Tag: copd lung diseases

  • COPD: উৎসবের উদযাপনেও নজরে থাকুক সিওপিডি! সুস্থ থাকার জন্য কী পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা?

    COPD: উৎসবের উদযাপনেও নজরে থাকুক সিওপিডি! সুস্থ থাকার জন্য কী পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা?

    তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল

    আর মাত্র কয়েক দিনের অপেক্ষা। তারপরেই শুরু হবে আলোর উৎসব! শহর থেকে গ্রাম, বাঙালি মেতে উঠবে দীপাবলির (Diwali 2025) আনন্দে! মাটির প্রদীপ হোক কিংবা অ্যারোমা ক্যান্ডেল, নানান রকমের আলোয় সাজবে বাড়ি। তবে তার সঙ্গে বাড়বে বাজির দাপট (Diwali Fireworks)। চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, উৎসবের উদযাপনে যেন স্বাস্থ্যেও নজর থাকে। তাই উদযাপনের ক্ষেত্রেও সচেতনতা জরুরি। বিশেষত কলকাতার মতো শহরে এ ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা প্রয়োজন বলেও মনে করছেন চিকিৎসকদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, যে হারে এই শহরে ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ (COPD) আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, তাতে বাজির উৎসবের দাপটে রাশ জরুরি!

    কী বলছে পরিসংখ্যান?

    বিশ্ব জুড়ে ফুসফুসের রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। বিশেষত সিওপিডি-র মতো রোগে আক্রান্তের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে গত কয়েক বছরে বেড়েছে। সিওপিডি (COPD) আক্রান্তেরা শ্বাসকষ্ট, ঘনঘন কাশি-সর্দিতে ভোগান্তি, বুকের ভিতরে একটা চাপ অনুভব করার মতো নানান উপসর্গে ভোগেন। এর জেরে তাঁরা ক্লান্তি অনুভব করেন। স্বাভাবিক জীবন যাপন ব্যহত হয়। বিশেষত শিশু ও বয়স্কদের মধ্যে এই রোগের প্রকোপ বাড়ছে। তাই ফুসফুসের কার্যক্ষমতা কমছে। নিউমোনিয়ার মতো রোগের দাপটও বাড়ছে।

    বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রতি বছর বিশ্ব জুড়ে প্রায় ৩৫ লাখ মানুষ সিওপিডি-তে (COPD) আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছেন। প্রতি দশ সেকেন্ডে একজন সিওপিডি আক্রান্তের মৃত্যু হচ্ছে। ভারতের অবস্থাও ব্যতিক্রম নয়। বিশেষত কলকাতার মতো শহরে সিওপিডি আক্রান্তের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে। কারণ, কলকাতা, হাওড়ার মতো শহরে বায়ুদূষণ (Air Pollution) মারাত্মকভাবে বেড়েছে। তাই এ রাজ্যেও সিওপিডি বাড়তি আতঙ্ক তৈরি করছে। সম্প্রতি একটি বেসরকারি সংস্থার তত্ত্বাবধানে পরিচালিত সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, গত পাঁচ বছরে কলকাতায় শিশুদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ভাবে সিওপিডি-র (COPD) সমস্যা বেড়েছে। পাঁচ বছরের কম বয়সী ৩০ শতাংশ শিশু হাঁপানির মতো রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। যার ফলে সারাজীবন তাদের নানান শারীরিক জটিল পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হতে পারে বলেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন চিকিৎসকদের একাংশ।

    বাজি নিয়ে বাড়তি সতর্কতার কথা চিকিৎসকদের

    চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, বাজি বায়ুদূষণের (Air Pollution) মাত্রা কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয়। কলকাতা ও তার আশপাশের একাধিক শহর, এছাড়াও দুর্গাপুর, আসানসোলের মতো রাজ্যের বিভিন্ন শহরের বাতাস পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, সেখানে মানুষের সহনশীলতার তুলনায় পাঁচ থেকে ছয় গুণ বেশি দূষিত পদার্থ রয়েছে। এর জেরেই রাজ্যে ফুসফুসের অসুখ (COPD) বাড়ছে। বাজি এই পরিস্থিতিকে আরও বেশি জটিল করে তুলতে পারে বলেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, শব্দ বাজির পাশপাশি নানান ধরনের আলোর বাজি পোড়ালে বাতাসে একধরনের সাদা ধোঁয়া (Diwali Fireworks Air Pollution) মিশে যায়। এই ধোঁয়া আসলে বিষাক্ত রাসায়নিক। কার্বন মনোঅক্সাইড, কার্বন ডাই অক্সাইড, সালফারের মতো একাধিক শরীরের পক্ষে বিষাক্ত গ্যাস ও উপাদান বাতাসে মিশতে থাকে। বাতাসে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে। ফলে শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি সহ একাধিক ফুসফুসের রোগের দাপট বাড়ে। তাছাড়া সিওপিডি আক্রান্তদের জন্য ও পরিস্থিতি সঙ্কটজনক‌ হয়ে ওঠে।

    সুস্থ থাকতে কী পরামর্শ দিচ্ছে বিশেষজ্ঞ মহল?

    সকলে একসঙ্গে উৎসব পালন করতে পারলে তবেই উদযাপনে আনন্দ। তাই সুস্থ থাকতে সচেতন উৎসব উদযাপনের পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, পরিবেশবান্ধব গ্রিন বাজি পোড়ানো যেতেই পারে। কিন্তু পরিবেশবান্ধব না হলে সেই বাজি পোড়ানো উচিত নয়। তাতে নতুনভাবে সিওপিডি (COPD) আক্রান্তের সংখ্যা বাড়বে। রোগীদের পরিস্থিতিও সঙ্কটজনক হতে পারে। তাই বাজি পোড়ানোর ক্ষেত্রে সচেতনতা জরুরি। পাশপাশি প্রশাসনের তৎপরতাও প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।‌ তাঁরা জানাচ্ছেন, বেআইনি বাজি নির্মাণ বন্ধ করা, বাজারে পরিবেশবান্ধব নয়, এমন বাজি যাতে রমরমিয়ে বিক্রি হতে না পারে সে দিকে নজর রাখার দায়িত্ব প্রশাসনের। সাধারণ মানুষের সচেতনতার পাশাপাশি প্রশাসনের সক্রিয়তা না বাড়লে এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ কঠিন।

    সুস্থ থাকতে এই সময়ে মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, শিশু ও বয়স্কদের ঠিকমতো নাক ও মুখ ঢাকা মাস্ক পরে তবেই বাইরে যাওয়া উচিত। কারণ এই সময়ে বাতাসে দূষিত (Air Pollution) উপাদানের পরিমাণ বেড়ে যায়। তাই মাস্ক পরলে কিছুটা (COPD) রেহাই পাওয়া যেতে পারে। নিয়মিত আদা এবং এলাচের মতো মশলা রান্নার উপকরণ হিসাবে ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, এই ধরনের মশলা ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বাড়ায়। ফুসফুসের সংক্রমণের ঝুঁকিও কমায়। তাই এই সময়ে এই ধরনের মশলাযুক্ত খাবার খেলে বাড়তি উপকার হতে পারে।

    DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

LinkedIn
Share