Tag: DeepSeek

  • DeepSeek: বিপদে ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা! চিনা ‘ডিপসিক’-কে নিষিদ্ধ করেছে ভারত সহ বহু দেশ

    DeepSeek: বিপদে ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা! চিনা ‘ডিপসিক’-কে নিষিদ্ধ করেছে ভারত সহ বহু দেশ

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আত্মপ্রকাশেই সারা পৃথিবী জুড়ে হইচই ফেলে দিয়েছিল চিনা স্টার্ট আপ এআই সংস্থা ডিপসিক (DeepSeek)। কম দামে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা জেনারেটিভ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) মডেল ‘ডিপসিক-আর১’ তৈরি করে বিশ্বে সাড়া ফেলে দিয়েছে সংস্থাটি। তবে, এর মধ্যেই বিভিন্ন দেশের সরকারি নিষেধাজ্ঞার খাঁড়া নেমে এসেছে ‘ডিপসিক-আর১’-এর উপর। তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষার স্বার্থে এই চিনা স্টার্ট আপ সংস্থাটির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করছে বেশ কয়েকটি দেশের সরকার। সেই তালিকায় রয়েছে ভারতও।

    কেন নিষিদ্ধ ডিপসিক

    তাইওয়ান, অস্ট্রেলিয়া-সহ বেশ কয়েকটি দেশ মনে করছে চিনা স্টার্ট আপ সংস্থার তৈরি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অ্যাপটি নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। ইউরোপীয় দেশগুলির মধ্যে ইটালি, আয়ারল্যান্ড, ফ্রান্স, বেলজিয়াম এবং নেদারল্যান্ডসের মতো দেশের গোপনীয়তা পর্যবেক্ষণকারী সংস্থাগুলি ডিপসিক অ্যাপের তথ্য সংগ্রহের পদ্ধতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

    ভারতের আশঙ্কা

    ভারতও দেশের সরকারি তথ্য সুরক্ষিত রাখার জন্য চ্যাটজিপিটি, ডিপসিকের মতো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন অ্যাপ্লিকেশনগুলি ব্যবহারের নিয়ন্ত্রণ জারি করেছে। এই ধরনের অ্যাপ্লিকেশনগুলিকে তাদের অধীনে থাকা অফিসের কম্পিউটার বা অন্য যন্ত্রে ব্যবহার না করার নির্দেশিকা জারি করেছে অর্থ মন্ত্রক। এই অ্যাপগুলি থেকে সরকারি নথি ফাঁস হওয়ার আশঙ্কা করছে দিল্লি। অর্থ মন্ত্রকের অধীনে থাকা সব অফিসের কর্মীদের এ বিষয়ে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। গত ২৯ জানুয়ারি এই মর্মে একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। মন্ত্রকের আশঙ্কা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যে কোনও অ্যাপ অফিসের যন্ত্রে ব্যবহার করা হলে সরকারি গোপন নথি এবং তথ্য ফাঁস হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, এই অ্যাপগুলি গোপনীয় তথ্য এবং নথির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।

    প্রথম বন্ধকরে ইটালি

    ডিপসিককে নিষিদ্ধ করার কথা প্রথম ঘোষণা করেছিল ইটালি। ইটালিতে গুগ্‌ল প্লে স্টোর ও অ্যাপ স্টোরগুলি থেকে চিনা স্টার্ট অ্যাপের চ্যাটবট অ্যাপটি দ্রুত সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। দেশটির তথ্য সুরক্ষা কর্তৃপক্ষ (ডিপিএ) ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণের পদ্ধতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশের পরই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সে দেশের সরকার। চিনা সংস্থাটি কীভাবে ব্যবহারকারীর তথ্য স‌ংরক্ষণ বা পরিচালনা করে, সে সম্পর্কে তথ্য চাওয়া হয়। তথ্য ব্যবস্থাপনা ও গোপনীয়তা নীতি নিয়ে কারণ দর্শানোর জন্য ডিপসিককে ২০ দিন সময়ও দেওয়া হয়। কর্তৃপক্ষের দাবি, ডিপসিকের প্রাথমিক ব্যাখ্যা যথেষ্ট ছিল না।

    জাতীয় তথ্য নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন তাইওয়ান

    ডিপসিকের (DeepSeek) চ্যাটবটকে ‘জাতীয় তথ্য নিরাপত্তার জন্য হুমকি’ উল্লেখ করে তাইওয়ানের ডিজিটাল বিষয়ক মন্ত্রণালয় সরকারি সংস্থাগুলিকে এই এআইয়ের ব্যবহার করতে নিষেধ করেছে। তাইওয়ান সরকারের জারি করা এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ডিপসিকের মালিকানা একটি চিনা সংস্থার হাতে রয়েছে। সরকারি মন্ত্রক এই সংস্থাটির কৃত্রিম মেধার সাহায্য নিলে গুরুত্বপূর্ণ সরকারি তথ্য পড়শি দেশে পাচার হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করছে তাইওয়ান সরকার। সমস্ত সরকারি দফতর, স্কুল-কলেজ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান-সহ যাবতীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের ক্ষেত্রে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হবে।

    অস্ট্রেলিয়ার সমস্ত সরকারি সিস্টেমে বন্ধ

    নিরাপত্তার কারণে অস্ট্রেলিয়ায় সরকারি কর্মীদের বেজিঙের স্টার্টআপের এই এআই প্ল্যাটফর্মটি ইনস্টল এবং ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার সমস্ত সরকারি সিস্টেম থেকে ওই অ্যাপ্লিকেশন এবং ওয়েব পরিষেবা সরিয়ে দিতে বাধ্যতামূলক ভাবে নির্দেশ দিয়েছে সরকার। রয়টার্স জানিয়েছে, এই নিষেধাজ্ঞা শুধুমাত্র সরকারি মহলে জারি করা হয়েছে। দেশের বেসরকারি নাগরিকদের জন্য এই বিধিনিষেধ প্রযোজ্য নয়।

    চিন্তিত আমেরিকাও

    ডিপসিকের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়গুলিকে ইতিমধ্যেই আতশকাচের নীচে ফেলে দেখছে আমেরিকাও। নৌবাহিনীর তরফে একটি ইমেলে জানানো হয়েছে, সেনার প্রতিটি সদস্যকে ডিপসিকের সমস্ত রকম পরিষেবা ব্যবহার না করার উপর কড়া নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। নৌবাহিনী তাদের কর্মীদের ব্যক্তিগত ব্যবহারের ক্ষেত্রেও এই নিষেধাজ্ঞা বহাল রেখেছে। তাঁদের আশঙ্কা, ডিপসিকের মাধ্যমে গোপনীয় তথ্য চিন করায়ত্ত করতে পারে। এ ছাড়া সেনাকর্তারা খতিয়ে দেখছেন অ্যাপটি জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি তৈরি করছে কি না।

    ভারতের উদ্যো

    বেশিরভাগ দেশ এআই সরকারি সংস্থায় নিষিদ্ধ করায়, ভারতও সেই পথেই হেঁটেছে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেন ওপেনএআই-এর সিইও স্যাম অলটম্যান। ভারতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহারে পরিকাঠামো নিয়ে তাঁদের মধ্যে কথা হয়েছে বলে খবর। বৈঠকের পরে অশ্বিনী বৈষ্ণব এক্স হ্যান্ডলে জানান,  ‘এআই ভিত্তিক পরিকাঠামোর অঙ্গ— জিপিইউ, মডেল এবং অ্যাপ নিয়ে আমাদের নীতি বিষয়ে স্যাম অলটম্যানের সঙ্গে দারুণ আলোচনা হল। এই তিনটি ক্ষেত্রে ভারতের সঙ্গে কাজের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন তিনি।’ এরপরই ডিপসিকের বিষয়ে ভারতের সিদ্ধান্তের কথা জানা যায়।

  • DeepSeek: সব উত্তর ঠিক দিচ্ছে কি ডিপসিক? বিশ্বে ঝড় তোলা এই চিনা এআই কতটা নিরাপদ?

    DeepSeek: সব উত্তর ঠিক দিচ্ছে কি ডিপসিক? বিশ্বে ঝড় তোলা এই চিনা এআই কতটা নিরাপদ?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: এই সপ্তাহে চিনা এআই প্ল্যাটফর্ম ডিপসিক (DeepSeek) প্রযুক্তি দুনিয়াতে ঝড় তোলে এবং সোমবার ওয়াল স্ট্রিটেও বড় ধরনের প্রভাব ফেলে, যার ফলে মার্কিন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা এনভিডিয়া এবং গুগলের শেয়ারদরে বড় পতন দেখা যায়। যদিও অ্যাপটির প্রশংসা হচ্ছে, তবে এর নিরাপত্তা এবং কার্যকারিতা নিয়েও সম্প্রতি নানা প্রশ্ন উঠছে। বিশেষত, এই অ্যাপকে কেন্দ্র করে প্রাইভেসি এবং সুরক্ষা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। ভিপিএন-এর মতো প্রাইভেসি সফটওয়্যারও এর বিরুদ্ধে সুরক্ষা দিতে সক্ষম নয় বলে মনে করা হচ্ছে।

    ডিপসিক কী

    ইলেকট্রনিক গ্যাজেট থেকে অটোমোবাইল ইন্ডাস্ট্রি, সর্বত্র নিজেদের একচ্ছত্র আধিপত্য কায়েম করার পর এবার ড্রাগনের দেশের নজরে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। ডিপসিক, চিনের কোম্পানি। চ্যাটজিপিটির সমান, বা তার থেকেও বেশি। কিন্তু খরচ এবং লোকবল অনেক কম। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের এই ধরনের প্রোগ্রাম তৈরি করতে মার্কিন সংস্থা এনভিডিয়ার এ-১০০ চিপ প্রয়োজন। কিন্তু পরে আমেরিকা-চিন বিবাদে এই এ-১০০ চিপ আসা বন্ধ হয়ে যায়। ডিপসিকের (DeepSeek) মালিক লিয়াং ওয়েনফেং বুদ্ধি করে প্রচুর এ-১০০ চিপ জড়ো করে রেখেছিলেন। তাই দিয়েই কামাল করে দিয়েছেন লিয়াং। অর্থাত্‍ মার্কিন প্রযুক্তিতেই, আমেরিকার আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স জগতকে কুপোকাৎ করে দিয়েছে চিনের লিয়াংয়ের এই ডিপসিক! ওপেন এআই-এর চ্যাট জিপিটি, গুগলের জেমিনি থেকে ক্লাউড এআই সকলকে বিগত কয়েকদিনেই কার্যত শুইয়ে দিয়েছে এই ডিপসিক। হিসেব বলছে চ্যাট জিপিটি বা ক্লাউড এআইয়ের থেকে অন্তত ১৪% এগিয়ে কাজ করছে ডিপসিক। আর খরচ? ওই মার্কিন কোম্পানিগুলোর থেকে ৯০-৯৫% কম। তবে সমস্যাও রয়েছে প্রচুর।

    প্রাইভেসি ম্যানেজমেন্ট

    ডিপসিকের (DeepSeek) প্রথম প্রাইভেসি সমস্যা হল, ব্যবহারকারীদের গুগল অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে লগ ইন করতে বলা হয়। এতে ডিপসিক গুগল থেকে ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য যেমন নাম, ইমেল ঠিকানা এবং প্রোফাইল ছবি সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়। প্রাইভেসি পলিসিতে বলা হয়েছে, যখন আপনি কোনও তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে লগ ইন করবেন, তখন ওই সেবা থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হতে পারে। পলিসি অনুযায়ী, ডিপসিকের পার্টনাররা আপনার কার্যকলাপ সম্পর্কিত তথ্য শেয়ার করতে পারে, যা অন্য ওয়েবসাইটে বা অন্য সেবায় আপনার ক্রয়কৃত পণ্য বা সেবার সাথে সম্পর্কিত হতে পারে। ডিপসিক আরও কিছু তথ্য সংগ্রহ করে। যেমন আইপি ঠিকানা, ডিভাইস মডেল, প্রোফাইল তথ্য, কুকি, পেমেন্ট তথ্য এবং পাঠানো টেক্সট, অডিও ইনপুট, আপলোড করা ফাইল, প্রতিক্রিয়া এবং চ্যাট ইতিহাসও রেকর্ড করা হতে পারে। যদিও প্রাইভেসি পলিসি বলছে যে চ্যাট ইতিহাস এবং কিছু কুকি নিষ্ক্রিয় করা সম্ভব, তবে এর ফলে সেবার কার্যকারিতা প্রভাবিত হতে পারে।

    নির্বাচিত উত্তর

    ডিপসিকের (DeepSeek) কার্যকারিতা নিয়ে বিশেষভাবে উদ্বেগ দেখা যাচ্ছে, বিশেষ করে চিনের রাজনৈতিক বিষয়গুলোতে। চিনা ইস্যু সম্পর্কিত প্রশ্ন যেমন “ভারত-চিন যুদ্ধ কে জিতেছে?”, “সি জিনপিং কে?”, বা “তিয়ানআনমেন স্কয়ারে কী ঘটেছিল?”, এসবের উত্তর পাওয়া যাচ্ছে না। এসব ক্ষেত্রে ডিপসিকের একমাত্র উত্তর ছিল, “দুঃখিত, এটি আমার বর্তমান সীমার বাইরে, অন্য কিছু বলুন।” আসলে ডিপসিক চিনের রাজনৈতিক বিষয়ে নির্দিষ্ট উত্তর দিতে বা ওই সব বিষয়ে আলোচনা করতে অস্বীকার করেছে। চিনের সঙ্গে সম্পর্কিত বিতর্কিত বিষয় যেমন তাইওয়ান, দালাই লামা এবং হংকংয়ের প্রতিবাদ সম্পর্কে ডিপসিক সঠিক উত্তর দিচ্ছে না। ডিপসিক তাইওয়ানকে চিনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে বর্ণনা করেছে। ডিপসিক বলেছে, “তাইওয়ানের স্বাধীনতার জন্য কোনও প্রচেষ্টা সফল হবে না।”

    সাইবার নিরাপত্তা উদ্বেগ

    ডিপসিকের (DeepSeek) একটি বড় উদ্বেগ হলো এর সাইবার নিরাপত্তা দুর্বলতা। কেলা সাইবারসিকিউরিটি সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, এটি সহজেই ‘জেলব্রেক’ করা যায়। যার মানে হল যে, কেউ চাইলে এর মাধ্যমে ক্ষতিকর আউটপুট তৈরি করতে পারে। ভিপিএন ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষিত রাখার প্রচেষ্টা এখানে একেবারেই ফলপ্রসূ নয়, কারণ যদি আপনি ডিপসিকের মাধ্যমে আপনার তথ্য প্রদান করেন, তবে আপনার ব্যক্তিগত ডেটা সংগ্রহ করা হবে, যেটি ভিপিএন দ্বারা সুরক্ষিত হওয়া সম্ভব নয়। বাস্তবে, ডিপসিক একটি এমন টুল হিসেবে পরিচিত, যা এখনও অনেক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এর প্রাইভেসি পলিসির কারণে ব্যবহারকারীদের সতর্ক থাকতে হবে। চিনা সংস্থা, নিরাপত্তা ঝুঁকি এর সবচেয়ে বড়। ফোন থেকে ডেটা, চুরি করলে তার দায় কিন্তু কারোর নয়। তাই ডিপসিক ব্যবহার করলে তা উপভোগ করতে হবে সম্পূর্ণ নিজের রিস্কে।

LinkedIn
Share