Tag: Department of Foreign Trade

  • India Pakistan Conflict: বন্ধু চিনতে ভুল! ভারত-পাক সংঘাতের মাঝেই করাচিতে তুরস্কের যুদ্ধজাহাজ, কীসের ইঙ্গিত?

    India Pakistan Conflict: বন্ধু চিনতে ভুল! ভারত-পাক সংঘাতের মাঝেই করাচিতে তুরস্কের যুদ্ধজাহাজ, কীসের ইঙ্গিত?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনাপূর্ণ (India Pakistan Conflict) পরিস্থিতির মধ্যেই এবার করাচির বন্দরে ভিড়ল তুরস্কের যুদ্ধ জাহাজ (Turkey on India Pak Clash)। রবিবার পাক নৌসেনার তরফে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। জানানো হয়েছে, দুই দেশের সামুদ্রিক সহযোগিতা জোরদার করতে তুরস্কের যুদ্ধজাহাজ টিসিজি বুয়ুকডা পাকিস্তানে পৌঁছেছে। এই ঘটনায় বড় সড়যন্ত্রের ইঙ্গিত পাচ্ছে ওয়াকিবহাল মহল। এর আগে গত ২৮ এপ্রিল দক্ষিণ পাকিস্তানের করাচি বায়ুসেনা ঘাঁটিতে তুরস্কের সি-১৩০ই হারকিউলিস সামরিক পণ্যবাহী বিমান অবতরণ করতেই দুনিয়া জুড়ে শুরু হয় হইচই। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলির দাবি, ওই বিমানে বিপুল পরিমাণ হাতিয়ার, গোল-বারুদ এবং যুদ্ধের সরঞ্জাম পাঠিয়েছে আঙ্কারা। এরপরই ভারতজুড়ে পাকিস্তানের চির বন্ধু তুরস্ককে বয়কট করার দাবি উঠেছে। তুরস্কের সঙ্গে সবরকম কৃটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা বলা হচ্ছে।

    করাচিতে তুরস্কের যুদ্ধজাহাজ

    আরব সাগরে ভারতীয় নৌবহিনীর লাইভ ফায়ারিং এবং যুদ্ধ মহড়ায় পাকিস্তানের গলা শুকিয়ে গিয়েছে। এই আবহে পাকিস্তানের বন্ধু হিসেবে পরিচিত তুরস্ক একটি রণতরী পাঠিয়েছে পাকিস্তানের করাচি বন্দরে। ‘টিসিজি বুইউকাদা’ নামক এই রণতরীর করাচিতে আগমনকে অবশ্য ‘রুটিন’ আখ্যা দিয়েছে তুরস্ক কর্তৃপক্ষ। পাকিস্তান আবার এটিকে ‘গুডউইল ভিসিট’ আখ্যা দিচ্ছে। তবে, ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ পরিস্থিতির মাঝে তুরস্কের যুদ্ধজাহাজের (Turkish Navy Ship) করাচি আগমন মোটেই সহজভাবে দেখছে না তথ্যাভিজ্ঞ মহল। বিশেষজ্ঞদের দাবি, বর্তমান পরিস্থিতিতে তুরস্কের যুদ্ধ জাহাজের আগমন সাধারণ বিষয় নয়। বিশেষ করে ভারতের ভয়ে যখন পাকিস্তান চিন-সহ অন্যান্য বন্ধুদেশের কাছে সাহায্যের জন্য হাত পেতেছে। সম্প্রতি তুরস্কের রাষ্ট্রদূত ইরফান নেজিরগুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। এই সাক্ষাতে পাকিস্তানের পাশে থাকার আবেদন জানান তিনি। সামরিক ক্ষেত্রে পাকিস্তানের অন্যতম বড় সাহায্যকারী দেশ এই তুরস্ক। আগেও পাকিস্তানকে অগুস্তা ৯০বি ক্লাস সাবমেরিনের আধুনিকরণ, ড্রোন-সহ অন্যান্য যুদ্ধাস্ত্র দিয়েছে তুরস্ক। প্রায়শই যৌথ মহড়ায় অংশ নেই দুই দেশের সেনা। এবার যদিও পাক নৌবাহিনীর দাবি, করাচিতে থাকাকালীন তুরস্কের যুদ্ধজাহাজ পাকিস্তানের নৌবাহিনীর সঙ্গে সামরিক ক্ষেত্রে নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করবে। এই সফরের লক্ষ্য দুই নৌবাহিনীর মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া বৃদ্ধি ও সামুদ্রিক সহযোগিতা বাড়ানো। কিন্তু সময় বলছে অন্য কথা!

    তুরস্কের হারকিউলিস বিমান করাচিতে

    ভারতের প্রত্যাঘাত সামাল দিতে বন্ধু দেশগুলির সাহায্য চেয়েছে পাকিস্তান। তাদের বন্ধু তালিকায় সবার উপরে রয়েছে চিন ও তুরস্ক। যুদ্ধের জিগির তোলা রাওয়ালপিন্ডির ফৌজি জেনারেলরা তুরস্কের পূর্ণ সমর্থন পাচ্ছেন বলে সংবাদমাধ্যমে খবর ছড়িয়ে পড়েছে। সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া খবর অনুযায়ী, পাকিস্তানে মোট ছ’টি সি-১৩০ই হারকিউলিস বিমান নামিয়েছে তুর্কি বায়ুসেনা। আরব সাগরের উপর দিয়ে সেগুলিকে উড়িয়ে আনা হয়। তা ছাড়া করাচি বায়ুসেনা ঘাঁটিতে নাকি সেগুলি দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়েছিল। অন্যদিকে,  পাকিস্তানে কোনও হাতিয়ার বা গোলা-বারুদ পাঠানো হয়নি বলে বিবৃতি দিয়েছে তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। তবে, করাচিতে মালবাহী বিমানের অবতরণের কথা স্বীকার করে নিয়েছে। তাঁদের দাবি, জ্বালানি ভরার জন্য একটি সি-১৩০ই হারকিউলিস বিমানকে সেখানে নামানো হয়। কিন্তু তার পরেও এ ব্যাপারে সন্দেহ দূর হচ্ছে না।

    তুরস্ক হল কাল-সাপ!

    ঐতিহাসিক ভাবে অবশ্য ইসলামাবাদ ও আঙ্কারার সম্পর্ক বেশ মধুর। বিশ্লেষকদের একাংশ তাই মনে করেন, যুদ্ধ বাধলে তুরস্কের ‘অন্ধ’ সমর্থন পাবে পাকিস্তান। তাই এই বিষয়ে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারকে আগাম সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ মহলের কথায়, সাপকে খাওয়ালেও, তারা বন্ধু হয় না। ছোবল মারবেই। তাই তুরস্ক ‘বন্ধু’ হবে বলে মিথ্যা স্বপ্ন দেখে লাভ নেই। উল্টে পিঠে ছুরি বসানোর জন্য তৈরি হচ্ছে তারা। আগেও তুরস্কের থেকে হামলাকারী ড্রোন কেনার ব্যাপারে আগ্রহী ছিল ভারত। কিন্তু, আঙ্কারা পত্রপাঠ না বলে দেয়। শুধু তা-ই নয়, এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইসলামাবাদ সফর করেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিচেপ এর্দোগান। ওই সময় কাশ্মীর ইস্যুতে আন্তর্জাতিক মঞ্চে পাকিস্তানকে সমর্থন করার আশ্বাস দেন তিনি। বছর কয়েক আগে পাক ফৌজকে অতিশক্তিশালী ‘বের‌্যাক্টার টিবি২’ এবং ‘আকিনসি’ নামের দু’টি ড্রোন সরবরাহ করে তুরস্ক। এর মধ্যে প্রথমটি কেনার ব্যাপারে আগ্রহী ছিল নয়াদিল্লি। সূত্রের খবর, এই ড্রোন বাংলাদেশের বাহিনীর হাতেও বের‌্যাক্টার তুলে দিয়েছে আঙ্কারা। পাশাপাশি, ইসলামাবাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ‘কান’ নামের পঞ্চম প্রজন্মের একটি যুদ্ধবিমান তৈরি করছে তুরস্ক। গত বছর দুই দেশের মধ্যে এই সংক্রান্ত একটি চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়। আগামী বছরের মধ্যে ‘কান’ লড়াকু জেটকে বিমানবাহিনীর বহরে শামিল করার পরিকল্পনা রয়েছে আঙ্কারার। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই সেগুলি হাতে পাবে পাক বায়ুসেনাও।

    ভারতের সাহায্যকে এড়িয়ে গিয়েছে আঙ্কারা

    ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভয়াবহ ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে তুরস্ক। চোখের নিমেষে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় বিস্তীর্ণ এলাকা। ওই সময় বিবাদ ভুলে আঙ্কারার পাশে দাঁড়িয়েছিল নয়াদিল্লি। এশিয়া মাইনরের দেশটিতে বিপুল পরিমাণ ত্রাণসামগ্রী পাঠান প্রধানমন্ত্রী মোদি। ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে উদ্ধারকাজে নামে ভারতীয় সেনা, বিমানবাহিনী এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী বা এনডিআরএফ। কিন্তু বিশ্লেষকদের দাবি, বিপদের সময়ে করা এই সাহায্যের প্রতিদান যে তুরস্ক পরবর্তী সময়ে দিয়েছে, তা নয়। গত দু’বছরে আন্তর্জাতিক মঞ্চে কাশ্মীর ইস্যুতে সামান্য নরম বিবৃতি বা চুপ করে থাকা ছাড়া আর কিছুই করেনি তারা। উল্টে ইসলামাবাদের সঙ্গে সম্পর্ক আরও মজবুত করার দিকেও এগিয়েছে আঙ্কারা। হামলাকারী ড্রোন সরবরাহ বা ‘কান’ যুদ্ধবিমান প্রকল্পে ইসলামাবাদের অন্তর্ভুক্তি তার প্রমাণ।

    তুরস্ককে কূটনৈতিক জবাব দেওয়ার দাবি

    প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকেরা অবিলম্বে তুরস্কের ইস্তানবুল হয়ে ইউরোপ বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পর্যন্ত অসামরিক বিমান চলাচল বন্ধ করার দাবি তুলেছেন। বর্তমানে উড়ান সংস্থা ইন্ডিগোকে এই অনুমতি দিয়েছে নয়াদিল্লি। ফলে টার্কিশ এয়ারলাইন্স অতিরিক্ত আর্থিক সুবিধা পাচ্ছে বলে ইতিমধ্যেই অভিযোগ উঠেছে। বিশেষজ্ঞদের দাবি, ভারতের উচিত তুরস্কের প্রধান আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রিসের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলা। এটা অদ্ভুত যে ইস্তানবুলে এত বেশি সরাসরি ফ্লাইট রয়েছে এবং এথেন্সে কোনও ফ্লাইট নেই। প্রাক্তন ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব কানওয়াল সিব্বল তুরস্কে বিমান স্থগিতের পরামর্শ দেন। তিনি জানান, আপাতত তুরস্কে ভারতের বিমান এবং ভারতে তুর্কি বিমান স্থগিতের কথা বিবেচনা করা যেতে পারে।

    তুরস্কে পর্যটন নয়

    পাকিস্তান ও তুরস্কের (India Pakistan Conflict) মধ্যে দীর্ঘদিনেরই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। পাকিস্তানের স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার তুরস্ক। নিয়মিত উচ্চ পর্যায়ের সাক্ষাৎ-ও সারেন ইসলামাবাদ ও আঙ্কারার আধিকারিকরা। ফলে দুই দেশের যে মজবুত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক রয়েছে, তা অস্বীকার করার জায়গা নেই। এমনকি হাই-লেভেল স্ট্র্যাটেজিক কোঅপারেশন কাউন্সিল (HLSCC) নামে একটি মঞ্চও গড়েছে তুরস্ক ও পাকিস্তান। পারস্পারিক নানা স্বার্থে সহাবস্থানের উদ্দেশ্যেই ২০০৯ সালে গড়ে তোলা হয়েছে এইচএলএসসিসি। দুটি দেশেই ব্যবসা বাণিজ্য, বিনিয়োগ, প্রতিরক্ষা, শক্তি, কৃষি, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা সংক্রান্ত সর্বোচ্চ সিদ্ধান্ত নেয় এই কাউন্সিল। তাই ভারত-পাক যুদ্ধে সরাসরি ইসলামাবাদকে সমর্থ করবে যে দেশ তাকে এখনই বয়কটের ডাক উঠেছে ভারত জুড়ে। তুরস্কের পর্যটন ব্যবসাও ভারত নির্ভর। তাই ভারতীয়দের ইস্তানবুল ভ্রমণে যেতেও বারণ করছেন অনেকে। এই আবহে দিল্লি সরাসরি তুরস্কের বিপক্ষে কোনও পদক্ষেপ করে কি না তা-ই দেখার।

  • India Pakistan Conflict: ভারতীয় মিডিয়ায় পাকিস্তানের প্যানেলিস্টদের আমন্ত্রণ নয়, বড় নির্দেশ তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রকের

    India Pakistan Conflict: ভারতীয় মিডিয়ায় পাকিস্তানের প্যানেলিস্টদের আমন্ত্রণ নয়, বড় নির্দেশ তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রকের

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার ঘটনায় পাকিস্তান থেকে ভারত বিরোধী (India Pakistan Conflict) মন্তব্য করা প্যানেলিস্টদের আমন্ত্রণ জানানো নিয়ে কড়া বার্তা দিল তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক। দেশের বিভিন্ন বৈদ্যুতিন এবং ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমকে উদ্দেশ্য করে রবিবার মন্ত্রকের তরফে এক বিবৃতি জারি করা হয়। ভারতের সংবাদমাধ্যমে ‘ভারত-বিরোধী’ পাকিস্তানি বিশ্লেষকদের উপস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশিকা জারি করেছে নিউজ ব্রডকাস্টার্স অ্যান্ড ডিজিটাল অ্যাসোসিয়েশন (NBDA)। এই নির্দেশিকায় এনবিডিএ সদস্য চ্যানেলগুলিকে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, এমন কোনও বক্তা বা বিশ্লেষককে আমন্ত্রণ জানানো থেকে বিরত থাকতে হবে যারা ভারতের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানোর জন্য পরিচিত।

    ভারতবিরোধী মিথ্যা প্রচার নয়

    নিউজ ব্রডকাস্টার্স অ্যান্ড ডিজিটাল অ্যাসোসিয়েশন তাদের সদস্য চ্যানেলগুলির সম্পাদকদের উদ্দেশ্যে পাঠানো বার্তায় বলেছে, “পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের উপর সাম্প্রতিক হামলার প্রেক্ষিতে, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে যে কিছু চ্যানেল পাকিস্তানের এমন বক্তাদের তাদের প্রোগ্রামে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে যারা ভারত-বিরোধী মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছেন।” অ্যাসোসিয়েশনের মতে, যে কোনও বিদেশি বক্তা, বিশেষ করে পাকিস্তানি প্যানেলিস্টদের নির্বাচন করার সময় সংবাদমাধ্যমকে অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে এবং নিশ্চিত করতে হবে যে তারা যেন ভারতের সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা এবং নিরাপত্তার পরিপন্থী কোনও বক্তব্য না রাখেন। সংগঠনটি চ্যানেলগুলিকে আরও আহ্বান জানিয়েছে যে, তারা যেন প্রচারের ক্ষেত্রে “উচ্চমাত্রার সম্পাদকীয় বুদ্ধিমত্তা ও বিচক্ষণতা” প্রয়োগ করে।

    তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের উদ্যোগ

    সূত্র অনুসারে, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের তরফে আগেই নিউজ ব্রডকাস্টার্স অ্যান্ড ডিজিটাল অ্যাসোসিয়েশনকে জানানো হয় যে, পাকিস্তানি বিশ্লেষকরা ভারতীয় নিউজ চ্যানেলগুলিকে “মিথ্যা প্রচারের প্ল্যাটফর্ম” হিসেবে ব্যবহার করছেন। সরকারি ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কিছু চ্যানেল ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে এমন ব্যক্তিদের আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে, যারা পাকিস্তান থেকে এসে ভারতের সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা এবং নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছেন। ন্যাশনাল ব্রডকাস্টার্স অ্যান্ড ডিজিটাল অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদকদের উদ্দেশে মন্ত্রক জানিয়েছে, এই ধরনের প্যানেলিস্টদের আমন্ত্রণ জানানো থেকে বিরত থাকতে হবে। যেসব ব্যক্তি অতীতে ভারতের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করেছেন বা ভারত-বিরোধী মনোভাব পোষণ করেন, তাঁদের কোনওভাবেই চ্যানেল বা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে আমন্ত্রণ জানানো যাবে না। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, সমস্ত সংশ্লিষ্ট সম্পাদকীয় কর্মীদের মধ্যে যাতে এই বার্তা পৌঁছে যায়। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের সম্পাদকদের কাছে আহ্বান জানানো হয়েছে, তাঁরা যেন একটা বিষয় নিশ্চিত করেন যে কোনও সম্প্রচার বা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ভারত-বিরোধী মিথ্যা প্রচারের মঞ্চ হয়ে না ওঠে।

    কোণঠাসা পাকিস্তান

    পহেলগাঁওয়ের ঘটনার পর পাকিস্তানকে কার্যত কোণঠাসা করে দিয়েছে ভারত (India Pakistan Conflict)। একের পর এক চালে বিধ্বস্ত হয়ে গিয়েছে ভারতের প্রতিবেশী রাষ্ট্র। পাকিস্তানকে ভাতে মারতে পহেলগাঁও হামলার পরই সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি স্থগিতের ঘোষণা করেছিল ভারত। যা নিয়ে উত্তেজনা চরমে। এর মধ্যেই আরও এক মাস্টারস্ট্রোক দিয়েছে দিল্লি। সিন্ধু প্রবাহের দিক বদলের আগেই ভারত চন্দ্রভাগা বা চেনাব নদীর জলপ্রবাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। চন্দ্রভাগার উপর দেওয়া হয়েছে বাগলিহার বাঁধ। এছাড়া, সিন্ধুর আরেক শাখা নদী ঝিলামের উপর কিষাণগঙ্গা বাঁধেও একই পরিকল্পনা করেছে মোদি সরকার। গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে হামলা চালায় জঙ্গিরা। জঙ্গিদের হত্যালীলায় ২৮ জনের মৃত্যু হয়। তাঁদের মধ্যে ২৭ জনই ছিলেন পর্যটক। ভারতীয় গোয়েন্দাদের সন্দেহ, ওই ঘটনায় সীমান্তপারের যোগ রয়েছে। এরপরই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ কূটনৈতিক পদক্ষেপ করেছে ভারত। বাতিল করা হয়েছে পাকিস্তানিদের ভিসা, পাকিস্তানের জন্য ভারতীয় আকাশসীমা বন্ধ করে দেওয়া-সহ একের পর এক পদক্ষেপের ঘোষণা করা হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে অটারী সীমান্তও।

    জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে সতর্ক

    পাকিস্তান (India Pakistan Conflict) থেকে ডাকযোগে আর কোনও চিঠি বা পার্সেল ভারতে পাঠানো যাবে না। শনিবার ভারতীয় যোগাযোগ মন্ত্রক থেকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এ কথা জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, আকাশপথে বা স্থলপথে পাকিস্তান থেকে সব ধরনের চিঠি এবং পার্সেলের এ দেশে ঢুকতে দেওয়া স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শুক্রবার রাতে বাণিজ্য মন্ত্রকের একটি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পাকিস্তানি পণ্য আর আমদানি করা যাবে না এ দেশে। শনিবার সকালে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, পাকিস্তানের পতাকা থাকা কোনও পণ্যবাহী জাহাজ ভারতীয় বন্দরে প্রবেশ করতে পারবে না। পহেলগাঁও কাণ্ড পরবর্তী উত্তেজনার মাঝে ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে এবার আরও এক কূটনৈতিক পদক্ষেপ করল ভারত। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম যেন কোনওভাবে দেশের বিরুদ্ধে প্রচার চালানোর প্ল্যাটফর্ম না হয়ে ওঠে, সেদিকে দৃষ্টি দিল তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক। পাকিস্তান থেকে আগত বিতর্কিত বিশ্লেষকদের উপস্থিতি নিষিদ্ধ করার এই পদক্ষেপ সেই কূটনৈতিক কৌশলেরই একটি অংশ বলে মনে করা হচ্ছে। নিউজ ব্রডকাস্টার্স অ্যান্ড ডিজিটাল অ্যাসোসিয়েশনের এই পদক্ষেপ ইঙ্গিত দেয় যে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে বিদেশি বক্তাদের ভূমিকা নিয়ে সরকার এবং শিল্প মহলে উদ্বেগ বাড়ছে, বিশেষ করে যখন তা জাতীয় নিরাপত্তা ও জনসচেতনতাকে প্রভাবিত করতে পারে।

  • India Pakistan Conflict: প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ – পাকিস্তান থেকে সব ধরনের আমদানি নিষিদ্ধ করল ভারত

    India Pakistan Conflict: প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ – পাকিস্তান থেকে সব ধরনের আমদানি নিষিদ্ধ করল ভারত

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সরাসরি হোক বা ঘুরপথে, পাকিস্তানি পণ্য কোনও ভাবেই এ দেশে প্রবেশ করতে পারবে না। পহেলগাঁও কাণ্ডের পর উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পাকিস্তান থেকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ, সমস্ত আমদানি নিষিদ্ধ করল ভারত (India Pakistan Conflict)। পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসবাদী হামলার পর থেকেই উত্তপ্ত ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত। তৈরি হয়েছে যুদ্ধ পরিস্থিতি। গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ের বৈসরণে জঙ্গি হানায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৬ জন নিরীহ পর্যটক। এরপর থেকেই পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু জলচুক্তি সহ একাধিক দ্বিপাক্ষিক চুক্তি বাতিল করেছে ভারত সরকার। এবার পাকিস্তান থেকে কোনওরকম পণ্য আমদানিতেই নিষেধাজ্ঞা জারি করল মোদি সরকার। শনিবার এই বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে কেন্দ্র। ভারত আমদানি বন্ধ করায় পাকিস্তানের বাণিজ্য ও অর্থনীতি বড় ধাক্কা খাবে, বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

    কী বলা হল নিষেধাজ্ঞায়

    শনিবার বাণিজ্য মন্ত্রকের নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, “পাকিস্তানে উৎপন্ন বা রফতানি করা সমস্ত পণ্যের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ আমদানি বা পরিবহণ, তা অবাধে আমদানিযোগ্য হোক বা অনুমোদনসাপেক্ষ, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তাৎক্ষণিকভাবে নিষিদ্ধ করা হল। জাতীয় নিরাপত্তা এবং জননীতির স্বার্থে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞার যে কোনও ব্যতিক্রমের জন্য ভারত সরকারের থেকে পূর্ব অনুমোদনের প্রয়োজন।” ইতিমধ্যেই লাগু হয়ে গিয়েছে এই নিষেধাজ্ঞা। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে পাকিস্তানের সঙ্গে যোগাযোগের সমস্ত বন্দরও। বর্তমানে যে সব পণ্য ট্রানজিটে রয়েছে, তার উপরও এই নির্দেশ লাগু হয়েছে। বস্তুত, অটারী-ওয়াঘা সীমান্ত দু’দেশের মধ্যে অন্যতম বাণিজ্যপথ ছিল। কিন্তু পহেলগাঁওয়ে হামলার পর দিনই অটারী সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়।

    বিপদে পাকিস্তান

    গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে হওয়া সন্ত্রাসী হামলায় মৃত্যু হয় ২৬ জন হিন্দু পর্যটকের। এই হামলার পিছনে পাকিস্তানের মদতের যোগসূত্র মিলেছে। হামলাকারীদের মধ্যে দু’জন পাকিস্তানি বলেও দাবি। হামলার নেপথ্যে হাফিজ সইদের জড়িত থাকার সম্ভাবনাই প্রবল। এমতাবস্থায় দুই দেশের সম্পর্কের চূড়ান্ত অবনতি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আগেই পাক সরকার ভারতের সঙ্গে সমস্তরকম দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বন্ধের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছিল। তাতেও বিপাকে পড়েছে ইসলামাবাদই। এমনিতে পাকিস্তান একাধিক ক্ষেত্রে ভারতের পণ্যের উপর নির্ভরশীল। তবে বাণিজ্য বন্ধের জেরে পাক বাজারে সবচেয়ে বেশি যে জিনিসটার সংকট সবচেয়ে বেশি রয়েছে তা হল ওষুধ। ভারতের বাজার থেকে কাঁচামাল না গেলে বিনা চিকিৎসায় প্রাণ যেতে পারে বহু পাকিস্তানির।

    ঘুরপথেও বাণিজ্য নয়

    আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্পর্কে (India Pakistan Trade) ওয়াকিবহাল একাংশের মতে, পাকিস্তান থেকে সরাসরি খুব বেশি পণ্য ভারতে আসে না। তবে ঘুরপথে দুবাই হয়ে কিছু পণ্য ভারতে আসত। বিশেষত, পোশাক, মশলা বা ছোট যন্ত্রাংশের মতো কিছু পণ্য ঘুরপথে ভারতীয় বাজারে প্রবেশ করত। তা-ও খুব বেশি নয়। বাণিজ্যমহলের কারও কারও মতে, ঘুরপথেও যাতে কোনও পাকিস্তানি পণ্য ভারতে প্রবেশ না করে, তা নিশ্চিত করতেই এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে নরেন্দ্র মোদির সরকার। বস্তুত, ২০১৯ সালে পুলওয়ামায় জঙ্গিহানার পর থেকে ভারত এবং পাকিস্তানের বাণিজ্যিক সম্পর্কে ক্রমশ অবনতি হতে শুরু করেছিল। ওই সময়ে ফল, সিমেন্ট, পেট্রোপণ্য, আকরিক-সহ পাকিস্তান থেকে আসা বেশ কিছু পণ্যের উপর আমদানি শুল্ক ২০০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছিল ভারত। বাণিজ্যিক ভাবে ভারতের অন্যতম পছন্দের দেশ (মোস্ট ফেভার্‌ড নেশন)-এর তালিকা থেকেও পাকিস্তানকে সরিয়ে দিয়েছিল ভারত।

    বাণিজ্যিক সম্পর্ক তলানিতে

    গত কয়েক বছরে ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক (India Pakistan Trade) ক্রমশ তলানিতে ঠেকেছে। গত বছরের এপ্রিল থেকে চলতি বছরের জানুয়ারির মধ্যে পাকিস্তান থেকে মাত্র ৪ লক্ষ ২০ হাজার ডলারের পণ্য আমদানি করেছিল ভারত। এক বছর আগেও যে পরিসংখ্যান ছিল, তার থেকে ২০ লক্ষ ডলারেরও কম মূল্যের আমদানি হয়েছিল ওই সময়ে। এখানেই শেষ নয়, বহুজাতিক ব্যাঙ্কগুলির সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছে দিল্লি। আইএমএফ, বিশ্ব ব্যাঙ্ক বা এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের মতো ব্যাঙ্কগুলির কাছে ভারতের আর্জি যেন পাকিস্তানকে ঋণ না দেওয়া হয়। সন্ত্রাসে মদত দেয় ইসলামাবাদ- এই অভিযোগ তুলেই আর্জি জানাচ্ছে নয়াদিল্লি।

    পাকিস্তানি পণ্যবাহী জাহাজের উপরেও নিষেধাজ্ঞা

    পাকিস্তানি পণ্য আমদানির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পাশাপাশি পাকিস্তানি পণ্যবাহী জাহাজের উপরেও নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়েছে। ‘ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ শিপিং’-এর তরফে জানানো হয়েছে, পাকিস্তানের পতাকা থাকা কোনও জাহাজ ভারতীয় বন্দরে প্রবেশ করতে পারবে না। একই রকম ভাবে কোনও ভারতীয় জাহাজও পাকিস্তানের কোনও বন্দরে যাবে না। এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে ভারতীয় সম্পদ, পণ্য ও বন্দর সুরক্ষার স্বার্থে। এই নিষেধাজ্ঞাগুলি এখনই কার্যকর হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।

    পাকিস্তান থেকে আসা চিঠি বা পার্সেলেও জারি নিষেধাজ্ঞা

    শুধু তাই নয়। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আরও একটি বড় পদক্ষেপ করেছে নয়াদিল্লি। পাকিস্তান থেকে ডাকযোগে পাঠানো কোনও চিঠি বা পার্সেল আর ভারতে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। বিজ্ঞপ্তি জারি করে এ কথা জানিয়েছে ভারতীয় যোগাযোগ মন্ত্রক। ভারত সরকার জানিয়েছে, আকাশপথ বা স্থলপথে পাকিস্তান থেকে আসা সব ধরনের চিঠি ও পার্সেলের ক্ষেত্রে এই সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে।

LinkedIn
Share