাণ করছে ভারত (India)। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১৬,০০০ ফুট উচ্চতায় রয়েছে ভারতীয় বায়ুসেনার বিমানঘাঁটি, যার নাম দৌলত বেগ ওল্ডি (সংক্ষেপে ডিবিও)। লাদাখে অবস্থিত এই বিমানঘাঁটি কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখানে অস্ত্র, বিভিন্ন যুদ্ধ সরঞ্জাম ছাড়াও সেনাবাহিনীর অন্যান্য সামগ্রী নিয়ে যেতে অসুবিধা হয়। এই আবহে এই সমস্ত সমস্যার সমাধান করতে ভারত-চিন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর, অর্থাৎ লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল-এর অদূরেই তৈরি হচ্ছে এই রাস্তা।

    লেহ থেকে ডিবিও-র দূরত্ব ৭৯ কিলোমিটার কমিয়ে আনবে এই রাস্তা

    এ নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিবৃতিও সামনে এসেছে কেন্দ্রীয় সরকারের (India)। নয়াদিল্লির তরফে জানানো হয়েছে, লাদাখে অবস্থিত গাপসান ক্যাম্প থেকে এই রাস্তাটি সরাসরি ডিবিও পর্যন্ত যাবে। এই রাস্তাটি ১৩০ কিলোমিটার লম্বা হবে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকারের আধিকারিকরা। বর্ডার রোড অর্গানাইজেশন এই রাস্তা তৈরি করছে এবং তারা জানিয়েছে, নতুন এই রাস্তাটি লেহ থেকে ডিবিও-র দূরত্ব ৭৯ কিলোমিটার কমিয়ে আনবে।

    সহজেই পৌঁছানো যাবে রসদ (China)

    এতদিন পর্যন্ত এই দুর্গম পথে যাতায়াত করতে সময় লাগত প্রায় দুই দিন। পাহাড়ি ভূখণ্ড, প্রতিকূল আবহাওয়া এবং উপযুক্ত পরিকাঠামোর অভাবে সেনাবাহিনী ও অন্যান্য বাহিনীর জন্য দৌলত বেগ ওল্ডি (ডিবিও)-তে পৌঁছানো ছিল যথেষ্ট সময়সাপেক্ষ ও কষ্টকর। কিন্তু এই নতুন বিকল্প সড়ক তৈরির ফলে সেই দীর্ঘ যাত্রা অনেকটাই সহজ এবং দ্রুততর হয়ে উঠবে। এই পথ ব্যবহার করে এখন মাত্র ১১ থেকে ১২ ঘণ্টার মধ্যেই ডিবিও-তে পৌঁছানো যাবে। এই রাস্তা নির্মাণ শুধু সময় সাশ্রয়েই সাহায্য করবে না, ভারত যে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (LAC) বরাবর নজরদারির ক্ষমতা বাড়াতে পারবে—তাও নিশ্চিত করবে। পাশাপাশি কূটনৈতিক দিক থেকেও এটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ। সীমান্তবর্তী এই স্পর্শকাতর এলাকায় প্রয়োজনে দ্রুত রসদ, অস্ত্র, গোলাবারুদ, সেনা সহায়তা এবং অন্যান্য লজিস্টিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া যাবে। চিনের মতো প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে সীমান্ত উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে, এই রাস্তা কেবল প্রতিরক্ষার দিক থেকেই নয়, বরং কূটনৈতিক ও কৌশলগত দৃষ্টিতেও এক গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে (India)।

    নয়টি সেতুকে সংস্কার করা হয়েছে, বহন করবে আরও বেশি ভার

    প্রতিরক্ষা মন্ত্রক (India) সূত্রে জানা গিয়েছে, ভারী যানবাহন ও কামান চলাচলের সুবিধার্থে এই নয়া রাস্তায় নয়টি সেতুকে সংস্কার করা হয়েছে। যার ফলে, এতদিন যা ৪০ টন ভার বহন করতে পারত, তা এখন ৭০ টন পর্যন্ত বহন করতে পারবে। সিয়াচেন সেনা ক্যাম্পের কাছে নুব্রা উপত্যকার শাসুমা থেকে এই রাস্তাটি শুরু হয়েছে এবং লেহকে সম্পূর্ণভাবে অতিক্রম না করেই ডিবিও-র সঙ্গে সরাসরি সংযোগ স্থাপন করতে পারবে।

    প্রকল্পের বাস্তবায়নে মোট বাজেট ধরা হয়েছে ৫০০ কোটি

    জানা গিয়েছে, এই প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট বাজেট ধরা হয়েছে ৫০০ কোটি টাকা। শুধু তাই নয়, চরম আবহাওয়াতেও এই রাস্তা কার্যকর থাকবে। জানা গিয়েছে, ১৭ হাজার ফুটেরও বেশি উচ্চতায় অবস্থিত এই অঞ্চলে ভারী তুষারপাত হয় এবং অক্সিজেনের ঘাটতি রয়েছে, যার ফলে বছরে মাত্র পাঁচ থেকে ছয় মাস কাজ চালানো সম্ভব হয়। নির্মাণ শ্রমিকদের সহায়তা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তৈরি করা হয়েছে ‘অক্সিজেন ক্যাফে’।

    দেশের সীমান্তে রাস্তা তৈরি হয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অধীনে

    এ প্রসঙ্গে উল্লেখযোগ্য, সারা দেশে (India) এবং সীমান্তবর্তী এলাকায় সড়ক নির্মাণের কাজ কখনো একভাবে হয় না। দেশের অন্যান্য অঞ্চলে রাস্তা তৈরির দায়িত্বে থাকে কেন্দ্রীয় সড়ক ও পরিবহন মন্ত্রক, কিন্তু সীমান্ত এলাকায় সড়ক নির্মাণের দায়িত্ব প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের, আর সেই কাজ তদারকি করে বর্ডার রোড অর্গানাইজেশন (BRO)। লাদাখের এই নতুন সড়ক নির্মাণের দায়িত্বও তাদের হাতেই।

    আগামী বছরেই তৈরি হয়ে যাবে এই রাস্তা

    প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের জুন মাসে চিনের সঙ্গে গালওয়ান সংঘর্ষ ঘটে। সেই আবহেই এই নির্মাণকাজ শুরু করে BRO। এই রাস্তা একবার সম্পূর্ণ হয়ে গেলে বহু সুবিধা মিলবে, যা দেশের প্রতিরক্ষা, বিশেষত লাদাখের নিরাপত্তাকে আরও শক্তিশালী করে তুলবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এখন প্রশ্ন, কবে সম্পূর্ণ হবে এই নতুন সড়ক? প্রসঙ্গত, ২০২০ সাল থেকে বিকল্প পথ তৈরির কাজ ধাপে ধাপে শুরু করে কেন্দ্রের মোদি সরকার। তবে এই কাজ মোটেও সহজ ছিল না, আর তার বড় কারণ আবহাওয়া। তবুও সমস্ত বাধা অতিক্রম করে এই রাস্তা এখন অনেকটাই তৈরি হয়ে গিয়েছে। মনে করা হচ্ছে, আগামী বছরেই বিকল্প এই পথ সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত হয়ে যাবে।

  • China: ব্রহ্মপুত্রের ওপরে বিশ্বের বৃহত্তম নদীবাঁধ তৈরির কাজ শুরু করল চিন, কেন ভারতের কাছে আশঙ্কার?

    China: ব্রহ্মপুত্রের ওপরে বিশ্বের বৃহত্তম নদীবাঁধ তৈরির কাজ শুরু করল চিন, কেন ভারতের কাছে আশঙ্কার?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভারত সীমান্তঘেঁষা তিব্বতের অংশে ব্রহ্মপুত্র নদের উপর বিশ্বের বৃহত্তম নদীবাঁধ নির্মাণের কাজ শনিবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করল চিন (China)। চিনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ‘জিনহুয়া’ জানিয়েছে, ইয়ার্লুং সাংপো (যা ব্রহ্মপুত্র নামে পরিচিত) নদীর নিম্নভূমিতে এক বিশেষ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই বাঁধ নির্মাণের সূচনা করেন প্রধানমন্ত্রী লি কুয়াং। জানা যাচ্ছে, এই প্রকল্পে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১৪.৪ লক্ষ কোটি টাকা বা ১.২ ট্রিলিয়ন ইউয়ান।

    কেন ভারতের জন্য আশঙ্কার কারণ হতে পারে?

    তিব্বতের এই ইয়ার্লুং সাংপো নদ ভারতে প্রবেশ করে অরুণাচল প্রদেশে সিয়াং নামে পরিচিত হয় এবং এরপর অসমে এসে ব্রহ্মপুত্র (Brahmaputra River) নাম ধারণ করে। ২০১৫ সাল থেকে ভারতের আপত্তিকে অগ্রাহ্য করে চিন একাধিক পর্যায়ে নদীর উপর নির্মাণকাজ চালিয়ে আসছে। এতে নদীর জলের স্তর হ্রাস পাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভবিষ্যতে এই বাঁধের কারণে অসম, অরুণাচল সহ উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিতে জলসংকট দেখা দিতে পারে। সম্প্রতি অরুণাচলের মুখ্যমন্ত্রী পেমা খান্ডু সতর্ক করেছেন, তিব্বতে চিনের (China) এই বাঁধ ভারতের জন্য এক গুরুতর নিরাপত্তা হুমকি হয়ে উঠতে পারে। তাঁর মতে, এই বাঁধ কার্যত একটি বিস্ফোরক সময়বোমার মতো।

    প্রভাব পড়তে পারে বাংলাদেশেও

    চিনের (China) এই প্রকল্প নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে ভারত। যদিও সরকারিভাবে কোনও মন্তব্য করা হয়নি, তবু নয়াদিল্লি পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখছে বলে সূত্রের খবর। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, বাঁধটি নির্মাণ করা হচ্ছে ব্রহ্মপুত্রের একটি বাঁক বরাবর, যার ফলে নদীর জলপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা চিনের হাতে চলে যেতে পারে। বর্ষাকালে নদীতে অতিরিক্ত জল ছেড়ে নিচের দিকের এলাকায় বন্যার পরিস্থিতি সৃষ্টি করা এবং শুষ্ক মৌসুমে জলধারণ কমিয়ে দিয়ে তীব্র জলাভাব তৈরি করার আশঙ্কা করছেন অনেকে। এর প্রভাব বাংলাদেশেও পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। ব্রহ্মপুত্র এমন একটি অঞ্চলে অবস্থিত, যেখানে দুটি টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থল রয়েছে, ফলে এলাকা ভূমিকম্পপ্রবণ। নদীর স্বাভাবিক গতি কৃত্রিমভাবে বাঁধা দিলে ভূমিকম্পের সম্ভাবনাও তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। যদিও চিনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাদের নির্মিত বাঁধ পরিবেশের কোনও ক্ষতি করবে না। বরং প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় বাস্তুতন্ত্র ও পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে বেজিং (China)।

LinkedIn
Share